ইসরায়েল জাতীয় ফুটবল দল

ইসরায়েল জাতীয় ফুটবল দল (হিব্রু ভাষায়: נבחרת ישראל בכדורגל‎, ইংরেজি: Israel national football team) হচ্ছে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ইসরায়েলের প্রতিনিধিত্বকারী পুরুষদের জাতীয় দল, যার সকল কার্যক্রম ইসরায়েলের ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইসরায়েল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এই দলটি ১৯২৯ সাল হতে ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফার এবং ১৯৯৪ সাল হতে তাদের আঞ্চলিক সংস্থা উয়েফার সদস্য হিসেবে রয়েছে। ১৯৯৪ সালে উয়েফা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ গ্রহণ করার পূর্বে দলটি এশিয়া ফুটবল কনফেডারেশন এবং ওশেনিয়া ফুটবল কনফেডারেশনের প্রতিযোগী হিসেবে ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে অংশগ্রহণ করেছে। এই দলটি প্যালেস্টাইন / ইরেজ ইসরায়েল জাতীয় দলের উত্তরাধিকারী। ১৯৪৮ সালের ২৬শে সেপ্টেম্বর তারিখে, ইসরায়েল প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণ করেছে; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিত উক্ত ম্যাচে ইসরায়েল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অলিম্পিকের কাছে ৩–১ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে।

ইসরায়েল
দলের লোগো
ডাকনামהכחולים-לבנים (নীল-সাদা)
অ্যাসোসিয়েশনইসরায়েল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন
কনফেডারেশনউয়েফা (ইউরোপ; ১৯৯৪–বর্তমান)
এএফসি (এশিয়া; ১৯৫৪–৭৪)
প্রধান কোচভিলিবাল্ড রুটেনস্টাইনার
অধিনায়কবিব্রাস নাতখো
সর্বাধিক ম্যাচইয়োসি বেনাইয়ুন (১০২)[১]
শীর্ষ গোলদাতামোর্দেচাই স্পাইগলার (৩৩)[২]
মাঠবিভিন্ন
ফিফা কোডISR
ওয়েবসাইটwww.football.org.il/en/
প্রথম জার্সি
দ্বিতীয় জার্সি
ফিফা র‌্যাঙ্কিং
বর্তমান ৭৫ অপরিবর্তিত (২১ ডিসেম্বর ২০২৩)[৩]
সর্বোচ্চ১৫ (নভেম্বর ২০০৮)
সর্বনিম্ন৯৯ (জানুয়ারি ২০১৮)
এলো র‌্যাঙ্কিং
বর্তমান ৬১ হ্রাস ৬ (১২ জানুয়ারি ২০২৪)[৪]
সর্বোচ্চ২৩ (এপ্রিল ১৯৭৬)
সর্বনিম্ন৮১ (ডিসেম্বর ১৯৫৯)
প্রথম আন্তর্জাতিক খেলা
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অলিম্পিক ৩–১ ইসরায়েল 
(নিউ ইয়র্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র; ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৪৮)
বৃহত্তম জয়
 ইসরায়েল ৯–০ চীনা তাইপেই 
(ওয়েলিংটন, নিউজিল্যান্ড; ২৩ মার্চ ১৯৮৮)
বৃহত্তম পরাজয়
 জার্মানি ৭–১ ইসরায়েল 
(কাইসারস্লাইটার্ন, জার্মানি; ১২ ফেব্রুয়ারি ২০০২)
বিশ্বকাপ
অংশগ্রহণ১ (১৯৭০-এ প্রথম)
সেরা সাফল্যগ্রুপ পর্ব (১৯৭০)
এএফসি এশিয়ান কাপ
অংশগ্রহণ৪ (১৯৫৬-এ প্রথম)
সেরা সাফল্যচ্যাম্পিয়ন (১৯৬৪)

নীল-সাদা নামে পরিচিত এই দলটি বেশ কয়েকটি স্টেডিয়ামে তাদের হোম ম্যাচগুলো আয়োজন করে থাকে। এই দলের প্রধান কার্যালয় ইসরায়েলের রামাত গানে অবস্থিত। বর্তমানে এই দলের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন ভিলিবাল্ড রুটেনস্টাইনার এবং অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন পার্তিজানের মধ্যমাঠের খেলোয়াড় বিব্রাস নাতখো

ইসরায়েল এপর্যন্ত ১ বার ফিফা বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছে, যেখানে তাদের সাফল্য হচ্ছে ১৯৭০ ফিফা বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে অংশগ্রহণ করা। অন্যদিকে, এএফসি এশিয়ান কাপে ইসরায়েল অন্যতম সফল দল, যেখানে তারা ১টি (১৯৬৪) শিরোপা জয়লাভ করেছে।

ইয়োসি বেনাইয়ুন, তেম বেন হাইম, আরিক বেনাদো, এরান জাহাভি এবং মোর্দেচাই স্পাইগলারের মতো খেলোয়াড়গণ ইসরায়েলের জার্সি গায়ে মাঠ কাঁপিয়েছেন।

ইতিহাস সম্পাদনা

ফুটবলে ইসরায়েলের একটি দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে, এই খেলাটি মূলত অটোমান সাম্রাজ্যের সময়ে চালু হয়েছিল। ১৯২৮ সালের আগস্ট মাসে ফিলিস্তিন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন গঠিত হয় এবং ১৯২৯ সালের জুনে তারা ফিফায় যোগদান করেছিল, কিন্তু এই সময়টি ব্রিটিশ মণ্ডেট শাসনামলে আরব ক্লাব, ইহুদী ক্লাব এবং ব্রিটিশ পুলিশ এবং সৈন্যবাহিনীকে প্রতিনিধিত্বকারী সৈন্যদের দ্বারা গঠিত হয়। বিশ্বযুদ্ধের এক সময় এবং ১৯৪৮ সালে ইসরায়েলের রাজত্বের মধ্য দিয়ে এই খেলাটি ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৩৪ সালে ফিলিস্তিন জাতীয় পরিষদের ব্রিটিশ ম্যান্ডেটটি মিশরের বিরুদ্ধে ফিফা বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা লাভ করেছিল। উক্ত প্রতিযোগিতার প্রথম ম্যাচে তারা মিশর জাতীয় ফুটবল দলকে ১–৭ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিল। দলটি লেবাননের বিরুদ্ধে একটি প্রীতি ম্যাচসহ পাঁচটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে, যতদিন পর্যন্ত ফিলিস্তিনের জন্য ব্রিটিশ ম্যান্ডেট ভেঙ্গে না ফেলা হয়।

১৯৪৮ সালের মে মাসে ইসরায়েলের স্বাধীনতার পর, আইএফএ নতুন রাষ্ট্রের সরকারী সংস্থা হয়ে ওঠে। ১৯৪৮ সালের ২৬শে সেপ্টেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অলিম্পিকের বিরুদ্ধে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলের জাতীয় দলের প্রথম ম্যাচ খেলেছিল। খেলাটি ১–৩ গোলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অলিম্পিক দল জয়লাভ করেছিল এবং খেলায় শ্মুয়েল বেন-ড্রর ২০তম মিনিটে গোল করে ইসরায়েল রাজ্য সৃষ্টি করার পর প্রথম গোল করেছিলেন।

র‌্যাঙ্কিং সম্পাদনা

ফিফা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে, ২০০৮ সালের নভেম্বর মাসে প্রকাশিত র‌্যাঙ্কিংয়ে ইসরায়েল তাদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ অবস্থান (১৫তম) অর্জন করে এবং ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত র‌্যাঙ্কিংয়ে তারা ৯৯তম স্থান অধিকার করে, যা তাদের ইতিহাসে সর্বনিম্ন। অন্যদিকে, বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিংয়ে ইসরায়েলের সর্বোচ্চ অবস্থান হচ্ছে ২৩তম (যা তারা ১৯৭৬ সালে অর্জন করেছিল) এবং সর্বনিম্ন অবস্থান হচ্ছে ৮১। নিম্নে বর্তমানে ফিফা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিং এবং বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিংয়ে অবস্থান উল্লেখ করা হলো:

ফিফা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিং
২১ ডিসেম্বর ২০২৩ অনুযায়ী ফিফা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিং[৩]
অবস্থান পরিবর্তন দল পয়েন্ট
৭৩     কাবু ভের্দি ১৩২৯.৮
৭৪     ওমান ১৩২৪.৮৯
৭৫     ইসরায়েল ১৩২৩.৪৩
৭৬     হন্ডুরাস ১৩১৩.৮
৭৭     জর্জিয়া ১৩১২.৪৫
বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিং
১২ জানুয়ারি ২০২৪ অনুযায়ী বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিং[৪]
অবস্থান পরিবর্তন দল পয়েন্ট
৫৯     বলিভিয়া ১৬১২
৬০   ১৩   প্রজাতন্ত্রী আয়ারল্যান্ড ১৬০৮
৬১     ইসরায়েল ১৬০৩
৬২     সৌদি আরব ১৫৮৫
৬৩   ২৬   কোস্টা রিকা ১৫৭৭

প্রতিযোগিতামূলক তথ্য সম্পাদনা

ফিফা বিশ্বকাপ সম্পাদনা

ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব
সাল পর্ব অবস্থান ম্যাচ জয় ড্র হার স্বগো বিগো ম্যাচ জয় ড্র হার স্বগো বিগো
  ১৯৩০ অংশগ্রহণ করেনি অংশগ্রহণ করেনি
  ১৯৩৪ উত্তীর্ণ হয়নি ১১
  ১৯৩৮
  ১৯৫০ ১১
  ১৯৫৪
  ১৯৫৮
  ১৯৬২ ১৩ ১৪
  ১৯৬৬ ১২
  ১৯৭০ গ্রুপ পর্ব ১২তম
  ১৯৭৪ উত্তীর্ণ হয়নি ১২
  ১৯৭৮
  ১৯৮২ ১০
  ১৯৮৬ ১৭
  ১৯৯০
  ১৯৯৪ ১০ ১০ ২৭
  ১৯৯৮
    ২০০২ ১১
  ২০০৬ ১০ ১৫ ১০
  ২০১০ ১০ ২০ ১০
  ২০১৪ ১০ ১৯ ১৪
  ২০১৮ ১০ ১০ ১৫
  ২০২২ অনির্ধারিত অনির্ধারিত
মোট ১/২৩ গ্রুপ পর্ব ১২২ ৪০ ৩৪ ৪৮ ১৬৬ ১৭৮

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "מס' הופעות בנבחרת" [No. of appearances in the national team] (Hebrew ভাষায়)। Israel Football Association। সংগ্রহের তারিখ ২৩ নভেম্বর ২০১৯ 
  2. "Mordechai Spiegler"RSSSF 
  3. "ফিফা/কোকা-কোলা বিশ্ব র‍্যাঙ্কিং"ফিফা। ২১ ডিসেম্বর ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০২৩ 
  4. গত এক বছরে এলো রেটিং পরিবর্তন "বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিং"eloratings.net। ১২ জানুয়ারি ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ১২ জানুয়ারি ২০২৪ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা