মধ্য রেল
মধ্য রেল ভারতীয় রেলের আঠারোটি অঞ্চল বা জোনের মধ্যে অন্যতম। এটি ভারতের বৃহত্তম রেলওয়ে অঞ্চলগুলির মধ্যে অন্যতমও বটে। মধ্য রেলের প্রধান কার্যালয় মুম্বইয়ের ছত্রপতি শিবাজী টার্মিনাস (পূর্বতন ভিক্টোরিয়া টার্মিনাস)। ১৮৫৩ সালের ১৬ এপ্রিল তৎকালীন বোম্বাই থেকে থানের মধ্যে চালু হওয়া ভারতের প্রথম যাত্রীবাহী রেললাইনটি এই অঞ্চলের অন্তর্গত।
রাজ্য | মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ ও কর্ণাটক |
---|---|
কার্যকাল | ১৯৫১–বর্তমান |
পূর্বসূরি | গ্রেট ইন্ডিয়ান পেনিনসুলা রেলওয়ে |
ট্র্যাক গেজ | মিশ্র |
প্রধান কার্যালয় | ছত্রপতি শিবাজী টার্মিনাস, মুম্বই |
মধ্য রেলের কার্যক্ষেত্র হল মহারাষ্ট্র রাজ্যের অধিকাংশ অঞ্চল এবং উত্তর-পূর্ব কর্ণাটক ও দক্ষিণ মধ্যপ্রদেশের কিয়দংশ।
১৯৫১ সালের ৫ নভেম্বর কয়েকটি সরকারি রেলওয়ে সংস্থাকে একত্রীভূত করে মধ্য রেল অঞ্চলটি গঠিত হয়। উক্ত রেলওয়ে সংস্থাগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান পেনিনসুলা রেলওয়ে, পূর্বতন দেশীয় রাজ্য গোয়ালিয়রের সিন্ধিয়া রাজ্য রেলওয়ে ও ধোলপুর রেলওয়ে।[১]
ইতিপূর্বে উত্তর মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তীসগঢ় এবং দক্ষিণ উত্তরপ্রদেশের রাজ্যর কিয়দংশও মধ্য রেলের অন্তর্গত ছিল। এই সময় আয়তন, ট্র্যাকদৈর্ঘ্য ও কর্মীসংখ্যার বিচারে মধ্য রেলই ছিল দেশের বৃহত্তম রেলওয়ে অঞ্চল। ২০০৩ সালের এপ্রিল মাসে উক্ত অঞ্চলগুলি নিয়ে গঠিত হয় পশ্চিম মধ্য রেল।
প্রধান রুট
সম্পাদনা- মুম্বই ছত্রপতি শিবাজী টার্মিনাস – দাদার – কুর্লা – কল্যাণ – মনমদ – ভুসাওয়াল – ওয়ার্ধা – নাগপুর
- নাগপুর – আমলা – ইতারসি
- ভুসাওয়াল – খান্ডওয়া
- ওয়ার্ধা – বল্লারশা
- কল্যাণ – নেরাল – লোনাবালা – পুনে – দাউন্দ – সোলাপুর – ওয়াদি
- পুনে – মিরাজ – কোলাপুর
- দাউন্দ – মনমদ
সংযুক্তি
সম্পাদনানিম্নলিখিত রেলওয়ে জংশনগুলির মাধ্যমে মধ্য রেল ভারতীয় রেলের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে:
- ভাসাই রোড জংশন (পশ্চিম রেল) যুক্ত করেছে পশ্চিম রেলের মুম্বই পশ্চিম রেল বিভাগটিকে
- রোহা যুক্ত করেছে কোঙ্কণ রেলকে
- মনমদ জংশন যুক্ত করেছে দক্ষিণ মধ্য রেলের নন্দেদ রেল বিভাগটিকে
- জলগাঁও জংশন যুক্ত করেছে পশ্চিম রেলের মুম্বই পশ্চিম রেল বিভাগটিকে
- খান্ডওয়া জংশন যুক্ত করছে পশ্চিম মধ্য রেলের ভোপাল রেল বিভাগটিকে
- অকোলা জংশন মিটার গেজে যুক্ত করছে দক্ষিণ মধ্য রেলের নন্দেদ রেল বিভাগটিকে
- নাগপুর জংশন যুক্ত করছে দক্ষিণ পূর্ব মধ্য রেলের নাগপুর দক্ষিণ পূর্ব মধ্য রেল বিভাগটিকে
- ইতারসি জংশন (পশ্চিম মধ্য রেল) যুক্ত করেছে পশ্চিম মধ্য রেলের ভোপাল বিভাগটিকে
- ছিন্দওয়ারা (দক্ষিণ পূর্ব মধ্য রেল) যুক্ত করেছে দক্ষিণ পূর্ব মধ্য রেলের নাগপুর দক্ষিণ পূর্ব মধ্য রেল বিভাগটিকে
- বল্লারশা যুক্ত করেছে দক্ষিণ মধ্য রেলের সেকেন্দ্রাবাদ রেল বিভাগটিকে
- পিম্পলকুট্টি যুক্ত করেছে দক্ষিণ মধ্য রেলের নন্দেদ রেল বিভাগটিকে
- ওয়াদি জংশন যুক্ত করেছে দক্ষিণ মধ্য রেলের সেকেন্দ্রাবাদ রেল বিভাগটিকে
- ওয়াদি জংশন যুক্ত করেছে দক্ষিণ মধ্য রেলের গুন্টাকল রেল বিভাগটিকে
- হটগি জংশন যুক্ত করেছে দক্ষিণ পশ্চিম রেলের হুবলি রেল বিভাগটিকে
- মিরাজ জংশন যুক্ত করেছে দক্ষিণ পশ্চিম রেলের হুবলি রেল বিভাগটিকে
নেরাল-মাথেরান লাইন
সম্পাদনান্যারোগেজ মাথেরান লাইনটি নির্মিত হয় ১৯০৭ সালে। এই লাইন মুম্বই-পুনে মেন লাইনের নেরালের সঙ্গে মুম্বইয়ের পূর্ব দিকে অবস্থিত পশ্চিমঘাট পর্বতমালার মাথেরান শৈলশহরটিকে যুক্ত করেছে। নেরাল মুম্বইয়ের ছত্রপতি শিবাজী টার্মিনাসের সঙ্গে অসংখ্য শহরতলি বৈদ্যুতিক ট্রেনের মাধ্যমে যুক্ত। বর্তমানে বাষ্পচালিত ইঞ্জিনের বদলে ডিজেল ইঞ্জিন চালু হলেও রেলযাত্রা একই প্রকার সুখপ্রদ রয়েছে। এই পথে অনেক তীক্ষ্ণ বাঁক রয়েছে।
রেল বিভাগ
সম্পাদনামধ্য রেলে মোট চারটি রেল বিভাগ রয়েছে: মুম্বই মধ্য রেল বিভাগ, নাগপুর বিভাগ, সোলাপুর বিভাগ, পুনে বিভাগ। নিচে মধ্য রেলের বিভাগভিত্তিক বর্ণনা দেওয়া হল।[২]
মুম্বই মধ্য রেল বিভাগ
সম্পাদনা- মুম্বই ছত্রপতি শিবাজী টার্মিনাস – দাদরা – কুর্লা
- মুম্বই ছত্রপতি শিবাজী টার্মিনাস – ওয়াদালা রোড – কুরলা (ট্রান্স-হারবার লাইন)
- ওয়াদালা – কিংস সার্কেল – মাহিন জংশন – বান্দ্রা (ট্রান্স-হারবার লাইন)
- কুর্লা – ট্রম্বে (পণ্যবাহী)
- কুর্লা – মানখুদ – ভাসি – নেরুল – বেলাপুর – পানভেল
- সানপাদা – আইরোলি – থানে
- মুম্বই ছত্রপতি শিবাজী টার্মিনাস – ওয়াদালা রোড – কুরলা (ট্রান্স-হারবার লাইন)
- কুর্লা – থানে – দিভা জংশন – কল্যাণ
- দিভা জংশন – পানভেল – রোহা
- পানভেল – জাসাই – উরান
- জাসাই – জেএনপিটি
- পানভেল – জাসাই – উরান
- দিভা জংশন – ভাসাই রোড
- দিভা জংশন – পানভেল – রোহা
- কল্যাণ জংশন – কাসারা – ইগাতপুরি (ইনক্লুসিভ)
- কল্যাণ জংশন – নেরাল জংশন – কারজাত জংশন – লোনাবালা (ইনক্লুসিভ)
- নেরাল জংশন – মাথেরান (ন্যারো গেজ)
- কারজাত জংশন – খোপোলি
নাগপুর বিভাগ
সম্পাদনা- বাদনেরা জংশন (এক্সক্লুড) – ফুলগাঁও জংশন – ওয়ার্ধা জংশন – বুটিবোরি জংশন – নাগপুর জংশন
- ফুলগাঁও জংশন – আরভি (ন্যারো গেজ)
- বুটিবোরি জংশন – উমরেদ
- ওয়ার্ধা জংশন – মজরি জংশন – তাডালি জংশন – চন্দ্রপুর-বল্লারশ জংশন (অন্তর্গত)
- মজরি জংশন – ওয়ানি জংশন – রাজপুর
- ওয়ানি জংশন – পিম্পলকুট্টি
- তাডালি জংশন – ঘুগুস
- মজরি জংশন – ওয়ানি জংশন – রাজপুর
- বল্লারশা জংশন – চান্দা ফোর্ট
- নাগপুর – আমলা জংশন – ইতারসি জংশন (অন্তর্গত)
- আমলা জংশন – ছিন্দওয়াড়া (বাদ)
সোলাপুর বিভাগ
সম্পাদনা- মনমদ (ইনক্লুড) – আহমেদনগর – দাউন্দ জংশন
- দুয়ান্দ জংশন – কুরুদওয়াদি জংশন – সোলাপুর
- কুরুদওয়াদি জংশন – পান্ধারপুর
- কুরুদওয়াদি জংশন – লাটুর (ন্যারো গেজ থেকে ব্রড গেজে পরিবর্তিত ট্র্যাক)
- সোলাপুর – হটগি জংশন – গুলবুর্গা – ওয়াদি জংশন (অন্তর্গত)
পুনে বিভাগ
সম্পাদনা- লোনাবালা (বাদ) – পুনে জংশন – দাউন্দ জংশন (বাদ)
- দুয়ান্দ জংশন (বাদ) – বারামতী
- পুনে জংশন – সাতারা – সাঙ্গলি – মিরাজ জংশন – কোলাপুর
- মিরাজ জংশন – পান্ধারপুর (ন্যারো গেজ থেকে ব্রড গেজে পরিবর্তিত ট্র্যাক) [৩]
গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন
সম্পাদনা- পুনে সেকেন্দ্রাবাদ শতাব্দী এক্সপ্রেস - মধ্য রেলের একমাত্র শতাব্দী এক্সপ্রেস
- ডেকান কুইন –পুনে থেকে মুম্বই
- বিদর্ভ এক্সপ্রেস – মুম্বই থেকে গোন্ডিয়া
- গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেস – মুম্বই থেকে হাওড়া (যদিও এই ট্রেনের কোচ ও ইঞ্জিনের মালিক দক্ষিণ পূর্ব রেল)
- পাঞ্জাব মেল – মুম্বই থেকে ফিরোজপুর
- হুসেইনসাগর এক্সপ্রেস – মুম্বই থেকে হায়দরাবাদ
- পুষ্পক এক্সপ্রেস – মুম্বই থেকে লখনউ
- আজাদ হিন্দ এক্সপ্রেস – পুনে থেকে কলকাতা
- কুরলা এক্সপ্রেস – কোয়েমবাটোর থেকে লোকমান্য তিলক
- কোনার্ক এক্সপ্রেস – ভুবনেশ্বর থেকে মুম্বই
- মহারাষ্ট্র এক্সপ্রেস – কোলাপুর থেকে গোন্ডিয়া
- শালিমার-কুরলা (টি) এক্সপ্রেস – লোকমান্য তিলক থেকে শালিমার (যদিও এই ট্রেনের কোচের মালিক দক্ষিণ পূর্ব রেল এবং ইঞ্জিনের মালিক পূর্ব রেল)
- জ্ঞানেশ্বরী সুপার ডিলাক্স এক্সপ্রেস – লোকমান্য তিলক থেকে হাওড়া (যদিও এই ট্রেনের কোচের মালিক মধ্য রেল এবং ইঞ্জিনের মালিক দক্ষিণ পূর্ব রেল)
প্রকল্প
সম্পাদনানতুন লাইন
সম্পাদনা- অমরাবতী – নারখের
- আহমেদনগর – পারলি বৈদ্যনাথ
- পুন্টাম্বা – শিরডি
- লোনান্দ – ফলটান – বারামতী
ডবল লাইন
সম্পাদনা- সোলাপুর – মোহোল
ট্র্যাক পরিবর্তন
সম্পাদনা- কুরুদওয়াদি – লুটুর (ন্যারো গেজ থেকে ব্রড গেজ)
- মিরাজ – পান্ধারপুর (ন্যারো গেজ থেকে ব্রড গেজ)