আসাম

ভারতের একটি রাজ্য
(অসম থেকে পুনর্নির্দেশিত)

আসাম (অসমীয়া: অসম; /əˈsæm, æ-/) উত্তর-পূর্ব ভারতের একটি স্থলবেষ্টিত রাজ্য। আসামের অধিবাসী বা আসামের ভাষাকে অসমীয়া নামে আখ্যায়িত করা হয়। তবে আসামের এক-তৃতীয়াংশ অধিবাসী বাঙালী। ব্রিটিশ শাসনকালে বিশেষ করে ১৮৫০ থেকে ১৮৬০ সালের মধ্যে ব্রিটিশরা ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে অনেক শ্রমিক এনেছিলেন চা বাগানে জন্য। যার মধ্যে অন্যতম রাজ্য ওড়িশা এবং বিহার (বর্তমানে ঝাড়খণ্ডসহ)।

আসাম
অসম
রাজ্য
আসামের অফিসিয়াল সীলমোহর
সীলমোহর
ভারতের মানচিত্রে আসামের অবস্থান (লাল)
ভারতের মানচিত্রে আসামের অবস্থান (লাল)
স্থানাঙ্ক: ২৭°০৯′ উত্তর ৯১°৪৬′ পূর্ব / ২৭.১৫° উত্তর ৯১.৭৭° পূর্ব / 27.15; 91.77
দেশভারত
অঞ্চলউত্তর-পূর্ব ভারত
প্রতিষ্ঠা১৫ আগস্ট ১৯৪৭
রাজ্যের রাজধানীদিসপুর
বৃহত্তম শহরগুয়াহাটি
সরকার
 • রাজ্যপালজগদীশ মুখী
 • মুখ্যমন্ত্রীহিমন্ত বিশ্ব শর্মা (ভারতীয় জনতা পার্টি)
 • উচ্চ আদালতগৌহাটি উচ্চ আদালত
এলাকার ক্রম১৫-তম
জনসংখ্যা (২০১১)
 • মোট৩,২৯,০০,০০০
 • ক্রম১৪তম
 • জনঘনত্ব৩৯৮/বর্গকিমি (১,০৩০/বর্গমাইল)
ওয়েবসাইটassam.gov.in

১৮২৬ সালে ইয়াণ্ডাবু চুক্তির মাধ্যমে আসাম প্রথম ব্রিটিশ ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়। এ প্রদেশ মূলত চা, রেশম তন্তু, খনিজ তেল এবং জীববৈচিত্র্যের জন্য বিখ্যাত। আসাম বাড়ি এক শৃঙ্গযুক্ত ভারতীয় গণ্ডার এছাড়াও এখানে বুনো মহিষ, বেঁটে শূকর, বাঘ, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি সংরক্ষিত হয়েছে। এশীয় হাতির অন্যতম বাসস্থান হল আসাম। এ রাজ্যটি বন্যপ্রাণী পর্যটনের ক্ষেত্রে ক্রমেই একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল হয়ে উঠছে।

নামের উৎপত্তি সম্পাদনা

পর্বতবাহুল্যবশত ভূমি অসমতল (অসমভুমি) হওয়ায় রাজ্যটি অসম (অপভ্রংশে ‘আসাম’) নামে অভিহিত - এ মত কেউ কেউ প্রকাশ করে থাকেন। অপর মতে, ‘অসম’ প্রতাপবিশিষ্ট আহম জাতি কর্তৃক একসময়ে অধিকৃত হওয়ায় প্রদেশটির নাম আসাম হয়েছে।

আসামের অন্যতম নগর কামরূপের প্রাচীন নাম প্রাগ্‌জ্যোতিষপুর। এখানে পৌরাণিক যুগে নরক নামধেয় জনৈক রাজা ছিলেন। তারই পুত্র মহাভারতবর্ণিত ভগদত্ত। তার পরবর্তী রাজগণের নাম যোগিনীতন্ত্রে বর্ণিত হয়েছে। তাদের কীর্তি গৌহাটি প্রভৃতি স্থানে এখনও কিংদংশে দৃষ্ট হয়। এছাড়াও খ্রিস্টীয় প্রথম সহস্রাব্দে কামরূপ নামে এই অঞ্চলের পরিচিতি ছিল। এই অঞ্চলে আহোম সাম্রাজ্য (১২২৮-১৮৩৮) প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরে এই রাজ্য "আসাম" নামে পরিচিত হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

ভৌগোলিক অবস্থান সম্পাদনা

উত্তর-পূর্ব ভারতের এ রাজ্যটি হিমালয়ের দক্ষিণে অবস্থিত এবং এর অভ্যন্তরে রয়েছে ব্রহ্মপুত্র নদ, বরাক উপত্যকা এবং উত্তর কাছাড় পর্বতমালা। উত্তর-পূর্ব ভারতের আরও ছয়টি রাজ্য, যথা অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মিজোরাম, ত্রিপুরা এবং মেঘালয় দ্বারা আসাম পরিবেষ্টিত এবং আসামসহ প্রতিটি রাজ্যই উত্তরবঙ্গের একটি সঙ্কীর্ণ অংশ দ্বারা ভারতের মূল ভূখণ্ডের সাথে সংযুক্ত।[১] এছাড়াও আসামের আন্তর্জাতিক সীমানা রয়েছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভুটান এবং বাংলাদেশের সঙ্গে।[২]

ইতিহাস সম্পাদনা

প্রাগৈতিহাসিক যুগ সম্পাদনা

আসাম এবং এর আশপাশের এলাকাগুলিতে প্রস্তর যুগ থেকেই মানুষের বসবাসের প্রমাণ পাওয়া যায়। সতেরোশো থেকে আঠারোশো শতকের মধ্যে লেখা কালিকাপুরাণ অনুসারে আসামের প্রাচীনতম শাসক ছিলেন মহীরঙ্গ।

আদিযুগ এবং মধ্যযুগ সম্পাদনা

৬৪০ সালে হুয়েনথসাং যখন এই প্রদেশে পর্যটন করেন, তখন কুমার ভাস্কর বর্ম এখানে রাজত্ব করতেন। পরে পালবংশীয় বৌদ্ধরাজগণ এখানে কিছুকাল রাজত্ব করেন। ১৩শ শতাব্দীর প্রথম ভাগে আহম জাতি এ স্থান অধিকার করে। এ জাতি উত্তর ব্রহ্ম এবং চীনসীমান্তবাসী সান বংশসম্ভূত। এ জাতির রাজা চুহুম ফা সর্বপ্রথম হিন্দুধর্ম গ্রহণ করেন। তিনি ১৪৯৭ সালে সিংহাসনে আরোহণ করেছিলেন। তার পরবর্তী রাজার অব্যবহিত পরবর্তী আহমজাতীয় রাজা চুচেং ফা ১৬১১ থেকে ১৬৪৯ সাল পর্যন্ত রাজত্ব করেন। তার সময়েই শিবসাগরে শিবমন্দির প্রতিষ্ঠিত হয় এবং হিন্দুধর্মই রাজধর্মরূপে গৃহীত হয়। তার পরবর্তী রাজা চুটুম্‌লা ১৬৫০ সালে ব্রাহ্মণগণ কর্তৃক ‘জয়ধ্বজ’ নামে অভিহিত হন। তার রাজত্বকালে মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সুবিখ্যাত সেনাপতি মীরজুমলা রাজ্য আক্রমণ করে বসেন। কিন্তু, তিনি বিশেষভাবে সফলকাম হতে পারেননি। এরপর আহমরাজগণ গোয়ালপাড়া পর্যন্ত অধিকার বিস্তার করেন।

ব্রিটিশ আসাম সম্পাদনা

 
১৯০৭-১৯০৯ এর সময় পূর্ব বাংলা ও আসামের মানচিত্র

আহমরাজগণের মধ্যে রুদ্রসিংহ সর্বাপেক্ষা অধিক প্রসিদ্ধি লাভ করেছিলেন। অষ্টাদশ শতাব্দীতে আহমরাজগণ অন্তর্বিদ্রোহ ও বহিরাক্রমণবশতঃ হীনবল হয়ে পড়েন। ১৭৯২ সালে রাজা গৌরীনাথ সিংহ, দারাংয়ের কোচ রাজা এবং মোয়ামারিয়া নামক ধর্মসম্প্রদায়ের নেতৃগণ কর্তৃক সিংহাসনচ্যূত হন। ভারতের ইংরেজ সরকার দেশীয় রাজ্য সম্বন্ধে হস্তক্ষেপ করা হবে না, এ নীতি অবলম্বন করে উদাসীন থাকাতে, আহম রাজা ব্রহ্মরাজকে মধ্যস্থতা করতে আহ্বান করেন। এর ফলে ব্রহ্মবাসীরা রাজ্য অধিকার করে এবং কঠোরভাবে শাসনদণ্ডের পরিচালনা করতে থাকে। ১৮২৪ সালে ব্রহ্মরাজের সাথে ইংরেজদের প্রথম যুদ্ধ সংঘটিত হয়। ১৮২৬ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারি ব্রহ্মরাজের সাথে ইংরেজের যে সন্ধিস্থাপনা হয়, এরফলে ইংরেজ এই প্রদেশটি প্রাপ্ত হয়। নিম্ন আসাম তখনই সাক্ষাৎভাবে ইংরেজের শাসনাধীন হয়। ১৮৩২ সালে বার সেনাপতি বা মাটক রাজা ছাড়া উত্তর আসাম রাজ্য আহম সিংহাসনাধিকার-প্রার্থী পুরন্দর সিংহকে দেয়া হয়। কিন্তু তার সময়ে উক্ত প্রদেশে শাসন সম্বন্ধে নানা বিশৃঙ্খলা উপস্থিত হওয়ায় এটিও ইংরেজদের অধিকারে চলে আসে।

বঙ্গ, বিহারউড়িষ্যার দেওয়ানী লাভের সঙ্গেই শ্রীহট্ট ও গোয়ালপাড়া ১৭৬৫ সালে ইংরেজদের অধিকারভূক্ত হয়। অপুত্রক রাজা গোবিন্দচন্দ্রের মৃত্যুর পর ১৮৩০ সালে কাছাড় ইংরেজের হস্তগত হয়। পরে তুলারাম সেনাপতির দেশ, গারো পর্বত, খাসী পর্বত, জয়ন্তী পর্বত, নাগা পর্বত প্রভৃতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দেশগুলো ইংরেজের অধীনতা স্বীকার করে।

স্বাধীনতা পরবর্তী সম্পাদনা

স্বাধীনতার পর আসাম রাজ্যের পুনর্গঠন হয়। ১৯৬৩ সালে নাগা পার্বত্য জেলা নিয়ে গঠিত হয় নাগাল্যান্ড। ১৯৭০ সালে গারো , খাসি ও জয়ন্তিকা নিয়ে মেঘালয় অন্তরাজ্য গঠিত হয় যা পরে ১৯৭২ সালে পূর্ণ রাজ্যের রূপ পায়। ১৯৭২ সালে অরুণাচল প্রদেশমিজোরাম কেন্দ্র স্বাসিত অঞ্চল ঘোষিত হয় পরবর্তীতে ১৯৮৬ সালে তা পূর্ণ রাজ্যের রূপ পায়।

সরকার ব্যবস্থা সম্পাদনা

আসাম প্রদেশকে প্রথমে বাঙ্গালার লেফটেন্যান্ট গভর্নরের অধীনে রাখা হয়েছিল। ১৮৭৪ সালে একে জনৈক চিফ কমিশনারের শাসনাধীন করা হয়। ১৯০৫ সালের ১৬ই অক্টোবর বঙ্গব্যবচ্ছেদ উপলক্ষে এই রাজ্যকে পূর্ববঙ্গের সাথে একত্রিত করে জনৈক নতুন লেফটেন্যান্ট গভর্নরের অধীন করা হয় এবং পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও উড়িষ্যা পুরাতন লেফটেন্যান্ট গভর্নরের শাসনাধীন থাকে। ১৯১১ সালের ১২ই ডিসেম্বর দিল্লীর করোনেসন দরবার উপলক্ষে সম্রাট যে ঘোষণা পাঠ করেন, এরফলে দুই বঙ্গ মিলে একটি প্রদেশ; আর বিহার, উড়িষ্যা ও ছোটনাগপুর নিয়ে একটি নূতন প্রদেশ গঠিত হয়। প্রথমটি একজন গভর্নর এবং দ্বিতীয়টি একজন লেফটেন্যান্ট গভর্নরের অধীনতায় দেয়া হয়; আসাম প্রদেশকে পূর্বের ন্যায় জনৈক চিফ কমিশনারের শাসনাধীন করা হয়। ১৯১২ সালের এপ্রিল মাস থেকে এই ঘোষণা কার্যে পরিণত হয়েছিল। পরে ১৯২১ সালের নূতন সংস্কার বিধি অনুসারে বড় বড় প্রদেশগুলোর ন্যায় আসামও একজন গভর্নরের শাসনাধীন হয়েছে।

আসাম বর্তমানে ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের দ্বারা নিযুক্ত একজন রাজ্যপাল দ্বারা শাসিত হয়ে আসছে।

ব্রিটিশ শাসনোত্তর আসাম সম্পাদনা

১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই আসাম সহ পুরো উত্তর-পূর্ব ভারতে অর্থনৈতিক সমস্যা প্রকট হতে শুরু করে। যার ফলে ওই অঞ্চলে সার্বভৌমত্ব দাবী করে বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাকামী শক্তি সক্রিয় হয়ে ওঠে।

বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ থেকেই আসামে অধুনা বাংলাদেশ (তখনকার পূর্ব পাকিস্তান) থেকে শরণার্থীরা আসতে শুরু করে। ১৯৬১ সালে মুখ্যমন্ত্রী বিমলাপ্রসাদ চালিহার নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস পরিচালিত আসাম সরকার বিধানসভায় একটি বিল পাশ করে, যার মাধ্যমে পুরো রাজ্যে একমাত্র সরকারি ভাষা হিসাবে অসমীয়াকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে দক্ষিণ আসামের কাছাড় জেলার বাঙালিরা ভাষা আন্দোলন শুরু করেন। ১৯৬১ সালের ১৯ মে তারিখে এই ভাষা আন্দোলন চলাকালীন আধা-সামরিক বাহিনীর গুলিতে এগারোজন আন্দোলনকারীর মৃত্যু হয়। এর পরে চাপের মুখে ভাষা বিলটি প্রত্যাহৃত হয়।

বিংশ শতাব্দীর সত্তরের দশকের পর থেকে আসামে বিভিন্ন সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী যথা, আলফা এবং ন্যাশনাল ডেমক্রেটিক ফ্রন্ট অব বড়োল্যান্ড ইত্যাদি জন্ম নেয়।

অর্থনীতি সম্পাদনা

শাল, শিশু প্রভৃতি কাঠ আসাম রাজ্যের প্রধান লাভজনক পণ্য। ভারতীয় গণ্ডার থেকেও প্রভূতঃ আয় হয়। মুগাএন্ডি রেশম এ রাজ্যের বিখ্যাত ব্যবসায়ের দ্রব্য। আসাম চায়ের ব্যবসায়েও বিলক্ষণ লাভ হয়ে থাকে।

আসাম চা সম্পাদনা

আসামের চা বিশেষ বিখ্যাত এবং এ চায়ের বৈজ্ঞানিক নাম হল ক্যামেলিয়া আসামিকা (Camellia assamica)|

জনসংখ্যা সম্পাদনা

২০১১ সালের হিসাব মতে আসামের জনসংখ্যা ৩,১২০৫,৫৬৬‌‌।

আগত শরণার্থীর পরিসংখ্যান সম্পাদনা

আসামে বিভিন্ন সময়ে আগত শরণার্থীর সংখ্যা[৩]
সাল শরণার্থী সংখ্যা মন্তব্য
১৯৪৬ ৬৮৬০ পূর্ব পাকিস্তান থেকে
১৯৪৭ ২৩৪৬ পূর্ব পাকিস্তান থেকে
১৯৪৮ ১৭৪০ পূর্ব পাকিস্তান থেকে
১৯৪৯ ৩১৩৮ পূর্ব পাকিস্তান থেকে
১৯৫০ ৪৫১২ পূর্ব পাকিস্তান থেকে
১৯৫১ ৩৪৭৯ পূর্ব পাকিস্তান থেকে
বিভিন্ন সময়ে ৬৪৭ পশ্চিম পাকিস্তান থেকে
বিভিন্ন সময়ে ১৭৩৩

বাংলাভাষী ও অসমীয়াভাষীর জনগণনা সম্পাদনা

জনগননা অনুসারে আসামে বাংলাভাষী ও অসমীয়াভাষীর তুলনা[৩]
সাল বাংলা অসমীয়া মন্তব্য
১৯১১ ২৬.৯০ ৩৫.৩১
১৯২১ ২৭.৬০ ৩৪.৪৩
১৯৩১ ২৭.৫৬ ৩২.৩২
১৯৫১ ১৯.৬৪ ৫৬.২৯
১৯৬১ ১৭.৬০ ৫৭.১৪
১৯৭১ ১৯.৭১ ৬০.৮৯
জনগণনা অনুযায়ী বাঙালি ও অসমীয়া পরিসংখ্যান[৩]
জনগণনা বাঙালি বা বাংলাভাষী অসমীয়া
১৯১১
২৬.৯০
৩৫.৩১
১৯২১
২৭.৬০
৩৪.৪৩
১৯৩১
২৭.৫৬
৩২.৩২
১৯৫১
১৯.৬৮
৫৬.২৯
১৯৬১
১৭.৬০
৫৭.১৪
১৯৭১
১৯.৭১
৬০.৮৯

২০১১ অনুযাায়ী ভাষাসমূহ সম্পাদনা

আসামের ভাষাসমূহ-২০১১

  অসমীয়া (৪৮.৩৮%)
  বাংলা (২৮.৯২%)
  বোড়ো (৪.৫৪%)
  হিন্দি (৪.৩১%)
  সাদরি (২.২৯%)
  মিশিং (১.৯৮%)
  নেপালী (১.৯১%)
  কার্বি (১.৬৪%)
  ওড়িয়া (০.৭০%)
  সাঁওতালি (০.৬৮%)
  গারো (০.৫৫%)
  মণিপুরী (০.৫৪%)
  ডিমাসা (০.৪২%)
  রাভা (০.৩৩%)
  অন্যান্য (২.৯১%)

ধর্ম সম্পাদনা

আসামের প্রধান ধর্মগুলো হল হিন্দুধর্ম ( ৫৭.৯%) এবং ইসলাম (৩৯.৯%)। এছাড়া অন্যান্য ধর্মের মধ্যে রয়েছে খ্রিস্ট ধর্ম (৩.৭%), শিখ ধর্ম (১%), বৌদ্ধ ধর্ম ইত্যাদি।

সাংস্কৃতিক বিবর্তন সম্পাদনা

বাংলার সাথে অসমীয়া ভাষার সৌসাদৃশ্য এত অধিক যে, সেজন্য বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলের মতো বাংলা ভাষাই এ রাজ্যের আদালতের এবং রাজকার্যের ভাষারূপে পূর্বে পরিগণিত হতো। কিন্তু রাজ্যের উন্নতি হওয়ায়, সরকার ১৮৭৩ খ্রীস্টাব্দে অসমীয়া ভাষাকেই বাংলা ভাষার পরিবর্তে প্রবর্তিত করেন।

জনগণনা অনুযায়ী বাঙালি ও অসমীয়া পরিসংখ্যান[৩]
জনগণনা বাংলা ব্যবহারকারী বাংলাভাষী অসমীয়া
১৯১১
২৬.৯০
৩৫.৩১
১৯২১
২৭.৬০
৩৪.৪৩
১৯৩১
২৭.৫৬
৩২.৩২
১৯৫১
১৯.৬৮
৫৬.২৯
১৯৬১
১৭.৬০
৫৭.১৪
১৯৭১
১৯.৭১
৬০.৮৯

উৎসব সম্পাদনা

আসাম বিভিন্ন উৎসব আর মেলার ভূমি। এই রাজ্যের প্রধান উৎসবগুলো হলো বিহু, দুর্গা পূজা, কালি পূজা, দীপান্বিতা, কামাখ্যা মেলা, মে-ডাম-মে-ফী, ঈদ, মহরম, শঙ্করদেবের জন্মোৎসব, বৈচাগু, আলি আঃয়ে লৃগাং, বাইখু, রংকের, অম্বুবাচী মেলা, জোনবিল মেলা ইত্যাদি। পালন করেন।

বিহু সম্পাদনা

অসমীয়াদের প্রধান উৎসব হলো বিহু। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে অসমীয়ারা বিহু পালন করে। বিহু তিনটি- ব'হাগ (রঙালি) বিহু, মাঘ (ভোগালী) বিহু আর কাতি (কঙালি) বিহু।

পরিবহণ সম্পাদনা

রেল সম্পাদনা

উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল-এর সদর দপ্তর এই রাজ্যের গুয়াহাটি শহরে অবস্থিত।

আরও দেখুন ==

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Dixit, K. M. (আগস্ট ২০০২)। "Chicken's Neck (Editorial)" (ইংরেজি ভাষায়)। Himal South Asian। ৩০ অক্টোবর ২০০৬ তারিখে মূল (– Scholar search) থেকে আর্কাইভ করা। 
  2. Sushanta Talukdar (২০ এপ্রিল ২০১২)। "Assam has lead role in Look East effort: PM"The Hindu (ইংরেজি ভাষায়)। Chennai, India। সংগ্রহের তারিখ ৪ ডিসেম্বর ২০১২ 
  3. নিজেস্ব সংবাদদাতা (৪ মে ২০১৮)। "মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশি শরণার্থীর বোঝা একা নেয় নি অসম"দৈনিক যুগ শঙ্খ (গুয়াহাটি সংস্করণ)। দৈনিক যুগ শঙ্খ। পৃষ্ঠা ৩, ৯। সংগ্রহের তারিখ ৪ মে ২০১৮ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা