ভারতের বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানসমূহের তালিকা
২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের হিসেব অনুযায়ী, ভারতে ইউনেস্কো স্বীকৃত বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের সংখ্যা 4২।[১] ১৯৭২ সালের ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য সনদের বর্ণনা অনুযায়ী এই স্থানগুলি সাংস্কৃতিক অথবা প্রাকৃতিক ঐতিহ্যের দিক থেকে বিশেষ গুরুত্বসম্পন্ন।[২] ১৯৭২ সালের ১৭ অক্টোবর থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত ইউনেস্কোর একটি সাধারণ সম্মেলনের পর ১৯৯৭ সালের ১৭ নভেম্বর বিশ্বের সাংস্কৃতিক ও প্রাকৃতিক ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলি সংরক্ষণার্থে উক্ত সনদটি গৃহীত হয়েছিল।
আগ্রা ফোর্ট ও অজন্তা গুহা সর্বপ্রথম ভারতের বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মর্যাদা পায়। ১৯৮৩ সালে সপ্তম বিশ্ব ঐতিহ্য অধিবেশনে উক্ত স্থানদুটি বিশ্ব ঐতিহ্যের মর্যাদা লাভ করেছিল। পরবর্তী বছরগুলিতে আরও ৩০টি স্থানের নাম এই তালিকায় যুক্ত হয়। ২০১৪ সালে বিশ্ব ঐতিহ্য স্বীকৃতিপ্রাপ্ত গ্রেট হিমালয়ান জাতীয় উদ্যান দেশের সাম্প্রতিকতম বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান।.[৩] ভারতের ৩২টি বিশ্ব ঐতিহ্য কেন্দ্রের মধ্যে ২৫টি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এবং অবশিষ্ট ৭টি প্রাকৃতিক কেন্দ্র। এছাড়াও আরও ৫০টি কেন্দ্রের নাম ভারত সম্ভাব্য বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকার অন্তর্ভুক্ত করেছে।[১][৪]
বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের অবস্থান
সম্পাদনাঐতিহ্যবাহী স্থানগুলির তালিকা
সম্পাদনানিম্নলিখিত সারণিতে প্রতিটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হল:
- নাম: বাংলা নাম ও বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির তালিকাভুক্ত ইংরেজি নাম (বন্ধনীতে)
- অঞ্চল: সংশ্লিষ্ট রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের নাম
- সময়কাল: প্রাচীনত্ব, সাধারণত নির্মাণকাল
- ইউনেস্কো তথ্য: কেন্দ্রের রেফারেন্স সংখ্যা; বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতিলাভের বছর; যে বিভাগে স্বীকৃতিলাভ: (i) থেকে (vi) বিভাগের মধ্যে হলে সাংস্কৃতিক এবং (vii) থেকে (x) বিভাগের মধ্যে হলে প্রাকৃতিক
- বর্ণনা: কেন্দ্রটির সাধারণ বর্ণনা
- † চিহ্নিত কেন্দ্রগুলি "বিপন্ন"
১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দে মানস বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যকে বিপন্ন ঘোষণা কতা হলেও ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে বিপদমুক্ত বলে ঘোষণা করা হয়।[৫] ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে হাম্পির মন্দিরগুলিকে বিপন্ন বলে ঘোষণা করা হলেও সফল ভাবে সংরক্ষণ করার পরে ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে এই তালিকা থেকে অপসারণ করা হয়।[৬][৭]
ক্রম | নাম | চিত্র | অঞ্চল | সময়কাল | ইউনেস্কো তথ্য | বর্ণনা |
---|---|---|---|---|---|---|
০১ | কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যান, অসম (Kaziranga Wild Life Sanctuary, Assam) |
অসম, ভারত | বিংশ শতাব্দী | 337; 1985; ix, x | কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যান ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য অসমের ব্রহ্মপুত্র নদের ডান তীরের প্লাবন সমভূমিতে অবস্থিত। ১৯৮৫ সালে এর অদ্বিতীয় প্রাকৃতিক পরিবেশের কারণে এই বনাঞ্চল ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী কেন্দ্রের মর্যাদা লাভ করে। ১৯০৮ সালে গণ্ডারদের বিপন্ন প্রজাতিটিকে রক্ষা করার জন্য সংরক্ষিত বনাঞ্চল হিসেবে এই উদ্যান প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তী বছরগুলিতে এই বনাঞ্চল বিভিন্ন পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়। ১৯১৬ সালে এই বনের নাম হয় "কাজিরাঙা গেম স্যাংচুয়ারি"। ১৯৫০ সালে এই বনের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় কাজিরাঙা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। ১৯৭৪ সালে অভয়ারণ্যটি জাতীয় উদ্যানের মর্যাদা পায়। কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানের আয়তন ৪২,৯৯৬ হেক্টর (১,০৬,২৫০ একর)। এই উদ্যান ভারতীয় একশৃঙ্গী গণ্ডারের বৃহত্তম আবাসস্থল। গণ্ডার ছাড়াও একাধিক প্রজাতির স্তন্যপায়ী ও পাখি এই জাতীয় উদ্যানে বাস করে।[৮][৯][১০] | |
০২ | মানস বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, অসম (Manas Wild Life Sanctuary, Assam) |
অসম, ভারত | বিংশ শতাব্দী | 338; 1985; vii, ix, x | মানস বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য অসমে অবস্থিত। এই অভয়ারণ্যের আয়তন ৫০,০০০ হেক্টর (১,২০,০০০ একর)। এটি হিমালয়ের পাদদেশে ভুটান সীমান্তে মানস নদী সমভূমিতে ভুটানের মানস বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের নিকট অবস্থিত। ১৯৮৫ সালে এর অদ্বিতীয় প্রাকৃতিক পরিবেশের কারণে এই বনাঞ্চল ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী কেন্দ্রের মর্যাদা লাভ করে। এই অভয়ারণ্যে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষ, ২১টি বিপন্ন প্রজাতি সহ মোট ৫৫টি স্তন্যপায়ী প্রজাতি, ৩৬টি সরীসৃপ প্রজাতি, ৩টি উভচর প্রজাতি ও ৩৫০টি পক্ষী প্রজাতি। বিপন্ন প্রজাতিগুলির মধ্যে রয়েছে বাঘ, পিগমি হগ, মেঘলা চিতা, স্লথ বেয়ার, ভারতীয় গণ্ডার, বুনো মহিষ, ভারতীয় হাতি, গোল্ডেন লেঙ্গুর ও বেঙ্গল ফ্লোরিকান। ১৯০৭ সালে এটি সংরক্ষিত বন ঘোষিত হয়। ১৯২৮ সালে এটি অভয়ারণ্য ঘোষিত হয়। ১৯৭৩ সালে "ব্যাঘ্র প্রকল্প"-এর অংশ রূপে এটিকে "ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্র" (টাইগার রিজার্ভ) ঘোষণা করা হয়। ১৯৮৫ সালের ডিসেম্বর মাসে এটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মর্যাদা পায়। বার্মা বর্ষণ অরণ্য ক্যাটেগরির ২৮৫টি প্রজাতির ডিকোটিলেডন ও ৯৮টি প্রজাতির মনোকোটিলেডন বৃক্ষ এখানে দেখা যায়। ১৯৯২ সালে এই কেন্দ্রটি "বিপন্ন বিশ্ব ঐতিহ্য" তালিকাভুক্ত হয়েছিল।[১১][১২][১৩] | |
০৩ | বুদ্ধগয়ার মহাবোধি মন্দির চত্বর (Mahabodhi Temple Complex at Bodh Gaya, Bihar) |
বিহার, ভারত | খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দী এবং খ্রিষ্টীয় পঞ্চম ও ষষ্ঠ শতাব্দী | 1056 rev; 2002; i,ii, iii, iv, vi | বুদ্ধগয়ার মহাবোধি মন্দির চত্বর ৪.৮৬ হেক্টর (১২.০ একর) জায়গা জুড়ে প্রসারিত। এটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকা (i) বিভাগে বিশেষ সাংস্কৃতিক ও পুরাতাত্ত্বিক গুরুত্বসম্পন্ন কেন্দ্র। মহামতি অশোক খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে (২৬০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ নাগাদ) মন্দিরের পশ্চিমে অবস্থিত বোধিবৃক্ষটিকে Ficus religiosa কেন্দ্র করে প্রথম মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন। যদিও বর্তমান মন্দিরটি খ্রিষ্টীয় পঞ্চম ও ষষ্ঠ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে নির্মিত। মন্দিরটি ইষ্টকনির্মিত। কথিত আছে, ৫৩১ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে ৩৫ বছর বয়সে সিদ্ধার্থ গৌতম এখানেই বোধি বা বুদ্ধত্ব লাভ করেন। এরপর তিনি বৌদ্ধধর্ম প্রচার শুরু করেছিলেন। এই কারণে বৌদ্ধদের নিকট জায়গাটি অত্যন্ত পবিত্র। বিগত কয়েক শতাব্দীকাল ধরে তাই এই মন্দিরটি বৌদ্ধদের সর্বোচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন উপাসনা কেন্দ্র। সারা বিশ্ব থেকে বৌদ্ধরা এখানে তীর্থ করতে আসেন। ৫০ মিটার উচ্চ এই মন্দিরটি ভারতীয় স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত। এটি "ভারতের সুবর্ণ যুগ" নামে পরিচিত গুপ্তযুগে নির্মিত ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীনতম মন্দির। অশোকের সমসাময়িক (খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দী) মন্দিরের সূক্ষাগ্র ক্ষুদ্র স্তম্ভশ্রেণি মন্দির চত্বরের অভ্যন্তরস্থ পুরাতত্ত্ব সংগ্রহালয়ে রক্ষিত আছে।[১৪][১৫] | |
০৪ | হুমায়ুনের সমাধিস্থল, দিল্লি (Humayun’s Tomb, Delhi) |
দিল্লি, ভারত | ১৫৭০ | 232, (ii), (iv) | দিল্লিতে অবস্থিত হুমায়ুনের সমাধিস্থল প্রথম সমাধিক্ষেত্র যেটি কৃত্রিম জলধারা সংবলিত কোনো বিলাসবহুল উদ্যানের মধ্যস্থলে নির্মিত হয়। এই সমাধি প্রায় শতাব্দীকাল পরে নির্মিত তাজমহলের উত্তরসূরি। ১৫৭০ সালে নির্মিত এই সমাধিস্থলের নাম ১৯৯৩ সালে এর সাংস্কৃতিক গুরুত্বের কারণে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্মারক তালিকায় অধিভুক্ত হয়। ১৫৬৯-৭০ সালে মুঘল সম্রাট হুমায়ুনের বিধবা পত্নী বিগা বেগম (হাজি বেগম) এটি নির্মাণ করান। কথিত আছে, মির্জা গিয়াথ এটি নির্মাণ করেছিলেন। ছত্রী সহ এই সমাধির দুই-গম্বুজবিশিষ্ট স্থাপত্যশৈলীটি মুঘল স্থাপত্যের একটি অনন্য নিদর্শন। এই সমাধিস্থলটি "মুঘল রাজবংশের সমাধিক্ষেত্র" নামেও পরিচিত। কারণ, হুমায়ুনের সমাধি ছাড়াও এই সমাধি চত্বরে রাজপরিবারের প্রায় ১৫০ সদস্যের সমাধি অবস্থিত। সমাধিক্ষেত্রটি চার-বাগ বা চতুষ্কোণ। এখানে দুটি সিংহদরজা রয়েছে, একটি দক্ষিণে ও অপরটি পশ্চিমে। সমাধিক্ষেত্রের মধ্যে বেশ কয়েকটি কৃত্রিম জলধারা, একটি প্যাভিলিয়ন ও একটি স্নানাগার আছে। সমাধিটি অসম অষ্টভূজ প্ল্যাটফর্মের উপর অবস্থিত। ডোমটির উচ্চতা ৪২.৫ মিটার। পুরো সমাধিটি শ্বেতপাথরে আবৃত ও ছত্রী শোভিত।[১৬][১৭] | |
০৫ | কুতুব মিনার ও সংলগ্ন স্মারকসমূহ, দিল্লি (Qutb Minar and its Monuments, Delhi) |
দিল্লি, ভারত | দ্বাদশ শতাব্দীর শেষভাগ | 233, (iv) | কুতুব মিনার ও সংলগ্ন স্মারকসমূহ দিল্লির দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত। এই চত্বরের কেন্দ্রে রয়েছে কুতুব মিনার। লাল বেলেপাথরে নির্মিত এই মিনারটির উচ্চতা ৭২.৫ মিটার (২৩৮ ফু)। মিনারটির ব্যাস পাদদেশে ১৪.৩২ মিটার (৪৭.০ ফু) ও শীর্ষদেশে ২.৭৫ মিটার (৯.০ ফু)। ত্রয়োদশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে এই মিনারের নির্মাণকার্য সমাপ্ত হয়। মিনার চত্বরে কয়েকটি পথ, আলাই দরওয়াজা (১৩১১), আলাই মিনার (একটি অসমাপ্ত মিনারের স্তুপ, এটি নির্মাণের কথা থাকলেও, নির্মাণকার্য সমাপ্ত হয়নি), কুব্বত-উল-ইসলাম মসজিদ (ভারতের সেই প্রাচীনতম মসজিদগুলির অন্যতম, যেগুলি অদ্যাবধি বর্তমান), ইলতুতমিসের সমাধি এবং একটি লৌহস্তম্ভ রয়েছে। একাধিক হিন্দু ও জৈন মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ দিয়ে এই মিনার নির্মিত হয়। অনুমিত হয়, ভারতে ইসলামি শাসনের প্রথম ভাগে বহিরাগত আক্রমণে এই সব মন্দিরগুলি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছিল। চত্বরের কেন্দ্রস্থলে ৭.০২ মিটার (২৩.০ ফু) উচ্চতাবিশিষ্ট যে চকচকে লৌহস্তম্ভটি রয়েছে, তাতে একটুও মরচে ধরেনি। এই লৌহস্তম্ভে সংস্কৃত ভাষায় দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের একটি লেখ রয়েছে। ১১৯২ সালে কুতুবউদ্দিন আইবক এই মিনার নির্মাণের কাজ শুরু করেন। ইলতুতমিসের রাজত্বকালে (১২১১-৩৮) মিনারের কাজ শেষ হয়। পরে আলাউদ্দিন খিলজির রাজত্বকালে (১২৯৬-১৩১৬) এই চত্বরে আরও কতকগুলি নির্মাণকার্য হয়। পরবর্তীকালেও বজ্রপাতে মিনারটি ক্ষতিগ্রস্থ হলে শাসকেরা সেটির সংস্কার করেছিলেন। ইসলামি স্থাপত্য ও শিল্পসৌকর্যের এক অনবদ্য প্রতিফলন হিসেবে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকার ক্যাটেগরি (iv)-এর অধীনে এই চত্বর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মর্যাদা লাভ করে।[১৮][১৯] | |
০৬ | লালকেল্লা চত্বর (Red Fort Complex) |
দিল্লি, ভারত | ১৫৪৬ | 231rev, (i),(ii), (iii), (vi) | লালকেল্লা চত্বর পঞ্চম মুঘল সম্রাট শাহজাহান (১৬২৮-৫৮) কর্তৃক সপ্তদশ শতাব্দীতে নির্মিত একটি প্রাসাদ দুর্গ। এটি তার নতুন রাজধানী শাহজাহানাবাদের একটি অংশ ছিল। লালকেল্লা দিল্লির উত্তর অংশে অবস্থিত। মুঘল শাসনের গৌরবের প্রতিনিধি এই কেল্লা মুঘল স্থাপত্য, শিল্পসৌকর্য ও সৃষ্টিশীলতার স্বর্ণযুগের একটি নিদর্শন। পারসিক, তৈমুরি ও ভারতীয় স্থাপত্যের সংমিশ্রণে এই দুর্গ নির্মিত হয়। কথিত আছে, পারসিক রাজধানী ইসফাহান লালকেল্লা চত্বর নির্মাণের পশ্চাতে অনুপ্রেরণা রূপে কাজ করে। দুর্গের নকশাটি জটিল। প্যাভিলিয়ন গঠনশৈলীর জাল-আকার জ্যামিতিক নকশায় এই দুর্গ নির্মিত। পরবর্তীকালে রাজস্থান, দিল্লি, আগ্রা ও অন্যান্য অঞ্চলের বহু স্থাপত্য নির্মিত হয় এই জাতীয় নকশায়। দুর্গটি লাল বেলেপাথরের প্রাকার দ্বারা বেষ্টিত। এই কারণে এটি লালকেল্লা নামে পরিচিত। ১৫৪৬ সালে ইসলাম শাহ সুরি যে সেলিমগড় দুর্গ নির্মাণ করেন, তা এই দুর্গের ঠিক গায়েই ছিল। বর্তমানে উক্ত দুর্গটির লালকেল্লারই একটি অংশ। সমগ্র দুর্গ চত্বরের আয়তন ১২০ একর। এটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকার সংশোধিত অভিলিখনের (i), (ii), (iii) ও (iv) ক্যাটেগরির অন্তর্গত। ১৬৩৯ থেকে ১৮৪৮ সালের মধ্যবর্তী সময়ে নির্মিত ৬৫৬ মিটার (২,১৫২ ফু)x৩২৮ মিটার (১,০৭৬ ফু) আয়তনের এই কেল্লার সর্বোচ্চ উচ্চতা ২৩ মিটার (৭৫ ফু)। এটি যমুনা নদীর ডান তীরে অবস্থিত। নদীর পুরাতন খাতের উপর একটি সেতুর মাধ্যমে এই কেল্লা সেলিমপুর দুর্গের সঙ্গে যুক্ত ছিল। বর্তমানে সেতুটি শহরের একটি রাস্তার রূপ নিয়েছে। দুর্গ চত্বরের প্রাসাদটি দেওয়ান-ই-আমের (গণ দরবার কক্ষ) পিছনে অবস্থিত। এই প্রাসাদে অনেকগুলি উচ্চমানের কারুকার্যখচিত শ্বেতপাথরের প্রাসাদ প্যাভিলিয়ন রয়েছে। এগুলি 'নহর-ই-বেহেস্ত' নামে কৃত্রিম জলধারার দ্বারা পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত থাকত। এই অংশেই ছিল দেওয়ান-ই-খাস (ব্যক্তিগত দরবার কক্ষ), কয়েকটি অন্যান্য দরকারি ব্যক্তিগত ভবন ও স্থাপনা, এবং সম্রাট আওরঙ্গজেব নির্মিত মোতি মসজিদ।[২০][২১] | |
০৭ | গোয়ার গির্জা ও কনভেন্টসমূহ (Churches and Convents of Goa) |
গোয়া, ভারত | ষোড়শ-অষ্টাদশ শতাব্দী | 232; 1986; (ii)(iv)(vi) | গোয়ার গির্জা ও কনভেন্টসমূহ বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকার (ii), (iv) ও (vi) ক্যাটেগরি অনুযায়ী ১৯৮৬ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক স্বীকৃতি লাভ করে। ষোড়শ থেকে অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী অংশে গোয়ার পর্তুগিজ ঔপনিবেশিক শাসকেরা এগুলি নির্মাণ করেন। এগুলির মধ্যে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাটি হল বোম যিশুর গির্জা। সেন্ট ফ্রান্সিস-জেভিয়ারের সমাধি এই গির্জাতেই অবস্থিত। গোয়ার এই স্মারকগুলি "প্রাচ্যের রোম" নামে পরিচিত। ক্যাথলিক মিশনারিদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এই স্মারকগুলি এশিয়ায় খ্রিষ্টধর্ম প্রচারের নিদর্শন। প্রকৃতপক্ষে ৬০টি গির্জা এখানে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে গোয়া ভেলহা শহরের অদ্যাবধি বিদ্যমান সাতটি স্মারক হল সেন্ট ক্যাথরিনের চ্যাপেল, অ্যাসিসির সেন্ট ফ্রান্সিসের গির্জা ও কনভেন্ট, দ্য ক্যাথিড্রাল, বোম যিশুর গির্জা, সেন্ট গ্যাগটান ও তার সেমিনারি, আওয়ার লেডি অফ দ্য রোজারি ও সেন্ট অগাস্টাইন কনভেন্ট। এগুলি ১৫৭২ সালে নির্মিত হয়। এই স্মারকগুলি এশিয়া অঞ্চলে ম্যানুলিন, ম্যানারিস্ট ও ব্যারোক স্থাপত্যশৈলীর পূর্বসূরি। স্মারকগুলি ল্যাটেরাইট মৃত্তিকায় নির্মিত এবং এগুলির দেওয়াল ভাঙা শামুক মেশানো চুনাপাথর মর্টার দিয়ে প্লাস্টার করা। এই কারণে ক্ষয় নিবারণে বর্ষাকালে এগুলির অত্যধিক দেখভালের প্রয়োজন হয়ে পড়ে।[২২][২৩] | |
০৮ | চম্পানের-পাওয়াগড় প্রত্নতাত্ত্বিক উদ্যান (Champaner-Pavagadh Archaeological Park, Gujarat) |
গুজরাত, ভারত | প্রাগৈতিহাসিক এবং অষ্টম-চতুর্দশ শতাব্দী | 1104; 2004; iii, iv, v, vi | চম্পানের-পাওয়াগড় প্রত্নতাত্ত্বিক উদ্যান গুজরাত রাজ্যের পাঁচমহল জেলায় অবস্থিত। ২০০৪ সালে প্রাকৃতিক ক্ষেত্র হিসেবে এটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মর্যাদা লাভ করে। এখানে অনেক অখননকৃত পুরাতাত্ত্বিক, ঐতিহাসিক ও জীব-সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সম্পত্তি রয়েছে। এই মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে রয়েছে কয়েকটি প্রাগৈতিহাসিক (ক্যালকোলিথিক) কেন্দ্রও। এছাড়া রয়েছে একটি প্রাচীন হিন্দু রাজধানী দুর্গশহর এবং ষোড়শ শতাব্দীর গুজরাতের রাজধানীও। এছাড়াও এই অঞ্চলে অষ্টম থেকে চতুর্দশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী পর্যায়ে নির্মিত অনেক অন্যান্য ধ্বংসাবশেষ, দুর্গ, প্রাসাদ, ধর্মীয় স্থাপনা, ধ্বংসপ্রাপ্ত আবাসস্থল, কৃষি স্থাপনা, জলের উৎস ইত্যাদি রয়েছে। পাওয়াগড় পাহাড়ের চূড়ায় কালিকামাতা মন্দির একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। এখানে সারাবছর প্রচুর পূণ্যার্থীর ভিড় হয়। এই প্রাচীন শহরটিই একমাত্র প্রাক-মুঘল শহর যা সম্পূর্ণ অবিকৃত অবস্থায় অদ্যাবধি বিদ্যমান।[২৪][২৫] | |
০৯ | হাম্পি স্মারকসমূহ (Group of Monuments at Hampi) |
বেলারি জেলা, কর্ণাটক, ভারত | চতুর্দশ-ষোড়শ শতাব্দী | 241 ; 1986; (i)(iii)(iv) | হাম্পি স্মারকসমূহ হল উত্তর কর্ণাটকের মনোরম অথচ বিলাসবহুল হাম্পি শহরের স্মারকসমষ্টি। হাম্পিতে বিজয়নগর সাম্রাজ্যের অধুনালুপ্ত রাজধানী বিজয়নগরের ধ্বংসাবশেষ অবস্থিত। এই শহরের চারিদিকে ছড়িয়ে আছে দ্রাবিড় মন্দির ও প্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ। চতুর্দশ ও ষোড়শ শতাব্দীর মধ্যবর্তী পর্যায়ে যে সকল পর্যটক ভারতে এসেছিলেন, তার এই মন্দির ও প্রাসাদগুলির প্রশংসা করেন। হাম্পি একটি গুরুত্বপূর্ণ হিন্দু ধর্মীয় কেন্দ্রও বটে। এখানে বিরুপাক্ষ মন্দির সহ একাধিক স্মারক অবস্থিত। এই স্মারকগুলি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকার (i), (iii) ও (iv) ক্যাটেগরি অনুযায়ী সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মর্যাদাপ্রাপ্ত।[২৬][২৭] | |
১০ | পট্টডাকাল স্মারকসমূহ (Group of Monuments at Pattadakal) |
বিজাপুর জেলা, কর্ণাটক জেলা, ভারত | ষষ্ঠ শতাব্দী | 239 ; 1984; (i)(iii)(vi) | পট্টডাকাল স্মারকসমূহ ১৯৮৭ সালে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকার অন্তর্ভুক্ত হয়। এখানে নয়টি গুরুত্বপূর্ণ হিন্দু মন্দির ও একটি জৈন মঠ বিদ্যমান। এর মধ্যে বিরূপাক্ষ মন্দিরটি ৭৪০ খ্রিষ্টাব্দে রানি লোকমহাদেবী তার স্বামীর দক্ষিণ ভারত বিজয় উপলক্ষে নির্মাণ করান। এটি একটি অনবদ্য স্থাপত্য নিদর্শন। এই মন্দির ছাড়াও এখানকার আইহোল, বাদামি ও পট্টডাকালে ষষ্ঠ শতাব্দীর চালুক্য রাজবংশ নির্মিত একাধিক মন্দির বিদ্যমান। সপ্তম শতাব্দীতে পল্লবরা বাদামী অধিকার করলে শেষোক্ত শহরটি কিছুকালের জন্য চালুক্য রাজ্যের রাজধানী হয়েছিল। এখানকার মন্দিরগুলি উত্তর ও দক্ষিণ ভারতীয় স্থাপত্যরীতির এক অনবদ্য মিশ্রণ। পট্টডাকাল একটি হিন্দু তীর্থস্থল। এখানে আটটি শিব মন্দির ও একটি শৈব মঠ বিদ্যমান। চত্বরের মধ্যেই পাপনাথ মন্দির ও একটি জৈন মন্দির অবস্থিত।[২৮][২৯] | |
১১ | সাঁচীর বৌদ্ধ স্মারকসমূহ (Buddhist Monuments at Sanchi, Madhya Pradesh) |
মধ্যপ্রদেশ, ভারত | খ্রিষ্টপূর্ব প্রথম ও দ্বিতীয় শতাব্দী | 524; 1989; (i)(ii)(iii)(iv)(vi) | সাঁচীর বৌদ্ধ স্মারকসমূহ হল মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের রাজধানী ভোপাল থেকে ৪৫ কিলোমিটার (২৮ মা) দূরে সাঁচী নামক স্থানে অবস্থিত কয়েকটি বৌদ্ধ স্থাপনা। এগুলি খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় ও প্রথম শতাব্দীতে নির্মিত হয়। কোনো কোনো মতে, খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দী মৌর্য সম্রাট অশোকের রাজত্বকালে এই স্মারকগুলি গড়ে উঠেছিল। এই স্মারকস্থলের প্রধান দ্রষ্টব্য স্তুপ ১ গড়ে উঠেছিল খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় ও প্রথম শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে। খ্রিষ্টীয় দ্বাদশ শতাব্দী পর্যন্ত এগুলি ছিল সক্রিয় বৌদ্ধ মঠ। এই মঠপ্রাঙ্গনে অনেক মনোলিথিক স্তম্ভ, প্রাসাদ, মন্দির ও বিভিন্ন ধরনের মঠ দেখা যায়। ১৯৮৯ সালের ২৪ জানুয়ারি ইউনেস্কো কর্তৃক এই কেন্দ্রটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মর্যাদা লাভ করে। ১৮১৮ সালে পরিত্যক্ত অবস্থায় এই স্মারকগুলি আবিষ্কৃত হয়। এরপর পুরাতাত্ত্বিক খননকার্য চালিয়ে এখানে ৫০টি অনন্য স্থাপনার সন্ধান পাওয়া যায়।[৩০][৩১][৩২] | |
১২ | ভীমবেটকা প্রস্তরক্ষেত্র (Rock Shelters of Bhimbetka, Madhya Pradesh) |
মধ্যপ্রদেশ, ভারত | ১০০,০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ-১০০০ খ্রিষ্টাব্দ | 925; 2003; (iii) (v) | ভীমবেটকা প্রস্তরক্ষেত্র সম্পর্কে ইউনেস্কো অভিলিখনে বলা হয়েছে, "এই স্থান চত্বরটি... প্রাকৃতিক রক শেল্টারের মধ্যে প্রস্তর চিত্রকলার এক অসাধারণ ভাণ্ডার।" মধ্যভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের বিন্ধ্য পর্বতমালার পাদদেশে এই প্রস্তরক্ষেত্র অবস্থিত। ১৮৯৩ হেক্টর এলাকায় বেলেপাথরের আধারের উপর এই প্রস্তরক্ষেত্র প্রসারিত। মূল বাফার এলাকাটির আয়তন ১০,২৮০ হেক্টর (২৫,৪০০ একর)। ১৯৫৭ সালে এই প্রস্তরক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়। এখানে "পাঁচটি প্রস্তরক্ষেত্র অংশে" "মেসোলিথিক যুগ থেকে ঐতিহাসিক যুগ পর্যন্ত" সময়ের চিত্রকলা রক্ষিত আছে। পার্শ্ববর্তী ২১টি গ্রামের লোকঐতিহ্যে এই চিত্রকলার প্রভাব সুস্পষ্ট। শ্বাপদসঙ্কুল গভীর অরণ্যের মধ্যে ৪০০টি চিত্রিত প্রস্তরক্ষেত্রে এই অনন্য প্রস্তরশিল্পের নজির ধরা আছে। এই ক্ষেত্রগুলি ১০০,০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ থেকে ১০০০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যবর্তী বিভিন্ন সময়ে নির্মিত হয়। প্রাচীনকালের শিকারী মানুষের অর্থনীতির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত এই চিত্রকলায় মানুষ ও প্রকৃতির মধ্যবর্তী সম্পর্কটি প্রদর্শিত হয়েছে। এই কারণে ২০০৩ সালে ইউনেস্কো এটিকে এক অনন্য সাংস্কৃতিক সম্পত্তি রূপে বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকার অন্তর্ভুক্ত করেন।[৩১][৩৩][৩৪] | |
১৩ | খাজুরাহোর স্মারকসমূহ (Kajuraho Group of Monuments, Madhya Pradesh) |
মধ্যপ্রদেশ, ভারত | ৯৫০-১০৫০ খ্রিষ্টাব্দ | 240; 1986; (i) (iii) | খাজুরাহো স্মারকসমূহ রাজপুত বংশোদ্ভুত চান্দেলা রাজবংশ কর্তৃক ৯৫০ থেকে ১০৫০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে নির্মিত। এই সময়টি ছিল উক্ত রাজবংশের শাসনের স্বর্ণযুগ। বর্তমানে এই স্মারকসমূহের যে সকল স্থাপনাগুলি টিকে আছে সেগুলি হিন্দু ও জৈন ধর্মস্থান। এগুলির স্থাপত্যশৈলীর নানান স্থাপত্যশৈলীর বিস্ময়কর মিশ্রণ দেখা যায়। এই স্থাপত্যের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন কন্দরিয়া মন্দির। ৬ বর্গকিলোমিটার আয়তনবিশিষ্ট মন্দির চত্বরে নির্মিত ৮৫টি মন্দিরের মধ্যে মাত্র ২২টি মন্দিরই অদ্যাবধি বিদ্যমান। এই মন্দিরগুলি দশম শতাব্দীতে চান্দেলা রাজত্বকালে নির্মিত হয়। অধুনা মধ্যপ্রদেশে অবস্থিত এই কেন্দ্র ১৯৮২ সালের ১৫ অক্টোবর ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকার অন্তর্ভুক্ত হয় দ্বাদশ শতাব্দীর মুসলমান আক্রমণের পূর্বে চান্দেলা সংস্কৃতির অনন্য ও মৌলিক শিল্পসৌকর্যের নিদর্শন ও প্রমাণ একটি সাংস্কৃতিক সম্পত্তি হিসেবে।[৩৫][৩৬] | |
১৪ | অজন্তা গুহাসমূহ (Ajanta Caves) |
মহারাষ্ট্র, ভারত | খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দী | 242; 1983; i, ii, iii, vi | অজন্তা গুহাসমূহ ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। এই বৌদ্ধ গুহাগুলি দুটি পর্বে নির্মিত হয়েছিল। প্রথম পর্বের নির্মাণকার্য শুরু হয় খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দীতে। দ্বিতীয় পর্বে গুপ্ত যুগে পঞ্চম ও ষষ্ঠ শতাব্দীতে আরও কয়েকটি নতুন সংযোজন এর সঙ্গে যুক্ত হয়। এই গুহাগুলিতে উন্নত মানের চিত্রকলা ও ফ্রেস্কো দেখা যায়, যা শ্রীলঙ্কার সিগিরিয়া চিত্রকলা ও স্থাপত্যকলার অনুসারী। এখানে মোট ৩১টি প্রস্তরখোদিত গুহা স্মারক বিদ্যমান, যা বৌদ্ধদের ধর্মীয় চিত্রকলার এক অনন্য নিদর্শন।[৩৭] | |
১৫ | ইলোরা গুহাসমূহ (Ellora Caves) |
মহারাষ্ট্র, ভারত | ৬০০ থেকে ১০০০ খ্রিষ্টাব্দ | 243; 1983; (i)(iii)(vi) | ইলোরা গুহাসমূহ বা ইলোরা চত্বর বৌদ্ধধর্ম, হিন্দুধর্ম ও জৈনধর্মের সাংস্কৃতিক কলার একটি মিশ্র কেন্দ্র। এখানে মোট ৩৪টি মঠ ও মন্দির রয়েছে যেগুলি উচ্চ ব্যাসাল্ট খাড়া দেওয়ালের গায়ে পরস্পরের প্রায় গায়ে গায়ে খোদিত। এই দেওয়ালের দৈর্ঘ্য ২ কিলোমিটার (১.২ মা)। ৬০০ থেকে ১০০০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে নির্মিত এই স্থাপত্যকলা ভারতের প্রাচীন সভ্যতার শিল্পসৌকর্যের প্রতিফলন। এটি সাংস্কৃতিক সম্পত্তি হিসেবে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকার অন্তর্ভুক্ত।[৪০][৪১] | |
১৬ | এলিফ্যান্টা গুহাসমূহ (Elephanta Caves) |
মহারাষ্ট্র, ভারত | পঞ্চম-অষ্টম শতাব্দী | 244rev; 1987; (i)(iii) | এলিফ্যান্টা গুহাসমূহ মুম্বই হারবারের এলিফ্যান্টা দ্বীপ বা ঘরাপুরীর (আক্ষরিক অর্থে "গুহার দ্বীপ") একটি গুহাভাস্কর্যের সমষ্টি। এটি মুম্বই শহর থেকে টেমপ্লেট:Comvert পূর্বে অবস্থিত। আরব সাগরের একটি বাহুর উপর অবস্থিত এই দ্বীপটিতে গুহাগুলি দুটি শ্রেণিতে বিন্যস্ত। প্রথম শ্রেণিটি বৃহৎ, এই শ্রেণিতে পাঁচটি হিন্দু গুহা অবস্থিত। দ্বিতীয় শ্রেণিটি ক্ষুদ্রতর, এখানে দুটি বৌদ্ধ গুহা রয়েছে। হিন্দু গুহাগুলিতে প্রস্তরখোদিত ভাস্কর্য রয়েছে। এগুলি হিন্দু শৈব সম্প্রদায়ের প্রধান দেবতা শিবের। পঞ্চম থেকে অষ্টম শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে এই প্রস্তরখোদিত ভাস্কর্য নির্মিত হয়। তবে এর নির্মাতা কে তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। শক্ত ব্যাসাল্ট পাথর কুঁদে গুহাগুলি নির্মিত। ১৯৭০-এর দশকে পুননর্বীকরণের পর ১৯৮৭ সালে এই গুহাগুলির শিল্পকর্ম সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে এটিকে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকার অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[৪২][৪৩] | |
১৭ | ছত্রপতি শিবাজী টার্মিনাস (পূর্বনাম ভিক্টোরিয়া টার্মিনাস) (Chhatrapati Shivaji Terminus (formerly Victoria Terminus)) |
মহারাষ্ট্র, ভারত | ১৮৮৭-৮৮ | 945rev; 2004; (ii)(iv) | ছত্রপতি শিবাজী টার্মিনাস মুম্বইয়ের একটি ঐতিহাসিক রেলস্টেশন। এটি মধ্য রেলের প্রধান কার্যালয়। ভারতের ব্যস্ততম স্টেশনগুলির অন্যতম এই টার্মিনাস মধ্য রেল ও মুম্বই আন্তঃনগরীয় রেলের একটি প্রান্তিক স্টেশন। ফ্রেডরিক উইলিয়াম স্টিভেনস নামে এক উপদেষ্টা স্থপতির নকশা অনুযায়ী ১৮৮৭-৮৮ সালে চালু হয়। স্টেশনটি সমাপ্ত হতে দশ বছর সময় লেগেছিল। ভারতের তদনীন্তন সম্রাজ্ঞী ভিক্টোরিয়ার শাসনের সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষে (১৮৮৭) এটি চালু হয় বলে স্টেশনের নামকরণ করা হয়েছিল "ভিক্টোরিয়া টার্মিনাস"। এই অনবদ্য গথিক স্থাপত্যশৈলীর শিল্পনিদর্শনটি অতীতে ছিল গ্রেট ইন্ডিয়ান পেনিনসুলার রেলওয়ের সদর দফতর। ১৯৯৬ সালে, শিবসেনার দাবি অনুযায়ী এবং ভারতের স্থাননাম পরিবর্তনের নীতি অনুযায়ী রাজ্য সরকার সপ্তদশ শতাব্দীর মারাঠা সম্রাট ছত্রপতি শিবাজীর নামানুসারে স্টেশনটির নাম পরিবর্তন করে। ২০০৪ সালের ২ জুলাই, স্টেশনটি ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির দ্বারা বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মর্যাদা লাভ করে।[৪৪][৪৫] | |
১৮ | কোণার্ক সুর্য মন্দির (Sun Temple, Konârak) |
পুরী জেলা, ওড়িশা, ভারত | ত্রয়োদশ শতাব্দী | 246; 1984;(i)(iii)(vi) | কোণার্ক সূর্য মন্দির ওড়িশার কোণার্কে ত্রয়োদশ শতাব্দীতে নির্মিত একটি সূর্য মন্দির। এটি "ব্ল্যাক প্যাগোডা" নামেও পরিচিত। মন্দিরটি বঙ্গোপসাগরের তীরে ভারতের পূর্ব উপকূলে মহানদী বদ্বীপে অবস্থিত। এটি সূর্যের (অর্ক) চব্বিশ চক্রবিশিষ্ট রথের আকারে নির্মিত। অত্যধিক কারুকার্যখচিত এই প্রস্তরখোদিত স্থাপত্যটির বিশেষ প্রতীকী ব্যঞ্জনা রয়েছে। বেলেপাথরে নির্মিত এই মন্দিরটি নির্মাণ করান পূর্ব গঙ্গ রাজবংশের রাজা প্রথম নরসিংহদেব। আধুনিককালে মন্দিরটির পুনরায় সংস্কার করা হয়। ১৯৮৪ সালে (i), (iii) ও (iv) ক্যাটেগরিতে সাংস্কৃতিক সম্পত্তি হিসেবে এই মন্দির ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকার অন্তর্ভুক্ত হয়।[৪৬][৪৭] | |
১৯ | কেওলাদেও জাতীয় উদ্যান (Keoladeo National Park) |
রাজস্থান, ভারত | ১৯৮১ | 340; 1985; (x) | কেওলাদেও জাতীয় উদ্যান রাজস্থানের সিন্ধু-গাঙ্গেয় বর্ষাকালীন অরণ্য জৈবভৌগোলিক প্রদেশের মধ্যে অবস্থিত। এই উদ্যানের আয়তন ২,৭৮৩ হেক্টর (৬,৮৮০ একর)। ১৯৮২ সালে এটি জাতীয় উদ্যান ঘোষিত হয়। ১৯০০ সালে এটি ছিল মহারাজাদের হাঁস শিকারের সংরক্ষিত এলাকা। ১৯৫৬ সালে এটি একটি পাখিরালয়ে পরিণত হয়। ১৯৭২ সাল পর্যন্ত মহারাজাদের এখানে শিকার করার অনুমতি ছিল। ১৯৮১ সালে এটি একটি রামসার জলাভূমি ঘোষিত হয়। ১৯৮৫ সালে প্রাকৃতিক সম্পত্তি হিসেবে (x) ক্যাটেগরিতে এটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মর্যাদা লাভ করে। বছরের অধিকাংশ সময় এখানকার জলাশয় অংশের পরিমাণ কমে ১,০০০ হেক্টর (২,৫০০ একর) দাঁড়ায়। এখানে একটি মনুষ্য-সৃষ্ট পরিবেশ দেখা যায়। জলাশয়ের তীরবর্তী অঞ্চলগুলিকে দশটি ইউনিটে ভাগ করা হয়েছে। জলস্তর ঠিক রাখতে স্লুইশ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থাও গৃহীত হয়েছে। আফগানিস্তান, তুর্কমেনিস্তান, চীন ও সাইবেরিয়া থেকে প্রচুর ৩৬৪টি প্রজাতির পরিযায়ী পাখি এখানে শীতকালে ভিড় জমায়। সমগ্র উদ্যানটি ১৭টি গ্রাম ও ভরতপুর শহর দ্বারা বেষ্টিত।[৪৮][৪৯] | |
২০ | যন্তর মন্তর, জয়পুর (Jantar Mantar, Jaipur) |
জয়পুর, রাজস্থান, ভারত | ১৭২৭ ও ১৭৩৪ | 1338; 2010; (iii)(iv) | জয়পুরের যন্তর মন্তর কয়েকটি জ্যোতির্বিজ্ঞান যন্ত্র স্থাপত্যের সমষ্টি। ১৭২৭ থেকে ১৭৩৪ সালের মধ্যবর্তী সময়ে মহারাজা দ্বিতীয় জয়সিংহ তার নতুন রাজধানী জয়পুরে মুঘল রাজধানী দিল্লিতে তারই নির্মিত যন্তর মন্তরের আদলে এটি নির্মাণ করেন। তিনি এই রকম পাঁচটি স্থাপনা পাঁচটি ভিন্ন ভিন্ন স্থানে নির্মাণ করিয়েছিলেন। তার মধ্যে দুটি দিল্লি ও জয়পুরে অবস্থিত। জয়পুর মানমন্দিরটি ছিল বৃহত্তম এবং এখানে তিনি ২০টি স্থায়ী যন্ত্র বসিয়েছিলেন। "মুঘল সাম্রাজ্যের শেষ পর্বে এক জ্ঞানী সামন্তরাজার রাজদরবারের জ্যোতির্বিজ্ঞান দক্ষতা ও বিশ্বচেতনার অভিপ্রকাশ রূপে" এটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় সাংস্কৃতিক সম্পত্তি রূপে অন্তর্ভুক্ত হয়।[৫০][৫১] | |
২১ | মহান চোল মন্দিরসমূহ (Great Living Chola Temples) |
বৃহদীশ্বরার মন্দির, গঙ্গাইকোণ্ডা চোলপুরম, তামিলনাড়ু, ভারত | একাদশ ও দ্বাদশ শতাব্দী | 250bis; 2004; ((ii)(iii) | মহান চোল মন্দিরসমূহ চোল সম্রাটদের দ্বারা নির্মিত। এগুলি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে সমগ্র দক্ষিণ ভারত ও তার প্রতিবেশী দ্বীপসমূহে। এই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবাহী স্থানটির অন্তর্ভুক্ত হয়েছে একাদশ ও দ্বাদশ শতাব্দীতে নির্মিত তিনটি বৃহদাকার মন্দির। এগুলি হল তাঞ্জাভুরের বৃহদীশ্বর মন্দির, গঙ্গইকোণ্ডচোলীশ্বরমের বৃহদীশ্বর মন্দির ও দরসুরমের ঐরাবতেশ্বর মন্দির। গঙ্গইকোণ্ডচোলীশ্বরম মন্দিরটি ১০৩৫ সালে প্রথম রাজেন্দ্র চোল নির্মাণ করেন। এর ৫৩ মিটার (১৭৪ ফু) উচ্চ বিমান অংশটির সঙ্কুচিত কোণবিশিষ্ট এবং উপরের দিকে বহু কারুকার্যখচিত, যা তাঞ্জাভুরের সোজাভাবে উঠে যাওয়া খাড়াই মিনার আকারের স্থাপত্যের বিপরীত। ঐরাবতেশ্বর মন্দির চত্বরটি দ্বিতীয় রাজরাজ নির্মিত। এটিতে একটি ২৪ মিটার (৭৯ ফু) উচ্চ বিমান ও একটি পাথরের শিবমূর্তি রয়েছে। মন্দিরগুলি চোল স্থাপত্য, ভাস্কর্য, চিত্রকলা ও ব্রোঞ্জ মূর্তিশিল্পের এক অনবদ্য নিদর্শন। ২০০৪ সালে (ii) ও (iii) ক্যাটেগরিতে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে এই স্থানটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মর্যাদা লাভ করে।[৫২][৫৩] | |
ঐরাবতেশ্বরার মন্দির, দরসুরম, তামিলনাড়ু, ভারত | ||||||
বৃহদীশ্বরার মন্দির, তাঞ্জাবুর, তামিলনাড়ু, ভারত | ||||||
২২ | মহাবলীপুরম স্মারকসমূহ (Group of Monuments at Mahabalipuram) |
মহাবলীপুরম, তামিলনাড়ু, ভারত | সপ্তম ও অষ্টম শতাব্দী | 249; 1984; (i)(ii)(iii)(vi) | তামিলনাড়ুর মহাবলীপুরম স্মারকসমূহ চেন্নাই থেকে ৫৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এটি সপ্তম ও অষ্টম শতাব্দীতে পল্লব রাজারা নির্মাণ করিয়েছিলেন। কথিত আছে, মামল্লের রাজত্বকালে এই শহরটি বিশেষ গুরুত্ব অর্জন করেছিল। করমণ্ডল উপকূলে পাথর কুঁদে এই স্মারকগুলি নির্মিত হয়। সমগ্র মন্দিরনগরীটিতে প্রায় ৪০টি স্মারক রয়েছে। এর মধ্যে একটি হল বিশ্বের বৃহত্তম মুক্তাঙ্গনস্থ বাস-রিলিফ। ১৯৮৪ সালে (i), (ii), (iii) ও (iv) ক্যাটেগরিতে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে এটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের অন্তর্ভুক্ত হয়। অভিলিখিত স্মারকগুলি হল রথমন্দিরসমূহ: রথের আকৃতিবিশিষ্ট মন্দির, মণ্ডপ ও ১১টি সংরক্ষিত গুহা। এই গুহাগুলিতে প্রচুর বাস-রিলিফ রয়েছে। রয়েছে রক-রিলিফ গঙ্গাবতরণ, যেটি বৃহত্তম মুক্তাঙ্গনস্থ রক-রিলিফ। এটি "অর্জুনের তপস্যা" বা "ভগীরথের তপস্যা" নামেও পরিচিত।[৫৪][৫৫] | |
২৩ | আগ্রা ফোর্ট (Agra Fort, Uttar Pradesh) |
উত্তরপ্রদেশ, ভারত | ষোড়শ শতাব্দী | 251; 1985; iii | আগ্রা ফোর্ট বা আগ্রার লালকেল্লা মুঘল স্থাপত্যের এক অনবদ্য নিদর্শন। এটি ১৯৮২ সালে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে (iii) ক্যাটেগরিতে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের অন্তর্ভুক্ত হয়। দুর্গটি যমুনা নদীর ডান তীরে অবস্থিত। এটি লাল বেলেপাথরের তৈরি। দুর্গচত্বরের মোট আয়তন ২.৫ কিলোমিটার (১.৬ মা)। পরিখাবেষ্টিত দুর্গটির অভ্যন্তরে অনেকগুলি প্রাসাদ, মিনার ও মসজিদ রয়েছে। এগুলি ষোড়শ শতাব্দী থেকে অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধের মধ্যবর্তী সময়ে নির্মিত হয়। নির্মাণকাজ শুরু হয় ষোড়শ শতাব্দীতে আকবরের রাজত্বকালে, শেষ হয় অষ্টাদশ শতাব্দীতে আওরঙ্গজেবের রাজত্বকালে। জাহাঙ্গির ও শাহজাহানের রাজত্বকালেও দুর্গের বেশ কয়েকটি স্মারক নির্মিত হয়েছিল। দুর্গ-অভ্যন্তরের উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থানগুলি হল খাস মহল, শিশ মহল, মুহাম্মান বুর্জ (একটি অষ্টভূজাকৃতি মিনার), দিওয়ান-ই-খাস (১৬৩৭), দিওয়ান-ই-আম, মোতি মসজিদ (নির্মাণকাল ১৬৪৬-৫৩) ও নাগিনা মসজিদ (১৬৫৮-১৭০৭)। এই স্মারকগুলিতে তিমুরিদের পারসিক শিল্পকলা ও ভারতীয় শিল্পকলার এক আশ্চর্য মিশ্রণ পরিলক্ষিত হয়। এটি তাজমহলের নিকটেই অবস্থিত। একটি বাফার জোন উভয় স্মারকে মধ্যে দুরত্ব সৃষ্টি করে রেখেছে।[৫৬][৫৭] | |
২৪ | ফতেহপুর সিক্রি, উত্তর প্রদেশ (Fatehpur Sikri) |
উত্তর প্রদেশ, ভারত | ষোড়শ শতাব্দী | 255; 1986; ii,iii,iv | ফতেহপুর সিক্রি ষোড়শ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে মুঘল সম্রাট আকবর দ্বারা নির্মিত হয়। তার রাজত্বকালে মাত্র চৌদ্দ বছর এই শহর সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল। মুঘল গৌরবের অন্যতম নিদর্শন হলেও পানীয় জলের অভাব ও উত্তর-পশ্চিম ভারতে বিদ্রোহের কারণে সাম্রাজ্যের রাজধানী ফতেহপুর সিক্রি থেকে লাহোর শহরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। কথিত আছে, সন্ত সেলিম চিস্তি যে স্থানে আকবর-পুত্র জাহাঙ্গীরের জন্মের ভবিষ্যদ্বাণী করেন, আকবর ১৫৭১ খ্রিষ্টাব্দে সেই স্থানে ফতেহপুর সিক্রি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন ও নিজের তত্ত্বাবধানে দুই বছরের মধ্যে নতুন শহরটির নির্মাণ সম্পন্ন করান। মুঘল শৈলীতে নির্মিত এই শহরে বেশ কিছু স্মারক ও অট্টালিকা রয়েছে। এই শহরে বুলন্দ দরওয়াজা, পাঁচ মহল, সেলিম চিস্তির সমাধিস্থল ছাড়াও জামা মসজিদ নামক ভারতের অন্যতম বৃহৎ মসজিদ অবস্থিত। ইংরেজ পর্যটক র্যালফ ফিচ ১৫৮৫ খ্রিষ্টাব্দে এই শহরকে লন্ডন শহর অপেক্ষাও বৃহৎ ও জনবহুল বলে বর্ণনা করেন।[৫৮][৫৯] | |
২৫ | তাজমহল (Taj Mahal, Uttar Pradesh) |
উত্তরপ্রদেশ, ভারত | সপ্তদশ শতাব্দী | 252; 1983;i | তাজমহল পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্যের অন্যতম। এটি একটি সমাধিসৌধ। ১৬৩১ সালে সম্রাট শাহজাহানের তৃতীয়া পত্নী বেগম মুমতাজ মহলের মৃত্যু হলে তার স্মৃতিতে এই সৌধটি নির্মিত হয়। শ্বেতপাথরের এই সমাধিসৌধটি মুঘল স্থাপত্যকলার শ্রেষ্ঠ নিদর্শন। এতে মিলিত হয়েছে পারসিক, ইসলামি ও ভারতীয় স্থাপত্যশৈলী। ১৬৩১ থেকে ১৬৪৮ সালের মধ্যবর্তী সময়ে নির্মিত হয় এই সৌধটি। তৈরি করতে সময় লেগেছিল ষোলো বছর। প্রধান স্থপতি ছিলেন উস্তাদ আহমদ লাহৌরি। একটি রাজকীয় সমিতির তত্ত্বাবধানে কয়েক সহস্র শিল্পী তাকে সহায়তা করেন। ১৯৮৩ সালে সাংস্কৃতিক সম্পত্তি/স্মারক হিসেবে (i) ক্যাটেগরিতে এটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকার অন্তর্ভুক্ত হয়। যমুনা নদীর ডান তীরে ১৭ হেক্টর (৪২ একর) আয়তনবিশিষ্ট এক মুঘল উদ্যানের মধ্যে এই সৌধটি অবস্থিত। সৌধের ভিত্তিটি অষ্টভূজাকার। চার কোণে রয়েছে চারটি মিনার। কেন্দ্রস্থলে একটি ভূগর্ভস্থ কক্ষে মূল সমাধিটি। তদুপরে সমাধিভবন এবং তার মাথায় একটি নয়নাভিরাম গম্বুজ অবস্থিত। সৌধের গায়ে অপরূপ কারুকার্য ও ক্যালিগ্রাফিক অঙ্কনকলা খোদিত।[৬০][৬১] | |
২৬ | ভারতের পার্বত্য রেলপথ (Mountain Railways of India) |
দার্জিলিং হিমালয়ান রেল (১৯৯৯), দার্জিলিং জেলা, পশ্চিমবঙ্গ | ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দী1 | 944ter; 1999, 2005, 2008; (i)(iii)(iv) | দার্জিলিং হিমালয়ান রেল, নীলগিরি পার্বত্য রেল ও কালকা-শিমলা রেল একযোগে ভারতের পার্বত্য রেলপথ নামে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান তালিকার অন্তর্ভুক্ত। যদিও ঊনবিংশ শতাব্দী ও বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতে পাঁচটি পার্বত্য রেলপথ চালু হয়েছিল। এগুলি বর্তমানে ভারতীয় রেলের দ্বারা পরিচালিত। এই পাঁচটির মধ্যে তিনটি উত্তর ভারতের হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে অবস্থিত। এগুলি হল দার্জিলিং হিমালয়ান রেল (১৮৮১), কালকা-শিমলা রেল (১৮৯৮) ও কাংড়া উপত্যকা রেল (১৯২৪)। অবশিষ্ট দুটির মধ্যে একটি হল দক্ষিণ ভারতের পশ্চিমঘাটের নীলগিরি পার্বত্য রেল এবং অপরটি হল মহারাষ্ট্রের মাথেরন পাহাড়ি রেল। এই পাঁচটি রেলপথের মধ্যে তিনটিকে "দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে বাধাবিপত্তি সত্ত্বেও সাহসী ও অনবদ্য ইঞ্জিনিয়ারিং দক্ষতায় কার্যকরী রেলপথ স্থাপনের নিদর্শন" হিসেবে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৯৯৯ সালে দার্জিলিং হিমালয়ান রেল স্বীকৃতি পায়, এরপর ২০০৫ সালে নীলগিরি পার্বত্য রেল ও ২০০৮ সালে কালকা-শিমলা রেল সম্প্রসারিত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। এগুলিকে "ভারতের পার্বত্য রেলপথ" নামে (ii) ও (iv) ক্যাটেগরিতে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। চতুর্থ পার্বত্য রেলপথ মাথেরন রেলের দাবিটি বর্তমানে আন্তর্জাতিক সংস্থার অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।[৬২][৬৩] | |
নীলগিরি পার্বত্য রেল (২০০৫) ঊটি, তামিল নাড়ু | ||||||
কালকা-শিমলা রেল, হিমাচল প্রদেশ (২০০৮) | ||||||
২৭ | নন্দাদেবী ও ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স জাতীয় উদ্যান (Nanda Devi and Valley of Flowers National Parks) |
চামোলি জেলা, উত্তরাখণ্ড, ভারত | ১৯৩৯ ও ১৯৮২ | 335bis; 2005 ;(i)(iii)(vi) | নন্দাদেবী ও ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স জাতীয় উদ্যান সুউচ্চ পশ্চিম হিমালয় অঞ্চলে অবস্থিত। এটি মনোরম পুষ্পভূমি ও নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য খ্যাত। উত্তরাখণ্ড রাজ্যের চামোলি জেলার গাড়ওয়াল হিমালয়ে অবস্থিত এই স্থানটি পূর্বে উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের অন্তর্গত ছিল। এখানে অনেক দুর্লভ ও বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী বাস করে। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য এশীয় কালো ভাল্লুক, তুষার চিতা, বাদামি ভাল্লুক ও নীল ভেড়া। নন্দাদেবী জাতীয় উদ্যান দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে অবস্থিত হলেও ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স জাতীয় উদ্যানের দৃশ্য অনেক স্নিগ্ধ। একত্রে দুই জাতীয় উদ্যান জানস্কর ও মহাহিমালয়ের মধ্যে একটি পরিবর্তন স্থল সৃষ্টি করেছে। উদ্যানটির আয়তন ৮৭.৫ কিমি২ (৩৩.৮ মা২)। ১৯৮২ সালের ৬ নভেম্বর এটি জাতীয় উদ্যানের স্বীকৃতি পায়। ইতঃপূর্বে ১৯৩৯ সালের ৭ জানুয়ারি একটি গেম স্যাংচুয়ারি হিসেবে এটি স্থাপিত হয়েছিল। ১৯৮৮ সালে এবং ২০০৫ সালের সম্প্রসারিত তালিকার (vii) ও (x) ক্যাটেগরিতে এটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যের মর্যাদা পায়।[৬৪][৬৫] | |
২৮ | সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান (Sundarbans National Park) |
উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত | ১৮৭৮ | 452; 1987 ; (ix) and (x) | সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন অঞ্চলে অবস্থিত একটি জাতীয় উদ্যান, ব্যাঘ্রপ্রকল্প, ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান ও একটি বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ। এটি বঙ্গোপসাগরের তীর ঘেঁষে গাঙ্গেয় বদ্বীপ অঞ্চলে অবস্থিত। সুন্দরবনের মোট আয়তন জল ও স্থলভাগ মিলিয়ে ১০,০০০ কিমি২ (৩,৯০০ মা২)। এর মধ্যে ৫,৯৮০ কিমি২ (২,৩১০ মা২) ভারতে ও অবশিষ্টাংশ বাংলাদেশে অবস্থিত। এটি গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা বদ্বীপ সমভূমির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। সমগ্র অঞ্চলটি জালের আকারে নদনদীর দ্বারা বেষ্টিত। ৭৫ মিটার উচ্চতার জোয়ার এখানে নিত্যনৈত্তিক ব্যাপার। ১৮৭৮ সালে সুন্দরবনের অধুনা ভারতীয় অংশটির সংরক্ষণের কাজ শুরু হয়। ১৯৭৩ সালে মূল এলাকাটি সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প ঘোষিত হয়। ১৯৭৭ সালে {convert|258500|ha|acre}} আয়তনবিশিষ্ট সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ১৩৩,০০০ হেক্টর মূল এলাকা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের মর্যাদা পায়। ১৯৮৪ সালের ৪ মে এটি একটি জাতীয় উদ্যান ঘোষিত হয়। ১৯৮৭ সালে (ix) ও (x) ক্যাটেগরিতে প্রাকৃতিক সম্পত্তি হিসেবে এটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য ঘোষিত হয়। অঞ্চলটি গভীর ম্যানগ্রোভ অরণ্যে (বাদাবন) ঢাকা। এটি বৃহত্তম বেঙ্গল টাইগার সংরক্ষণাগারগুলির অন্যতম। এছাড়াও নোনা জলের কুমির সহ অনেক প্রজাতির পাখি, সরীসৃপ ও মেরুদণ্ডবিহীন প্রাণীর বাসস্থান।[৬৬][৬৭] | |
২৯ | পশ্চিমঘাট পর্বতমালা (Western Ghats) |
অগস্ত্যমালাই পাহাড় | ২০১২ | পশ্চিমঘাট পর্বতমালা বা সহ্যাদ্রি পর্বতমালা ভারতের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে অবস্থিত একটি পর্বতমালা। এই স্থান বিশ্বের প্রথম দশটি জৈববৈচিত্র্যমূলক স্থানের মধ্যে একটি।[৬৮][৬৯][৭০] এই পর্বতমালয় অবস্থিত জাতীয় উদ্যান, বণ্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ও সংরক্ষিত বনাঞ্চল সহ উনচল্লিশটি বনাঞ্চল বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান রূপে গণ্য হয়, যার মধ্যে কেরালা রাজ্যে কুড়িটি, কর্ণাটক রাজ্যে দশটি, তামিল নাড়ু রাজ্যে পাঁচটি ও মহারাষ্ট্রে চ্রারটি ঐতিহ্যবাহী স্থান রয়েছে।[৭১][৭২] | ||
পেরিয়ার জাতীয় উদ্যান | ||||||
আন্নামালাই পর্বতমালা | ||||||
নীলগিরি | ||||||
তলকাবেরী উপত্যকা | ||||||
কুদ্রেমুখ পাহাড় | ||||||
সহ্যাদ্রি | ||||||
৩০ | রাজস্থানের পাহাড়ী দুর্গসমূহ (Hill Forts of Rajasthan) |
চিতোরগড় | 247; 2013;(ii)(iii) | রাজস্থানের পাহাড়ী দুর্গসমূহ আরাবল্লী পররবতমালার পাথুরে এলাকায় অবস্থিত দুর্গের শ্রেণী। এগুলি রাজস্থানী পাহাড়ী গঠনশৈলীর অন্যতম সামরিক ও প্রতিরক্ষামূলক নিদর্শন। এই দুর্গগুলির অভ্যন্তরে বিশাল এলাকা এমনকি গোটা গ্রাম অবস্থিত থাকতে পারে। চিতোরগড় দুর্গ, কুম্ভলগড় দুর্গ, রণথম্বোর দুর্গ, গগ্রোন দুর্গ, অম্বর দুর্গ, জয়সলমের দুর্গ রাজস্থানের পাহাড়ী দুর্গসমূহের উল্লেখযোগ্য উদহারণ[৭৩] | ||
কুম্ভলগড় দুর্গ | ||||||
রণথম্বোর দুর্গ | ||||||
অম্বর দুর্গ | ||||||
জয়সলমের দুর্গ | ||||||
গগ্রোন দুর্গ | ||||||
৩১ | রাণী কি ভাও ([Rani ki vav) |
পতন, গুজরাত, ভারত | একাদশ শতাব্দী[৭৪] | ২০১৪ | গুজরাতের পতনে অবস্থিত রাণী কি ভাওএকটি বিখ্যাত প্রাচীন পাতকুয়ো।[৭৫] | |
৩২ | গ্রেট হিমালয়ান জাতীয় উদ্যান (Great Himalayan National Park) |
হিমাচল প্রদেশ, ভারত | ২০১৪[৭৬] | হিমাচল প্রদেশের গ্রেট হিমালয়ান জাতীয় উদ্যান উচ্চ গিরিশৃঙ্গ, সুন্দর উপত্যকা ও ঘাসজমি ও ঘন জঙ্গল দ্বারা সমৃদ্ধ। উচ্চ গিরিশৃঙ্গ থেকে উদ্ভূত হিমাবাহ গলা জল এই অঞ্চলে বহু নদীর জন্ম দেয়। পচিশটি বিভিন্নন ধরনের বনাঞ্চল দ্বারা গঠিত এই অঞ্চল জৈববৈচিত্রে সমৃদ্ধ।[৭৬] | ||
৩৩ | কাঞ্চনজঙ্ঘা জাতীয় উদ্যান
(Khangchendzonga National Park) |
উত্তর সিক্কিম জেলা, সিক্কিম | ২০১৬[৭৭] | কাঞ্চনজঙ্ঘা জাতীয় উদ্যান বা কাঞ্চনজঙ্ঘা জীবমণ্ডল সংরক্ষণ ভারতের সিক্কিমে অবস্থিত জাতীয় উদ্যান এবং জীবমণ্ডল সংরক্ষণ উদ্যান। ২০১৬ সালের জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত হওয়া ৪০তম অধিবেশনে একে ইউনেস্কো দ্বারা বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সাথে এটি ভারতের প্রথম মিশ্রিত ঐতিহ্যবাহী স্থান। এই জাতীয় উদ্যানের নাম কাঞ্চনজঙ্ঘা শৃঙ্গের নামে রাখা হয়েছে। কাঞ্চনজঙ্ঘা ভারতের অন্যতম উচ্চতম ও পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চতম শৃঙ্গ এবং এর উচ্চতা ৮,৫৮৬ মিটার। উদ্যানটির ক্ষেত্রফল ১,৭৮৪ বর্গ কিঃমিঃ। |
সম্ভাব্য তালিকা
সম্পাদনাবিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ৩২টি স্থান ছাড়াও ভারতের একটি সম্ভাব্য বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকাও রয়েছে। এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত স্থানগুলি ইউনেস্কো কমিটির কাছ থেকে স্বীকৃতি পাওয়ার অপেক্ষায় আছে। কোনো স্থানের নাম বিশ্ব ঐতিহ্য রূপে স্বীকৃতি পাওয়ার আগে এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা বাধ্যতামূলক। ২০১৪ সালের হিসেব অনুযায়ী, ভারতের সম্ভাব্য তালিকায় ৫১টি স্থানের নাম আছে। এগুলি হল[৭৮][৭৯][৮০]:
ক্রম | নাম | চিত্র | অঞ্চল | ইউনেস্কো তথ্য |
---|---|---|---|---|
০১ | বিষ্ণুপুরের মন্দির সমষ্টি | বিষ্ণুপুর, পশ্চিমবঙ্গ | ১৯৯৮ | |
০২ | আলচি বৌদ্ধবিহার | আলচি, জম্মু ও কাশ্মীর | ১৯৯৮ | |
০৩ | গোলকোণ্ডা দুর্গ | হায়দ্রাবাদ, তেলেঙ্গানা | ১৯৯৮ | |
০৪ | ঢোলাবীরা | ঢোলাবীরা, গুজরাত | ১৯৯৮ | |
০৫ | মাত্তানচেরি প্রাসাদ | মাত্তানচেরি, কোচি, কেরালা | ১৯৯৮ | |
০৬ | শের শাহর সমাধিস্থল | সাসারাম, বিহার | ১৯৯৮ | |
০৭ | মাণ্ডু, মধ্য প্রদেশ | মাণ্ডু, মধ্য প্রদেশ | ১৯৯৮ | |
০৮ | সারনাথ | সারনাথ, বারাণসী জেলা, উত্তর প্রদেশ | ১৯৯৮ | |
০৯ | হেমিস বৌদ্ধ বিহার | লাদাখ, জম্মু ও কাশ্মীর | ১৯৯৮ | |
১০ | হরমন্দির সাহিব | অমৃতসর, পাঞ্জাব | ২০০৪ | |
১১ | মাজুলি | ব্রহ্মপুত্র নদ, অসম | ২০০৪ | |
১২ | নামদাফা জাতীয় উদ্যান | অরুণাচল প্রদেশ | ২০০৬ | |
১৩ | ভারতীয় বন্য গর্দভ অভয়ারণ্য | কচ্ছ, গুজরাত | ২০০৬ | |
১৪ | কাঞ্চনজঙ্ঘা জাতীয় উদ্যান | উত্তর সিক্কিম জেলা, সিক্কিম | ২০০৬ |
আরও দেখুন
সম্পাদনা- বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটি
- ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান
- দেশ অনুযায়ী বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলির সারণি
- এশিয়া ও অস্ট্রালেশিয়ার বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলির তালিকা (অন্যান্য অঞ্চলের তালিকার জন্য নিচের টেমপ্লেট দেখুন)
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ "Properties Inscribed on the World heritage List"। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০১।
- ↑ "The World Heritage Convention"। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ২১, ২০১০।
- ↑ "Six new sites inscribed on World Heritage List"। Whc.unesco.org। ২৩ জুন ২০১৩।
- ↑ "New Biosphere Reserves"। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৯-০৭।
- ↑ "Successful preservation of India's Manas Wildlife Sanctuary enables withdrawal from the List of World Heritage in Danger"। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুন ২০১১।
- ↑ "World Heritage Committee Adds Four Sites to the List of World Heritage in Danger"। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০১১।
- ↑ "Cologne Cathedral (Germany), Djoudj Bird Sanctuary (Senegal), Ichkeul National Park (Tunisia), and Hampi (India) removed from List of World Heritage in Danger"। UNESCO। ১০ জুলাই ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০১১।
- ↑ "Nomination to the World heritage List" (pdf)। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০১।
- ↑ "World Heritage List"। Unesco। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০১।
- ↑ "Kaziranga National Park"। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০১।
- ↑ "Manas Wild Life Sanctuary" (pdf)। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০১।
- ↑ "List of World heritage in danger"। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০১।
- ↑ "Nomination to the World Heritage List" (pdf)। Unesco। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০১।
- ↑ "Mahabodhi Temple Complex at Bodh Gaya"। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০৩।
- ↑ "Mahabodhi Temple (India) No.1056rev" (পিডিএফ)। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০৩।
- ↑ "Humayun's Tomb, Delhi"। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০৩।
- ↑ "World Heritage List: Humayun's TombNo. 232" (pdf)। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০৩।
- ↑ "Qutb Minar and its Monuments, Delhi"। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০৩।
- ↑ "World Heritage List: Qutb Minar and its Monuments, Delh, No. 233" (pdf)। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০৩।
- ↑ "Red Fort Complex"। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০৩।
- ↑ "Red Fort Complex (Delhi) No. 231 rev" (পিডিএফ)। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০৩।
- ↑ "Churches and Convents of Goa"। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০৭।
- ↑ "Churches and Convents at Goa: World Heritage List N0. 232" (pdf)। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০৭।
- ↑ "Champaner-Pavagadh Archaeological Park"। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০৭।
- ↑ "Champaner-Pavagadh (India) No. 1101" (pdf)। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০৭।
- ↑ "Group of Monuments at Hampi"। World Heritage: Unesco.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-০৬।
- ↑ "Group of Monuments at Hampi" (pdf)। Unesco। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-০৬।
- ↑ "Group of Monuments at Pattadakal"। World Heritage: Unesco.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-০৬।
- ↑ "Group of Monuments at Pattadakal" (pdf)। Unesco। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-০৬।
- ↑ "Buddist Monuments at Sanchi" (pdf)। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০২।
- ↑ ক খ "List of World heritage in danger"। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০১।
- ↑ "Nomination to the World Heritage List" (pdf)। Unesco। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০২।
- ↑ "Buddhist Monuments at Sanchi" (pdf)। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০২।
- ↑ "Bhimbetka (India)" (pdf)। Unesco। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০২।
- ↑ "Kajuraho Group of Monuments"। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০২।
- ↑ "Kajuraho Group of Monuments" (pdf)। Unesco। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০২।
- ↑ "Ajanta Caves, India: Brief Description, UNESCO World Heritage Site"। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-০৬। অজানা প্যারামিটার
|1=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ "UNESCO page – Ancient City of Sigiriya"। UNESCO.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-০৫।
- ↑ "Ajanta Caves: Advisory Body Evaluation" (pdf)। UNESCO। পৃষ্ঠা 2। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-০৬।
- ↑ "Ellora Caves , India: Brief Description, UNESCO World Heritage Site"। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-০৬। অজানা প্যারামিটার
|1=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ "Ellora Caves: Advisory Body Evaluation" (pdf)। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-০৬।
- ↑ "Elephanta Caves" (pdf)। Unesco। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-০৬।
- ↑ "Elephanta Caves"। World Heritage: Unesco.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-০৬।
- ↑ "Chhatrapati Shivaji Terminus"। World Heritage: Unesco.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-০৬।
- ↑ "Chhatrapati Shivaji Terminus" (pdf)। Unesco। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-০৬।
- ↑ "Sun Temple, Konârak"। World Heritage: Unesco.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-০৬।
- ↑ "Sun Temple, Konârak" (pdf)। Unesco। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-০৬।
- ↑ "Keoladeo National Park"। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০৭।
- ↑ "Keoladeo National Park No.340" (pdf)। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০৭।
- ↑ "Jantar Mantar, Jaipur"। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০৭।
- ↑ "Jantar Mantar, Jaipur" (pdf)। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০৭।
- ↑ "Great Living Chola Temples"। World Heritage: Unesco.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-০৬।
- ↑ "Great Living Chola Temples" (pdf)। Unesco। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-০৬।
- ↑ "Group of Monuments at Mahabalipuram"। World Heritage: Unesco.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-০৬।
- ↑ "Group of Monuments at Mahabalipuram" (pdf)। Unesco। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-০৬।
- ↑ "World Heritage List no. 251" (pdf)। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০২।
- ↑ "Agra Fort"। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০২।
- ↑ "World Heritage List no. 255" (PDF)। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৫-১৬।
- ↑ "Fatehpur Sikri"। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৫-১৬।
- ↑ "Taj Mahal"। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০৩।
- ↑ "ICOMOS: World Heritage List-253" (pdf)। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০৩।
- ↑ "Mountain Railways of India"। World Heritage: Unesco.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-০৬।
- ↑ "Mountain Railways of India" (pdf)। Unesco। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-০৬।
- ↑ "Nanda Devi and Valley of Flowers National Parks"। World Heritage: Unesco.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-০৬।
- ↑ "Nanda Devi and Valley of Flowers National Parks" (pdf)। Unesco। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-০৬।
- ↑ "Sundarbans National Park"। World Heritage: Unesco.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-০৬।
- ↑ "Sundarbans National Park" (pdf)। Unesco। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-০৬।
- ↑ K. S. Sudhi (২০১২-০৭-০২)। "Sci-Tech / Energy & Environment : Western Ghats makes it to World Heritage List"। The Hindu। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০১-০৩।
- ↑ PTI Jul 2, 2012, 01.23PM IST (২০১২-০৭-০২)। "UN designates Western Ghats as world heritage site"। The Times of India। ২০১৩-০১-৩১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০১-০৩।
- ↑ "India - UNESCO World Heritage Centre"। Whc.unesco.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০১-০৩।
- ↑ "Western Ghats"। Whc.unesco.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০১-০৩।
- ↑ Clara Lewis, TNN Jul 3, 2012, 04.02AM IST (২০১২-০৭-০৩)। "39 sites in Western Ghats get world heritage status"। The Times of India। ২০১২-০৭-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০১-০৩।
- ↑ "Hill Forts of Rajasthan-UNESCO World Heritage Centre"। Whc.unesco.org। ২১ জুন ২০১৩।
- ↑ Centre, UNESCO World Heritage। "Rani-ki-Vav (the Queen's Stepwell) at Patan, Gujarat - UNESCO World Heritage Centre"।
- ↑ "Gujarat's Rani ki Vav added to UNESCO World Heritage site List"। IANS। news.biharprabha.com। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুন ২০১৪।
- ↑ ক খ http://whc.unesco.org/en/list/1406
- ↑ http://whc.unesco.org/en/list/1513
- ↑ "India: Properties inscribed on the World Heritage List"। Properties submitted on the Tentative List। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-০৬।
- ↑ "Tentative Lists"। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ৭, ২০১০।
- ↑ "Tentative List – Cuba"। UNESCO। সংগ্রহের তারিখ 2010=10-07। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য)