আকবর
জালালউদ্দিন মুহাম্মদ আকবর (নাস্তালিক: جلال الدین محمد اکبر) মুঘল সাম্রাজ্যের তৃতীয় সম্রাট, যিনি ১৫৫৬ থেকে ১৬০৫ খ্রিষ্টাব্দ অব্দি রাজত্ব করেন। পৃথিবীর ইতিহাসে ইনি মহান শাসকদের অন্যতম হিসেবে মহামতি আকবর নামেও পরিচিত। পিতা সম্রাট হুমায়ুনের মৃত্যুর পর ১৫৫৬ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে আকবর ভারতের শাসনভার গ্রহণ করেন। বৈরাম খানের তত্ত্বাবধানে তিনি সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় সাম্রাজ্য বিস্তার করতে থাকেন। ১৫৬০ সালে বৈরাম খাঁকে সরিয়ে আকবর নিজে সকল ক্ষমতা দখল করেন। কিন্তু আকবর ভারতবর্ষ ও আফগানিস্তানে তার সাম্রাজ্য বিস্তার চালিয়ে যান। ১৬০৫ সালে তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত প্রায় সমস্ত উত্তর ভারত তার সাম্রাজ্যের অধীনে চলে আসে। আকবরের মৃত্যুর পর তার পুত্র সম্রাট জাহাঙ্গীর ভারতবর্ষের শাসনভার গ্রহণ করেন ও সাম্রাজ্য বিস্তারে মনোনিবেশ করেন।
আকবর | |||||
---|---|---|---|---|---|
মহামতি আকবর | |||||
![]() মনোহার দ্বারা ১৬ শতকের শেষ ভাগে আঁকা আকবরের প্রতিকৃতি | |||||
৩য় মোঘল সম্রাট | |||||
রাজত্ব | ১১ ফেব্রুয়ারি ১৫৫৬ – ২৭ অক্টোবর ১৬০৫[১][২] | ||||
রাজ্যাভিষেক | ১৪ ফেব্রুয়ারি ১৫৫৬[১] | ||||
পূর্বসূরি | হুমায়ুন | ||||
উত্তরসূরি | জাহাঙ্গীর | ||||
রাজপ্রতিভূ | বৈরাম খাঁ (১৫৫৬–১৫৬১) | ||||
জন্ম | জালালুদ্দিন মুহাম্মদ আকবর ১৫ অক্টোবর ১৫৪২[ক] | ||||
মৃত্যু | ২৭ অক্টোবর ১৬০৫ ফতেহপুর সিক্রি, আগ্রা | (বয়স ৬৩)||||
সমাধি | |||||
পত্নীগণ | মরিয়ম-উজ-জামানি বেগম রুকাইয়া সুলতান বেগম সেলিমা সুলতান বেগম বেগম রাজ কানয়ারি বাই বেগম নাথি বাই কুশমিয়া বানু বেগম বিবি দৌলত শাদ বেগম রাজিয়া সুলতান বেগম আরোও পাঁচজন স্ত্রী | ||||
বংশধর | হাসান হুসাইন জাহাঙ্গীর মুরাদ দানিয়াল আরাম বানু বেগম শাকার-উন-নিসা বেগম শেহজাদী খানুম | ||||
| |||||
রাজবংশ | মুঘল রাজবংশ | ||||
পিতা | হুমায়ুন | ||||
মাতা | হামিদা বানু বেগম | ||||
ধর্ম | দীন-ই-ইলাহি[৪] |
পারিবারিক জীবনসম্পাদনা
সাম্রাজ্যের রাজপুতদের সাথে সুসম্পর্ক রাখার স্বার্থে আকবর বিভিন্ন রাজবংশের রাজকন্যাদের বিয়ে করেন। তবে তার স্ত্রীদের মধ্যে সবচাইতে আলোচিত হলেন যোধা বাঈ[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
আকবরের শাসন ব্যবস্থাসম্পাদনা
আমলাতন্ত্রসম্পাদনা
রাজ্য শাসনের জন্য আকবর আমলাতন্ত্র চালু করেন এবং প্রদেশগুলোকে স্বায়ত্বশাসন দান করেন। আকবরের আমলাতন্ত্র বিশ্বের সবথেকে ফলপ্রসূ আমলাতন্ত্রের মধ্যে অন্যতম। তিনি প্রত্যেক অঞ্চলে সামরিক শাসক নিয়োগ দেন। প্রত্যেক শাসক স্বশাসিত প্রদেশের সেনাবাহিনীর দায়িত্বে ছিলেন। সম্রাট আকবর শাসিত সাম্রাজ্যে ক্ষমতার অপব্যবহারের শাস্তি ছিল একমাত্র মৃত্যুদন্ড।
অর্থনীতিসম্পাদনা
রাজপুতদের সাথে সম্পর্কসম্পাদনা
আকবর বুঝতে পেরেছিলেন, যে রাজপুতরা শত্রু হিসাবে প্রবল, কিন্তু মিত্র হিসাবে নির্ভরযোগ্য। আকবরের শাসনকালে তিনি রাজপুতদের সাথে সন্ধি করার প্রয়াস করেছিলেন। কিছুটা যুদ্ধের দ্বারা, এবং অনেকটাই বিবাহসূত্রের দ্বারা তিনি এই প্রয়াসে সফল হয়েছিলেন। আমেরের রাজা ভরমল কন্যা জোধাবাঈ এর সাথে তার বিবাহ হয়। ভরমলের পুত্র রাজা ভগবান দাস আকবরের সভায় নবরত্নের একজন ছিলেন। ভগবন দাসের পুত্র রাজা মান সিংহ আকবরের বিশাল সেনাবাহিনীর প্রধান সেনাপতি ছিলেন। রাজা টোডর মল ছিলেন আকবরের অর্থমন্ত্রী। আরেক রাজপুত, বীরবল, ছিলেন আকবরের সবচেয়ে কাছের বন্ধু ও প্রিয়পাত্র। বেশিরভাগ রাজপুত রাজ্য যখন আকবরের অধীনে চলে আসছে, তখন একমাত্র মেওয়ারের রাজপুত রাজা মহারানা উদয় সিংহ মুঘলদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। চিতোরের পতনের পর তিনি উদয়পুর পালিয়ে গিয়েছিলেন এবং সেখান থেকে রাজপুতদের একত্রিত করতে চেষ্টা করেন। তার পুত্র মহারানা প্রতাপ সিংহ সারা জীবন মুঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলেন। প্রতাপ আকবরের আনুগত্য মেনে না নিলেও, চিত্ত্বর দুর্গে আকবর আক্রমণ করার পর তারা পালিয়ে যায় এবং উদয়পুরে রাজ্য স্থাপন করে। এবং রাজপুতদের কখনো একত্রিতও করতে পারেনি। এছাড়াও প্রতাপ সিং চিত্ত্বর দুর্গ পুনঃরুদ্ধার করতে পারেনি। মেবারের রাজপুতরাই একমাত্র রাজপুত জাত যারা রাজ্য হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে তবুও আকবরের প্রতি আনুগত্য মেনে নেয় নি। আকবর প্রতাপের বোন কওম কে বিয়ে করতে চেয়েছেন কিন্ত পারেননি।
বাংলা শাসন ব্যবস্থাসম্পাদনা
আকবরের ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গিসম্পাদনা
আকবর তার নিজস্ব ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গী থেকে দীন-ই-ইলাহি নামক ধর্ম চালু করার চেষ্টা করেন।
দীন-ই-এলাহির প্রাথমিক শিষ্যরা হলো, আকবরের সময়কালে (পৃ. ১৮৬):
- বিরবল
- যুবরাজ সেলিম
- আবুল ফজল ইবন মুবারক
- যুবরাজ মুরাদ
- কাশিম খান
- আজম খান
- শেখ মুবারাক
- আবদুস সামাদ
- মোল্লা শেখ মোহাম্মদ শাহাদাত
- সুফি আহমেদ
- মির শরিফ আমল
- সুলতান খাজা
- মির্জা সদরুদ্দিন
- তাকি সুস্তার
- শেখজাদা গোসলা বেনারসি
- সদর জাহান
- সদর জাহানের প্রথম ছেলে
- সদর জাহানের দ্বিতীয় ছেলে
- শেখ ফয়েজি
- জাফর বেগ
- আকবরের আমলের শিল্পকলা ও স্থাপত্য : শিল্পকলার ইতিহাসেও আকবরের আমল এক স্মরণীয় অধ্যায় । তার আমলে বহু প্রাসাদ , সমাধি , উদ্যান ও দুর্গ নির্মিত হয় । তার আমলে যে শিল্পরীতি গড়ে ওঠে তাতে ভারতীয় ও পারসিক শিল্পরীতির মিশ্রণ লক্ষ করা যায় । তার আমলে নির্মিত ফতেপুর সিক্রি , সেলিম চিস্তির সমাধি , দেওয়ান - ই - আম , দেওয়ান - ই - খাস , জামি মসজিদ , বুলন্দ দরওয়াজা , হুমায়ুনের সমাধি , সেকেন্দ্রার সমাধি ভবন মােগল শিল্পের উল্লেখযােগ্য উদাহরণ । ফতেপুর সিক্রির স্থাপত্য - সৌন্দর্যকে ফাগুসন মহৎ প্রাণের প্রতিবিম্ব ’ বলে অভিহিত করেছেন । ডঃ স্মিথ - এর মতে , তা হল ‘ পাথরে নির্মিত কল্পনা ও স্বপ্ন ’ । চিত্রশিল্পের ক্ষেত্রেও আকবরের রাজত্বকাল এক উল্লেখযােগ্য অধ্যায় । চিত্রশিল্পের প্রসারের জন্য তিনি আবদুস সামাদ - এর নেতৃত্বে একটি স্বতন্ত্র বিভাগ স্থাপন করেন । তার আমলে চিত্রশিল্পে হিন্দু - মুসলিম সংস্কৃতির অপূর্ব সমন্বয় পরিলক্ষিত হয় । তিনি প্রায় একশাে জন হিন্দু - মুসলিম শিল্পীর পৃষ্ঠপােষকতা করতেন । তার আমলের ১৭ জন বিখ্যাত শিল্পীর মধ্যে ১৩ জনই ছিলেন হিন্দু । হিন্দু শিল্পীদের মধ্যে বিখ্যাত ছিলেন তারাচাঁদ , জগন্নাথ , যশােবন্ত প্রমুখ । তারা পারসিক গল্প , রামায়ণ - মহাভারত ও আরব্য উপন্যাসের নানাবিধ কাহিনি চিত্রে রূপায়িত করতেন ।
আকবরের নবরত্ন সভাসম্পাদনা
আকবরের সভাসদদের মধ্যে নবরত্ন হিসেবে যারা ইতিহাসখ্যাত হয়ে আছেন,
চিত্রশালাসম্পাদনা
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ ক খ Eraly, Abraham (২০০৪)। The Mughal Throne: The Saga of India's Great Emperors। Phoenix। পৃষ্ঠা 115, 116। আইএসবিএন 9780753817582।
- ↑ "Akbar (Mughal emperor)"। Encyclopedia Britannica Online। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জানুয়ারি ২০১৩।
- ↑ Smith 1917, পৃ. 18–19
- ↑ Eraly, Abraham (২০০০)। Emperors of the Peacock Throne : The Saga of the Great Mughals। Penguin books। পৃষ্ঠা 189। আইএসবিএন 9780141001432।
- ↑ "Akbar"। The South Asian। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মে ২০০৮।
বহিঃসংযোগসম্পাদনা
সম্রাট আকবর মনসবদারী প্রথা চালু করেন
- Akbar
- Akbar's Reign
- গুটেনবের্গ প্রকল্পে Akbar, Emperor of India, by Richard von Garbe, translated by Lydia G. Robinson
- The Mughals: Akbar
- The Mughal Emperor Akbar : World of Biography
- Photos of Akbar The Great's Final resting place
পূর্বসূরী: সম্রাট হুমায়ুন |
মুঘল সম্রাট ১৫৫৬–১৬০৫ |
উত্তরসূরী: সম্রাট জাহাঙ্গীর |
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |
উদ্ধৃতি ত্রুটি: "lower-alpha" নামক গ্রুপের জন্য <ref>
ট্যাগ রয়েছে, কিন্তু এর জন্য কোন সঙ্গতিপূর্ণ <references group="lower-alpha"/>
ট্যাগ পাওয়া যায়নি