হুসাইন ইবনে আলী

মুহাম্মদের নাতি ও তৃতীয় ইমাম
(হোসাইন ইবনে আলী থেকে পুনর্নির্দেশিত)

হুসাইন ইবনে আলি রদিয়াল্লাহুয়ানহুমা (আরবি: ٱلْحُسَيْن ٱبْن عَلِيّ, প্রতিবর্ণীকৃত: Al-Ḥusayn ibn ʿAlī‎; ১০ জানুয়ারি ৬২৬ – ১০ অক্টোবর ৬৮০) ছিলেন ইসলামের নবি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দৌহিত্র এবং আলি রদিয়াল্লাহুয়ানহুফাতিমার রদিয়াল্লাহুয়ানহা এর পুত্র।[১০] মুসলমানরা তাঁকে আহল আল-কিসাআহল আল-বাইতের একজন সদস্য হিসেবে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করে। তিনি সুন্নি ইসলামের একজন গুরত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব এবং শিয়া ইসলামের তৃতীয় ইমাম


হুসাইন ইবনে আলি
ٱلْحُسَيْن ٱبْن عَلِيّ

ইমাম[]
আশ-শহীদ[]
আর-রশীদ
আস-সিবত়
আত-তৈয়িব
আল-ওয়াফী[]
আল-মুবারক
সৈয়দ আশ-শুহাদা[]
আত-তাবী লি মর্দাতুল্লাহ
সৈয়দু শবাবি আহলিল জান্নাহ
হাগিয়া সোফিয়ায় প্রদর্শিত ক্যালিগ্রাফিক সীলমোহরে হুসেনের নাম
৩য় ইমাম
শিয়া ইসলাম
ইমামত৬৭০ – ৬৮০ খ্রি.
পূর্বসূরিহ়াসান ʾইবনে ʿআলী
উত্তরসূরিআলী ইবনে হোসেন জয়নুল আবিদীন ( জায়েদি ; ইসমাঈলি ও ইসনা আশারিয়া) মুহাম্মদ ইবনুল হানাফিয়া ( কায়সানিয়)
জন্মহ়োসাইন ʾইবনে ʿআলী
৮ জানুয়ারি ৬২৬
(৩ শাবান ৪ হিজরি)[]
মদীনা, হেজাজ, আরব উপদ্বীপ
মৃত্যু১০ অক্টোবর ৬৮০(680-10-10) (বয়স ৫৫)
(১০ মুহররম ৬১ হিজরি)
কারবালা, ইরাক, উমাইয়া সাম্রাজ্য
দাম্পত্য সঙ্গীশহরবানু
রুবাব বিনতে ইমরুল কায়েস
লায়লা বিনতে আবী মুররাহ আস-সাকাফী
উম্মে ইসহাক বিনতে তালহা ইবনে উবায়দুল্লাহ[]
সন্তানআলী ইবনে হোসাইন জয়নুল আবিদীন
সকিনা
আলী আকবর ইবনে হোসাইন
সুকয়না
আলি আসগর ইবনে হুসাইন
ফাতিমা আস-সুগরা[]
পূর্ণ নাম
আল-হ়োসাইন ʾইবনে ʿআলী ʾইবনে আবী ত়ালিব
আরবি: ٱلْحُسَيْن ٱبْن عَلِيّ ٱبْن أَبِي طَالِب
স্থানীয় নামٱلْحُسَيْن ٱبْن عَلِيّ ٱبْن أَبِي طَالِب
বংশআহল আল-বাইত
বংশবনু হাশিম (আলীয়)
রাজবংশকুরাইশ
পিতাʿআলী ʾইবনে আবী ত়ালিব
মাতাফাত়িমা বিনতে মুহ়ম্মদ
ধর্মইসলাম
মৃত্যুর কারণকারবালার যুদ্ধে উমাইয়া সেনাবাহিনী কর্তৃক শিরশ্ছেদ
সমাধিইমাম হোসেনের মাজার, কারবালা প্রদেশ, ইরাক
৩২°৩৬′৫৯″ উত্তর ৪৪°১′৫৬.২৯″ পূর্ব / ৩২.৬১৬৩৯° উত্তর ৪৪.০৩২৩০২৮° পূর্ব / 32.61639; 44.0323028
স্মৃতিস্তম্ভইরাক, সিরিয়া, মিশর
অন্যান্য নামউচুঞ্জু আলী (তৃতীয় আলী)
তুর্কি: Üçüncü Ali
পরিচিতির কারণকারবালার যুদ্ধে শাহাদাতবরণ
প্রতিদ্বন্দ্বীইয়াজ়িদ ʾইবনে মুʿয়াবিয়া
আত্মীয়মুহ়ম্মদ ইবনে ʿআব্দুল্লাহ ﷺ (পিতামহ ও নানা)
হ়াসান ʾইবনে ʿআলী (ভাই)

উমাইয়া শাসক মুয়াবিয়া রা. ইবনে আবী সুফিয়ান মৃত্যুর পূর্বে হাসান–মুয়াবিয়া চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে স্বীয় পুত্র ইয়াজিদ ইবনে মুয়াবিয়াকে তার উত্তরসূরি হিসাবে নিযুক্ত করে যান।[১১] ৬৮০ সালে মুয়াবিয়া মৃত্যুবরণ করলে ইয়াজিদ হোসাইনের কাছে তার প্রতি আনুগত্যের অঙ্গীকার করতে বলেন। হোসাইন ইয়াজিদের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনে অস্বীকৃতি জানান। ঘটনাক্রমে তিনি ৬০ হিজরিতে মক্কায় আশ্রয় নেবার উদ্দেশ্য তার নিজ শহর মদিনা ত্যাগ করেন।[১১][১২] সেখানে কুফার লোকেরা তার কাছে চিঠি পাঠিয়ে তার সাহায্য প্রার্থনা করে এবং তার প্রতি তাদের আনুগত্যের প্রতিশ্রুতি দেয়। কিছু অনুকূল ইঙ্গিত পেয়ে তিনি তার আত্মীয়স্বজন ও অনুসারীদের একটি ছোট কাফেলা নিয়ে কুফার অভিমুখে যাত্রা করেন।[১১][১৩] কিন্তু কারবালার নিকটে ইয়াজিদের সেনাবাহিনী তার কাফেলাটির পথরোধ করে। ৬৮০ সালের ১০ই অক্টোবরে (১০ মুহররম ৬১ হিজরি) সংঘটিত কারবালার যুদ্ধে ইয়াজিদের বাহিনী হোসাইন ইবনে আলীকে শিরশ্ছেদ করে, তার পরিবারের সদস্য—তার ছয় মাসের ছেলে আলী আসগরও ছিলেন যাঁদের একজন—ও অনুচরদের হত্যা করে এবং মহিলা এবং শিশুদের যুদ্ধবন্দী হিসেবে ধরে নিয়ে যায়।[১১][১৪] হোসাইনের মৃত্যুর ফলে সৃষ্ট ক্রোধ একটি বেদনাদায়ক ক্রন্দনে রূপান্তরিত হয় যা উমাইয়া খিলাফতের বৈধতা ক্ষুণ্ন করতে এবং অবশেষে আব্বাসীয় বিপ্লব দ্বারা এর পতনে সহায়তা করে।[১৫][১৬]

প্রাথমিক জীবন

সম্পাদনা

বেশিরভাগ বর্ণনা অনুযায়ী, হুসাইন (রা.) ৪ হিজরির শাবান মাসের ৩ তারিখ (১১ জানুয়ারি, ৬২৬ খ্রিষ্টাব্দ)[১৭] মদিনায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং তিনি যখন শিশু ছিলেন তখনই তাঁর নানা হযরত মুহাম্মদ (সা.) ইন্তেকাল করেন।[১৮] তিনি ছিলেন আলীফাতিমার কনিষ্ঠ পুত্র। আলী ছিলেন মুহাম্মদ (সা.)-এর চাচাতো ভাই এবং ফাতিমা ছিলেন মুহাম্মদ (স.) এর কন্যা। উভয়েই কুরাইশ বংশের বনু হাশিম গোত্রের সদস্য ছিলেন।[১৯] মুহাম্মদ (সা.)-ই হাসান ও হুসাইনের নামকরণ করেছিলেন, যদিও আলীর মনে “হারব”সহ অন্য নাম ছিল। হুসাইনের জন্ম উপলক্ষে মুহাম্মদ (সা.) একটি ভেড়া কুরবানি করেন এবং ফাতিমা তাঁর চুল মুণ্ডন করে চুলের ওজন পরিমাণ রূপা দান করেন।[২০] ইসলামী ঐতিহ্য অনুযায়ী, হুসাইনকে তাওরাতে "শুবাইর" এবং ইনজিলে "তাব" নামে উল্লেখ করা হয়েছে। মূসা (আ.)-এর ভাই হারুন (আ.), আল্লাহ কর্তৃক আলীর সন্তানদের জন্য নির্ধারিত নামগুলো জেনে তাঁর সন্তানদেরও একই নাম দেন।[২১]

হুসাইন (রা.) প্রথমে মুহাম্মদ (সা.)-এর গৃহেই বড় হয়েছিলেন। [১৭] আলী এবং ফাতিমার বিবাহের মাধ্যমে গঠিত এই পরিবারকে মুহাম্মদ (সা.) বিভিন্ন জায়গায় বহুবার প্রশংসা করেছেন। মুবাহালা এবং আহল আল-কিসার হাদিসের মতো ঘটনায় মুহাম্মদ (সা.) এই পরিবারকে আহল আল-বাইত হিসেবে উল্লেখ করেছেন।[২২] কুরআনের বিভিন্ন স্থানে, যেমন পবিত্রতার আয়াতে, আহল আল-বাইতের প্রশংসা করা হয়েছে। মাদেলুং-এর মতে, হাসান এবং হুসাইনের প্রতি মুহাম্মদ (সা.) এর ভালবাসা দেখানোর অসংখ্য বর্ণনা রয়েছে, যেমন তাঁদের কাঁধে বহন করা, বুকে নিয়ে আদর করা বা পেটে চুমু দেওয়া। মাদেলুং মনে করেন, কিছু বর্ণনা হয়তো ইঙ্গিত করে যে মুহাম্মদ (সা.) হাসানকে হুসাইনের তুলনায় একটু বেশি পছন্দ করতেন, অথবা হাসানেরই তাঁর নানার সঙ্গে একটু বেশি মিল ছিল।[২০] এই ধরনের অন্যান্য হাদিস হল: "যে তাঁদের ভালোবাসে, সে আমাকে ভালোবাসে, আর যে তাঁদের ঘৃণা করে, সে আমাকে ঘৃণা করে", এবং "আল-হাসান ও আল-হুসাইন হলেন জান্নাতের যুবকদের সাইয়্যিদ [সর্দার]"। শিয়ারা এই শেষোক্ত হাদিসটিকে মুহাম্মদ (সা.) এর বংশধরদের জন্য ইমামতের অধিকার প্রমাণে ব্যবহার করে। সাইয়্যিদ শাবাব আল-জান্নাহ[] হলো একটি উপাধি যা শিয়ারা মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রত্যেক নাতিকে উল্লেখ করার জন্য ব্যবহার করে।[২৩] বর্ণিত আছে যে, মুহাম্মদ (সা.) আলী, ফাতিমা, হাসান এবং হুসাইনকে নিজের চাদরের নিচে নিয়ে আহল আল-বাইত বলে অভিহিত করেন এবং বলেন যে তাঁরা সমস্ত পাপ ও অপবিত্রতা থেকে মুক্ত।[২৪] এছাড়াও, মুহাম্মদ (সা.) বিভিন্ন সময়ে কারবালার ঘটনার ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, তিনি উম্মে সালামাকে একটি ছোট বোতল মাটি দিয়ে বলেছিলেন, যখন হুসাইন শহীদ হবেন, তখন এই বোতলের মাটি রক্তে পরিণত হবে।[২৫]

মুবাহালা সম্পাদনার ঘটনা

সম্পাদনা

" মুহাবালা " ইসলামিক ইতিহাসের অতি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সমুহের একটি। হুসাইন ইবনে আলি আহ্লুল বাইতের অন্তর্ভুক্ত বলে তিনিও আলা

,[১] মুহাম্মদ( সা. ), ফাতিমা এবং হাসানের সাথে মুহাবালার ঘটনায় জড়িত। আরবি " মুহাবালা " শব্দটি এসেছে মূলত " বাহলা " মূলধাতু থেকে যার অর্থ অভিশাপ। এখানে মুহাবালা শব্দটি নাজরানের খ্রিস্টান সম্প্রদায় এবং রাসুলুল্লাহ ( সা. ) এবং তার আহলুল বাইতের অনুগত শিয়া সম্প্রদায় একে অপরের প্রতি ব্যবহার করেছিলেন। " মুহাবালার চুক্তি " এই অভিশাপের শান্তিপূর্ণ সূচনা ঘটায় এবং মুসলিম-খ্রিস্টানদের ভাত্রিত্বকে এক নতুন উচ্চতায় সম্প্রসারিত করে।

মুসলিম মনীষী আলী বিন ইবরাহীম আল-কুম্মীর তাফসির কিতাবে ইমাম আল-সাদিক একটি হাদিস বিবৃত করেন:

" নাজরানের খ্রিস্টানেরা ( খ্রিস্টানদের প্রতিনিধি হিসেবে ) রাসুলুল্লাহ ( সা. ) এর নিকট আসেন, ( মসজিদে নববির ) দরজার ঘণ্টা বাজায়; ( তার ভেতরে ঢুকলে ) সাহাবারা প্রতিবাদ সরূপ বলে উঠেন, ' হে রাসুলুল্লাহ্ ( সা. )! আপনার মসজিদে এসব ( কী হতে চলেছে )? ' তিনি বলেছিলেন, ' তাঁদেরকে নিজের মতো করে ছেড়ে দাও। ( তারা নিজের মতো করেই ইবাদত করুক ) '

তারা নিজেদের ইবাদত শেষ করে রাসুলুল্লাহ্ ( সা. ) এর কাছে গমন করেন এবং জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘ আপনি কী সাক্ষ দেন? ' উত্তরে তিনি ( সা. ) বলেন, ‘ আমি সাক্ষ দেই যে আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ্ নেই এবং আমি আল্লাহর রাসুল এবং ঈসা ( আ. )কে সৃষ্টি করা হয়েছে ( আল্লাহর ) সেবক হিসেবে এবং তিনি ( সাধারণ মানুষের ন্যায় ) পানাহার করতেন এবং নিজেই নিজের সাহায্য করতেন। '

তারা এরপর বলে উঠল, ‘ তাহলে তার পিতা কে ছিলেন? ', তখন রাসুলুল্লাহ ( সা. ) এর কাছে নাযিল হয়, ‘ তাঁদেরকে ঘোষণা দাও- তোমরা আদম ( আ. ) সম্পর্কে কি মতামত পোষণ করো? তাঁকে কি আল্লাহর বান্দা হিসেবে সৃষ্টি করা হয়েছে, সে কি পানাহার, আয়েস এবং সহবাস করতো? ' রাসুলুল্লাহ ( সা. ) উক্ত প্রশ্ন জিজ্ঞেস করলে তারা বলেন, ‘ হ্যা ( আমরা একই মতামত পোষণ করি ) ' তিনি এরপর তাঁদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘ তাহলে তার পিতা কে ছিলেন? ' তারা উত্তর দিতে পারলেন না, তাই আল্লাহ্ নাযিল করেন,

' সত্যিই, ঈসার উদাহরণ আদমের উদাহরণের অনুরূপ; আল্লাহ যাঁকে মাটি হতে সৃষ্টি করেছিলেন এবং তাঁকে ‘ হও ' বলার পর তিনি পরিণত হন। ' ( কোরান ৩:৫৯ )

রাসুলুল্লাহ ( সা. ) ( তাঁদের মনের অবস্থা পরিলক্ষিত করে ) বলেন, ‘ তাহকে আহবান করো: যদি আমি সত্যি কথা বলে থাকি, তোমাদের ওপর অভিশাপ পড়বে এবং যদি ভুল বলে থাকি, আমার ওপর ( উল্টো ) অভিশাপ পড়বে। '

তারা এক নির্দিষ্ট তারিখে এই পারস্পরিক অভিশাপ আরম্ভে সম্মতি জানায়।

তারা যখন সেখানে তাঁদের ( সাময়িক ) থাকার স্থানে ফিরে আসে, তাঁদের নেতা আল-সাঈদ, আল-আকীব, আল-আহতাম ব্যক্ত করেন, ‘ সে যদি তার অনুসারীদেরকে নিয়ে আমাদের এই আহবান করে, আমরা তা গ্রহণ করবো কারণ তিনি কোন নবি নন; কিন্তু সে যদি তার পরিবারের সহিত তা করতে সাহস করে যা আমরা করিনি, কারণ সে কখনো ( এই ব্যপারে ) তার পরিবারকে সামনে আনবে না, যদি না সে সত্যবাদী হয়। '

সকালে, তারা ( পুনরায় ) রাসুলুল্লাহ ( সা. ) এর নিকট গমণ করে এবং তারা তার ( সা. ) সঙ্গে আমীরুল মুমিনিন ( আলী আ. ), ফাতিমাহ্, হাসান এবং হুসাইনকেও দেখতে পান, তাই তারা হকচকিয়ে বলে উঠেন, ‘ এরা কারা? ', লোকেরা জবাবে দিল, ‘ ইনি তার চাচাতো ভাই, উত্তরসূরী এবং জামাই, ইনি হলেন তার কণ্যা ফাতিমাহ্ এবং এনারা হলেন তার নাতি - আল-হাসান এবং আল-হুসাইন। '

তার এই দেখে চিন্তিত এবং ভীত হয়ে পড়েন। তারা রাসুলুল্লাহ ( সা. )কে বলেন, ‘ আমরা আপনাকে যতেচ্ছা অর্থ দেব, তাই মুহাবালা থেকে আমাদের মুক্তি দিন। ' রাসুলুল্লাহ ( সা. ) জিযীয়া পরিষোধের বিনিময়ে তাঁদের সাথে এক চুক্তিতে আবদ্ধ হন এবং তারা সহসা বিদায় নেন। " [২]

হুসাইন এবং খিলাফত

সম্পাদনা

হুসাইন এবং খোলাফায়ে রাশেদিন

সম্পাদনা

ইমাম হুসাইন ইয়াজিদের বাইয়্যাত গ্রহণের প্রস্তাব অস্বীকার করে আপনজনদের কাছে ফিরে আসলেন এবং সবাইকে একত্রিত করে বললেন, আমার প্রিয়জনেরা! যদি আমি পবিত্র মদীনা শহরে অবস্থান করি, এরা আমাকে ইয়াযীদের বাইয়াত করার জন্য বাধ্য করবে, কিন্তু আমি কখনও বাইয়াত গ্রহণ করতে পারবো না। তারা বাধ্য করলে নিশ্চয়ই যুদ্ধ হবে, ফাসাদ হবে; কিন্তু আমি চাইনা আমার কারণে মদীনা শরীফে লড়াই বা ফাসাদ হোক। আমার মতে, এটাই সমীচীন হবে যে, এখান থেকে হিজরত করে মক্কা শরীফে চলে যাওয়া। নিজের আপনজনেরা বললেন, ‘আপনি আমাদের অভিভাবক; আমাদেরকে যা হুকুম করবেন তাই মেনে নেব।’ অতঃপর তিনি মদীনা শরীফ থেকে হিজরত করার সিদ্ধান্ত নিলেন। তথন তিনি নবী মুহাম্মাদের রওযায় উপস্থিত হয়ে বিদায়ী সালাম পেশ করলেন এবং আত্মীয়-পরিজন সহকারে মদীনা থেকে হিজরত করে মক্কায় চলে গেলেন। হারাম শরিফের সীমানায় অবস্থান করে স্রষ্টার ইবাদত বন্দেগীতে বাকী জীবন কাটিয়ে দিবেন - এই ছিলো তার মনোবাসনা।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

কারবালার যুদ্ধ

সম্পাদনা

পরিবার

সম্পাদনা

হুসাইনের সন্তানাদি

  1. আলি ইবনে হোসাইন জয়নুল আবিদীন
  2. উমর ইবনে হুসাইন
  3. আলি আসগর ইবনে হুসাইন
  4. আবু বকর ইবনে হুসাইন
  5. সাকিনাহ বিনতে হুসাইন
  6. সুকায়না বিনতে হুসাইন
  7. ফাতিমা আল সুঘরা
  8. ফাতিমা বিনতে হুসাইন
  9. উমমে কুলসুম বিনতে হুসাইন
  10. যাইনাব বিনতে হুসাইন
  11. আলি আকবর ইবনে হোসাইন

সময়পঞ্জি

সম্পাদনা
হুসাইন ইবনে আলী
আহলে বায়াত এর
Banu Quraish এর বংশ
জন্মঃ 3rd Sha‘bān 4 AH 11 January 626 CE মৃত্যুঃ 10th Muharram 61 AH 13 October 680 CE
শিয়া ইসলামী পদবীসমূহ
পূর্বসূরী
Hasan ibn Ali
Disputed by Nizari
3rd Imam of Shia Islam
669–680
উত্তরসূরী
‘Alī ibn Ḥusayn
উত্তরসূরী
Muhammad ibn al-Hanafiyyah
Kaysanites successor

আরও দেখুন

সম্পাদনা

  উইকিউক্তিতে Imam Husayn সম্পর্কিত উক্তি পড়ুন।

পাদটীকা

সম্পাদনা
  1. https://sunnah.com/bukhari:3748
  2. https://www.islamweb.net/ar/fatwa/10967/
  3. A Brief History of The Fourteen Infallibles। Qum: Ansariyan Publications। ২০০৪। পৃষ্ঠা 137। 
  4. al-Qarashi, Baqir Shareef (২০০৭)। The life of Imam Husain। Qum: Ansariyan Publications। পৃষ্ঠা 58। 
  5. Nakash, Yitzhak (১ জানুয়ারি ১৯৯৩)। "An Attempt To Trace the Origin of the Rituals of Āshurā¸"। Die Welt des Islams33 (2): 161–181। ডিওআই:10.1163/157006093X00063 
  6. Shabbar, S.M.R. (১৯৯৭)। Story of the Holy Ka'aba। Muhammadi Trust of Great Britain। ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মে ২০১৭ 
  7. Reyshahri, Mohammad, Imam Hussain's encyclopedia in the Quran, Sunnah and History, Dar Al-Hadith Research Center, vol. 1, pg. 215
  8. S. Manzoor Rizvi। The Sunshine Bookআইএসবিএন 1312600942 
  9. Badruddīn, Amir al-Hussein bin (১৮ ডিসেম্বর ২০০৮)। The Precious Necklace Regarding Gnosis of the Lord of the Worlds। Imam Rassi Society। 
  10. "Husayn ibn Ali"Encyclopædia BritannicaAl-Ḥusayn ibn ʿAlī, (born January 626, Medina, Arabia [now in Saudi Arabia]—died October 10, 680, Karbalāʾ, Iraq), hero in Shiʿi Islam, grandson of the Prophet Muhammad through his daughter Fāṭimah and son-in-law ʿAlī (the first imam of the Shiʿah and the fourth of the Sunni Rashidun caliphs). 
  11. Madelung, Wilferd"HOSAYN B. ALI"Iranica। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জানুয়ারি ২০০৮ 
  12. Dakake 2007, পৃ. 81–82.
  13. "Husayn ibn Ali | Biography, Death, & Significance"Encyclopedia Britannica (ইংরেজি ভাষায়)। ২ মার্চ ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৯ 
  14. Gordon, 2005, pp. 144–146.
  15. Cornell, Vincent J.; Kamran Scot Aghaie (২০০৭)। Voices of Islam। Westport, Conn.: Praeger Publishers। পৃষ্ঠা 117 and 118। আইএসবিএন 9780275987329। সংগ্রহের তারিখ ৪ নভেম্বর ২০১৪ 
  16. Robinson, Chase F. (২০১০)। "5 - The rise of Islam, 600–705"। The New Cambridge History of Islam (6 vols.)। Cambridge: Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 215। আইএসবিএন 978-0-521-51536-8 
  17. Madelung 2004
  18. Veccia Vaglieri 1971, পৃ. 607
  19. Poonawala ও Kohlberg 1985
  20. Madelung 2003
  21. Veccia Vaglieri 1971, পৃ. 613।
  22. Madelung 1997, পৃ. 14–15
  23. Veccia Vaglieri 1971, পৃ. 607
  24. Vaglieri 1971
  25. Haider 2016

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
বই
এনসাইক্লোপিডিয়া
Blog

বহি:সংযোগ

সম্পাদনা

টেমপ্লেট:Martyrs of Karbala
উদ্ধৃতি ত্রুটি: "lower-alpha" নামক গ্রুপের জন্য <ref> ট্যাগ রয়েছে, কিন্তু এর জন্য কোন সঙ্গতিপূর্ণ <references group="lower-alpha"/> ট্যাগ পাওয়া যায়নি