সোভিয়েত ইউনিয়ন

বিশ্বের সাবেক সর্ববৃহৎ সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র
(USSR থেকে পুনর্নির্দেশিত)

সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের ঐক্যতন্ত্র[ঞ], সংক্ষেপে সোভিয়েত ঐক্যতন্ত্র[ট] বা সোভিয়েত ইউনিয়ন, ছিল একটি ইউরেশীয়া পর্যন্ত বিস্তৃত একটি সমাজতান্ত্রিক দেশ, যার অস্তিত্ব ছিল ১৯১৮ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত। ১৯১৮সালে রুশ সাম্রাজ্য ভেঙ্গে যায় ফিনল্যান্ড স্বাধীনতা লাভ করে। রুশ সাম্রাজ্যের রাশিয়া গণপ্রজাতন্ত্রী লুহানস্ক, গণপ্রজাতন্ত্রী দোনেৎস্কতুর্কির উসমানীয় সম্রাজ্য, জর্জিয়া দক্ষিণ ওশেটিয়া-আর্মেনিয়া অংশ নিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন গঠন করে। সোভিয়েত ইউনিয়ন সাধারণভাবে অনেকগুলো প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সম্মিলিত দেশ ছিল এবং সেখানে কোনও ব্যক্তিমালিকানা ছিল না, সমস্ত সম্পত্তি সামাজিক বা রাষ্ট্রের অধীনে ছিল। এটি একটি একদলীয় রাষ্ট্র ছিল, মূল পার্টি ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের কমিউনিস্ট পার্টি। এই সমাজতান্ত্রিক দেশের রাজধানী ও সর্বাধিক জনসংখ্যাবিশিষ্ট্য শহর হলো মস্কো, তিবি‌লিসিইয়েরেভান। এছাড়া অনান্য বৃহৎ নগরগুলো হলো লেনিনগ্রাদ (রুশ সোভিয়েত), কিয়েভ (ইউক্রেন সোভিয়েত), মিনস্ক (বালুরাশিয়া সোভিয়েত), তাশখন্দ (উজবেক সোভিয়েত), আলমাতি (কাজাখ সোভিয়েত), নভোসিবির্স্ক, (রুশ সোভিয়েত)। সোভিয়েত ইউনিয়ন ছিল বিশ্বের সর্ববৃহৎ রাষ্ট্র, যার আয়তন ছিল ২,২৪,০২,২০০ বর্গকিলোমিটার (৮৬,৪৯,৫০০ বর্গমাইল)। এই দেশে মোট ১১টি টাইম-জোন ছিল।

সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের ঐক্যতন্ত্র
(অন্যান্য নামসমূহ)

Союз Советских Социалистических Республик
১৯১৮–১৯৯১[১]
সোভিয়েত ঐক্যের জাতীয় পতাকা
পতাকা
সোভিয়েত ঐক্যের রাষ্ট্রীয় প্রতীক
রাষ্ট্রীয় প্রতীক
নীতিবাক্য: Пролетарии всех стран, соединяйтесь!
"দুনিয়ার মজদুর, এক হও!"[ক]
জাতীয় সঙ্গীত: "আন্তর্জাতিক সঙ্গীত"
(১৯২২–১৯৪৪)

"সোভিয়েত ঐক্যের রাষ্ট্রসঙ্গীত"
(১৯৪৪–১৯৯১)
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে সোভিয়েত ইউনিয়ন
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে সোভিয়েত ইউনিয়ন
রাজধানী
ও বৃহত্তম নগরী বা বসতি
মস্কো, তিবি‌লিসিইয়েরেভান
সরকারি ভাষারুশ,আর্মেনীয়জর্জীয়
স্বীকৃত আঞ্চলিক ভাষা
নৃগোষ্ঠী
(১৯৮৯)
  • ৭০% পূর্ব স্লাভ
  • ১২% তুর্ক
  • ১৮% অন্যান্য
ধর্ম
নাস্তিক্যবাদ (সর্বাধিক সমাদৃত)[খ]
জাতীয়তাসূচক বিশেষণসোভিয়েত
সরকারযুক্তরাষ্ট্রীয় মার্কসবাদী-লেনিনবাদী একদলীয় সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র
প্রধান নেতা 
• ১৯১৮–১৯২৪
ভ্লাদিমির লেনিন[গ]
• ১৯২৪–১৯৫৩
জোসেফ স্তালিন[ঘ]
• ১৯৫৩[চ]
গেওর্গি মালেনকোভ[ঙ]
• ১৯৫৩–১৯৬৪
নিকিতা খ্রুশ্চেভ[ছ]
• ১৯৬৪–১৯৮২
লিওনিদ ব্রেজনেভ[জ]
• ১৯৮২–১৯৮৪
ইউরি আন্দ্রোপভ
• ১৯৮৪–১৯৮৫
কনস্তান্তিন চেরনেনকো
• ১৯৮৫–১৯৯১
মিখাইল গর্বাচেভ[ঝ]
রাষ্ট্রপ্রধান 
• ১৯২২–১৯৪৬ (প্রথম)
মিখাইল কালিনিন
• ১৯৮৮–১৯৯১ (শেষ)
মিখাইল গর্বাচেভ
সরকার প্রধান 
• ১৯১৮–১৯২৪ (প্রথম)
ভ্লাদিমির লেনিন
• ১৯৯১ (শেষ)
ইভান সিলায়েভ
আইন-সভামহত্তম সোভিয়েত
ঐক্যের সোভিয়েত
জাতীয়তার সোভিয়েত
ঐতিহাসিক যুগপ্রথম বিশ্বযুদ্ধ, আন্তঃযুদ্ধ যুগ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধস্নায়ুযুদ্ধ
১১ নভেম্বর ১৯১৮
২৬শে ডিসেম্বর ১৯৯১[১]
আয়তন
১৯৯১২,২৪,০২,২০০ বর্গকিলোমিটার (৮৬,৪৯,৫০০ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা
• ১৯৯১
২৯,৩০,৪৭,৫৭১
মুদ্রাসোভিয়েত রুবল (руб) (SUR)
সময় অঞ্চলইউটিসি+২ হতে +১৩
কলিং কোড
ইন্টারনেট টিএলডি.su
পূর্বসূরী
উত্তরসূরী
১৯১৮:
রুশ সাম্রাজ্য
অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি
Second Polish Republic
১৯৪৫:
নাৎসি জার্মানি
জাপান সাম্রাজ্য
১৫টি প্রজাতন্ত্র:
১৯৯০:
লিথুনিয়া
১৯৯১:
রাশিয়া
জর্জিয়া
ইউক্রেন
মলদোভা
বেলারুশ
আর্মেনিয়া
আজারবাইজান
কাজাখস্তান
উজবেকিস্তান
তুর্কমেনিস্তান
কিরগিজিস্তান
তাজিকিস্তান
এস্তোনিয়া
লাতভিয়া

১৯৪৫ সাল থেকে ১৯৯১ সালে ভেঙে যাবার আগ পর্যন্ত। সোভিয়েত ঐক্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী পরাশক্তি হিসেবে স্নায়ুযুদ্ধে লিপ্ত ছিল।[২] ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনে ১৫টি নতুন প্রজাতন্ত্র গঠিত হয়।

রুশ সাম্রাজ্যের পতন ঘটে ১৯১৭ সালে ভ্লাদিমির লেনিনের বলশেভিক পার্টির নেতৃত্বে অক্টোবর বিপ্লবের মাধ্যমে। এই বিপ্লব সারা বিশ্বে কমিউনিস্ট বিপ্লব হিসেবে পরিচিত ছিল। যার ফলশ্রুতিতে তাত্ত্বিক দর্শনের ভিত্তিতে প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র সোভিয়েত ইউনিয়নের সৃষ্টি হয় ১৯১৮ সালে। ১৯১৮ হতে ১৯২০ সাল পর্যন্ত গৃহযুদ্ধের কবলে পড়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন। ১৯৯১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তি ঘটে ও ১৫টি রাষ্ট্র গঠিত হয়।সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যে সকল দেশ হয়  .★আজারবাইজান, ★আর্মেনিয়া, ★ ইউক্রেন, ★এস্তোনিয়া, ★ উজবেকিস্তান, ★কাজাখস্তান, ★কিরগিজস্তান, ★ জর্জিয়া, ★তাজিকিস্তান, ★ তুর্কমেনিস্তান, ★ বেলারুশ, ★ মলদোভা, ★রাশিয়া, ★লাতভিয়া★ লিথুয়ানিয়াা

মূল নিবন্ধন :সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র

ভৌগোলিক পরিসীমা সম্পাদনা

ভৌগোলিক পরিসীমায় রুশ সাম্রাজ্যের পরবর্তী সোভিয়েত ঐক্য বিভিন্ন সময়ে পরিবর্তিত হয়েছে। তবে সর্বশেষ বৃদ্ধির পর সোভিয়েত ঐক্যের ব্যাপ্তি দাঁড়ায় বাল্টিক রাষ্ট্রসমূহ, পূর্ব পোল্যান্ড ও বেসার্বিয়া পর্যন্ত। এ অবস্থা ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে পর্যন্ত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পোল্যান্ডফিনল্যান্ডকে সোভিয়েত ঐক্য হতে বিচ্ছিন্ন করা হয়।

ইতিহাস সম্পাদনা

বলশেভিক বিপ্লব ও প্রারম্ভিক ইতিহাস (১৯১৭-২৭) সম্পাদনা

স্তালিনের একনায়কতন্ত্র (১৯২৭-৫৩) সম্পাদনা

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সম্পাদনা

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়ন রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিকভাবে শক্তিশালী ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪২ সালে নাৎসি জার্মানি সোভিয়েত ইউনিয়নে আক্রমণ করে। সোভিয়েত কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে এ সময় জার্মানরা সাড়ে ৩ লাখ সোভিয়েত লাল ফৌজকে হত্যা করে। এছাড়াও তাঁদের হাতে সাধারণ মানুষও মারা যায়। জার্মান হামলার মুখে জোসেফ স্তালিন ১৯৪১ সালের ৬ নভেম্বর জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। ২৯ বছরের শাসনামলে এটি ছিল জাতির উদ্দেশ্যে তার দ্বিতীয় ভাষণ। স্তালিন তাঁর ভাষণে দাবি করেন যে, “জার্মান হামলায় সোভিয়েত বাহিনীর সাড়ে ৩ লাখ সেনা নিহত হলেও ৪৫ লাখ জার্মান সেনাও নিহত হয়েছে এবং বিজয় আমাদের দ্বারপ্রান্তে।” তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা দাবি করেন এই সংখ্যা ছিল কল্পনাপ্রসূত। ১৯৪১ সালের ডিসেম্বর নাগাদ মস্কোর উপকণ্ঠে জার্মান সেনাদের অগ্রযাত্রা স্তব্ধ এবং তাঁদের অগ্রাভিযান থামিয়ে দেওয়ার আগ পর্যন্ত জার্মান সেনাদের বিরুদ্ধে লাল ফৌজের প্রতিরোধ অকার্যকর প্রমাণিত হয়। কিন্তু রাশিয়ার প্রচণ্ড ঠান্ডা আবহাওয়া জার্মান সেনাদের যুদ্ধের জন্য দুর্বিষহ হয়ে পড়ে। স্তালিনগ্রাদের যুদ্ধে জার্মানদের পরাজিত করতে সোভিয়েত মার্শাল গেওর্গি জুচেভের সঙ্গে স্তালিন একযোগে কলাকৌশল প্রণয়ন করেন। ১৯৪৮ সালের ২৭ জুলাই স্তালিনের ২২৭ নম্বর অর্ডারে তাঁর এই যুদ্ধ কৌশলের চিত্র ফুটে উঠে।[২]

স্নায়ুযুদ্ধ সম্পাদনা

যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে, সোভিয়েত ইউনিয়ন তার কঠোরভাবে কেন্দ্রীভূত নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখে তার অর্থনীতির পুনর্নির্মাণ ও প্রসারিত করে। এটি পূর্ব ইউরোপের বেশিরভাগ দেশের (যুগোস্লাভিয়া এবং পরে আলবেনিয়া ব্যতীত) কার্যকর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল, তাদের স্যাটেলাইট রাজ্যে পরিণত করেছিল। ইউএসএসআর তার স্যাটেলাইট রাজ্যগুলিকে একটি সামরিক জোটে আবদ্ধ করে, ওয়ারশ চুক্তি, ১৯৫৫ সালে, এবং একটি অর্থনৈতিক সংস্থা, কাউন্সিল ফর মিউচুয়াল ইকোনমিক অ্যাসিসট্যান্স বা কমকন, ১৯৪৯ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত ইউরোপীয় অর্থনৈতিক সম্প্রদায়ের (EEC) প্রতিপক্ষ। যদিও নামমাত্র একটি "প্রতিরক্ষামূলক" জোট, ওয়ারশ চুক্তির প্রাথমিক কাজ ছিল তার পূর্ব ইউরোপীয় উপগ্রহের উপর সোভিয়েত ইউনিয়নের আধিপত্য রক্ষা করা, চুক্তির একমাত্র প্রত্যক্ষ সামরিক পদক্ষেপ ছিল তাদের নিজেদের সদস্য রাষ্ট্রগুলিকে ভেঙে যাওয়া থেকে দূরে রাখতে আক্রমণ করা। ইউএসএসআর তার নিজস্ব পুনরুদ্ধারের দিকে মনোনিবেশ করেছিল, জার্মানির বেশিরভাগ শিল্প কারখানা দখল ও স্থানান্তর করেছিল এবং এটি সোভিয়েত-আধিপত্যাধীন যৌথ উদ্যোগ ব্যবহার করে পূর্ব জার্মানি, হাঙ্গেরি, রোমানিয়া এবং বুলগেরিয়া থেকে যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ আদায় করেছিল। এটি ইচ্ছাকৃতভাবে দেশের অনুকূলে পরিকল্পিত বাণিজ্য ব্যবস্থাও চালু করেছিল। মস্কো স্যাটেলাইট রাজ্যগুলি শাসনকারী কমিউনিস্ট পার্টিগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করত এবং তারা ক্রেমলিনের আদেশ অনুসরণ করত। ইতিহাসবিদ মার্ক ক্র্যামার উপসংহারে বলেছেন: "পূর্ব ইউরোপ থেকে সোভিয়েত ইউনিয়নে সম্পদের নিট বহিঃপ্রবাহ ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রথম দশকে প্রায় $১৫ বিলিয়ন থেকে $২০ বিলিয়ন, যা পশ্চিম ইউরোপে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া মোট সাহায্যের প্রায় সমান। মার্শাল প্ল্যানের অধীনে।" পরবর্তীতে, Comecon অবশেষে বিজয়ী চীনা কমিউনিস্ট পার্টিকে সহায়তা প্রদান করে এবং এর প্রভাব বিশ্বের অন্যত্র বৃদ্ধি পায়। এর উচ্চাকাঙ্ক্ষার ভয়ে, সোভিয়েত ইউনিয়নের যুদ্ধকালীন মিত্র যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর শত্রু হয়ে ওঠে। পরবর্তী স্নায়ুযুদ্ধে, দুই পক্ষ পরোক্ষভাবে প্রক্সি যুদ্ধে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।

খ্রুশ্চেভের শাসনামল (১৯৫৩-৬৪) ও বি-স্তালিনিকরণ সম্পাদনা

স্থবিরতার যুগ (১৯৬৪-৮৫) সম্পাদনা

গর্বাচেভের আমল (১৯৮৫-৯১) সম্পাদনা

সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙ্গন সম্পাদনা

১৯৮৯ সালে বার্লিন প্রাচীর ভেঙে যাওয়ার পর লৌহ পর্দা[ঠ] দুর্বল হয়ে পড়ে এবং পূর্ব ইউরোপের বহু দেশে সমাজতন্ত্রের পতন ঘটে। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন তখনও সমাজতন্ত্র টিকে ছিল। সোভিয়েত ইউনিয়নের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক তখন মিখাইল গর্বাচেভ। ১৯৯১ সালের আগস্টে তাঁর বিরুদ্ধে এক অভ্যুত্থানের চেষ্টা করে কট্টরপন্থি কমিউনিস্টরা। কিন্তু সেই অভ্যুত্থান ব্যর্থ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এরপর ১৫টি সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের কয়েকটিতে স্বাধীনতার আন্দোলন জোরদার হয়ে উঠে। ইউক্রেনসহ অনেক ছোট ছোট প্রজাতন্ত্রে স্বাধীনতার দাবিতে গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। ইউক্রেনের কমিউনিস্ট নেতা লিওনিদ ক্রাভচুক তখন সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন হতে চান। একই বছর ডিসেম্বরে বেলারুশে বৈঠকে বসেন তিনটি সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের নেতারা, তাঁরা হলেন রুশ সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের প্রধান বরিস ইয়েলৎসিন, ইউক্রেন সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের প্রধান লিওনিদ ক্রাভচুক এবং বেলারুশ সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের প্রধান স্তানিস্লাভ শুশকেভিচ। বৈঠকটি বেলোভেজ ঘোষণা নামে পরিচিত। শুশকেভিচ বৈঠকটি ডেকেছিলেন। ইউক্রেন ততো দিনে স্বাধীনতা ঘোষণা করে দিয়েছিলো। ১৯৯১ সালের ৮ ডিসেম্বর রাশিয়ার নেতা ইয়েলৎসিন, ইউক্রেনের নেতা ক্রাভচুক এবং বেলারুশের নেতা শুশকেভিচ পূর্ব বেলারুশের ভিসকুলি শহরে এক বিরাট খামারবাড়িতে মিলিত হন। বৈঠক শুরুর অল্প পরেই সোভিয়েত ইউনিয়ন বিলুপ্তির লক্ষ্যে চুক্তির প্রথম লাইনটির ব্যাপারে একমত হন সবাই। লাইনটি ছিল ‘ভূরাজনৈতিক বাস্তবতা এবং আন্তর্জাতিক আইনের বিষয় হিসেবে ইউনিয়ন অফ সোভিয়েত সোশ্যালিস্ট রিপাবলিক্স বা ইউএসএসআর-এর (USSR) কোনো অস্তিত্ব আর নেই।’ এই চুক্তির মধ্য দিয়ে সোভিয়েত নেতা মিখাইল গর্বাচেভ কার্যত অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েন এবং এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯১ সালের ২৫ ডিসেম্বর পদত্যাগ করেন। এর মধ্য দিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন হয়।[২]

ভাঙ্গন-পরবর্তী যুগ সম্পাদনা

১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যায় এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর সাথে স্নায়ুযুদ্ধ শেষ হয়ে যায়। এসময় ভূতপূর্ব সোভিয়েত ঐক্যের ১৫টি প্রজাতন্ত্রের মধ্যে ১১টি নিজেরা একটি শিথিল সমমেল সৃষ্টি করে, যেটা স্বাধীন রাষ্ট্রের রাষ্ট্রমণ্ডল নামে পরিচিত। তিনটি বাল্টিক রাষ্ট্র লিথুয়ানিয়া, লাতভিয়াএস্টোনিয়া এই সমমেলে যোগ দেয়নি। এই রাষ্ট্রমণ্ডলের মূল সদস্য থাকলেও তা থেকে তুর্কমেনিস্তানকে বর্তমানে সহযোগী সদস্য করা হয়েছে। তিনটি বাল্টিক রাষ্ট্র লিথুয়ানিয়া, লাটভিয়াএস্টোনিয়া ২০০৪ সালে ন্যাটোইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দেয়।[২]

আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা সম্পাদনা

সোভিয়েত অর্থনীতি ছিল কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত। ভূমি ও বাড়ির ব্যক্তিগত মালিকানা সোভিয়েত ইউনিয়নে নিষিদ্ধ ছিল। সোভিয়েত ইউনিয়ন পরিচালিত হতো কার্ল মার্ক্স ও ভ্লাদিমির লেনিনের দর্শনানুসারে। রাষ্ট্রের নাগরিকরা বিনামূল্যে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা লাভ করতো। পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন পর্যন্ত সবাই বিনামূল্যে শিক্ষা পেতো। পানি, গ্যাস, সেন্ট্রাল হিটিংসহ নাগরিক বিভিন্ন সুবিধায় রাষ্ট্র প্রচুর পরিমাণে ভর্তুকি প্রদান করায় নাগরিকদের এ খাতে তেমন কোনো খরচ করতে হতো না। পেশা ও চাকরির শর্তানুসারে বেতন নির্ধারিত হতো। ছাত্রদেরও রাষ্ট্র বেতন প্রদান করতো। সব চাকরিজীবীকে ডরমিটরিতে আবাসন প্রদান করা হতো। পরবর্তীতে সবাইকেই নিজস্ব বাসা প্রদান করা হতো। খুব অল্প কিছু বিশেষ দক্ষতা সম্পন্ন লোককে জীবনের শুরুতেই বড় অ্যাপার্টমেন্ট প্রদান করা হতো। মূলত মধ্যবিত্ত সম্প্রদায় ছিল সোভিয়েত সমাজের বৃহত্তর অংশ। অত্যন্ত ক্ষমতাবান গুটিকয়েক পার্টি সদস্যকে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বিশেষ সুবিধা প্রদান করা হতো।[২]

সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রসমূহের তালিকা সম্পাদনা

চারটি প্রজাতন্ত্র হতে সোভিয়েত ঐক্যের উৎপত্তি হলেও ১৯৫৬ হতে ১৯৯১ সালে ভেঙে যাবার আগে পর্যন্ত এই ইউনিয়নের প্রজাতন্ত্রের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ১৫ টিতে। এগুলো ছিল -

১. আর্মেনীয় সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র

২. আজারবাইজানি সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র

৩. বেলারুশীয় সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র

৪. এস্তোনীয় সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র

৫. জর্জীয় সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র

৬. কাজাখ সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র

৭. কিরগিজ সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র

৮. লাটভীয় সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র

৯. লিথুয়ানীয় সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র

১০. মলদোভীয় সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র

১১. রুশ সোভিয়েত যুক্তরাষ্ট্রীয় সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র

১২. তাজিক সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র

১৩. তুর্কমান সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র

১৪. ইউক্রেনীয় সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র

১৫. উজবেক সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র

ব্যুৎপত্তি সম্পাদনা

সোভিয়েত শব্দটি রাশিয়ান শব্দ সোভেট (রুশ: совет ) থেকে এসেছে। এর অর্থ "কাউন্সিল", "সমাবেশ", "পরামর্শ" ইত্যাদি।[ড]সোভিয়েতনিক শব্দের অর্থ "কাউন্সিলর"।

রাশিয়ান ইতিহাসে কিছু সংস্থাকে কাউন্সিল বলা হত (রুশ: совет)রাশিয়ান সাম্রাজ্যে ১৮১০ থেকে ১৯১৭ সাল পর্যন্ত কাজ করা স্টেট কাউন্সিলকে ১৯০৫ সালের বিদ্রোহের পর মন্ত্রী পরিষদ হিসাবে অভিহিত করা হচ্ছিল।

জর্জিয়ান অ্যাফেয়ারের সময়, ভ্লাদিমির লেনিনএই জাতি-রাষ্ট্রগুলিকে একটি বৃহত্তর ইউনিয়নের আধা-স্বাধীন অংশ হিসাবে রাশিয়ায় যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন যা তিনি প্রাথমিকভাবে সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের ইউনিয়ন হিসাবে নামকরণ করেছিলেন। [৩] স্ট্যালিন প্রাথমিকভাবে এই প্রস্তাবকে স মর্থন করেননি কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা গ্রহণ করেন। চুক্তিতে ইউনিয়নেের নাম পরিবর্তন করে ইউনিয়ন অফ সোভিয়েত সোশ্যালিস্ট রিপাবলিকস (USSR) নাম রাখা হয়েছিল। তবে সমস্ত প্রজাতন্ত্র সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত হিসাবে শুরু হয়েছিল এবং ১৯৩৬ সাল পর্যন্ত অন্য ধারায় পরিবর্তন হয়নি।

СССР (ল্যাটিন বর্ণমালায়: SSSR ) হল ইউএসএসআর-এর রাশিয়ান ভাষায় বর্ণিত কগনেটের সংক্ষিপ্ত রূপ। এটি সিরিলিক অক্ষরে লিখিত হয়েছে। সোভিয়েতরা এই সংক্ষিপ্ত রূপটি এত ঘন ঘন ব্যবহার করেছিল যে বিশ্বব্যাপী শ্রোতারা এর অর্থের সাথে পরিচিত হয়ে ওঠে। রাশিয়ান ভাষায় সোভিয়েত রাষ্ট্রের অন্যান্য সাধারণ সংক্ষিপ্ত নামগুলি ছিল Советский Союз (লিপ্যন্তর: Sovetskiy Soyuz ) এবং Союз ССР (লিপ্যন্তর: Soyuz SSR ), যার আক্ষরিক অর্থ সোভিয়েত ইউনিয়ন

ইংরেজি ভাষার মিডিয়াতে, রাষ্ট্রটিকে সোভিয়েত ইউনিয়ন বা ইউএসএসআর হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছিল। অন্যান্য ইউরোপীয় ভাষায়, স্থানীয়ভাবে অনূদিত সংক্ষিপ্ত রূপগুলি সাধারণত ব্যবহৃত হয়। যেমন, ফরাসি ভাষায় Union soviétique এবং URSS অথবা জার্মান ভাষায় Sowjetunion এবং UdSSR। ইংরেজি-ভাষী বিশ্বে, সোভিয়েত ইউনিয়নকে অনানুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়া এবং এর নাগরিকদের রাশিয়ান বলা হত। [৪] তবে এটি ভুল ছিল কারণ রাশিয়া ছিল ইউএসএসআর-এর একটি প্রজাতন্ত্র । [৫]রাশিয়া এবং এর ডেরিভেটিভ শব্দের ভাষাগত সমতুল্যের এই ধরনের অপপ্রয়োগ অন্যান্য ভাষায়ও ঘন ঘন ছিল।

ভূগোল সম্পাদনা

সোভিয়েত ইউনিয়ন ২,২৪,০২,২০০ বর্গকিলোমিটার (৮৬,৪৯,৫০০ মা) ) এর বেশি এলাকা জুড়ে অস্থিত ছিল এবং বিশ্বের বৃহত্তম দেশ ছিল, [৬] একটি মর্যাদা স্থান যার তার উত্তরসূরি রাষ্ট্র রাশিয়ার দ্বারা বজায় রয়েছে। [৭] এটি পৃথিবীর ভূমি পৃষ্ঠের ষষ্ঠাংশ জুড়ে ছিল এবং এর আকার উত্তর আমেরিকা মহাদেশের সাথে সমতুল্য ছিল। [৮] ইউরোপে এর পশ্চিম অংশটি দেশের এলাকার এক চতুর্থাংশের জন্য দায়ী এবং এটি ছিল সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক কেন্দ্র ছিলো। এটি এশিয়ার পূর্ব অংশটি পূর্বে প্রশান্ত মহাসাগর এবং দক্ষিণে আফগানিস্তান পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল এবং মধ্য এশিয়ার কিছু এলাকা ছাড়া জনসংখ্যা অনেক কম ছিল। এটি ১০০০০ কিলোমিটার (৬২০০ মাইল) সময় অঞ্চল জুড়ে পূর্ব থেকে পশ্চিম, এবং ৭,২০০ কিলোমিটার (৪,৫০০ মা) উত্তর থেকে দক্ষিণ। এর পাঁচটি জলবায়ু অঞ্চল ছিল: তুন্দ্রা, তৈগা, স্তেপ, মরুভূমি এবং পর্বত।

সোভিয়েত ইউনিয়ন, রাশিয়ার মতোই, বিশ্বের দীর্ঘতম সীমান্ত ছিল এবং যার পরিমাপ ছিল ৬০,০০০ কিলোমিটার (৩৭,০০০ মা), বা পৃথিবীর পরিধি। এর দুই-তৃতীয়াংশ ছিল একটি উপকূলরেখা । দেশটি সীমান্তবর্তী (১৯৪৫ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত): নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, বাল্টিক সাগর, পোল্যান্ড, চেকোস্লোভাকিয়া, হাঙ্গেরি, রোমানিয়া, কৃষ্ণ সাগর, তুরস্ক, ইরান, কাস্পিয়ান সাগর, আফগানিস্তান, চীন, মঙ্গোলিয়া এবং উত্তর কোরিয়াবেরিং প্রণালী দেশটিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আলাদা করেছে, যখন লা পেরাউস প্রণালী এটিকে জাপান থেকে পৃথক করেছে।

সোভিয়েত ইউনিয়নের সর্বোচ্চ পর্বত ছিল তাজিক এসএসআর -এর কমিউনিজম পিক (বর্তমানে ইসমাইল সোমনি পিক ) ৭,৪৯৫ মিটার (২৪,৫৯০ ফু) । এটি বিশ্বের বৃহত্তম হ্রদের অধিকাংশ অন্তর্ভুক্ত; কাস্পিয়ান সাগর ( ইরানের সাথে ভাগ হয়), এবং রাশিয়ার বৈকাল হ্রদ, বিশ্বের বৃহত্তম এবং গভীরতম স্বাদু পানির হ্রদ।

টীকা সম্পাদনা

  1. আওয়ামী শ্রমিক লীগের স্লোগান, যেটি সোভিয়েত নীতিবাক্যের বাংলা ভাবানুবাদ।
  2. সোভিয়েত ইউনিয়নের কোনো রাষ্ট্রধর্ম ছিল না আর সোভিয়েত ইউনিয়নের কমিউনিস্ট পার্টি ছিল বস্তুবাদী মতাদর্শের দল। তাই নাস্তিকতাকেই সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করা হতো।
  3. As Chairman of the Council of People's Commissars.
  4. As General Secretary of the Communist Party and Chairman of the Council of People's Commissars (then the Council of Ministers).
  5. As Chairman of the Council of Ministers.
  6. March–September.
  7. As First Secretary of the Communist Party.
  8. As General Secretary of the Communist Party.
  9. As General Secretary of the Communist Party and President.
  10. রুশ: Союз Советских Социалистических Республик সয়ুজ় সভেৎস্কিখ়্ সৎসিয়ালিস্তিচেস্কিখ়্ রেস্পুব্লিক্
  11. রুশ: Сове́тский Сою́з সভেৎস্কিয়্ সয়ুজ়্
  12. ইউরোপের মাঝ বরাবর একটি কাল্পনিক প্রাচীর যার পূর্ব পাশে ছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন ও এর মিত্ররা এবং পশ্চিম পাশে ছিল যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্ররা।
  13. ইউক্রেনীয়: рада (rada); পোলীয়: rada; বেলারুশীয়: савет/рада; উজবেক: совет; কাজাখ: совет/кеңес; জর্জীয়: საბჭოთა; আজারবাইজানি: совет; লিথুয়ানিয়ান: taryba; রোমানীয়: soviet (Moldovan Cyrillic: совиет); লাটভিয়ান: padome; কিরগিজ: совет; তাজিক: шӯравӣ/совет; আর্মেনীয়: խորհուրդ/սովետ; তুর্কমেনীয়: совет; এস্তোনীয়: nõukogu.

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. ঘোষণা নং ১৪২-হ (রুশ)
  2. বাংলাদেশ প্রতিদিন, বৃহস্পতিবার, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২০ মাঘ।
  3. [[#CITEREF|]].
  4. "Russian"Oxford University Press। ১০ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ মে ২০১৭historical (in general use) a national of the former Soviet Union. 
  5. Merriam-Webster 
  6. Television documentary from CC&C Ideacom Production, "Apocalypse Never-Ending War 1918–1926", part 2, aired at Danish DR K on 22 October 2018.
  7. Russia – Encyclopædia Britannica ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৬ এপ্রিল ২০০৮ তারিখে. Britannica.com (27 April 2010). Retrieved on 29 July 2013.
  8. Virginia Thompson। "The Former Soviet Union: Physical Geography" (পিডিএফ)। Towson University: Department of Geography & Environmental Planning। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০১৬ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা