মুকসুদপুর উপজেলা
মুকসুদপুর উপজেলা গোপালগঞ্জ জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা যা ১৬টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এটি ঢাকা বিভাগের অধীন গোপালগঞ্জ জেলার ৫টি উপজেলার মধ্যে একটি এবং গোপালগঞ্জ জেলার সর্ব উত্তরে অবস্থিত।[২]
মুকসুদপুর | |
---|---|
উপজেলা | |
বাংলাদেশে মুকসুদপুর উপজেলার অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৩°১৯′১৩″ উত্তর ৮৯°৫২′৩″ পূর্ব / ২৩.৩২০২৮° উত্তর ৮৯.৮৬৭৫০° পূর্বস্থানাঙ্ক: ২৩°১৯′১৩″ উত্তর ৮৯°৫২′৩″ পূর্ব / ২৩.৩২০২৮° উত্তর ৮৯.৮৬৭৫০° পূর্ব ![]() | |
দেশ | ![]() |
বিভাগ | ঢাকা বিভাগ |
জেলা | গোপালগঞ্জ জেলা |
আয়তন | |
• মোট | ৩০৯.৬৩ বর্গকিমি (১১৯.৫৫ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১)[১] | |
• মোট | ২,৮৯,৪০৬ |
• জনঘনত্ব | ৯৩০/বর্গকিমি (২,৪০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৪৬.৪৩% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৮১৪০ ![]() |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৩০ ৩৫ ৫৮ |
ওয়েবসাইট | প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট ![]() |
অবস্থান ও আয়তনসম্পাদনা
মুকসুদপুর উপজেলার আয়তন ৩০৯.৬৩ বর্গ কিমি। এটি ২৩°১০´ থেকে ২৩°২২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৪৮´ থেকে ৯০°০৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। মুকসুদপুর উপজেলার উত্তরে ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা ও সালথা উপজেলা, দক্ষিণাংশে গোপালগঞ্জ সদর ও কাশিয়ানি উপজেলা, পশ্চিমে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা, পূর্বে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা ও ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা অবস্থিত।[২]
প্রশাসনিক এলাকাসম্পাদনা
মুকসুদপুর থানা গঠিত হয়েছিল ১৯৬১ সালে৷ বর্তমানে এটি উপজেলা৷ এই উপজেলার একটি পৌরসভা (১৬.৭৭ বর্গ কিঃ মিঃ), ২০৬ টি মৌজা, ২৫৪ টি গ্রাম আছে৷ এ উপজেলাটিতে প্রায় ২৮৪২০৫ জনের বসবাস৷ শিক্ষার হার প্রায় ৪৭ শতাংশ ৷
পৌরসভাসম্পাদনা
ইউনিয়নসম্পাদনা
- মুকসুদপুর ইউনিয়ন, মুকসুদপুর
- পশারগাতি ইউনিয়ন
- গোবিন্দপুর ইউনিয়ন, মুকসুদপুর
- খান্দারপাড় ইউনিয়ন
- বহুগ্রাম ইউনিয়ন
- বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন, মুকসুদপুর
- ভাবড়াশুর ইউনিয়ন
- মহারাজপুর ইউনিয়ন, মুকসুদপুর
- বাটিকামারী ইউনিয়ন
- দিগনগর ইউনিয়ন, মুকসুদপুর
- রাঘদী ইউনিয়ন
- গোহালা ইউনিয়ন
- মোচনা ইউনিয়ন
- উজানী ইউনিয়ন
- কাশালিয়া ইউনিয়ন
- ননীক্ষীর ইউনিয়ন
- জলিরপাড় ইউনিয়ন
অর্থনীতিসম্পাদনা
মুকসুদপুর উপজেলার জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি যা মোট আয়ের ৬৩%। এছাড়া আয়ের অন্যান্য উৎসের মধ্যে অকৃষি শ্রমিক ২.১৪%, শিল্প ০.৫৩%, ব্যবসা ১৩.০৫%, পরিবহন ও যোগাযোগ ১.২১%, চাকরি ৮.৯%, নির্মাণ ২.৪%, ধর্মীয় সেবা ০.২২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৭% এবং অন্যান্য ৭.৮৫%। এই উপজেলায় উৎপাদিত প্রধান ফসল হচ্ছে ধান, পাট, সরিষা, ডাল, আখ, গম, পান, পিঁয়াজ, মিষ্টি আলু এবং শাকসবজি ইত্যাদি। উৎপাদিত ফলের মধ্যে আম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, নারিকেল, তাল, পেয়ারা, লেবু, লিচু অন্যতম। এছাড়াও এই উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে মাছ, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির চাষ করা হয়। এ উপজেলার চান্দার বিল এলাকায় পীট কয়লার সন্ধান পাওয়া গেছে।[৩]
শিক্ষাসম্পাদনা
২০১১ সালের হিসেব অনুযায়ী মুকসুদপুরের গড় সাক্ষরতার হার শতকরা ৫২.৫%; (পুরুষ ৫৪.৮%, নারী ৫০.৫%)। এ উপজেলায় ১২৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৬১টি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৭টি কিন্ডারগার্টেন স্কুল, ৯টি কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪৩টি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১টি সরকারি ও ৪টি বেসরকারি কলেজ, ৮১টি মাদ্রাসা, ৪৪টি কওমি মাদ্রাসা এবং ১৯টি এবতেদায়ী মাদ্রাসা রয়েছে। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে[৪]-
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসম্পাদনা
- ১ নং টেংরাখোলা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়;
- সাবের মিয়া জসিম উদ্দিন (এস.জে) মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়;
- মুকসুদপুর সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ;
- উজানী বি.কে.বি ইউনিয়ন মহাবিদ্যালয়;
- বঙ্গরত্ন ডিগ্রি কলেজ;
- কালিনগর উচ্চ বিদ্যালয়;
- পাইলট বালক উচ্চ বিদ্যালয়;
- গোহালা টি. সি. এ. এল উচ্চ বিদ্যালয়;
- জে. কে. এম. বি. মল্লিক উচ্চ বিদ্যালয় (জলিরপাড়);
- ইস্ট লখন্ডা জিরাতলী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়(জিরাতলী);
- ১১৩ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়(জিরাতলী)।
- এম কে বি এইচ উচ্চ বিদ্যালয় (কাশালিয়া)
- ৮২ নং মালদিয়া কাশালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (মালদিয়া)
- হাদিউজ্জামান মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়
স্বাস্থ্যসম্পাদনা
সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য হার তুলনামূলক কম হলেও এটি মূলত দারিদ্র্যতার সাথে সম্পর্কিত হওয়ায়, এর উন্নতির সাথে সাথে বর্তমানে স্বাস্থ্য সেবাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মত এই অঞ্চলেও অপুষ্টি, পরিবেশগত স্যানিটেশন সমস্যা, ডায়াবেটিস, সংক্রামক রোগ প্রভৃতি বেশি দেখা যায়। উপজেলায় ৫০শয্যা বিশিষ্ট একটি সরকারি হাসপাতালের সাথে সাথে ৪টি বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে। ১৩টি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, ১টি পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিক, ১টি মিশনারি হাসপাতাল রয়েছে।[৪]
যোগাযোগ ব্যবস্থাসম্পাদনা
মুকসুদপুর উপজেলার মোট ১৬টি ইউনিয়নের সাথে উপজেলা সদরের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো। জেলা সদরের সাথে যোগযোগ অত্যন্ত চমৎকার, সড়ক পথে দূরত্ব ৬০ কিলোমিটার এবং যেতে ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট সময় লাগে। মুকসুদপুর হতে প্রতিদিন বাস জেলা সদরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। মুকসুদপুর উপজেলা থেকে গোপালগঞ্জ জেলার দুরত্ব ৬০ কিঃ মিঃ। জেলা সড়ক জেড৭০০৪ (ফরিদপুর (বদরপুর)-সালথা-সোনাপুর-মুকসুদপুর) মুকসুদপুরকে ফরিদপুর জেলার সাথে স্থলপথে সংযুক্ত করেছে।
নদনদীসম্পাদনা
মুকসুদপুরের উল্লেখযোগ্য নদী কুমার। মুকসুদপুর উপজেলার মধ্য দিয়ে কুমার নদী বয়ে গেছে। নদীর দুই তীর পানি উন্নয়ণ বোর্ড কর্তৃক বেড়ী বাধ নির্মাণ করা আছে। এছাড়াও মুকসুদপুর উপজেলার মধ্য দিয়ে মধুমতি বিলরুট ক্যানেল বয়ে গেছে।[৫][৬]
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্বসম্পাদনা
- রমেশচন্দ্র মজুমদার (১৮৮৮- ১৯৮০) একজন বাঙালি ইতিহাসবিদ। ১৯৩৬-১৯৪২ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
- কাজী আব্দুর রশীদ (আনু. ১৯৩২–১৪ আগস্ট ২০১৪) বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ জেলার রাজনীতিবিদ ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক যিনি তৎকালীন পূর্বপাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য, তৎকালীন ফরিদপুর-৯ ও গোপালগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।[১][২][৩]
বিবিধসম্পাদনা
- বিখ্যাত মিষ্টি- ১. লক্ষী নারায়ন মিষ্টান্ন ভান্ডার ২. সত্য নারায়ন মিষ্টান্ন ভান্ডার ৩. ঘোস মিষ্টান্ন ভান্ডার
ঐতিহাসিক নিদর্শন ও ঐতিহ্যসম্পাদনা
- উজানীর জমিদার বাড়ি
- খালিয়া জমিদার বাড়ি
- ছোট বনগ্রাম জমিদার বাড়ি
- বাটিকামারী জমিদার বাড়ি
- [[ বনগ্রাম কালি মন্দির(ননীক্ষির ইউনিয়ন)]
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে মুকসুদপুর"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২৭ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই, ২০১৫। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ ক খ "মুকসুদপুর উপজেলার পটভূমি"। বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১৫।
- ↑ "মুকসুদপুর উপজেলা"। বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-২৭।
- ↑ ক খ "জেলা পরিসংখান ২০১১" (PDF)। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। ডিসেম্বর ২০১৩।
- ↑ ড. অশোক বিশ্বাস, বাংলাদেশের নদীকোষ, গতিধারা, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ২০১১, পৃষ্ঠা ৩৯৮, আইএসবিএন ৯৭৮-৯৮৪-৮৯৪৫-১৭-৯।
- ↑ মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক (ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি। ঢাকা: কথাপ্রকাশ। পৃষ্ঠা ৬০৬। আইএসবিএন 984-70120-0436-4।