মুসলিম সমর নেতাদের তালিকা

উইকিমিডিয়ার তালিকা নিবন্ধ

এই তালিকায় রাখা হয়েছে ইসলামের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ সমরনেতা, বীর যোদ্ধা, জেনারেল এবং এডমিরালদের, দিগ্বিজয়ী এবং জিহাদযোদ্ধা মুজাহিদদের, যারা ইতিহাসের পট-পরিবর্তনে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন। শতাব্দী অনুযায়ী বর্তমান পর্যন্ত এ তালিকা সাজানো হয়েছে।

ইসলামের আবির্ভাব সম্পাদনা

মুহাম্মাদ ছিলেন ইসলাম ধর্মের প্রচারক। তার নির্দেশে বহু অভিযান পরিচালিত হয় এবং তিনি নিজেও অনেকগুলো যুদ্ধে সেনাপতি হিসেবে মুসলিম বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার শাসনামলে মুসলিমরা বহু ঐতিহাসিক যুদ্ধে জয় লাভ করে যার ফলে পৃথিবীর ইতিহাসের পট পরিবর্তন ঘটে এবং ইসলামি রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা খিলাফতের ভিত্তি রচিত করেন।

প্রথম যুগের মুসলিম সমরবিদগণ সম্পাদনা

  • আবু বকর ইসলামের প্রথম খলীফা ছিলেন মুহাম্মাদের অনুসারী সকলের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী ও সম্মানিত। মুহাম্মাদের মৃত্যুর পর তিনি ইসলামি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে দায়িত্বগ্রহণ করেন। রাশিদুন খিলাফত প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি মুহাম্মাদ জীবদ্দশাতেও তার সাথে বহু যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। বদরের যুদ্ধ এবং উহুদের যুদ্ধে তিনি অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া তিনি অংশ নিয়েছিলেন বানু নাদির অভিযানে, খন্দকের যুদ্ধে, বানু কুরাইযা অভিযানে। খন্দকের যুদ্ধে তিনি একটি অংশের নেতৃত্বে ছিলেন এবং বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তিনি হুদায়বিয়ার সন্ধিতে উপস্থিত ছিলেন, অংশ নিয়েছিলেন খায়বারের যুদ্ধে এবং মক্কা বিজয়েওহুনাইনের যুদ্ধ এবং তাইফ অবরোধেও অংশ নিয়েছিলেন। ৬৩০ সালের তাবুক অভিযানে নিজের সকল সম্পদ আল্লাহর পথে দান করে এক অনন্য নজির উপস্থাপন করেছিলেন আবু বকর। মুহাম্মাদের নির্দেশে আবু বকরের নেতৃত্বে নজদে একটি অভিযান সংঘটিত হয় যা "আবু বকর সিদ্দিকের অভিযান" নামে পরিচিত। মুহাম্মাদের মৃত্যুর পর তিনি খলিফা হন এবং তার শাসনামলে রিদ্দার যুদ্ধ, বাইজেন্টাইন ও সাসানয় সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে অভিযানসহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক যুদ্ধ সংঘটিত হয়। তিনি ধর্মত্যাগী বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সফল অভিযান পরিচালনা করেন।
  • উমর ইবনুল খাত্তাব ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা ছিলেন যাকে সম্ভবত সবচাইতে ক্যারিশম্যাটিক রাষ্ট্রনায়ক ও খলিফা হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। তিনি একই সাথে বহু গুণের অধিকারী ছিলেন এবং ছিলেন একজন বীরযোদ্ধা। মুহাম্মাদের শাসনামলে তিনি বদর, উহুদ, খন্দক, খায়বার, হুনাইনের যুদ্ধ, বানু নাদির ও বানু কুরাইযার অভিযান এবং মক্কা বিজয়ে অংশ নেন। খলিফা আবু বকরের শাসনামলে বিভিন্ন অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তার মৃত্যুর পর তিনি খলিফা হিসেবে দায়িত্বগ্রহণ করেন। তিনি তার বিশাল সাম্রাজ্যকে সুষ্ঠু শৃঙ্খলে নিয়ে এসেছিলেন। তিনি সিরিয়া, ফিলিস্তিন, আর্মেনিয়া, মিশর, উত্তর আফ্রিকা, ইরাক, ইস্ফাহান, তাবারিস্তান, ফারস, কিরমান, মাকরান, সিস্তান, আজারবাইজান, খোরাসানসহ বহু অঞ্চল জয় করেন। তিনি জেরুজালেম মুসলমানদের প্রথম কিবলা আল-আকসা মসজিদ জয় করেন।
  • আলী ইবনে আবু তালিব ইসলামের চতুর্থ খলিফা এবং মহাবীর হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন। মুহাম্মাদ তাকে খাইবার যুদ্ধে কামূস দুর্গ জয় করার কারণে আসাদুল্লাহ বা আল্লাহর সিংহ উপাধি দিয়েছিলেন। বদর যুদ্ধে বিশেষ বীরত্বের জন্য মুহাম্মাদ "যুলফিকার" নামের তরবারিটি আলীকে উপহার দিয়েছিলেন। খন্দকের যুদ্ধে তিনি কুরাইশদের অন্যতম বীর আমর কে হত্যা করেন। মহানবী মুহাম্মাদের সাথে তিনি সকল যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি প্রথম ফিতনা যুদ্ধের সময় জঙ্গে জামাল ও সিফফিন যুদ্ধ পরিচালনা করেন। তিনি বহু ঐতিহাসিক যুদ্ধের সাক্ষী। বহু যুদ্ধে সেনাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
  • উসমান ইবনে আফফান উমর মৃত্যুর পর উসমান শাসনভার গ্রহণ করেন। তার শাসনামলে বহু অভিযান পরিচালনা করেছিলেন। তার শাসনামলে মিশর, উত্তর আফ্রিকা, আইবেরিয়ান পেনিন্সুলা, নুবিয়া, ভূমধ্যসাগরের দ্বীপপুঞ্জ, সিরিয়া, আনাতোলিয়া, ফারস, সিস্তান, তাবারিস্তান, খোরাসান, ট্রান্স-অক্সানিয়া, মাকরান, বালুচিস্তান, সিন্ধসহ বহু অঞ্চলের যুদ্ধ সংঘটিত হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
  • তালহা ইবনে উবাইদিল্লাহ একজন বীর যোদ্ধা ছিলেন। উহুদের যুদ্ধ এবং উটের যুদ্ধে অংশ নেয়ার জন্য সুপরিচিত। রিদ্দার যুদ্ধে মদিনা সুরক্ষার জন্য গঠিত বাহিনীর এক তৃতীয়াংশের দায়িত্বে ছিলেন।
  • যুবাইর ইবনুল আওয়াম বদর, উহুদ, খন্দক, খায়বার, মক্কা বিজয় সহ বহু যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। রিদ্দার যুদ্ধ, মিশর বিজয়, ইয়ারমুকের যুদ্ধ সহ বহু যুদ্ধে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। তিনি রাশিদুন খিলাফতের রাজনৈতিক অঙ্গনের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব ছিলেন।
  • আবদুর রহমান ইবনে আউফ বদর ও দামাতুল জান্দালের যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন।
  • সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস বদর, উহুদ সহ বহু ঐতিহাসিক যুদ্ধের সাক্ষী। তিনি একজন বীর ব্যক্তি ছিলেন। তিনি মুসলিমদের পারস্য বিজয় তথা কাদিসিয়ার যুদ্ধের সেনাপতি ছিলেন। রাশিদুন খিলাফাতের একজন প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ ছিলেন। তিনি খিলাফাহ বাহিনীর কমান্ডার ছিলেন এবং গভর্নর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
  • আবু উবাইদা ইবনুল জাররাহ বহু ঐতিহাসিক যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন, একজন যোদ্ধা সাহাবী ছিলেন। তার নেতৃত্বে পরিচালিত একটি অভিযান "আবু উবাইদাহ'র অভিযান" নামে অভিহিত হয়ে থাকে।
  • সা'ইদ বিন যাইদ মুহাম্মাদের শাসনামলে সংঘটিত কয়েকটি যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন।
  • খালিদ বিন ওয়ালিদ ইসলামের ইতিহাসের একজন অন্যতম শ্রেষ্ঠ সেনা নায়ক হিসেবে পরিচিত। তার বীরত্বের কারণে তিনি সাইফুল্লাহ উপাধি পেয়েছিলেন। তিনি বহু যুদ্ধে নেতৃত্ব প্রদান করেছিলেন। ছোট বড় প্রায় ১০০ টি যুদ্ধ তিনি লড়েছেন। তিনি ছিলেন রাশিদুন খিলাফতের এবং মুসলমানদের সেনাপতি। তিনি ঐতিহাসিক মুতার যুদ্ধ এর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এটিই ছিলো মুসলমান এবং রোম বাহিনির প্রথম যুদ্ধ। অন্যান্য সাহাবাদের চাইতে তিনি সবচেয়ে বেশি যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
  • হামযা ইবন আবদুল মুত্তালিব মহাবীর হিসেবে অভিহিত হয়ে থাকেন। মুহাম্মাদ তাকে সায়্যিদুশ শুহাদা (নিহতদের নেতা) উপাধি দিয়েছিলেন। তিনি বদর এবং উহুদ যুদ্ধে মুসলিম বাহিনিকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন মুহাম্মদ এর চাচা এবং সাহাবি। তিনি উহুদ যুদ্ধে হাবশি গোলাম ওয়াহশি বর্শার আঘাতে শহিদ হন। তিনি ছিলেন একজন বীর যোদ্ধা এবং মুসলিম সেনাপতিদের অন্যতম।
  • আমর ইবনুল আস আরবের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বীর যোদ্ধা ও কূটনীতিবিদ হিসেবে প্রসিদ্ধ ছিলেন। খিলাফাতের যুগে রাজনৈতিক অঙ্গনে খুব-ই প্রভাবশালী ছিলেন। তার নেতৃত্ব মিশর বিজিত হয়েছিল। তিনি মুসলিম হওয়ার পরে মুসলমানদের সাথে প্রায় প্রতিটি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ইয়ারমুক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি সিফফিনের যুদ্ধে আলী এবং মুয়াবিয়া এর মধ্যে মধ্যস্ততা করেন।
  • মুয়াবিয়া ছিলেন খিলাফত আমলের একজন অন্যতম প্রভাবশালী নেতা। ছিলেন একজন বীর যোদ্ধা। তিনি উমাইয়া খিলাফত প্রতিষ্ঠা করেন।বহু যুদ্ধে অংশগ্রহণ এবং নেতৃত্ব প্রদান করে বীরদের মধ্যে এক অনন্য উচ্চতায় স্থান পেয়েছিলেন।
  • হোসাইন ইবনে আলী ছিলেন একজন যোদ্ধা। কারবালার যুদ্ধে অল্প কয়েকজন সৈন্য নিয়ে যুদ্ধ করে শাহাদাৎ বরণ করেন।
  • আবু আইয়ুব আনসারি রসুলুল্লাহ মদিনায় হিজরত করার পর মদীনা বাসী সকলে রাসুলকে নিজের বাড়িতে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করলে রাসুল ফায়সালা দেন আমার উট যে বাড়িতে যাবে আমি সেখানে যাবো,রাসুলের উট আবু আইয়ুব আনসারি এর বাড়িতে গিয়ে বসে পরে।তিনি অনেক সাহসী যুদ্ধা ছিলেন।
  • আবদুল্লাহ ইবনে উমর। তিনি ছিলেন দ্বিতীয় খলিফা ওমর এর পুত্র। তিনি ইসলামের ফিকহের একজন পণ্ডিত ছিলেন।
  • আল-কাকা ইবনে আমর আত-তামিমি
  • মুসান্না ইবনে হারিস শায়বানি

অষ্টম শতাব্দী সম্পাদনা

নবম শতাব্দী সম্পাদনা

দশম শতাব্দী সম্পাদনা

একাদশ শতাব্দী সম্পাদনা

  • প্রথম মালিক শাহ ছিলেন সেলজুক সাম্রাজ্যের সুলতান। তিনি হেজাজ, আনাতলিয়া, ইয়েমেনে শাসন প্রতিষ্ঠা করে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে মুসলিম ঐক্য পূনরায় প্রতিষ্ঠিত করেন। তিনি ক্রুসেডারদের প্রারম্ভিক ষড়যন্ত্র রুখে দেন। এছাড়াও তিনি বাতেনী গুপ্তঘাতদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযান প্রেরণ করেন।
  • তুঘরিল বেগ ছিলেন সেলজুক সাম্রাজ্যের প্রথম সুলতান। তিনি বুহাইদের হাত থেকে বাগদাদ পুনরুদ্ধার করে আব্বাসী খেলাফতকে পূনরায় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করেন।
  • ইউসুফ ইবনে তাসফিন উত্তর আফ্রিকা ও স্পেনে ইসলামী সম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। স্পেনে খ্রিস্টান রাজা আলফানসো হাতে আন্দালুসের রাজধানী টলেডোর পতনের পর স্পেনে মুসলিম সাম্রাজ্য বিলুপ্তির শিকার হতে শুরু করে তখন ইউসুফ বিন তাশফিন উত্তর আফ্রিকা থেকে স্পেনে আসেন ও ঐতিহাসিক যাল্লাকার যুদ্ধে (১০৮৬) সম্মিলিত খ্রিস্টান সেনাবাহিনী নেতৃত্বাধীন আলফানসোকে পরাজিত করেন ফলে পরবর্তী ৪০০ বছর মুসলিম সাম্রাজ্য স্পেনে টিকে থাকে।

দ্বাদশ শতাব্দী সম্পাদনা

 
হাত্তিনের যুদ্ধের পর সালাহুদ্দীন আয়ুবির সামনে অনুগত ভঙ্গীতে খ্রিস্টানরাজ।
  • নুরুদ্দীন জেনগি ছিলেন জেনগি রাজবংশ শাসক। তিনি ছিলেন খ্রীষ্টান ক্রুসেডার ও ফাতেমী শিয়াদের অন্যতম আতঙ্ক। এছাড়াও মুহাম্মাদের পবিত্র মৃতদেহ চুরি হওয়ার ইহুদি চক্রান্ত থেকে তিনি মুহাম্মাদের রওজা শরীফকে নিরাপদ করেন।

ত্রয়োদশ শতাব্দী সম্পাদনা

  • বার্কে খান মোঙ্গল চেঙ্গিস খানের নাতি (গোল্ডেন হোর্ড) দক্ষিণ রাশিয়ার ইউক্রেন, ক্রিমিয়া,কাজাখ, চেচেনিয়া এবং মধ্য এশিয়া কাজাকিস্তানসহ অনেক অঞ্চল শাসন করতেন।
  • আরতুগ্রুল গাজী ছিলেন তুর্কী কায়ী গোত্রের নেতা। তিনি উসমানী সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা উসমান গাজীর পিতা।

চতুর্দশ শতাব্দী সম্পাদনা

 
সুলতান মুহাম্মাদ আল ফাতিহের ইস্তাম্বুল বিজয়

পঞ্চদশ শতাব্দী সম্পাদনা

ষোড়শ শতাব্দী সম্পাদনা

 
সুলতান সুলেইমান, তার বাহিনীর সাথে।

সপ্তদশ শতাব্দী সম্পাদনা

অষ্টাদশ শতাব্দী সম্পাদনা

উনবিংশ শতাব্দী সম্পাদনা

বিংশ শতাব্দী সম্পাদনা

  • ওমর মুখতার ১৯১২ থেকে ১৯৩২ পর্যন্ত লিবিয়া উপনিবেশিক ইটালির বিরুদ্ধে জিহাদ করেন।
  • আব্দুল্লাহ আযযাম আফগানিস্তানে ১৯৮৯ রাশিয়ার বিরুদ্ধে জিহাদ করেন।
  • মোল্লা ওমর ইসলামী ইমারত আফগানিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা(১৯৯৫-২০০১)।

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা