সুইজারল্যান্ড জাতীয় ফুটবল দল
সুইজারল্যান্ড জাতীয় ফুটবল দল (জার্মান: Schweizer Fußballnationalmannschaft, ফরাসি: Équipe de Suisse de football, ইতালীয়: Nazionale di calcio della Svizzera, রোমানশ: Squadra naziunala da ballape da la Svizra, ইংরেজি: Switzerland national football team) হচ্ছে আন্তর্জাতিক ফুটবলে সুইজারল্যান্ডের প্রতিনিধিত্বকারী পুরুষদের জাতীয় দল, যার সকল কার্যক্রম সুইজারল্যান্ডের ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা সুইজারল্যান্ডীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এই দলটি ১৯০৪ সাল হতে ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফার এবং ১৯৫৪ সাল হতে তাদের আঞ্চলিক সংস্থা উয়েফার সদস্য হিসেবে রয়েছে। ০০০০ সালের ০শে সেপ্টেম্বর তারিখে, সুইজারল্যান্ড প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণ করেছে; ফ্রান্সের প্যারিসে অনুষ্ঠিত উক্ত ম্যাচে সুইজারল্যান্ড ফ্রান্সের কাছে ১–০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে।
![]() | |||
ডাকনাম | এ-টিম (এ-দল) নাতি (জাতীয় দল) রসসোক্রসিয়াতি (রেড ক্রস) | ||
---|---|---|---|
অ্যাসোসিয়েশন | সুইজারল্যান্ডীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন | ||
কনফেডারেশন | উয়েফা (ইউরোপ) | ||
প্রধান কোচ | ভ্লাদিমির পেতকোভিচ | ||
অধিনায়ক | গ্রানিত জাকা | ||
সর্বাধিক ম্যাচ | হাইনৎস হারমান (১১৮)[১] | ||
শীর্ষ গোলদাতা | আলেক্সান্ডার ফ্রাই (৪২) | ||
মাঠ | বিভিন্ন | ||
ফিফা কোড | SUI | ||
ওয়েবসাইট | www | ||
| |||
ফিফা র্যাঙ্কিং | |||
বর্তমান | ১২ ![]() | ||
সর্বোচ্চ | ৩ (আগস্ট ১৯৯৩) | ||
সর্বনিম্ন | ৮৩ (ডিসেম্বর ১৯৯৮) | ||
এলো র্যাঙ্কিং | |||
বর্তমান | ১৩ ![]() | ||
সর্বোচ্চ | ৮ (জুন ২০১৮) | ||
সর্বনিম্ন | ৬২ (অক্টোবর ১৯৭৯) | ||
প্রথম আন্তর্জাতিক খেলা | |||
![]() ![]() (প্যারিস, ফ্রান্স; ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯০৫) | |||
বৃহত্তম জয় | |||
![]() ![]() (প্যারিস, ফ্রান্স; ২৫ মে ১৯২৪) | |||
বৃহত্তম পরাজয় | |||
![]() ![]() (বাজেল, সুইজারল্যান্ড; ২০ মে ১৯০৯) ![]() ![]() (বুদাপেস্ট, হাঙ্গেরি; ২৯ অক্টোবর ১৯১১) | |||
বিশ্বকাপ | |||
অংশগ্রহণ | ১১ (১৯৩৪-এ প্রথম) | ||
সেরা সাফল্য | কোয়ার্টার-ফাইনাল (১৯৩৪, ১৯৩৮, ১৯৫৪) | ||
উয়েফা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপ | |||
অংশগ্রহণ | ৫ (১৯৯৬-এ প্রথম) | ||
সেরা সাফল্য | ১৬ দলের পর্ব (১৯৯৬) | ||
উয়েফা নেশনস লীগ | |||
অংশগ্রহণ | ১ (২০১৯-এ প্রথম) | ||
সেরা সাফল্য | চতুর্থ স্থান (২০১৯) |
রসসোক্রসিয়াতি নামে পরিচিত এই দলটি বেশ কয়েকটি স্টেডিয়ামে তাদের হোম ম্যাচগুলো আয়োজন করে থাকে। এই দলের প্রধান কার্যালয় সুইজারল্যান্ডের রাজধানী বের্নে অবস্থিত। বর্তমানে এই দলের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন ভ্লাদিমির পেতকোভিচ এবং অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন আর্সেনালের মধ্যমাঠের খেলোয়াড় গ্রানিত জাকা।
সুইজারল্যান্ড এপর্যন্ত ১১ বার ফিফা বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছে, যার মধ্যে সেরা সাফল্য হচ্ছে ১৯৩৪, ১৯৩৮ এবং ১৯৫৪ ফিফা বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনালে পৌঁছানো। অন্যদিকে, উয়েফা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপে সুইজারল্যান্ড এপর্যন্ত ৫ বার অংশগ্রহণ করেছে, যার মধ্যে সেরা সাফল্য হচ্ছে উয়েফা ইউরো ১৯৯৬-এ ১৬ দলের পর্বে পৌঁছানো, যেখানে তারা পোল্যান্ডের সাথে ১–১ গোলে ড্র করা পর পেনাল্টিতে ৫–৪ গোলে পরাজিত হয়েছে। এছাড়াও, সুইজারল্যান্ড ২০১৯ উয়েফা নেশনস লীগে চতুর্থ স্থান অর্জন করেছে।
হাইনৎস হারমান, আলাইন গাইগার, স্টেফান লিচস্টাইনার, আলেক্সান্ডার ফ্রাই এবং কুবিলায় তুর্কিলমাজের মতো খেলোয়াড়গণ সুইজারল্যান্ডের জার্সি গায়ে মাঠ কাঁপিয়েছেন।
ইতিহাসসম্পাদনা
সুইজারল্যান্ডের ফুটবলে ইতিহাসে স্মরণীয় সাফল্য হিসেবে রয়েছে অলিম্পিকে রৌপ্যপদক অর্জন করা। ১৯২৪ সালের অলিম্পিকের ফাইনালে তারা উরুগুয়ের কাছে ৩–০ ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিল।
বিশ্বকাপসম্পাদনা
১৯৩৪ সালে প্রথমবারের মতো ফিফা বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করে। কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছলেও চেকোস্লোভাকিয়ার কাছে পরাজিত হয়। ১৯৩৮ সালে তারা পুনরায় কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে ও হাঙ্গেরির কাছে পরাভূত হয়। ১৯৫৪ সালে সুইজারল্যান্ড বিশ্বকাপে স্বাগতিক দেশের মর্যাদা পায় ও তৃতীয়বারের মতো কোয়ার্টার-ফাইনালে পৌঁছে। কিন্তু প্রতিবেশী অস্ট্রিয়ার কাছে ৭–৫ গোলে হেরে যায়। এছাড়াও, দলটি ১৯৫০, ১৯৬২ ও ১৯৬৬ সালে প্রথম পর্বেই বিদায় নেয়।
১৯৯৪ সালের ফিফা বিশ্বকাপের উয়েফা - গ্রুপ ১ এর বাছাই পর্বের বাঁধা পেরিয়ে ২৮ বছর পর প্রথম বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে যায়। রোমানিয়াকে পরাজিত করে ও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ড্র করে দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলা নিশ্চিত করে। কিন্তু স্পেনের কাছে ৩–০ ব্যবধানে হেরে যায়।
২০০৬ সালের ফিফা বিশ্বকাপে প্রতিপক্ষ দল কোন গোল না করলেও প্রতিযোগিতা থেকে বিদায় নিতে হয় তাদের। ১৬ দলের পর্বে ইউক্রেনের কাছে পেনাল্টি শুটআউটে পরাজিত হয়্ ও বিশ্বকাপের ইতিহাসে রেকর্ড গড়ে।[৪] ২০১০ সালের বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় খেলায় চিলির বিপক্ষে ৭৪ মিনিট পর্যন্ত প্রতিপক্ষ কর্তৃক কোন গোল না খাওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করে।
ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপসম্পাদনা
১৯৯২ সালে ইংরেজ ম্যানেজার রয় হজসন দলে নিয়োগ পান। এ সময় সুইজারল্যান্ড ফিফা বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে তাদের সর্বোচ্চ স্থান লাভ করে। ১৯৯৬ সালে উয়েফা ইউরো বাছাই-পর্বে প্রথমবারের মতো অংশ নেয়। উয়েফা ইউরোর চূড়ান্ত পর্বে ম্যানেজার হজসনের পরিবর্তে পর্তুগিজ আর্থার জর্জ তার স্থলাভিষিক্ত হন। গ্রুপ পর্বে সুইজারল্যান্ড সর্বনিম্ন স্থান অধিকার করে।
উয়েফা ইউরোসম্পাদনা
পর্তুগালে অনুষ্ঠিত ২০০৪ সালের উয়েফা ইউরো চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। বাছাই-পর্বে দলটি রাশিয়া ও আয়ারল্যান্ডকে পিছনে রেখে গ্রুপ ১০-এ শীর্ষস্থান অর্জন করেছিল। চূড়ান্ত পর্বে ক্রোয়েশিয়ার সাথে ০–০ ড্র এবং ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের সাথে যথাক্রমে ০–৩ ও ১–৩ ব্যবধানে হেরে গ্রুপ-বিতে সর্বনিম্ন স্থান দখল করে। ইয়োহান ভনলান্থেন ফ্রান্সের বিপক্ষে অংশগ্রহণ করে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতার মর্যাদা লাভ করেন। তিনি তিন মাস আগে গড়া ওয়েন রুনির তুলনায় মাত্র চার দিনের ব্যবধান গড়ে এ রেকর্ড স্থাপন করেন।[৫]
র্যাঙ্কিংসম্পাদনা
ফিফা বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে, ১৯৯৩ সালের আগস্ট মাসে প্রকাশিত র্যাঙ্কিংয়ে সুইজারল্যান্ড তাদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ অবস্থান (৩য়) অর্জন করে এবং ১৯৯৮ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রকাশিত র্যাঙ্কিংয়ে তারা ৮৩তম স্থান অধিকার করে, যা তাদের ইতিহাসে সর্বনিম্ন। অন্যদিকে, বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিংয়ে সুইজারল্যান্ডের সর্বোচ্চ অবস্থান হচ্ছে ৮ম (যা তারা ২০১৮ সালে অর্জন করেছিল) এবং সর্বনিম্ন অবস্থান হচ্ছে ৬২। নিম্নে বর্তমানে ফিফা বিশ্ব র্যাঙ্কিং এবং বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিংয়ে অবস্থান উল্লেখ করা হলো:
|
|
প্রতিযোগিতামূলক তথ্যসম্পাদনা
ফিফা বিশ্বকাপসম্পাদনা
ফিফা বিশ্বকাপ | বাছাইপর্ব | ||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
সাল | পর্ব | অবস্থান | ম্যাচ | জয় | ড্র | হার | স্বগো | বিগো | ম্যাচ | জয় | ড্র | হার | স্বগো | বিগো | |
১৯৩০ | অংশগ্রহণ করেনি | আমন্ত্রণের মাধ্যমে উত্তীর্ণ | |||||||||||||
১৯৩৪ | কোয়ার্টার-ফাইনাল | ৭ম | ২ | ১ | ০ | ১ | ৫ | ৫ | ২ | ০ | ২ | ০ | ৪ | ৪ | |
১৯৩৮ | কোয়ার্টার-ফাইনাল | ৭ম | ৩ | ১ | ১ | ১ | ৫ | ৫ | ১ | ১ | ০ | ০ | ২ | ১ | |
১৯৫০ | গ্রুপ পর্ব | ৬ষ্ঠ | ৩ | ১ | ১ | ১ | ৪ | ৬ | ২ | ২ | ০ | ০ | ৮ | ৪ | |
১৯৫৪ | কোয়ার্টার-ফাইনাল | ৮ম | ৪ | ২ | ০ | ২ | ১১ | ১১ | আয়োজক হিসেবে উত্তীর্ণ | ||||||
১৯৫৮ | উত্তীর্ণ হয়নি | ৪ | ০ | ১ | ৩ | ৬ | ১১ | ||||||||
১৯৬২ | গ্রুপ পর্ব | ১৬তম | ৩ | ০ | ০ | ৩ | ২ | ৮ | ৫ | ৪ | ০ | ১ | ১১ | ১০ | |
১৯৬৬ | গ্রুপ পর্ব | ১৬তম | ৩ | ০ | ০ | ৩ | ১ | ৯ | ৬ | ৪ | ১ | ১ | ৭ | ৩ | |
১৯৭০ | উত্তীর্ণ হয়নি | ৬ | ২ | ১ | ৩ | ৫ | ৮ | ||||||||
১৯৭৪ | ৬ | ২ | ২ | ২ | ২ | ৪ | |||||||||
১৯৭৮ | ৪ | ১ | ০ | ৩ | ৩ | ৫ | |||||||||
১৯৮২ | ৮ | ২ | ৩ | ৩ | ৯ | ১২ | |||||||||
১৯৮৬ | ৮ | ২ | ৪ | ২ | ৫ | ১০ | |||||||||
১৯৯০ | ৮ | ২ | ১ | ৫ | ১০ | ১৪ | |||||||||
১৯৯৪ | ১৬ দলের পর্ব | ১৬তম | ৪ | ১ | ১ | ২ | ৫ | ৭ | ১০ | ৬ | ৩ | ১ | ২৩ | ৬ | |
১৯৯৮ | উত্তীর্ণ হয়নি | ৮ | ৩ | ১ | ৪ | ১১ | ১২ | ||||||||
২০০২ | ১০ | ৪ | ২ | ৪ | ১৮ | ১২ | |||||||||
২০০৬ | ১৬ দলের পর্ব | ১০ম | ৪ | ২ | ২ | ০ | ৪ | ০ | ১২ | ৫ | ৬ | ১ | ২২ | ১১ | |
২০১০ | গ্রুপ পর্ব | ১৯তম | ৩ | ১ | ১ | ১ | ১ | ১ | ১০ | ৬ | ৩ | ১ | ১৮ | ৮ | |
২০১৪ | ১৬ দলের পর্ব | ১১তম | ৪ | ২ | ০ | ২ | ৭ | ৭ | ১০ | ৭ | ৩ | ০ | ১৭ | ৬ | |
২০১৮ | ১৬ দলের পর্ব | ১৪তম | ৪ | ১ | ২ | ১ | ৫ | ৫ | ১২ | ১০ | ১ | ১ | ২৪ | ৭ | |
২০২২ | অনির্ধারিত | অনির্ধারিত | |||||||||||||
মোট | কোয়ার্টার-ফাইনাল | ১১/২১ | ৩৭ | ১২ | ৮ | ১৭ | ৫০ | ৬৪ | ১৩২ | ৬৩ | ৩৪ | ৩৫ | ২০৫ | ১৪৮ |
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ "FIFA Century Club" (পিডিএফ)। ১৮ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ নভেম্বর ২০২০।
- ↑ ক খ "ফিফা/কোকা-কোলা বিশ্ব র্যাঙ্কিং"। ফিফা। ৬ এপ্রিল ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০২৩।
- ↑ ক খ গত এক বছরে এলো রেটিং পরিবর্তন "বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিং"। eloratings.net। ৩০ এপ্রিল ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ৩০ এপ্রিল ২০২২।
- ↑ "Switzerland 0–0 Ukraine (aet)"। BBC Sport। ২৬ জুন ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৬-১৩।
- ↑ Euro 2008 team preview No1: Switzerland | Football | guardian.co.uk
বহিঃসংযোগসম্পাদনা
- প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট (ইংরেজি) (জার্মান) (ফরাসি) (ইতালীয়)
- ফিফা-এ সুইজারল্যান্ড জাতীয় ফুটবল দল ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৩ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে (ইংরেজি)
- উয়েফা-এ সুইজারল্যান্ড জাতীয় ফুটবল দল (ইংরেজি)