খাদ্য হচ্ছে সেই সব বস্তু যা আহার করা হয়। কিন্তু সব আহার্য সামগ্রীই খাদ্য নয়। যেমন, ঘাসসেলুলোজ দিয়ে গঠিত হওয়ায় আমাদের পরিপাক নালীতে পাচিত হয় না। ফলে পুষ্টি সহায়ক নয়। সেই সব আহার্য সামগ্রীকেই খাদ্য বলা যাবে, যা দেহের পুষ্টি ও বৃদ্ধি সহায়ক এবং তাপশক্তি উৎপাদনে সহায়তা করে।
জীবদেহে শক্তির উৎস হল খাদ্য। সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়াকালে সৌরশক্তি খাদ্যের মধ্যে স্থিতিশীল শক্তিরুপে আবদ্ধ হয়। জীবকোষে শ্বসনের সময় স্থৈতিক শক্তি তাপ শক্তি বা গতিশক্তি রুপে মুক্ত হয়, জীবদেহের যাবতীয় বিপাক ক্রিয়া, যেমন: শ্বসন, রেচন,পুষ্টি ইত্যাদি এবং শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপ, যেমন-বৃদ্ধি, চলন-গমন, জনন ইত্যাদি নিয়ন্ত্রিত হয়। সুতরাং প্রানধারনের জন্য প্রত্যেক জীবকেই খাদ্য গ্রহণ করতে হয়। তাই, যে সব আহার্য সামগ্রী গ্রহন করলে জীবদেহের বৃদ্ধি, পুষ্টি, শক্তি উৎপাদন ও ক্ষয়পূরন হয়, তাকেই খাদ্য বলে।
কুসকুস (আরবি: الكسكس, কুস্কুস; আমাজিগ: ⵙⵉⴽⵙⵓ, সেকসু) হচ্ছে উত্তর আফ্রিকার খাবার, যা সুজির ছোট ছোট সিদ্ধ বল দিয়ে তৈরী করা হয়। সাধারণত তরকারীর উপরে এটা ছড়িয়ে দেওয়া হয়। সমগ্র উত্তর আফ্রিকার রন্ধশৈলীতে কুসকুস উল্লেখযোগ্য আসন দখল করে আছে, মরক্কো, আলজেরিয়া, তিউনিসিয়া, মৌরিতানিয়া ও লিবিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের একটা ক্ষুদ্র অংশ এবং সিসিলির তরাপানিতে কুসকুস খুবই জনপ্রিয়।
হট চকলেট গরম কোকো নামেও পরিচিত শক্ত চকলেট, গলানো চকলেট বা কোকো, উত্তপ্ত দুধ বা পানি এবং চিনির সমন্বয়ে তৈরি এক ধরনের উত্তপ্ত পানীয়। গলানো চকলেট দিয়ে তৈরি এই হট চকলেটকে কখনও কখনও বেভারেজ চকলেট বা পানীয় চকোলেটও বলা হয়। এটি কম মিষ্টি জাতীয় এবং ইহা কম ঘন চকলেট দ্বারা তৈরি করা হয়। প্রথম চকলেটের পানীয় আনুমানিক প্রায় ২,০০০ বছর আগে তৈরি করা হয়েছে বলে মনে করা হয় এবং কোকোয়া দ্বারা তৈরি পানীয় ১৪০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে অ্যাজটেক সংস্কৃতির অপরিহার্য অংশ ছিল। এ পানীয় নিউ ওয়ার্ল্ড মেক্সিকো থেকে চালু হওয়ার পর ইউরোপে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং তারপর থেকে এর একাধিক পরিবর্তন ঘটানো হয়েছে।
পায়েস (কোথাও কোথাও পায়িস বা খির নামেও পরিচিত) হল দুধ ও চাল দিয়ে তৈরি এক ধরনের মিষ্টি খাবার। চালকে দুধে সিদ্ধ করে তার ভিতর প্রচুর চিনি বা গুড় দিয়ে পায়েস বানানো হয় । বাঙালি সমাজে অন্নপ্রাশনে ও জন্মদিনে পায়েস অবশম্ভাবী একটি রান্না । চাল ছাড়া অন্য কিছু দুধে সিদ্ধ করেও পায়েস বানানো যায় ।
আলু বহুল প্রচলিত উদ্ভিজ্জ্জ খাদ্য। এটি কন্দজাতীয় (tuber) এক প্রকারের সবজি, যা মাটির নিচে জন্মে। এর আদি উৎস ভারত, এশিয়া মহাদেশ, সেখান থেকে ১৬শ শতকে এটি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। উচ্চ পুষ্টিমান এবং সহজে ফলানো ও সংরক্ষণ করা যায় বলে এটি বিশ্বের সর্বাপেক্ষা প্রচলিত সবজিগুলো মধ্যে অন্যতম। এটি পৃথিবীর চতুর্থ বৃহত্তম খাদ্যশস্য, এর আগে রয়েছে যথাক্রমে ভুট্টা, গম এবং চাল।
পৃথিবীর খাদ্য হিসেবে সর্বপ্রথম আলুর নির্দশন ভারতের বাংলায় দেখা যায়।
পালযুগের কবি সন্ধ্যাকর নন্দীর রামচরিতে বারাহী কন্দের উল্লেখ আছে। এই বারাহী কন্দ হল উচ্চমানের আলু, রতিকান্ত্র ত্রিপাঠী জানাচ্ছেন "প্রাচীন বাংলার শিলা ও তাম্রলিপিতে সমাজ ও সংস্কৃতি" বইটিতে।