মুকসুদপুর উপজেলা
মুকসুদপুর উপজেলা গোপালগঞ্জ জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা যা ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এটি ঢাকা বিভাগের অধীন গোপালগঞ্জ জেলার ৫টি উপজেলার মধ্যে একটি এবং গোপালগঞ্জ জেলার সর্ব উত্তরে অবস্থিত।[২]
মুকসুদপুর | |
---|---|
উপজেলা | |
ঢাকা বিভাগে মুকসুদপুর উপজেলার অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৩°১৯′১৩″ উত্তর ৮৯°৫২′৩″ পূর্ব / ২৩.৩২০২৮° উত্তর ৮৯.৮৬৭৫০° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | ঢাকা বিভাগ |
জেলা | গোপালগঞ্জ জেলা |
সরকার | |
• উপজেলা নির্বাহী অফিসার | মোঃ আজিজুর রহমান |
আয়তন | |
• মোট | ৩০৯.৬৩ বর্গকিমি (১১৯.৫৫ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১)[১] | |
• মোট | ২,৮৯,৪০৬ |
• জনঘনত্ব | ৯৩০/বর্গকিমি (২,৪০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৪৬.৪৩% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৮১৪০ |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৩০ ৩৫ ৫৮ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
অবস্থান ও আয়তন
সম্পাদনামুকসুদপুর উপজেলার আয়তন ৩০৯.৬৩ বর্গ কিমি। এটি ২৩°১০´ থেকে ২৩°২২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৪৮´ থেকে ৯০°০৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। মুকসুদপুর উপজেলার উত্তরে ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলা ও ভাঙ্গা উপজেলা, দক্ষিণে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা ও কাশিয়ানী উপজেলা, পূর্বে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলা ও মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলা, পশ্চিমে কাশিয়ানী উপজেলা ও ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলা।
প্রশাসনিক এলাকা
সম্পাদনামুকসুদপুর থানা গঠিত হয়েছিল ১৯৬১ সালে৷ বর্তমানে এটি উপজেলা৷ এই উপজেলার একটি পৌরসভা (১৬.৭৭ বর্গ কিঃ মিঃ), ২২২ টি মৌজা, ২৭০ টি গ্রাম আছে৷ এ উপজেলাটিতে প্রায় ২৮৯৪০৬ জনের বসবাস। শিক্ষার হার প্রায় ৪৭ শতাংশ।
পৌরসভা
সম্পাদনাইউনিয়ন
সম্পাদনা- মুকসুদপুর ইউনিয়ন, মুকসুদপুর
- পশারগাতি ইউনিয়ন
- গোবিন্দপুর ইউনিয়ন, মুকসুদপুর
- খান্দারপাড় ইউনিয়ন
- বহুগ্রাম ইউনিয়ন
- বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন, মুকসুদপুর
- ভাবড়াশুর ইউনিয়ন
- মহারাজপুর ইউনিয়ন, মুকসুদপুর
- বাটিকামারী ইউনিয়ন
- দিগনগর ইউনিয়ন, মুকসুদপুর
- রাঘদী ইউনিয়ন
- গোহালা ইউনিয়ন
- মোচনা ইউনিয়ন
- উজানী ইউনিয়ন
- কাশালিয়া ইউনিয়ন
- ননীক্ষীর ইউনিয়ন
- জলিরপাড় ইউনিয়ন
অর্থনীতি
সম্পাদনামুকসুদপুর উপজেলার জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি যা মোট আয়ের ৬৩%। এছাড়া আয়ের অন্যান্য উৎসের মধ্যে অকৃষি শ্রমিক ২.১৪%, শিল্প ০.৫৩%, ব্যবসা ১৩.০৫%, পরিবহন ও যোগাযোগ ১.২১%, চাকরি ৮.৯%, নির্মাণ ২.৪%, ধর্মীয় সেবা ০.২২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৭% এবং অন্যান্য ৭.৮৫%। এই উপজেলায় উৎপাদিত প্রধান ফসল হচ্ছে ধান, পাট, সরিষা, ডাল, আখ, গম, পান, পিঁয়াজ, মিষ্টি আলু এবং শাকসবজি ইত্যাদি। উৎপাদিত ফলের মধ্যে আম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, নারিকেল, তাল, পেয়ারা, লেবু, লিচু অন্যতম। এছাড়াও এই উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে মাছ, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির চাষ করা হয়। এ উপজেলার চান্দার বিল এলাকায় পীট কয়লার সন্ধান পাওয়া গেছে।[৩]
শিক্ষা
সম্পাদনা২০১১ সালের হিসাব অনুযায়ী মুকসুদপুরের গড় সাক্ষরতার হার শতকরা ৫২.৫%; (পুরুষ ৫৪.৮%, নারী ৫০.৫%)। এ উপজেলায় ১২৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৬১টি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৭টি কিন্ডারগার্টেন স্কুল, ৯টি কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪৩টি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১টি সরকারি ও ৪টি বেসরকারি কলেজ, ৮১টি মাদ্রাসা, ৪৪টি কওমি মাদ্রাসা এবং ১৯টি এবতেদায়ী মাদ্রাসা রয়েছে। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে।[৪]-
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
সম্পাদনা- মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- এফ. সি. স্কুল এন্ড কলেজ, টেকেরহাট, মুকসুদপুর
- সাবের মিয়া জসিম উদ্দিন এস.জে. মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
- গোবিন্দপুর মৌলভী আব্দুল হাই মেমোরিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ
- এ.পি.এফ. বদিউজ্জামান উচ্চ বিদ্যালয়
- উজানী বি.কে.বি ইউনিয়ন মহাবিদ্যালয়
- কালিনগর উচ্চ বিদ্যালয়
- পাইলট বালক উচ্চ বিদ্যালয়
- গোহালা টি. সি. এ. এল উচ্চ বিদ্যালয়
- জে. কে. এম. বি. মল্লিক উচ্চ বিদ্যালয়
- ইস্ট লখন্ডা জিরাতলী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- এম কে বি এইচ উচ্চ বিদ্যালয়
- হাদিউজ্জামান মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়
- নওহাটা এ.আর.এম উচ্চ বিদ্যালয়
- কলেজ
- মুকসুদপুর সরকারি কলেজ
- বঙ্গরত্ন ডিগ্রি কলেজ
স্বাস্থ্য
সম্পাদনাসামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য হার তুলনামূলক কম হলেও এটি মূলত দারিদ্র্যতার সাথে সম্পর্কিত হওয়ায়, এর উন্নতির সাথে সাথে বর্তমানে স্বাস্থ্য সেবাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মত এই অঞ্চলেও অপুষ্টি, পরিবেশগত স্যানিটেশন সমস্যা, ডায়াবেটিস, সংক্রামক রোগ প্রভৃতি বেশি দেখা যায়। উপজেলায় ৫০শয্যা বিশিষ্ট একটি সরকারি হাসপাতালের সাথে সাথে ৪টি বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে। ১৩টি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, ১টি পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিক, ১টি মিশনারি হাসপাতাল রয়েছে।[৪]
যোগাযোগ ব্যবস্থা
সম্পাদনামুকসুদপুর উপজেলার মোট ১৬টি ইউনিয়নের সাথে উপজেলা সদরের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো। জেলা সদরের সাথে যোগযোগ অত্যন্ত চমৎকার, সড়ক পথে দূরত্ব ৬০ কিলোমিটার এবং যেতে ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট সময় লাগে। মুকসুদপুর হতে প্রতিদিন বাস জেলা সদরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। মুকসুদপুর উপজেলা থেকে গোপালগঞ্জ জেলার দুরত্ব ৬০ কিঃ মিঃ। জেলা সড়ক জেড৭০০৪ (ফরিদপুর (বদরপুর)-সালথা-সোনাপুর-মুকসুদপুর) মুকসুদপুরকে ফরিদপুর জেলার সাথে স্থলপথে সংযুক্ত করেছে।
নদ-নদী
সম্পাদনামুকসুদপুরের উল্লেখযোগ্য নদী কুমার। মুকসুদপুর উপজেলার মধ্য দিয়ে কুমার নদী বয়ে গেছে। নদীর দুই তীর পানি উন্নয়ণ বোর্ড কর্তৃক বেড়ী বাধ নির্মাণ করা আছে। এছাড়াও মুকসুদপুর উপজেলার মধ্য দিয়ে মধুমতি বিলরুট ক্যানেল বয়ে গেছে।[৫][৬]
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি
সম্পাদনা- রমেশচন্দ্র মজুমদার
- সাবের মিয়া
- এড. আব্দুস সালাম খান
- আব্দুল মজিদ মিয়া
- মৌলভী আব্দুল জলিল মিয়া
- আব্দুল ওয়াহাব মিয়া
- মোহাম্মদ আবুল খায়ের-বঙ্গবন্ধুর সহচর।
- মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান
- কাজী আব্দুর রশীদ
- আবদুল মজিদ মিয়া
- ফারুক খান
- খায়রুল বাকী মিয়া
- এডভোকেট মোঃ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ
দর্শনীয় স্থান
সম্পাদনা- উজানীর জমিদার বাড়ি
- ছোট বনগ্রাম জমিদার বাড়ি
- বাটিকামারী জমিদার বাড়ি
- বনগ্রাম কালি মন্দির। ননীক্ষির ইউনিয়ন অবস্থিত।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে মুকসুদপুর"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২৭ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০১৫।
- ↑ "মুকসুদপুর উপজেলার পটভূমি"। বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ২০১৯-১০-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১৫।
- ↑ "মুকসুদপুর উপজেলা"। বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-২৭।
- ↑ ক খ "জেলা পরিসংখান ২০১১" (পিডিএফ)। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। ডিসেম্বর ২০১৩। ৩ মে ২০২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ ড. অশোক বিশ্বাস, বাংলাদেশের নদীকোষ, গতিধারা, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ২০১১, পৃষ্ঠা ৩৯৮, আইএসবিএন ৯৭৮-৯৮৪-৮৯৪৫-১৭-৯।
- ↑ মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক (ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি। ঢাকা: কথাপ্রকাশ। পৃষ্ঠা ৬০৬। আইএসবিএন 984-70120-0436-4।