হরিয়ানা
হরিয়ানা (হিন্দি: हरियाणा হরিয়াণা, গুরুমুখী: ਹਰਿਆਣਾ হরিআণা, /hʌriˈɑːnə/; হিন্দুস্তানি: [ɦəɾɪˈjɑːɳɑː]) উত্তর ভারতের একটি স্থলবেষ্টিত রাজ্য। সুদূর অতীতে বর্তমান হরিয়ানা ভূখণ্ডটি উত্তর ভারতের কুরু রাজ্যের অন্তর্গত ছিল।[২][৩][৪] খ্রিষ্টীয় দ্বাদশ শতাব্দীতে অপভ্রংশ লেখক বিবুধ শ্রীধরের রচনায় হরিয়ানা নামটির উল্লেখ পাওয়া যায়।[৫] এই রাজ্যের উত্তরে পাঞ্জাব ও হিমাচল প্রদেশ এবং পশ্চিমে ও দক্ষিণে রাজস্থান অবস্থিত। পূর্বে যমুনা নদী উত্তরাখণ্ড ও উত্তরপ্রদেশ রাজ্যদ্বয়ের সঙ্গে হরিয়ানার সীমানা নির্ধারিত করেছে। দিল্লিকে উত্তর, পশ্চিম ও দক্ষিণ – এই তিন দিক থেকে বেষ্টন করে রয়েছে হরিয়ানা। এই কারণে হরিয়ানা রাজ্যের একটি বৃহৎ অংশ ভারতের জাতীয় রাজধানী অঞ্চলের অন্তর্গত। হরিয়ানার রাজধানী চণ্ডীগড় একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং পাঞ্জাব রাজ্যেরও রাজধানী। সংস্কৃত ভাষায় হরিয়ানা শব্দের অর্থ ঈশ্বরের নিবাস; এই শব্দটির বুৎপত্তি সংস্কৃত হরি (বিষ্ণুর অপর নাম) ও অয়ণ (নিবাস) শব্দদুটি থেকে। অপর একটি মতে, সংস্কৃত হরিৎ (সবুজ) শব্দ থেকে এই নামের উৎপত্তি; হরিয়ানা নামটি আসলে এই রাজ্যের বৃহৎ হরিৎ তৃণক্ষেত্রের দ্যোতক।[৬]
হরিয়ানা हरियाणा ਹਰਿਆਣਾ | |
---|---|
ভারতের রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল | |
উপর থেকে, বাম থেকে ডানে: গুরুগ্রামের সাইবার সিটি, পিঞ্জোর গার্ডেন, শাহ কুলি খানের সমাধি ও অর্জুন কুরুক্ষেত্র, আসিগড় ফোর্ট, ঘগ্গর নদী, সুরজকুন্ড হ্রদ। | |
ভারতের মানচিত্রে হরিয়ানার অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক (চণ্ডীগড়): ৩০°৪৪′ উত্তর ৭৬°৪৭′ পূর্ব / ৩০.৭৩° উত্তর ৭৬.৭৮° পূর্ব | |
রাষ্ট্র | ভারত |
অঞ্চল | উত্তর |
প্রতিষ্ঠা | ১ নভেম্বর ১৯৬৬ |
রাজধানী | চণ্ডীগড় |
বৃহত্তম শহর | ফরিদাবাদ |
জেলার সংখ্যা | ২১ |
সরকার | |
• শাসক | হরিয়ানা বিধানসভা |
• রাজ্যপাল | জগন্নাথ পাহাড়িয়া |
• মুখ্যমন্ত্রী | ভূপিন্দর সিং হুদা (ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস) |
• আইনসভা | এককক্ষীয় (৯০ আসন) |
• লোকসভা আসন | ১০ |
• হাইকোর্ট | পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট |
আয়তন | |
• ভারতের রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল | ৪৪,২১২ বর্গকিমি (১৭,০৭০ বর্গমাইল) |
এলাকার ক্রম | ২০শ |
• বনাঞ্চল | ১,৬৮৪ বর্গকিমি (৬৫০ বর্গমাইল) |
• জলাভূমি | ৩,৫৫০ বর্গকিমি (১,৩৭০ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• ভারতের রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল | ২,৫৩,৫৩,০৮১ |
• ক্রম | ১৬শ |
• জনঘনত্ব | ৫৭৩/বর্গকিমি (১,৪৮০/বর্গমাইল) |
• ঘনত্বের ক্রম | ১১শ |
• পৌর এলাকা | ৮৮,২১,৫৮৮ |
• গ্রামীণ | ১,৬৫,৩১,৪৯৩ |
ভাষা | |
• সরকারি | হিন্দি, পাঞ্জাবি[১] |
• আঞ্চলিক | হরিয়ানভি |
রাজ্য প্রতীক | |
• পাখি | ব্ল্যাক ফ্র্যাঙ্কোলিন |
• পশু | নীলগাই |
• ফুল | পদ্ম |
• গাছ | অশ্বত্থ |
সময় অঞ্চল | ভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+০৫:৩০) |
আইএসও ৩১৬৬ কোড | IN-HR |
যানবাহন নিবন্ধন | HR-xx |
মানব উন্নয়ন সূচি | ০.৬৪৪ (medium) |
মানব উন্নয়ন সূচি স্থান | ১৭শ (২০১১) |
লিঙ্গ অনুপাত | ৮৩৩♀/ ১০০০ ♂ |
সাক্ষরতা হার | ৭৬.৬৪ % |
লিঙ্গানুপাত | ৮৭৭ |
গড় আয়ু | ৬৬.২ |
জিডিপি | ₹৩,০৯৩.২৬ বিলিয়ন (২০১১-১২) |
মাথাপিছু জিডিপি | ₹১০৯,২২৭ (২০১১-১২) |
আর্থিক বৃদ্ধি | ৮.১ % |
ওয়েবসাইট | www |
সুপ্রাচীন কালে এই রাজ্যের ভূখণ্ডটি অধুনালুপ্ত সরস্বতী নদীর তীরে বিকশিত সিন্ধু সভ্যতা ও বৈদিক সভ্যতার একটি অংশ ছিল। ভারত-ইতিহাসের অনেক দিকনির্ণায়ক যুদ্ধ এই অঞ্চলেই সংঘটিত হয়। এগুলির মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখনীয় মহাভারতে উল্লিখিত কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ ও পানিপথের তিনটি যুদ্ধ। ব্রিটিশ আমলে হরিয়ানা ছিল ব্রিটিশ পাঞ্জাব প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত। ১৯৬৬ সালে ভাষার ভিত্তিতে ভারতের সপ্তদশ রাজ্য হিসেবে হরিয়ানার আবির্ভাব ঘটে। বর্তমানে এই রাজ্য দেশের অন্যতম প্রধান খাদ্যশস্য ও দুগ্ধ উৎপাদক। সমতল উর্বর জমি এবং গভীর নলকূপ ও সুপ্রসারিত সেচখাল ব্যবস্তার মাধ্যমে জলসেচের সুবিধা থাকায় কৃষি এই রাজ্যের বাসিন্দাদের প্রধান জীবিকা। ১৯৬০-এর দশকে ভারতে সবুজ বিপ্লবের মাধ্যমে খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্বনির্ভরতা আনার প্রয়াসের ক্ষেত্রেও হরিয়ানা রাজ্যের নাম বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য।
হরিয়ানা ভারতের অন্যতম ধনী রাজ্য। এই রাজ্যের মাথাপিছু আয় ৬৭,৮৯১ টাকা;[৭] যা ভারতে তৃতীয় সর্বাধিক। এছাড়া দেশের সর্বাধিক সংখ্যক গ্রামবাসী কোটিপতি এই রাজ্যে বাস করেন।[৮] ১৯৭০-এর দশক থেকেই এই রাজ্যে কৃষি ও শিল্পে বিশেষ উন্নতিসাধনের সূত্রপাত ঘটে। বর্তমানে হরিয়ানা শুধু ভারতেই নয়, সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সম্পদশালী অঞ্চল হিসেবে পরিগণিত হয়।[৯] ভারতে যাত্রীবাহী গাড়ি, দ্বিচক্রযান ও ট্রাক্টরের বৃহত্তম উৎপাদক হল হরিয়ানা।[১০] ২০০০ সাল থেকে এই রাজ্যের মাথাপিছু বিনিয়োগ দেশে সর্বাধিক।[১১] গুরগাঁও শহরটি বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তি ও অটোমোবাইল শিল্পকেন্দ্র হিসেবে সুনাম অর্জন করেছে। ভারতের বৃহত্তম অটোমোবাইল উৎপাদক মারুতি উদ্যোগ ও বিশ্বের বৃহত্তম দ্বিচক্রযান উৎপাদক হিরো হন্ডার প্রধান কেন্দ্র গুরগাঁওতে অবস্থিত। পানিপথ, পঞ্চকুলা যমুনানগর ও ফরিদাবাদও রাজ্যের অন্যতম শিল্পকেন্দ্র। পানিপথ রিফাইনারি দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম রিফাইনারি। এছাড়াও এই রাজ্যে পুরনো কিছু ইস্পাত ও বস্ত্রশিল্পকেন্দ্র বিদ্যমান।
হরিয়ানার অধিবাসী প্রধান জাতিগোষ্ঠীটি হল জাট।[১২][১৩][১৪][১৫] হরিয়ানার রাজনীতিও জাট জাতির দ্বারাই মূলত পরিচালিত হয়ে থাকে।[১৬] এরাজ্যের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলি হল ভারতীয় রাষ্ট্রীয় লোক দল, হরিয়ানা জনহিত কংগ্রেস, ভারতীয় জনতা পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টি ও ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস। রাজ্যে অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য আহীর, পাঞ্জাবি, গুজ্জর, আগরওয়াল, রোর, ব্রাহ্মণ, রাজপুত ও সাইনি।[১৫] হরিয়ানার জনসংখ্যার ৯০ শতাংশ হিন্দু, ৬.২ শতাংশ শিখ, ৪.০৫ শতাংশ মুসলমান এবং ০.১ শতাংশ খ্রিষ্টান।[১৫]
বুৎপত্তি
সম্পাদনানৃতাত্ত্বিকরা মনে করেন যে হরিয়ানা এই নামে পরিচিত ছিল। কারণ মহাভারত ও পরবর্তী সময়ে এখানে অভিরা বাস করত।[১৭] যিনি কৃষি শিল্পে বিশেষ দক্ষতা অর্জন করেছিলেন।[১৮] প্রাণ নাথ চোপড়ার মতে হরিয়ানার নাম অভিরায়ানা-অহিরায়ণ-হিরায়ানা-হরিয়ানা থেকে এসেছে।[১৯]
ইতিহাস
সম্পাদনাপ্রাচীন যুগ
সম্পাদনাহিসার জেলার রাখিগড়ী এবং ফতেহাবাদ জেলার ভিরানা গ্রামগুলি ৯০০০ বছরেরও বেশি পুরানো। এ গ্রামগুলো বিশ্বের বৃহত্তম ও প্রাচীনতম সিন্ধু উপত্যকা সভ্যতার স্থানগুলির একটি। এখানে পাকা রাস্তা, পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা, বড় আকারের বৃষ্টির জল সংগ্রহের ব্যবস্থা, পোড়ামাটির ইট ও মূর্তি রয়েছে। এছাড়াও দক্ষতার সাথে ধাতু কাজ (ব্রোঞ্জ ও মূল্যবান উভয় ধাতুতে) এর প্রমাণ পাওয়া যায়। প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে, রাখিগড়ী হতে পারে হরপ্পা সভ্যতার উৎপত্তিস্থল, যা হরিয়ানার ঘাগর অববাহিকায় উদ্ভূত হয়েছিল এবং ধীরে ধীরে সিন্ধু উপত্যকায় স্থানান্তরিত হয়েছিল।
বৈদিক যুগে হরিয়ানা ছিল কুরু রাজ্যের স্থান। ভারতের অন্যতম মহান মহাজনপদ । হরিয়ানার দক্ষিণে বৈদিক ব্রহ্মাবর্ত অঞ্চলের দাবিকৃত অবস্থান।[২১]
মধ্যযুগ
সম্পাদনাজৈন তীর্থঙ্করের প্রাচীন ব্রোঞ্জ ও পাথরের মূর্তিগুলি মধ্যযুগের স্মৃতি বহন করে। বাদলি, ভিওয়ানি (রানিলা, চরখি দাদরি ও বাধরা ), দাদরি, গুরগাঁও ( ফিরোজপুর ঝিরকা ), হানসি, হিসার, কাসান, নাহাদ, নারনউল, পেহোয়া, রোহাদ প্রত্নতাত্ত্বিক অভিযানে পাওয়া গেছে। রোহতক ( অস্থাল বোহর ) ও হরিয়ানার সোনিপত । [২২]
পুষ্যভূতি রাজবংশ ৭শতকে উত্তর ভারতের কিছু অংশ শাসন করেছিল যার রাজধানী ছিল থানেসার । হর্ষ রাজবংশের একজন বিশিষ্ট রাজা ছিলেন। তোমারা রাজবংশ ১০ শতকে দক্ষিণ হরিয়ানা অঞ্চলে শাসন করেছিল। টোমরাদের মধ্যে অনঙ্গপাল তোমর ছিলেন একজন বিশিষ্ট রাজা।[২৩]
১৩৯৮ সালে ভারতে তিমুরিদের বিজয়ের সময় ভাটনের দুর্গ বিজয় করার পর তৈমুর সিরসা, ফতেহাবাদ, সুনাম, কাইথাল ও পানিপথ শহর আক্রমণ করে এবং জয় করেন। তিনি যখন সরসুতি (সিরসা) শহরে পৌঁছেন, তখন এর বাসিন্দারা অমুসলিম হওয়ার কারণে বেশিরভাগই পালিয়ে যায়। কেননা তৈমুরের সৈন্যদের একটি দল তাদেরকে তাড়া করেছিল। সৈন্যরা তাদের হত্যা করে ও সম্পদ লুটপাট করে। সেখান থেকে তিনি ফতেহাবাদে যাত্রা করেন। সেখানকার বাসিন্দারা পালিয়ে যায় এবং শহরে থাকা বিপুল সংখ্যক লোককে হত্যা করা হয়। আহরুনিতে আহিররা তাকে প্রতিহত করেছিল কিন্তু পরাজিত হয়েছিল। তাদের হাজার হাজার লোক নিহত হয়েছিল এবং অনেককে বন্দী করা হয়েছিল। শহরটি পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে তিনি তোহানায় যাত্রা করেন। শরাফ-আদ-দিন আলী ইয়াজদির মতে, জাটরা তৈমুরের সৈন্যদের ডাকাত বলে উল্লেখ করে। তারা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলেও পরাজিত হয়ে পালিয়ে যায়। তৈমুরের সেনাবাহিনী ২০০ জন জাটকে তাড়া করে হত্যা করে এবং আরও অনেককে বন্দী করে। এরপর তিনি পালিয়ে যাওয়া জাটদের তাড়া করার জন্য একটি দল পাঠান এবং তাদের মধ্যে ২০০০ জনকে হত্যা করেন। তাদের স্ত্রী ও সন্তানদের ক্রীতদাস করা হয় এবং তাদের সম্পত্তি লুণ্ঠন করা হয়। তৈমুর কাইথালের দিকে অগ্রসর হন, যার বাসিন্দাদের গণহত্যা ও লুণ্ঠন করা হয়েছিল। পথের সমস্ত গ্রাম ধ্বংস করে দিয়েছিল। পরের দিন, তিনি আসান্দে আসেন যার বাসিন্দারা ইয়াজদির মতে "অগ্নিপূজক" ছিল এবং দিল্লিতে পালিয়ে গিয়েছিল। এরপর, তিনি তুঘলকপুর দূর্গ এবং সালওয়ান ভ্রমণ করেন। পানিপথে পৌঁছানোর আগে যার বাসিন্দারা ইতিমধ্যেই পালিয়ে গিয়েছিল। এরপর তিনি লনি দুর্গের দিকে অগ্রসর হন।[২৪][২৫]
দিল্লির যুদ্ধে ১৫৫৬ সালের ৭ অক্টোবর আকবরের মুঘল বাহিনীকে পরাজিত করার পর হেমু রাজকীয় মর্যাদা দাবি করেন এবং বিক্রমাদিত্যের প্রাচীন উপাধি গ্রহণ করেন। যে অঞ্চলটি এখন হরিয়ানা তা ভারতের কিছু প্রধান সাম্রাজ্য দ্বারা শাসিত হয়েছে। পানিপথ ভারতের ইতিহাসে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধের জন্য পরিচিত। পানিপথের প্রথম যুদ্ধে (১৫২৬), বাবর লোদিদের পরাজিত করেন। পানিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধে (১৫৫৬), আকবর দিল্লির স্থানীয় হরিয়ানভি হিন্দু সম্রাটকে পরাজিত করেন। যিনি রেওয়ারির অন্তর্গত ছিলেন। হেম চন্দ্র বিক্রমাদিত্য এর আগে পাঞ্জাব থেকে বাংলা পর্যন্ত ভারত জুড়ে ২২টি যুদ্ধে জিতেছিলেন। মুঘল ও আফগানদের পরাজিত করেছিলেন। ১৫৫৬ সালের ৭ অক্টোবর দিল্লির পুরাণ কুইলায় আনুষ্ঠানিক রাজ্যাভিষেকের মাধ্যমে হেমু ১৫৫৬ সালে আগ্রা এবং দিল্লির যুদ্ধে আকবরের বাহিনীকে দুবার পরাজিত করে ভারতের শেষ হিন্দু সম্রাট হন। পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধে (১৭৬১), আফগান রাজা আহমদ শাহ আবদালি মারাঠাদের পরাজিত করেন।[২৭]
ব্রিটিশ আমল
সম্পাদনারাজ্যটি ব্রিটিশ পাঞ্জাব প্রদেশের অংশ ছিল। পাঞ্জাব প্রদেশের দিল্লি বিভাগ হরিয়ানার সিংহভাগ গঠন করেছিল। রাজ্যে অবস্থিত রাজ্যগুলির মধ্যে ছিল জিন্দ, কলসিয়া, লোহারু, দুজানা ও পতৌদি। পাশাপাশি পাতিয়ালা রাজ্যের কিছু অংশ।
দেশভাগ ও পরবর্তী ঘটনা
সম্পাদনাভারত ভাগের সময় পাঞ্জাব প্রদেশটি ছিল দুটি ব্রিটিশ ভারতীয় প্রদেশের মধ্যে একটি। বাংলার পাশাপাশি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিভক্ত হয়েছিল। পাঞ্জাব প্রদেশের অন্যান্য হিন্দু ও শিখ অধ্যুষিত এলাকাগুলির সাথে হরিয়ানা পূর্ব পাঞ্জাব রাজ্য হিসাবে ভারতের অংশ হয়ে ওঠে। ফলস্বরূপ, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসলমান নবগঠিত দেশ পাকিস্তানে চলে যায়। একইভাবে, পশ্চিম পাঞ্জাব থেকে বিপুল সংখ্যক হিন্দু ও শিখ উদ্বাস্তু রাজ্যে প্রবেশ করে। গোপী চাঁদ ভার্গব, যিনি আধুনিক হরিয়ানার সিরসার বাসিন্দা, তিনি পূর্ব পাঞ্জাবের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হন।
হরিয়ানা গঠন
সম্পাদনা১ নভেম্বর ১৯৬৬-এ পঞ্জাব পুনর্গঠন আইন (১৯৬৬) এ একটি রাজ্য হিসাবে হরিয়ানা অস্তিত্ব লাভ করে। ভারত সরকার ২৩ এপ্রিল ১৯৬৬ সালে বিচারপতি জে সি শাহের নেতৃত্বে ‘শাহ কমিশন’ গঠন করে বর্তমান পাঞ্জাব রাজ্যকে বিভক্ত করতে এবং জনগণের কথ্য ভাষা বিবেচনা করে নতুন রাজ্য হরিয়ানার সীমানা নির্ধারণ করে। কমিশন ৩১ মে ১৯৬৬ তারিখে তার রিপোর্ট প্রদান করে যার মাধ্যমে তৎকালীন হিসার, মহেন্দ্রগড়, গুরগাঁও, রোহতক ও কর্নাল জেলাগুলিকে হরিয়ানার নতুন রাজ্যের একটি অংশ করে। সাঙ্গরুর জেলার জিন্দ এবং নারওয়ানার তহসিলগুলি - নারায়ণগড়, আম্বালা এবং জগধরি সহ - অন্তর্ভুক্ত করা হয়৷
কমিশন সুপারিশ করে খাররের তহসিল, যার মধ্যে চণ্ডীগড়, পাঞ্জাব রাজ্যের রাজধানী, হরিয়ানার একটি অংশ হওয়া উচিত। তবে খারর দেওয়া হয়েছে পাঞ্জাবকে। চণ্ডীগড় শহরটিকে একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করা হয়েছিল, যা পাঞ্জাব এবং হরিয়ানা উভয়েরই রাজধানী হিসেবে কাজ করে।
ভগবত দয়াল শর্মা হরিয়ানার প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হন ।
জনসংখ্যা
সম্পাদনাবছর | জন. | ±% |
---|---|---|
1901 | ৪৬,২৩,০৬৪ | — |
1911 | ৪১,৭৪,৬৭৭ | −৯.৭% |
1921 | ৪২,৫৫,৮৯২ | +১.৯% |
1931 | ৪৫,৫৯,৯১৭ | +৭.১% |
1941 | ৫২,৭২,৮২৯ | +১৫.৬% |
1951 | ৫৬,৭৩,৫৯৭ | +৭.৬% |
1961 | ৭৫,৯০,৫২৪ | +৩৩.৮% |
1971 | ১,০০,৩৬,৪৩১ | +৩২.২% |
1981 | ১,২৯,২২,১১৯ | +২৮.৮% |
1991 | ১,৬৪,৬৩,৬৪৮ | +২৭.৪% |
2001 | ২,১১,৪৪,৫৬৪ | +২৮.৪% |
2011 | ২,৫৩,৫১,৪৬২ | +১৯.৯% |
ধর্ম
সম্পাদনা২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে, হরিয়ানার মোট ২৫,৩৫০,০০০ জনসংখ্যার মধ্যে, হিন্দুরা (৮৭.৪৬%) রাজ্যের জনসংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং মুসলিম (৭.০৩%) (প্রধানত মেওস ) এবং শিখরা (৪.৯১%) বৃহত্তম সংখ্যালঘু।
মুসলমানদের প্রধানত নূহের মধ্যে পাওয়া যায়। পাঞ্জাবের পরে হরিয়ানায় ভারতে দ্বিতীয় বৃহত্তম শিখ জনসংখ্যা রয়েছে এবং তারা বেশিরভাগই পাঞ্জাব সংলগ্ন জেলাগুলিতে বাস করে, যেমন সিরসা, জিন্দ, ফতেহাবাদ, কাইথাল, কুরুক্ষেত্র, আম্বালা এবং পঞ্চকুলা ।[২৯][৩০]
ভাষা
সম্পাদনাহরিয়ানার সরকারি ভাষা হিন্দি ।[৩২] বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক ভাষা বা উপভাষা প্রায়শই হিন্দির অধীনে অন্তর্ভুক্ত করা হয় ও রাজ্যে কথা বলা হয়। তাদের মধ্যে প্রধান হল হরিয়ানভি (বাংরু নামেও পরিচিত), যার অঞ্চল হরিয়ানার মধ্য এবং পূর্ব অংশকে ঘিরে রয়েছে। উত্তর-পূর্বে হিন্দুস্তানি, পশ্চিমে বাগরি এবং দক্ষিণে আহিরবতী, মেওয়াতি ও ব্রজভাষা ভাষায় কথা বলা হয়।
হিন্দি ও হরিয়ানভির পরে পাঞ্জাবি সবচেয়ে বেশি কথ্য ভাষা।[৩২] এটি ২০১০ সালে সরকারী ও প্রশাসনিক উদ্দেশ্যে হরিয়ানার দ্বিতীয় সরকারি ভাষা হিসাবে স্বীকৃত।[৩৩] রাজ্যে উর্দুভাষীও অনেক। রাজ্য গঠনের পর তেলুগুকে রাজ্যের "দ্বিতীয় ভাষা" হিসাবে স্কুলে পড়ানো হয়। কিন্তু অফিসিয়াল যোগাযোগের জন্য এটি "দ্বিতীয় সরকারী ভাষা" নয়। ছাত্রদের অভাবের কারণে শেষ পর্যন্ত ভাষা শেখানো বন্ধ হয়ে যায়।[৩৪] পাঞ্জাবের সাথে রাজ্যের পার্থক্য দেখানোর জন্য ১৯৬৯ সালে তামিলকে দ্বিতীয় ভাষা করা হয়েছিল। যদিও সেই সময়ে হরিয়ানায় কোনও তামিল ভাষাভাষী ছিল না।[৩৫] ২০১০ সালে তামিল ভাষাভাষীদের অভাবের কারণে ভাষাটিকে তার মর্যাদা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।[৩৫]
বাংলা, ভোজপুরি, মারোয়ারি, মেওয়ারি, নেপালি এবং সারাইকির মতো প্রতিবেশী রাজ্য বা উপমহাদেশের অন্যান্য অংশের বেশ কয়েকটি প্রধান আঞ্চলিক ভাষার[৩৬] কথকও বাউরিয়া, বাজিগর, গুজরি, গাদে লোহার, ওদকি এবং সানসি প্রভৃতি অঞ্চল রয়েছে।[৩৭]
সংস্কৃতি
সম্পাদনাসঙ্গীত
সম্পাদনাহরিয়ানার নিজস্ব স্বতন্ত্র ঐতিহ্যবাহী লোকসংগীত, লোকনৃত্য, সাং (লোক নাট্য),[৩৮] সিনেমা,[৩৯] বিশ্বাস ব্যবস্থা যেমন জাথেরা (পৈতৃক পূজা),[৪০][৪১] এবং ফুলকারি ও শিশ সূচিকর্মের মতো শিল্পকলা রয়েছে।[৪১]
লোকনৃত্য
সম্পাদনাহরিয়ানার লোকসংগীত ও নৃত্য হরিয়ানাভি উপজাতিদের সাংস্কৃতিক চাহিদা প্রাথমিকভাবে কৃষিপ্রধান এবং সমর প্রকৃতির উপর ভিত্তি করে তৈরি।[৪২]
হরিয়ানভি বাদ্যযন্ত্র লোকনাট্যের প্রধান প্রকারগুলি হল সাং, রাসলীলা ও রাগিনী । থিয়েটারের সাং ও রাগিণী রূপটি জনপ্রিয় করেছিলেন লক্ষ্মী চাঁদ ।[৪২]
হরিয়ানভি লোক নৃত্য ও সঙ্গীতের দ্রুত গতিশীলতা রয়েছে। নাচের তিনটি জনপ্রিয় বিভাগ হল: মৌসুমি উৎসব, ভক্তিমূলক এবং বিনোদনমূলক আনুষ্ঠানিক। মৌসুমী উৎসবে নাচ ও গান হল গোগাজি/গুগ্গা, হোলি, ফাগ, সাওয়ান, তিজ । ভক্তিমূলক নৃত্য ও গান হল চৌপাইয়া, হোলি, মঞ্জিরা, রাস লীলা, রাগিনী )। বিনোদনমূলক আনুষ্ঠানিক নৃত্য এবং গানগুলি নিম্নলিখিত ধরনের: কিংবদন্তি সাহসিকতা ( পুরুষ যোদ্ধাদের কিসা, রাগিণী ও নারী সতীস ), প্রেম ও প্রণয় (বীন ও এর রূপ নাগিনী নৃত্য, এবং রাগিনী ), আনুষ্ঠানিক বিনোদন ( ধামাল নৃত্য, ঘূমর, ঝুমার ( পুরুষ), খোরিয়া, লুর এবং রাগিনী )।[৪০]
লোকসংগীত ও গান
সম্পাদনাহরিয়ানভি লোকসংগীত নিত্যচিন্তার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়। পার্থিব হাস্যরস দিয়ে গানের অনুভূতিকে প্রাণবন্ত করে তোলা হয়।[৪০] হরিয়ানভি সঙ্গীতের দুটি প্রধান রূপ: "শাস্ত্রীয় লোকসংগীত" এবং "দেশী লোকসংগীত" (হরিয়ানার সঙ্গীত)।[৪৩] প্রেম, বীরত্ব ও সাহসিকতা, ফসল কাটা, সুখ এবং বিচ্ছেদের যন্ত্রণার আকারে প্রেমীদের নিয়ে গান গাওয়া হয়।[৪২][৪৩][৪৪]
শাস্ত্রীয় হরিয়ানভি লোকসংগীত
সম্পাদনাশাস্ত্রীয় হরিয়ানভি লোক সঙ্গীত ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের উপর ভিত্তি করে তৈরি।[৪৩] হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় রাগগুলি, গুরু-শিষ্য ঐতিহ্যের ঘরানা পরম্পরায় শেখা হয়, যা বীরত্বের গান গাইতে ব্যবহৃত হয় (যেমন আলহা-খন্ড ( ১১৬৩-১২০২ CE) মহারানা উদয় সিং ২- এর আলহা, উদাল, জাইমাল এবং পাট্টার সাহসিকতা সম্পর্কে। ) ব্রাহ্মা পূজা ও উত্সব ঋতু গান (যেমন হোলির কাছাকাছি ফাল্গুন মাসের তিজ, হোলি ও ফাগ গান ) ।[৪৩][৪৪] সাহসী গান উচ্চ পিচে গাওয়া হয়।[৪২]
দেশি হরিয়ানভি লোকসংগীত
সম্পাদনাদেশি হরিয়ানভি লোকসংগীত, হরিয়ানভি সঙ্গীতের একটি রূপ, যা রাগ ভৈরব, রাগ কাফি, রাগ জয়জয়বন্তী, রাগ ঝিনঝোতি এবং রাগ পাহাড়ি -এর উপর ভিত্তি করে। মৌসুমী গান, ব্যালাড, আনুষ্ঠানিক গান (বিবাহ, ইত্যাদি) এবং ধর্মীয় পৌরাণিক কাহিনী যেমন পুরাণ ভগত গাইতে সম্প্রদায়ের বন্ধুত্ব উদযাপনের জন্য ব্যবহৃত হয়। )[৪৩][৪৪] প্রেম ও জীবন সম্পর্ক গানগুলি মাঝারি অনুষ্ঠানে গাওয়া হয়। আনুষ্ঠানিক এবং ধর্মীয় গান কম অনুষ্ঠানে গাওয়া হয়।[৪২] অল্পবয়সী মেয়েরা ও মহিলারা সাধারণত বিনোদনমূলক গান, ঋতু, প্রেম সম্পর্ক এবং বন্ধুত্ব সম্পর্কিত গান গায় যেমন ফাগন (নামহীন ঋতু/মাসের গান), কটক (নামহীন ঋতু/মাসের গান), সম্মান (নামহীন ঋতু/মাসের গান। ), বান্দে বান্দি (পুরুষ-মহিলা যুগল গান), সাথীনী (মহিলা বন্ধুদের মধ্যে আন্তরিক অনুভূতি ভাগ করে নেওয়ার গান)।[৪২] বয়স্ক মহিলারা সাধারণত ভক্তিমূলক মঙ্গল গীত (শুভ গান) এবং আনুষ্ঠানিক গান যেমন ভজন, ভাট (বধূ বা কনের মাকে তার ভাইয়ের দ্বারা বিবাহের উপহার), সাগাই, বান (হিন্দু বিবাহের আচার যেখানে প্রাক-বিবাহের উত্সব শুরু হয়), কুয়ান গায়। -পূজন (একটি প্রথা যা একটি শিশুর জন্মকে স্বাগত জানাতে কূপ বা পানীয় জলের উত্সের পূজা করে), সাঁঝি এবং হোলি উত্সব।[৪২]
সামাজিকভাবে আদর্শিক-সমন্বিত প্রভাব
সম্পাদনাহরিয়ানভি জনগণের জন্য সঙ্গীত এবং নৃত্য হল সামাজিক পার্থক্য দূর করার একটি দুর্দান্ত উপায়। কারণ লোকজন গায়কদের অত্যন্ত সম্মান করে এবং তাদের যোগ্যতা বা অবস্থা অনুযায়ী অনুষ্ঠান ওবিশেষ অনুষ্ঠানের জন্য তাদের খোঁজ করা হয় এবং আমন্ত্রণ জানানো হয়। এই আন্তঃবর্ণের গানগুলি সবার কাছে গ্রহণীয়। কোনও নির্দিষ্ট বর্ণের জন্য কখনই ব্যক্তিগত হয় না, এবং এগুলি বিভিন্ন স্তর, বর্ণ, উপভাষার মহিলাদের দ্বারা সম্মিলিতভাবে গাওয়া হয়। এই গানগুলির উপভাষা, শৈলী, শব্দ ইত্যাদিতে সরলভাবে রূপান্তরিত করে। হরিয়ানভি গানে বলিউডের সিনেমার গানের সুর গ্রহণ থেকে এই দত্তক শৈলী দেখা যায়। এই ক্রমাগত সরল প্রকৃতির রূপান্তর সত্ত্বেও, হরিয়ানভি গানগুলির নিজস্ব একটি স্বতন্ত্র স্টাইল রয়েছে যেমন উপরে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।[৪২]
শহুরে গুরগাঁও (গুরুগ্রাম) হরিয়ানার আর্থ-সামাজিক সংস্কৃতির উত্থানের সাথে সাথে মানুষের সংস্কৃকি এবং শহরের সৌন্দর্যায়নে সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণও প্রত্যক্ষ করছে। গুরগাঁও জুড়ে বেশ কয়েকটি ভাস্কর্য এবং চিত্র দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছে। এটি সাংস্কৃতিক সমন্বিত মতাদর্শ এবং হরিয়ানার লোকেদের মধ্যে একটি জীবন্ত অনুভূতির সাক্ষ্য দেয়।[৪৫]
রন্ধনপ্রণালী
সম্পাদনাএক সমীক্ষা অনুসারে, হরিয়ানার ১৩% পুরুষ এবং ৭.৮% মহিলা আমিষভোজী।[৪৬] আঞ্চলিক রন্ধনপ্রণালীতে রয়েছে রোটি, সাগ, নিরামিষ সবজি ও ঘি, দুধ, লস্যি এবং খিরের মতো দুধের খাবার ।
সমাজ
সম্পাদনাহরিয়ানভি জনগণের " ৩৬ জাতি " বা সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজের ধারণা রয়েছে। জাট, রাজপুত, গুর্জর, সাইনি, পাসি, আহির, রোর, মেভ, বিষ্ণোই , হরিজন, আগরওয়াল, ব্রাহ্মণ, খত্রী এবং ত্যাগী প্রভৃতি জাতি এই ৩৬ জাতীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য।[৪৭][৪৮]
ভূগোল
সম্পাদনাহরিয়ানা উত্তর ভারতের একটি স্থলবেষ্টিত রাজ্য। এটি ২৭°৩৯' থেকে ৩০°৩৫' উত্তর অক্ষাংশ ও ৭৪°২৮' এবং ৭৭°৩৬' দ্রাঘিমাংশের মধ্যে। [৪৯] রাজ্যের মোট ভৌগোলিক আয়তন হল ৪.৪২ মিটার হেক্টর, যা দেশের ভৌগোলিক এলাকার ১.৪%। হরিয়ানার উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৭০০ থেকে ৩৬০০ ফুট এর মধ্যে (২০০ মিটার থেকে ১২০০ মিটার) হরিয়ানার মাত্র ৪% (জাতীয় ২১.৮৫% ) বনভূমির অধীনে রয়েছে।[৫০] করোহ পিক, ১,৪৬৭-মিটার (৪,৮১৩ ফু) বৃহত্তর হিমালয় পর্বতমালার শিবালিক পর্বতশ্রেণীর লম্বা পর্বতশৃঙ্গটি পঞ্চকুলা জেলার মর্নি পাহাড় এলাকার কাছে অবস্থিত। এটি হরিয়ানার সর্বোচ্চ বিন্দু।[৫১][৫২][৫৩] রাজ্যের বেশিরভাগ অংশ উর্বর পাঞ্জাব সমভূমির উপরে অবস্থিত, যা ইন্দো-গাঙ্গেয় সমভূমির একটি উপধারা। হরিয়ানার[৫৪] সীমান্তে ৪টি রাজ্য এবং ২টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল রয়েছে - পাঞ্জাব, রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ, দিল্লি এবং চণ্ডীগড়।
সমভূমি এবং পর্বতমালা
সম্পাদনাহরিয়ানার চারটি প্রধান ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। [৪৯]
- যমুনা - ঘগ্গার সমভূমি রাজ্যের বৃহত্তম অংশ গঠন করে তাকে দিল্লি দোয়াবও বলা হয় যা সুতলজ-ঘাগর দোয়াব (উত্তরে পাঞ্জাবের সুতলুজ এবং উত্তর হরিয়ানার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ঘাগর নদীর মধ্যে), ঘাগর-হাকড়া দোয়াব (ঘগ্গার নদী এবং হাকড়ার মধ্যবর্তী) দৃষদ্বতী নদী যা পবিত্র সরস্বতী নদীর প্যালিও চ্যানেল) এবং হাকড়া-যমুনা দোয়াব (হাকড়া নদী ও যমুনার মধ্যে)।
- হিমালয়ের পাদদেশে উত্তর-পূর্বে নিম্ন শিবালিক পাহাড়
- দক্ষিণ- পশ্চিমে বাগার ট্র্যাক্ট আধা-মরুভূমি শুষ্ক বালুকাময় সমভূমি। আরও দেখুন: বাঙ্গার এবং খাদির ।
- আরাবলি রেঞ্জের উত্তরের সবচেয়ে নিম্ন উত্থান দক্ষিণে বিচ্ছিন্ন অবিচ্ছিন্ন আউটফরপস
হাইড্রোগ্রাফি
সম্পাদনা{{{location}}}-এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য | |||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
মাস | জানু | ফেব্রু | মার্চ | এপ্রিল | মে | জুন | জুলাই | আগস্ট | সেপ্টে | অক্টো | নভে | ডিসে | বছর |
[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] |
{{{location}}}-এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য | |||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
মাস | জানু | ফেব্রু | মার্চ | এপ্রিল | মে | জুন | জুলাই | আগস্ট | সেপ্টে | অক্টো | নভে | ডিসে | বছর |
[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] |
Wildlife
সম্পাদনাপ্রশাসন
সম্পাদনাবিভাগ
সম্পাদনাআরও দেখুন
সম্পাদনা- হরিয়ানার জাতীয় গুরুত্বের স্মৃতিস্তম্ভের তালিকা
- হরিয়ানার রাজ্য সুরক্ষিত স্মৃতিস্তম্ভের তালিকা
- হরিয়ানার লোকদের তালিকা
- হরিয়ানার রূপরেখা
- হরিয়ানার রাজনীতি
- হরিয়ানায় পর্যটন
- হরিয়ানভি সিনেমা
- হরিয়ানার মহাসড়কের তালিকা
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Punjabi gets second language status in Haryana"। Zee News। ২৮ জানুয়ারি ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ২৭ মে ২০১০।
- ↑ Kautilya describes them as martial and most heroic, while Panini includes among them the Kauravyas, the ancient warrior community of Haryana. It would thus appear that the main force of Chandragupta's liberation army was recruited from Punjab and Haryana. As Haryana or the ancient Kuru janapada....., Page 33, "Haryana, ancient and medieval" by H. A. Phadke, Publisher Harman Pub. House, 1990, আইএসবিএন ৮১-৮৫১৫১-৩৪-২, 9788185151342
- ↑ Chapter Kuru Janapada (Pages 2, 3 & 7) of the book "Buddhist remains from Haryana", by Devendra Handa, Edition illustrated, Publisher Sundeep Prakashan, 2004 Original from the University of Michigan, Digitized 3 Sep 2008
- If the Buddhist texts are to be relied upon, it may be said that Buddhism reached Haryana through the Buddha himself. (Page 3)
- Dipavamsa refers to Buddha's visit to a city in the Kuru country where he received alms on the banks of the Anotatta lake which he crossed. The city may have been Kurukshetra..... (Page 3)
- We shall see subsequently that Agroha was an important Buddhist centre of Haryana.....Buddhaghosha's candid confession that even a single monastery could not be set up in the Kuru country during the lifetime of Tathagata who was obliged to stay in the hermitage of a Brahmana.... (Page 7)
- ↑ The ancient Kuru janapada is said to have comprised Kurukshetra, Thanesar, Karnal, Panipat, Sonipat....., Page 115, "Buddhist sites and shrines in India: history, art and architecture", Volume 231 of Bibliotheca Indo-Buddhica by D. C. Ahir, Publisher Sri Satguru Publications, 2003, আইএসবিএন ৮১-৭০৩০-৭৭৪-০, 9788170307747
- ↑ An Early Attestation of the Toponym Ḍhillī, by Richard J. Cohen, Journal of the American Oriental Society, 1989, p. 513-519
- हरियाणए देसे असंखगाम, गामियण जणि अणवरथ काम|
- परचक्क विहट्टणु सिरिसंघट्टणु, जो सुरव इणा परिगणियं|
- रिउ रुहिरावट्टणु बिउलु पवट्टणु, ढिल्ली नामेण जि भणियं|
- Translation: There are countless villages in Haryana country. The villagers there work hard. They don't accept domination of others, and are experts in making the blood of their enemies flow. Indra himself praises this country. The capital of this country is Dhilli.
- ↑ Haryāna - Britannica Online Encyclopedia
- ↑ Haryana to construct 6000 rooms for games
- ↑ "Poor rural India? It's a richer place - International Herald Tribune"। ১৩ জুলাই ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০১০।
- ↑ Byres, T.J.। Rural labour relations in India। Taylor & Francis, 1999। আইএসবিএন 071468046X, 9780714680460
|আইএসবিএন=
এর মান পরীক্ষা করুন: invalid character (সাহায্য)। - ↑ "Government of India portal"। ৭ অক্টোবর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০১০।
- ↑ IndianExpress.com :: Haryana Hurricane
- ↑ Hukum Singh Pawar (Pauria):The Jats - Their Origin, Antiquity and Migration. 1993, আইএসবিএন ৮১-৮৫২৫৩-২২-৮ {{আইএসবিএন}} এ প্যারামিটার ত্রুটি: চেকসাম
- ↑ Encyclopædia Britannica article on Punjab
- ↑ Willuweit S., Roewer L. (2007), 'Y chromosome haplotype reference database (YHRD): Update', Forensic Science International: Genetics 1(2), 83-7.
- ↑ ক খ গ Haryana-online.com ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৯ অক্টোবর ২০১০ তারিখে, Haryana people.
- ↑ Book by Ghansyam Shah on cast and politics , Google book store
- ↑ Lal, Muni (১৯৭৪)। Haryana: On High Road to Prosperity (ইংরেজি ভাষায়)। Vikas Publishing House। আইএসবিএন 978-0-7069-0290-7।
- ↑ Punia, Bijender K. (১৯৯৪)। Tourism Management: Problems and Prospects (ইংরেজি ভাষায়)। APH Publishing। আইএসবিএন 978-81-7024-643-5।
- ↑ Chopra, Pran Nath (১৯৮২)। Religions and Communities of India (ইংরেজি ভাষায়)। Vision Books। আইএসবিএন 978-0-391-02748-0।
- ↑
- ↑ "The Tribune, Chandigarh, India - Haryana Plus"। The Tribune। ৩১ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ আগস্ট ২০১৬।
- ↑ Atul Kumar Sinha ও Abhay Kumar Singh 2007।
- ↑ "Explained: The legacy of Tomar king Anangpal II and his connection with Delhi"। The Indian Express। ২২ মার্চ ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ৬ মে ২০২১।
- ↑ Elliot, Sir Henry Miers; Dowson, John (১৮৭১)। The History of India, as Told by Its Own Historians. The Muhammadan Period: Ed. from the Posthumous Papers of the Late Sir H. M. Elliot ..। Trübner and Company। পৃষ্ঠা 427–31।
- ↑ Phadke, H.A. (১৯৯০)। Haryana, Ancient and Medieval। Harman Publishing House। পৃষ্ঠা 123।
- ↑ Sarkar 1960।
- ↑ Arnold P. Kaminsky; Roger D. Long (২০১১)। India Today: An Encyclopedia of Life in the Republic। ABC-CLIO। পৃষ্ঠা 300। আইএসবিএন 978-0-313-37462-3। ১৯ জুন ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।
- ↑ "Population by religion community - 2011"। Census of India, 2011। The Registrar General & Census Commissioner, India। ২৫ আগস্ট ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "Haryana government announced the formation of rules to register Anand Karaj, the Sikh marriage ceremony"। ১৫ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জুলাই ২০১৪।
- ↑ Govt. of India, Census (২০০১)। "Census India 2001" (পিডিএফ)। ১৩ নভেম্বর ২০১১ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মার্চ ২০১৩।
- ↑ "Archived copy"। সংগ্রহের তারিখ ১১ অক্টোবর ২০২০।
- ↑ ক খ "Report of the Commissioner for linguistic minorities: 50th report (July 2012 to June 2013)" (পিডিএফ)। Commissioner for Linguistic Minorities, Ministry of Minority Affairs, Government of India। পৃষ্ঠা 11। ৮ জুলাই ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ ডিসেম্বর ২০১৬।
- ↑ "Haryana grants second language status to Punjabi"। Hindustan Times। ২৮ জানুয়ারি ২০১০। ৫ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ Bhatia, Varinder (৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯)। "Haryana's South connect: When it made Telugu second language in school"। The Indian Express। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মার্চ ২০২০।
- ↑ ক খ Bharadwaj, Ajay (৭ মার্চ ২০১০)। "Punjabi edges out Tamil in Haryana"। DNA India।
- ↑ Bengali and Bhojpuri are listed as they have more than 50,000 speakers each according to the 2011 census; the rest are included following Ethnologue.
- ↑ "India – Languages"। Ethnologue (22nd সংস্করণ)। SIL International। ২০১৯। ১ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ Sachchidananda Encyclopaedic Profile of Indian Tribes Volume 1 - 1996 817141298X p416.
- ↑ Bhatia, Sheveta (১৭ আগস্ট ২০১০)। "Second Innings"। The Indian Express। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মার্চ ২০১১।
- ↑ ক খ গ "Journal of Punjab Studies - Center for Sikh and Punjab Studies - UC Santa Barbara"। global.ucsb.edu। ৩ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ ডিসেম্বর ২০১৭।
- ↑ ক খ A Glossary of the tribes & castes of Punjab by H. A Rose
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ Manorma Sharma, 2007, Musical Heritage of India, Page 65-125.
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ S. C. Bhatt and Gopal K. Bhargava, 2006, Land and People of Indian States and Union Territories: 21 Arts and Crafts of Haryana.
- ↑ ক খ গ S. Gajrani, 2004, History, Religion and Culture of India, Volume 1, Page 96.
- ↑ Patra, Pratyush (২৫ মার্চ ২০১৬)। "Artists give Gurgaon's walls a makeover"। The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ৬ নভেম্বর ২০১৯।
- ↑ "Most Indians are non-vegetarian, Southern and Northeastern states top the list: Report"। Business Today। ২২ মে ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০২০।
- ↑ Sāṅgavāna, Guṇapālasiṃha (১৯৮৯)। Harayāṇavī lokagītoṃ kā sāṃskr̥tika adhyayana (হিন্দি ভাষায়)। Hariyāṇā Sāhitya Akādamī। পৃষ্ঠা 17।
- ↑ "Social study the KhapPanchayats of Haryana: A Survey, International Journal of Research in Social Sciences Vol. 7 Issue 11" (পিডিএফ)। Open J-Gage as well as in Cabell's Directories of Publishing Opportunities, U.S.A।
- ↑ ক খ NIDM।
- ↑ "Haryana State Budget 2017-18" (পিডিএফ)। Haryana Finance Dept। ২২ আগস্ট ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ অক্টোবর ২০১৭।
- ↑ "Hills of Morni"। hillsofmorni.com। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪। ১৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০১৬।
- ↑ "Interesting Facts About Haryana"। quickgs.com। ৭ মে ২০১৫। ১২ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০১৬।
- ↑ "Gazetteer of India"। University of Chicago। ৫ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০১৬।
- ↑ Current, Affairs (১২ ডিসেম্বর ২০২১)। "Haryana Gk Questions"। Current Affairs (ইংরেজি ভাষায়)। ৮ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জানুয়ারি ২০২২।