বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায়
বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায় (২৪ অক্টোবর ১৮৯৪ - ৩০ জুলাই ১৯৮৭)[১] ছিলেন বাংলা সাহিত্যে জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক ও ছোট গল্পকার। সাহিত্যের বিভিন্ন ধারার উপন্যাস ও গল্পগ্রন্থের রচয়িতা। রসরচনায়ও রয়েছে তার অসামান্য দক্ষতা। তিনি অনেক কৌতুক ও রঙ্গরসের গল্পও লিখেছেন।
জন্ম ও শিক্ষা
সম্পাদনাবিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায় ১৮৯৪ সালের ২৪ অক্টোবর বিহারের দ্বারভাঙ্গা জেলার পান্ডুল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম বিপিনবিহারী মুখোপাধ্যায়। তার আদি নিবাস হুগলী জেলার চাতরা হলেও তার তিন পুরুষের বাস বিহারের দ্বারভাঙ্গায় ছিল। বিভূতিভূষণ দ্বারভাঙ্গা পীতাম্বরী বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। দ্বারভাঙ্গা রাজ স্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং রিপন কলেজ থেকে আই এ পাশ করেন। তিনি পাটনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি. এ. পাশ করেন।
কর্মক্ষেত্র
সম্পাদনাতার কর্মক্ষত্র ছিল বৈচিত্রময়। কর্মজীবনের প্রথম দিকে তিনি ইন্ডিয়ান নেশন পত্রিকার কার্যাধ্যক্ষের পদে আসীন ছিলেন। পরে বিহারের দ্বারভাঙ্গায় মহারাজের সচিব হিসাবেও কাজ করেন। আবার পরবর্তী কালে কিছুকাল শিক্ষকতাও করেছেন। ১৯১৬ থেকে ১৯৪২ পর্যন্ত কর্মজীবনে বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায় বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষকতা, ধনী পরিবারে গৃহ-শিক্ষকতা করেছিলেন। শিক্ষকতা চলাকালীন তিনি নিজেকে লেখার কাজে নিয়োজিত করেন। সাহিত্যের বিভিন্ন ধারার উপন্যাস ও গল্পগ্রন্থের তিনি রচয়িতা। তার জনপ্রিয়তম উপন্যাসটি হলো নীলাঙ্গুরিয়। এছাড়াও তিনি অনেক কৌতুক ও রঙ্গরসের গল্পও লিখেছেন।
বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায়ের কৌতুক গল্পের বই বরযাত্রী'র ছয় বন্ধু গণশা, ঘোঁতনা, ত্রিলোচন, গোরাচাঁদ, রাজেন আর কে. গুপ্ত বাংলা রসসাহিত্যের পরিচিত চরিত্র। অল্প দু চার কথায় জীবন্ত চরিত্র সৃষ্টি করা বা একটা সমাজকে এরকম সুস্পষ্ট ভাবে তুলে ধরতেন বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায়। কৌতুক রসের এরকম বই হিসেবে বরযাত্রী সিরিজ বাংলা সাহিত্যে অনন্য। কৌতুক রসের তার আরেকটি বিখ্যাত সৃষ্টি রানু সিরিজের গল্পগুলি। কিন্তু বিভূতিভূষণের প্রতিভা ছিল বহুমুখী। ছোটদের জন্য পুজোসংখ্যায় তিনি নিয়মিত লিখেছেন, পোনুর চিঠি ও অন্যান্য নানান গল্প - যা পরিণত মনস্ক পাঠকেরাও পরম উৎসাহে পড়েছেন।
সাহিত্যকর্ম
সম্পাদনাউপন্যাস
সম্পাদনা- নীলাঙ্গু্রীয় (১৯৪২) (পরে এই উপন্যাসটি চিত্রাভিনীত হয় )
- স্বর্গাদপিগরীয়সী (১ম – ২য় – ৩য় খণ্ড) (১৯৪৫)
- নবসন্নাস (১৯৪৮)
- কাঞ্চন-মূল্য (পরে এই উপন্যাসটি চিত্রাভিনীত হয়) (১৯৫৬) (শরৎস্মৃতি পুরস্কার পান)
- নয়ন বৌ (১৯৫৭)
- রিকসার গান (১৯৫৯)
- মিলনান্তক (১৯৫৯)
- পঙ্ক পল্বল (১৯৬৪)
- ঊর্মি আহ্বান (১৯৬৫)
- অযাচী অন্ধানে (১৯৮৮)
- তোমারি ভরসা
- উত্তরায়ণ
- গোল গোবিন্দের কড়চা
- রূপ হল অভিশাপ
- কদম
- এবার প্রিয়ংবদা
গল্পসংকলন
সম্পাদনা- রানুর প্রথম ভাগ (এপ্রিল, ১৯৪৪)
- রানুর দ্বিতীয় ভাগ (১৩৪৫)
- রানুর তৃতীয় ভাগ (১৩৪৭)
- বর্ষায় (১৩৪৭)
- রানুর কথামালা (১৩৪৮)
- বসন্ত (১৩৪৮)
- শারদীয়া (১৩৪৮)
- বরযাত্রী (১৩৪৯)
- চৈতালী (১৩৫০)
- অতঃকিম (১৩৫০)
- হৈমন্তী (১৩৫১)
- কায়কল্প (১৩৫১)
- দৈনন্দিন (১৩৫২)
- হাতেখড়ি (১৩৫৪)
- কথাচিত্র (১৩৫৫)
- লঘুপাক (১৩৫৫)
- রূপান্তর (১৩৫৭)
- বাস্তব অবাস্তব (১৩৬১)
- হাসি ও অশ্রু (১৩৬২)
- মানস মিছিল (১৩৬৩)
- আনন্দনট (১৩৬৪)
- পরিচয় (১৩৬৮)
- কন্যা সুশ্রী স্বাস্থ্যবতী (১৩৬৯)
নাটক
সম্পাদনা- বিশেষ রজনী (১৩৫১)
- গণশার বিয়ে (১৩৫৯)
রম্যভ্রমণধর্মী রচনা
সম্পাদনা- দুয়ার হতে অদূরে
- কুশী প্রাঙ্গনের চিঠি
- একই পথের দুই প্রান্তে
- অযাত্রার জয়যাত্রা
শিশু সাহিত্য
সম্পাদনা- পোনুর চিঠি
- কৈলাশের পাঠরানী
- হেসে যাও (কবিতা)
- দুষ্টুলক্ষ্মীদের গল্প
- কিশোর রচনাসম্ভার
- কাব্যের মূলতত্ত্ব
- পৃথ্বীরাজ
আত্মজীবনী
সম্পাদনা- জীবন তীর্থ
সম্মাননা ও পুরস্কার
সম্পাদনা- সম্মান সূচক ডি.লিট উপাধি, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়।
- জগত্তারিণী সুবর্ণপদক, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়।
- আনন্দ পুরস্কার — ১৯৫৮ সালে।
- রবীন্দ্র পুরস্কার — ১৯৭২ সালে; এবার প্রিয়ম্বদা গ্রন্থের জন্য।
- শরৎ পুরস্কার — ১৯৮৭ সালে — কাঞ্চন-মূল্য গ্রন্থের জন্য।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান - প্রথম খণ্ড - সংশোধিত পঞ্চম সংস্করন - সাহিত্য সংসদ, কলকাতা
বহিঃসযোগ
সম্পাদনাএই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |