হার্ডিঞ্জ ব্রিজ
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ বাংলাদেশের পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী থেকে কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা উপজেলা পর্যন্ত যুক্তকারী একটি রেলসেতু। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘ রেলসেতু হিসেবে পরিচিত। পাবনা জেলার পাকশী রেলস্টেশনের দক্ষিণে পদ্মা নদীর উপর এই সেতুটি অবস্থিত। এই সেতুর নির্মাণকাল ১৯০৯-১৯১৫। তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জের নাম অনুসারে এই সেতুর নামকরণ করা হয়। হার্ডিঞ্জ ব্রিজের দৈর্ঘ্য ১,৭৯৮.৩২ মিটার বা ৫৮৯৪ ফুট বা ১.৮ কিমি।[২] এর উপর দুটি ব্রড-গেজ রেললাইন রয়েছে।
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ | |
---|---|
স্থানাঙ্ক | ২৪°০৪′০৪″ উত্তর ৮৯°০১′৪৫″ পূর্ব / ২৪.০৬৭৭৮° উত্তর ৮৯.০২৯১৭° পূর্ব |
বহন করে | ব্রড-গেজ রেললাইন |
অতিক্রম করে | পদ্মা নদী |
স্থান | পাবনা জেলা |
দাপ্তরিক নাম | হার্ডিঞ্জ ব্রিজ |
অন্য নাম | হার্ডিঞ্জ সেতু |
বৈশিষ্ট্য | |
মোট দৈর্ঘ্য | ১,৭৯৮.৩২ মিটার (৫,৯০০ ফু) |
ইতিহাস | |
নকশাকার | আলেকজান্ডার মেয়াডোস রেন্ডেল[১] |
নির্মাণকারী | ব্রিথওয়ায়েট ও কির্ক[১] |
চালু | ৪ মার্চ ১৯১৫ |
অবস্থান | |
অবস্থান
সম্পাদনাহার্ডিঞ্জ ব্রিজ পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলাধীন পাকশী ইউনিয়ন ও কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার মাঝে পদ্মা নদীর উপর অবস্থিত। হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ভেড়ামারা ও ঈশ্বরদী উপজেলার একটি ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা। ভেড়ামারা উপজেলা সদর হতে প্রায় ৮.৫ কিমি উত্তরে এবং ঈশ্বরদী উপজেলার সদর হতে প্রায় ৮ কিমি দক্ষিণে পদ্মা নদীর উপর সেতুটি অবস্থিত।
ইতিহাস
সম্পাদনা১৮৮৯ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন অবিভক্ত ভারত সরকার অসম, ত্রিপুরা, নাগাল্যান্ড ও উত্তরবঙ্গের সঙ্গে কলকাতার যোগাযোগ সহজতর করার লক্ষ্যে পদ্মা নদীর উপর ব্রিজ নির্মাণের প্রস্তাব করে। পরবর্তীতে ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দে সেতু নির্মাণের মঞ্জুরী লাভের পর ব্রিটিশ প্রকৌশলী স্যার রবার্ট গেইলস সেতুটি নির্মাণের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দে সেতু নির্মাণের সমীক্ষা শুরু হয়। ১৯১০-১১ খ্রিষ্টাব্দে পদ্মার দুই তীরে সেতু রক্ষার বাঁধ নির্মাণ হয়। ১৯১২ খ্রিষ্টাব্দে সেতুটির গাইড ব্যাংক নির্মাণের কাজ শুরু হয়। পাশাপাশি সেতুর গার্ডার নির্মাণের কাজ শুরু হয়। গার্ডার নির্মাণের জন্য কূপ খনন করা হয়। ২৪ হাজার শ্রমিক দীর্ঘ ৫ বছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে ১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দে সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ করেন। তৎকালীন অবিভক্ত ভারতের ভাইসরয় ছিলেন লর্ড হার্ডিঞ্জ। তার নামানুসারে সেতুটির নামকরণ করা হয় হার্ডিঞ্জ ব্রীজ। সেতুটির নির্মাণে ব্যয় হয়েছিল ৩ কোটি ৫১ লক্ষ ৩২ হাজার ১ শত ৬৪ টাকা। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৫ হাজার ৮ শত ফুট। ব্রিজটিতে ১৫টি স্প্যান আছে। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে মুক্তিযুদ্ধের সময় সেতুটিতে বোমা ফেলা হলে ১২ নম্বর স্প্যানটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যেগুলো পরে মেরামত করা হয়েছে।[৩]
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ঈশ্বরদী ভেড়ামারা সীমানায় পদ্মা নদীর উপর অবস্থিত। সেতুটি দিয়ে শুধু ট্রেন চলাচল করে। বাংলাদেশ রেলওয়ে সেতুটির রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে। ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে এই হার্ডিঞ্জ ব্রিজ নির্মাণের শতবর্ষ পূর্ণ হয়।[৩]
চিত্রশালা
সম্পাদনা-
উদ্বোধনের দিন
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ "Braithwaite and Kirk"। গ্রেস'স গাইড। সংগ্রহের তারিখ ১৫ আগস্ট ২০১৫।
- ↑ "Hardinge Bridge"। Structurae। উইলহেম আর্নস্ট এবং সোন ভারলগ। ২৯ জুলাই ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১৭ অক্টোবর ২০১৪।
- ↑ ক খ শতবর্ষে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- উইকিমিডিয়া কমন্সে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।
- বাংলাপিডিয়ায় হার্ডিঞ্জ ব্রিজ
- "শতবর্ষ পূর্ণ হলো ঐতিহ্যবাহী হার্ডিঞ্জ ব্রিজের"। বিবিসি বাংলা। ৪ মার্চ ২০১৫।