চিলাহাটি–পার্বতীপুর–সান্তাহার–দর্শনা লাইন
চিলাহাটি-পার্বতীপুর-সান্তাহার-দর্শনা- লাইন বাংলাদেশের একটি রেলপথ যা চিলাহাটি হইতে সৈয়দপুর, পার্বতীপুর জংশন, সান্তাহার, আব্দুলপুর, আজিম নগর স্টেশন (লালপুর উপজেলা), ঈশ্বরদী ও হার্ডিঞ্জ ব্রিজ দিয়ে দর্শনা পৌছেছে। লাইনটি বাংলাদেশ রেলওয়ের অধীনে রক্ষানাবেক্ষন ও পরিচালিত হয়।
চিলাহাটি-পার্বতীপুর-সান্তাহার-দর্শনা লাইন | |
---|---|
![]() চিলাহাটি- পার্বতীপুর- সান্তাহার- দর্শনা রেল লাইন, ডোমার | |
সংক্ষিপ্ত বিবরণ | |
স্থিতি | সক্রিয় |
মালিক | বাংলাদেশ রেলওয়ে |
অঞ্চল | বাংলাদেশ |
বিরতিস্থল | |
স্টেশন | ৫৪ |
ইতিহাস | |
চালু | ১৮৭৮ |
কারিগরি তথ্য | |
ট্র্যাক গেজ | ঈশ্বরদী এবং সৈয়দপুরের মধ্যের ১,৬৭৬ মিলিমিটার (৫ ফুট ৬ ইঞ্চি) ব্রডগেজকে ১,৬৭৬ মিলিমিটার (৫ ফুট ৬ ইঞ্চি) ও ১,০০০ মিলিমিটার (৩ ফুট ৩ ৩⁄৮ ইঞ্চি) ডুয়েল গেজ এ রূপান্তর |
ইতিহাস
সম্পাদনা১৮৭৮ সাল থেকে, কলকাতা থেকে শিলিগুড়িতে রেলপথে যাওয়ার জন্য দুইবার পথ ভাঙতে হত। প্রথমবার পূর্ববাংলার রাজ্য রেলপথ ধরে কলকাতা স্টেশন (পরবর্তীতে শিয়ালদহ নামে নামকরণ করা হয়) থেকে যাত্রা শুরু করে পদ্মা নদীর দক্ষিণ তীরের দামুকদিয়া ঘাট পর্যন্ত ১৮৫ কিলোমিটার ভ্রমণ করতে হত, তারপর ফেরিতে করে নদীর পার হয়ে ভ্রমণ যাত্রার দ্বিতীয়টি শুরু হত। তখন উত্তরবঙ্গ রেলপথের ৩৩৬ কিলোমিটার মিটার গেজ লাইনটি পদ্মার উত্তর তীরের সারাঘাটকে শিলিগুড়ির সাথে সংযুক্ত করেছিল। ১৮৭৪ সালে নর্থ বেঙ্গল স্টেট রেলওয়ে নামে ব্রিটিশ সরকার এই রেললাইন স্থাপনের কাজ শুরু করেছিল।
১৯১২ সালে সরকার পদ্মা নদীতে ১.৮ কিমি হার্ডিঞ্জ ব্রীজ নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয়। ১৯২৬ সালে নর্থ বেঙ্গল স্টেট রেলওয়ে কর্তৃক পদ্মা পাড় থেকে শিলিগুড়ি পর্যন্ত লাইনটিকে মিটারগেজ থেকে ব্রজগেজে পবির্তন করা হয়।[১] ফলে পুরো কলকাতা - শিলিগুড়ি রুটটি ব্রডগেজে রুপান্তরিত হয়।
১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগ হলে লাইনের পাকিস্তান (যা পরবর্তীকালে বাংলাদেশ অঞ্চল হয়) অংশ পৃথক হয়ে যায়। বর্তমানে গেদে হয়ে দক্ষিণাঞ্চলের অংশ এখনও কার্যকর রয়েছে এবং মৈত্রী এক্সপ্রেস এই লাইনে ঢাকা-কলকাতা যায়। উত্তরের চিলাহাটি–হালদিবাড়ি বিভাগটি বর্তমানে অকার্যকর। ২০১০ সালের হিসাবে অনুসারে, ৬৪ কিলোমিটার (৪০ মাইল) দীর্ঘ সৈয়দপুর-চিলাহাটি লাইনটির অবস্থা খারাপের কারণে ঢাকা এবং চিলাহাটির মধ্যে কোনও ট্রেন চলাচল করত না। ২০১০ সালে এই লাইনের উন্নয়নের জন্য সরকার ১০৩.৬৮ কোটি টাকার প্রকল্পের অনুমোদন দেয়। ২০১৫ সালে চিলাহাটি-ঢাকা রুটের জন্য নীলসাগর এক্সপ্রেস এ লাইনে চালু হয়।
স্টেশনের তালিকা
সম্পাদনাচিলাহাটি-দর্শনা রেললাইনে ৫৩ টি স্টেশন আছে । নিম্নে তা উল্লেখ করা হলো:
- বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত
- চিলাহাটি রেলওয়ে স্টেশন
- মীর্জাগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন
- ডোমার রেলওয়ে স্টেশন
- তরুণীবাড়ী রেলওয়ে স্টেশন
- নীলফামারী রেলওয়ে স্টেশন
- নীলফামারী কলেজ রেলওয়ে স্টেশন
- দারোয়ানী রেলওয়ে স্টেশন
- খয়রাতনগর রেলওয়ে স্টেশন
- সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশন
- বিলাইচন্ডি রেলওয়ে স্টেশন
- পার্বতীপুর রেলওয়ে স্টেশন
- ভবানীপুর রেলওয়ে স্টেশন
- ফুলবাড়ী রেলওয়ে স্টেশন
- বিরামপুর রেলওয়ে স্টেশন
- ডাঙ্গাপাড়া রেলওয়ে স্টেশন
- হিলি রেলওয়ে স্টেশন
- বাগজানা রেলওয়ে স্টেশন
- পাঁচবিবি রেলওয়ে স্টেশন
- জয়পুরহাট রেলওয়ে স্টেশন
- জামালগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন
- আক্কেলপুর রেলওয়ে স্টেশন
- জাফরপুর রেলওয়ে স্টেশন
- তিলকপুর রেলওয়ে স্টেশন
- ছাতিয়ান গ্রাম রেলওয়ে স্টেশন
- সান্তাহার রেলওয়ে স্টেশন
- হেলালিয়ার হাট রেলওয়ে স্টেশন
- রাণীনগর রেলওয়ে স্টেশন
- সাহাগোলা রেলওয়ে স্টেশন
- আত্রাই রেলওয়ে স্টেশন
- আহসানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন
- বীরকুটশা রেলওয়ে স্টেশন
- মাধনগর রেলওয়ে স্টেশন
- নলডাঙ্গার হাট রেলওয়ে স্টেশন
- বাসুদেবপুর রেলওয়ে স্টেশন
- নাটোর রেলওয়ে স্টেশন
- ইয়াছিনপুর রেলওয়ে স্টেশন
- মালঞ্চি রেলওয়ে স্টেশন
- আব্দুলপুর রেলওয়ে স্টেশন
- আজিমনগর রেলওয়ে স্টেশন
- ঈশ্বরদী রেলওয়ে স্টেশন
- পাকশী রেলওয়ে স্টেশন
- ভেড়ামারা রেলওয়ে স্টেশন
- মিরপুর রেলওয়ে স্টেশন
- পোড়াদহ রেলওয়ে স্টেশন
- হালশা রেলওয়ে স্টেশন
- আলমডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন
- মুন্সীগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন
- মমিনপুর রেলওয়ে স্টেশন
- চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন
- গাইদঘাট রেলওয়ে স্টেশন (পরিত্যক্ত)
- জয়রামপুর রেলওয়ে স্টেশন
- দর্শনা জংশন রেলওয়ে স্টেশন
- দর্শনা রেলওয়ে স্টেশন
- বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত
শাখা লাইন
সম্পাদনা১৯১৫-১৬ সালে সারা-সিরাজগঞ্জ রেলওয়ে কোম্পানি সারাঘাট-সিরাজগঞ্জ লাইন নির্মাণ করে।[২] তারপরে ১৯৩০ সালে, আবদুলপুর-আমনুরা ব্রডগেজ লাইনটি সারাঘাট-সিরাজগঞ্জ লাইনের একটি শাখা হিসাবে খোলা হয়।[৩]
১৮৯৯-১৯০০ সালে ব্রহ্মপুত্র-সুলতানপুর রেলওয়ে কোম্পানি ৯৪ কিলোমিটার (৫৮ মাইল) দীর্ঘ সান্তাহার থেকে ফুলছড়ি (তিস্তামুখ) মিটারগেজ রেলওয়ে ট্র্যাক নির্মাণ করে। বর্তমানে লাইনটি ফুলছড়ি উপজেলার বালাসি ঘাট পর্যন্ত রয়েছে।[২][৪] ৪৪ কিলোমিটার (২ মাইল) দীর্ঘ বনরপাড়া-কাউনিয়া লাইনটি ১৯০৫ সালে নির্মিত হয়।
উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় রেলওয়ে ১৮৭৯ সালে কাউনিয়ায় মিটারগেজ লাইন নির্মাণ করে। ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে কর্তৃক কাউনিয়া থেকে ধরলা পর্যন্ত দুটি ন্যারোগেজ লাইন নির্মাণ হয়। যার ফলে কাউনিয়া-ধরলা রাজ্য রেলওয়ে তৈরি হয়। কাউনিয়া-ধরলা রেলওয়ে লাইন পর্বতীতে মিটারগেজে পবির্তন করা হয়।[৫]
সম্পর্কিত নিবন্ধ
সম্পাদনা- পার্বতীপুর-পঞ্চগড় লাইন
- পার্বতীপুর-বারসই লাইন
- বুড়ীমারি-লালমনিরহাট-পার্বতীপুর লাইন
- তিস্তা জংশন-কুড়িগ্রাম-চিলমারী লাইন
- সান্তাহার-কাউনিয়া লাইন
- আব্দুলপুর-পুরনো মালদহ লাইন
- ঈশ্বরদী-সিরাজগঞ্জ লাইন
- মাঝগ্রাম-পাবনা-ঢালারচর লাইন
- দর্শনা জংশন-খুলনা লাইন
- জামতৈল-জয়দেবপুর লাইন
- পোড়াদহ-কালুখালী-গোয়ালন্দ ঘাট লাইন
- ভেড়ামারা-রায়টা লাইন
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "রেলওয়ে"। বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০২-০৭।
- ↑ ক খ "Brief History"। Bangladesh Railway। ২০১১-১২-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০২-০৭।
- ↑ "Railways in colonial Bengal"। দ্য ডেইলি স্টার। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০১৯।
- ↑ "Railway"। Banglapedia। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০২-০৭।
- ↑ R.P. Saxena। "Indian Railway History timeline"। ২০১২-০২-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০২-০১।