আশা ভোঁসলে
আশা ভোঁসলে (মারাঠি: आशा भोंसले, আশা ভোঁস্লে; জন্ম: ৮ সেপ্টেম্বর ১৯৩৩) একজন ভারতীয় গায়িকা। মূলত তিনি হিন্দি সিনেমার নেপথ্য সঙ্গীত গাওয়ার জন্য বিখ্যাত। আশা ভোঁসলে ভারতের জনপ্রিয়তম গায়িকাদের মধ্যে একজন। ১৯৪৩ সাল থেকে আরম্ভ করে তিনি ষাট বছরেরও বেশি সময় ধরে গান গেয়ে চলেছেন। তিনি তার সঙ্গীত জীবনে মোট ৯২৫টিরও বেশি সিনেমায় গান গেয়েছেন। মনে করা হয় তিনি ১২০০০ এরও বেশি গান গেয়েছেন। ২০১১ সালে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস তাঁকে সর্বাধিক সংখ্যক গান রেকর্ডকারী হিসেবে ঘোষণা করে[১]। ভারত সরকার তাঁকে ২০০৮ সালে পদ্মভূষণ উপাধিতে ভূষিত করে।[২]
আশা ভোঁসলে आशा भोंसले | |
---|---|
![]() ২০১৫ সালে আশা ভোঁসলে | |
জন্ম | আশা মঙ্গেশকর ৮ সেপ্টেম্বর ১৯৩৩ |
পেশা | গায়িকা, নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী |
কর্মজীবন | ১৯৪৩ - বর্তমান |
দাম্পত্য সঙ্গী | রাহুল দেব বর্মন |
সন্তান | ৩ (হেমন্ত ভোঁসলে, বর্ষা ভোঁসলে, আনন্দ ভোঁসলে) |
আত্মীয় | লতা মঙ্গেশকর |
সঙ্গীত কর্মজীবন | |
ধরন | পপ, লোকসংগীত, ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত |
প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা
আশা ভোঁসলে ১৯৩৩ সালের ৮ই সেপ্টেম্বর সঙ্গিল রাজ্যের (বর্তমান মহারাষ্ট্রে অবস্থিত) সঙ্গিল জেলার গৌড়ে এক সঙ্গীত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা দীনানাথ মঙ্গেশকর ছিলেন মারাঠি ভাষী গোমন্থক মারাঠা সমাজের সদস্য এবং মারাঠি সঙ্গীত মঞ্চের একজন অভিনেতা ও শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী। ভোঁসলের যখন নয় বছর বয়স, তখন তার পিতা মৃত্যুবরণ করেন। তার পরিবার পুনে থেকে কোহলাপুর এবং পরে মুম্বইয়ে চলে আসে। তিনি ও তার বড় বোন লতা মঙ্গেশকর তাঁদের পরিবারের ভরণপোষণের জন্য চলচ্চিত্রে গান গাওয়া ও অভিনয় শুরু করেন। তার গাওয়া প্রথম গান হল মারাঠি ভাষার মাঝা বল (১৯৪৩) চলচ্চিত্রে "চল চল নব বল"। গানটির সুরায়োজন করেছিলেন দত্ত দবজেকর। তার হিন্দি চলচ্চিত্রের গানে অভিষেক হয় হংসরাজ বেহলের চুনারিয়া (১৯৪৮)-এ "সাবন আয়া" গানে কণ্ঠ প্রদানের মাধ্যমে।[৩] তার প্রথম একক হিন্দি চলচ্চিত্রের গান ছিল রাত কী রানী (১৯৪৯) চলচ্চিত্রের জন্য।
সঙ্গীত জীবন সম্পাদনা
গায়িকা জীবনের বিশেষ সময় সম্পাদনা
তার গায়িকা জীবনকে খতিয়ে দেখলে চারটি সিনেমাকে চিহ্নিত করা যায়। এগুলো তার কেরিয়ারের বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে স্বীকৃত। এ ছবিগুলো হলো: নয়া দৌড় (১৯৫৭), তিসরি মঞ্জিল (১৯৬৬), উমরাও জান (১৯৮১) এবং রঙ্গীলা (১৯৯৫)।
সঙ্গীত পরিচালকদের সঙ্গে কাজ সম্পাদনা
ও. পি. নয়্যার সম্পাদনা
ও. পি. নয়্যারের সাথে আশার প্রথম সাক্ষাৎ হয় ১৯৫২ সালে "ছম ছম ছম" গানের রেকর্ডিঙে।[৪] নয়্যার প্রথম আশাকে মঙ্গু (১৯৫৪) চলচ্চিত্রের গানের জন্য ডাকেন এবং সিআইডি (১৯৫৬) চলচ্চিত্রের গানের মাধ্যমে তাঁকে সুযোগ দেন। যাই হোক, নয়া দৌড় (১৯৫৭) চলচ্চিত্রের গান দিয়ে এই যুগল জনপ্রিয়তা অর্জন করে।[৫] ১৯৫৯ সালের পর তারা দুজনে প্রেম ও পেশাদারী সম্পর্কে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে পড়েন।
নয়্যার ও ভোঁসলে যুগল মনোমুগ্ধকর গানের মাধ্যমে স্মরণীয় হয়ে আছেন। এই যুগলের রেকর্ডকৃত কয়েকটি গান হল হাওড়া ব্রিজ (১৯৫৮) ছবিতে মধুবালার উপর চিত্রায়িত "আইয়ে মেহেরবান", মেরে সনম (১৯৬৫) ছবিতে মুমতাজের উপর চিত্রায়িত "ইয়ে হ্যায় রেশমি জুলফোঁ কা আন্ধেরা"। কিসমত ছবির "আও হুজুর তুমকো" এবং মেরে সনম ছবির "যাইয়ে আপ কাহাঁ" গানগুলোও জনপ্রিয়তা লাভ করে। এছাড়া তারা তুমসা নহীঁ দেখা (১৯৫৭), এক মুসাফির এক হাসিনা (১৯৬২) ও কাশ্মীর কী কলি (১৯৬৪) ছবির জন্য গান রেকর্ড করেন। নয়্যার আশা ভোঁসলে-মোহাম্মদ রফি যুগলকে তার কয়েকটি জনপ্রিয় গানে ব্যবহার করেন, সেগুলো হল নয়া দৌড় ছবির "উড়ে জব জব জুলফেঁ তেরি", এক মুসাফির এক হাসিনা ছবির "ম্যাঁয় প্যায়ার কা রাহি হুঁ" এবং কাশ্মীর কি কলি ছবির "দিওয়ানা হুয়া বাদল" ও "ইশারোঁ ইশারোঁ মেঁ"। নয়্যারের জন্য গাওয়া আশার শেষ গান ছিল প্রাণ যায়ে পার বচন না যায়ে (১৯৭৪) ছবির জন্য।
খৈয়াম সম্পাদনা
আশার প্রারম্ভিক কর্মজীবনে অপর একজন সঙ্গীত পরিচালক তাঁকে সুযোগ দেন, তিনি হলেন মোহাম্মদ জহুর খৈয়াম। এই যুগলের প্রথম কাজ ছিল বিবি (১৯৪৮) ছবিতে। ১৯৫০-এর দশকে আশা খৈয়ামের সঙ্গীত পরিচালনায় বেশ কিছু কাজ করেন, তন্মধ্যে রয়েছে দর্দ ও ফির সুবাহ হোগি। এই যুগল উমরাও জান ছবির গানের জন্য সবচেয়ে বেশি স্মরণীয়।[৬]
রবি সম্পাদনা
সুরকার রবি আশাকে তার অন্যতম প্রিয় সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে গণ্য করেন। আাশা তার বেশ কিছু জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের জন্য গান রেকর্ড করেন, সেগুলো হল ওয়াক্ত, চৌধবীঁ কা চাঁদ, গুমরাহ, বহু বেটি, চায়না টাউন, আদমি অউর ইনসান, ধুন্দ ও হামরাজ। চৌধবীঁ কা চাঁদ ছবির জন্য রবি চেয়েছিলেন গীতা দত্ত (চলচ্চিত্রটির অভিনেতা ও প্রযোজক গুরু দত্তের স্ত্রী) গানগুলো গাইবেন। কিন্তু তিনি অস্বীকৃতি জানালে গুরু দত্তের অনুরোধে আশাকে দিয়ে গানগুলো গাওয়ানো হয়।[৩]
শচীন দেববর্মণ সম্পাদনা
১৯৫৭ থেকে ১৯৬২ সালের মধ্যে বলিউডের অন্যতম প্রখ্যাত সুরকার শচীন দেববর্মণ ও তার প্রিয় সঙ্গীতশিল্পী লতা মঙ্গেশকরের বিরূপ সম্পর্ক চলাকালীন শচীন তার গানের প্রধান নারী কণ্ঠের জন্য আশাকে ব্যবহার করেন।[৭] এই যুগল একাধিক চলচ্চিত্রে হিট গান উপহার দেন, তন্মধ্যে রয়েছে কালা পানি, কালা বাজার, ইনসান জাগ উঠা, লাজয়ন্তী, সুজাতা ও তিন দেবিয়াঁ।
রাহুল দেব বর্মণ সম্পাদনা
আশা ও রাহুল দেববর্মণের প্রথম সাক্ষাৎ হয় যখন আশা দুই সন্তানের জননী এবং সঙ্গীত নিয়ে কর্মজীবন শুরুর লক্ষ্যে স্কুল থেকে ছিটকে পড়েন। তাঁদের প্রথম কাজ ছিল তিসরি মঞ্জিল (১৯৬৬) ছবিতে।[৫] এই যুগল পরবর্তীকালে ক্যাবারে, রক, ডিস্কো, গজন ও শাস্ত্রীয়সহ বিভিন্ন ধারার গান রেকর্ড করেন।
১৯৭০-এর দশকে আশা ও রাহুল বলিউডে পশ্চিমা ধারার গান নিয়ে আসেন ক্যারভান ছবিতে হেলেনের উপর চিত্রায়িত "পিয়া তু আব তো আজা", হরে রাম হরে কৃষ্ণ (১৯৭১) ছবিতে "দম মারো দম", আপনা দেশ (১৯৭২) ছবিতে "দুনিয়া মেঁ" এবং ইয়াদোঁ কি বারাত (১৯৭৩) চলচ্চিত্রতে "চুরা লিয়া হ্যায় তুমনে" গানের মধ্যে দিয়ে।
এ আর রহমান সম্পাদনা
এ আর রহমানকে রঙ্গিলা (১৯৯৪) ছবির গানের মাধ্যমে আশাকে ফিরিয়ে আনার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রদান করা হয়। এই ছবির "তানহা তানহা" ও "রঙ্গিলা রে" গান দুটি বিভিন্ন তালিকায় শীর্ষ স্থান দখল করেছিল। রহমানের সাথে তার অন্যান্য গানগুলো হল তক্ষক ছবির "মুঝে রং দে, লগান ছবিতে উদিত নারায়ণের সাথে "রাধা ক্যায়সে না জলে", তাল ছবির "কাহিঁ আগ লাগে", দাউদ ছবিতে কে জে ইয়েসুদাস সাথে "ও ভাঁওরে", ইরুভার ছবিতে "ভেনিলা ভেনিলা", আলাইপায়ুদে (২০০০) ছবিতে "সেপ্টেম্বর মাধম" এবং মীনাক্ষী (২০০৪) ছবিতে "ধুঁয়া ধুঁয়া।[৩]
হিন্দি সিনেমার বাইরে অন্যান্য গান সম্পাদনা
বাংলা গান সম্পাদনা
আশা ভোঁসলে বাংলা সিনেমার জন্য বহু ছবিতে নেপথ্য সঙ্গীত গেয়েছেন। এছাড়া তিনি বাংলা আধুনিক গান এবং রবীন্দ্রসঙ্গীতও গেয়েছেন অনেক। আশা ভোঁসলের বাংলা আধুনিক গানের তালিকা:
- কথা হয়েছিল
- আমি ভাবছি ভাবছি ভাবছি নাকি দেখছি দেখছি দেখছি দেখছি
- এক নায়িকা একাই ছিল
- আজ গুন গুন গুন কুঞ্জে আমার
- গুঞ্জনে দোলে যে ভ্রমর সুর তোলে মে
- তুমি সূর্য তুমি চন্দ্র তুমি গ্রহ তারা হে
- বেঁধেছি বিনা
- কোন সে আলোর স্বপ্ন নিয়ে
- পা ভাঙেনি মন ভেঙেছে
- ছোট্ট সে ছেলেবেলা
- একটু ছোঁয়া একটু দেখা
- প্রেম কিসে হয়
- ও তোমারি চলার পথে
- হায়রে কালা একি জ্বালা বাঁশি শুনে ঘরে রইতে পারিনা
- বন্ধঘরের অন্ধকারে থাকবো না
- চাইনা আমার রেশমি চুরি
- ঘুমপাড়ানি গানে কবে
- আলো আর আলো দিয়ে
- তুমি আমার নয়ন গো
- ক্ষনিকের খুশি পেতে গিয়ে হায়
- আমি মন দিয়েছি
- বেশি কি বলি
- যাব কি যাব না ভেবে ভেবে
- বাজলো যে ঘুঙরু
- ছোট্ট একটা ভালোবাসা
- একই সাথে হাত ধরে একই পথে চলবো
- তুমি কত যে দূরে
- এ মন আমার হারিয়ে যায় কোনখানে
- লুকাবো প্রেম কি করে
- শোনো মন বলি তোমায়
- ফিরে এলাম দূরে গিয়ে
- খুব চেনা চেনা মুখখানি তোমার
- ভেবেছি ভুলে যাবো
- বাঁশি শুনে কি ঘরে থাকা যায়
- গুন গুন করে মন
- না না কাছে এসোনা
- আরো দূরে চলো যাই
- ও ডিয়ার আজ কী আর
- কত না ভাগ্যে আমার
- ছোট্ট সে ছেলেবেলা
- জীবনের সার তুমি
- বন্ধ মনের দুয়ার দিয়েছি খুলে
- আধো আলো ছায়াতে
- কি যেন আবির ছড়িয়ে দিল
- আজ আমি অচেনা যে
- কথা দিলাম
- আমার স্বপ্ন তুমি
- নাগোর আমার কাঁচা বেল পাকতে দিল না
- ছেড়োনা ছেড়োনা হাত
- মন বলছে কেউ আসবে
- বাজে ঢোল তাক ধিনা ধিন
- জানা অজানা পথে চলেছি
- আরো কাছাকাছি আরো কাছে এসো
- একটু বসো চলে যেও না
- খেলবো হোলি রং দেবোনা
- আমি জানিনা কেন তোমায় ভালোবাসি
- বহু আশা নিয়ে ভালোবাসা নিয়ে
- চিরদিনই তুমি যে আমার
- আমার ইচ্ছে করছে ভালবাসতে
- আমি মন দিয়েছি
- দেওয়া নেওয়া মন তোমার সাথে
- না ডেকো না ডেকো না গো মরে
- আজ দোলে মন কার ইশারাতে
- আর কত রাত একা থাকবো
- এসো আলো এসো হে
- আমার মনেরইঅঙ্গনে সুখের ফাগুন এলো বুঝি
- সীতার আগুনে আমাকে পোড়াতে পারবে
- কাছে আছো তুমি
- ও তোমারি চলার পথে
- ফিরে এলাম দূরে গিয়ে
- তোল ছিন্ন বীণা বাঁধো নতুন তারে
- এমন মধুর সন্ধ্যায় একা কী থাকা যায়
- গুন গুন গুন গুন মনভ্রমরা
- একি ভালোবাসা
- সন্ধ্যাবেলায় তুমি আমি বসে আছি দুজনে
- বলো বলো তুমি মোরে
- আকাশে সূর্য আছে যতদিন।
- আকাশে আজ রঙের খেলা।
- ছন্দে ছন্দে গানে গানে।
- চোখে চোখে কথা বল।
- যে গান তোমায় আমি শোনাতে চেয়েছি
- খুব চেনা চেনা মুখখানি তোমার
- কিনে দে রেশমী চুড়ী
- লক্ষ্মীটি দোহাই তোমার
- মহুয়ায় জমেছে আজ
- মনের নাম মধুমতি
- ময়না বল তুমি
- নাচ ময়ূরী নাচ রে
- ফুলে গণ্ধ নেই
- পোড়া বাঁশী শুনলে
- সন্ধ্যা বেলায় তুমি আমি
- যেতে দাও আমায় ডেকো না
- আমি খাতার পাতায় চেয়েছিলাম
- চোখে নামে বৃষ্টি
- থুইলাম রে মন পদ্ম পাতায়
- কথা দিয়ে এলে না
- বধুয়া রিমি ঝিমি এই শ্রাবণে
- তুমি কত যে দুরে
- কোথা কোথা খুঁজেছি তোমায়
- না ডেকো ডেকো না গো মোরে
- আসবো আরেক দিন আজ যাই
- কি যাদু তোমার চোখে
- একটা দেশলাই কাঠি জ্বালাও
- কে যে আমার ঘুম ভাঙ্গিয়ে গেল
- জীবন গান গাহি কি যে
- যাব কি যাব না
- ভেবেছি ভুলেই যাব
- মাছের কাঁটা খোঁপার কাঁটা
- এই এদিকে এসো এসোনা
- গা পা গা রে সা
|}
ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা
তার দিদি বা বড় বোন হচ্ছেন তার মতোই আরেক জনপ্রিয় গায়িকা লতা মঙ্গেশকর।
খ্যাতিমান গায়ক এবং সুরকার শচীন দেববর্মনের পুত্র ও বিখ্যাত সঙ্গীত পরিচালক এবং সুরকার রাহুল দেববর্মন ছিলেন তার দ্বিতীয় স্বামী। তাঁদের সংসারে তিন সন্তান রয়েছে। তন্মধ্যে ২য় সন্তান বর্ষা ভোঁসলে ৮ অক্টোবর, ২০১২ তারিখে লাইসেন্সকৃত আগ্নেয়াস্ত্র মাথায় ঠেকিয়ে আত্মহত্যা করেন।[৮]
লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা সম্পাদনা
সঙ্গীতজীবনে দীর্ঘ ৫ দশক সেরা শিল্পীর দৌড়ে ছিলেন এই দুই বোন। ১৯৫৭ সালে নয়া দৌড়, আশা, নবরঙ্গ, মাদার ইন্ডিয়া, দিল দেকে দেখো, পেয়িং গেস্ট প্রমুখ চলচ্চিত্রে একেরপর এক হিট গান গেয়ে লতাকে হটিয়ে রাতারাতি বলিউডের শীর্ষস্থান পেয়ে যান আশা, যার পুরোটাই ওপি নায়ারের বদৌলতে। ১৯৫৮ সালে হাওড়া ব্রিজ, কাগজ কে ফুল, ফাগুন প্রমুখ ছবির মাধ্যমে জয়যাত্রা অব্যাহত রাখেন। তবে বেশিদিন শীর্ষস্থান ধরে রাখতে পারেননি তিনি। কারণ, ওপি নায়ার ছাড়া বাকি সব প্রথমসারির সুরকারদের প্রথম পছন্দ ছিল লতা। তাই, ১৯৫৯ সালেই পুর্বের ছন্দ ফিরে পান লতা।তবে, ১৯৭০এর দশকে লতাকে একেবারে হাড্ডাহাড্ডি টক্কর দেন আশা। কারণ, লক্ষ্মীকান্ত পেয়ারেলাল যেমন লতাকে সব ছবিতেই প্রাধান্য দিতেন তেমনি আর ডি বর্মন আর কল্যাণজি আনন্দজী প্রাধান্য দিতেন আশাকে। এছাড়া লতা যেমন হেমা মালিনী, রাখী, মুমতাজ, মৌসুমী চ্যাটার্জির জন্য চিরস্থায়ী কন্ঠ ছিলেন তেমনি আশার কন্ঠ আরোপ করা হত জীনাত আমান, পারভীন ববি, রেখা ও শর্মিলা ঠাকুরের প্রতিটি ছবিতে।
পুরস্কার সম্পাদনা
১৯৭৭ সাল পর্যন্ত আশা ভোঁসলে সাতবার ফিল্মফেয়ার সেরা নেপথ্য গায়িকার পুরস্কার পেয়েছেন। ১৯৭৭ সালের পর তিনি জানান যে তার নাম যেন আর ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের জন্য গণ্য করা না হয়। ২০০১ সালে তিনি 'ফিল্মফেয়ার আজীবন সম্মাননা পুরস্কার' পান।
তথ্যসূত্র সম্পাদনা
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২২ অক্টোবর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০১৪।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৯ জানুয়ারি ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুলাই ২০১৩।
- ↑ ক খ গ "Asha, 70 years, 70 landmarks"। রেডিফ.কম (ইংরেজি ভাষায়)। ৮ সেপ্টেম্বর ২০০৩। ৮ নভেম্বর ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯।
- ↑ "Asha Bhosle was the best person I ever met, An interview with O.P. Nayyar"। ইন্ডিয়া.কম। ৫ মার্চ ২০০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯।
- ↑ ক খ পিল্লাই, জিতেশ (৩১ জুলাই ২০০৫)। "Notes to Myself (An interview with Asha Bhosle)"। দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া, মুম্বই। দ্য টাইমস গ্রুপ। পৃষ্ঠা ৪৩। ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯।
- ↑ ভারতন, রাজু (২০১০)। A journey down melody lane। নতুন দিল্লি: হে হাউজ পাবলিকেশন্স। আইএসবিএন 9788189988913।
- ↑ খুবচন্দনী, লতা (২০০৩)। গুলজার; গোবিন্দ নিহলানী; শৈবাল চ্যাটার্জি, সম্পাদকগণ। Encyclopaedia of Hindi Cinema। পপুলার প্রকাশন। পৃষ্ঠা ৪৮৬–৪৮৭। আইএসবিএন 81-7991-066-0।
- ↑ দৈনিক যুগান্তর, দশ দিগণ্ত, মুদ্রিত সংস্করণ, পৃষ্ঠা-৮, ৯ অক্টোবর, ২০১২ইং, আশা ভোঁসলের মেয়ে বর্ষার আত্মহত্যা
বহিঃসংযোগ সম্পাদনা
- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে আশা ভোঁসলে (ইংরেজি)