দার্জিলিং হিমালয়ান রেল

দার্জিলিং হিমালয়ান রেল পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং শহরের মধ্যে চলাচলকারী একটি ২ফুট (৬১০ মিমি) ন্যারো গেজ রেল পরিষেবা। এই রেল টয় ট্রেন নামে সমধিক পরিচিত। দার্জিলিং হিমালয়ান রেল ভারতীয় রেল কর্তৃক পরিচালিত।

দার্জিলিং হিমালয়ান রেল
বাতাসিয়া লুপে লোকোমোটিভ নং ডিএইচআর ৭৮০
স্থানপশ্চিমবঙ্গ, ভারত
টার্মিনাসদার্জিলিং
বাণিজ্যিক পরিচালনা
নামদার্জিলিং হিমালয়ান রেল
Built byFranklin Prestage
আদি গেজ৬১০ মিলিমিটার (২ ফুট)
সংরক্ষিত পরিচালনা
মালিকভারতীয় রেল, সহায়তা করে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে সোসাইটি
পরিচালকNortheast Frontier Railway
স্টেশন১৭
দৈর্ঘ্য৮৩.৯ কিলোমিটার (৫২.১ মা)
বাণিজ্যিক ইতিহাস
Opened১৮৮১
সংরক্ষণের ইতিহাস
headquartersElysia Place, Kurseong
Route map

১৮৭৯ থেকে ১৮৮১ সালের মধ্যবর্তী সময়ে নির্মিত এই রেলপথের দৈর্ঘ্য ৮৩.৯ কিলোমিটার (৫২.১ মা)। এর উচ্চতার মাত্রা শিলিগুড়িতে ১১৪ মিটার (৩৭৪ ফু) এবং দার্জিলিঙে ২,০৭৩ মিটার (৬,৮০১ ফু)। দার্জিলিং এর ৫ কিমি পূর্বে ঘুম স্টেশন ২,২৫৮ মিটার (৭,৪০৮ ফু) সমুদ্রতল থেকে উচ্চতায় অবস্থিত।

আজও এটি বাষ্পচালিত ইঞ্জিনে চলে। দার্জিলিঙের মেল ট্রেনের জন্য ডিজেল চালিত ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়।

১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো দার্জিলিং হিমালয়ান রেলকে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করে। ২০০৫ সালে নীলগিরি পার্বত্য রেলকেও এর সঙ্গে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করা হয়।

ইতিহাস

সম্পাদনা
 
দার্জিলিং রেল স্টেশনে ওয়াচ টাওয়ার
 
দার্জিলিং হিমালয়ান রেল
 
দার্জিলিং হিমালয়ান রেলপথ

১৮৭৮ সালে স্ট্যান্ডার্ড গেজ রেলের মাধ্যমে কলকাতা ও শিলিগুড়ি যুক্ত হয়।[] হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত শিলিগুড়ি থেকে একটি কার্ট রোডের (অধুনা হিল কার্ট রোড) মাধ্যমে দার্জিলিং যুক্ত হয়। এই রাস্তায় টাঙা পরিষেবা চালু ছিল।[] ফ্র্যাঙ্কলিন প্রিস্টেজ নামে ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে কোম্পানির জনৈক এজেন্ট সরকারের কাছে বাষ্পচালিত ট্রামওয়ের মাধ্যমে শিলিগুড়িকে দার্জিলিঙের সঙ্গে যুক্ত করার প্রস্তাব রাখেন।[] বাংলার লেফটানেন্ট গভর্নর স্যার অ্যাশলে ইডেন এই প্রস্তাবে ইতিবাচক মনে করলে এটি গৃহীত হয়।[] নির্মাণকাজ শুরু হয় সেই বছরই।

গিলেন্ডারস আরবাথনট অ্যান্ড কোম্পানি এই রেলপথ নির্মাণ করে। ১৮৮০ সালের ২৩ অগস্ট শিলিগুড়ি-কার্শিয়াং অংশটি চালু হয়। দার্জিলিং পর্যন্ত লাইনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয় ১৮৮১ সালের ৪ জুলাই।[] পরবর্তীকালে রেলের নতিমাত্রা কমানোর জন্য একাধিকবার ইঞ্জিনিয়ারিং-এর কাজকর্ম করা হয়।[][] ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্প ও ১৮৯৯ সালের একটি বড়ো ঘূর্ণিঝড় সত্ত্বেও[] যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় দার্জিলিং হিমালয়ান রেলের গুরুত্বপূর্ণ সম্প্রসারণের কাজ চলতে থাকে।[] যদিও কম সময়ের বাস পরিষেবা চালু হলে এই রেল প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় দার্জিলিং ও ঘুমের একাধিক সেনা ক্যাম্পে রসদ সরবরাহের ক্ষেত্রে এই রেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়।[]

স্বাধীনতার পর ভারতীয় রেল দার্জিলিং হিমালয়ান রেল অধিগ্রহণ করে নেয় এবং ১৯৫৮ সালে এই রেল উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের অংশে পরিণত হয়।[] ১৯৬২ সালে শিলিগুড়ি থেকে নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার (৪ মাইল) পথ নতুন ব্রড গেজ লাইনের মাধ্যমে যুক্ত হয়। ১৯৮৮-৮৯ সালে গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনের সময় এই রেল ১৮ মাস বন্ধ ছিল।[] ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো এটিকে বিশ্ব ঐতিহ্য ঘোষণা করে। অস্ট্রিয়ার সেমারিং রেলওয়ের (১৯৯৮ সালে বিশ্ব ঐতিহ্য মর্যাদাপ্রাপ্ত) পর এই রেল উক্ত মর্যাদা প্রাপ্ত দ্বিতীয় রেলপথ।[]

দার্জিলিং রেল স্টেশন

আরও দেখুন

সম্পাদনা

পাদটীকা

সম্পাদনা
  1. "DHR and Its Development"About DHR,dhr.in। Darjeeling Himalayan Railway, NF Railway, India। ২০০৭-০২-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০২-২৪ 
  2. "DHR History"darjeelingnews.net। Darjeelingnews। ২০০৩-১২-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০২-২৪ 
  3. Whittle, Paul। "A Brief History of the DHR"History and A Trip Up the Line। Darjeeling Himalayan Railway Society। ২০০৭-০২-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০২-২৪ 
  4. "Mountain Railways of India"। UNESCO World Heritage Centre। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-৩০ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা