পূর্ব রেল
পূর্ব রেল বা পূর্ব রেলওয়ে (সংক্ষেপে পূ রে বা ইআর) ভারতীয় রেলের আঠারোটি অঞ্চল বা জোনের অন্যতম। এই অঞ্চলের প্রধান কার্যালয় অবস্থিত কলকাতার ফেয়ারলি প্লেসে। পূর্ব রেল চারটি বিভাগ বা ডিভিশন নিয়ে গঠিত: হাওড়া রেল বিভাগ, মালদা রেল বিভাগ, শিয়ালদহ রেল বিভাগ ও আসানসোল রেল বিভাগ। এই চারটি বিভাগের নাম নির্ধারিত হয়েছে যে যে শহরে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলির সদর দফতর অবস্থিত সেই সেই শহরের নামানুসারে।
রাজ্য | পশ্চিমবঙ্গ ও বিহার |
---|---|
কার্যকাল | ১৯৫১ | –বর্তমান
পূর্বসূরি | ইস্ট ইন্ডিয়া রেলওয়ে কোম্পানি |
ট্র্যাক গেজ | মিশ্র |
দৈর্ঘ্য | ২৪১৪ কিমি |
প্রধান কার্যালয় | ফেয়ারলি প্লেস, কলকাতা |
ওয়েবসাইট | পূর্ব রেলের সরকারি ওয়েবসাইট |
এই রেল অঞ্চলের তিনটি প্রধান ওয়ার্কশপ রয়েছে: জামালপুর, লিলুয়া ও কাঁচড়াপাড়া। জামালপুর ওয়ার্কশপটি ওয়াগন মেরামতি, ডিজেল ইঞ্জিনের রুটিনমাফিক রক্ষণাবেক্ষণ, ক্রেন ও টাওয়ার-ওয়াগন উৎপাদনের জন্য; লিলুয়া ওয়ার্কশপটি কোচ ও পণ্যবাহী যানের রুটিনমাফিক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য; এবং কাঁচড়াপাড়ার ওয়ার্কশপটি ইলেকট্রিক ইঞ্জিন, ইএমইউ লোকাল ও কোচের রুটিনমাফিক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য।
ইতিহাস
সম্পাদনা১৮৪৫ সালে পূর্ব ভারত ও দিল্লির সঙ্গে যোগাযোগসাধনের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয় ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়ে কোম্পানি (ইআইআর)। ১৮৫৪ সালের ১৫ আগস্ট হাওড়া ও হুগলির মধ্যে চলেছিল প্রথম ট্রেনটি। সকাল সাড়ে আটটায় হাওড়া স্টেশন ছেড়ে ৯১ মিনিটে হুগলি পৌঁছেছিল ট্রেনটি। ১৯২৫ সালের ১ জানুয়ারি ব্রিটিশ ভারত সরকার ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়ের পরিচালনার ভার স্বহস্তে তুলে নেয়।[১]
১৯৫২ সালের ১৪ এপ্রিল ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়ের তিনটি লোয়ার ডিভিশন হাওড়া, আসানসোল ও দানাপুর, সমগ্র বেঙ্গল নাগপুর রেলওয়ে (বিএনআর) ও পূর্বতন বেঙ্গল আসাম রেলওয়ে শিয়ালদহ ডিভিশনকে সংযুক্ত করে গঠিত হয় পূর্ব রেল।[২] শেষোক্ত বিভাগটি অবশ্য ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল। ১৯৫৫ সালের ১ আগস্ট হাওড়া থেকে দক্ষিণে বিশাখাপত্তনম পর্যন্ত প্রসারিত বিএনআর-এর অংশটি, মধ্যাঞ্চলে হাওড়া থেকে নাগপুর পর্যন্ত এবং কাটনি পর্যন্ত উত্তর-মধ্যাঞ্চলীয় অংশটি পূর্ব রেল থেকে বিচ্ছিন্ন করে নিয়ে দক্ষিণ পূর্ব রেল গঠিত হয়।[৩][৪] ধানবাদ, মুঘলসরাই ও মালদহ বিভাগ তিনটিও পরে গঠিত হয়।[৫] ২০০২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পূর্ব রেলের বিভাগের সংখ্যা ছিল সাত: হাওড়া, শিয়ালদহ, আসানসোল, মালদহ, দানাপুর, ধানবাদ ও মুঘলসরাই।
২০০২ সালের ১ অক্টোবর, পূর্ব রেলের দানাপুর, ধানবাদ ও মুঘলসরাই বিভাগ তিনটি পূর্ব মধ্য রেলের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[৪]
বিভাগ
সম্পাদনাবর্তমানে পূর্ব রেলের চারটি বিভাগ -
রুট
সম্পাদনা
- হাওড়া-ব্যান্ডেল-বর্ধমান-আসানসোল-সীতারামপুর প্রধান লাইন
- বর্ধমান- খানা- বোলপুর- সাঁইথিয়া- রামপুরহাট- নলহাটি- পাকুর- সাহেবগঞ্জ লুপ লাইন
- হাওড়া-শেওড়াফুলি-কামারকুন্ডু-তারকেশ্বর
- হাওড়া-ডানকুনি-কামারকুন্ডু-বর্ধমান কর্ডলাইন
- ব্যান্ডেল-নবদ্বীপ ধাম-কাটোয়া-আজিমগঞ্জ-মালদহ
- রামপুরহাট - দুমকা- দেওঘর- জসিডি
- রামপুরহাট - নলহাটি- আজিমগঞ্জ
- শিয়ালদহ-নৈহাটি-রানাঘাট-কৃষ্ণনগর সিটি জংশন
- অন্ডাল-সাঁইথিয়া
- ব্যান্ডেল-নৈহাটি
- হাওড়া-বেলুড় মঠ
- শিয়ালদহ-বারাসত-বনগাঁ
- বারাসত-বসিরহাট-হাসনাবাদ
- রানাঘাট- বগুলা-গেদে
- রানাঘাট-বনগাঁ
- কৃষ্ণনগর সিটি জংশন - লালগোলা
- রানাঘাট-শান্তিপুর
- শিয়ালদহ-ডানকুনি
- শিয়ালদহ-বালিগঞ্জ-সোনারপুর-বারুইপুর-জয়নগর-লক্ষীকান্তপুর-কাকদ্বীপ-নামখানা
- শিয়ালদহ-বালিগঞ্জ-বজবজ
- শিয়ালদহ-সোনারপুর-ক্যানিং
- শিয়ালদহ-বারুইপুর-ডায়মন্ড হারবার
- কাটোয়া-কীর্ণাহার-আমেদপুর (পূর্বতন ন্যারো গেজ, বর্তমানে ব্রড গেজে রূপান্তরিত)
- কাটোয়া-বলগোনা-বর্ধমান (পুর্বতন ন্যারোগেজ, বর্তমানে ব্রডগেজে রূপান্তরিত)
- শান্তিপুর-কৃষ্ণনগর-নবদ্বীপ ঘাট ন্যারো গেজ (গেজ রূপান্তরকরণ চলছে)
গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন
সম্পাদনা- হাওড়া - রাঁচি শতাব্দী এক্সপ্রেস - পূর্ব রেলের একমাত্র শতাব্দী এক্সপ্রেস
পাদটীকা
সম্পাদনা- ↑ Rao, M.A. (1988). Indian Railways, New Delhi: National Book Trust, pp.13,34
- ↑ "Sealdah division-Engineering details"। The Eastern Railway, Sealdah division। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ নভেম্বর ২০০৯।
- ↑ Rao, M.A. (1988). Indian Railways, New Delhi: National Book Trust, pp.42-3
- ↑ ক খ "The Eastern Railway-About us"। The Eastern Railway। ১৪ সেপ্টেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ নভেম্বর ২০০৯।
- ↑ "Focus-Eastern Railway"। Press Information Bureau, Government of India।