ভারতীয় রক
ভারতীয় রক হলো ভারতের একপ্রকার সঙ্গীতের ধারা৷ এটি ভারতীয় সঙ্গীতচর্চার সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত এবং এই রক সঙ্গীত মূলত ভারতকেন্দ্রিক৷ ভারতের শাস্ত্রীয় সঙ্গীত তথা উত্তর ভারতের হিন্দুস্তানী শাস্ত্রীয় সঙ্গীত এবং দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক সঙ্গীত বিশেষ সমাদৃৃত হলেও ফিল্মি সঙ্গীত, বলিউডের সঙ্গীত, ভারতীয় পপ, ভাংড়া ও ভারতীয় রকও সমানভাবে আলোচ্য৷
ভারতীয় রক | |
---|---|
শৈলীগত বূৎপত্তি | দক্ষিণ এশিয়া ভারতীয় সঙ্গীতচর্চা |
সাংস্কৃতিক বূৎপত্তি | ভারত, বাংলা |
প্রথাগত বাদ্যযন্ত্র | কণ্ঠসঙ্গীত, গ্রামাফোন, জ্যাজ, ভারতীয় বাদ্যযন্ত্র, বৈদ্যুতিন গিটার, জলদ্গম্ভীর গিটার, ড্রাম কিট, কিবোর্ড, সেতার |
ভারতের সঙ্গীত | |
---|---|
ধারা | |
| |
গণমাধ্যম ও অনুষ্ঠান | |
সঙ্গীত পুরস্কার | |
সঙ্গীত উৎসব | |
সঙ্গীত মাধ্যম | |
জাতীয়তাবাদী ও দেশাত্মবোধক গান | |
জাতীয় সঙ্গীত | জনগণমন |
অন্যান্য | বন্দে মাতরম্ |
অঞ্চলিক সঙ্গীত | |
| |
প্রারম্ভিক ইতিহাস
সম্পাদনাখ্রিস্টীয় বিংশ শতাব্দীর পঞ্চদশ (১৯৫০) ও ষোড়শ (১৯৬০) দশকের দিকে ভারতীয় গ্রামাফোন কোম্পানি (RCA/HMV/EMI এর সাহায্যপ্রাপ্ত) ভারতীয় অর্থনীতিতে বিপুল যোগদান করে৷ ঐসময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটিশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা লং প্লেয়িং রেকর্ড, এক্সটেণ্ডেড প্লে এবং গ্রামাফোন রেকর্ড অতিপ্রচলিত এবং সহজলভ্য ছিলো৷ উক্ত স্থান থেকে রক অ্যান্ড রোল পদ্ধতি আমদানিকৃত হলেও পরবর্তীকালে ভারতে স্বপ্রচেষ্টায় ভারতীয় রক ব্যান্ডগুলির প্রচলনও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পায়৷ ভারতে পাশ্চাত্য পপ সঙ্গীতগুলির প্রচলনে ফার্মব্যান্ডের আধিকারিক ভাস্কর মেনোনের অবদান অনস্বীকার্য, তিনি পরবর্তীকালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল রেকর্ডস এর আধিকারিকও নিযুক্ত হয়েছিলেন৷ পরে ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে পলিডোর রেকর্ডস নামক একটি জার্মান সংস্থা ভারতে রকসঙ্গীতের ব্যবসা শুরু করে৷
ঊনবিংশ শতাব্দীর ষাটের দশকের শেষদিক থেকে সত্তর দশকের শুরুর দিক অবধি বড় শহরগুলিতে বিট সঙ্গীতের একাধিক গোষ্ঠী তৈরী হয়, এগুলির মধ্যে মুম্বইয়ের মিসটিক মাদ্রাজের বিট-১০ এবং কলকাতার ফ্লিনস্টোন উল্লেখ্য ও জনচর্চিত৷ তারা ব্রিটিশ ইনভেশনের পূর্ববর্তী গানগুলি এবং এসজিটি পিপারের হার্ড রকগুলির আঙ্গিকেও গান রচনা করত৷ এইসময়ে দিল্লী থেকে অশ্বানী বালি (যিনি থান্ডারবার্ড ব্যান্ডের জন্য পরিচিত) এবং ব্রিটিশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে ওয়াফউট (ব্রিটিশ নাগরিক মার্ক স্পেভার্ক পরিচালিত) এই দুটি ভারতীয় ব্যান্ড নিয়মিত ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়গুলিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে তাদের রক সঙ্গীত পরিবেশন করতো, তাদের মধ্যে বেশ কিছু সঙ্গীত লং প্লেয়িং রেকর্ড, এক্সটেণ্ডেড প্লেতে তাঁদের গান মুক্তি পেতে সাফল্য পান৷ ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দ, এই সময়ের মধ্যে আফ্রো-আমেরিকান রিদম অ্যান্ড ব্লুজ গানগুলির ক্ষেত্রে মহিলা কণ্ঠস্বর হিসাবে ঊষা আইয়ার (বর্তমানে ঊষা উথুপ) সাফল্য পান৷ তিনি আমেরিকার জাম্বালায়া (অন দ্য বায়ৌ) এবং দ্য কিংস্টন ট্রায়ো ব্যান্ডের "গ্রীনব্যাক ডলার" গানদুটি গেয়ে প্রসিদ্ধি পান৷ একই গায়িকা একটি প্রতিযোগীতায় লং প্লেয়িং রেকর্ডে "সিমলা বিটস '৭০" এর একটি সংমিশ্রণ উপস্থাপন করলে তা আলোড়ন ফেলে৷ প্রতিযোগীতায় বিজয়ী ব্যান্ডটি একাধিক পাশ্চাত্য হার্ড রকের ভারতীয় সংস্করণ রেকর্ড করে৷ এই রীতিটি ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দ অবধি অনেক পাশ্চাত্যের একাধিক উল্লেখযোগ্য গানের ভারতীয় সংস্করণ রেকর্ড করতে সাফল্য পায়৷
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটিশ যুক্তরাষ্ট্রতে বহল প্রচলিত সান ফ্রান্সিসকোর রোলিং স্টোন, নিউ মিউজিক্যাল এক্সপ্রেস এবং সমসাময়িক ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে প্রথম প্রকাশিত ভারতের অন্যতম পত্রিকা স্টেটসম্যানেও এই রক অ্যান্ড রোল ধারাটির বিশেষ সমাদৃত হয়৷
ঐসময়ে পাশ্চাত্য রক সঙ্গীতগুলির সঙ্গীতজ্ঞদের মতো ভারতীয় রক সঙ্গীত পরিবেশকরা ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝি সময় থেকে তার পরবর্তী সময় অবধি রক সঙ্গীতের সাথে ভারতীয় শাস্ত্রীয় ধারার সংমিশ্রণ ঘটানোর প্রয়াস করেন৷ এই গানগুলির অধিকাংশই ফিল্মি সঙ্গীত, যা দেশব্যাপী একাধিক সঙ্গীতশিল্পীরা বলিউডের জন্য পরিবেশন করেন এবং তাই-ই স্বাধীন ভারতের রক সঙ্গীতের পাথেয় হয়ে ওঠে৷ বলিউডে ফাঙ্ক রক, পপ রক, সাইকেডেলিক রক, রাগ রক ও সফ্ট রক গানের ধারাগুলির মধ্যে শুরুর দিকের কিছু উল্লেখযোগ্য গানগুলি হলো, ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দের হিন্দি চলচ্চিত্র গুমনাম-এ প্রখ্যাত গায়ক মোহাম্মদ রফির গাওয়া "জান পেহেচান হো" গান, ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দের হিন্দি চলচ্চিত্র মুকাদ্দর কা সিকান্দর-এ প্রখ্যাত গায়ক কিশোর কুমারের গাওয়া "ও সাথী রে" গান, ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের হিন্দি চলচ্চিত্র হরে রাম হরে কৃষ্ণ-তে প্রখ্যাতা গায়িকা আশা ভোঁসলের গাওয়া "দম মারো দম" গান, ১৯৭২ এর অপরাধ সিনেমার "এয় নওজওয়ান হে সাব" এবং ১৯৭৮ এর বহুচর্চিত ডন হিন্দি চলচ্চিত্রের "ইয়ে মেরা দিল পেয়ার কা দিওয়ানা"৷
পাশ্চাত্য সঙ্গীতে ভারতের প্রভাব
সম্পাদনা১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে পাশ্চাত্য বিশ্বের বিভিন্ন নাটক তথা দ্য ইয়ার্ডবার্ডস, দ্য বিটল্স, দ্য রোলিং স্টোন, দ্য ডোরস এবং দ্য ব্যিরডস ইত্যাদি নাটকের সঙ্গীতাংশ ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত প্রভাবিত, যা পাশ্চাত্য সঙ্গীতে সাইকেডেলিক সঙ্গীতের শক্তিবৃদ্ধি করে৷ আবার জ্যাজ গায়ক, বিশেষত জন কোল্ট্র্যান ভারতীয় সঙ্গীত এবং আধ্যাত্মিকতার প্রতি আনুগত্য দেখান (আরও দেখুন জ্যাজে সেতারের ব্যবহার, ভারতে জ্যাজ সঙ্গীত)৷ ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে প্রথম রাগ রক গানের ওপর ভিত্তি করে জর্জ হ্যারিসন নরওয়েজিয়ান উড রক সঙ্গীতে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের প্রভাব দেখান এবং তারই প্রভাবে রবিশঙ্করের হাত ধরে ষাটের দশকে ভারতে রাগ রক গানের প্রবেশ৷ ১৯৬৭ তে এসজিটি পিপারের গান বেরোনোর পরে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত বুঝলে দ্য বাটল্স ব্যান্ডটি ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে উত্তরাখণ্ডে হৃষিকেশে মহর্ষি মহেশ যোগীর আশ্রমে এসেছিলেন৷ পরে রাগ রক সাইকেডেলিক রক-এর সাথে উন্নীত হয়, যা পর্যায়ক্রমে হেভি মেটাল সঙ্গীতের উৎপত্তি দেয়৷
ভারতীয় রক সঙ্গীত ও তার উপস্থাপনা বিশ্বজুড়ে আলোচ্য, যা একাধিক বিখ্যাত রক গায়ককে তুলে ধরে, তার মধ্যে ভারতীয় পারসি ফ্রেডি মার্কারি (জন্মগত ফারুখ বুলসারা) উল্লেখ্য৷ তার অনুপ্রেরণা ছিলেন বলিউড গায়িকা লতা মঙ্গেশকর৷[১] তিনি যুবাবয়সে মুম্বইয়ে দ্য হেক্টিক ব্যান্ডের হাত ধরে তার সঙ্গীত জীবন শুরু করেন৷ দ্য হেক্টিক ব্যান্ডটি ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত এবং পাশ্চাত্য রক অ্যান্ড রোল গায়ক লিটল রিচার্ড এবং ক্লিফ রিচার্ড ছিলেন ব্যান্ডটির সম্পাদনকারী৷[২] ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে ব্যান্ডটি ছেড়ে দেওয়ার পরে তিনি ইংল্যান্ডের দিকে রওনা দেন এবং সেখানে তিনি ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ কুইন ব্যান্ড তৈরী করেন, যা পাশ্চাত্য বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ট রক ব্যান্ডগুলির মধ্যে অন্যতম৷
বিদ্দু আপ্পাইয়া হলেন ভারতীয় রক সঙ্গীতের ধারা ডিসকো গানের[৩][৪] অন্যতম স্রষ্টা, তিনি ত্রোজান নামক ভারতীয় রক ব্যান্ডের মাধ্যমে তার রকগানের জীবন শুরু করেন৷ এটি ছিলো ভারতের প্রথম ইংরাজী ভাষার ব্যান্ড,[৫] যা ভারতে মুম্বই, কলকাতা এবং বেঙ্গালুরুতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পাশ্চাত্য সঙ্গীতের দ্য বিটলস[৬] দ্য রোলিং স্টোন্স,[৭] ত্রিনি লোপাজ প্রভৃৃতি ব্যান্ডগুলির ভারতীয় অনুকরণ ছিলো৷ ব্যান্ডটির সংগঠন ভেঙে যাওয়ার পরে ১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি ইংল্যাণ্ডে পারি দেন এবং সেখানে কার্ল ডগলাসের "কুং ফু ফাইটিং" নামক ডিস্কো ব্যান্ডে যোগদান করে অভুতপূর্ত সাফল্য পান৷
বিংশ শতাব্দীর আশি ও নব্বইয়ের দশক
সম্পাদনাষাট এবং সত্তরের দশকে পাশ্চাত্য রীতির প্রাচ্যকরণ ভারতীয় রক সঙ্গীতের মূল ছিলো, কিন্তু আশি ও নব্বইয়ের দশকে ভারতে এর বিকাশ ঘটতে থাকে এবং ভারত নিজেই একাধিক দেশীয় ব্যান্ড তৈরী করে রক অ্যান্ড রোল, পপ রক সহ হার্ড রক থেকে হেভি মেটাল সঙ্গীত সমস্তই নতুন নতুন উদ্ভাবন করা শুরু করে৷ আশির দশকের শুরুর দিকে রক সঙ্গীতের প্রভাব সামান্য কমে যায় এবং ডিসকোর প্রভাব বাড়তে থাকে, যা আশির দশকের মাঝামাঝি অবধি ভারতীয় পপ সঙ্গীতের ওপর বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে৷
এমটিভি আসার সাথে সাথে রক গানের স্বাদবদল শুরু হয়ে যায়, যা ভারতীয় রকব্যান্ডগুলিকে তাদের রকরীতি আরো উগ্র করতে সাহায্য করে এবং আরো জোড়ালো যন্ত্র ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করে৷ এমতাবস্থায় ডেথ মেটাল, অল্টারনেটিভ রক এবং প্রোগ্রেসিভ রকের ব্যবহার বৃৃদ্ধি পায়৷ একারণে নব্বইয়ের দশকে বিভিন্ন জোড়ালো ধরনের রক গানের শ্রোতা উত্তরোত্তর বৃৃদ্ধি পেতে থাকে৷ আশির দশকে মহেশ তিন্নৈকর, উদয় বেনেগাল প্রভৃৃতিদের তেরী "রক মেশিন" ব্যান্ডও (যা পরে ইন্ডাস ক্রিড নামে অধিক পরিচিতি পায়) এসময়ে নিজেদের পিশ্চাত্য ধরন বদল করে ও নতুন পদ্ধতি দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে তা গ্রহণ করে৷ উল্লেখযোগ্য সাবআর্বান মেটাল-ব্লু ব্যান্ডটিও ষাট ও সত্তরের দশকের পোয়াই নির্ভর এক্সাক্যালিবার বাদ দিলে অলিভার পিন্টু ও প্রশান্ত নায়ারের উদ্যোগে সেখানেও নতুন প্রযুক্তি ও হার্ড মেটালের আগমন হয়৷ এসময়ে পুনে, কলকাতা, আসাম|আসামের গুয়াহাটি ও মণিপুরে একাধিক রক ব্যান্ড তৈরী হয়৷ এগুলির মধ্যে পুনে থেকে ইজি মিট, কলকাতা থেকে হলোকাস্ট, মর্গ (কণ্ঠসঙ্গীত শিল্পী হিসাবে মৃৃণাল দাস, বাদক নিরাজ কাকোটি, গীটারে অম্বর দাস ও ঋজু শীল, খাদে মানস চৌধুরী), আসামের গুয়াহাটি থেক ডোরিয়ান প্লেটোনিক এবং মণিপুর থেকে গ্রাসরুট রিভাইভাল, পোস্টমার্ক, দ্য ক্যানিবাল, ডার্ক ক্রাসেডর প্রভৃতি৷
আবার নব্বইয়ের দশকে উচ্চাঙ্গভিত্তিক ধরনের ওপর প্রভাবিত হয়ে জনপ্রিয় রকসঙ্গীত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পপভিত্তিক ব্রিটপপ, অল্টারনেটিভ ধরনের পাংক রক তৈরী হয় এবং হার্ড মেটাল রকের মধ্যে থ্রাশ মেটালের ব্যবহার বৃদ্ধি পায়৷ ভারতীয় সঙ্গীত সংমিশ্রন(ফিউশন)-এর একটি উপধারা তৈরী হলে তা ভারতের শাস্ত্রীয় সঙ্গীত ও পাশ্চাত্য রক সঙ্গীতের মিশ্রনে রকগান থেকে রাগ রক তেরী করে৷ এই রাগ রকই পরবর্তীকালে আরো বিকশিত হয়ে ভারতের রক সঙ্গীতের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হয়ে ওঠে৷ ইস্কনভক্ত কণ্ঠসঙ্গীতশিল্পী বিজু গঙ্গাধরন সংস্কৃত রক ব্যান্ড " দ্য আর্মি অব নরসিংহ দেব" তেরী করেন, যা চরম সাফল্যের সাথে তার একমেবত্ব দিয়ে তৎকালীন সমাজে আলোড়ন ফেলে দেয়৷ বিজু গঙ্গাধরন ছিলেন একজন সংস্কৃৃত বিদ্বান এবং সংস্কৃত মন্ত্রের আধুনিক রককরণের পথিকৃৃৎ৷ তাঁকে সংস্কৃত রকগুরু আখ্যা দেওয়া হয়, যিনি স্বমহিমায় নিরলসভাবে তেত্রিশটি দেশের শ্রোতাদের সংস্কৃৃত রক সঙ্গীতে মোহিত করেন৷ তার ব্যান্ডের গীটারবাদক চন্দ্রেশ কুড়োয়া ছিলে তখনকার ভারতে একজন নামজাদা গীটারবাদক, তার পার্কাশনিস্ট নিশাধ চন্দ্র পরবর্তীকালে বলিউডের অন্যতম ব্যস্ত সঙ্গীত সঞ্চালক হয়ে ওঠেন৷ ঐ একই সময়ে পলাশ সেনের "ইউফরবিয়া" পাশ্চাত্য ও ইংরাজী রকের বিপরীতে ভারতকে উপস্থাপন করার মতো সমকক্ষ ছিলো৷ ব্যান্ডটি পরে হিন্দি ভাষাতেও রকগান লেখা শুরু করলে তারাই "হিন্দি রক" নামে হিন্দি ভাষর অপর একটি ব্যান্ড তৈরী করেন৷ ইউফরবিয়া এসময়ে ভারতের সর্বাধিক জনপ্রিয়তা পায়, এবং তাদের স্বাধীনসত্ত্বা ও নতুন উদ্ভাবনের দ্বারা যুবসমাজের ওপর বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে৷
একবিংশ শতাব্দী
সম্পাদনাহালে ভারতীয় রকগানের সর্বাধিক ভক্ত দেখা যায়, যা এখনো অবধি সর্বাধিক (যদিও রক সঙ্গীত ভারতের চলচ্চিত্র শিল্প তথা বলিউডের ফিল্মি সঙ্গীতের সমান জনপ্রিয়তা পায়নি)৷ রক ব্যান্ডগুলির মধ্যে অনেক ব্যান্ডই আমেরিকান ও জাপানী ব্যান্ডগুলির মতো আন্তর্জাতিকভাবে নিজেদের স্থান দখল করে নেয়৷ সাম্প্রতিককালে ভারতীয় রক সঙ্গীতের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি সাথে সাথে নতুন নতুন ধরন ও নতুন যন্ত্রাদি তেরীর প্রবণতাও বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ব্যান্ডগুলিতে আন্তর্জাতিক স্তরে পাশ্চাত্য রক ব্যান্ডগুলির সমতুল্য করে তুলেছে৷ বর্তমানে ডিজিটাল টেকনোলজির ক্রমোন্নয়নের সাথে ব্যান্ডগুলির ব্যাপ্তি ও শ্রোতা বৃদ্ধি করতে আগের মতো বেগ পেতে হয় না৷ স্বামী ব্যান্ডের মতো কিছু দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভুত ব্রিটিশ ব্যান্ড তাদের হিপ হপ গানের জন্য বিখ্যাত৷ তারা মূলত বিদেশে বসবাসকারী অনাগরিক ভারতীয়দের বাজার ধরে রেখেছেন, ইন্দো-কানাডীয় ও ইন্দো-আমেরিকীয়দের দেশজ রক সঙ্গীতের স্বাদ দিতে তারা বদ্ধ পরিকর৷ রুদ্র নামক অপর একটি ব্যান্ড এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী ভারতীয়দের দ্বারা তৈরী রকব্যান্ড, তারা মূলত এশিয়ার বিভিন্ন দেশে অনুষ্ঠান করে থাকেন৷ এই ধরনের সঙ্গীতধারাগুলি পুরোপুরিভাবে প্রগতি এবং শ্রোতাদেরসমর্থনের ওপর নির্ভর করে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখে৷ ভারতীয় রক ব্যান্ডগুলির গান ও তাদের ব্যবহৃৎ প্রযুক্তির নিদর্শন ছড়িয়ে দিতে "রোলিং স্টোন ইন্ডিয়া" এবং রক স্ট্রাট জার্নাল[৮] প্রভৃতি ম্যাগাজিন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে৷ ভারতীয় রকব্যান্ডের অনুষ্ঠান সরাসরি অনলাইনেও সম্প্রচার হয়ে থাকে এবং এই কাজে উল্লেখযোগ্য কিছু গণমাধ্যম হলো যথাক্রমে, "ইন্ডি মিউজিক ওয়েবসাইট এনএইচ৭,[৯] হেডবেঞ্জারস ইন্ডিয়া,[১০] ইন্ডিয়ান মিউজিক মাগ,[১১] আনহোলি মৌণ্ডার, ইন্ডিয়ান মিউজিক রিভলিউশন, ইন্ডিয়ান মেটাল সিন,[১২] মেটাল স্প্রী প্রভৃৃতি৷
উপবর্গসমূহ
সম্পাদনারাগ রক
সম্পাদনাপাশ্চাত্য থেকে দ্য বিটলস এর মতো বেশ কিছু রকব্যান্ড দল ভারতভ্রমণে আসে এবং তাদের সঙ্গীতে ভারতে সঙ্গীতের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের বাদ্যযন্ত্র তথা সেতারকে অন্তর্ভুক্ত করে সাইকেডেলিক গানগুলিকে চমকপ্রদ করে তোলেন৷ তারা এই মিশ্রগানের ধারাটির নাম দেন রাগ রক৷ রাগ রকের কিছু উদাহরণ হলো, দ্য বিটলসের "লাভ ইউ টু", "দ্য ইনার লাইট","অ্যাক্রস দ্য ইউনিভার্স","নরওয়েজিয়ান ঊড (দিস বার্ড হ্যাস ফ্লোন)", "টুমরো নেভার নোউস", "স্ট্রবেরি ফিল্ডস ফরএভার" এবং "উইদিন ইউ উইদাউট ইউ"; দ্য রোলিং স্টোনস'-এর "পেইন্ট ইট ব্ল্যাক"; দ্য কিঙ্কস'-এর "ফ্যান্সি"; দ্য ডোরস'-এর "দ্য এণ্ড" এবং দ্য বির্ডসের "এইট মাইলস হাই"৷ রবি শঙ্করের মতো একাধিক নামজাদা ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত গায়করা পাশ্চাত্য শিল্পীদের এই ধারাটিকে বজায় রাখতে সহযোগীতা করেছিলেন৷ ভারতীয় ব্যান্ডগুলি মূলত নিজে থেকেই আমেরিকায় রক এণ্ড রোলগুলির সুত্রপাত করেন এবং আস্তে আস্তে ফিল্মি ও ভারতীয় পপ সঙ্গীতগুলি তাদের জনপ্রিয় করে তোলে৷
ভারতীয় ফিউশন
সম্পাদনাভারতীয় সঙ্গীতের ধারার উপবর্গগুলিতে এমন ধারাও ছিলো যারা ভারতের শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের সাথে ভারতীয় রকের মিশ্রণ ঘটাতো৷ অ-ভারতীয় বা বিশেষ করে পাশ্চাত্য রকশিল্পীরা ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের বাদ্যযন্ত্র গ্রহণ করলে তবেই তা রাগ রকের অন্তর্ভুক্ত হয়৷ আবার ভারতীয় ফিউশনের পরিধিতে ভারতীয় পপ গায়ক ও চলচ্চিত্র পরিচালকরা সুবিধা হলো শাস্ত্র সঙ্গীত ব্যবহার করতো, যা সত্তরর দশকে প্রথম অমিতাভ বচ্চন ক্লাসিক্স-এর মাধ্যমে জনসমক্ষে আসে৷ ব্রাউন ইন্ডিয়ান ব্যান্ড-এর চিন্তাভাবনায় প্রথম জ্যাজ বিশারদদের সাথে শাস্ত্রীয় ধারার সঙ্গীতজ্ঞদের এক মঞ্চে পরিবেশনা দেখা যায়৷ সাম্প্রতিককালে বহুসাংস্কৃতিক ব্রিটিশ ব্যান্ড বোটাউন বলিউডি গানকে ভিত্তি করে তার সাথে তাদের সাথে ফাঙ্ক মিঅজিকের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে প্রাণোচ্ছল করে তোলে৷ নতুন দিল্লীর ব্যান্ড "ওজাপলি"ও আসামের অনেক লোকসঙ্গীতের সাথে ইলেক্ট্রোনিকা ফিউশন করা গান উপাস্থাপন করে সাফল্য পেয়েছে৷ আবার কোচির "মদর্জেনে" একই ধরনের ফিউশন তৈরী করে বিখ্যাত৷ মদর্জেনের গীটারবাদক বায়জু ধর্মজনই প্রথম কর্ণাটক সঙ্গীতের সাথে গীটারদের মিশ্রণ ঘটান, যা কর্ণাটিক শ্রেডিং নামে পরিচিত৷ বেঙ্গালুরুর রকব্যান্ড অগম "ডিভাইন রাগ", "কাভ", "বীনার" প্রভৃতি বেশকিছু ফিউশন তেরী করেছে, যা ভারতে অন্যতম শ্রেষ্টত্ব পেয়েছে৷[১৩] গানের ফিউশনের জগতে কর্ণাট্রিক্স ব্যান্ডটি 'নিউ-এজ ওয়ার্ল্ড মিউজিক' (নবযুগীয় বিশ্ব সঙ্গীত) উপমা পেয়েছে৷ একবিংশ শতাব্দীতে তাদের নিজেদের তৈরী নিবন্ধিত সুরগুলি আদর্শগত ও সাংস্কৃৃতিকভাবে বেশ সুসঙ্গত৷ "কর্ণাট্রিক্স" এর আক্ষরিক অর্থ কর্ণকপট, যা তাদের গানের মধ্যেও ফুটে ওঠে৷ ভারতীয় শাস্ত্রীয় ধারার শ্রুতিমধুর সুর, বাস্তববুদ্ধিসম্পন্ন বিবরণ ও প্রাণোচ্ছলতার সাথে রকের সংঘর্ষে সূক্ষ্মতা বাড়ে ও তার প্রভাব স্পষ্ট হয়, যা কর্ণাট্রিক্স ব্যান্ডের বৈশিষ্ট্য৷ ভারতীয় গীটারবাদক কপিল শ্রীবাস্তব তার "ইন্ডিয়ান গিটারো"-এর প্রথম খণ্ডে রাগ ও রক সঙ্গীতের সুন্দর মেলবন্ধন করছেন৷[১৪]. রক এন্ড রোলের সাথে কর্ণাটক সঙ্গীতের মিশ্রণে দিল্লীতে তৈরী বায়জু ধর্মজন ও রামস্বামী প্রসন্ন মহাশয়ের "দ্য আইয়র প্রজেক্ট"টি হলো আরেকটি বিখ্যাত সঙ্গীতকর্ম৷
ভারতীয় ফাঙ্ক
সম্পাদনারক অ্যান্ড রোল ধারাটির সাথে পপসঙ্গীত এবং অন্যান্য ধরণগুলির মিশ্রণে তৈরী ভারতীয় ফাঙ্ক সঙ্গীতগুলি৷ ভারতীয় ফিউশন সঙ্গীতগুলি যেরকম রক, পপ এবং অন্যান্য পাশ্চাত্য ধারাগুলির সাথে সামঞ্জস্য রেখে ভারতীয়করণ এবং শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের মিশ্রণ, সেরকমই ভারতীয় ফাঙ্ক হলো র্যাপ-মেটাল ও হেভি মেটালের মিশ্রণ, যেখানে র্যাপ-মেটাল পপনাচ সহ বিশুদ্ধ রকের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ৷ পাশ্চাত্য দেশগুলি যেমন ব্রিটেনে দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভুতদের ব্যান্ডগুলিতে এই ভারতীয় ফাঙ্কের ধরণটি অতিপরিচিত৷ স্বামী ব্যান্ড এবং এশিয়ান ডাব ফাউন্ডেশন ইউকে গ্যারেজ, ভাংড়ার বাদ্য এবং তার সাথে ফনোগ্রাফিক হিপ হপ সঙ্গীতের মিশ্রণ ঘটিয়েছে৷ আমেরিকার বিভিন্ন দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভুতদের প্রেরণায় এবং ফাঙ্কেডেলিক-এর মতো বোটাউন ব্যান্ডটি বলিউডি একাধিক গানের বিভিন্ন খণ্ড নিয়ে তার সাথে ফাঙ্ক সুর যুক্ত করে নতুন আঙ্গিক দিয়েছে৷ দিল্লির কিছু রকব্যান্ড যেমন "সায়লেন্ট ইকো" এবং " সাইকো ফ্রিকোয়েন্সি" বিস্তরপাল্লার কৃৃত্রিমভাবে সৃষ্ট আওয়াজ ব্যবহার করে৷ ২০০৫ সালে সংগঠিত চণ্ডীগড়ের স্বস্তিক দ্য ব্যান্ড,[১৫] ভারতীয় সংস্কৃৃতির অবিচ্ছেদ্য হিন্দুস্তানি সাংস্কৃৃতিক সঙ্গীতের সাথে বিভিন্ন অন্যান্য সঙ্গীত রীতির মেলবন্ধন এবং বিশেষ করে ভারতীয় সঙ্গীতে পাশ্চাত্য ছন্দ ব্যবহার করে লোকসঙ্গীত এবং সুফি সঙ্গীতের মিশ্রণ ঘটিয়ে নতুনভাবে সুররচনা করে৷ স্বস্তিক দ্য ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা এবং ব্যান্ডটির মুখ্য কণ্ঠশিল্পী ও গীটারবাদক রোহিত জোশি জন গ্রীনের "সাম পিপল হ্যাভ লাইভস; সাম পিপল হ্যাভ মিউজিক", অর্থাৎ কিছু লোকের জীবন মূল্যবান আবার কারোর গান, এই লাইনটির দ্বারা অনুপ্রাণিত৷
রক অ্যান্ড রোল
সম্পাদনাভারত একাধিক রক ব্যান্ডের স্রষ্টা, এদের মধ্যে কিছু ব্যান্ড ভারতীয় মূলধারার গীতরীতিকে ভিত্তি করে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃৃতি পেয়েছে৷ মুম্বইয়ের একটি আসন্ন রক আরএলসি ৬৬ বিভিন্ন ধারার পাশ্চাত্য সঙ্গীতের সংমিশ্রণ করার সফল চেষ্টা করে চলেছে৷ তারা পাশ্চাত্য রক পর্কুপাইন ট্রি, টুল, ড্রিম থিয়েটার থেকে অনুপ্রাণিত৷ মুম্বইতে "এবরাপ্ট" গানটি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে৷ ভারতীয় গীটারবাদক কপিল শ্রীবাস্তব তার "ইন্ডিয়ান গীটারো"-এর দ্বিতীয় খণ্ডে একাধিক রক অ্যান্ড রোল ফিউশন রচনা করেছেন৷[১৬]
২০১৫ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে মুম্বইয়ের রক অ্যান্ড রোল বেসিস্ট বিবেক ডেট ব্যান্ড তার রক অ্যান্ড রোল আলবাম "র্যাপিং পেপার" বের করে৷[১৭] আলবামটি শ্রোতৃবৃৃন্দের কাছে উষ্ণ অভ্যর্থনা পান এবং ২০১৫ খ্রিস্টাব্দের অন্যতম শ্রেষ্ট রক অ্যান্ড রোল সঞ্চালনার জন্য পরিদর্শকদের দ্বারা আলোচিত হয়৷
হার্ড রক ও হেভি মেটাল
সম্পাদনাবৈদিক মেটাল
সম্পাদনাঊনবিংশ শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকে দক্ষিণ ভারতের মাদ্রাজ "মেটাল এলায়েন্স ইন ডেভিল্স সৌল" নামক একটি হেভি মেটাল এবং রক ব্যান্ড প্রতিষ্ঠিত হয়৷ সিঙ্গাপুরের ব্যান্ড রুদ্র প্রাথমিকভাবে তাদের হেভি মেটাল স্তরে বিশ্বজনীন সনিক শব্দের ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক ব্যাপ্তি পায়৷ তারা তাদের হিন্দু শাস্ত্রভিত্তিক "বৈদিক মেটাল" ব্যবহার করে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়াতে খ্যাতি পায়৷ ব্রাজিলের হেভি মেটার ব্যান্ড সেপালচুরার ভঙ্গিতে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের সাথে হেভি মেটাল সংমিশ্রিত করে তারা আঞ্চলিক সাফল্য পান৷ যদিও তারা এক্ষেত্রে আভান্ত-গার্দে সন্ত্রাদি ব্যবহার করেননি৷ আমেরিকা, জার্মানি এবং অন্যান্য বিভিন্ন রাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সমালোচকদল এই মিশ্রণকে প্রলাপ হিসাবে উল্লেখ করেন৷
১৯৯০ এর দশকের শেষের দিকে রুদ্র ব্যান্ড এই নতুন ধারাটি শুরু করলে পরে এটি বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করে৷ "উইংস অব বয়রাগ" (ভারত), "আর্যদেব" (ইউক্রেন), "সিমেট্রি" (ইন্দোনেশিয়া), "ওয়ারিয়র অব পিস" (ভারত), "অসুর" (ভারত), "অদ্বৈত" (ভারত), "দ্য আর্য মার্চ" (ভারত), "ভৈরব" (ভারত), "মাধাবা'স রক ব্যান্ড" (ভারত), "নরসিংহ" (সিঙ্গাপুর), "কলিযুগ" (সিঙ্গাপুর), "আজরায়েল" (অস্ট্রেলিয়া), "ডাইং আউট ফ্লেম" (নেপাল), "ব্লু রিভার" (শ্রীলঙ্কা), "পুণর্জন্ম" (ভারত) এবং "কার্তিকেয়" (রাশিয়া) প্রভৃৃতি রকব্যান্ডগুলি এই উপবর্গের প্রবর্ত্তক৷ প্রায়শই বৈদিক স্তুতি ছাড়াও ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের বিভিন্ন আঙ্গিক ব্যবহার করা হয়৷ অন্তিমযুদ্ধ ও রক্তবীজ ব্যান্ডদুটি হেভি মেটাল ধারার এই নতুন বৈদিক উপবর্গের আগমন ভারতীয় রক সংস্কৃৃতির আন্তর্জাতিক বিকাশ ঘটায়৷ এই উপবর্গের রুদ্র ব্যান্ডের দ্বারা ২০০১ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত চূড়ান্ত আলবামটি হল "দ্য আরিয়ান ক্রাসেড"৷ এছাড়াও ভারত একাধিক হেভি মেটাল ব্যান্ডের উদ্ভাবক, যারা স্থানীয় বিভিন্ন ধরনের ভাষার লোকসঙ্গীতগুলির সাথে হেভি মেটালের সংমিশ্রণে লোক মেটাল বা ফোকমেটালের নতুন ধারার উদ্ভাবন করে৷ ভারতীয় রক উল্লেখযোগ্যভাবে সাংস্কৃৃতিক প্রবণতার ওপর প্রভাবিত, শুধু তাই না এইধরনের ব্যান্ডগুলি তাদের রকগানে নিজস্বতার প্রকাশও ঘটায়৷ ভারতীয় রক ও ভারতীয় সঙ্গীতজ্ঞরা বিশ্বজনীন অন্যান্য গায়কদের সাথে কার্যগত একত্রিত৷
হেভি মেটাল
সম্পাদনা১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দে "মিলেনিয়াম" নামে ভারতের প্রথম মেটাল ব্যান্ডটি তৈরী হয়, যা ভারতের রকের ইতিহাসে ভারতীয় হেভি মেটালের পাথেয়৷ একবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে ভারতীয় চূড়ান্ত মেটালের নিদর্শন হলো মুম্বইয়ের ডেমোনিক রিজারেকশন৷ এই ধারাটির তখন ভারতে দুর্লভ ছিলো ফলে এটি বিশেষ জনপ্রিয়তা পায় এবং তা "করোডেড ড্রিমস", "এসচার'স নট", "ক্রিপ্টেড", "বেস্টিয়াল মার্ডার" প্রভৃৃতি ব্যান্ডের সৃৃষ্টি করে৷ এছাড়াও দেশজ বিভিন্ন ব্যান্ড তাদের কাঁচা শব্দের ব্যবহার ত্যাগ করে ব্ল্যাক মেটাল ধারাতে হেভি মেটালের প্রয়োগ বাড়ায়৷ বেঙ্গালুরুর "ডার্ক ডিসোলেশন" এবং চেন্নাইয়ের "ফর্টিফায়েড ডেস্ট্রাকশন" ব্যান্ডদুটিও একইরকম সিদ্ধান্ত নেয়৷ চেন্নাইয়ের বহুচর্চিত চূড়ান্ত মেটাল ব্যান্ডগুলি বৈদিক চরিত্র তথা শিব, ব্যাসদেব প্রভৃৃতিদের চরিত্রচিত্রণও করেছেন তাকে রকসঙ্গীতে, যার মধ্যে অভিজিৎ রাওয়ের "এসচার'স নট" এবং "ফর্টিফায়েড ডেস্ট্রাকশন" অগ্রগণ্য৷ শুধু তাই না তারা তাদের শ্রুতিমধুর কণ্ঠস্বর ছাড়াও তাদের গীটারের ব্যবহার অভুতপূর্ব৷ অন্যান্য রাষ্ট্রের "বেহেমথ", "গোজিরা" এবং "ক্র্যাডেল অব ফিল্থ" প্রভৃতি চূড়ান্ত মেটাল ব্যান্ডগুলিও ভারতে তাদের অনুষ্ঠান করেন৷ আনডাইং আইএনসি, জিগনিমা, ভয়ানক মৌত, আলবাট্রস, নয়েসওয়্যার, এব্রাক্সাস, ডিভয়েড, স্ক্রিপচার, ক্রিপ্টোস, দ্য ডাউন ট্রডেন্স, ক্রিপ্টেড, হালাকুয়া, ইনার স্যাংটাম, স্ক্রাইব এবং কসমিক ফিউশন প্রভৃৃতি হেভি মেটাল ব্যান্ডও ভারতে পদার্পণ করে৷ এইসময়ে ভারতের নতুন ব্যান্ডগুলি হেভি মেটাল এবং এক্সট্রিল মেটাল মিউজিকের ওপর মনোনিবেশ করা শুরু করে এবং ভারতে হেভি মেটাল গিগের প্রচলন শুরু হয়৷ কিছু দিনের মধ্যেই এটি বেশ প্রচলিত হয় এবং অর্কাস, কার্নেজ আইএনসি, প্রিমিটিভ, ইটার্নাল রিটার্ন, কিলচেইন প্রভৃতি ব্যান্ড প্রসিদ্ধি পায়৷ কেন্দ্রীয় ভারতের ইন্দোর শহর থেকে নিকোটিন ব্যান্ডটি ভারতে হেভি মেটাল সঙ্গীতের অন্যতম পথিকৃৃৎ৷ সাম্প্রতিক কালে ভারতে ভারতীয় নিজস্বরীতিতে এক্সট্রিম মেটাল ব্যান্ডগুলি বেশ জনপ্রিয়তা পায়৷ এই নতুন ধারায় অন্যতম উল্লেখ্য নাম হলো "ব্রজেন মোলোক" ব্যান্ড৷[১৮][১৯][২০][২১][২২][২৩][২৪][২৫][২৬][২৭][২৮]
আঞ্চলিক গানের দৃৃশ্য
সম্পাদনাভারতের রক সঙ্গীতকে আলাদা আলাদা দৃশ্যে বিভক্ত করে দেখার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শহরভিত্তিক প্রচুর রক ব্যান্ড তৈরী হয়েছিলো৷
ভারতে প্রায় নিয়মমাফিক নতুন নতুন ভারতীয় রক ব্যান্ডগুলির পরিচিতলাভের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ঠিকানা ছিলো শিলং, কলকাতা, মুম্বই এবং বেঙ্গালুরু শহর৷[২৯]
ব্যাঙ্গালোর দৃশ্য
সম্পাদনাবেঙ্গালুরুর শহরাঞ্চলে সবচেয়ে প্রচলিত গানের ধারাটি হলো রক এবং মেটাল সঙ্গীত৷ শাস্ত্রীয় , রাগ রক, এক্সট্রিম মেটাল এবং রক অ্যান্ড রোল এর প্রায় সবধরনগুলিই ব্যাঙ্গালোরে হতে দেখা যেত৷ ভারতীয় ফাঙ্ক সঙ্গীতগুলিও শহরটিতে প্রশসংশিত ছিলো৷ তৎকালে শিলং কে রক এবং মেটাল সঙ্গীতের মূলক্ষেত্র বলে উল্লেখ করা হলেও ব্যাঙ্গালোর কোনো দিক থেকে কম ছিলো না৷ বেঙ্গালুরুতে বিপুল সংখ্যক রক ব্যান্ডের দল রয়েছে, সেগুলি হলো; ইউনইয়া, সোলস্কেপ, মৌন, রঘু দীক্ষিত প্রজেক্ট, ডিভাইন রাগ, আর্হ, থার্মাল এন্ড এ কোয়ার্টার, গিরীশ এণ্ড দ্য ক্রনিক্যালস, ক্রিপ্টোস ব্যান্ড, দ্য ডাউন ট্রডেন্স (এটি মূলত কেরালার কুন্নুরবাসীদের ব্যান্ড), কালমন্যান্ট, ডার্ক লাইট, অল্টারনেটিভ টাইস,নিওলিথিক সাইলেন্স, অ্যাবান্ডান্ট অ্যাগনি, থিওরাইজড, স্বরামৃৃত, ইনার স্যাংটাম, আগম, স্লেইন, ক্রাঅন উইথ এ ফ্রোন, এলেগ্রো ফাজ, ব্ল্যাক সান, অল দ্য ফ্যাট চিল্ডরেন, জে৩, দ্য বাইসাইকেল ডেজ, প্রলয়ঃ, দ্য ইউজুয়াল সাসপেক্টস, ফাইনাল সারেন্ডার, ক্রাশ টিভি, এসেন্ট্রিক পেণ্ডুলাম, ক্রসরোডস, অর্কিড, হাংরি ব্যান্ড, বাফার জোন, পারফেক্ট স্ট্রেঞ্জার, এক, স্বরাত্মা, ইস্টার্ন ফেয়ার এবং গালিজ গুরুস৷ "ভারতীয় রক ফেস্টিভাল" অনুষ্ঠানে বর্তমানে তিনটি উল্লেখ্য ব্যান্ড হলো গ্রেট ইন্ডিয়ান রক, ডেকান রক এবং রক এন ইন্ডিয়া৷ ভারতের একমাত্র বেঙ্গালুরু শহরেই ওপেথ, আয়রন মেইডেন, দ্য রোলিং স্টোনস, ব্রায়ান অ্যাডামস, স্কর্পিয়ন্স, স্টিং, এরোস্মিথ, এলটন জন, ডিপ পার্পল, মেটালিকা, স্লেয়ার, মেগাডেথ প্রভৃৃতি একাধিক জনপ্রিয় হেভি মেটাল রকগুলি লাইভ অনুষ্ঠান করেছে৷[৩০]
রক গানের দুনিয়ায় ব্যাঙ্গালোরের বারগুলিরও সাংস্কৃতিক প্রভাব রয়েছে, এইক্ষেত্রে কাইরা, বি ফ্ল্যাট এবং লেজেন্ডস অব রক অনেক প্রশংসনীয় অনুষ্ঠান করে আসছে৷[৩১] শহরটিতে আয়রন মেইডেন, ল্যাম্ব অব গড, ব্রায়ান অ্যাডামস, স্কর্পিয়ন্স, স্টিং, এরোস্মিথ, এলটন জন, মেটালিকা, স্লেয়ার, মেগাডেথ প্রভৃৃতি রক ব্যান্ডগুলি বেঙ্গালোরে "ডেকান রক", রায়পুরে "ব্র্যাথ ফেস্ট" ছাড়াও "গ্রেট ইণ্ডিয়ান রক", "রক এথোস" প্রভৃতি দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে বেঙ্গালুরুর রকসঙ্গীত চর্চার মুখোজ্জ্বল করছে৷
চেন্নাই দৃশ্য
সম্পাদনাতামিল নাড়ু রাজ্যের আড়িয়ার অঞ্চলের বিনোদন কেন্দ্রগুলির দ্বারা আয়োজিত "জুন রক আউট" অনুষ্ঠানটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ৷ এছাড়াও চেন্নাই ও বেঙ্গালুরু শহরে "ইউফোনি", "সেপ্টেম্বর আন্ডারগ্রাউন্ড", "লাস্ট ব্যান্ড স্ট্যান্ডিং" অনুষ্ঠানগুলি প্রাত্যহিকভাবে এবং "লিভ ১০১" সাপ্তাহিকভাবে অনুষ্ঠিত হয়৷ চেন্নাইয়ের মূলধারার "রিকোয়েম ইঞ্জাস্টিস", "গ্রাসহপার গ্রীন" এবং "নাম্মা ওরু বয় ব্যান্ড" প্রভৃৃতি খ্যাতনামা রকব্যান্ডের গানগুলি "দ্য ব্যান্ডস এসোসিয়েশন অব চেন্নাই" নামক সংস্থার দ্বারা সক্রিয়ভাবে প্রচারিত হওয়া ছাড়া এবিষয়ে বিভিন্ন আলোচনা করা হয়৷
দিল্লি দৃশ্য
সম্পাদনাদিল্লির সঙ্গীতবর্তনী শুরু থেকেই উত্থান ও পতনের সাথে এগিয়ে গেছে, তা সত্ত্বেও দিল্লিতে রকগানের প্রচার রয়েছে একমাত্র রক স্ট্রীট জার্নালের কারণে৷ দিল্লি এলাহাবাদ-ভিত্তিক ম্যাগাজিনগুলির পরীক্ষামূলক স্থান এবং তার নিকটবর্তী, ফলে স্থানীয় ব্যান্ডগুলি অনুপ্রেরণা প্রথম রক ও মেটাল সঙ্গীতের বিভিন্ন কাহিনী ও তার প্রসারের ধাপগুলি৷ রাজধানী অঞ্চল হওয়ার দরুন প্রথম দিকে "দ্য গ্রেট ইণ্ডিয়ান রক ফেস্টিভাল" অনুষ্ঠানটি দিল্লীতেই হত, যদিও পর তা কলকাতা, মুম্বই, উত্তর-পূর্ব ভারত ও পুনেতেও অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা সঙ্গীতজগতে নতুন শিল্পীদের জন্য একটি উন্মুক্ত দ্বার৷[৩২] দিল্লির উল্লেখযোগ্য ব্যান্ডগুলি হলো, অরেঞ্জ স্ট্রিট, পরিক্রমা, হাণ্ড্রেড অক্টেন, ইন্ডিয়ান ওশন ব্যান্ড, দেম ক্লোন্স, মেনহুপস, বন্দিশ, অদ্বৈত ব্যান্ড, ফরিদকোট ব্যান্ড, অন্তর্ধ্বনি, পাঙ্খ,[৩৩][৩৪] মিডিভাল পণ্ডিতস, আনডাইং আইএনসি, মৃগয়া ব্যান্ড, গিলোটিন ব্যান্ড, দ্য আইয়ার প্রজেক্ট প্রভৃৃতি৷
হায়দ্রাবাদ দৃশ্য
সম্পাদনাহায়দ্রাবাদ শহরে স্লেজ, রেকেজ, নেটিভ টাং রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃত পায় এবং বর্তমানে নিজের বৈশিষ্ট্য বজায় রেখেছে৷ তারা ২০০৪, ২০০৫ এবং ২০০৬ খ্রিস্টাব্দে পরপর তিনবার "ক্যাম্পাস রক আইডল" অনুষ্ঠানে শ্রেষ্ঠ রক ও মেটাল ব্যান্ড হিসাবে জয়ী হয়েছে৷ ভারতের সমস্ত শিল্পনগরীগুলিতে প্রায় মুক্ত সামাজিক অনুষ্ঠানে গিগ এবং ভারতীয় রক বিশেষ স্থান পেয়েছে৷
কেরালা দৃশ্য
সম্পাদনাকেরালা রাজ্য ভারতকে অন্যতম সফল ও শ্রেষ্ট ভারতীয় রক ব্যান্ড ১৩এডি দিয়েছে৷ কেরালার বেশ কিছু সুশ্রাব্য রকব্যান্ড ও গায়করা হলেন, মদরজেনে ব্যান্ড, আভিয়াল ব্যান্ড, দ্য ডাউন ট্রোডেন্স, তাইকুড়াম ব্রিজ, এভারগ্রীন ব্যান্ড, গীটারবাদক সুমিত, সঞ্জীর থমাস, বায়জু ধর্মজন, রেক্স বিজয়ন প্রমুখ৷[৩৫]
ইন্দোর দৃশ্য
সম্পাদনামুলধারার রক বা মেটাল সঙ্গীতের ভ্রাতৃৃসঙ্ঘ প্রাথমিকভাবে মধ্য ভারতের ইন্দোর শহরে আখর বসানোকে উপেক্ষা করে গেলেও ২০০০ খ্রিস্টাব্দে "ডার্ক হাউস" রস ব্যান্ডের সাফল্য এই ধারণার বদল ঘটায়৷ শহরটিতে মেটাল সঙ্গীত অধিক জনপ্রিয়তা পেলেও রাগ রক, অল্টারনেটিভ, হার্ড রক ডেথ মেটাল প্রভৃতি অন্যান্য ধারাগুলির ব্যান্ডের জনপ্রিয়তাও কম ছিলো না৷
২০০৬ খ্রিস্টাব্দের ডিসম্বর মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে তৈরী নিকোটিন ব্যান্ডটি শুধু ইন্দোর নয় সমগ্র মধ্য ভারতে মেটাল সঙ্গীতের সূচনা করে৷[২৩][৩৬][৩৭][৩৮] ২০১৪ খ্রিস্টাব্দে "জিরো গ্র্যাভিটি" নামক শহরের অপর একটি মেটাল ব্যান্ড "হলোকাস্ট এওয়েটস" নামে পূর্ণ আকারের একটি অ্যালবাম প্রকাশ করে৷[৩৯]
মধ্য ভারত থেকে "নিকোটিন", "ব্লিস" এবং "গ্রিম রিপার্স" এই তিনটি ব্যান্ডই "ক্যাম্পাস রক আইডল" অনুষ্ঠানটির জন্য মনোন্নয়নের যোগ্য সুযোগ পায়৷ শহরে বর্তমানে কিছু সক্রিয় ব্যান্ড হলো "সিজলেস জংশার" এবং "পার্সেপসন অ্যাজ রিয়ালিটি"৷ "অ্যাভালাঞ্চ", "অক্সিলিয়ারি ট্রায়াঙ্গেল", "অ্যাসল্ট", "ওভারড্রাইভ", "ব্লাইন্ডফোল্ডস" প্রভৃতি ব্যান্ড শহরের বাইরে একাধিক অনুষ্ঠানে সাফল্য পেলেও বর্তমান দলভঙ্গ৷ ইন্দোর দৃশ্য বিশেষত মুক্ত দৃৃশ্য হলেও শহরের বাইরের "ব্ল্যাকসি", "জিগনিমা", "ডেমোনিক রিজারেকশন", "আনডাইং আইএনসি", "অ্যালবাট্রস" প্রভৃৃতি ব্যান্ড এই শহরে একাধিকবার অনুষ্ঠান করেছে৷
কলকাতা দৃশ্য
সম্পাদনাকলকাতার ক্রসউইন্ডস, ক্যাসিনিজ ডিভিশন, স্কিনি অ্যালে, দ্য সুপারসনিকস, স্প্যান, ফাইভ লিটিল ইন্ডিয়নস প্রভৃতি ব্যান্ডগুলি কলকাতায় ইংরাজী রকগানের উদ্ভাবক৷ কলকাতায় বিরাট সংখ্যক স্থানীয় রক ব্যান্ড রয়েছে যা দেশের অন্যান্য বাঙালি-অবাঙালি ও বিদেশেও বিভিন্ন অঞ্চলে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে৷ তাদের মধ্যে ফসিলস্, ক্যাকটাস, চন্দ্রবিন্দু, ক্রসউইন্ডস, ভূমি, লক্ষ্মীছাড়া, এলিয়ান্স, ক্রস থিওরি - ইন্ডিয়া, ফকিরা, অগ্নীশ, পৃথিবী, মেটালয়েডস - ইন্ডিয়া, দশমিক-ধূপগুড়ি প্রভৃৃতি৷
কলকাতার কালীঘাটের তপন থিয়েটারে ২০০৯ খ্রিস্টাব্দে আন্ডারগ্রাউন্ড মেটাল ব্যান্ডগুলি "দ্য পিট" নামে একটি একটি সফল অনুষ্ঠান আয়োজন করে৷ হালে শহরে "কলকাতা ওল্ড স্কুল মেটাল অ্যাসোসিয়েশন"-এর মতো অনেক মেটাল সঙ্গীতের আয়োজন হতে দেখা যায়৷ অন্যান্য আয়োজনগুলি হলো, "অ্যাবোমিনেশন", "অর্ডার অব দ্য হেরেটিকাল ট্রাইডেন্ট ফেস্টিভাল" এবং "কলকাতা ওপেন এয়ার"৷ বাংলা ভাষায় মেটাল গিগ সংগঠনগুলি বহু সাধারণকে আকৃৃষ্ট করেছে৷ ২০১৩ খ্রিস্টাব্দ থেকে কলকাতায় "দ্য এনএইচ৭ উইকেন্ডার নামক বার্ষিক আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়৷[৪০]
মহীনের ঘোড়াগুলি হলো বাংলা ভাষায় কলকাতা একটি জনপ্রিয় স্বতন্ত্র সঙ্গীতদল৷ এটি দ্বিধাহীনভাবে লোকসঙ্গীত নিয়ে তৈরী ভারত তথা বাংলার প্রথম রকব্যান্ড৷[৪১][৪২]
মুম্বই দৃৃশ্য
সম্পাদনামুম্বইয়ের সমকালীন কিছু নামকরা রক ব্যান্ডগুলি হলো পেন্টাগ্রাম, টাফ অন টোবাকো, ভয়ঙ্কর মৌত, ডেমোনিক রিজারেকশন, স্প্লিট, শ্রীধর/থায়িল, স্ক্রাইব এবং গডেস গ্যাগড৷ হালে ভারতীয় রকের অন্যতম স্রষ্টা ইন্ডাস ক্রিড|ইন্ডাস ক্রিডের পুণর্গঠন যুবকদের মধ্যে নতুন উদ্যম যুগিয়েছে৷[৪৩] সম্প্রতি ২০১১ খ্রিস্টাব্দে তারা নতুন একটি অ্যালবামও প্রকাশ করেছে৷
মুম্বইয়ের দীর্ঘদিন ধরে চলা রক অনুষ্ঠানটি হলো ইন্ডিপেন্ডেন্স রক ফেস্টিভাল৷ ২০১০ খ্রিস্টাব্দে জনপ্রিয় ব্যান্ড আই-রক তার ২৫ তম বর্ষপূর্তি করেছে৷ ইন্ডিপেন্ডেন্স রক ২৫ সংগঠনটি শহরের বিভিন্ন স্থানীয় ব্যান্ডগুলি নিয়ে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে৷ সাম্প্রতিক কালে ইন্ডার ক্রিড দলটির পুণর্মিলন অনুষ্ঠানটির শিরোনামে আসে যা স্থানীয় ভয়ঙ্কর মৌত, স্ক্রাইব, ডেমোনিক রিজারেশন ও প্রলয় ব্যান্ড নিয়ে গঠিত হয়৷ এর মধ্যে যুগান্তরী সঙ্গীতজ্ঞ ধ্রুব ঘানেকর,ওয়ারেন মেন্ডোঁসা,লয় মেন্ডোঁসা, ঈশান নূরানী, ফারহাদ ওয়াদিয়া (অনুষ্ঠানটির সম্পাদক), রবি আইয়র, চন্দ্রেশ কুড়োয়া, শাজনীন আরেথ্না এবং সিড কুওট্টো রয়েছেন৷
পুণে দৃৃশ্য
সম্পাদনামহারাষ্ট্রের পুনে শহর অতিসম্প্রতি ভারতীয় রক বর্তনীতে প্রবেশ করেছে৷ শহরটির রক ইতিহাস পুরাতন হলেও তা হালে আবার নতুন করে জনপ্রিয়তা পায়, রকব্যান্ডগুলি হলো, "সিলভার", "স্ট্রেঞ্জ ব্রিউ", "জ্যাজ মেটস", "নাথিং অ্যাস নাও" এবং আরো অন্যান্য৷ দুই যমজ শহর মুম্বই এবং পুনের একসাথে লাইভ অনুষ্ঠান জনসাধারণের কাছে বেশ আকর্ষনীয় হয়ে ওঠে, অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যান্ডগুলি হলো, মেশুগ্গাহ, টেসরাক্ট, স্যাটারিকন, ফ্রিক কিচেন এবং সাহগ. পুনেতে নভেম্বর মাসে বার্ষিক রক "এনএইচ৭ উইকেন্ডার" নামক রক অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়৷ তারা মুলত ব্রিটিল ভারতীয় ব্যান্ডগুলিকে আমন্ত্রণ জানায় যেমন, ইমোজেন হিপ, দ্য ম্যাজিক নাম্বারস, এশিয়ান ডাব ফাউন্ডেশন, রেভারেন্ড সাউন্ডসিস্টেম এবং অন্যান্য আরো অনেক৷
রেকর্ডিঙের স্বাধীনসত্ত্বা
সম্পাদনাকিছু ব্যাতিক্রম ছাড়া ভারতে মূলধারার রেকর্ডিং গুলোতে রক গানকে প্রায়শই উপেক্ষা করা হয়৷ কিন্তু তাদের অ্যালবামগুলি শত থেকে সহস্রের পাল্লায় বিক্রী হতো৷ এগুলি সার্বিকভাবে খুব কম ক্ষেত্রেই ভারতীয় সঙ্গীত উদ্যোগের আওতায় আসে ফলে অ্যালবাম বিক্রী সঞ্চালনা করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে৷ বলিউডের গানগুলি স্বভাবতই ব্যান্ডের গানের চেয়ে অধিক জনপ্রিয়তা পায়, যা ছিলো ব্যান্ডের পক্ষে খুব ক্ষতিকর৷ ব্যান্ডগুলির অ্যালবাম গানের বৃহত্তর সংগ্রহশালাগুলিতে গৃৃহীত হলেও সারা দেশে তার প্রচলন করা ছিলো অসম্ভব, এর কারণ হিসাবে সাধারণের রক গানের প্রতি অনীহাকে চিহ্নিত করা যায়৷ গুটিকয়েক ব্যান্ডই তাদের অ্যালবামকে ভারতব্যাপী ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়৷ জনসাধারণ তাদের প্রিয় ব্যান্ডের গানগুলি সহজেই কোনো ওয়েবসাইটে পেয়ে যেত, তাও আবার নতুন গান প্রকাশে দু-এক দিনের মধ্যেই৷ এই পদ্ধতি কপিরাইট লঙ্ঘন করলেও এর বিরোধ করার কেউ ছিলো না৷ ফলে অ্যালবাম বিক্রীর পরিমান আশানুরূপ হতো না৷ ভারতীয় ব্যান্ডগুলি প্রায়শই খুব অল্প দামের টিকিটে লাইভ অনুষ্ঠান করতো৷ যদিও বাড়ন্ত এবং আগামী প্রজন্মের মধ্যে ভারতীয় রক ও মেটাল সঙ্গীতের বিপুলতা বাড়ছে বলে আশা করা হলেও শিল্পের স্বার্থে এই গানের কপিরাইট করা আটকানোর জন্য তদারকি প্রয়োজন৷
ভবিষ্যত প্রজন্মকে আকৃষ্ট করতে এবং রক সঙ্গীতকে নতুন রূপ দানে গ্রীন ওজোন, ডগমা টোন রেকর্ডস, ককিম, ইস্টার্ন ফেয়ার মিউজিক ফাউন্ডেশন, ইনফেস্টডেড রেকর্ডস-এর নাম অনস্বীকার্য[৪৪][৪৫] এঁরা প্রতিনিয়ত ভারতীয় রক সঙ্গীতকে ভালোবেসে তার প্রসার বাড়িয়ে চলেছেন৷
ভারতীয় রক নিয়ে তথ্যচিত্র
সম্পাদনা২০০৮ খ্রিস্টাব্দে সঙ্গীত সাংবাদিক অভিমন্যু কুকরেজা নিউজএক্স চ্যানেলটির প্রযোজনায় "রকুমেন্টারি - বিকামিং অব ইন্ডিয়ান রক" নামে একটি তথ্যচিত্র পরিচালনা করেন, যা পরে ন্যাশনাল টিভিতেও মুক্তি পায়৷ তথ্যচিত্রটি নিঃসন্দেহে ভারতীয় রক নিয়ে এই ধরনের প্রথম উদ্যোগ যেখানে ১৯৬০ থেকে বর্তমান সময় অবধি ভারতীয় রকের বিবর্তনকে তুলে ধরা হয়েছে৷ তথ্যচিত্রটি "দ্য গ্রেট বিয়ার", "হাই", "দ্য গ্রেট সোসাইটি", "শিবা", "ইন্ডাস ক্রিড", "মিলেনিয়াম" ও "পরিক্রমা"র মতো জনপ্রিয় ও প্রথম শ্রেণীর রক ব্যান্ডগুলি নিয়ে তৈরী৷ তথ্যচিত্রটি ইউটিউবে দর্শকদের জন্য সহজলভ্য৷[৪৬]
২০১০ খ্রিস্টাব্দে জয়দীপ বর্মার পরিচালনায় ইন্ডিয়ান ওশন ব্যান্ডটির গান "লিভিং হোম" ছিলো ফিউশন রক ব্যান্ডের একটি উদাহরণ৷ ব্যান্ডটি তথ্যচিত্রের বিষয়বস্তু হিসাবে আলোচিত হওয়া ভারতের প্রথম রকব্যান্ড৷[৪৭] ২০১০ খ্রিস্টাব্দে ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অনুষ্ঠানে তথ্যচিত্রটি শ্রেষ্ঠ সাংস্কৃতিক তথ্যচিত্র পুরস্কার পায়৷[৪৮][৪৯]
প্রতিবন্ধকতা
সম্পাদনাকাশ্মীরের শ্রীনগরে মহিলাচালিত একটি রক ব্যান্ড প্রগাশ প্রতিনিয়ত ঘৃৃৃণ্য ইমেল এবং ইন্টারনেটে মৃত্যুহুমকি পায়৷ এইরকম ধর্মীয় গুরুদের থেকে আসা সমালোচনা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের ঔদাসীন্যের কারণে তারা তাদের ব্যান্ড বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়৷
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Fitzpatrick, Liam (২০০৬)। "Farrokh Bulsara"। Time। ২৩ মে ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ এপ্রিল ২০১২।
- ↑ Hodkinson, Mark (২০০৪), Queen: The Early Years, London: Omnibus Press, পৃষ্ঠা 2 & 61, আইএসবিএন 1-84449-012-2
- ↑ James Ellis। "Biddu"। Metro। ২ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ এপ্রিল ২০১১।
- ↑ The Listener, Volumes 100-101। The Listener। BBC। ১৯৭৮। পৃষ্ঠা 216। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুন ২০১১।
Tony Palmer knocked off a film account of someone called Biddu (LWT), who appears to have been mad enough to invent disco music.
- ↑ Malika Browne (২০ আগস্ট ২০০৪)। "It's a big step from disco to Sanskrit chants, but Biddu has made it"। The Sunday Times। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মে ২০১১।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ Alan Jones & Jussi Kantonen (২০০০)। Saturday night forever: the story of disco। A Cappella Books। আইএসবিএন 1-55652-411-0। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুন ২০১১।
- ↑ Sangita Gopal & Sujata Moorti (২০০৮)। Global Bollywood: travels of Hindi song and dance। University of Minnesota Press। পৃষ্ঠা 99। আইএসবিএন 0-8166-4579-5। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুন ২০১১।
- ↑ "Rolling stone"। সংগ্রহের তারিখ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪।
- ↑ "NH7 Radio"। সংগ্রহের তারিখ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪।
- ↑ "HeadBangers India"। ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪।
- ↑ "Interview with UFO's guitarist Vinnie Moore"। সংগ্রহের তারিখ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪।
- ↑ "IMR"। ৫ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪।
- ↑ Bangalore - Music Malt
- ↑ "ZeeNews"। ZeeNews। সংগ্রহের তারিখ ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫।
- ↑ https://www.facebook.com/swastiktheband
- ↑ "RadioandMusic"। RnMNewsDesk। সংগ্রহের তারিখ ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫।
- ↑ "Wrapping Paper | Debut album by Bassist Vivek Date"। Vivek Date (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৬-০৩-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১০-২৯।
- ↑ "Does Indore have the mettle for metal?"। dnasyndication.com। ৬ মে ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০১৫।
- ↑ "Metal mania"। educationinsider.net। ১৫ মার্চ ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০১৫।
- ↑ "Indore has a bandtastic time!"। dnaindia.com। ২০১৬-০৩-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০১৫।
- ↑ "The 10 Famous Rock Bands of India - Sinlung"। sinlung.com। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০১৫।
- ↑ "Best Rock Bands In India"। indiaonline.in। ২১ আগস্ট ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০১৫।
- ↑ ক খ "The 10 Famous Rock Bands of India"। walkthroughindia.com। ১২ আগস্ট ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০১৫।
- ↑ "Almost There: 6 Awesome Indian Music Bands To Look Forward To"। Youth Ki Awaaz। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০১৫।
- ↑ "# 12 Prominent Indian Rock Bands Who Gave a New Definition To The Music ."। Witty9। ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০১৫।
- ↑ "12 Cities That are Home to Awesome Bands and You Probably Din't Know It!"। Travel India। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০১৫।
- ↑ Neelima K। "Top 10 Rock Bands in India"। Top List Hub। ২ জুন ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০১৫।
- ↑ "DNA E-Paper - Daily News & Analysis -Mumbai,India"। dnaindia.com। ২০১৬-০৩-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০১৫।
- ↑ 16 Rock Bands from North-East India you don't want to miss, Music Malt
- ↑ "Metallica in India - EF News International"। ৯ মে ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০১৯।
- ↑ "Karnataka – The Hindu"। ১২ আগস্ট ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০১৯।
- ↑ "Bangalore - G-News"। ২৪ নভেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০১৯।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৪ জুলাই ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০১৯।
- ↑ http://www.nme.in/punkh-set-to-soar-with-new-album/
- ↑ Avial
- ↑ "All hail the headbangers, They are in Indore's Hall of Fame"। DNA E-Paper, Daily News & Analysis, Mumbai, India, dnaindia.com। ২০১৬-০৩-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০১৩।
- ↑ "Metal Mania feat Nicotine & Dirge at Hard Rock Cafe, Hyderabad"। liveinstyle.com। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মার্চ ২০১৬।
- ↑ "An interview with Nicotine, One of the top Metal bands of India"। trendingtop5.com। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০১৬।
- ↑ https://www.discogs.com/Zero-Gravity-Holocaust-Awaits-/release/7431887
- ↑ The Telegraph – Calcutta
- ↑ "Song of the stallion"। The Times of India। ২১ জুন ২০০৯। ২২ নভেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০১৯।
- ↑ Moheener Ghoraguli
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৪ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০১৯।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৭ আগস্ট ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০১৯।
- ↑ http://www.metal-rules.com/metalnews/2012/08/23/india-gets-a-new-metal-label-signs-nwobhm-legend-savage-uk/
- ↑ "Documentary by Abhimanyu Kukreja"। Newsx।
- ↑ "Indian Ocean co-founder Susmit Sen quits band"। NDTV। ১২ জুন ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-১১-১৭।
- ↑ "58th National Film Awards"। International Film Festival of India। ১৪ এপ্রিল ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মার্চ ২০১২।
- ↑ "58th National Film Awards (PDF)" (পিডিএফ)। Directorate of Film Festivals। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মার্চ ২০১২।