বলিউডের সঙ্গীত
বলিউডের সঙ্গীত,সচরাচর হিন্দি চলচ্চিত্রের গান অথবা ফিল্মি গান নামে পরিচিত। এই গানগুলো সাধারণত বলিউড চলচ্চিত্রে ব্যবহৃত হয়। পাশ্চাত্য চলচ্চিত্রের "গান এবং নাচ" ধারণা থেকে এই ধারণা এসেছে। বলিউডের গান এবং এর সাথে হিন্দি চলচ্চিত্রের অন্যতম আনুসাঙ্গিক অংশ হয়ে উঠেছে, যা একে দিয়েছে জনপ্রিয়তা এবং সাংস্কৃতিক মর্যাদা। [১] ভারতীয় পপ সঙ্গীত , ক্লাসিকাল ও আধুনিক ধারার সম্মেলনে সৃষ্ট । এটাই হিন্দি চলচ্চিত্রের সঙ্গীত হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। হিন্দি চলচ্চিত্রের গানগুলো এখন বিশেষ করে উত্তর ভারতের সংস্কৃতি ও সেখানকার বাজার, দোকান, বাস , ট্রেন ইত্যাদিসহ বিভিন্ন ঘটনাকে তুলে ধরে। [২] যদিও ভারতীয় চলচ্চিত্রে নিয়মিতভাবে গান ও নাচ পরিবেশিত হয়, তবে পাশ্চাত্য মঞ্চায়নের ধারণামতে এই সঙ্গীত-নৃত্য মিউজিকাল হিসেবে মেনে নেয় না।:২
ভাষাগত দিক দিয়ে বলিউডের সঙ্গীতের সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন ব্যবহার্য হিন্দি ও উর্দূর কথ্যরূপ ব্যবহার করা হয়। এতে সংগীতের কথা হিন্দি ও উর্দূ বুঝতে সক্ষম উভয় ধরনের মানুষের কাছেই বোধগম্য হয়। অবশ্য আধুনিক বলিউডের সঙ্গীতে হিন্দি ও ইংরেজির মিশ্রণে হিংলিশ অতিমাত্রায় ব্যবহার হয়। [৩] বিশেষ করে, উর্দূ কবিতা বলিউডের সঙ্গীতের কথার ক্ষেত্রে শক্ত অবস্থান ধরে রেখেছে। উর্দূ কবিতা এবং গজল এক্ষেত্রে ঐতিহ্যের অংশ হয়ে উঠেছে। .[৪]
ইতিহাস
সম্পাদনা১৯৩১ সালের প্রথম হিন্দি সবাক চলচ্চিত্র আরদেশির ইরানীর 'আনোওয়ারা' দিয়েই বলিউডের সঙ্গীতের অনুপ্রবেশ। চলচ্চিত্রটিতে মোট ৭টি গান ছিল। এরপরপরই শিরি-ফরহাদ (১৯৩১) চলচ্চিত্রে জামশেদী ফ্রামজী মদন ৪২ টি গানের দৃশ্যধারণ করে অপেরার আদলে চলচ্চিত্রে সঙ্গীত নিয়ে আসেন। এরপরে অবশ্য ৬৯টি গান নিয়ে আবির্ভূত হয় ইন্দ্রসভা নামক আরেকটি চলচ্চিত্র। অবশ্য বর্তমানে প্রতি চলচ্চিত্রে ৬ থেকে ১০ টি গানেই সীমাবদ্ধ থাকে। [১]:২০
সেই ১৯৩১ সাল থেকেই সঙ্গীত হিন্দি চলচ্চিত্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। [৫] ১৯৩৪ সালে গ্রামোফোনে সঙ্গীত ধারণকৃত হত এবং পরবর্তীতে বেতারে প্রচারের মাধ্যমে সাধারণ জনগণের কাছে সহজেই পৌঁছে যাওয়া শুরু করে। এভাবেই বলিউডের সঙ্গীতের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে।[৫] প্রথম কয়েক বছরের মধ্যেই হিন্দি চলচ্চিত্রের রকমফের দেখা দেয়। "ঐতিহাসিক", "পৌরাণিক" , "ভক্তিমূলক" "কল্পকাহিনী" ইত্যাদি ধরনের চলচ্চিত্র মুক্তি পেতে থাকে, তাই সঙ্গীতের সম্ভার থাকা স্বত্ত্বেও সেই চলচ্চিত্রগুলোকে ঠিক 'মিউজিকাল' বা 'গীতিনাট্য' ধরনার বলা যায় না। [১]
হিন্দ চলচ্চিত্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠলেও অনেক স্বাধীন নির্মাতা নিজেদের কাজের ক্ষেত্রে সঙ্গীতের উপর নির্ভরশীল হয়নি। এক্ষেত্রে সত্যজিৎ রায় উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। তিনি গতানুগতিক চলচ্চিত্র ধারার বাইরে এসে নিজের চলচ্চিত্রে সঙ্গীত ও নৃত্যের ব্যবহার একদমই করেননি। [১]
হিন্দি চলচ্চিত্রে গানের সুবিস্তর প্রভাব বর্তমানে সমগ্র ভারতবর্ষ জুড়ে প্রতীয়মান। ভারতের মতো একাধিক সংস্কৃতির রাষ্ট্রে, ঐতিহাসিক পার্থ চ্যাটার্জীর মতে, " ভারতের মতো রাষ্ট্রে যেখানে বিশটির বেশি কথ্যভাষা এবং ততোধিক আঞ্চলিক ভাষা প্রচলিত, যেখানে জাতিগত যোগাযোগের ক্ষেত্রে হিন্দি চলচ্চিত্রের গান ভারতের ভাষাগত বাঁধাকে ডিঙিয়েছে।" [৬] বলিউডের সঙ্গীত একাধিক সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট যেমন রামলীলা, নৌটঙ্কী, তামাশা এবং ফারসি মঞ্চ নাটক দ্বারা প্রভাবান্বিত। এছাড়াও পাশ্চাত্য , পাকিস্তান এবং আরো উপ-সংস্কৃতির প্রভাব এতে লক্ষ করা যায়।[৭]
পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে ভারত ও উপমহাদেশের সংস্কৃতির জনপ্রিয়তাকরণে হিন্দি চলচ্চিত্রে সঙ্গীতের সংস্কৃতি ভূমিকা রেখে চলেছে। এই ধারণা আরো বিস্তার লাভ করেছে বিশেষ করে যখন ক্যাসেটের যুগ শুরু হয় এবং সহজেই এই সঙ্গীতগুলো এর মাধ্যমে দেশে-বিদেশে ছটিয়ে যায়। সস্তা প্লাস্টিকের ক্যাসেটে গান বিক্রির মাধ্যমে লক্ষ্যাধিক এ্যালবাম ২০০০ সালে এই ইন্ডাস্ট্রির পতনের আগ অব্দি বিক্রি হয়। [৫] এমনকি এখনো বেতার, টেলিভিশন এবং সরাসরি সঙ্গীত পরিবেশনার অনুষ্ঠানে বলিউডের সঙ্গীত সাধারণ জনতার বিনোদনের খোরাক হয়ে উঠেছে। প্রযুক্তির আধুনিকায়নের সাথে বর্তমানে কম্প্যাক্ট ডিস্ক, ডিভিডি, আইনত এবং বেআইনি উভয়ভাবেই পুরনো ও নতুন বলিউডের সঙ্গীত ইন্টারনেটে সহজেই উপলব্ধ।[১]
ধরন ও গঠন
সম্পাদনাবলিউড সঙ্গীতে বিভিন্ন ভাষার ব্যবহার জটিল হয়ে দাঁড়াতে পারে। বেশিরভাগ গানেই হিন্দি অথবা উর্দূ ভাষার ব্যবহার করা হয়। কিছু গানে অবশ্য ফারসি ভাষাও ব্যবহৃত হয়েছে। আধুনিক হিন্দি চলচ্চিত্রের গানে অহরহ ইংরেজি ভাষার শব্দ ব্যবহার করা হয়। হিন্দি ছাড়াও ব্রজ, আভাদি, ভোজপুরি, পাঞ্জাবি, বাংলা এবং রাজস্থানী ভাষা চলচ্চিত্রের গানে ব্যবহার হয়। একটি চলচ্চিত্রে সঙ্গীতের সাথে নৃত্য পরিবেশন করা হয়। আর এই পরিবেশনা একাধিক কারণে হয়ে থাকে। কখনো "ঘটনার গভীরতা বোঝাতে, ভাব বোঝাতে, কোন কর্মের প্রতি মন্তব্য করতে, আশ্রয় বা সাহায্য প্রদানে এবং চলচ্চিত্রের ভেতরের মনোলগ তৈরিতে" সঙ্গীত ব্যবহৃত হয়।[৭]
প্রোডাকশন
সম্পাদনাবলিউড চলচ্চিত্রের গানের কথা অত্যন্ত যত্নের সাথে কারুকর্যময় করে তুলতে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চিত্রনাট্যকার নয় বরং আলাদা সংগীত লেখক থাকেন। তাদের রচিত কবিতায় ভিন্নভাবে সংগীতায়োজন এবং যত্নের সাথে গানের কথা এবং চলচ্চিত্রের গল্পের সাথে মিলিয়ে নাচের তাল তোলা হয়। এই গানগুলো দক্ষ প্লেব্যাক গায়ক গায়িকা দ্বারা গাওয়ানো হয়, চলচ্চিত্রে অভিনেতা অভিনেত্রীরা গানের সাথে ঠোঁট মেলান। বলিউডের চলচ্চিত্র এদিক দিয়ে অনন্য যে, চলচ্চিত্রে ব্যবহৃত সংগীত চলচ্চিত্রের চরিত্রগুলো গায়, ঘটনার পেছনের আলাদাভাবে ব্যাকগ্রাউন্ড সংগীত হিসেবে ব্যবহৃত হয় না। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] পাশ্চাত্য চলচ্চিত্রে, চলচ্চিত্রের সংগীতের দায়িত্ব পালনে একজন সংগীতায়োজক এই ব্যাপারে বিশেষভাবে জ্ঞানার্জন করেন এবং সরাসরি চলচ্চিত্রের ব্যাপারে দীক্ষা লাভ করেন। কিন্তু বলিউড চলচ্চিত্রে বড় ধরনের "প্রডাকশন নাম্বার" এবং বিস্তারিত নাচের ধাপ দ্বারা গানগুলোকে চালিত করা হয়।
বলিউড সংগীতের প্রান হলেন "সংগীত পরিচালক"। অপরদিকে পাশ্চাত্য চলচ্চিত্রে একজন "সংগীত পরিচালক" অথবা "সংগীত কো-অর্ডিনেটর" থাকেন , যিনি প্রচলিত সংগীত থেকে চলচ্চিত্রের জন্য সংগীত বাছাই করেন। যা মূলতঃ চলচ্চিত্রের অবদানকারীদের নাম দেখানোর সময় পরিবেশিত হয়। বলিউডে একজন সংগীত পরিচালকের বৃহৎ পরিসরে কাজ থাকে। তাকে সংগীতের জন্য আলাদাভাবে লাইসেন্স করার প্রয়োজন হয়। কখনো কখনো সঙ্গীত আয়োজক ও সঙ্গীত প্রযোজকের কাজও করে থাকেন।
সঙ্গীত পরিচালক কিংবা সংগীতায়োজক খুব কমই গানের কথা লিখেন। যেহেতু বলিউডের সঙ্গীতের কথাগুলো চলচ্চিত্রের প্লট ও বক্তব্যের সাথে মিল রেখে লিখা হয়। এছাড়াও গানের কথাগুলোকে চলচ্চিত্রের প্রয়োজন অনুসারে পূর্বে উল্লেখিত বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিয়ে লিখা হয়।
বলিউডের সঙ্গীতগুলো নিজ শৈলী এবং বাদ্যযন্ত্রের জন্য শক্তভাবে নিজ স্বতন্ত্র বজায় রাখে। [৮] অবশ্য, তারা প্রায়ই বিদেশী বাদ্যযন্ত্র এবং ইতিমধ্যে থাকা সঙ্গীতের উপর নতুন করে কাজ করে। [৯]
জনরা
সম্পাদনাফিল্মি
সম্পাদনাগজল
সম্পাদনাকাওয়ালি
সম্পাদনাডিস্কো
সম্পাদনাআশির দশকের শুরুর দিকে, যখন উত্তর আমেরিকায় ডিস্কোর জনপ্রিয়তা পড়তে শুরু করে তখন দক্ষিণ এশিয়ার ভারতীয় উপমহাদেশে ডিস্কোর জনপ্রিয়তা শীর্ষে উঠে। পাকিস্তানের পপ গায়ক নাজিয়া হাসান ১৯৮০ সালে ভারতীয় প্রযোজক বিদ্দুর "আপ জ্যায়সা কোয়ি" গানের মাধ্যমে ডিস্কো সংগীতের জনপ্রিয়তার ধারা শুরু করেন। [১০][১১] বিদ্দু এর আগে পশ্চিমা জগতে সফলতা অর্জন করেছেন। বিশেষ করে ১৯৭০এর শুরুর দিকে তার অন্যতম প্রথম জনপ্রিয় ডিস্কো কাজ নিয়ে আসেন ১৯৭৪ সালের "কুং ফু ফাইটিং" এর দ্বারা। [১২][১৩][১৪] এর পরপরি এই জনরা পশ্চিমে জনরিয়তা হারাতে শূরু করে, তাই তিনি তার মনোযোগ এশিয়ায় নিয়ে আসেন। তার প্রথম কাজ "আপ জ্যায়সা কোয়ি" দ্বারা যাত্রা শুরু করেন। এরপরই নাজিয়া হাসানের "ডিস্কো দিওয়ানি" ১৯৮১ সালে বিদ্দু প্রযোজিত করেন। যা সে সময়ে এশিয়ার সবচেয়ে বেশি বিক্রিত এলবামের রেকর্ড করে। [১৫]
ইউরো ডিস্কোর সাথে তাল মিলিয়ে দক্ষিণ এশিয়াতেও ভারতীয় সঙ্গীতে ইলেক্ট্রনিক ডান্স মিউজিকের উপর নিরীক্ষামূলক কাজ চলে। [১০] বিদ্দু অবশ্য এর আগেও তার কিছু কাজে এই ধরনার প্রয়োগ করেছিলেন। এর মাঝে আছে "বায়োনিক বুগি", "রেইন ফরেস্ট" (১৯৭৬)[১৬] "সোউল কোক্সিং" (১৯৭৭),[১৭] ইস্টার্ন ম্যান" এবং "ফিউচারিস্টিক জার্নি" '[১৮][১৯] (রেকর্ড হয়েছে ১৯৭৬-১৯৭৭ সালে) [২০] এবং "ফ্যান্টাজম" (১৯৭৯),[১৫][২১] আর ডে বর্মন তার "ধান্নো কি আখো মেঁয়" (১৯৭৭) এবং "পেয়ার কারণে ওয়ালে" (১৯৮০) এই ধারার প্রয়োগ করেছিলেন। [১৫] "কার্জ" (১৯৮০) চলচ্চিত্রে "ওম শান্তি ওম" গানটিতে লাক্সমীকান্ত পেয়ারেলাল [২২] এবং বাপ্পী লাহিড়ি "আরমান" চলচ্চিত্রে ১৯৮১ সালে "রাম্বা হো" এই ধারার ব্যবহার করেন। [১৫] মিনিমালিস্ট সঙ্গীত ধারণা, উচ্চ টেম্পো, ইলেকট্রনিক ডিস্কোতে ফিউচারিস্টিক ইলেক্ট্রো অনুভূতি পাওয়া যায়। ১৯৮২ সালের "ডিস্কো ড্যান্সার" চলচ্চিত্রে "ইয়াদ আ রাহা হ্যায়" তে বাপ্পী লাহিড়ি এর ব্যবহার করেন। [১০]
চরণজিৎ সিংহ ১৯৮২ সালে এসিড হাউজ মিউজিকের সঙ্গীতায়োজনে "সিন্থেসাইজিংঃটেন রাগাস ট্যু এ ডিস্কো বীট" বের করেন। তা ১৯৮০এর শেষের দিকে শিকাগো হাউজ জনরা জনপ্রিয় হওয়ার আগেই জনপ্রিয়তা লাভ করে। [১০][২৩]
চরণজিতৎ সিংহ বলেন, "১৯৮২ এর বলিউডের চলচ্চিত্রে অনেক ব্যাপক হারে ডিস্কো ধরান সঙ্গীত ব্যবহার হচ্ছিল। তাই আমি কিছু ভিন্ন ধারা আনার পরিকল্পনা করি। তাই আমি ভারতীয় রাগার সাথে তবলার পরিবর্তে ডিস্কো বিট যোগ করি। ফলাফলে বেশ ভালো কিছু পাওয়া যায়।" [২৪] প্রথম সংগীতে "ভৈরবী" সঙ্গীতে তিনি ভেকোডারের মাধ্যমে "ওম নমঃ শিবা" বক্তব্য সংযোজন করেন। [২৫]
৮০র দশোকে ইলেক্ট্রনিক নিরীক্ষামূলক কাজের পাশাপাশি সাইকেডিল রক সঙ্গীত নিয়েও কাজ হয়। বিশেষ করে দ্য বিটলস দ্বারা অনুপ্রানিত হয়ে সাইকেলিডেলিক রক ও সাইকেডেলিক ডিস্কো ধরনার সূত্রপাত করে। এই প্রভাব বলিউডের প্রযোজকদের ডিস্কো আর সাইকেডেলিক রকের মধ্যবর্তী পথে যান। যার ফল দেখতে পাওয়া যায় "ওম শান্তি ওম" (কার্জ,১৯৮০), "পেয়ার কারণে ওয়ালে" (শান,১৯৮০) গানগুলোতে। ,[১৫][২২]
সাংস্কৃতিক প্রভাব
সম্পাদনাভারতীয় চলচ্চিত্রে সঙ্গীতের উপস্থিতি সমগ্র বিশ্বের সামনে ভারতীয় সংস্কৃতি ভিন্ন মাত্রায় তুলে ধরেছে। [১]:১৪ ব্রিটেনের রেস্তোরাঁ এবং রেডিও চ্যানেলে এশিয়ার সঙ্গীত হিসেবে হিন্দি চলচ্চিত্রের গান বাজানো হয়। ব্রিটেনের নাট্যকর ভারতীয় হিন্দি হিট "হাম আপকে হ্যায় কৌন" এর অনুসরনে একটি ১৪টি গানের গীতিনাট্য করেন, যা ব্রিটিশ নাট্যক্ষেত্রে জনপ্রিয়তা লাভ করে। চলচ্চিত্রকার বাজ লরম্যান তার চলচ্চিত্র "মওলিন রগ"এ 'হিন্দি স্যাড ডায়মন্ড' যে ভারতীয় চলচ্চিত্রের সঙ্গীত, আনু মালিকের "ছাম্মা ছাম্মা" দ্বারা অনুপ্রাণিত তা স্বীকার করেন। [২৬] গ্রীসে, ইন্দোপ্রেপি জনরায় এই হিন্দি চলচ্চিত্রের গানগুলো পরিচিত। এদিকে ইন্দোনেশিয়ার দাংদুত শিল্পীরা যেমন, এলিয়া খাদম, রোমা ইরামা, এবং মানস্যুর এস. ইন্দোনেশিয়ার শ্রোতাদের কাছে হিন্দি চলচ্চিত্রের গান গেয়েই পরিচিতি লাভ করেছেন। [২৭] ফ্রান্সে 'লে রিতা মিৎসুকো' নামে একটি গানের দলের ভিডিওচিত্র বলিউড দ্বারা প্রভাবিত। ফরাসি গায়ক প্যাসকাল অব বলিউড "জিন্দেগী এক সাফার সুহানা" গেয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। [২৮] নাইজেরিয়ার সুফিধর্মী গানের কথার সাথে বলিউড ধরানার সংগীতায়োজন হাউসা জনগোষ্ঠীর যুব সমাজে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। [২৯] ক্যারিবিয়ানে হিন্দি চলচ্চিত্রের সঙ্গীত স্থানীয় স্টাইলের সাথে মিশে "চাটনি সঙ্গীত" তৈরি করেছে। [৩০]
ভারতে সর্বোচ্চ বিক্রিত সঙ্গীত এ্যালবাম
সম্পাদনাসেরা দশ
সম্পাদনার্যাংক | বছর | সাউন্ডট্র্যাক | সঙ্গীতপরিচালক | বিক্রি | সূত্র |
---|---|---|---|---|---|
১ | ১৯৯০ | আশিকি | নাদিম -শ্রাবণ | ২০,০০০,০০০ | [৩১] |
২ | ১৯৯৫ | বোম্বে | এ আর রহমান | ১৫,০০০,০০০ | [৩২] |
৩ | ১৯৯৭ | দিল তোহ পাগাল হ্যায় | উত্তম সিংহ | ১২,৫০০,০০০ | [৩৩] |
৪ | ১৯৯৪ | হাম আপকে হ্যায় কৌন | রামলক্ষণ | ১২,০০০,০০০ | [৩৪] |
৫ | ১৯৯৬ | রাজা হিন্দুস্তানি | নাদিম -শ্রাবণ | ১১,০০০,০০০ | |
৬ | ১৯৮৯ | ম্যায়নে পেয়ার কিয়া | রামলক্ষণ | ১০,০০০,০০০ | [৩৫] |
১৯৯১ | সাজান | নাদিম -শ্রাবণ | ১০,০০০,০০০ | [৩৬] | |
১৯৯৫ | বেওয়াফা সানাম | নিখিল বিনয় | ১০,০০০,০০০ | [৩৭] | |
দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে | যতীন-ললিত | ১০,০০০,০০০ | [৩৮][৩৯] | ||
রঙ্গীলা | এ আর রহমান | ১০,০০০,০০০ | |||
১৯৯৯ | কাহো না পেয়ার হ্যায় | রাজেশ রোশান | ১০,০০০,০০০ | [৪০] |
দশক অনুসারে
সম্পাদনাদশক | সাউন্ডট্র্যাক | বিক্রি | সূত্র |
---|---|---|---|
১৯৫০ | আওয়ারা (১৯৫১) | — | [৪১] |
১৯৬০ | সাঙ্গাম (১৯৬৪) | — | [৪২] |
১৯৭০ | — | [৪৩] | |
১৯৮০ | মেয়নে পেয়ার কিয়া (১৯৮৯) | ১০,০০০,০০০ | [৪৪] |
১৯৯০ | আশিকি (১৯৯৯) | ২০,০০০,০০০ | |
২০০০ | মোহাব্বতে (২০০০) | ৫,০০০,০০০ | [৪৫] |
২০১০ | কোমারাম পুল (২০১০) | ৭৬০,০০০ | [৪৬] |
বছর অনুসারে
সম্পাদনাবছর | সাউন্ডট্র্যাক | বিক্রি | সূত্র |
---|---|---|---|
১৯৮০ | কুরবানি | ৫০০,০০০ | [৪৭] |
১৯৮১ | লাভ স্টোরি | — | |
১৯৮২ | প্রেম রোগ | ||
১৯৮৩ | হিরো | ||
১৯৮৪ | পেয়ার ঝুটা নাহি | ||
১৯৮৫ | রাম তেরি গঙ্গা মাইলি | ||
১৯৮৬ | ভাগওয়ান দাদা | ১,০০০,০০০ | [৪৮] |
১৯৮৭ | প্রেমালোকা | ৩,৮০০,০০০ | [৪৯] |
১৯৮৮ | কেয়ামত সে কেয়ামত তক | — | |
১৯৮৯ | ম্যায়নে পেয়ার কিয়া | ১০,০০০,০০০ | |
১৯৯০ | আশিকি | ২০,০০০,০০০ | |
১৯৯১ | সাজান | ১০,০০০,০০০ | |
১৯৯২ | দিওয়ানা | ৪,৫০০,০০০ | |
১৯৯৩ | খলনায়ক | ৫,০০০,০০০ | |
১৯৯৪ | হাম আপকে হ্যায় কৌন | ১২,০০০,০০০ | |
১৯৯৫ | বোম্বে | ১৫,০০০,০০০ | |
১৯৯৬ | রাজা হিন্দুস্তানি | ১১,০০০,০০০ | |
১৯৯৭ | দিল তো পাগল হ্যায় | ১২,৫০০,০০০ | |
১৯৯৮ | কুছ কুছ হোতা হ্যায় | ৮,০০০,০০০ | |
১৯৯৯ | কহো না... প্যার হ্যায় | ১০,০০০,০০০ | |
২০০০ | মোহাব্বতে | ৫,০০০,০০০ | |
২০০১ | কভি খুশি কভি গম... | ৩,৫০০,০০০ | |
লাগানঃ ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন ইন্ডিয়া | ৩,৫০০,০০০ | [৫০] | |
২০০২ | হামরাজ | ২,২০০,০০০ | |
২০০৩ | তেরে নাম | ৩,০০০,০০০ | |
২০০৪ | বীর-জারা | ৩,০০০,০০০ | |
২০০৫ | আশিক বানায়া আপনে | ২,০০০,০০০ | |
২০০৬ | কভি আলবিদা না কেহনা | ২,০০০,০০০ | |
২০০৭ | ওম শান্তি ওম | ১,৯০০,০০০ | |
২০০৮ | স্লামডগ মিলিয়নিয়ারঃ মিউজিক ফ্রম মোশন পিকচার | ২,০০০,০০০ | [৫১] |
২০১০ | কমারাম পুলি | ৭৬০,০০০ |
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ Gopal, Sangita; Moorti, Sujata (১৬ জুন ২০০৮)। Global Bollywood: travels of Hindi song and dance। U of Minnesota Press। পৃষ্ঠা 1–6। আইএসবিএন 978-0-8166-4579-4। সংগ্রহের তারিখ ২২ জানুয়ারি ২০১২।
- ↑ Gokulsing, K. Moti (৪ ফেব্রুয়ারি ২০০৯)। Popular culture in a globalised India। Taylor & Francis। পৃষ্ঠা 130। আইএসবিএন 978-0-415-47666-9। সংগ্রহের তারিখ ২২ জানুয়ারি ২০১২।
- ↑ "Decoding the Bollywood poster"। National Science and Media Museum। ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩।
- ↑ Dwyer, Rachel (২০০৬)। Filming the Gods: Religion and Indian Cinema (ইংরেজি ভাষায়)। Routledge। পৃষ্ঠা 106। আইএসবিএন 9781134380701।
- ↑ ক খ গ Morcom, Anna (৩০ নভেম্বর ২০০৭)। "The cinematic study of Hindi film songs"। Hindi film songs and the cinema। Ashgate Publishing, Ltd.। পৃষ্ঠা 1–24। আইএসবিএন 978-0-7546-5198-7। সংগ্রহের তারিখ ২২ জানুয়ারি ২০১২।
- ↑ As quoted in Gopal & Moorti (2008), pg 14.
- ↑ ক খ Mehta, Rini Bhattacharya; Pandharipande, Rajeshwari (১৫ জানুয়ারি ২০১০)। Bollywood and Globalization: Indian Popular Cinema, Nation, and Diaspora। Anthem Press। পৃষ্ঠা 36। আইএসবিএন 978-1-84331-833-0। সংগ্রহের তারিখ ২২ জানুয়ারি ২০১২।
- ↑ Morcom, Anna (2007) Hindi Film Songs and the Cinema. Aldershot: Ashgate.
- ↑ Carlo Nardi (July 2011). "The Cultural Economy of Sound: Reinventing Technology in Indian Popular Cinema". Journal on the Art of Record Production, Issue 5 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৫ জুন ২০১৩ তারিখে আইএসএসএন 1754-9892.
- ↑ ক খ গ ঘ Geeta Dayal (৬ এপ্রিল ২০১০)। "Further thoughts on '10 Ragas to a Disco Beat'"। The Original Soundtrack। ২ সেপ্টেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০১১।
- ↑ Geeta Dayal (২৯ আগস্ট ২০১০)। "'Studio 84′: Digging into the History of Disco in India"। The Original Soundtrack। ২ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০১১।
- ↑ James Ellis। "Biddu"। Metro। ২০১১-০৯-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৪-১৭।
- ↑ The Listener, Volumes 100–101। The Listener। BBC। ১৯৭৮। পৃষ্ঠা 216। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুন ২০১১।
Tony Palmer knocked off a film account of someone called Biddu (LWT), who appears to have been mad enough to invent disco music.
- ↑ Shapiro, Peter (২০০৬)। Turn the Beat Around: The Secret History of Disco। Macmillan Publishers। পৃষ্ঠা 55। আইএসবিএন 0-86547-952-6। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুন ২০১১।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ Kenneth Lobo, EDM Nation: How India Stopped Worrying About the Riff and Fell in Love With the Beat, Rolling Stone
- ↑ ডিস্কোগ্সে Biddu Orchestra – Bionic Boogie (ইংরেজি)
- ↑ ডিস্কোগ্সে Biddu Orchestra – Soul Coaxing (ইংরেজি)
- ↑ "Futuristic Journey And Eastern Man CD"। CD Universe। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুলাই ২০১১।
- ↑ Biddu Orchestra – Futuristic Journey - ডিস্কোগ্স (প্রকাশের তালিকা)
- ↑ অলমিউজিকে Futuristic Journey and Eastern Man
- ↑ ডিস্কোগ্সে Captain Zorro – Phantasm Theme (ইংরেজি)
- ↑ ক খ Disco Goes to Bollywood: A Rough Guide, Pitchfork
- ↑ William Rauscher (১২ মে ২০১০)। "Charanjit Singh – Synthesizing: Ten Ragas to a Disco Beat"। Resident Advisor। ১২ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০১১।
- ↑ Stuart Aitken (১০ মে ২০১১)। "Charanjit Singh on how he invented acid house ... by mistake"। The Guardian।
- ↑ Geeta Dayal (৫ এপ্রিল ২০১০)। "Thoughts on '10 Ragas to a Disco Beat'"। The Original Soundtrack। ৫ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০১১।
- ↑ Conrich, Ian; Tincknell, Estella (১ জুলাই ২০০৭)। Film's musical moments। Edinburgh University Press। পৃষ্ঠা 206। আইএসবিএন 978-0-7486-2345-7। সংগ্রহের তারিখ ২২ জানুয়ারি ২০১২।
- ↑ David, Bettina (২০০৮)। "Intimate Neighbors: Bollywood, Dangdut Music, and Globalizing Modernities in Indonesia"। Sangita Gopal and Sujata Moorti। Global Bollywood: Travels of Hindi Song and Dance। University of Minnesota Press। পৃষ্ঠা 179–220। আইএসবিএন 9780816645794।
- ↑ "Pascal of Bollywood"। RFI (French ভাষায়)। ১১ নভেম্বর ২০০৪। সংগ্রহের তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর ২০১২।
- ↑ Sangita Gopal and Sujata Moorti, সম্পাদক (২০০৮)। Global Bollywood: Travels of Hindi Song and Dance। University of Minnesota Press। পৃষ্ঠা 8। আইএসবিএন 9780816645794।
- ↑ Sangita Gopal and Sujata Moorti, সম্পাদক (২০০৮)। Global Bollywood: Travels of Hindi Song and Dance। University of Minnesota Press। পৃষ্ঠা 34। আইএসবিএন 9780816645794।
- ↑ "India Today"। India Today (ইংরেজি ভাষায়)। Aroon Purie for Living Media India Limited। 19: 70। ১৯৯৪।
- ↑ "The "Mozart of Madras" AR Rahman is Performing LIVE in Australia" (ইংরেজি ভাষায়)। SBS। ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- ↑ "Music Hits 1990-1999 (Figures in Units)"। Box Office India। ২ জানুয়ারি ২০১০। ২ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ Morcom, Anna (২০১৭)। Hindi Film Songs and the Cinema (ইংরেজি ভাষায়)। Routledge। পৃষ্ঠা 198। আইএসবিএন 9781351563741।
- ↑ "Audio tape producers ride crest of Bollywoods music boom, composers become stars"। India Today। ৩০ নভেম্বর ১৯৯৩।
- ↑ "Bringing melody back, Nadeem-Shravan churn out hit after hit"। India Today। ১৫ এপ্রিল ১৯৯২।
- ↑ "Making Music Like Ne'er Before"। Outlook। ১৩ মার্চ ১৯৯৬।
- ↑ "Outlook"। Outlook (ইংরেজি ভাষায়)। Hathway Investments Pvt Limited। 3: 78। ১৯৯৭।
It is also emboldened by its two monster soundtrack hits, Hum Aapke Hain Koun and Dilwale Dulhaniya Le Jayenge— the two albums sold more than one crore tapes each.
- ↑ "Tuning in to better times?"। The Hindu। ৯ জুলাই ২০০৩।
- ↑ "Film producers float their own music firms"। The Times of India। ১১ নভেম্বর ২০১১।
- ↑ "Music Hits 1950-1959"। Box Office India। ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১০। ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "Music Hits 1960-1969"। Box Office India। ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১০। ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "Music Hits 1970-1979"। Box Office India। ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১০। ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "Music Hits 1980-1989"। Box Office India। ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১০। ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "Music Hits 2000-2009 (Figures in Units)"। Box Office India। ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১০। ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "'Komaram Puli' audio creates latest record!"। way2movies। ১৬ জুলাই ২০১০। ১০ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ মার্চ ২০১৮।
- ↑ Faruk Kaiser's Golden Disc accolade for Qurbani
- ↑ Faruk Kaiser's Platinum Disc accolade for Bhagwan Dada
- ↑ "Bahubali audio sold for Rs 3 cr, sets record"। The Times of India। ২১ মে ২০১৫।
- ↑ Surajeet Das Gupta, Soumik Sen। "A R Rahman: Composing a winning score"। Rediff। সংগ্রহের তারিখ ২০০২-০৯-২১।
- ↑ "'Slumdog Millionaire' soundtrack sells 2 million units"। Neapolitan Music। ১ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ নভেম্বর ২০১৭।