ইকুয়েডর জাতীয় ফুটবল দল

ইকুয়েডর জাতীয় ফুটবল দল (স্পেনীয়: Selección de fútbol de Ecuador, ইংরেজি: Ecuador national football team) হচ্ছে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ইকুয়েডরের প্রতিনিধিত্বকারী পুরুষদের জাতীয় দল, যার সকল কার্যক্রম ইকুয়েডরের ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইকুয়েডরীয় ফুটবল ফেডারেশন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এই দলটি ১৯২৬ সাল হতে ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফার এবং ১৯২৭ সাল হতে তাদের আঞ্চলিক সংস্থা কনমেবলের সদস্য হিসেবে রয়েছে। ১৯৩৮ সালের ৮ই আগস্ট তারিখে, ইকুয়েডর প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণ করেছে; কলম্বিয়ার বগোতায় অনুষ্ঠিত ইকুয়েডর এবং বলিভিয়ার মধ্যকার উক্ত ম্যাচটি ১–১ গোলে ড্র হয়েছে। ইকুয়েডর হচ্ছে কোপা আমেরিকার করেছে।

ইকুয়েডর
দলের লোগো
ডাকনামলা ত্রি (ত্রয়ী)
লা ত্রিকলর (ত্রিরঙ)
অ্যাসোসিয়েশনইকুয়েডরীয় ফুটবল ফেডারেশন
কনফেডারেশনকনমেবল (দক্ষিণ আমেরিকা)
প্রধান কোচগুস্তাবো আলফারো
অধিনায়কএনের ভ্যালেন্সিয়া
সর্বাধিক ম্যাচইবান উর্তাদো (১৬৮)
শীর্ষ গোলদাতাআগুস্তিন দেলগাদো
এনের বালেনসিয়া (৩১)
মাঠএস্তাদিও রদ্রিগো পাস দেলগাদো
ফিফা কোডECU
ওয়েবসাইটwww.fef.ec
প্রথম জার্সি
দ্বিতীয় জার্সি
ফিফা র‌্যাঙ্কিং
বর্তমান ৪৬ হ্রাস ২ (৩১ মার্চ ২০২২)[১]
সর্বোচ্চ১০ (জুলাই ২০১২)
সর্বনিম্ন৭১ (নভেম্বর ২০১৭)
এলো র‌্যাঙ্কিং
বর্তমান ১৯ অপরিবর্তিত (৩০ এপ্রিল ২০২২)[২]
সর্বোচ্চ১১ (২৭ মার্চ ২০১৩)
সর্বনিম্ন১২০ (ডিসেম্বর ১৯৫৯)
প্রথম আন্তর্জাতিক খেলা
 বলিভিয়া ১–১ ইকুয়েডর 
(বগোতা, কলম্বিয়া; ৮ আগস্ট ১৯৩৮)
বৃহত্তম জয়
 ইকুয়েডর ৬–০ পেরু 
(কুইতো, ইকুয়েডর; ২২ জুন ১৯৭৫)
বৃহত্তম পরাজয়
 আর্জেন্টিনা ১২–০ ইকুয়েডর 
(মোন্তেবিদেও, উরুগুয়ে; ২২ জানুয়ারি ১৯৪২)
বিশ্বকাপ
অংশগ্রহণ৩ (২০০২-এ প্রথম)
সেরা সাফল্য১৬ দলের পর্ব (২০০৬)
কোপা আমেরিকা
অংশগ্রহণ২৯ (১৯৩৯-এ প্রথম)
সেরা সাফল্যচতুর্থ স্থান (১৯৫৯, ১৯৯৩)
কনকাকাফ গোল্ড কাপ
অংশগ্রহণ১ (২০০২-এ প্রথম)
সেরা সাফল্যগ্রুপ পর্ব (২০০২)

৪১,৫৭৫ ধারণক্ষমতাবিশিষ্ট এস্তাদিও রদ্রিগো পাস দেলগাদোয় লা ত্রি নামে পরিচিত এই দলটি তাদের সকল হোম ম্যাচ আয়োজন করে থাকে। এই দলের প্রধান কার্যালয় ইকুয়েডরের রাজধানী কুইতোয় অবস্থিত। বর্তমানে এই দলের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন গুস্তাবো আলফারো এবং অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন রক্ষণভাগের খেলোয়াড় অ্যান্টনিও ভ্যালেন্সিয়া

ইকুয়েডর এপর্যন্ত ৩ বার ফিফা বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছে, যার মধ্যে সেরা সাফল্য হচ্ছে ২০০৬ ফিফা বিশ্বকাপের ১৬ দলের পর্বে পৌঁছানো, যেখানে তারা ইংল্যান্ডের কাছে ১–০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে। অন্যদিকে, কোপা আমেরিকা ইকুয়েডর এপর্যন্ত ২৮ বার অংশগ্রহণ করেছে, যার মধ্যে সেরা সাফল্য হচ্ছে ১৯৫৯ এবং ১৯৯৩ কোপা আমেরিকায় চতুর্থ স্থান অর্জন করা।

ইবান উর্তাদো, ওয়ালতের আয়োবি, এদিনসন মেন্দেস, এনের বালেনসিয়া এবং আগুস্তিন দেলগাদোর মতো খেলোয়াড়গণ ইকুয়েডরের জার্সি গায়ে মাঠ কাঁপিয়েছেন।

ইতিহাসসম্পাদনা

ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণে ইকুয়েডর দক্ষিণ আমেরিকার সর্বাপেক্ষা দুর্বল ফুটবল দেশ হিসেবে পরিচিত। অতীতের অনিয়মিত অংশগ্রহণ স্বত্ত্বেও তাদের মধ্যে যোগ্যতার ঘাটতি ছিল না। ইকুয়েডরের ফুটবল খেলার বেশ অভিজ্ঞতা রয়েছে বিশেষ করে পর্তুগালের বিপক্ষে দলটি ৩–২ গোলের ব্যবধানে জয়ের রেকর্ডও রয়েছে। উরুগুয়েতে অনুষ্ঠিত ১৯৩০ সালের ফিফা বিশ্বকাপের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করে ১৯৬২ সালের ফিফা বিশ্বকাপে বাছাইপর্বে অংশ নেয় ইকুয়েডর। কিন্তু আর্জেন্টিনার কাছে পরাজিত হয়। কিন্তু ১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপে স্বাগতিক ও তৃতীয় স্থানের অধিকারী চিলি, দুর্বল দল কলম্বিয়ার বিপক্ষে ভাল খেলে যা দলের ইতিহাসে সর্বাপেক্ষা শক্তিধর দলরূপে পরিচিতি পায়। ওয়াশিংটন মানোজ, আলবের্তো স্পেন্সার, কার্লোস আলবের্তো রাফো, এনরিক রেমন্ডি, জর্জ বোলানোজের ন্যায় তারকা খেলোয়াড় নিয়ে গড়া ইকুয়েডর দল পেরুতে চিলির বিপক্ষে স্থান নির্ধারিত খেলায় অংশ নিয়ে পরাজিত হয়। ১৯৭০ ও ১৯৮০-এর দশকে হোসে বলাফুয়ের্তের ন্যায় প্রথীতযশা খেলোয়াড় দলে প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

বিশ্বকাপ বাছাইপর্বসম্পাদনা

ইকুয়েডর ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপ ফুটবলে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। ২০১৩ সালের ১৫ই অক্টোবর তারিখে বাছাইপর্ব থেকে উত্তীর্ণ হয়ে ব্রাজিলের মাটিতে তারা খেলবে। উরুগুয়ের সাথে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে যৌথভাবে চতুর্থ স্থান অর্জন করলেও গোল পার্থক্যে এগিয়ে থাকায় তারা এ যোগ্যতা লাভ করে। পূর্ব নির্ধারিত ১১ অক্টোবর তারিখে অনুষ্ঠিত সিদ্ধান্তসূচক খেলায় প্রবল প্রতিপক্ষ উরুগুয়ের বিপক্ষে নিজ মাঠে ১–০ ব্যবধানে জয় পায় যা উরুগুয়েকে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ৫–০ ব্যবধানে জয়ের দুঃসাধ্য লক্ষ্যমাত্রায় পরিণত করে।

র‌্যাঙ্কিংসম্পাদনা

ফিফা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে, ২০১২ সালের জুলাই মাসে প্রকাশিত র‌্যাঙ্কিংয়ে ইকুয়েডর তাদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ অবস্থান (১০ম) অর্জন করে এবং ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে প্রকাশিত র‌্যাঙ্কিংয়ে তারা ৭১তম স্থান অধিকার করে, যা তাদের ইতিহাসে সর্বনিম্ন। অন্যদিকে, বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিংয়ে ইকুয়েডরের সর্বোচ্চ অবস্থান হচ্ছে ১১তম (যা তারা ২০১৩ সালে অর্জন করেছিল) এবং সর্বনিম্ন অবস্থান হচ্ছে ১২০। নিম্নে বর্তমানে ফিফা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিং এবং বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিংয়ে অবস্থান উল্লেখ করা হলো:

ফিফা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিং
৩১ মার্চ ২০২২ অনুযায়ী ফিফা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিং[১]
অবস্থান পরিবর্তন দল পয়েন্ট
৪৪     আলজেরিয়া ১৪৬১.২৬
৪৫     স্লোভাকিয়া ১৪৫৪.৯৮
৪৬     ইকুয়েডর ১৪৫২.৬৩
৪৭     প্রজাতন্ত্রী আয়ারল্যান্ড ১৪৪৯.৪৮
৪৮     রোমানিয়া ১৪৪৬.৫৪
বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিং
৩০ এপ্রিল ২০২২ অনুযায়ী বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিং[২]
অবস্থান পরিবর্তন দল পয়েন্ট
১৭     সার্বিয়া ১৮৪৫
১৮     ওয়েলস ১৮৪১
১৯     মেক্সিকো ১৮৪০
১৯     ইকুয়েডর ১৮৪০
২১     চেক প্রজাতন্ত্র ১৮২২
২১     মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৮২২

প্রতিযোগিতামূলক তথ্যসম্পাদনা

ফিফা বিশ্বকাপসম্পাদনা

ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব
সাল পর্ব অবস্থান ম্যাচ জয় ড্র হার স্বগো বিগো ম্যাচ জয় ড্র হার স্বগো বিগো
  ১৯৩০ অংশগ্রহণ করেনি অংশগ্রহণ প্রত্যাখ্যান
  ১৯৩৪
  ১৯৩৮
  ১৯৫০ প্রত্যাহার প্রত্যাহার
  ১৯৫৪ অংশগ্রহণ করেনি অংশগ্রহণ প্রত্যাখ্যান
  ১৯৫৮
  ১৯৬২ উত্তীর্ণ হয়নি ১১
  ১৯৬৬
  ১৯৭০
  ১৯৭৪
  ১৯৭৮
  ১৯৮২
  ১৯৮৬
  ১৯৯০
  ১৯৯৪
  ১৯৯৮ ১৬ ২২ ২১
    ২০০২ গ্রুপ পর্ব ২৪তম ১৮ ২৩ ২০
  ২০০৬ ১৬ দলের পর্ব ১২তম ১৮ ২৩ ১৯
  ২০১০ উত্তীর্ণ হয়নি ১৮ ২২ ২৬
  ২০১৪ গ্রুপ পর্ব ১৭তম ১৬ ২০ ১৬
  ২০১৮ উত্তীর্ণ হয়নি ১৮ ১০ ২৬ ২৯
  ২০২২ উত্তীর্ণ অনির্ধারিত
মোট ১৬ দলের পর্ব ৩/২১ ১০ ১০ ১১ ১৪৩ ৪৭ ৩৩ ৬৩ ১৬৭ ১৯৯

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. "ফিফা/কোকা-কোলা বিশ্ব র‍্যাঙ্কিং"ফিফা। ৩১ মার্চ ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মার্চ ২০২২ 
  2. গত এক বছরে এলো রেটিং পরিবর্তন "বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিং"eloratings.net। ৩০ এপ্রিল ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ৩০ এপ্রিল ২০২২ 

বহিঃসংযোগসম্পাদনা