জুনায়েদ বাবুনগরী
মুহাম্মদ জুনায়েদ (যিনি জুনায়েদ বাবুনগরী নামে অধিক পরিচিত) (৮ অক্টোবর ১৯৫৩ – ১৯ আগস্ট ২০২১) ছিলেন একজন বাংলাদেশি দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত, শিক্ষাবিদ, লেখক, গবেষক, ইসলামি বক্তা ও আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব। তিনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক আমীর, দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষা সচিব ও শায়খুল হাদিস, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সহ-সভাপতি, চট্টগ্রাম নূরানী তালীমুল কুরআন বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং মাসিক মুঈনুল ইসলামের প্রধান সম্পাদক ছিলেন। এছাড়াও তিনি নাজিরহাট বড় মাদ্রাসার মুতাওয়াল্লী, মাসিক দাওয়াতুল হকের পৃষ্ঠপোষক, ইনসাফ২৪.কম ও কওমিভিশন.কমের প্রধান উপদেষ্টা সহ কয়েকটি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের নেতৃস্থানীয় পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার অনুসারীরা তাকে ‘মজলুম জননেতা’, ‘কায়েদে মিল্লাত’, ‘আপোষহীন সিপাহসালার’ ইত্যাদি উপাধিতে ডেকে থাকে। তিনি পাকিস্তানের বিখ্যাত ইসলামি ব্যক্তিত্ব ইউসুফ বিন্নুরীর শিষ্য। মুসলিম নেতা হিসেবে তিনি দেশব্যাপী ব্যাপক জনপ্রিয়। তিনি ২০১৩ সালের হেফাজত আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে কারাবরণ করেছিলেন। জুুুনায়েদ বাবুনগরী হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীরের দায়িত্ব পালনকালে ১৯ আগস্ট ২০২১ তারিখে মৃত্যুবরণ করেন।
জুনায়েদ বাবুনগরী | |
---|---|
আমির, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ | |
অফিসে ১৫ নভেম্বর ২০২০ – ১৯ আগস্ট ২০২১ | |
পূর্বসূরী | শাহ আহমদ শফী |
উত্তরসূরী | মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী |
শায়খুল হাদীস, দারুল উলুম হাটহাজারী | |
অফিসে ২০২০ – ১৯ আগস্ট ২০২১ | |
পূর্বসূরী | শাহ আহমদ শফী |
উত্তরসূরী | শেখ আহমদ |
ব্যক্তিগত তথ্য | |
জন্ম | ৮ অক্টোবর ১৯৫৩ |
মৃত্যু | ১৯ আগস্ট ২০২১ সিএসসিআর হাসপাতাল, চট্টগ্রাম | (বয়স ৬৭)
ধর্ম | ইসলাম |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
সন্তান | ৫ মেয়ে, ১ ছেলে |
পিতামাতা |
|
জাতিসত্তা | বাঙালি |
যুগ | আধুনিক |
আখ্যা | সুন্নি |
ব্যবহারশাস্ত্র | হানাফি |
আন্দোলন | দেওবন্দি |
প্রধান আগ্রহ | হাদীস, ফিকহ, ইসলামি আন্দোলন, ইসলামের ইতিহাস, লেখালেখি, তাসাউফ, বক্তৃতা |
যেখানের শিক্ষার্থী | |
আত্মীয় |
|
মুসলিম নেতা | |
যার দ্বারা প্রভাবিত | |
যাদের প্রভাবিত করেন
| |
উচ্চশিক্ষায়তনিক পটভূমি | |
অভিসন্দর্ভ | সীরাতুল ইমামিদ দারিমী ওয়াত তারিখ বি শায়খিহী (ইমাম দারিমী ও তার শিক্ষকদের জীবন বৃত্তান্ত) (১৯৭৮) |
ডক্টরাল উপদেষ্টা | মুহাম্মদ ইউসুফ বিন্নুরী |
জন্ম ও বংশ
সম্পাদনাবাবুনগরী ১৯৫৩ সালের ৮ অক্টোবর চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি থানার বাবুনগর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম কাজী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আবুল হাসন ছিলেন মুফাসসির-ই-কুরআন এবং দারুল উলুম হাটহাজারীর সিনিয়র ওস্তাদদের অন্যতম। তাঁর নসবনামা নিম্নস্বরূপঃ জুনায়েদ ইবনে আবুল হাসন ইবনে নজীর আহমদ ইবনে শাকের আলী ইবনে গোলাম আলী ইবনে খোলন ইবনে কাজী মঈনুদ্দীন ইবনে কাজী আইনুদ্দীন আল-আরবী।[১] তার মা ফাতেমা খাতুনের দিক দিয়ে তার বংশধারা ইসলামের প্রথম খলিফা আবু বকরের সাথে মিলিত হয়। হারুন বাবুনগরী তার নানা এবং মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী তার মামা।[২]
শিক্ষাজীবন
সম্পাদনা৫ বছর বয়সে তিনি আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া আজিজুল উলুম বাবুনগরে ভর্তি হন। এখানে তিনি মক্তব, হেফজ ও প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন। কুরআনের হেফজ শেষ করার পর আজহারুল ইসলাম ধর্মপুরীর কাছে তিনি পুরো কুরআন মুখস্থ শুনিয়েছিলেন।[ক] এরপর তিনি ভর্তি হন দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসায়। ১৯৭৬ সালে হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে দাওরায়ে হাদীস (মাস্টার্স) পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেন। হাটহাজারী মাদ্রাসায় তার উল্লেখযোগ্য শিক্ষকগণের মধ্যে রয়েছেন: আব্দুল কাইয়ুম, আহমদুল হক (মুফতি), আবুল হাসান, আব্দুল আজিজ, শাহ আহমদ শফী সহ প্রমুখ খ্যাতিমান ব্যক্তিবর্গ।[২]
তারপর উচ্চ শিক্ষার উদ্দেশ্যে তিনি পাকিস্তান গমন করেন। ১৯৭৬ সালে করাচিতে অবস্থিত জামিয়া উলুমুল ইসলামিয়ায় তাখাচ্ছুছাত ফিল উলুমুল হাদিস তথা উচ্চতর হাদিস গবেষণা বিভাগে ভর্তি হন। ২ বছর হাদিস নিয়ে গবেষণা সম্পন্ন করে তিনি আরবি ভাষায় ‘সীরাতুল ইমামিদ দারিমী ওয়াত তারিখ বি শায়খিহী’ (ইমাম দারিমী ও তার শিক্ষকগণের জীবন বৃত্তান্ত) শীর্ষক অভিসন্দর্ভ[খ] জমা দেন। এই অভিসন্দর্ভ জমা দেওয়ার পর তিনি জামিয়া উলুমুল ইসলামিয়া থেকে হাদিসের সর্বোচ্চ সনদ লাভ করেন। জামিয়া উলুমুল ইসলামিয়ায় তার উল্লেখযোগ্য শিক্ষকগণের মধ্যে রয়েছেন: মুহাম্মদ ইউসুফ বিন্নুরী, ইদ্রিস মিরাঠী, আব্দুল্লাহ ইউসুফ নোমানী সহ প্রমুখ। পাশাপাশি তিনি ওয়ালি হাসান টঙ্কির কাছে সুনান আত-তিরমিজী ও মুহাম্মদ ইউসুফ বিন্নুরীর কাছে সহীহ বুখারী দ্বিতীয় বারের মত অধ্যয়ন করেন।[২]
কর্মজীবন
সম্পাদনা১৯৭৮ সালের শেষের দিকে তিনি দেশে প্রত্যাবর্তন করে বাবুনগর মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে তার কর্মজীবনের সূচনা হয়। বাংলাদেশের মাদ্রাসা সমূহের মধ্যে সর্বপ্রথম বাবুনগর মাদ্রাসায় তিনি উচ্চতর হাদিস গবেষণা বিভাগ চালু করেন। ২০০৩ সালে তিনি দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসায় যোগ দেন। পরবর্তীতে তিনি হাটহাজারী মাদ্রাসার সহকারী পরিচালক নিযুক্ত হন। ২০২০ সালের ১৭ জুন মাদ্রাসা কমিটি সহকারী পরিচালকের দায়িত্ব থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়। তার স্থলে মাদ্রাসার জ্যেষ্ঠ শিক্ষক শেখ আহমদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে তার অনুসারীদের দাবি অনুযায়ী, “তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার, দাবি আদায়ে কঠোর অবস্থানে থাকায় সরকারি চাপে তাকে সরানো হয়েছে।” [৩]
পরবর্তীতে ১৪ সেপ্টেম্বর হাটহাজারী মাদ্রাসায় ছাত্র আন্দোলনের সূচনা হয়। এই আন্দোলন তীব্র হতে থাকলে ১৭ সেপ্টেম্বর মাদ্রাসার মহাপরিচালক শাহ আহমদ শফী স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে মাদ্রাসার দায়িত্ব মজলিসে শুরাকে দিয়ে দেন। ওই দিন তিনি মৃত্যুবরণ করেন। পরবর্তীতে বাবুনগরীসহ তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি গঠিত হয়। তিনি মাদ্রাসার শায়খুল হাদিস ও শিক্ষা সচিব হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন।
২০১০ সালে তাকে মহাসচিব করে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ২০২০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর সংগঠনটির আমীর মৃত্যুর পর ১৫ নভেম্বর সংগঠনের একটি কেন্দ্রীয় সম্মেলনের মাধ্যমে সর্বসম্মতিক্রমে তিনি আমীর নির্বাচিত হন।
২০১৯ সালের মে মাসে এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, “শিক্ষকতা জীবনে এ পর্যন্ত (২০১৯) আমার ছাত্র সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজারেরও বেশি।
তাসাউফ
সম্পাদনাশিক্ষাজীবন সমাপ্ত করে আধ্যাত্মিক দীক্ষা লাভের উদ্দেশ্যে ১৯৭৮ সালে তিনি আব্দুল কাদের রায়পুরীর উত্তরসূরী আব্দুল আজিজ রায়পুরীর নিকট বায়’আত গ্রহণ করেন। রমযান মাসে তিনি রায়পুরীর খানকায় অবস্থান করে কিছুকাল তার সান্নিধ্যে ছিলেন। বাংলাদেশে তিনি যাদের কাছে খেলাফত পেয়েছেন:[২]
- হুসাইন আহমদ মাদানির দুই শিষ্য,
- আব্দুস সাত্তার, ফতেয়াবাদ
- শাহ আহমদ শফী, রাঙ্গুনিয়া
- আবুল হাসান আলী নদভীর শিষ্য সুলতান যওক নদভী
পরিবার
সম্পাদনাপারিবারিক জীবনে তিনি বিবাহিত, ৫ মেয়ে ও ১ ছেলের জনক। ছেলের নাম মুহাম্মদ সালমান। পরিবারের সবাই ইসলামি কর্মকান্ডে সক্রিয় রয়েছেন।[২]
গ্রেফতার
সম্পাদনাহেফাজত আন্দোলনের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে হত্যার অভিযোগ সহ কয়েকটি অভিযোগে ২০১৩ সালের ৭ মে তাকে পুরান ঢাকার ঢাকেশ্বরী মন্দির এলাকা থেকে গ্রেফতার করে ১৩ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয় এবং ১৯ দিন কারাগারে রাখা হয়। পরবর্তীতে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তিনি মুক্তি পান। রিমান্ডে তাকে অমানুষিক নির্যাতন ও চিরতরে পঙ্গু করে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল বলে তিনি দাবি করেছেন।[৪][৫]
সমালোচনা
সম্পাদনা২০২০ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশে ভাস্কর্য বিতর্ক শুরু হলে ইসলামি নেতা মামুনুল হকের পক্ষে সমর্থন দিয়ে তিনি কঠোরভাবে ভাস্কর্য বিরোধী বক্তব্য তুলে ধরেন।[৬] তার এই মন্তব্যে আওয়ামী লীগ ও তার ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন সমূহের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
দৃষ্টিভঙ্গি
সম্পাদনা- শেখ হাসিনার মন্তব্যের সমালোচনা
২০১৯ সালের ১৩ জুন তিন দেশ সফর করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেন। উক্ত সম্মেলনের এক পর্যায়ে পর্দা বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “ হাত মোজা, পা মোজা, নাক-চোখ ঢেকে এটা কী? জীবন্ত টেন্ট (তাঁবু) হয়ে ঘুরে বেড়ানো, এটার তো কোনো মানে হয় না ”। তার এই বক্তব্যেকে আপত্তিকর আখ্যা দিয়ে জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, কুরআনের ৭টি আয়াত এবং ৭০টির মতো হাদিস দ্বারা পর্দার বিধান প্রমাণিত। এ সব আয়াত ও হাদিস দ্বারা পর্দার বিধান প্রমাণিত হওয়ার পাশাপাশি সর্বপ্রকারের বেপর্দা হারাম হওয়াও সুস্পষ্টভাবে বুঝা যায়। সুতরাং শরয়ী পর্দা নিয়ে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত প্রধানমন্ত্রীর মুখে এমন আপত্তিকর মন্তব্য দুঃখজনক। ৯০ শতাংশ মুসলিম অধ্যুষিত দেশে পর্দা সম্পর্কে দেয়া এমন বক্তব্যে কোটি কোটি মুসলমানদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। তিনি শেখ হাসিনার পর্দা সম্পর্কে দেয়া এ বক্তব্য প্রত্যাহার করে আল্লাহর কাছে তওবা করার আহ্বান জানান। [৭][৮][৯][১০]
- আহমদ শফী ও তার লংমার্চ
২০২০ সালের ২ অক্টোবর এক সভায় শাহ আহমদ শফী ও তার লংমার্চের ব্যাপারে তিনি বলেন, “ আল্লামা আহমদ শফী দেশে ভ্রান্ত মতবাদ ও ইসলাম বিরোধী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখে গেছেন। ২০১৩ সালে ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিক্যবাদের আগ্রাসী আস্ফালনের বিরুদ্ধে দেশের আলেম সমাজ ও তাওহিদী জনতাকে নিয়ে ইতিহাসের নজিরবিহীন গণআন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন। ওই সময় আমি আল্লামা শফীর সঙ্গে লংমার্চে ও শাপলা চত্বরে ছিলাম। তারই ধারাবাহিকতায় কোনো বিদআত, শিরক, মাজার পূজারী, কাদিয়ানি, শিয়া ও নাস্তিক-মুরতাদের সঙ্গে বিন্দুমাত্র আপস করা যাবে না। প্রয়োজনে সব অপশক্তির বিরুদ্ধে এ ধরনের একটা নয়, আরও দশটা লংমার্চ করতে হবে। ” [১১][১২]
- পর্দা বাধ্যতামূলক করা
২০২০ সালের ৫ অক্টোবর এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “ পর্দা নারীর মৌলিক অধিকার। পর্দাতেই নারী সর্বাধিক নিরাপদ। নারীকে নিরাপদে রাখতে পারলে তখন ব্যক্তি, দেশ, জাতি ও সমাজ, সংসার সবকিছুই নিরাপদ। ধর্ষণ, নারী নির্যাতন এসব রোধে পর্দা বাধ্যতামূলক করার বিকল্প নেই। ” [১৩][১৪]
- নাস্তিক বিরোধিতা
তিনি হেফাজতে ইসলামের মুখপাত্র হিসেবে বলেন, "এদেশে নাস্তিক মুরতাদরা থাকবে নয়তো হেফাজত থাকবে।" এছাড়াও তিনি নাস্তিকদের দেশ থেকে বিতারণের জন্য বিভিন্ন সময় কঠোর ভাষায় ঘোষণা দেন। [১৫][১৬]
প্রকাশনা
সম্পাদনাআরবি, উর্দু ও বাংলায় তার রচিত ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় ত্রিশটি। দারুল উলুম নাদওয়াতুল উলামার আরবি পত্রিকা আল বাসুল ইসলামি, দারুল উলুম দেওবন্দের মাসিক পত্রিকা আদ দায়ী, দারুল উলুম হাটহাজারীর মাসিক আল মুঈন-সহ বিভিন্ন সাময়িকীতে তার অসংখ্য প্রবন্ধ-নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। কাতারের আল আরব পত্রিকায় তার দীর্ঘ সাক্ষাৎকার ছাপানো হয়েছিল। এছাড়াও তিনি ইনসাফ২৪.কম, কওমিভিশন.কমের প্রধান উপদেষ্টা ও মাসিক দাওয়াতুল হকের[গ] পৃষ্ঠপোষক ছিলেন।
- বইসমূহ
- সীরাতুল ইমামিদ দারিমী ওয়াত তারিখ বি শায়খিহী [ঘ] (১৯৭৮)
- বিশ্ববরেণ্যে মুহাদ্দিসগণের দৃষ্টিতে ইমাম আবু হানিফা রহ.
- তালিমুল ইসলাম [ঙ] (আরবি)
- বাড়াবাড়ি ছাড়াছাড়ির কবলে শবে বরাত
- ইসলামে দাড়ির বিধান
- তাওহীদ ও শিরক: প্রকার ও প্রকৃতি
- মুকাদ্দিমাতুল ইলম : তাফসীর, হাদীস, ফিকাহ, ফতোয়া
- দারুল উলুম হাটহাজারীর কতিপয় উজ্জ্বল নক্ষত্র
- আকাবিরে দেওবন্দের সিলসিলায়ে সনদ
- জুনায়েদ বাবুনগরীর রচনাসমগ্র
- ইলমে হাদীসের ভূমিকা
- খুতবার ভাষা
- মহাগ্রন্থ আল কুরআন ও বিশ্বনবী মুহাম্মদ (স.)
- ইসলাম আওর সায়েন্স
- নাস্তিক মুরতাদের শরয়ী বিধান
- জাল হাদীস
- সূরা ফাতিহা
- মুকাদ্দামায়ে তানযীমুল আশতাত
- খতমে নবুয়ত ও কাদিয়ানী সম্প্রদায়
- সিয়াম সাধনা ইতেকাফ ও ঈদ মোবারক
- মিলাদ কিয়াম ও সুন্নাত বিদআত
- বক্তৃতা সংকলন
- হক বাতিলের লড়াই
- সুশিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড
- ইলমে দ্বীনের গুরুত্ব ও ফজীলত
- তার তত্ত্বাবধানে লিখিত বই
- তাকরীরে মুসলিম শরহে সহীহ মুসলিম [১৭]
- ইসলাম বনাম সমকালীন মতবাদ
- প্রচলিত জাল হাদীস: একটি তাত্ত্বিক আলোচনা
- ইসলামের দৃষ্টিতে গান-বাজনা
মৃত্যু
সম্পাদনাতিনি ২০২১ সালের ১৯ আগস্ট ৬৭ বছর বয়সে চট্টগ্রামের সিএসসিআর হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, কিডনি ও ডায়াবেটিসসহ বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন।[১৮] জানাজা শেষে বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) দিবাগত রাত ১২টার দিকে তাকে শাহ আহমদ শফীর পাশে সমাহিত করা হয়। [১৯]
আরও দেখুন
সম্পাদনাটীকা
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ আবুল হাসন বাবুনগরী (১৯৮০)। "المقدمة"। تنظيم الأشتات في حلّ عويصات المشكاة (আরবি ভাষায়)। পৃষ্ঠা 19–25।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ নিজামী, মাহবুবুর রহমান (২১ ডিসেম্বর ২০২০)। "মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী'র সংক্ষিপ্ত জীবনী"। কওমিপিডিয়া।
- ↑ "বাবুনগরীর এই পরিণতি কেন?"। বাংলা ট্রিবিউন। ১৯ জুন ২০২০। ২১ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুন ২০২০।
- ↑ "বাবুনগরী রিমান্ডে, রবিবার হেফাজতের হরতাল"। বিবিসি বাংলা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-০৭।
- ↑ "ফিরে দেখা-মঞ্চেই আল্লামা বাবুনগরীকে হত্যার পরিকল্পনা ছিলো র্যাবের!"। দৈনিক আমার দেশ। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১২-২৪।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "'আমার আব্বার ভাস্কর্যও ছিঁড়ে, টেনে-হিঁচড়ে ফেলে দেব' - বাবুনগরী"। বিবিসি বাংলা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১২-২৪।
- ↑ "'হিজাব নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যে মুসলমানদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে'"। দৈনিক যুগান্তর। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-০৭।
- ↑ "পর্দা নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যে মুসলমানদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে : জুনায়েদ বাবুনগরী"। দৈনিক নয়াদিগন্ত। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-০৭।
- ↑ "পর্দা নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যে মুসলমানদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে -আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী"। The Daily Sangram। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-০৭।
- ↑ "হিজাব নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যে মুসলমানদের 'হৃদয়ে রক্তক্ষরণ' হয়েছে"। Daily Manobkantha। ২০১৯-০৬-১৪। ২০২২-০৫-৩১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-০৭।
- ↑ "অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রয়োজনে আরও দশটা লংমার্চ হবে: বাবুনগরী"। দৈনিক যুগান্তর। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-০৭।
- ↑ আরজু, সুপ্রীতি (২০২০-১০-০২)। "প্রয়োজনে অপশক্তির বিরুদ্ধে আরও লংমার্চ করতে হবে"। দৈনিক পূর্বদেশ। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-০৭।
- ↑ "ধর্ষণ, নারী নির্যাতন রোধে পর্দা বাধ্যতামূলক করার দাবি বাবুনগরীর"। দৈনিক যুগান্তর। ৫ অক্টোবর ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-০৭।
- ↑ "নোয়াখালীর ঘটনায় শাস্তি না হলে উত্তাল হবে দেশ: হেফাজতের হুশিয়ারি | সারাদেশ"। দৈনিক ইত্তেফাক। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-০৭।
- ↑ "এদেশে নাস্তিক মুরতাদরা থাকবে নয়তো হেফাজত থাকবে : আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী"। amardeshonline.com। ২৫ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০১৫।
- ↑ "হেফাজত মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী ঢাকায় গ্রেফতার"। ittefaq.com.bd।
- ↑ "অপ্রকাশিত শেষ ভিডিওবার্তায় যা বলেছিলেন আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী"। Jugantor (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৫-১৬।
- ↑ "হেফাজতে ইসলামের আমির জুনাইদ বাবুনগরীর মৃত্যু"। বিডিনিউজ। সংগ্রহের তারিখ ১৯ আগস্ট ২০২১।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ Dainikshiksha। "হাটহাজারী মাদরাসায় চিরশায়িত বাবুনগরী - দৈনিকশিক্ষা"। Dainik shiksha (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৮-২০।
গ্রন্থপঞ্জি
সম্পাদনা- হাসনাবাদী, মুহাম্মদ জাকারিয়া (২০২৩)। মাশায়েখে বাবুনগর। বাংলাদেশ: ইত্তিহাদ পাবলিকেশন। পৃষ্ঠা ১২৭–১৩৬।
- উল্লাহ, মুহাম্মদ আহসান (২০২১)। বাংলা ভাষায় হাদিস চর্চা (১৯৫২-২০১৫) (পিএইচডি)। বাংলাদেশ: ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। পৃষ্ঠা ৪৩০–৪৩১।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- শ্বেতপত্র: বাংলাদেশে মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ২০০০ দিন। মহাখালী, ঢাকা-১২১২: মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্তে গণকমিশন। ফেব্রুয়ারি ২০২২। পৃষ্ঠা ৭৯–৮২।
- খালিদ হোসেন, আ ফ ম (২০২২)। নিভে যাওয়া দীপশিখা ১। বাংলাদেশ: আকাবিব স্টাডিজ অ্যান্ড পাবলিশিং হাউস। পৃষ্ঠা ২৮৬–২৯১। আইএসবিএন 9789849591405।
- খালিদ হোসেন, আ ফ ম (২২ আগস্ট ২০২১)। "আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী : সত্যের প্রতি অবিচল এক রাহবার"। নয়া দিগন্ত।
- নিজামী, মাহবুবুর রহমান (২১ ডিসেম্বর ২০২০)। "মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী'র সংক্ষিপ্ত জীবনী"। কওমিপিডিয়া।
- স্মৃতির পাতায় আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী (রহ.)