বসিরহাট

শহর, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত

বসিরহাট ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর ২৪ পরগণা জেলার বসিরহাট মহকুমার সদর শহর ও পৌরসভা এলাকা এবং ইছামতি নদীর তীরে অবস্থিত এই শহরটির শিকড় বহু পুরনো, এটি একসময় বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছিল, বর্তমানে শহরটি বসিরহাট মহকুমার তথা উত্তর ২৪ পরগনা জেলার পূর্বাংশের বৃহত্তম শহর এবং পূর্বপরিকল্পিত বসিরহাট জেলার সদর শহর হিসাবে পরিচিত,[] এবং শহরটি উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সর্ববৃহৎ দুর্গাপূজা আয়োজন করে।[] প্রতিটি বছর, বিশেষ করে আশ্বিন মাসে, শহরের বিভিন্ন পূজামণ্ডপ আলোকসজ্জায় সেজে ওঠে, এবং হাজারো মানুষ এখানে প্রতিমা দর্শনে আসেন। বিশেষ করে শহরের ১০০ টিরও বেশি ঐতিহ্যবাহী বারোয়ারি পূজা এবং থিমযুক্ত প্রতিমা ও মণ্ডপ দর্শকদের আকর্ষণ করে।[]

বসিরহাট
শহর
বসিরহাটের স্কাইলাইন
বসিরহাট পশ্চিমবঙ্গ-এ অবস্থিত
বসিরহাট
বসিরহাট
পশ্চিমবঙ্গে অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২২°৪০′ উত্তর ৮৮°৫৩′ পূর্ব / ২২.৬৬° উত্তর ৮৮.৮৯° পূর্ব / 22.66; 88.89
দেশ India
রাজ্যপশ্চিমবঙ্গ
জেলাউত্তর ২৪ পরগণা জেলা
সরকার
 • ধরনপৌরসভা
 • সংসদ সদস্যনুসরাত জাহান
উচ্চতা৬ মিটার (১৯ ফুট)
জনসংখ্যা (২০১১)
 • মোট১,২৫,২৫৪[]
সময় অঞ্চলভারতীয় মান সময় (ইউটিসি+৫:৩০)
পিন কোড৭৪৩৪১১
টেলিফোন কোড০৩২১৭
যানবাহন নিবন্ধনWB-26
ওয়েবসাইটbasirhatmunicipality.in
বামদিক থেকে ডানদিকে (a) অর্ঘ্য আটলেটিকস্ ক্লাব, বসিরহাট (b) টেরাকোটা শিল্পের আদলে কিশলয় সংঘের পূজা মন্ডপ, বোসপাড়া লেন, বসিরহাট

ইতিহাস

সম্পাদনা

বসিরহাট ভারত - বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী একটি প্রাচীন শহর। স্বাধীনতার আগে এটি একটি বাণিজ্যকেন্দ্র ছিল। বসুদের হাট(ডক ঘাটের ইজারাদার বসু পরিবার), বসুর হাট, বশির (লবণ) হাট, অন্যমতে বাঁশের হাট থেকে বসিরহাট কথার উৎপত্তি। কারো মতে বসি (নিচু জমি) থেকে বসিরহাট। কেউ বলেন বসতি থেকে বসি,তার থেকে বসিরহাট। বিভিন্ন ইতিহাসবিদের কথায় বসিরহাটের নামের নানা উৎস পাওয়া যায়। মহকুমা গঠনের সময়ে প্রশাসনিক কাজের জায়গা ছিল ইছামতী নদীর তীরে বর্তমানে সোলাদানার বাগুন্ডি গ্রাম। ওই বাগুন্ডিকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি লবণ ব্যবসার কেন্দ্র হিসাবে বেছে নিয়ে সেখানে ‘সল্ট সুপারিন্টেন্ডেন্ট’ অফিস করে। ইছামতীর লবণাক্ত জল থেকে নুন তৈরি হত। সে কারণে ইংরেজ আমলে বসিরহাটের বিভিন্ন গ্রামে ইছামতী নদীর ধারে নুনের গোলা তৈরি করা হয়। বসিরহাট শহরে ছিল নুনের বাণিজ্য কেন্দ্র। ১৮২২ সালে সেখানকার ‘নিমকি দেওয়ান’ বা সেরেস্তাদার হয়েছিলেন প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুরকলকাতার বরাহনগর ঘাট থেকে ইছামতী নদী পথে বাগুন্ডিতে আসতেন দ্বারকানাথ। টাকির জমিদার মুন্সি কালীনাথ রায়চৌধুরী আতিথ্যে তার থাকার ব্যবস্থা হত।

এখানকার ব্যবসার আরেক পণ্য ছিল নীল। ১৮১০ সালে নীল চাষ শুরু হয় বসিরহাটে। ইছামতীর দু’ধার ঘেঁসে গড়ে ওঠে নীলকুঠি। বসিরহাটকে কেন্দ্র করে নুন ও নীল চাষের ব্যবসা চালায় ব্রিটিশরা। ১৮৪০ সালে ইছামতি নদীর ধারে হাট এবং আরও ৬০ বছর পরে ১৯০০ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় বসিরহাটের পুরাতন বাজার। বসিরহাটের নতুন বাজার স্থাপিত হয় ১৯২২ সালে। ইচ্ছামতি নদী ছিল যোগাযোগের মাধ্যম। নদীপথে মালপত্র নিয়ে এসে বিক্রি করা হত হাটে।[]

ভৌগোলিক উপাত্ত

সম্পাদনা

শহরটির অবস্থানের অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ হল ২২°৪০′ উত্তর ৮৮°৫৩′ পূর্ব / ২২.৬৬° উত্তর ৮৮.৮৯° পূর্ব / 22.66; 88.89[] সমুদ্র সমতল হতে এর গড় উচ্চতা হল ৬ মিটার (১৯ ফুট)।

বামদিক থেকে ডানদিকে(a) লেক ভিউ পার্ক, বসিরহাট; (b) বসিরহাট শহরের একটি পাড়া

জনসংখ্যার উপাত্ত

সম্পাদনা

ভারতের ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে বসিরহাট শহরের জনসংখ্যা হল ১,২৫,২৫৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৫১% এবং নারী ৪৯%।[]

এখানে সাক্ষরতার হার ৮৭.৩৫%। পুরুষদের মধ্যে সাক্ষরতার হার ৯০.৫১% এবং নারীদের মধ্যে এই হার ৮৪.১৫%। সারা ভারতের সাক্ষরতার হার ৭৭% তার চাইতে বসিরহাট এর সাক্ষরতার হার বেশি।[]

এই শহরের জনসংখ্যার ১০% হল ৬ বছর বা তার কম বয়সী।

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Basirhat City Population Census 2011-2024"Census2011.co.in। Govt. of India। সংগ্রহের তারিখ ২০ মার্চ ২০২৫ 
  2. "About Basirhat Municipality"। Basirhat Municipality। সংগ্রহের তারিখ ২০ মার্চ ২০২৫ 
  3. "থিমের পুজোর রমরমা বসিরহাট শহরে, তৈরি হল নতুন মাইলস্টোন"। News18 বাংলা। ২০ অক্টোবর ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ২০ মার্চ ২০২৫ 
  4. নির্মল বসু (২৫ ২ জুলাই ০১৪)। "বিকিকিনির রমরমা, তবু বসিরহাট আলো-আঁধারিতে" (ইংরেজি ভাষায়)। আনন্দবাজার পত্রিকা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ মার্চ ২০১৭  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  5. "Basirhat"Falling Rain Genomics, Inc (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ২৫, ২০০৬ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা