অম্বুবাচী মেলা

হিন্দু ধর্মের বাৎসরিক উৎসব।

অম্বুবাচী মেলা হিন্দু ধর্মের বাৎসরিক উৎসব। লোকবিশ্বাস মতে আষাঢ় মাসের ৭ তারিখে মৃগ শিরা নক্ষত্রের তিনটি পদ শেষ হলে পৃথিবী বা ধরিত্রী মা ঋতুময়ী হয়। এই সময়টিতে অম্বুবাচী পালন করা হয়।

অম্বুবাচী মেলা
আনুষ্ঠানিক নামঅম্বুবাচী
অন্য নামসাথ, আমতি/আমেতি (অসম)
পালনকারীহিন্দু ধর্মাবলম্বী
ধরনহিন্দুধর্মের ধার্মিক উৎসব
উদযাপনঅম্বুবাচী
পালনব্রত, শুদ্ধি
শুরুআষাঢ় মাসে মৃগশিরা নক্ষত্রের চতুর্ধ পাদ
সমাপ্তিআষাঢ় মাসে আদ্যা নক্ষত্রের প্রথম পাদ
তারিখআষাঢ় মাস (অসমীয়া ও বাংলা), জুলাইয়ের মধ্যভাগে
সম্পর্কিততান্ত্রিক, শক্তি, প্রজনন

অম্বুবাচীর নিয়ম

সম্পাদনা

অম্বুবাচীর দিন থেকে পরর্বতী তিন দিন পর্যন্ত কামাখ্য দেবীর দুয়ার বন্ধ থাকে[] ও এই সময়ে কোনো ধরনের মা‌‌ঙ্গলিক কার্য করা যায়না। চতুর্থ দিন থেকে মঙ্গলিক কাজে কোনো বাধা থাকেনা। অম্বুবাচীর সময় হাল ধরা, গৃহ প্রবেশ, বিবাহ ইত্যাদি শুভ কাজ করা নিষিদ্ধ থাকে ও এই সময়ে মঠ-মন্দিরের প্রবেশদ্বার বন্ধ থাকে।

অম্বুবাচী মেলা

সম্পাদনা
 
অম্বুবাচী মেলার একটি দৃশ্য।

অম্বুবাচীর সময় হিন্দু ধর্মীয় লোকেরা শক্তি পূজার স্থানগুলোতে আয়োজন করা উৎসবকে অম্বুবাচী মেলা বলা হয়। ভারতের অসম রাজ্যের গুয়াহাটি শহরের কামাখ্যা দেবীর মন্দিরে প্রতি বৎসর অম্বুবাচী মেলার আয়োজন করা হয়। আম্বুবাচী আরম্ভের প্রথম দিন থেকে কামাখ্যা দেবীর দ্বার বন্ধ রাখা হয় ফলে আম্বুবাচীর সময় দেবী দর্শন নিষিদ্ধ থাকে। চতুর্থ দিন দেবীর স্নান ও পূজা সম্পূর্ণ হওয়ার পর কামাখ্যা মাতার দর্শন করার অনুমতি দেওয়া হয়। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের থেকে আসা লক্ষ লক্ষ ভক্তেরা (বর্তমান দিনে বিদেশ থেকে আসে) কামাখ্যা মন্দিরের চতুর্দিকে বসে কীর্ত্তন করেন। মন্দিরের বাহিরে প্রদীপ ও ধূপকাঠী জ্বালিয়ে দেবীকে প্রনাম করেন। অম্বুবাচী নিবৃত্তির দিন পান্ডারা ভক্তদের রক্তবস্ত্র উপহার দেন। দেবী পীঠের এই রক্তবস্ত্র ধারণ করিলে মনোকামনা পূর্ণ হয় বলে ভক্তেরা বিশ্বাস করেন। এই রক্তবস্ত্র পুরুষেরা ডানহাত বা গলায় ও মহিলারা এই বস্ত্র বাওহাত বা গলায় পরিধান করেন। রক্তবস্ত্র পরিধান করে শ্মশান বা মৃতের ঘরে যাওয়া নিষিদ্ধ। কামাখ্যা ধামের অম্বুবাচী মেলা আন্তর্জাতিক ও জাতীয় সম্প্রীতি রক্ষার জন্য বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা