হায়দ্রাবাদ রাজ্য

ব্রিটিশ ভারতের রাজকীয় রাজ্য

হায়দ্রাবাদ রাজ্য বা হায়দ্রাবাদ দেকান ছিল একটি ভারতীয় দেশীয় রাজ্য যা ভারতের দক্ষিণ-মধ্য অঞ্চলে অবস্থিত এবং এর রাজধানী ছিল হায়দরাবাদ[] এটি বর্তমান তেলেঙ্গানা রাজ্য, কর্ণাটকমহারাষ্ট্রের মাঝে বিভক্ত। ১৭২৪ সাল থেকে ১৮৫৭ সাল পর্যন্ত রাজ্যটি নিজামদের শাসনাধীনে ছিল এবং তারা প্রাথমিকভাবে মুঘল সাম্রাজ্যের দেকান বা দাক্ষিণাত্যের ভাইসরয় ছিল। হায়দ্রাবাদ ক্রমবর্ধমান জোট চুক্তি স্বাক্ষর করে ব্রিটিশদের অধীনে প্রথম দেশীয় রাজ্যে পরিণত হয়। ১৯০১ সালে ব্রিটিশ শাসনামলে এই রাজ্যের গড় আয় ছিল ৪৭১,০০,০০০ রুপি, ফলে রাজ্যটি ছিল ভারতের সবচেয়ে ধনী দেশীয় রাজ্য।[] হায়দ্রাবাদ বা দেকানের আদি বাসিন্দারা জাতিবর্ণ নির্বিশেষে মুলকি (দেশবাসী ) নামে পরিচিত ছিল। এটি আজও ব্যবহৃত হয়।[১০][১১]

হায়দ্রাবাদ রাজ্য

ডেকান
১৭২৪–১৯৪৮
হায়দ্রাবাদ রাজ্যের জাতীয় পতাকা
পতাকা
হায়দ্রাবাদ রাজ্যের জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশা
জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশা
নীতিবাক্য: "আল আযমাতু লিল্লাহ"
(সকল শ্রেষ্ঠত্ব আল্লাহর)

"ইয়া উসমান"
(হে উসমান)
হায়দ্রাবাদ (গাঢ় সবুজ) বেরার প্রদেশ (হালকা সবুজ),১৮৫৩ থেকে ১৯০৩ পর্যন্ত নিজামের অধীনস্থ ছিল
হায়দ্রাবাদ (গাঢ় সবুজ) বেরার প্রদেশ (হালকা সবুজ),১৮৫৩ থেকে ১৯০৩ পর্যন্ত নিজামের অধীনস্থ ছিল
অবস্থামুঘল অধীন (১৭২৪–১৭৯৮)
ব্রিটিশ ভারত এর দেশীয় রাজ্য (১৭৯৮–১৯৪৭)
স্বাধীন রাষ্ট্র (১৯৪৭–১৯৪৮)
রাজধানীআওরঙ্গবাদ (১৭২৪–১৭৬৩)
হায়দ্রাবাদ (১৭৬৩–১৯৪৮)
প্রচলিত ভাষাতেলগু (৪৮.২%)
উর্দু (১০.৩%,[])
মারাঠি (২৬.৪%)
কন্নড় (১২.৩%)[]
ধর্ম
হিন্দুধর্ম (৮১%)
ইসলাম (১৩% এবং রাষ্ট্র ধর্ম)[]
খ্রিস্টান ও অন্যান্য (৬%)[]
সরকারমুঘল অধীন (১৭২৪–১৭৯৮)[][]
দেশীয় রাজ্য(১৭৯৮–১৯৫০)
নিজাম 
• ১৭২০–৪৮
কামারউদ্দিন খান (১ম)
• ১৯১১–৫৬
উসমান আলি খান (শেষ, রাজপ্রমুখ ১৯৫০ থেকে)
প্রধানমন্ত্রী 
• ১৭২৪–১৭৩০
ইয়াজ খান (১ম)
• ১৯৪৭–৪৮
মির লাইক আলি (শেষ)
ঐতিহাসিক যুগ.
• প্রতিষ্ঠা
১৭২৪
১৯৪৬
১৮ সেপ্টেম্বর ১৯৪৮
১ নভেম্বর ১৯৫৬
আয়তন
১৯৪১২,১৫,৩৩৯ বর্গকিলোমিটার (৮৩,১৪৩ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা
• ১৯৪১
১৬,৩৪০,০০০
মুদ্রাহায়দ্রাবাদি রূপি
পূর্বসূরী
উত্তরসূরী
মুঘল সাম্রাজ্য
মারাঠা সাম্রাজ্য
হায়দ্রাবাদ (১৯৪৮–৫৬)
বর্তমানে যার অংশতেলেঙ্গানা
অন্ধ্র প্রদেশ
মহারাষ্ট্র
কর্ণাটক

ব্রিটিশ রাজের শেষসময়ে রাজবংশটি নিজেকে স্বাধীন রাজতন্ত্র হিসাবে ঘোষণা করে। ভারত বিভাগের পরেই হায়দ্রাবাদ ভারতের সাথে স্থবির চুক্তি স্বাক্ষর করে। [১২] রাজ্যে ভারতীয় সেনা মোতায়েন বাদে পূর্ববর্তী সমস্ত ব্যবস্থা চালিয়ে যায়। ভারতীয় ইউনিয়নের মাঝ বরাবর রাজ্যটির অবস্থান হওয়া সেই সাথে তার বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের কারণে ভারতের সাম্রাজ্যবাদী মনোভাব ১৯৪৮ সালে এটি দখলের সমস্ত বন্দোবস্ত করে। পরবর্তীকালে ৭ম নিজাম মীর ওসমান আলী খান স্বাক্ষরিত দলিলের মাধ্যমে এটি ভারতে যোগদান করে।[১৩]

হায়দরাবাদের রাষ্ট্রীয় প্রতীক
রাষ্ট্র ভাষা উর্দু
রাষ্ট্রীয় প্রাণী কৃষ্ণসার
রাষ্ট্রীয় পাখি ভারতীয় বেলন
রাষ্ট্রীয় গাছ নিম গাছ
রাষ্ট্রীয় ফুল ব্লু ওয়াটার লিলি
১৯২৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ওসমান আলী খান, আসিফ জাহ সপ্তম বিশ্বের সবচেয় ধনাঢ্য ব্যক্তি নামে টাইমের একটি কভার স্টোরি।
হায়দরাবাদের পাঁচ টাকার নোট
মহারাজা স্যার কিশেন পারশাদ, যিনি ১৯০১-১৯১২ ও ১৯২৬-১৯৩৭ এর মধ্যে হায়দরাবাদ রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।

ইতিহাস

সম্পাদনা

প্রাথমিক ইতিহাস

সম্পাদনা

হায়দ্রাবাদ রাজ্যটি মীর কামার-উদ্দিন খান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন যিনি ১৭১৩ থেকে ১৭২১ সাল পর্যন্ত মুঘলদের অধীনে ডেকানের বা দাক্ষিণাত্যের গভর্নর ছিলেন। ১৭২৪ সালে তিনি আসফ জাহ (মুঘল সম্রাট মুহম্মদ শাহ কর্তৃক প্রদত্ত উপাধি) নিয়ে পুনরায় শাসন শুরু করেন। তাঁর অন্য উপাধি নিজাম উল-মুলক তাঁর পদমর্যাদা "হায়দ্রাবাদের নিজাম" পরিণত হয়েছিল। তাঁর শাসনামলের অবসানের পরে নিজাম মুঘলদের কাছ থেকে স্বাধীন হয়ে আসফ জাহি রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করে।[১৪]

মুঘল শক্তি পতনের শেষের দিকে, ডেকান অঞ্চলটি মারাঠা সাম্রাজ্যের উত্থানের স্বাক্ষী হয়। ১৭২০ এর দশকে নিজাম নিজেই মারাঠাদের দ্বারা বহু আক্রমণের শিকার হয় যার ফলস্বরূপ নিজাম মারাঠাদেরকে নিয়মিত কর (চৌথ ) প্রদান করে। মারাঠাদের এবং নিজাম মধ্যে সংঘটিত প্রধান যুদ্ধসমূহ হলো পালাকেদের যুুদ্ধ, রাকশানুভের যুুদ্ধ এবং কারদার যুুদ্ধ।[১৫][১৬] প্রথম বাজিরাওের দাক্ষিণাত্য বিজয় এবং তাঁর দ্বারা চৌথ আরোপ করার পরে নিজাম পরিপূর্ণভাবে মারাঠাদের অনুগত হয়।[১৭]

১৭৭৮ সাল থেকে তাঁর আধিপত্যে একজন ব্রিটিশ বাসিন্দা এবং সৈন্য মোতায়েন করা হয়। ১৭৯৫ সালে, নিজাম মারাঠাদের কাছে তার নিজস্ব কিছু অঞ্চল হারায়। ব্রিটিশদের সহযোগী হিসাবে মহীশূর থেকে নিজামের আঞ্চলিক লাভগুলি, ব্রিটিশ সৈন্যদের রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয় হিসাবে ব্রিটিশদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।[১৪]

ব্রিটিশ অধিরাজত্ব বা কর্তৃত্ব

সম্পাদনা
 
১৮৯০ সালে হায়দরাবাদের প্রধান সড়ক

হায়দ্রাবাদ ডেকানের অঞ্চলের ২,১২,০০০ কিমি (৮২,০০০ মা) জুুুড়ে ছিলো। রাজ্যটি আসফ জাহি রাজবংশের প্রধান দ্বারা শাসিত হতো, যাকে নিজাম উপাধিতে ডাকা হতো। তবে ব্রিটিশরা তাকে "হিজ এক্সালটেড হাইনেস" বলে সম্বোধন করতো। সর্বশেষ নিজাম, মীর ওসমান আলী খান ১৯৩০ এর দশকে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ছিলেন।[১৮]

১৭৯৮ সালে নিজাম আলি খান (আসফ জাহ) একটি চুক্তি করতে বাধ্য হন যা হায়দ্রাবাদকে ব্রিটিশ সুরক্ষায় রাখে। তিনিই প্রথম ভারতীয় রাজপুত্র যিনি এই জাতীয় চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন। (ফলস্বরূপ, হায়দ্রাবাদের শাসক ব্রিটিশ ভারতের আমলে ২৩-তোপ সেলামি রাজ্যের শাসক ছিলেন)। অপশাসনের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপের অধিকার বজায় ছিল।[১৪]

দ্বিতীয় আসফ জাহের অধীনে হায়দ্রাবাদ দ্বিতীয় এবং তৃতীয় মারাঠা যুদ্ধে (১৮০৩-০৫, ১৮১৭-১৯) অ্যাংলো-মহিসুর যুদ্ধে ব্রিটিশ মিত্র ছিল এবং ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহের সময় ব্রিটিশদের অনুগত ছিল।[১৪] [১৯]

তাঁর পুত্র আসফ জাহ তৃতীয় মীর আকবর আলী খান (সিকান্দার জাহ নামে পরিচিত) ১৮০৩ থেকে ১৮২৯ সাল পর্যন্ত রাজত্ব করেন। তাঁর শাসনকালে হায়দ্রাবাদে ব্রিটিশ সেনানিবাস নির্মিত হয় এবং এই অঞ্চলটির নামকরণ করা হয় সেকান্দারবাদ।[২০] ব্রিটিশ রেসিডেন্ট কোটি তাঁর রাজত্বকালে জেমস অ্যাকিলিস কির্কপ্যাট্রিক দ্বারা নির্মিত হয়েছিল।[২১]

সিকান্দার জাহের পরে চতুর্থ আসফ জাহ ক্ষমতায় আসে, যিনি ১৮২৯ থেকে ১৮৫৭ সাল পর্যন্ত শাসন করেন এবং তাঁর পুত্র পঞ্চম আসফ জাহা তার স্থলাভিষিক্ত হন।[১৯]

পঞ্চম আসফ জাহ

সম্পাদনা

পঞ্চম আসফ জাহ এর রাজত্বকাল ১৮৫৭ থেকে ১৮৬৯ সাল পর্যন্ত তার প্রধানমন্ত্রী সালার জং দ্বারা সংস্কারের জন্য বিশেষভাবে চিহ্নিত। এই সময়ের আগে, প্রশাসনের কোনো নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতি ছিল না এবং দায়িত্বগুলি দিওয়ান (প্রধানমন্ত্রী) এর হাতে ছিল এবং ফলে দুর্নীতি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল।[১৯]

১৮৬৭ সালে, রাজ্যকে পাঁচটি বিভাগে সতেরোটি জেলা, এবং সুবেদারকে (গভর্নর) পাঁচটি বিভাগ এবং তালুকদারতহসিলদার কে জেলায় নিযুক্ত করেন। বিচারিক, গণপূর্ত, চিকিৎসা, শিক্ষা, পৌর এবং পুলিশ বিভাগগুলি পুনরায় সংগঠিত করেন।[২২] ১৮৬৮ সালে বিচারিক, রাজস্ব, পুলিশ এবং বিবিধ বিভাগের জন্য সদর-ই-মহামস (সহকারী মন্ত্রী) নিযুক্ত করেন। [২২]

ষষ্ঠ আসফ জাহ ষষ্ঠ

সম্পাদনা

আসফ জাহ মীর মাহবুব আলী খান তিন বছর বয়সে নিজাম হন। তাঁর বংশধর ছিলেন প্রথম সালার জঙ্গ এবং তৃতীয় শামস-উল-উমরা। তিনি ১৭ বছর বয়সে পূর্ণ শাসন ক্ষমতা গ্রহণ করেন এবং ১৯১১ সালে তাঁর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি রাজত্ব করেন।[২৩] [২৪] [২৫]

হায়দ্রাবাদ রাজ্যকে বাকি ব্রিটিশ ভারতের সাথে সংযুক্ত করার জন্যও তাঁর শাসনামলে নিজাম রাজ্য রেলপথ প্রতিষ্ঠা করেন। এটি সদর দফতর ছিল সেকান্দারবাদ রেলওয়ে স্টেশন।[১২][২৬] রেলপথ হায়দ্রাবাদে শিল্পের সূচনা করে এবং হায়দ্রাবাদ শহরে কারখানাগুলি নির্মিত হয়। [২২] [২৫]

তার শাসনামলে, গ্রেট মুশি বন্যা (১৯০৮) হায়দ্রাবাদ শহরে আঘাত হানে, যার ফলে আনুমানিক ৫০,০০০ মানুষ মারা যায়। নিজাম তার সমস্ত প্রাসাদগুলি জনগণের আশ্রয়ের জন্য খুলে দেন। [২২] [২৭] [২৫]

তিনি সতীদাহও বিলুপ্ত করেন যেখানে মহিলারা একটি রাজকীয় ফরমান জারি করে স্বামীর জ্বলন্ত চক্কর বা চিতায় ঝাঁপিয়ে পড়ত।[২৮]

সপ্তম আসফ জাহ

সম্পাদনা

হায়দ্রাবাদের শেষ নিজাম মীর ওসমান আলী খান ১৯১১ সাল থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত রাজ্য শাসন করেন। তাঁকে "ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বিশ্বস্ত মিত্র" উপাধি দেওয়া হয়েছিল। হায়দ্রাবাদকে এই সময়ের মধ্যে পশ্চাৎপদ, তবে শান্তিপূর্ণ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। [১৪] নিজামের শাসনামলে অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিকভাবে হায়দ্রাবাদের বিকাশ ঘটে। হায়দ্রাবাদকে স্বাধীন জাতি হিসাবে রাখার জন্য নিজাম পশ্চিমের মারাঠাদের প্রতিরোধ করার জন্য রাজ্যে তার বাহিনী রাখার জন্য ব্রিটিশ ভারতের সাথে আলোচনা করেন। নিজাম সরকার দেশ গঠনের অংশ হিসাবে হায়দ্রাবাদের উন্নয়নের জন্য বিশ্বজুড়ে টেকনোক্র্যাটদের আমন্ত্রণ জানান। এটির নিজস্ব বৈদেশিক নীতি রয়েছে এবং ব্রিটিশ ভারতের বাইরের অনেক দেশের সাথে বৈদেশিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিল। নিজাম সরকার নতুন রাজধানী নয়াদিল্লিতেও দূতাবাস স্থাপন করেছিলেন। হায়দ্রাবাদ একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্রিটিশ সহযোগী হওয়ায় এটি ব্রিটিশ ভারতের সাথে কাজ করার জন্য তার দূতাবাস হিসাবে 'হায়দ্রাবাদ হাউস' ডিজাইন ও নির্মাণের জন্য স্যার এডওয়ার্ড লুটিয়েনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। উসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজ্য জুড়ে বেশ কয়েকটি স্কুল-কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। অনেক লেখক, কবি, বুদ্ধিজীবী এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা ( ফানি বাদায়ুনি, দাগহ দেহলভী, জোশ মালিহাবদী, আলী হায়দার তাবাতাবাই, শিবলি নোমানী, নবাব মহসিন-উল-মুলক, মির্জা ইসমাইল ) আসফ জাহ সপ্তম এবং তাঁর পিতা পূর্বসূরীর আসফ জাহ ষষ্ঠের রাজত্বকালে ভারতের সমস্ত অঞ্চল থেকে হায়দরাবাদে পাড়ি জমান। উপর্যুক্ত ব্যক্তিগণ ব্যতীত, অনেক টেকনোক্র্যাটরা হায়দরাবাদকে তার সমস্ত টেকসই আধুনিক অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য সরকারের আমন্ত্রণে হায়দরাবাদে পাড়ি জমান, যা এখনও তার সমস্ত উজ্জ্বলতায় হায়দ্রাবাদ মহানগরকে উপস্থাপন করে চলেছে। এর প্রাথমিক পরিকল্পনার ফলে ইদানীং হায়দ্রাবাদ বিশেষত সফ্টওয়্যার শিল্পে সর্বাধিক বিকশিত শহর হয়ে উঠেছে এবং বাইরের বিশ্বের সাথে সুসংযুক্ত।

নিজাম হায়দ্রাবাদ স্টেট ব্যাংকও প্রতিষ্ঠা করেন। হায়দ্রাবাদ ব্রিটিশ ভারত উপমহাদেশের একমাত্র স্বাধীন রাষ্ট্র ছিল যার নিজস্ব মুদ্রা ছিল হায়দ্রাবাদি রুপী।[২৯] বেগমপেট বিমানবন্দরটি ১৯৩০-এর দশকে নিজাম কর্তৃক হায়দ্রাবাদ এরো ক্লাব গঠনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে এটি ব্রিটিশ ভারতের প্রথম বিমান সংস্থা ডেকান এয়ারওয়েজের অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসাবে ব্যবহৃত হতো। টার্মিনাল বিল্ডিংটি ১৯৩৭ সালে নির্মিত হয়েছিল। [৩০]

বড় ধরনের বন্যা, প্রতিরোধ করার জন্য নিজাম দুই হ্রদ ওসমান সাগর এবং হিমায়েত সাগর নির্মাণ করেন। এই সময়কালে ওসমানিয়া জেনারেল হাসপাতাল, জুবিলি হল, স্টেট লাইব্রেরি ( তৎকালে আসিফিয়া কুতুবখানা নামে পরিচিত) এবং পাবলিক গার্ডেন (তৎকালীন বাগ-ই -আম নামে পরিচিত) নির্মিত হয়। [৩১][৩২]

ভারতীয় স্বাধীনতার পরে (১৯৪৭–৮৪)

সম্পাদনা

১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনতা লাভ করে এবং পাকিস্তান অস্তিত্ব লাভ করে। ব্রিটিশরা দেশীয় রাজ্যের স্থানীয় শাসকদের ভারত বা পাকিস্তানে যোগ দিতে বা স্বতন্ত্র থাকার বিষয়ে মনস্থির করতে বলে। ১৯৪৭ সালের ১১ ই জুন নিজাম গণপরিষদে পাকিস্তান বা ভারতের যে কোনও একটিতেও অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা দিয়েছিলেন।

তবে নিজামরা মূলত হিন্দু জনগোষ্ঠীর উপরে মুসলিম শাসন করত। [১৪] ভারত জোর দিয়েছিল যে বেশিরভাগ বাসিন্দা ভারতে যোগ দিতে চায়। [৩৩]

নিজাম দুর্বল অবস্থানে ছিল কারণ তার সেনাবাহিনীর সংখ্যা ছিল মাত্র ২৪,০০০, যাদের মধ্যে প্রায় ৬,০০০ পুরোপুরি প্রশিক্ষিত এবং সজ্জিত ছিল। [৩৪]

২১ আগস্ট ১৯৪৮ সালে হায়দ্রাবাদের পররাষ্ট্র বিভাগের মহাসচিব জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতিকে জাতিসংঘের চার্টার ধারা ৩৫ (২) অধীনে অনুরোধ করেন যে," আন্তর্জাতিক আইন ও ন্যায়বিচারের সাথে মিল রেখে যদি না বসতি স্থাপন করা হয় তবে আন্তর্জাতিক শান্তি ও সুরক্ষা রক্ষণাবেক্ষণ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে "। [৩৫]

৪ সেপ্টেম্বর হায়দ্রাবাদের প্রধানমন্ত্রী মীর লাইক আলী হায়দ্রাবাদ বিধানসভায় ঘোষণা করেছিলেন যে মইন নওয়াজ জংয়ের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল লেক সাকসেস উদ্দেশ্যে রওনা হতে চলেছে। [৩৪] নিজাম ব্রিটিশ শ্রম সরকার এবং রাজার কাছে হায়দ্রাবাদকে "তাত্ক্ষণিক হস্তক্ষেপ" দ্বারা তাদের প্রতিশ্রুতি সম্পাদনের জন্য আবেদন করেন,তবে ব্যর্থ হোন। হায়দ্রাবাদের কেবল উইনস্টন চার্চিল এবং ব্রিটিশ সংরক্ষণশীলদের সমর্থন ছিল। [৩৪]

 
(বাম থেকে ডানে): প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু, ষষ্ঠ নিজাম এবং সেনাবাহিনী প্রধান জয়ন্ত নাথ চৌধুরী হায়দরাবাদের ভারতে যোগদানের পরে

১৯৪৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ভোর চারটায় ভারতের হায়দ্রাবাদ অভিযান, ভারতীয় সেনাবাহিনীর কোড-নাম " অপারেশন পোলো " শুরু হয়েছিল। সমস্ত দিক থেকে হায়দরাবাদ আক্রমণ করে ভারতীয় সেনারা। ১৯৪৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর হায়দরাবাদের বিদেশ বিষয়ক বিভাগের সেক্রেটারি জেনারেল একটি কেব্লগ্রামে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে জানিয়ে দেয় যে হায়দরাবাদে ভারতীয় বাহিনী আক্রমণ করছে এবং গোলযোগ শুরু হয়েগেছে। নিরাপত্তা পরিষদ ১৬ সেপ্টেম্বর প্যারিসে এটি নজরে নিয়েছিল। হায়দরাবাদের প্রতিনিধি জাতিসংঘ সনদের ৭ম অধ্যায়ের অধীনে নিরাপত্তা পরিষদকে তাত্ক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। হায়দরাবাদ প্রতিনিধি হস্তক্ষেপের জন্য ভারতের অজুহাতে সাড়া দিয়েছিল যে দু'দেশের মধ্যে বিদ্যমান চুক্তি স্পষ্টভাবে জানিয়েছিল যে এর কোনও কিছুই ভারতকে অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা করার জন্য সেনা পাঠানোর অধিকার দেয় না। [৩৬]

১৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৫ টায় নিজামের সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণ করে। এরপরে ভারত হায়দ্রাবাদ রাজ্যকে অন্তর্ভুক্ত করে এবং নিজামদের শাসনের অবসান ঘটে। [৩৪]

১৯৪৮–৫৬

সম্পাদনা

হায়দ্রাবাদ রাজ্যকে ভারতে অন্তর্ভুক্ত করার পরে এমকে ভেলোদিকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিযুক্ত হন এবং মীর ওসমান আলী খান ২ জানুয়ারি ১৯৫০ সালে রাজপ্রমুখ হন। তিনি ভারত সরকারের সিনিয়র বেসামরিক কর্মচারী ছিলেন। তিনি মাদ্রাজ রাজ্য এবং বোম্বাই রাজ্যের আমলাদের সাহায্য নিয়ে এই রাজ্য পরিচালনা করেন। [৩৭]

১৯৫২ বিধানসভা নির্বাচনে ড.বুর্গুলা রামকৃষ্ণ রাও হায়দ্রাবাদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন। এই সময়ে মাদ্রাজ রাজ্য থেকে আমলাদের ফেরত পাঠাতে এবং 'মুলকি-বিধি' (শুধুমাত্র স্থানীয়দের জন্য স্থানীয় চাকরি) কার্যকরভাবে প্রয়োগ করার জন্য কিছু তেলেঙ্গানীয়দের দ্বারা সহিংস আন্দোলন হয়েছিল, যা ১৯১৯ সাল থেকে হায়দ্রাবাদ রাজ্য আইনের অংশ ছিল। [৩৮]

বিলুপ্তি

সম্পাদনা

ভাষাতত্ত্বের ভিত্তিতে ভারতীয় রাজ্যগুলির পুনর্গঠনের সময় ১৯৫৬ সালে, হায়দ্রাবাদ রাজ্যটি অন্ধ্র প্রদেশ এবং বোম্বাই রাজ্যের মধ্যে বিভক্ত হয় (পরবর্তীকালে ১৯৬০ সালে মহারাষ্ট্র এবং গুজরাটে রাজ্যতে বিভক্ত হয়ে হায়দ্রাবাদের মূল অংশগুলি মহারাষ্ট্র রাজ্যের অংশে পরিণত হয়) এবং কর্ণাটক[৩৯] রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়।

সরকার এবং রাজনীতি

সম্পাদনা

উইলফ্রেড ক্যান্টওয়েল স্মিথ বলেছেন যে হায়দ্রাবাদ এমন একটি অঞ্চল যেখানে মধ্যযুগীয় মুসলিম শাসনের রাজনৈতিক ও সামাজিক কাঠামো আধুনিক যুগেও কমবেশি অক্ষত রক্ষিত ছিল। [৪০] সামাজিক শৃঙ্খলার শীর্ষে ছিলেন নিজাম, যিনি রাজ্যের ৫ মিলিয়ন একর (জমির ১০%) মাহয়েছিলেং তাকে উপার করন Rs বছরে ২৫ মিলিয়ন ডলকা। রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে তাকে পাঁচ মিলিয়ন ডলার মঞ্জুর করা হয়েছিল। সর্বশেষ নিজামকে বিশ্বের ধনী ব্যক্তি হিসাবে খ্যাতি দেওয়া হয়েছিল। [৪১] ১১০০ সামন্ত প্রভুর অভিজাত লোকের অধীনে, ৪ মিলিয়ন কৃষক সহ তিনি রাষ্ট্রের আরও ৩০% জমির মালিক ছিলেন। সমস্ত বড় বড় উদ্যোগে এই  % বা তার বেশি মূলধনের মালিকানা ছিল, যাতে নিজাম আরও মুনাফা অর্জন করতে এবং তাদের বিষয়গুলি নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম করে। [৪০]

সামাজিক কাঠামোর পরবর্তী ছিল প্রশাসনিক এবং অফিসিয়াল শ্রেণি, প্রায় ১৫০০ কর্মকর্তা সমন্বয়ে। তাদের বেশিরভাগ রাজ্যের বাইরে থেকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। নিম্ন স্তরের সরকারি কর্মচারীরাও মূলত মুসলমান ছিলেন। কার্যকরভাবে, হায়দরাবাদের মুসলমানরা সামাজিক কাঠামোর একটি 'উচ্চ বর্ণের' প্রতিনিধিত্ব করতো। [৪০] []

সমস্ত ক্ষমতা নিজামের উপর ন্যস্ত ছিল। তিনি ১৮৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি কার্যনির্বাহী কাউন্সিল বা মন্ত্রিসভার সহায়তায় রায় দিয়েছিলেন, যার সদস্যদের তিনি নিয়োগ ও বরখাস্ত করতে স্বাধীন ছিলেন। নিজাম সরকার প্রশাসনিক পদগুলির জন্য উত্তর ভারতীয় হিন্দু কায়স্থ জাত থেকে প্রচুর নিয়োগ করেছিল।[৪২] এখানে একটি অ্যাসেমব্লিও ছিল, যার বেশিরভাগ ভূমিকা উপদেষ্টাকেন্দ্রিক ছিল। এর অর্ধশতাধিক সদস্য নিজাম কর্তৃক নিযুক্ত হন এবং বাকী সদস্যরা সাবধানতার সাথে সীমাবদ্ধ ভোটাধিকার থেকে নির্বাচিত হন। বিধানসভায় হিন্দু, পার্সী, খ্রিস্টান এবং বঞ্চিত শ্রেণীর প্রতিনিধি ছিলেন। তাদের সংখ্যার কারণে তাদের প্রভাব সীমিত ছিল।[৪০][৩৪]

রাজ্য সরকারেরও বিপুল সংখ্যক বহিরাগত ছিল (যাকে অ-মুলকিস বলা হতো) - তাদের মধ্যে ১৯৩৩ সালে নিজামের কার্যনির্বাহী কাউন্সিলের সমস্ত সদস্য সহ ৪৬,৮০০ জন ছিলেন। হিন্দু ও মুসলমানরা এই অনুশীলনের প্রতিবাদে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল যারা স্থানীয় কর্মচারীদের ছিনতাই করেছিল। তবে হিন্দু সদস্যরা 'দায়িত্বশীল সরকার' ইস্যু উত্থাপন করার পরে আন্দোলনটি হু হু করে উঠল, যাতে মুসলিম সদস্যদের পক্ষে কোনও আগ্রহী ছিল না এবং তাদের পদত্যাগের দিকে নিয়ে যায়।[৩৪]

রাজনৈতিক আন্দোলন

সম্পাদনা

১৯২০ অবধি হায়দরাবাদে কোনও ধরনের রাজনৈতিক সংগঠন ছিল না। ঐ বছরে, ব্রিটিশদের চাপের পরে নিজাম সাংবিধানিক সংস্কার তদন্তের জন্য একটি বিশেষ কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য একটি ফরমান জারি করেন। জনসাধারণের একাংশ এটি উৎসাহের সাথে স্বাগত জানায়, যারা হায়দরাবাদ রাজ্য সংস্কার সমিতি গঠন করেছিলেন। তবে নিজাম এবং বিশেষ কর্মকর্তা পরামর্শের জন্য তাদের সমস্ত দাবি উপেক্ষা করেছেন। এদিকে, নিজাম রাজ্যে খেলাফত আন্দোলনের পাশাপাশি সমস্ত রাজনৈতিক সভা এবং "রাজনৈতিক বহিরাগতদের" প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছিল। তা সত্ত্বেও, কিছু রাজনৈতিক তৎপরতা ঘটেছিল এবং হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে সহযোগিতা প্রত্যক্ষ করেছিল। তুরস্কে সুলতানি বিলোপ এবং গান্ধীর ব্রিটিশ ভারতে অসহযোগ আন্দোলন স্থগিতকরণের ফলে এই সহযোগিতার সময়টি শেষ হয়েছিল। [৩৪]

অন্ধ্র জন সংহম নামে একটি সংগঠন (পরবর্তীকালে অন্ধ্র মহাসভা নামকরণ করা হয়) ১৯১২ সালের নভেম্বর মাসে গঠিত হয়েছিল এবং তেলঙ্গানার জনগণকে রাজনৈতিক সচেতনতায় শিক্ষিত করার দিকে মনোনিবেশ করেছিল। মাদাপতি হনুমান্থ রাও, বরগুলা রামকৃষ্ণ রাও এবং এম নরসিং রাওয়ের মতো শীর্ষস্থানীয় সদস্যদের সাথে, এর ক্রিয়াকলাপগুলিতে বণিকদের সরকারি কর্মকর্তাদের বিনামূল্যে শ্রম এবং মজুরদেরকে বেগার (রাষ্ট্রের নির্দেশে নিখরচায় শ্রম প্রধান করা) ব্যবস্থাটি প্রতিরোধ করার জন্য উৎসাহ অন্তর্ভুক্ত ছিল। এর ক্রিয়াকলাপ দ্বারা সতর্ক হয়ে, নিজাম ১৯২৯ সালে একটি শক্তিশালী গ্যাগিং অর্ডারটি পাস করেন, এর যা ফলে আগে জনসভার পূর্বের অনুমতি গ্রহণের প্রয়োজন হয়। কিন্তু সংগঠনটি রায়টস রক্ষা, নারীর অধিকার, দেবদাসী ব্যবস্থা বাতিল ও পর্দা, দলিতদের উত্থাপন ইত্যাদির মতো সামাজিক ইস্যুতে সচল করে জেদ ধরেছিল এবং ১৯৩৭ সালে পুনরায় এটি রাজনীতিতে পরিণত হয়, দায়িত্বশীল সরকারের আহ্বান জানিয়ে এক প্রস্তাব পাস করে। এরপরেই, এটি মাঝারি – চরমপন্থা সৃষ্টি হয়। অন্ধ্র মহাসভার রাজনীতির দিকে অগ্রসর হওয়াও ১৯৩৭ সালে মারাঠওয়াদা এবং কর্ণাটকে একই জাতীয় আন্দোলনকে অনুপ্রাণিত করেছিল, যথাক্রমে মহারাষ্ট্র পরিষদ এবং কর্ণাটক পরিষদকে উত্থিত করেছিল। [৩৪]

আর্যসমাজ, একটি প্যান-ইন্ডিয়ান হিন্দু সংস্কারবাদী আন্দোলন যা একটি শক্তিশালী ধর্মীয় রূপান্তর কর্মসূচিতে জড়িত ছিল, ১৮৯০ এর দশকে বীড এবং ভীর জেলায় প্রথমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯২৩ সালের মধ্যে, এটি হায়দরাবাদ শহরে একটি শাখা চালু করে। ১৯২৪ সালে এর গণ-রূপান্তর কর্মসূচি উত্তেজনা বাড়িয়ে তোলে এবং হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে প্রথম সংঘর্ষ হয়। [৩৪] আর্য সমাজ হিন্দু মহাসভার সাথে জড়িত ছিল, অন্য একটি প্যান-ইন্ডিয়ান হিন্দু সংগঠন, যার রাজ্যেও শাখা ছিল। দুটি সংগঠনের প্রতিনিধিত্বকারী মুসলিমবিরোধী অনুভূতিগুলি মারাঠওয়াদায় বিশেষত প্রবল ছিল। [৪০]

১৯২৭ সালে প্রথম মুসলিম রাজনৈতিক সংগঠন মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসালিমিন (কাউন্সিল ফর ইউনিটি অফ মুসলিম, সংক্ষেপে ইত্তেহাদ ) গঠিত হয়। মুসলমানদের একত্রিত করার এবং শাসকের প্রতি আনুগত্য প্রকাশের উদ্দেশ্যগুলি উল্লেখ করা ছাড়া প্রথম দশকে এর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড খুব অল্পই ছিল। তবে এটি মুসলিম স্বার্থের 'নজরদার' হিসাবে কাজ করেছিল এবং সরকার ও প্রশাসনে মুসলমানদের সুবিধাপ্রাপ্ত অবস্থানকে রক্ষা করেছিল। [৩৪]

১৯৩৮ সত্যগ্রহ

সম্পাদনা

১৯৩৭ হ'ল ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ভিত্তিস্থাপনের বছর। ভারত সরকার আইন ১৯৩৫ ভারত ও প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের জন্য একটি স্বচ্ছ ফেডারেল কাঠামো সহ বড় ধরনের সাংবিধানিক সংস্কার চালু করে। ১৯৩৭ সালের প্রাদেশিক নির্বাচনে, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ব্রিটিশ ভারতের বেশিরভাগ প্রদেশে সুস্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতার সাথে আবির্ভূত হয় এবং প্রাদেশিক সরকার গঠন করে।

অন্যদিকে, ১৯২০ সালে প্রাথমিক ঘোষণা সত্ত্বেও হায়দরাবাদ রাজ্যে সাংবিধানিক সংস্কারের দিকে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। অন্ধ্র মহাসভা দায়িত্বশীল সরকারের পক্ষে একটি প্রস্তাব পাস করে এবং মারাঠওয়াদা পরিষদ এবং কর্ণাটক পরিষদের সমান্তরাল সংগঠনগুলি নিজ নিজ অঞ্চলে গঠিত হয়েছিল॥ ১৯৩৭ সালের সেপ্টেম্বরে নিজাম একটি নতুন সংবিধানসম্মত সংস্কার কমিটি গঠন করেন। তবে, ১৯২০-এর দশকের গ্যাগিং অর্ডারে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং জনসমক্ষে বক্তৃতা ও সভার নিষেধাজ্ঞাগুলির উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়। প্রতিক্রিয়া হিসাবে, 'হায়দরাবাদ পিপলস কনভেনশন' তৈরি করা হয়েছিল, যেখানে ২৩ জন শীর্ষস্থানীয় হিন্দু এবং ৫ জন মুসলমানের একটি ওয়ার্কিং কমিটি ছিল। কনভেনশন একটি প্রতিবেদন অনুমোদন করে, যা ১৯৩৮ সালের জানুয়ারিতে সাংবিধানিক সংস্কার কমিটিতে জমা দেওয়া হয়েছিল। তবে, ওয়ার্কিং কমিটির পাঁচজন মুসলিম সদস্যের মধ্যে চারজনই এই সম্ভাব্য প্রভাবকে হ্রাস করে, এই প্রতিবেদনে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করেছিলেন। [৩৪]

১৯৩৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস হরিপুরা প্রস্তাবটি পাস করে ঘোষণা করে যে দেশীয় রাজ্যগুলো "ভারতের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ" এবং এটি "ভারতের অন্যান্য রাজ্যের মতো রাজ্যগুলির মতো একই রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক স্বাধীনতা" হিসাবে দাঁড়িয়েছে। এতে উত্সাহিত হয়ে পিপলস কনভেনশনের স্থায়ী কমিটি হায়দরাবাদ রাজ্য কংগ্রেস গঠনের প্রস্তাব করে এবং সদস্যদের তালিকাভুক্ত করার জন্য উত্সাহী অভিযান শুরু হয়েছিল। ১৯৩৮ সালের জুলাইয়ের মধ্যে কমিটি ১২০০ প্রাথমিক সদস্যদের নাম তালিকাভুক্ত করার দাবি করে এবং ঘোষণা করে যে শিগগিরই অফিসারদের জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এটি রাষ্ট্রের হিন্দু ও মুসলমান উভয়কেই "পারস্পরিক অবিশ্বাস কাটাতে" এবং "আশাফ জাহি রাজবংশের অধীনে দায়িত্বশীল সরকার গঠনে" যোগদানের আহ্বান জানিয়েছে। নিজাম তফসিলের নির্বাচনের তিন দিন আগে ১৯৩৮ সালের সেপ্টেম্বরে একটি নতুন জননিরাপত্তা আইন পাস করে সাড়া দিয়েছিলেন এবং হায়দরাবাদ রাজ্য কংগ্রেসকে বেআইনি বলে গণ্য করার আদেশ জারি করেন। [৩৪]

নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য নিজাম সরকারের সাথে আলোচনা ব্যর্থতায় শেষ হয়েছিল। হায়দরাবাদ ইস্যুটি ব্রিটিশ ভারতের সংবাদপত্রগুলিতে ব্যাপক আলোচিত হয়েছিল। পুনে থেকে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসের নেতা পিএম বাপাত ঘোষণা করেছিলেন যে তিনি ১ নভেম্বর থেকে হায়দরাবাদে একটি সত্যগ্রহ (নাগরিক অবাধ্যতা আন্দোলন) শুরু করবেন। এপ্রিল মাসে, হায়দরাবাদে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয় যা মুসলমানদের হিন্দুদের বিরুদ্ধে চাপিয়ে দিয়েছিল যা ব্রিটিশ ভারতে সংবাদমাধ্যমে 'হিন্দুদের অত্যাচার' -র অভিযোগ উত্থাপন করে। আর্য সমাজের নেতারা এই উত্তেজনার মূলধনটি আশা করেছিলেন। সম্ভবত অচল না হওয়ার জন্য হায়দরাবাদ রাজ্য কংগ্রেসের কর্মীরা একটি 'কমিটি অব অ্যাকশন' গঠন করেছিলেন এবং ১৯৪৮ সালের ২৪ অক্টোবর সংগঠনটির সদস্যরা প্রকাশ্যে ঘোষণা করেন যে তারা হায়দরাবাদ রাজ্য কংগ্রেসের অন্তর্ভুক্ত ছিল এবং গ্রেপ্তারের আবেদন জানানো হয়েছিল। আর্য সমাজ-হিন্দু মহাসভা সম্মিলনও একই দিনে তাদের নিজস্ব সত্যাগ্রহ চালু করেছিল। [৩৪]

ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস রাজ্য কংগ্রেসের সত্যগ্রহকে সমর্থন করতে অস্বীকার করেছিল। হরিপুরা রেজোলিউশন আসলে মডারেটস এবং র‌্যাডিক্যালদের মধ্যে একটি আপস ছিল। রাজ্যগুলিতে সরাসরি জড়িত থাকার বিষয়ে গান্ধী সতর্ক ছিলেন যাতে আন্দোলনগুলি সহিংসতায় পতিত না হয়। কংগ্রেস হাই কমান্ড হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে দৃঢ় সহযোগিতার জন্যও আগ্রহী ছিল, যার রাজ্য কংগ্রেসের অভাব ছিল। পদ্মজা নাইডু গান্ধীকে একটি দীর্ঘ প্রতিবেদন লিখেছিলেন যেখানে তিনি ঐক্য ও সংহতির অভাব এবং '[তাঁর] শব্দের অর্থে সাম্প্রদায়িক' থাকার জন্য রাজ্য কংগ্রেসের বিরুদ্ধে কটূক্তি করেছিলেন। ২৪ শে ডিসেম্বর, ৩০০ জন কর্মী গ্রেপ্তার হওয়ার পরে রাজ্য কংগ্রেস এই আন্দোলন স্থগিত করেছিল। এই কর্মীরা ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত কারাগারে রয়েছিলেন। [৩৪] [৪০]

আর্য সমাজ-হিন্দু মহাসভা সম্মিলন তাদের আন্দোলন অব্যাহত রেখেছিল এবং ১৯৩৯ সালের মার্চ মাসে এটি আরও তীব্র করে তোলে। তবে, রাজ্যের হিন্দুদের প্রতিক্রিয়া হ্রাসমান ছিল। জুনের মধ্যে আট হাজার নেতাকর্মী যারা গ্রেপ্তারের আবেদন করেছিল, তাদের মধ্যে প্রায় ২০% রাজ্যের বাসিন্দা বলে ধারণা করা হয়েছিল; বাকিরা ব্রিটিশ ভারত থেকে একত্রিত হয়েছিল। এর পার্শ্ববর্তী ব্রিটিশ ভারতীয় প্রদেশগুলির বোম্বে এবং কেন্দ্রীয় প্রদেশ এবং সীমিত পরিমাণ, যাও, মাদ্রাজ, সমস্ত ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের দ্বারা পরিচালিত, যেমন আহমেদনগর, সোলপুর, বিজয়ওয়াড়া, পুসাদ এবং মান্মাদ শহরগুলি সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে। ব্রিটিশ ভারতে ক্রমবর্ধমান কঠোর-হায়দরাবাদ বিরোধী প্রচার অব্যাহত ছিল। জুলাই-আগস্টের মধ্যে, উত্তেজনা হ্রাস পেয়েছিল। হিন্দু মহাসভা জ্যোতির্মথের শঙ্করাচার্যকে একটি শান্তি মিশনে প্রেরণ করেছিলেন, যিনি সাক্ষ্য দিয়েছিলেন যে রাজ্যে হিন্দুদের উপর কোন ধর্মীয় অত্যাচার হয়নি। নিজাম সরকার একটি ধর্ম বিষয়ক কমিটি গঠন করে এবং ২০ জুলাইয়ের মধ্যে সাংবিধানিক সংস্কারের ঘোষণা দেয়। পরবর্তীকালে, হিন্দু মহাসভা ৩০ জুলাই এবং ৮ আগস্টে আর্য সমাজ এর প্রচার স্থগিত করে। দুই সংগঠনের কারাবন্দী সমস্ত কর্মীকে মুক্তি দেওয়া দেয়। [৩৪]

সাম্প্রদায়িক সহিংসতা

সম্পাদনা

অপারেশন আগে

সম্পাদনা

অপারেশন চলাকালীন এবং পরে

সম্পাদনা

সামরিক

সম্পাদনা

হায়দরাবাদের প্রথম শাসক আসফ জাহ প্রথম একজন প্রতিভাবান সেনাপতি ছিলেন এবং একটি শক্তিশালী সেনাবাহিনী একত্র করেছিলেন যা হায়দরাবাদকে দক্ষিণ ভারতের অন্যতম প্রধান রাজ্য হিসাবে পরিণত করতে দেয়। [৪৩] তাঁর মৃত্যুর পরে, সামরিক বাহিনী তার ছেলের উত্তরসূরীদের যুদ্ধে পঙ্গু হয়ে যায়। সেনাবাহিনীকে আধুনিকীকরণকারী নিজাম আলী খান, দ্বিতীয় আসফ জাহ এর অধীনে শুরু করা হয়। [৪৪] তাঁর রাজত্বকালে উল্লেখযোগ্য ইউনিটগুলির মধ্যে রয়েছে ব্রিটিশ -প্রশিক্ষিত ব্যাটালিয়ন, [৪৫] ফরাসী প্রশিক্ষিত কর্পস ফ্রাঙ্কাইস ডি রেমন্ড যার নেতৃত্বে ছিলেন মিশেল জোয়াচিম মেরি রেমন্ড এবং ফরাসী ত্রিঙ্গোলার অধীনে লড়াই করেন এবং ভিক্টোরিয়াস ব্যাটালিয়ন ছিলেন পুরোপুরি একটি অভিজাত পদাতিক ইউনিট। মহিলাদের সমন্বয়ে গঠিত। [৪৬]

জনসংখ্যার উপাত্ত

সম্পাদনা

মুলকিস বা মুলখিস, পূর্ববর্তী হায়দরাবাদ রাজ্যের আদি বাসিন্দা, জাতিগত ভিন্নতা নির্বিশেষে।[১০] এই শব্দটি ১৯৫২ সালের মুলখি আন্দোলন চলাকালীন জনপ্রিয়ভাবে ব্যবহৃত হয়েছিল, যেখানে মুলকি জনগণের চাকরির সংরক্ষণের দাবিতে এবং নন-মুলকীদের ছেড়ে যাওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছিল। [৪৭]

হায়দ্রাবাদ রাজ্যের ভাষা[৪৮]

  তেলুগু (৪৮.২%)
  মারাঠি (২৬.৪%)
  কন্নড় (১২.৩%)
  অন্যান্য (২.৮%)

১৯৪১ সালের হিসাবে হায়দ্রাবাদ রাজ্য জনগণনা অনুযায়ী, ২,১৪৭,০০৫ জন উর্দু, ৭,৫২৯,২২৯ জন তেলুগু, ৩,৯৪৭,০৮৯ জন মারাঠি, ১,৭২৪,১৪০ জন কন্নড ভাষায় ক্থা বলতো। [৪৯] ক্ষমতাসীন আসফ জাহি রাজবংশ সহ হায়দারবাদী মুসলিম জনসংখ্যা প্রায় ২,০৯৭,৪৭৫ জন এবং হিন্দুরা প্রায় ৯,১৭১,৩১৮ জন। [৫০]

 
হায়দরাবাদ রাজ্যের প্রতীক

হায়দরাবাদ রাজ্যের প্রতীকে নীচে নিজামের পুরো শিরোনাম এবং একটি দস্তর চিত্রায়িত।

 
হায়দরাবাদের পতাকা

হায়দরাবাদের আসফিয়া পতাকা। উপরের অংশেআল আজমাতুলিল্লাহ অর্থ "সমস্ত মহিমা ঈশ্বরের জন্য "। নীচের স্ক্রিপ্টটি ইয়া উসমান পড়ে যা "ওহ উসমান "। মাঝখানে লেখাটি পড়ে "নিজাম-উল-মুলক আসিফ জাহ"

ষ্ট্যাম্প

সম্পাদনা
 
১৯৩৭ হায়দরাবাদ স্টেট স্ট্যাম্প ওসমানিয়া জেনারেল হাসপাতাল।

হায়দরাবাদ রাজ্যের স্ট্যাম্পগুলিতে গোলকোন্ডা দুর্গ, অজন্তা গুহাগুলি এবং চারমিনার চিত্রায়িত থাকতো। [৫১]

স্থাপত্য

সম্পাদনা

হায়দরাবাদ রাজ্যের স্থাপত্যটি প্রকৃতিতে অত্যন্ত বৈষ্ণিক, এবং ইউরোপীয় এবং ইসলামী শৈলীর দ্বারা অত্যন্ত প্রভাবিত। নিজামের প্রাসাদ এবং বেশ কয়েকটি সরকারী ভবন একটি স্বতন্ত্র স্টাইলে নির্মিত হয়েছিল। প্রাচীনতম বেঁচে থাকা ভবনগুলি নিখরচায় ইউরোপীয়, উদাহরণ হ'ল নিওক্লাসিক্যাল ব্রিটিশ রেসিডেন্সি (১৭৯৮) এবং ফালকনুমা প্রাসাদ (১৮৯৩)। বিশ শতকের গোড়ার দিকে উসমানিয়া জেনারেল হাসপাতাল, সিটি কলেজ, হাইকোর্ট এবং কাচেগুদা রেলওয়ে স্টেশন ভিনসেন্ট এসচের দ্বারা ইন্দো-সারেসনিক স্টাইলে নকশা করা হয়েছিল। মোয়াজ্জাম জাহি মার্কেটটিও একই ধরনের স্টাইলে নির্মিত হয়েছিল।

 
সিকেন্দ্রাবাদ স্টেশনের একটি ইঞ্জিন (১৯২৮)

বিশেষত বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে, ভারত ইউনিয়নতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আগে হায়দরাবাদ রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন বড় শিল্পের উত্থান হয়েছিল। হায়দরাবাদ শহরটিতে বিদ্যুতের জন্য একটি পৃথক পাওয়ার প্ল্যান্ট ছিল। যাইহোক, নিজামের শিল্প উন্নয়ন অঞ্চলের শান্তাগড় উপর নিবদ্ধ, পরিবহন সুবিধা জন্য রাস্তা এবং রেলপথের পাশাপাশি সেখানে শিল্পের জন্য হাউজিং স্থাপন করেন। [৫২]

স্বাধীনতা পূর্ব হায়দরাবাদে শিল্পগুলি [৫২]
প্রতিষ্ঠান বছর
নিজামের গ্যারান্টেড স্টেট রেলওয়ে ১৮৭৯
করখানা জিন্দা তিলিসমাত ১৯২০
সিঙ্গারেনি কলিয়ারিজ ১৯২১
হায়দরাবাদ ডেকান সিগারেট কারখানা ১৯২২
ভাজির সুলতান টোব্যাকো সংস্থা, চারমিনার সিগারেটের কারখানা ১৯৩০
আজম জাহি মিলস ওয়ারঙ্গল ১৯৩৪
নিজাম সুগার ফ্যাক্টরি ১৯৩৭
অলউইন মেটাল ওয়ার্কস ১৯৪২
প্রাগা সরঞ্জাম ১৯৪৩
ডেকান এয়ারওয়েজ লিমিটেড ১৯৪৫
হায়দরাবাদ অ্যাসবেস্টস ১৯৪৬
সিরিলিস ১৯৪৬
সিরপুর পেপার মিলস ১৯৪২

মন্তব্য

সম্পাদনা
  1. However some Hindus served in high government posts such as Prime Minister of Hyderabad (Maharaja Chandu Lal, Maharaja Sir Kishen Pershad) and Kotwal of Hyderabad (Raja Bahadur Venkatarama Reddy).

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Beverley, Hyderabad, British India, and the World 2015, পৃ. 110।
  2. Benichou, Autocracy to Integration 2000, পৃ. 20।
  3. MiO'Dwyer, Michael (১৯৮৮), India as I Knew it: 1885–1925, Mittal Publications, পৃষ্ঠা 137–, GGKEY:DB7YTGYWP7W 
  4. Smith 1950, পৃ. 27–28।
  5. Benichou, Autocracy to Integration 2000, Chapter 1।
  6. Bose, Sugata; Jalal, Ayesha (২০০৪), Modern South Asia: History, Culture, Political Economy (Second সংস্করণ), Routledge, পৃষ্ঠা 42, আইএসবিএন 978-0-415-30787-1 
  7. Benichou, Autocracy to Integration 2000, Chapter 7: "'Operation Polo', the code name for the armed invasion of Hyderabad"
  8. Ali, Cherágh (১৮৮৬)। Hyderabad (Deccan) Under Sir Salar Jung (ইংরেজি ভাষায়)। Printed at the Education Society's Press। 
  9. "Imperial Gazetteer2 of India, Volume 13, page 277 -- Imperial Gazetteer of India -- Digital South Asia Library" 
  10. Leonard, Karen Isaksen (২০০৭)। Locating Home: India's Hyderabadis Abroad (ইংরেজি ভাষায়)। Stanford University Press। আইএসবিএন 978-0-8047-5442-2 
  11. Reddy, AuthorDeepika। "The 1952 Mulki agitation"Telangana Today (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-১২-১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-১১ 
  12. "Inspecting Officers (Railways) – Pringle, (Sir) John Wallace"SteamIndex। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৭-১০ 
  13. Chandra, Mukherjee এবং Mukherjee 2008
  14. "Hyderabad"Encyclopædia Britannica। Britannica। সংগ্রহের তারিখ ৮ অক্টোবর ২০১৬ 
  15. Jaques, Tony (২০০৭)। Dictionary of Battles and Sieges: P-Zআইএসবিএন 9780313335396 
  16. Barua, Pradeep (২০০৫)। The State at War in South Asiaআইএসবিএন 978-0803213449 
  17. Nath Sen, Sailendra (১৯৯৪)। Anglo-Maratha Relations, 1785–96, Volume 2আইএসবিএন 9788171547890 
  18. Time dated 22 February 1937, cover story
  19. Briggs 1861
  20. "The University of Queensland Homepage" 
  21. Dalrymple (2003).
  22. Law 1914
  23. Law
  24. "Nizam of Hyderabad Dead", New York Times, 30 August 1911
  25. Lynton, Days of the Beloved 1987
  26. Nayeem, M. A.; The Splendour of Hyderabad; Hyderabad ²2002 [Orig.: Bombay ¹1987]; আইএসবিএন ৮১-৮৫৪৯২-২০-৪; S. 221
  27. "Hyderabad to observe 104th anniversary of Musi flood | The Siasat Daily"archive.siasat.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৭-৩১ 
  28. Shanker, CR Gowri (১০ জুন ২০১৮)। "Letters leave a rich legacy of rulers"Deccan Chronicle 
  29. Pagdi, Raghavendra Rao (1987) Short History of Banking in Hyderabad District, 1879-1950. In M. Radhakrishna Sarma, K.D. Abhyankar, and V.G. Bilolikar, eds. History of Hyderabad District, 1879-1950AD (Yugabda 4981-5052). (Hyderabad : Bharatiya Itihasa Sankalana Samiti), Vol. 2, pp.85-87.
  30. "Begumpeet Airport History"। ২১ ডিসেম্বর ২০০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  31. "View of Changing Facets of Hyderabadi Tehzeeb: Are we missing anything?"spaceandculture.in। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  32. Pandey, Dr. Vinita। "Changing Facets of Hyderabadi Tehzeeb: Are We Missing Anything?" 
  33. Purushotham, Sunil (২০১৫)। "Internal Violence: The "Police Action" in Hyderabad": 435–466। ডিওআই:10.1017/s0010417515000092 
  34. Benichou, Autocracy to Integration 2000
  35. "The Hyderabad Question" (পিডিএফ)United Nations। সংগ্রহের তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  36. United Nations Document S/986
  37. "APonline - History and Culture - History-Post-Independence Era"। ২০ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুন ২০২০ 
  38. "Mulki agitation in Hyderabad state"। Hinduonnet.com। ২৬ আগস্ট ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-১০-০৯ 
  39. "SRC submits report"The Hindu। Chennai, India। ১ অক্টোবর ২০০৫। ১ মার্চ ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ অক্টোবর ২০১১ 
  40. Smith 1950
  41. Guha 2008
  42. Leonard, K.I., 1994. Social History of an Indian Caste: The Kayasths of Hyderabad. Orient Blackswan.
  43. Dalrymple (2003), p. 86.
  44. Dalrymple (2003), p. 87.
  45. Dalrymple (2003), p. 129.
  46. Dalrymple (2003), p. 94.
  47. Rao, V. Bhaskara (২০০৮)। Public Administration, Steel Or Plastic Frame (ইংরেজি ভাষায়)। Gyan Publishing House। আইএসবিএন 978-81-7835-617-4 
  48. Beverley, Eric Lewis (১০ জুন ২০১৫)। Hyderabad, British India, and the World। Cambridge University Press। আইএসবিএন 9781107091191 – Google Books-এর মাধ্যমে। 
  49. Mazhar_hussain_m.a__b.sc (১৯৪৭)। Census Of India 1941 Vol-xxi H.e.h. The Nizams Dominions (hyd State) 
  50. "Census Of India 1941 Vol-xxi H.e.h. The Nizams Dominions (hyd State)"। ১০ এপ্রিল ১৯৪৭ – Internet Archive-এর মাধ্যমে। 
  51. "A stamp of history from the Nizam's era"The New Indian Express। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-০২ 
  52. "Kaleidoscopic view of Deccan"The Hindu। Chennai, India। ২৫ আগস্ট ২০০৯। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুন ২০২০ 

গ্রন্থপঞ্জি

সম্পাদনা

আরো পড়ুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা