আলী আকবর ইবনে হোসাইন

আলী আল-আকবর ইবনে আল-হোসাইন (আরবি: عَلِيّ ٱلْأَكْبَر ٱبْن ٱلْحُسَيْن, ʿAlīy al-ʾAkbar ibn al-Ḥusayn), সাধারণভাবে আলী আল-আকবর নামে পরিচিত, তিনি ছিলেন আল-হুসাইন ইবনে আলী, তৃতীয় ইমাম এবং উম্মে লায়লার পুত্র।[১] তিনি কারবালার যুদ্ধে আশুরার দিনে ১৮ বছর বয়সে নিহত হন।[২] ইরানিকাতে জিন ক্যালমার্ড-এর লেখা মতে, 'মুহাম্মদের পরিবারের একজন বীর যোদ্ধা হিসাবে আলী আল-আকবরের খ্যাতি আল-আব্বাস ইবনে 'আলী'র অগ্রবর্তী হতে পারে।[২]

আলী আল-আকবর ইবনে হোসাইন
عَلِيّ ٱلْأَكْبَر ٱبْن ٱلْحُسَيْن
Ali al-Akbar ibn Al-Husayn's name in Arabic calligraphy
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্মMonday, ১১ শাবান, ৩৩ হিজরি / ৩০ নভেম্বর ৬৫২ (গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার)
মৃত্যুশুক্রবার , ১০ মহরম, ৬১ হিজরি / ১০ অক্টোবর ৬৮০ (গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার) (বয়স ১৮ বছর)
সমাধিস্থলImam Husayn Shrine
ধর্মIslam
পিতামাতা

জীবনী সম্পাদনা

আলী আল-আকবর ১১ শা'বান ৩৩ হিজরিতে (১০ মার্চ ৬৫৪ খ্রিস্টাব্দ) মদিনায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম হোসাইন ইবনে আলী এবং তার মা লায়লা বিনতে আবি মুররা।[৩] কারবালার যুদ্ধে তার বয়স ছিল ১৮ বছর।[১][২] তার দুই ভাইয়ের নামও ছিল 'আলী' ; একজন আলী আল-আসগর ইবনে হুসেইন এবং আরেকজন আলী আল-আওসাত ইবনে হোসাইন যা পরবর্তীতে জয়নুল আবিদিন হিসেবে পরিচিত।[৪] বংশতালিকাবিদ এবং ঐতিহাসিকরা আকবর নামের কারণে তাকে হোসাইনের জ্যেষ্ঠ পুত্র বলে মনে করেন।[৫] আকবর একটি আরবি শব্দ যার অর্থ "বৃহত্তর" বা "সর্বশ্রেষ্ঠ"। কিশোরটি তার মাতামহ মুহাম্মদ, আল্লাহর নবীর সাথে এতটাই সাদৃশ্যপূর্ণ ছিল যে, হোসাইন ইবনে আলী প্রায়শই বলতেন, "যখনই আমি আমার নানাকে মিস করি তখনই আমি আলী আল-আকবরের মুখের দিকে তাকাই।" আলী আল-আকবর কারবালার যুদ্ধে ৬১ হিজরির ১০ মহররমে মুরাহ ইবনে মুনকাদের হাতে নিহত হন।[৬][৭]

সমাধি সম্পাদনা

৬৮০ সালের ১০ অক্টোবর (১০ মহররম, ৬১ হিজরি) আশুরার দিনে আলী আল-আকবর ইয়াজিদের সেনাবাহিনীর হাতে শহিদ হন। তিনি বনী হাশিম-এর প্রথম ব্যক্তি যিনি যুদ্ধের ময়দানে গিয়ে নিহত হন। তাকে সমাধিস্থ করা হয়। হোসাইনের পায়ের নিচে। [৫] হোসাইনের মাজার-টি ষড়ভুজাকার কারণ আলী আল-আকবরের সমাধিস্থলটি হোসাইনের মাজারের ভিতরে অবস্থিত।[৮]

প্রভাব সম্পাদনা

আলী আল-আকবর ছিলেন পিতা হোসাইনের পদাংক অনুসারী, যুদ্ধের ময়দানে সত্যের জন্য এক তেজস্বী সহযোগীও । ইসলামী বিশ্বে বিশেষ করে সুন্নী ও শিয়া দৃষ্টিভঙ্গিতে, হোসাইনের কষ্ট ও মৃত্যু অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের সংগ্রামে এবং অন্যায় ও মিথ্যার বিরুদ্ধে ন্যায় ও সত্যের জন্য সংগ্রামে আত্মত্যাগের প্রতীক হয়ে ওঠে। অত্যাচারী শাসকদের দ্বারা ইসলামের কলুষতা ঠেকাতে এবং এর ধ্যান-ধারণাকে রক্ষা করার জন্য হোসাইন এবং তার অনুসারীদের আত্মত্যাগের অবস্থানটি অত্যাচারী ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতের অভ্যুত্থানকে অনুপ্রাণিত করে প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে ওঠে। নেলসন ম্যান্ডেলা এবং মহাত্মা গান্ধীর মতো অনেক বিখ্যাত চরিত্র,[৯] নিপীড়নের বিরুদ্ধে হোসাইনের অবস্থানকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে তাদের নিজস্ব লড়াইয়ের মডেল হিসেবে উল্লেখ করেছেন।[১০][১১]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

উদ্ধৃতি সম্পাদনা

  1. Flaskerud, Ingvild (২ ডিসেম্বর ২০১০)। Visualizing Belief and Piety in Iranian Shiism। Continuum; 1 edition (2 December 2010)। আইএসবিএন 978-1441149077 
  2. Calmard, J. (১ আগস্ট ২০১১)। "ʿALĪ AKBAR"ENCYCLOPÆDIA IRANICA 
  3. Ya'qubi 2018, পৃ. 184, Vol. 2।
  4. Hyder, Syed Akbar (২৩ মার্চ ২০০৬)। Reliving Karbala: Martyrdom in South Asian Memory। Oxford University Press; 1 edition (1 September 2008)। আইএসবিএন 978-0195373028 
  5. Al-Mufid 1982, পৃ. 114।
  6. Aghaie, Kamran Scot (৩০ নভেম্বর ২০০৪)। The Martyrs Of Karbala। University of Washington Press। পৃষ্ঠা 200আইএসবিএন 0-295-98448-1 
  7. The Editors of Encyclopaedia Britannica। "Battle of Karbalā"britannica 
  8. Muhaddathi 2017, পৃ. 352।
  9. Rizvi 2014, পৃ. 372।
  10. Nakash 1993, Vol. 33।
  11. Brunner 2013, পৃ. 293।

উৎস সম্পাদনা