মরিস লেল্যান্ড
মরিস লেল্যান্ড (ইংরেজি: Maurice Leyland; জন্ম: ২০ জুলাই, ১৯০০ - মৃত্যু: ১ জানুয়ারি, ১৯৬৭) ইয়র্কশায়ারের হ্যারোগেট এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯২৮ থেকে ১৯৩৮ সময়কালে ইংল্যান্ড দলের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ইয়র্কশায়ার দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ বামহাতি মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, বামহাতে স্পিন বোলিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন তিনি।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | মরিস লেল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | হ্যারোগেট, ইয়র্কশায়ার, ইংল্যান্ড | ২০ জুলাই ১৯০০|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ১ জানুয়ারি ১৯৬৭ স্কটন, নেয়ার্সবোরা | (বয়স ৬৬)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | বামহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | বামহাতি স্পিন | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | ব্যাটসম্যান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৪০) | ১১ আগস্ট ১৯২৮ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ২০ আগস্ট ১৯৩৮ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯২০–১৯৪৬ | ইয়র্কশায়ার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২০ ডিসেম্বর ২০১৮ |
১৯২০ থেকে ১৯৪৬ সময়কালে ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ইয়র্কশায়ারের পক্ষে খেলেছেন। এ সময়ে তিনি ধারাবাহিকভাবে সতেরোবার সহস্রাধিক রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন। দূর্দান্ত ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯২৯ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননা লাভ করেন।
সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ৪১টি টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন মরিস লেল্যান্ড। ১১ আগস্ট, ১৯২৮ তারিখে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার।
হ্যারোগেটে জন্মগ্রহণকারী মরিস লেল্যান্ড এক ক্রিকেট পরিবার থেকে এসেছেন। স্থানীয় পর্যায়ে ক্রিকেট খেলার পর ১৯২০ সালে ইয়র্কশায়ারের পক্ষে অভিষেক ঘটে তার। পরবর্তী দুই মৌসুমে বিরামহীনভাবে খেলতে থাকেন। পরিসংখ্যানগতভাবে সফলতা না পেলেও ক্লাব কর্তৃপক্ষের সুনজরে ছিলেন। ১৯২৩ সাল থেকে দলের নিয়মিত সদস্যের মর্যাদা লাভ করেন। পরবর্তী মৌসুমগুলো স্থিরতা আনয়ণে ইংল্যান্ড দলে অংশগ্রহণের সুযোগ পান। ১৯২৩ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলার সুযোগ লাভে সক্ষম হন। ১৯২৮-২৯ মৌসুমের শীতকালে বিতর্কিত সিদ্ধান্তে জনপ্রিয় ব্যাটসম্যান ফ্রাঙ্ক ওলি’র স্থলাভিষিক্ত হন তিনি। সিরিজের একমাত্র টেস্টে অংশ নিয়ে মনোরম সেঞ্চুরি করেন। জাতীয় দলে ১৯৩০ সাল পর্যন্ত খেলতে থাকেন। পরবর্তী দুই মৌসুমে দূর্বল ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের কারণে তার অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে প্রশ্নের উদয় ঘটে। আগস্ট, ১৯৩২ সালে সহস্রাধিক রান তুলে ১৯৩২-৩৩ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফরে দলের সদস্যের স্থান নিশ্চিত করেন।
ঐ সিরিজে অত্যন্ত চাপের মুখে থেকেও মরিস লেল্যান্ড বেশ কয়েকবার বড় ধরনের রান সংগ্রহ করেছিলেন। ১৯৩৪ সালে অস্ট্রেলিয়া দল ইংল্যান্ড সফরে আসলে তিনি দলের শীর্ষস্থানীয় ব্যাটসম্যানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত দলের স্থান দখল করে রেখেছিলেন। কিন্তু, ১৯৩৮ সালে অস্ট্রেলিয়া দল ইংল্যান্ডে আসলে আরেক তরুণ ব্যাটসম্যানের কাছে স্থানচ্যূত হন তিনি। সিরিজের চূড়ান্ত টেস্টে তাকে আবারো দলে ফিরিয়ে আনা হয়। শেষ খেলায় তিনি ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৮৭ রানের টেস্ট ইনিংস খেলেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সামরিকবাহিনীতে যোগ দেন। যুদ্ধ শেষে ইয়র্কশায়ার দলে এক মৌসুম খেলেন। এরপর প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট থেকে চূড়ান্ত অবসরের ঘোষণা দেন।
ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পর ইয়র্কশায়ারের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করেন। ১৯৫০ থেকে ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত কাউন্টি দলটির কোচের দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৬৭ সালে দেহাবসান ঘটে তার।
কৌশলগতভাবে সেরা ব্যাটসম্যান না হলেও মরিস লেল্যান্ড অত্যন্ত চাপের মাঝেও ব্যাটিংকর্ম চালিয়ে যেতে সক্ষমতা দেখান। অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতিতেও সেরা দল ও বোলারদের বিপক্ষে তিনি অধিক কার্যকরী ছিলেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের তুলনায় তার টেস্ট ব্যাটিং গড়ের রেকর্ড অধিকতর শ্রেয় ছিল। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তার এ গড় আরও উচ্চ পর্যায়ের ছিল। টেস্টের বাইরে বল হাতেও ক্ষাণিকটা সফলতা পেয়েছেন। ইয়র্কশায়ারে স্পিন বোলারদের তুলনায় তার বোলিংয়ের কার্যকারিতা দেখা না গেলেও তিনি নিঃসন্দেহে সেরা বোলার হতে পারতেন। প্রথমদিকের বামহাতি রিস্ট-স্পিন বোলারদের অন্যতম সেরা ছিলেন তিনি। ‘চায়নাম্যান’ নামীয় বল ডেলিভারীর আবিষ্কর্তা ছিলেন তিনি। দলীয় সঙ্গী ও দর্শকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়তা লাভ করেন তিনি। মানবতাবাদী হিসেবেও মরিস লেল্যান্ডের সুনাম ছিল। তাকে ঘিরে অনেকগুলো চটকদার গল্প প্রচলিত রয়েছে।
শৈশবকাল
সম্পাদনাহ্যারোগেট এলাকার বিল্টনে মার্সি (বিবাহ-পূর্ব: ল্যাম্বার্ট) ও এডওয়ার্ড (টেড) লেল্যান্ড দম্পতির সন্তানরূপে মরিস লেল্যান্ডের জন্ম। জন্মকালীন ‘মোরিস লেল্যান্ড’ নামে নিবন্ধন করা হলেও সচরাচর ‘মরিস’ নামেই তাকে ডাকা হতো।[১] তার বাবা পাথরের কারুশিল্পী ছিলেন ও ল্যাঙ্কাশায়ারের মুরসাইডে সম্মানিত পেশাদার ক্রিকেটার ছিলেন।[১][২] এছাড়াও, লেল্যান্ড সিনিয়র মুরসাইডের মাঠ কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করে গেছেন।[২] শেষের বছরগুলোয়ও হ্যারোগেট, হেডিংলি ক্রিকেট গ্রাউন্ড ও এজবাস্টনে এ দায়িত্বে ছিলেন।[১] ১৯১২ সালে মরিস লেল্যান্ড পিতার সাথে মুরসাইড দলে যোগ দেন।[৩] চৌদ্দ বছর বয়সে ল্যাঙ্কাশায়ার লীগে যোগ দেন ও সেখান থেকেই স্নাতক ডিগ্রী সম্পন্ন করেন।[১] প্রথম বিশ্বযুদ্ধে সামরিকবাহিনীতে যোগদান করেন। ১৯১৮ থেকে ১৯২০ সময়কালে হ্যারোগেটে পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে খেলেন।[২][৩] সেখানকার ইয়র্কশায়ার কাউন্সিলে অংশ নেন[৪] ও ইয়র্কশায়ারের দ্বিতীয় একাদশে খেলেন।[২] সেখানে তিনি নিয়মিতভাবে বোলিং করতেন। এক পর্যায়ে প্রথম একাদশে খেলার সুযোগ লাভ করেন। তবে, প্রথম মৌসুমে দলে তাকে অনিয়মিতভাবে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়।[৫] এ সময়কালে ক্রিকেটের পাশাপাশি হ্যারোগেটের পক্ষে ফুটবল খেলায়ও তার অংশগ্রহণ ছিল।[৬]
১৯২০-এর দশকের শুরুতে ইয়র্কশায়ার কর্তৃপক্ষ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণে খেলোয়াড়ী জীবন শেষ হয়ে যাওয়া খেলোয়াড়দের পরিবর্তে নতুন খেলোয়াড়ের সন্ধান করছিলো।[৩] ১৯২০ সালের শেষদিকে ইয়র্কশায়ারের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয় তার। ঐ গ্রীষ্মে তিনি বেশ কয়েকবার দ্বিতীয় একাদশে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এসেক্সের বিপক্ষে একবার খেলেন। একমাত্র ইনিংসটিতে দশ রান তুলতে সক্ষম হন। এটিই ঐ বছরে তার একমাত্র খেলায় অংশগ্রহণ ছিল।[৫] ইতোঃপূর্বে তিনি আর কখনও কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাননি।[২] পরের বছর মরিস লেল্যান্ড প্রথম একাদশের পক্ষে পাঁচ খেলায় অংশ নেন। তন্মধ্যে, লিচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে অপরাজিত ৫২ রানের ইনিংস ছিল তার। ঐ মৌসুমে ১৯-এর বেশি গড়ে রান তুলেছিলেন।[৫][৭] ১৯২২ মৌসুমের দ্বিতীয়ার্ধ্বে তিনি আরও নিয়মিতভাবে খেলায় অংশ নেন ও নরম্যান কিলনারের স্থলাভিষিক্ত হন। ব্যাটিংয়ের পরিসংখ্যান তেমন কিছু না হলেও উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালমেনাকে ইয়র্কশায়ারের মৌসুমের সার-সংক্ষেপে তাকে আক্রমণধর্মীয় উদীয়মান ব্যাটসম্যান ও চমৎকার ফিল্ডার হিসেবে তুলে ধরে।[৮] ১৪ খেলার মধ্যে সর্বোচ্চ করেছিলেন ২৯ রান।[৭] তাসত্ত্বেও কাউন্টি ক্যাপ লাভ করেন।[৪][৬] ইয়র্কশায়ারের সমালোচকেরাও তাকে বেশ সম্ভাবনাময়রূপে আখ্যায়িত করে।[৯]
কাউন্টি ক্রিকেটে প্রতিষ্ঠা লাভ
সম্পাদনা১৯২৩ মৌসুমে নিয়মিতভাবে মরিস লেল্যান্ড দলে খেলতে থাকেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো সহস্রাধিক রানের মাইলফলক স্পর্শ করতে সক্ষম হন। ১৯২৩ থেকে ১৯৩৯ সালে বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবার মধ্যকালীন সতেরো মৌসুমের প্রত্যেকটিতেই সহস্রাধিক রান তুলেছিলেন।[৭] ১৯২৩ সালে সাতটি অর্ধ-শতকের ইনিংস খেলেন ও ২৭.৮৯ গড়ে রান তুলেন।[৭] উইজডেন মন্তব্য করে যে, তিনি শীর্ষস্থানীয় বামহাতি ব্যাটসম্যান হবেন ও তার ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা অতি উজ্জ্বল।[৯] অ্যান্থনি উডহাউজ তার ইয়র্কশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের ইতিহাস গ্রন্থে লিখেছেন যে, মরিস লেল্যান্ড ব্যাটিংসমৃদ্ধ সফলতম দলের অংশ হিসেবে মূল্যবান অভিজ্ঞতা লাভের সুযোগ পেয়েছেন।[ম ১][১০] ১৯২২ থেকে ১৯২৫ সময়কালে ইয়র্কশায়ার দল উপর্যুপরী চার মৌসুমে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা জয়ে সক্ষমতা দেখিয়েছিল। লেল্যান্ডের খেলোয়াড়ী জীবন সম্পর্কে উইজডেন মন্তব্য করে যে, সন্দেহাতীতভাবে দলটি ইয়র্কশায়ারের ইতিহাসের অন্যতম শক্তিশালী দল ছিল। কখনোবা দলটি অপ্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ও আগ্রাসীধর্মী খেলা উপহার দিয়েছে। এ ধরনের পরিবেশ তরুণ ক্রিকেটারদের জন্য আদর্শস্থানীয় ও মানিয়ে নেয়া, টিকে থাকা বেশ কঠিন। তবে, লেল্যান্ড এ ধরনের শৃঙ্খলার সাথে নিজেকে বেশ মানিয়ে নিয়েছিলেন। ফলে, তিনি কখনো নিজের হাসিমাখা মুখ থেকে চলে আসেননি।[৬]
১৯২৪ মৌসুমের শুরুতে মরিস লেল্যান্ডকে টাইমস কর্তৃপক্ষ ইংল্যান্ডের অন্যতম সেরা তরুণ পেশাদার ব্যাটসম্যান হিসেবে আখ্যায়িত করে। সংবাদপত্রটির ক্রিকেট প্রতিনিধির অভিমত, ইয়র্কশায়ার কর্তৃপক্ষ মরিস লেল্যান্ডকে পূর্ণাঙ্গ আশাবাদী ও তিনি নিজেকে প্রথমসারির বামহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে গড়ে তুলেছেন।[১১] ঐ মৌসুমে তিনি আরও নিজের উত্তরণ ঘটান।[১২] ৩০.৭০ গড়ে ১,২৫৯ রান তুলেছিলেন।[৭] আগস্টে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো সেঞ্চুরি করেন। ল্যাঙ্কাশায়ারের বিপক্ষে ড্র হওয়া খেলায় অপরাজিত ১৩৩ রানের ইনিংস খেলেন।[৫] ১৯২৫ সালে ৪০.৩০ গড়ে ১,৫৭২ রান তুলে নিজেকে আরও এগিয়ে নিয়ে যান।[৭] উইজডেন মন্তব্য করে যে, মরিস লেল্যান্ড পূর্বেকার মৌসুমের তুলনায় নিজেকে আরও ব্যাপকভাবে সমৃদ্ধির দ্বারপ্রান্তে এগিয়ে নিয়ে যেতে সচেষ্ট হচ্ছেন। যদি সবকিছু ঠিক থাকে তাহলে নিঃসন্দেহে নিজেকে আরও উঁচুতে নিয়ে যাবেন।[১৩] ১৯২৬ মৌসুম শেষে ৩৯.০২ গড়ে ১,৫৬১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তন্মধ্যে, পাঁচটি সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি।[৭] ইয়র্কশায়ার দলের অন্যতম বিশ্বস্ত ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন তিনি।[১৪]
উইলফ্রেড রোডসের পদাঙ্ক অনুসরণ করে ১৯২০-এর দশকে বেশ কয়েকজন ইয়র্কশায়ারীয় ক্রিকেটার ইংরেজ শীত মৌসুমে পাতিয়ালার মহারাজার আমন্ত্রণে ভারতে প্রশিক্ষণ প্রদানের উদ্দেশ্যে গমন করেছিলেন।[১৫] ১৯২৬-২৭ মৌসুমের শীতকালে সতীর্থ ইয়র্কশায়ারের উইকেট-রক্ষক আর্থার ডলফিনকে সাথে নিয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন। একই শীত মৌসুমে মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি) ভারত গমন করে। সফরকারী দলে খেলার জন্যে মনোনীত না হলেও উভয়েই এমসিসির পক্ষে বেশ কয়েকটি খেলায় অংশ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।[১৬] ১৯২৭ মৌসুমে লেল্যান্ড ৪১.৬৬ গড়ে ১,৬২৫ রান তুলেন।[৭] তন্মধ্যে, মিডলসেক্সের বিপক্ষে প্রথম দ্বি-শতক রানের ইনিংস খেলেছিলেন।[৫] উইজডেন মন্তব্য করে যে, যতোটা ভাবা হয়েছিল, ঠিক ততোটা নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান তিনি নন। তবে, ব্যাট হাতে বিনোদনধর্মী খেলা উপহার দিয়েছিলেন।[১৭] আগস্টে ইংল্যান্ডের সদস্যরূপে টেস্ট খেলায় অংশগ্রহণের লক্ষ্যে গ্রহণযোগ্য খেলোয়াড়দের অন্যতম হিসেবে প্রস্তুতিমূলক খেলার আয়োজন করা হয়েছিল। ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে বাদ-বাকী একাদশের সদস্যরূপে ১০২ রানের ইনিংস খেলেন।[৫] ১৯২৭-২৮ মৌসুমের শীতকালে আবারও পাতিয়ালার মহারাজার আমন্ত্রণে ভারত গমন করে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন।[১৮]
ভারত থেকে ফিরে আসার অল্প কিছুদিন পরই ২৯ মার্চ, ১৯২৮ তারিখে হ্যারোগেটে কনস্ট্যান্স (কোনি) রাসেলের সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন।[১৯] পরবর্তী বছরগুলোয় হ্যারোগেটে ইয়র্কশায়ারের খেলাগুলোয় হার্বার্ট সাটক্লিফের সন্তানদেরকে তাদের নিজ মাতার ন্যায় দেখাশোনা করতেন। সাটক্লিফের কন্যা পরবর্তীকালে কোনিকে কঠোর ও খিটখিটে মেজাজের অধিকারীরূপে আখ্যায়িত করে। একমাত্র ব্যক্তি হিসেবে তাকেসহ স্বীয় ভ্রাতাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতেন। তার ভাইয়ের বক্তব্য: আমিতো ভয়ে মারাই যেতাম।[২০]
টেস্ট ক্রিকেট
সম্পাদনাটেস্ট অভিষেক ও অস্ট্রেলিয়া গমন
সম্পাদনালেল্যান্ডের ন্যায় ইয়র্কশায়ারের বোলার হিসেবে রয় কিলনার ১৯২৭-২৮ মৌসুমে ভারতে প্রশিক্ষণ প্রদান করেছিলেন। তবে, এ পর্যায়ে তিনি জ্বরে আক্রান্ত হন ও ইংল্যান্ডে ফেরার অল্প কিছুদিন পরই মৃত্যুমূখে পতিত হন।[১৮] দূর্বল বোলিং আক্রমণ, আঘাত ও দূর্বল বোলিংশৈলীতে আক্রান্ত ইয়র্কশায়ার দল ১৯২৮ সালে মরিস লেল্যান্ডকে মাঝে-মধ্যে বোলিং করার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে।[২১] ঐ সময় বল হাতে নিয়ে ইয়র্কশায়ারকে খুব কমই সহায়তা করতে পেরেছিলেন তিনি। দলে তখন রয় কিলনার ও উইলফ্রেড রোডসের ন্যায় দুজন স্লো লেফট-আর্ম স্পিনারের উপস্থিতি ছিল। ফলে লেল্যান্ড খুব কমই সুযোগ পেতেন।[৪] পূর্ববর্তী মৌসুমে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ৫০ ওভারও বোলিং করেননি তিনি ও চারটির বেশি উইকেটও পাননি। তবে, ১৯২৮ সালে পাঁচ শতাধিক ওভার বোলিং করতে হয় তাকে ও ৩৪.২০ বোলিং গড়ে ৩৫ উইকেট দখল করেছিলেন মরিস লেল্যান্ড।[২২] ঐ পর্যায়ে ইয়র্কশায়ার কর্তৃপক্ষ নতুনভাবে চিন্তা-ভাবনা শুরু করেন। রয় কিলনারের বোলিং চাপ কমাতে[২১] কিংবা দলের বয়োজ্যেষ্ঠ স্পিনার উইলফ্রেড রোডসের জায়গাটিতে তাকে সম্ভাব্য উত্তরাধিকারী হিসেবে রাখা যেতে পারে।[২৩] এছাড়াও, ব্যাট হাতে মরিস লেল্যান্ড তার সর্বাপেক্ষা কার্যকরী মৌসুম অতিবাহিত করেন। ৫৪.০৩ গড়ে ১,৭৮৩ রান তুলেন তিনি।[৭] আরও একটি দ্বি-শতক রানের ইনিংস খেলেন। মৌসুম শেষে উইজডেন মন্তব্য করে যে, লেল্যান্ড দলের মন্দাবস্থায় প্রতিরক্ষার্থে এগিয়ে এসেছেন ও দলের প্রয়োজনে দ্রুতলয়ে রান তুলেছেন। সাধারণভাবে দেখা যায় যে, তার ক্রীড়াশৈলী আক্রমণধর্মী ও দর্শনীয় ব্যাটিংয়ে অধিকার ধারণ করে আছে।[৪]
জুন, ১৯২৮ সালে মরিস লেল্যান্ডকে আরও একটি টেস্ট প্রস্তুতিমূলক খেলার জন্য মনোনীত করা হয়। তিনি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাদ-বাকী একাদশের সদস্যরূপে অংশগ্রহণ করেন।[৫] এরপর জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে জেন্টলম্যানের বিপক্ষে প্লেয়ার্সের সদস্যরূপে খেলেন।[২৪] জুলাইয়ের শেষেরদিকে ১৯২৮-২৯ মৌসুমে অ্যাশেজ সিরিজ খেলতে অস্ট্রেলিয়া গমনের উদ্দেশ্যে এমসিসি দলে তাকে অন্তভূক্ত করা হয়।[ম ২] দলে লেল্যান্ডের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে টাইমসে উল্লেখ করা হয় যে, তাকে দলের বাইরে রাখা বেশ কঠিন ও তার উপস্থিতির ফলে দলের ফিল্ডিং আরও শক্তিশালীরূপ ধারণ করবে।[২৬] তার অন্তর্ভুক্তির ফলে ইংল্যান্ডের দক্ষিণাংশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে কেন্টে কেননা তিনি কেন্টের প্রতিভাধর ব্যাটসম্যান ফ্রাঙ্ক ওলি’র স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন।[২৭] কেন্টের একজন সমর্থক লেল্যান্ডকে উদ্দেশ্য করে লেখেন যে, তিনি ক্রস ব্যাটের অধিকারী গ্রামীণ শিক্ষানবীস মাত্র।[২৮] দল নির্বাচকমণ্ডলীর সদস্য পেলহাম ওয়ার্নার দাবী করেন যে, এ সিদ্ধান্ত গ্রহণে লেল্যান্ডের উন্নততর ফিল্ডিং প্রভাব বিস্তার করেছে। তবে, ক্রিকেট লেখক অ্যালেন গিবসনের মতে, ফ্রাঙ্ক ওলি ও ফিল মিডের ন্যায় দুইজন ব্যাটসম্যান একই বয়সে অবস্থান করছেন।[২৯] ১৯২৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল তাদের ইতিহাসের প্রথম টেস্ট খেলায় অংশগ্রহণের উদ্দেশ্য নিয়ে ইংল্যান্ড গমন করে।[৩০] সফরকারী দলটি তেমন ভালো খেলা উপহার দেয়নি।[৩১] তাসত্ত্বেও, ইংরেজ দল নির্বাচকমণ্ডলী খেলোয়াড়দের আরও অনুশীলনীর জন্যে শক্তিধর দলকে মাঠে নামায়।[৩২] তিন টেস্ট সিরিজের চূড়ান্ত খেলায় মরিস লেল্যান্ডকে মাঠে নামানো হয়। ১১ আগস্ট, ১৯২৮ তারিখে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয় তার। একমাত্র ইনিংসটিতে হারম্যান গ্রিফিথের বলে ০ রানে বিদায় নিতে হয় তাকে।[৩৩]
এমসিসি দল ব্যাটিংসমৃদ্ধ দল নিয়ে অস্ট্রেলিয়া গমন করে। লেল্যান্ডকে প্রধান ব্যাটসম্যানদের বিকল্প হিসেবে দলে রাখা হয়েছিল।[৩৪] সিরিজের অধিকাংশ সময়ই ইংরেজদের ব্যাটিংয়ের অবস্থান স্থির ছিল। ফলে খুব কমই বিকল্প খেলোয়াড়দেরকে খেলানো হয়েছিল। এছাড়াও, ফিল মিডকে প্রথম টেস্টে খেলানোর ফলে তাদের বোলিং বিভাগ আরও শক্তিশালী হয়ে উঠে।[২৯][৩৫] এ সফরের অন্যান্য প্রথম-শ্রেণীর খেলায় লেল্যান্ড অংশগ্রহণ করেছিলেন। সাউথ অস্ট্রেলিয়া ও কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেন তিনি।[৫] সিরিজে ৪-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা অবস্থায় পার্সি চ্যাপম্যান চূড়ান্ত টেস্ট থেকে সড়ে দাঁড়ান। তিনি কেন এমনটি করলেন তা স্পষ্ট নয়। একটি বিষয়ই উঁকি দেয় যে, তিনি দলের অন্যান্য সদস্যকে টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে চেয়েছিলনে। হয়তো তিনি তার ব্যাটিংয়ের মন্দার কারণে দলে স্থান নিশ্চিত করতে পারছিলেন না। লেল্যান্ড তার স্থান দখল করেন।[৩৬][৩৭] ঐ টেস্টে ইংল্যান্ড দল পরাজিত হলেও মরিস লেল্যান্ড ব্যক্তিগতভাবে সফল ছিলেন। প্রথম ইনিংসে ১৩৭ রানের অভিষেক সেঞ্চুরি করেন ও দ্বিতীয়টিতে অপরাজিত ৫৩ রান তুলেন।[৫] তার খেলা সম্পর্কে উইজডেনে উল্লেখ করা হয় যে, তিনি দুইটি প্রকৃত ও দর্শনীয় খেলা প্রদর্শন করে নিজেকে পরিচিতি করে তুলেছেন। শক্তিশালী, কভার পয়েন্ট অঞ্চল দিয়ে সময় উপযোগী ড্রাইভিংগুলো যারা দেখেছিলেন তাদের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।[৩৮] সামগ্রীকভাবে ঐ সফরে প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ৪৩.৮৫ গড়ে ৬১৪ রান তুলেছিলেন।[৭] তবে, শক্ত পিচে তার বোলিং বেশ অকার্যকর ছিল।[৩৮] শেষ টেস্টে তার এ সফলতার প্রেক্ষিতে লেল্যান্ডকে অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ইংরেজ ব্যাটসম্যান হিসেবে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছিল।[২৯] ১৯২৯ মৌসুম শুরুর পূর্বে ১৯২৮ মৌসুমে সুন্দর ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননায় তাকে ভূষিত করা হয়।[৪]
টেস্টে নিয়মিত উপস্থিতি
সম্পাদনা১৯২৯ মৌসুমে ৪২.৯১ গড়ে ১,৯৩১ রান তুলেন।[৭] এছাড়াও, ঐ মৌসুমে ৩০.২৬ গড়ে ৫০টি প্রথম-শ্রেণীর উইকেট পেয়েছিলেন মরিস লেল্যান্ড।[২২] অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে আট উইকেট ও গ্ল্যামারগনের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো খেলোয়াড়ী জীবনের ইনিংসে পাঁচ উইকেটের সন্ধান পান তিনি।[৫] ল্যাঙ্কাশায়ারের বিপক্ষে আঘাতের কারণে উইলফ্রেড রোডসের অনুপস্থিতিতে প্রধান স্পিনার হিসেবে দায়িত্ব পান ও ৫২ রান খরচায় ৭ উইকেট পান। এ খেলা দেখার পর বিখ্যাত ক্রিকেট লেখক নেভিল কারদাস লেল্যান্ড সম্পর্কে মন্তব্য করেন যে, তিনি বেশ ভালো বোলিং করেছেন ও স্পিন বোলিং উপযোগী ভেজা পিচে সুযোগকে কাজে লাগিয়েছেন। তবে, বামহাতি স্পিনারদের প্রয়োজনীয় নিখুঁততা ও ফ্লাইটের অভাব তার মাঝে বিরাজ করছিল। ফলে উইলফ্রেড রোডসের চাহিদা ঠিকই রয়ে গেছে।[৫][৩৯] অন্য খেলায় কারদাস লক্ষ্য করেন যে, লেল্যান্ড বামহাতে গুগলি বোলিং প্রদর্শনের চেষ্টা চালাচ্ছেন।[৪০][৪১] প্রস্তুতিমূলক খেলায় সফলতা লাভের পর[৬] মরিস লেল্যান্ড টেস্ট দলে তার খেলা নিশ্চিত করেন। ১৯২৯ সালের গ্রীষ্মে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পাঁচ খেলা নিয়ে গঠিত সিরিজের প্রত্যেকটিতেই অংশগ্রহণ করে ৪২.০০ গড়ে ২৯৪ রান তুলেন।[৪২][৪৩] তন্মধ্যে, লর্ডসে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ৭৩ ও ১০২ রানের ইনিংস খেলেছিলেন।[৬]
১৯৩০ সালের অ্যাশেজ সিরিজ খেলতে অস্ট্রেলিয়ায় গমন করলেও প্রথম দুই খেলায় তাকে খেলানো হয়নি। ফ্রাঙ্ক ওলি দলে তার স্থলাভিষিক্ত হন ও ব্যর্থ হলে শেষ তিন টেস্টে লেল্যান্ডকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[৬][৪৪] তবে, লেল্যান্ড তার তুলনায় অল্প একটু কার্যকরী ভূমিকা রাখেন। সিরিজে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ করেন ৪৪ রান। ইংল্যান্ড দল ২-১ ব্যবধানে সিরিজে পরাজিত হয়।[৬] তবে, ইয়র্কশায়ারের পক্ষে বেশ সফল ছিলেন। কাউন্টি দলের পক্ষে পাঁচটি সেঞ্চুরি হাঁকান। ১৯৩০ মৌসুমের শিরোপাধারী ল্যাঙ্কাশায়ারের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান করেন।[৬][৪৫] ঐ সময়ে ইয়র্কশায়ার বনাম ল্যাঙ্কাশায়ারের খেলাগুলো বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতামূখর ছিল। নিম্নমূখী রান সংগ্রহের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। তবে, লেল্যান্ড বেশ স্বাধীন ও মুক্তভাবে অংশ নিয়ে ২৭০ মিনিটে অপরাজিত ২১১ রানের ইনিংস উপহার দেন।[৪৬] কারদাসের অভিমত, তিনি সেরা ও অনিন্দ্যসুন্দর ক্রিকেট খেলেছেন।[৪৭] ঐ বছরে লেল্যান্ড তার সেরা বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করিয়েছিলেন। প্লেয়ার্সের সদস্যরূপে লর্ডসে জেন্টলম্যানের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৭/৯৪ লাভ করেন। খেলায় তিনি নয় উইকেট পেয়েছিলেন।[৫][৬] ১৯৩০ সালে সকল প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ৫০.৫৮ গড়ে ২১৭৫ রান তলেন। ঐ মৌসুমে এটিই তার প্রথম দুই হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করা ছিল।[৭] এছাড়াও, ২৭.৯২ গড়ে ৫৩ উইকেট পান তিনি।[২২] ১৯৩০-৩১ মৌসুমের ইংরেজ শীতকালে এমসিসি দলের সাথে দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেন। নিয়মিত উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের অনুপস্থিতিতে মরিস লেল্যান্ড বেশ কয়েকবার ব্যাটিং উদ্বোধন করেছিলেন ও ঐ সফরে ধারাবাহিকভাবে উত্তম ক্রীড়াশৈলী উপস্থাপন করেন।[৪৮] প্রথম-শ্রেণীর খেলাগুলোয় ৩৬.৮৫ গড়ে ৭৭৪ রান তুলেন ও নয় উইকেট লাভ করেন।[৭][২২] টেস্ট সিরিজে ৪২.৮৫ গড়ে ৩০০ রান করেন। তন্মধ্যে, দুইটি অর্ধ-শতকের ইনিংস ছিল তার।[৪৩] দ্বিতীয় খেলায় ৩/৯১ পান যা টেস্টগুলোয় সেরা বোলিংশৈলী ছিল।[৫]
বডিলাইন সিরিজ
সম্পাদনাপরবর্তী দুই মৌসুমে মরিস লেল্যান্ডকে রান খরার কবলে নিপতিত হতে হয়।[৬] ১৯৩১ সালে তিনি মাত্র একটি সেঞ্চুরি করেছিলেন। ১,২২৮ রান ও ৩৮.৩৭ গড় বেশ বেমানান ছিল।[৭] তাসত্ত্বেও, গুরুত্বপূর্ণ খেলাগুলোয় সেরা প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলার মান ধরে রাখতে সচেষ্ট ছিলেন। ইয়র্কশায়ার ও বাদ-বাকী ইংরেজ একাদশের বিপক্ষে ৯৬ রান তুলেছিলেন।[৬] বল হাতে নিয়ে ৪০-এর অধিক গড়ে ১২ উইকেট দখল করেন।[২২] তার দূর্বল ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন সত্ত্বেও ইয়র্কশায়ার দল ১৯২৫ সালের পর প্রথমবারের মতো কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা পায়। এছাড়াও, দলটি পরবর্তী দুই মৌসুমসহ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্ব-পর্যন্ত নয়টি চ্যাম্পিয়নশীপ শিরোপার সাতটি লাভ করে।[৪৫] জেন্টলম্যানের বিপক্ষে প্লেয়ার্সের সদস্যরূপে খেলেন।[৫] তবে, ১৯৩১ সালে সফরকারী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন টেস্ট সিরিজের কোনটিতেই খেলার জন্যে তাকে মনোনীত করা হয়নি।[৪৯] উইজডেন পরবর্তীতে মন্তব্য করে যে, তিনি মামুলী স্তিমিত হয়ে পড়েছেন।[৬] ১৯৩২-৩৩ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া গমনের উদ্দেশ্য নিয়ে খেলোয়াড়দের ক্রীড়াশৈলী পর্যালোচনায় এনে উইজডেন সম্পাদক বিশ্বাস করেন যে, লেল্যান্ডের সেরা ক্রীড়াশৈলী উপহার না দেয়ার পেছনে কোন কারণই থাকতে পারে না।[৫০]
১৯৩২ মৌসুমের শুরুতে আবারও লেল্যান্ড বেশ কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে পড়েন।[৬] তাসত্ত্বেও, দুইটি টেস্ট প্রস্তুতিমূলক খেলার জন্যে মনোনীত হন ও মিডলসেক্সের বিপক্ষে ১৮৯ রান তুলেন।[৫] ঐ গ্রীষ্মে কেবলমাত্র একটি টেস্টে অনুপস্থিত বাদে সবকটিতেই তার অংশগ্রহণ ছিল।[৪৯] মৌসুমের প্রথম তিন মাসে খুব কম সফল হয়েছিলেন। তবে, আগস্টে ৮৪.১৪ গড়ে ১০১৩ রান তুলেন। এ পর্যায়ে চারটি সেঞ্চুরি হাঁকান ও দুইটি ইনিংসে ৯০-এর কোটা স্পর্শ করেছিলেন তিনি।[৬] এ সময় এসেক্সের বিপক্ষে হার্বার্ট সাটক্লিফকে সাথে নিয়ে ৫৫ মিনি ১৪৯ রান তুলেছিলেন। কাউন্টি দলটি দুই ফাস্ট বোলার কেন ফার্নেস ও মরিস নিকোলসকে ইয়র্কশায়ারের ব্যাটসম্যানদ্বয়কে নিবৃত্ত রাখতে উপর্যুপরী বাউন্সার মারতে থাকে।[৫১] কেন ফার্নস দ্রুতগতিসম্পন্ন লেগ তত্ত্বের বোলিং করার চেষ্টা চালান। এ কৌশলটি ১৯৩২-৩৩ মৌসুমে এমসিসি দলের অস্ট্রেলিয়া সফরে প্রয়োগ ঘটানো হয়েছিল।[৫২] ঘটনাক্রমে হার্বার্ট সাটক্লিফ শর্ট বলগুলো মোকাবেলা করে হুক শট মারতে থাকেন ও উপর্যুপরী ছয় ওভারে তিনি ও লেল্যান্ড ১০২ রান যুক্ত করেন। রান সংগ্রহের এ ধারাটি অপ্রত্যাশিত পর্যায়ের ছিল। অবশ্য লেল্যান্ডকে এ বোলিংয়ের খুব কমই মোকাবেলা করতে হয়েছিল। পরবর্তীতে তিনি বলেন যে, এ সময়ে তিনি মাত্র চারটি বল মোকাবেলায় সক্ষম হয়েছিলেন। তবে, প্রত্যেকটি বলকেই চারে রূপান্তর করেন। সর্বমোট ঐ জুটিতে তিনি মাত্র ৪৫ রান যোগ করেছিলেন।[৫১] ফার্নসকে তার বোলিংয়ে বেশ নাস্তানুবাদ হতে হয়।[৫৩] ফলশ্রুতিতে, এমসিসি দল নির্বাচকমণ্ডলী তাকে এ সফরের বাইরে রাখে।[৫২] অন্যদিকে, মরিস লেল্যান্ডকে আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে সর্বশেষ ব্যক্তি হসেবে দলের সদস্যরূপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[৫৪] মৌসুমের শেষদিকে ইয়র্কশায়ারের সদস্যরূপে বাদ-বাকী ইংরেজ একাদশের বিপক্ষে ১০৫ রান তুলেন।[৬] সামগ্রীকভাবে ৫২.১০ গড়ে ১৯৮০ রান ও ২০.৮৬ গড়ে ২৩ উইকেট পান তিনি।[৭][২২]
১৯৩২-৩৩ মৌসুমের অ্যাশজ সিরিজ ইংল্যান্ড জয় করলেও দলের বডিলাইন কৌশল গ্রহণকে ক্রিকেট বিশ্ব বিতর্কের পর্যায়ে উপনীত করে।[৫৫] লেল্যান্ড অবশ্য পরিসংখ্যানগতভাবে সফল ছিলেন না।[৬] তবে, এ সফরের সাফল্য নির্ধারণে উইজডেনে সিডনি সাউদার্ন লিখেন যে, লেল্যান্ড ভীতিপ্রদভাবে হলেও সামগ্রীকভাবে সফল হন। অ্যাডিলেড ও ব্রিসবেন টেস্টে বেশ ভালোমানের ব্যাটিং করেছেন।[৫৫] পাঁচ টেস্টের ঐ সিরিজে তিনি ৩৪.০০ গড়ে ৩০৬ রান তুলেন।[৪৩] এ সিরিজের শুরু ও শেষ করেন ০ রান সংগ্রহের মাধ্যমে। তবে, তৃতীয় ও চতুর্থ টেস্টের সিদ্ধান্তসূচক খেলায় দলের আপদকালীন সময়ে বেশ সফল হয়েছিলেন।[৫][৬] গিবসন লক্ষ্য করেছেন যে, তার ঐ শূন্য রানগুলো ইংল্যান্ডের প্রভাববিস্তারকালীন সময়ে সম্পন্ন হয়েছে।[৪৪] সফরের সকল প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ৪৪.০০ গড়ে ৮৮০ রান তুলেন। তন্মধ্যে, রাজ্যদলগুলোর বিপক্ষে দুইটি সেঞ্চুরি করেছিলেন।[৭] সাবেক অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যান চার্লি ম্যাককার্টনি মন্তব্য করেন, নিঃসন্দেহে কার্যকরী খেলোয়াড় তিনি। রক্ষণশীল ভাবধারায় আচ্ছন্ন তিনি। তার স্বাভাবিকঁআক্রমণাত্মক মনোভাবে তাকে বেখাপ্পা দেখাতো। তাকে তার সেরা খেলা প্রদর্শন অনুমোদন করতে পারি না।[৫৬] অন্যান্য অস্ট্রেলীয় ধারাভাষ্যকারও তাকে ঘিরে উৎসাহব্যঞ্জক মন্তব্য করেছেন।[৪৪]
স্বর্ণালী বছর
সম্পাদনাঅস্ট্রেলিয়া থেকে ফিরে এসে ১৯৩৩ মৌসুমে ২,৩১৭টি প্রথম-শ্রেণীর রান সংগ্রহ করেন। এটিই তার খেলোয়াড়ী জীবনে এক মৌসুমে সর্বাধিক রান সংগ্রহ করা ছিল। ৫০.৩৬ গড়ে সংগৃহীত রানে সাতটি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন।[৭] বল হাতে নিয়ে ২৮.১৩ গড়ে ৩৭ উইকেট লাভ সমর্থ হন। আগস্টে লিচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত খেলায় ৯৪ রান খরচ করে দশ উইকেট পান। এক খেলা থেকে দশ উইকেট লাভে এটিই তার খেলোয়াড়ী জীবনের একমাত্র ঘটনা ছিল।[৫][২২] ঐ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল ইংল্যান্ড গমনে আসে। তবে, লেল্যান্ড কেবলমাত্র সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। একমাত্র ইনিংসটিতে একটিমাত্র রান পেয়েছিলেন।[৫][৬] ১৯৩৪ মৌসুমেও ৫৩.৫৫ গড়ে দুই সহস্রাধিক রান পেয়েছিলেন।[৭] ১৯৩৪ সালে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত সিরিজের পাঁচ টেস্টের সবকটিতেই অংশ নিয়েছিলেন মরিস লেল্যান্ড। ৬৮.২৮ গড়ে ৪৭৮ রান উঠাতে সক্ষম হন।[৪৩] সংগৃহীত তিনটি সেঞ্চুরির সবগুলোই ইংল্যান্ড দলের কঠিন অবস্থা মোকাবেলা করতে সমর্থ হয়েছিল।[৪৪] ১৯৪৩ সালে উইজডেনে তার খেলোয়াড়ী জীবন সম্পর্কে মূল্যায়ন করে যে, ১৯৩৪ সালে মরিস লেল্যান্ড তার শক্তির সর্বোচ্চ স্তরে উপনীত হয়েছিলেন। কৌশলে পরিপক্কতা গ্রহণ, অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে গ্রানাইটের ন্যায় তিনি ঐ মৌসুমে ইংল্যান্ডের সেরা ব্যাটসম্যানের তকমা লাগিয়েছিলেন।[৬]
ইংল্যান্ড ২-১ ব্যবধানে সিরিজে পরাভূত হয়। অস্ট্রেলিয়া দল অতিমাত্রায় ক্ল্যারি গ্রিমেট ও বিল ও’রিলির বোলিংয়ের উপর নির্ভরশীল ছিল।[৬] ঐ সময় বিল ও’রিলি বিশ্বের সেরা বোলারের মর্যাদায় ছিলেন ও সর্বকালের সেরাদের অন্যতম ছিলেন। তাসত্ত্বেও, মরিস লেল্যান্ড তার উপর বেশ ছড়ি ঘুরিয়েছিলেন।[৫৭] দ্বিতীয় টেস্টে তিনি ১০৯ রান তুলেন ও লেস অ্যামিসের সাথে ১২৯ রানের জুটি গড়েন। পরের খেলায় ১৫৩ রান করেন এবং প্যাটসি হেনড্রেন ও লেস অ্যামেসের সাথে বড় ধরনের জুটি গড়েন। চূড়ান্ত টেস্টে ১১০ রানের ইনিংস খেলেন।[৬] তবে, ইংল্যান্ডের বাদ-বাকীদের ব্যাটিংচিত্র বেশ বেমানান ছিল।[৬] ঐ মৌসুমের পর্যালোচনায় বসে উইজডেন সম্পাদক সিডনি সাউদার্ন লেখেন যে, প্রায় প্রত্যেক খেলাতেই হয় প্যাটসি হেনড্রেন, মরিস লেল্যান্ড অথবা লেস অ্যামিস স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে খেলেছেন। খেলায় তারা বেশ আত্মবিশ্বাসীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। দলকে পরাজয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে দ্রুত ও গুরুতরভাবে দুই কিংবা তিন উইকেট পতনের পর নতুনভাবে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সচেষ্ট ছিলেন।[৫৮] ব্যাটিংয়ে সফলতা লাভের পাশাপাশি ইংল্যান্ড দলে আউটফিল্ডার হিসেবে অবস্থান করে সফল হয়েছিলেন।[৫৯] এছাড়াও, ইয়র্কশায়ারের পক্ষে তিনটি সেঞ্চুরি করেন। এছাড়াও, বাদ-বাকী ইংরেজ একাদশের সদস্যরূপে চ্যাম্পিয়ন কাউন্টি দল ল্যাঙ্কাশায়ার এবং লর্ডসে প্লেয়ার্সের সদস্যরূপে জেন্টলম্যানের বিপক্ষে ৮০ রান করেন।[৫][৬] বল হাতে ৩৩টি প্রথম-শ্রেণীর উইকেট পান।[২২] নটিংহ্যামশায়ারের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত খেলায় আর্থিক সুবিধা গ্রহণের জন্য মনোনীত হন।[৬০] ঐ খেলা থেকে তিনি £৩,৬৪৮ পাউন্ড-স্টার্লিং লাভ করে। এ সংগ্রহটি যে-কোন ইয়র্কশায়ারীয় খেলোয়াড়ের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ ছিল।[ম ৩][৬১]
১৯৩৪-৩৫ মৌসুমের শীতকালে এমসিসি দলের সাথে ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমন করেন। এ সফরে তার দল চার টেস্টের সিরিজে ২-১ ব্যবধানে পরাজয়বরণ করে। ইংরেজ ব্যাটসম্যানেরা ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের পেসারদের বল মোকাবেলা করতে কম-বেশি ব্যর্থ হয়। কয়েকজন এমসিসির খেলোয়াড় লিয়ারি কনস্ট্যান্টাইন, ম্যানি মার্টিনডেল ও লেসলি হিল্টনের বিরুদ্ধে শর্ট-পিচ বোলিং করার অভিযোগ আনেন।[৬২] লেল্যান্ড তিনটি টেস্টেই অংশ নেন। কিন্তু, তিনি ছয় ইনিংসে মাত্র ৩৬ রান তুলতে পেরেছিলেন।[৪৩] সে তুলনায় অন্যান্য প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ২১.৬৮ গড়ে ৩৪৭ রান তুলে কিছুটা সফলকাম হয়েছিলেন।[৭] এছাড়াও, ১১ উইকেট পেয়েছিলেন তিনি।[২২] ১৯৩৫ সালে ৩৮.৬১ গড়ে ১,৮১৫ রান ও ২৫.৪৬ গড়ে ৩২ উইকেট দখল করেন তিনি।[৭][২২] ১৯৩৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা দল পাঁচ টেস্টের সিরিজ খেলার জন্যে ইংল্যান্ড গমন করে। তন্মধ্যে চার টেস্টে অংশ নেন ও তৃতীয় টেস্টে কোমরের ব্যথার কারণে খেলতে পারেননি। [৬] এ সিরিজে ৫৭.০০ গড়ে ৩৪২ রান তুলেন।[৪৩] প্রথম ও চতুর্থ টেস্টে অর্ধ-শতকের সন্ধান পান।[৫] চূড়ান্ত টেস্টে ১৩০ মিনিটে দ্রুতলয়ে ১৬১ রান তুলেন। তাসত্ত্বেও, ইংল্যান্ড দল জয়লাভের ধারায় ফিরে আসেনি। দ্বিতীয় টেস্টে পরাজিত হলে স্বাগতিক দল ঐ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে পরাভূত হয়।[৬৩]
ইয়র্কশায়ার দলের সদস্যরূপে জ্যামাইকা সফরে যান। উপর্যুপরী দুই খেলায় ১১৫ ও ৭৫ রান তুলেন।[৫] ১৯৩৬ সালে ৪৫.৮৯ গড়ে ১,৭৯০ রান তুলেন। তন্মধ্যে, সাতটি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন মরিস লেল্যান্ড।[৭] ঐ মৌসুমে এসেক্সের বিপক্ষে ২৬৩ রান তুলেছিলেন। এটি তার প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবনের সর্বোচ্চ সংগ্রহরূপে আখ্যায়িত হয়।[৫] ঐ মৌসুমে ভারতের বিপক্ষে তিন টেস্টের সিরিজের দুইটিতে অংশ নেন। তবে, আঘাতের কারণে দ্বিতীয় টেস্টে অনুপস্থিত ছিলেন।[৫][৬৪] তবে, তিনি মাত্র দুইবার ব্যাটিং করতে নেমেছিলেন। প্রথম টেস্টে শক্তিশালী বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে রুখে দাঁড়ান ও ৬০ রান তুলেন। এ পর্যায়ে দল কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়েছিল।[৬] তাসত্ত্বেও তার দল ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জয়ে সমর্থ হয়।[৫] ঐ মৌসুমে প্রথমসারির খেলোয়াড় হিসেবে আসন্ন শীত মৌসুমে এমসিসি দলের সাথে অস্ট্রেলিয়া গমনের জন্য মনোনয়ন লাভ করেন।[৫]
এমসিসি দলে জি. ও. বি. অ্যালেনের নেতৃত্বে ঐ সফরে দল নির্বাচকমণ্ডলী মরিস লেল্যান্ডকে অন্তর্ভুক্ত করে।[৬৫] সফরকারী দল প্রথম দুই টেস্টে জয় তুলে নেয়। তবে, পরবর্তী তিন টেস্টেই হেরে যায় ও ৩-২ ব্যবধানে সিরিজে পরাজিত হয়। উইজডেন দলের পরাজয়ের জন্যে দূর্বল ব্যাটিংকে দোষারোপ করে। কয়েকজন ব্যাটসম্যানের অন্যতম হিসেবে তিনিও এ অভিযোগ থেকে রক্ষা পান। এতে বলা হয়, খুব সংযত অবস্থায় থাকার পরও অন্যতম হিসেবে তিনি দলের ব্যাটিংশৈলী উপহার দিয়েছেন।[৬৫] সিরিজ আরম্ভের পূর্বে ইংল্যান্ড দল বিল ও’রিলির বিপক্ষে বোলিং মোকাবেলার বিষয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ছিল।[৬]
প্রথম টেস্টে প্রথম তিন উইকেট মাত্র ২০ রানে পতনের পর লেল্যান্ড ১২৬ রান তুলেন।[৬] অনেক ক্রিকেটবোদ্ধাই তার এ ইনিংসকে সেরাগুলোর একটিরূপে অভিহিত করে।[৬৬] ঐ সময় পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অংশগ্রহণকৃত সাতটি ইনিংসের মধ্যে এটি তার চতুর্থ সেঞ্চুরি ছিল।[৫৭] দ্বিতীয় ইনিংসটিতে কার্যকরীভাবে রক্ষণাত্মক ইনিংস খেলেন। ধীরগতিতে রান তোলার জন্য তিনি সমালোচনার পাত্রে পরিণত হন।[৬৭][৬৮] এরপর তৃতীয় টেস্টে নির্মিত পিচটি বৃষ্টির কারণে ব্যাটসম্যানদের প্রতিকূলে চলে যায়। ইংল্যান্ড দল কেবলমাত্র ৭৬/৯ তুলে। এ রানগুলোর মাঝে লেল্যান্ডের অবদান ছিল ১৭।[৫] উইজডেনের মতে, ইংল্যান্ডের একমাত্র সফলতা ছিল তিনি কঠিন পরিস্থিতির মাঝেও নির্বিকার ছিলেন।[৬৯] দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরি করেন।[৫] সামগ্রীকভাবে পাঁচ টেস্টে অংশ নিয়ে ৫৫.১২ গড়ে ৪৪১ রান তুলেন।[৫][৪৩] অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটবোদ্ধারা লেল্যান্ডকে ইংল্যান্ডের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানরূপে মেনে নেন। সিরিজের শুরুতে ইংল্যান্ডের শক্তিমত্তায় তার ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করা হয়।[৭০] সফরের সকল প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ৫০.১ গড়ে ৯০২ রান তুলেন তিনি। তবে, নিউজিল্যান্ডে প্রধান সফরে তিন খেলায় অংশ নিয়ে বেশ হতাশাজনক ফলাফল করেন।[৭]
শেষের বছরগুলো
সম্পাদনা১৯৩৭ সালে ভাঙ্গা আঙ্গুলের কারণে অধিকাংশ সময়ই ক্রিকেটের বাইরে অবস্থান করতে বাধ্য হয়েছিলেন।[৬] শুধুমাত্র জুলাই মাসে খেলেছিলেন।[৫] নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে অনুপস্থিত ছিলেন।[৬] ৩৬.২৭ গড়ে ১,৩০৬ রান তুলেন ও ১৯ উইকেট পান।[৭][২২] ১৯৩৮ সালেও ক্রমাগত আঘাতের জের বহমান থাকে।[৬] ৪৩.৮১ গড়ে ১,৮৮৪ প্রথম-শ্রেণীর রান তুলেন।[৭] কিন্তু, মৌসুমের শুরুতেই কাঁধের সমস্যার কবলে পড়ে তার খেলার ধার বহুলাংশে কমে যায়।[৬৬] ১৯৩৮ সালে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম তিন টেস্টে অংশগ্রহণ করার সুযোগ হাতছাড়া হয় তার।[৬] তবে, ইংল্যান্ড দলে বেশ কয়েকজন উদীয়মান ব্যাটসম্যানের অংশগ্রহণ ছিল।[২] তাসত্ত্বেও, বল হাতে সেরা মৌসুম অতিবাহিত করেন মরিস লেল্যান্ড। শক্ত ও শুষ্ক উইকেটে অর্থোডক্স স্পিনারদের সুযোগ কম থাকা সত্ত্বেও ১৯.৩২ গড়ে ৬৩ উইকেট পেয়েছিলেন তিনি।[২২][৭১] মৌসুমের শুরুরদিকে হ্যাম্পশায়ারের বিপক্ষে ৮/৬৩ পান। এটিই তার খেলোয়াড়ী জীবনের সেরা বোলিং পরিসংখ্যান ছিল।[৫] ব্যাটিংয়ে ছন্দ ফিরে আসার মুহুর্তে ইংল্যান্ড দলে খেলার সম্ভাবনা ছিল। তবে, মিডলসেক্সের বিপক্ষে তার বৃদ্ধাঙ্গুলী ভেঙ্গে যায়। তাসত্ত্বেও, সিরিজের চূড়ান্ত টেস্ট শুরুর পূর্বেই সুস্থ হয়ে উঠেন। কিন্তু, চতুর্থ টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিজয়ে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে তার দল।[৬]
উইজডেন মন্তব্য করে যে, লেল্যান্ডের অন্তর্ভুক্তিতে বিস্ময়কর ফলাফল আনয়ণ যে সম্ভব তা তিনি পুনরায় করে দেখিয়েছেন।[৭২] তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে লেন হাটনের সাথে ৩৮২ রানের জুটি গড়েন। ঐ সময়ে এটি যে-কোন উইকেটে ইংল্যান্ডের সেরা টেস্ট জুটির সংগ্রহরূপে স্বীকৃতি পায়।[৭২] ২০১৩ সালের হিসেব মোতাবেক দ্বিতীয় উইকেটে ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ সংগ্রহ।[৭৩] অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে যে-কোন উইকেটে সর্বোচ্চ।[৭৪] খেলায় কোন সময়সীমা না থাকায় মরিস লেল্যান্ড বেশ সাবধানতার সাথে সাড়ে ছয় ঘণ্টায় ১৮৭ রান তুলে রান আউটের শিকার হন। লেন হাটন ৩৬৪ রান তুলে বিদায় নেন। ঐ সময়ে এটি সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহরূপে পরিচিতি পেয়েছিল।[৭২] তুলনামূলকভাবে ইংল্যান্ড দল ধীরলয়ে ব্যাট করে ও বোলারদেরকে হতাশায় ফেলে দেয়। কারদাস খেলার বিরতিকালে তার হতাশার কথা লেল্যান্ডকে জানান। নেভিল কারদাস লিখেছেন: ‘কেবল তোমাকেই মরিস আমি অভিযুক্ত করছি। দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে রাগান্বিত হয়ে নয়। তুমি যদি বলকে আঘাত না-ও করো তবু তুমি আমাদেরকে কিছু ক্রিকেটীয় খেলা উপহার দাও। মৃদু অনুযোগ করে লেল্যান্ড বলেন, এক মিনিট মি. কারদাস। আমার আপত্তিতে ব্যথা পেলেও স্মরণে রাখুন যে, আমি দলে আমার স্থান ফিরে পেতে খেলছি।’[৫৭] ইংল্যান্ড খেলায় জয় পায় ও সিরিজে সমতা নিয়ে আসে।[৭২] লেল্যান্ডের ইনিংসটি টেস্টে তার সর্বোচ্চ ছিল।[৫] তবে, ইংল্যান্ডের পক্ষে এটিই তার সর্বশেষ খেলা ছিল। ৪১ টেস্টে ৪৬.০৬ গড়ে ২,৭৬৪ রান তুলেন ও ছয় উইকেট পেয়েছিলেন।[৭৫]
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবার পূর্বে ১৯৩৯ মৌসুমে ৩৯.৯৩ গড়ে ১,২৩৮ রান সংগৃহীত হয় তার ও ২৩ উইকেট পান।[৭][২২] যুদ্ধকালীন সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। সেখানে প্রথমে সার্জেন্ট ইনস্ট্রাক্টর পদবী ধারণ করেন।[৭৬][৭৭] পরবর্তীতে লেফট্যান্যান্ট হিসেবে কমিশন্ডপ্রাপ্ত হন।[৭৮] সেনাবাহিনীর দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ব্রাডফোর্ড লীগে ক্রিকেট খেলতেন।[৭৭][৭৮] যুদ্ধকালীন অনেকগুলো দলের পক্ষে খেলেন। তন্মধ্যে আর্মি দলেরও প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। ১৯৪৫ সালে ইয়র্কশায়ার দলের পক্ষে কয়েকটি প্রথম-শ্রেণীবিহীন খেলায় অংশগ্রহণ করেন। এরপর ল্যাঙ্কাশায়ারের বিপক্ষে একটি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেন।[৫] যুদ্ধের পর খেলোয়াড়ী জীবন চালিয়ে যেতে ইয়র্কশায়ার দলকে পুণঃপ্রতিষ্ঠা লাভে সহায়তা করেন।[৭৯] ১৯৪৬ মৌসুমে সর্বশেষবারের মতো পূর্ণাঙ্গ মৌসুম অতিবাহিত করেন। ২১.০৬ গড়ে ৬৩২ রান তুলেন ও ১৪.৭০ গড়ে ১৬ উইকেট পান।[৭][২২] ওয়ারউইকশায়ারের বিপক্ষে ৩৬ রানের বিনিময়ে সাত উইকেট পান।[২২] আগস্ট, ১৯৪৬ সালে তিনি তার অবসর গ্রহণের কথা ঘোষণা করেন।[৮০] তাসত্ত্বেও পরবর্তী দুই মৌসুমে কয়েকটি শেষদিকের প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি।[৫] ১৯৪৮ সালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন শেষ হলে ৪০.৫০ গড়ে ৩৩,৬৬০ রান তুলেন ও ২৯.৩১ গড়ে ৪৬৬ উইকেট পেয়েছিলেন মরিস লেল্যান্ড।[৫][৭৫]
অবসর
সম্পাদনাইয়র্কশায়ার দল থেকে অবসর গ্রহণের পর ১৯৫০ সাল পর্যন্ত হ্যারোগেট দলের পক্ষে খেলা চালিয়ে যেতে থাকেন।[৮১] এরপর তিনি আর্থার মিচেলকে সহযোগী হিসেবে নিয়ে ইয়র্কশায়ারের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করেন।[৮২][৮৩] মিচেল বেশ কঠোর প্রকৃতির ছিলেন। তাসত্ত্বেও লেল্যান্ডের সাথে সুন্দরভাবে দল পরিচালনা করতে থাকেন।[১] এছাড়াও, কাগজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান থমাস ওয়েনের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন।[৮৪] ১৯৪৯ সালে সাবেক পেশাদার ক্রিকেটারদের প্রথম পর্যায়ের দলেরা অন্যতম হিসেবে এমসিসি কর্তৃক সম্মানসূচক আজীবন সদস্যপদ লাভ করেন।[১] ১৯৬৩ সালে গুরুতরভাবে অসুস্থ হবার পূর্ব পর্যন্ত ইয়র্কশায়ারের সম্মানীয় কোচের দায়িত্বে ছিলেন।[১][৮১] পারকিনসন রোগে আক্রান্ত হন।[১] ইয়র্কশায়ারের ক্রিকেটের সাথে কিছুটা যোগাযোগ রক্ষা করতেন ও হ্যারোগেটে খেলায় উপস্থিত থাকার চেষ্টা চালাতেন।[৮৩] ক্রিকেটে তার অর্জনের স্বীকৃতিস্বরূপ হ্যারোগেট মাঠের নতুন গেট তার সম্মার্থে নামকরণ হয়।[১] ১ জানুয়ারি, ১৯৬৭ তারিখে ৬৬ বছর বয়সে নেয়ার্সবোরার হাসপাতালে মরিস লেল্যান্ডের দেহাবসান ঘটে।[১]
খেলার ধরন
সম্পাদনাব্যাটসম্যান হিসেবে মরিস লেল্যান্ড সাধারণতঃ মাঝারিসারিতে কিংবা মাঝে-মধ্যে ব্যাটিং উদ্বোধনে নামতেন।[৩] খেলোয়াড়ী জীবনের শুরুরদিকে ধারাভাষ্যকারেরা তার ব্যাটিংয়ের ধরনকে ত্রুটিপূর্ণরূপে আখ্যায়িত করেন। এর রেশ পরিসংখ্যানগতভাবে সফল হবার পরও বজায় থাকে।[৮৫] কয়েকজন ইয়র্কশায়ারের সমালোচক তার কাট শটের ব্যবহারকে অনির্ভরযোগ্যরূপে আখ্যায়িত করেন। তারা ধারণা করতেন যে, আক্রমণধর্মী খেলা উপহারের বিষয়টি ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে।[২৩] তিনি তার সমসাময়িক ইয়র্কশায়ারের দলীয় সঙ্গীদের তুলনায় দ্রুতগতিতে রান সংগ্রহ ও আক্রমণাত্মক ভঙ্গীমায় খেলতেন।[৮৬] কারদাসের মতে, তার চোখে দ্যুতি ছিল ও এ দ্যুতি তার ব্যাটের মধ্যেও পড়েছিল। ইয়র্কশায়ারের কঠিন অবস্থার মধ্যেও তিনি বেশ নিজেকে যাচাই করে গেছেন।[৫৭] ক্রিকেট লেখক ই. ডব্লিউ. সোয়ানটন লক্ষ্য করেছেন যে, লেল্যান্ড সর্বদাই ব্যাট হাতে সোজাভাবে খেলতেন না। দ্রুতগতিতে পায়ের কাজ ও বলকে খুব কাছে থেকে পর্যবেক্ষণের যোগ্যতা তার ছিল।[৮৬] প্রতিপক্ষীয় বোলারদের অভিমত, তিনি বলকে আঘাত হানার উদ্দেশ্যে ব্যাট হাতে সোজা খেলতেন।[৮৭]
ধ্রুপদী ব্যাটসম্যান হিসেবে না খেললেও মরিস লেল্যান্ড বেশ কার্যকরী ব্যাটসম্যানের মর্যাদা পেয়েছিলেন।[৫৭][৮৬] সময়ে সময়ে দ্রুতগতিতে রান সংগ্রহের দিকে ধাবিত হওয়া ডিসমিসালের শিকার হতেন। [৬৬] তাসত্ত্বেও দলের প্রয়োজনে নিজেকে বেশ রক্ষণশীলতার দিকে নিয়ে যেতেন। কোন কারণে ব্যাট হাতে বল মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হলে নিজের প্যাডকে আত্মরক্ষার দ্বিতীয় ধারায় ব্যবহার করতেন।[৮৭]
ক্রিকেটবোদ্ধাদের অভিমত, মরিস লেল্যান্ড কাউন্টি ক্রিকেটের চেয়ে টেস্টেই অধিক সফল ছিলেন।[৮৮] তার প্রথম-শ্রেণীর ব্যাটিং পরিসংখ্যানের সাথে স্বল্প টেস্ট খেলায় অংশগ্রহণকারী অন্য ক্রিকেটারদের তুলনা করা ব্যতিক্রমী বিষয়।[৮৯] তবে, টেস্টের ক্ষেত্রে সংগৃহীত গড়ের চেয়েও ছয় রান বেশি ছিল। ইংল্যান্ডের শক্ত প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তার গড় ছিল ৫৬ যা আরও দশ রান বেশি।[২৩] গিবসনের অভিমত, বড় ধরনের খেলায় নিজেকে তুলে ধরতেন এবং শক্ত প্রতিপক্ষের বিপক্ষে নিজের সেরা খেলা উপহার দিতেন।[৮৯] লেল্যান্ডের স্মরণে টাইমসে বলা হয়, তিনি মূলতঃ বড় ধরনের খেলার উপযোগী ছিলেন। সঙ্কট মুহুর্তে সেরা খেলা খেলতেন। গোলাপের খেলা কিংবা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট খেলায় অংশগ্রহণ তার প্রিয় বিষয় ছিল।[৭৯]
টেস্ট খেলাগুলোয় শীর্ষস্থানীয় ফাস্ট বোলারদের মুখোমুখি না হলেও কাউন্টি ক্রিকেটে হ্যারল্ড লারউডের ন্যায় ইংরেজ ফাস্ট বোলারদের বিপক্ষে ব্যাপক সফলতা পেয়েছিলেন। ও’রিলির বিপক্ষে দাপট দেখিয়ে নিজেকে জানিয়েছেন।[৬৬] ঐ সময়ে ও’রিলি বিশ্বের সেরা বোলার ছিলেন।[৯০] একবার তিনি যখন লেল্যান্ডকে ব্যাট হাতে মাঠে আসতে দেখেন তখন তিনি তার হাত মাথায় ধরে রাখেন। তাকে বলতে শোনা গিয়েছিল যে, এই নিষ্ঠুর ইয়র্কশায়ারীয় আবারও এসেছে![৬৬]
মাঠের যে-কোন অবস্থানে চমৎকার ফিল্ডার হিসেবে মরিস লেল্যান্ডের ভূমিকার কথা সমালোচকেরা উল্লেখ করেছেন।[২] তিনি বামহাতি স্পিন বোলিং করতেন। তবে, অর্থোডক্স বোলিং অনুশীলনকালে বামহাতি স্পিনারেরা তাদের আঙ্গুল দিয়ে বলে স্পিন করালেও সচরাচর তিনি হাতের পিছনে রেখে বলকে ডেলিভারী করতেন যা চায়নাম্যান নামে পরিচিত।[৬৬] বোলিংকে তিনি তেমন গুরুত্বতার সাথে নেননি।[৯১] তবে, তিনি বোলিংকে উপভোগ করতেন।[৭১] এ দায়িত্বে থেকে কিছু ক্ষেত্রে তিনি কার্যকরী ছিলেন। তবে, তাকে বাদ দিয়ে ইয়র্কশায়ারে অন্যান্য খেলোয়াড়দেরকে প্রধান স্পিনারের দায়িত্ব দেয়া হতো।[২] সচরাচর তিনি বিকল্প বোলার হিসেবে বোলিং করতেন। যখন অন্য বোলারেরা দীর্ঘক্ষণ ধরে ব্যাটসম্যানকে আউট করতে পারছেন না তখন তাকে বোলিং করার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হতো।[৬৬] উইজডেনে তার স্মরণে বলা হয়, যদি তিনি অন্য কাউন্টিতে খেলতেন, তাহলে তিনি হয়তো বিশ্বমানের অল-রাউন্ডার হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে সক্ষমতা দেখাতে পারতেন।[২] সুযোগের অভাবে রিস্ট স্পিনকে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ ঘটাতেন। পরে তিনি দাবী করেন যে, চায়নাম্যান পরিভাষাটি তিনিই প্রথম ব্যবহার করেন।[২][৬৬]
তিনি নিজের বিপক্ষে অবস্থান করে গল্প বলতেন।[৯২] যুদ্ধকালীন একটি খেলায় তার ডিসমিসাল সম্পর্কে এক বোলারের অনুশীলন না থাকা সত্ত্বেও অদ্ভুত ডেলিভারীতে আউট হন। লেল্যান্ড বলটিকে সজোরে আঘাত করে শূন্যে মারেন ও কট আউটে পরিণত হন। এর বিপরীতে তিনি মন্তব্য করেছিলেন যে, আপনি জানেন যে, ঐ খেলোয়াড়ের বিপক্ষে আমি পর্যাপ্ত অনুশীলন করিনি।[৯২][৯৩] আরেকবার তিনি কীভাবে ও’রিলির এক ওভার মোকাবেলা করেছিলেন তার ব্যাখ্যা দেন। এ বিষয়টি দ্য ক্রিকেটারে তার স্মরণে বর্ণিত হয়েছে। প্রথমে তিনি অফব্রেক, তারপর লেগব্রেক, তারপর গুগলি, তারপর বাম্পার, তারপরেরটি তার হাতে চলে যায়। তবে, এটিতো পঞ্চম বল। শেষ বলটি কি হলো? ও, ঐটি! ঐটি সোজা আমাকে বোল্ড করে দিল![৯২] দলীয় সঙ্গীদের কাছে ‘টনিপ’ বা ‘টার্নিপ’ নামে পরিচিত ছিলেন। সম্ভবতঃ নিজ দলের উত্থানের কারণে এ নামকরণ করা হয়।[৭১] রবার্টসন-গ্লাসগো ও নেভিল কারদাস নিয়মিতভাবে লেল্যান্ড সম্পর্কে লিখে গেছেন। গিবসনের মতে, এগুলোর মধ্যে তারা সেরা বিষয়গুলোই তুলে ধরেছেন।[৭১] লেল্যান্ড দলীয় সঙ্গী, প্রতিপক্ষ ও বিশ্বের সকল দর্শকের কাছে জনপ্রিয় ছিলেন।[৮৬] সোয়ানটন লেল্যান্ড স্মরণে মন্তব্য করেন যে, তার ন্যায় সাহসী ও দৃঢ়প্রত্যয়ী ক্রিকেটার আর কখনও ইংল্যান্ডের পক্ষে প্যাড পরিহিত অবস্থায় দেখা যাবে না।[৮৮]
পাদটীকা
সম্পাদনা- ↑ ছয়জন ব্যাটসম্যানের একজন হিসেবে দলের পক্ষে সহস্রাধিক প্রথম-শ্রেণীর রান সংগ্রহ করেছিলেন। অন্যরা হচ্ছেন - পার্সি হোমস, হার্বার্ট সাটক্লিফ, রয় কিলনার, উইলফ্রেড রোডস ও এডগার ওল্ডরড।[১০]
- ↑ Throughout Leyland's career, the MCC organised and administered English cricket. Official English touring teams always played under the name of MCC and were only styled "England" during Test matches.[২৫]
- ↑ The only higher amounts for Yorkshire were £3,703 raised for George Hirst in 1904 and £4106 for Roy Kilner in 1925. Only Herbert Sutcliffe also received over £3,000 before the Second World War.[৬১]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ Woodhouse, Anthony (২০১১) [2004]। "Leyland, Maurice (1900–1967)"। Oxford Dictionary of National Biography (online সংস্করণ)। Oxford University Press। ৬ মার্চ ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০১৩। (সাবস্ক্রিপশন বা যুক্তরাজ্যের গণগ্রন্থাগারের সদস্যপদ প্রয়োজন)
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ "Maurice Leyland (Obituary)"। Wisden Cricketers' Almanack। London: John Wisden & Co। ১৯৬৮। ১৪ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০১৩।
- ↑ ক খ গ ঘ Hodgson, p. 115
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ Stewart Caine, C, সম্পাদক (১৯২৯)। "Part I: Maurice Leyland"। Wisden Cricketers' Almanack। London: John Wisden & Co। পৃষ্ঠা 271।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ ট ঠ ড ঢ ণ ত থ দ ধ ন প ফ ব ভ ম য র ল শ ষ স হ ড় ঢ় "Player Oracle M Leyland"। CricketArchive। ৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জানুয়ারি ২০১৩।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ ট ঠ ড ঢ ণ ত থ দ ধ ন প ফ ব ভ ম য র ল শ ষ স হ "M. Leyland (Yorkshire and England)"। Wisden Cricketers' Almanack। London: John Wisden & Co। ১৯৪৩। ১৪ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৩।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ ট ঠ ড ঢ ণ ত থ দ ধ ন প ফ ব ভ ম য "First-class Batting and Fielding in Each Season by Maurice Leyland"। CricketArchive। ২৯ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জানুয়ারি ২০১৩।
- ↑ Pardon, Sydney H, সম্পাদক (১৯২৩)। "Part II: Yorkshire"। Wisden Cricketers' Almanack। London: John Wisden & Co। পৃষ্ঠা 36।
- ↑ ক খ Pardon, Sydney H, সম্পাদক (১৯২৪)। "Part II: Yorkshire"। Wisden Cricketers' Almanack। London: John Wisden & Co। পৃষ্ঠা 37।
- ↑ ক খ Woodhouse (1989), p. 326.
- ↑ "Cricket notes: Prospects for the Season"। The Times। London। ৫ মে ১৯২৪। পৃষ্ঠা 6। ৬ মার্চ ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জানুয়ারি ২০১৩। (সদস্যতা নেয়া প্রয়োজন (সাহায্য))।
- ↑ Woodhouse (1989), pp. 332–33.
- ↑ Stewart Caine, C, সম্পাদক (১৯২৬)। "Part II: Yorkshire"। Wisden Cricketers' Almanack। London: John Wisden & Co। পৃষ্ঠা 45।
- ↑ Stewart Caine, C, সম্পাদক (১৯২৭)। "Part II: Yorkshire"। Wisden Cricketers' Almanack। London: John Wisden & Co। পৃষ্ঠা 125।
- ↑ Rogerson, Sidney (১৯৬০)। Wilfred Rhodes। London: Hollis and Carter। পৃষ্ঠা 135–37।
- ↑ Stewart Caine, C, সম্পাদক (১৯২৮)। "Part II: M. C. C. Team in India"। Wisden Cricketers' Almanack। London: John Wisden & Co। পৃষ্ঠা 631।
- ↑ Stewart Caine, C, সম্পাদক (১৯২৮)। "Part II: Yorkshire"। Wisden Cricketers' Almanack। London: John Wisden & Co। পৃষ্ঠা 90।
- ↑ ক খ Pope, Mick (১৯৯০)। The Laughing Cricketer of Wombwell। London: Darf Publishers। পৃষ্ঠা 50–52। আইএসবিএন 1-85077-219-3।
- ↑ "Maurice Leyland: Yorkshire Cricketer Married"। Hull Daily Mail। British Newspaper Archive। ৩১ মার্চ ১৯২৮। পৃষ্ঠা 4। ৬ মার্চ ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ মার্চ ২০১৩। (সদস্যতা নেয়া প্রয়োজন (সাহায্য))।
- ↑ Hill, p. 82.
- ↑ ক খ Stewart Caine, C, সম্পাদক (১৯২৯)। "Part II: Yorkshire"। Wisden Cricketers' Almanack। London: John Wisden & Co। পৃষ্ঠা 171।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ ট ঠ ড ঢ ণ "First-class Bowling in Each Season by Maurice Leyland"। CricketArchive। ২৯ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০১৩।
- ↑ ক খ গ Gibson, p. 141.
- ↑ "Gentlemen v Players in 1928"। CricketArchive। ২২ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০১৩।
- ↑ "MCC History"। Marylebone Cricket Club। ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১২।
- ↑ "Cricket: The Team for Australia"। The Times। London। ৩১ জুলাই ১৯২৮। পৃষ্ঠা 7। ৬ মার্চ ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩। (সদস্যতা নেয়া প্রয়োজন (সাহায্য))।
- ↑ Gibson, pp. 141–42.
- ↑ Lemmon, p. 75.
- ↑ ক খ গ Gibson, p. 142.
- ↑ "Wisden Almanack: 1929"। ESPNCricinfo। ১৪ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ অক্টোবর ২০১৩।
- ↑ "West Indies in England, 1928"। Wisden Cricketers' Almanack। London: John Wisden & Co। ১৯২৯। ১৩ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ অক্টোবর ২০১৩।
- ↑ "Notes by the Editor"। Wisden Cricketers' Almanack। London: John Wisden & Co। ১৯২৯। ১৫ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ অক্টোবর ২০১৩।
- ↑ "England v West Indies in 1928"। CricketArchive। ১১ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০১৩।
- ↑ Douglas, p. 64.
- ↑ Lemmon, pp. 79, 83.
- ↑ Lemmon, pp. 90–92.
- ↑ Douglas, p. 83.
- ↑ ক খ Southerton, S. J. (১৯৩০)। "M.C.C. team in Australia 1928–29"। Wisden Cricketers' Almanack। London: John Wisden & Co। ৭ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৩।
- ↑ Cardus (1982), pp. 272–76.
- ↑ Hodgson, p. 127.
- ↑ Cardus (1982), p. 263.
- ↑ Southerton, S. J. (১৯৩০)। "The South African team in England 1929"। Wisden Cricketers' Almanack। London: John Wisden & Co। ১৪ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৩।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ "Test Batting and Fielding in Each Season by Maurice Leyland"। CricketArchive। ২৯ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৩।
- ↑ ক খ গ ঘ Gibson, p. 143.
- ↑ ক খ "LV County Championship: County Championship Final Positions 1890–2010"। Wisden Cricketers' Almanack। London: John Wisden & Co। ২০১০। পৃষ্ঠা 575। আইএসবিএন 978-1-4081-2466-6।
- ↑ Cardus (1982), pp. 284–86, 290.
- ↑ Cardus (1982), p. 286.
- ↑ "M. C. C. team in South Africa, 1930–31"। Wisden Cricketers' Almanack। London: John Wisden & Co। ১৯৩২। ৭ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩।
- ↑ ক খ "Statsguru - M Leyland - Tests - Match by match list (including missed matches)"। ESPNCricinfo। ২০১৭-০৯-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭।
- ↑ Stewart Caine, C (১৯৩২)। "Notes by the Editor"। Wisden Cricketers' Almanack। London: John Wisden & Co। ৮ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩।
- ↑ ক খ Hill, p. 136.
- ↑ ক খ Frith, p. 49.
- ↑ Hill, p. 137.
- ↑ "Cricket: The M.C.C. Tour: Three More Players Invited"। The Times। London। ১৫ আগস্ট ১৯৩২। পৃষ্ঠা 4। ৬ মার্চ ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৩। (সদস্যতা নেয়া প্রয়োজন (সাহায্য))।
- ↑ ক খ Southerton, S. J. (১৯৩২)। "The M. C. C. team in Australia and New Zealand, 1932–33"। Wisden Cricketers' Almanack। London: John Wisden & Co। ১১ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৩।
- ↑ Macartney, C. G. (১১ মার্চ ১৯৩৩)। "England Superior at Cricket"। The Barrier Miner। Broken Hill, NSW: National Library of Australia। পৃষ্ঠা 5 Edition: SPORT EDITION। ৬ মার্চ ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৩।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ Cardus (1979), p. 129.
- ↑ Southerton, Sydney (১৯৩৫)। "Notes by the Editor"। Wisden Cricketers' Almanack। London: John Wisden & Co। ১২ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩।
- ↑ "England v Australia 1934 (Fifth Test)"। Wisden Cricketers' Almanack। London: John Wisden & Co। ১৯৩৫। ১৫ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩।
- ↑ "Drawn Game at Leeds: Leyland's Benefit Match"। The Times। London। ৪ জুলাই ১৯৩৪। পৃষ্ঠা 5। ৬ মার্চ ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৩। (সদস্যতা নেয়া প্রয়োজন (সাহায্য))।
- ↑ ক খ Hodgson, p. 251.
- ↑ "M.C.C. Team in the West Indies 1934–35"। Wisden Cricketers' Almanack। London: John Wisden & Co। ১৯৩৬। ১১ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩।
- ↑ "England v South Africa 1935 (Fifth Test)"। Wisden Cricketers' Almanack। London: John Wisden & Co। ১৯৩৬। ১২ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩।
- ↑ "England v India 1936 (Second Test)"। Wisden Cricketers' Almanack। London: John Wisden & Co। ১৯৩৬। ১২ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৩।
- ↑ ক খ "England in Australia, 1936–37"। Wisden Cricketers' Almanack। London: John Wisden & Co। ১৯৩৮। ১২ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৩।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ Gibson, p. 144.
- ↑ "England v Australia 1936–37 (First Test)"। Wisden Cricketers' Almanack। London: John Wisden & Co। ১৯৩৮। ১২ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৩।
- ↑ "England v Australia 1936–37 (Second Test)"। Wisden Cricketers' Almanack। London: John Wisden & Co। ১৯৩৮। ৭ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৩।
- ↑ "England v Australia 1936–37 (Third Test)"। Wisden Cricketers' Almanack। London: John Wisden & Co। ১৯৩৮। ৫ মার্চ ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৩।
- ↑ Johnston, Ray (২১ জানুয়ারি ১৯৩৭)। "Maurice Leyland a Pet Aversion of Australian Bowlers."। The Queenslander। National Library of Australia। পৃষ্ঠা 36। ৬ মার্চ ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৩।
- ↑ ক খ গ ঘ Gibson, p. 145.
- ↑ ক খ গ ঘ "England v Australia 1938 (Fifth Test)"। Wisden Cricketers' Almanack। London: John Wisden & Co। ১৯৩৯। ১৩ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৩।
- ↑ "Highest Partnership for Each Wicket for England in Test matches"। Wisden। ৪ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৩।
- ↑ "Highest Partnership for Each Wicket for England v Australia in Test matches"। Wisden। ৪ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৩।
- ↑ ক খ "Maurice Leyland (Player profile)"। ESPNCricinfo। ৬ মার্চ ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৩।
- ↑ Kearney, L. H. (২০ মে ১৯৪১)। "Sport Light"। The Courier-Mail। Brisbane: National Library of Australia। পৃষ্ঠা 8। ৬ মার্চ ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩।
- ↑ ক খ "Maurice Leyland"। Hull Daily Mail। British Newspaper Archive। ২৩ মার্চ ১৯৪২। পৃষ্ঠা 3। ৬ মার্চ ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩। (সদস্যতা নেয়া প্রয়োজন (সাহায্য))।
- ↑ ক খ "Australia to Meet Strong XIs"। Gloucestershire Echo। Cheltenham: British Newspaper Archive। ২৪ মে ১৯৪৪। পৃষ্ঠা 4। ৬ মার্চ ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩। (সদস্যতা নেয়া প্রয়োজন (সাহায্য))।
- ↑ ক খ "Mr Maurice Leyland: A Fighting Batsman"। The Times। London। ৩ জানুয়ারি ১৯৬৭। পৃষ্ঠা 12। ৬ মার্চ ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৩। (সদস্যতা নেয়া প্রয়োজন (সাহায্য))।
- ↑ "Leyland to Retire"। Hull Daily Mail। British Newspaper Archive। ১৪ আগস্ট ১৯৪৬। পৃষ্ঠা 4। ৬ মার্চ ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩। (সদস্যতা নেয়া প্রয়োজন (সাহায্য))।
- ↑ ক খ Woodhouse (1989), p. 317.
- ↑ Thomson, p. 129.
- ↑ ক খ GIbson, p. 146.
- ↑ Hill, p. 186.
- ↑ "Yorkshire v The Rest: Champion County's Good Start at the Oval"। The Times। London। ১২ সেপ্টেম্বর ১৯৩২। পৃষ্ঠা 3। ৬ মার্চ ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৩। (সদস্যতা নেয়া প্রয়োজন (সাহায্য))।
- ↑ ক খ গ ঘ Swanton, p. 38.
- ↑ ক খ Cardus (1979), p. 130.
- ↑ ক খ Swanton, p. 39.
- ↑ ক খ Gibson, pp. 140–41.
- ↑ Cardus (1979), pp. 132–33.
- ↑ Robertson-Glasgow, p. 19.
- ↑ ক খ গ "Obituary from The Cricketer, reprinted in Maurice Leyland (Player profile)"। ESPNCricinfo। ৬ মার্চ ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৩।
- ↑ Peebles, Ian (১৯৭৮)। Spinner's Yarn। Newton Abbot: Readers Union Ltd। পৃষ্ঠা 146।
আরও দেখুন
সম্পাদনাগ্রন্থপঞ্জী
সম্পাদনা- Cardus, Neville (১৯৭৯)। Play Resumed with Cardus। London: MacDonald Queen Anne Press। আইএসবিএন 0-356-19049-8।
- Cardus, Neville (১৯৮২)। The Roses Matches 1919–1939। London: Souvenir Press। আইএসবিএন 0-285-62520-9।
- Douglas, Christopher (২০০২)। Douglas Jardine: Spartan Cricketer। London: Methuen। আইএসবিএন 0-413-77216-0।
- Frith, David (২০০২)। Bodyline Autopsy। London: Aurum Press। আইএসবিএন 1-85410-896-4।
- Gibson, Alan (১৯৮৫)। Growing Up with Cricket। London: George Allen & Unwin। আইএসবিএন 0-04-796099-X।
- Hill, Alan (২০০৭)। Herbert Sutcliffe. Cricket Maestro। Stroud, Gloucestershire: Stadia। আইএসবিএন 978-0-7524-4350-8।
- Hodgson, Derek (১৯৮৯)। The Official History of Yorkshire County Cricket Club। Ramsbury, Marlborough, Wiltshire: The Crowood Press। আইএসবিএন 1-85223-274-9।
- Lemmon, David (১৯৮৫)। Percy Chapman: a Biography। London: Queen Anne Press। আইএসবিএন 0-356-10458-3।
- Robertson-Glasgow, R. C. (১৯৪৩)। Cricket Prints: Some Batsmen and Bowlers, 1920–1940। London: T. Werner Laurie।
- Swanton, E. W. (১৯৯৯)। Cricketers of My Time। London: André Deutsch। আইএসবিএন 0-233-99746-6।
- Thomson, A. A. (১৯৬৭)। Cricketers of My Times। London: Stanley Paul। আইএসবিএন 978-0-09-084820-1।
- Woodhouse, Anthony (১৯৮৯)। The History of Yorkshire County Cricket Club। London: Christopher Helm। আইএসবিএন 0-7470-3408-7।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে মরিস লেল্যান্ড (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে মরিস লেল্যান্ড (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)