বিল এডরিচ
উইলিয়াম জন বিল এডরিচ, ডিএফসি (ইংরেজি: Bill Edrich; জন্ম: ২৬ মার্চ, ১৯১৬ - মৃত্যু: ২৪ এপ্রিল, ১৯৮৬) নরফোকের লিংউড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ও ফুটবলার ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। ১৯৩০-এর দশকের শেষদিক থেকে শুরু করে ১৯৫০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়কাল পর্যন্ত ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
ব্যক্তিগত তথ্য | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | উইলিয়াম জন এডরিচ | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | লিংউড, নরফোক, ইংল্যান্ড | ২৬ মার্চ ১৯১৬||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ২৪ এপ্রিল ১৯৮৬ হোয়াইটহিল কোর্ট, চেশাম, বাকিংহামশায়ার, ইংল্যান্ড | (বয়স ৭০)||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি অফ ব্রেক, ডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | ব্যাটসম্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
সম্পর্ক | বিআর এডরিচ, ইএইচ এডরিচ, জিএ এডরিচ (ভ্রাতৃত্রয়), জেএইচ এডরিচ (কাকাতো ভাই), জেডব্লিউ এডরিচ (পুত্র) | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৩০০) | ১০ জুন ১৯৩৮ বনাম অস্ট্রেলিয়া | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ২৮ জানুয়ারি ১৯৫৫ বনাম অস্ট্রেলিয়া | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৬৫ - ১৯৭০ | নরফোক | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৩৭ - ১৯৫৮ | মিডলসেক্স | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৩৪ - ১৯৫৮ | এমসিসি | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৩৪ - ১৯৩৬ | মাইনর কাউন্টিজ | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৮ জুলাই ২০১৭ |
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর কাউন্টি ক্রিকেটে ১৯৩৭ থেকে ১৯৫৮ সময়কালে মিডলসেক্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন বিল এডরিচ। এছাড়াও, নরফোক, এমসিসি, মাইনর কাউন্টিজের সদস্য ছিলেন তিনি।[১] দলে তিনি মূলতঃ আক্রমণধর্মী ডানহাতি ব্যাটসম্যান ছিলেন। পাশাপাশি ডানহাতে অফ-ব্রেক ও ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন।[১]
খেলোয়াড়ী জীবন
সম্পাদনা১৯৩৪ থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।[২][৩] এ সময়ে তিনি ১৯৩৮-৩৯ মৌসুমে এমসিসি দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা, ১৯৪৬-৪৭ ও ১৯৫৪-৫৫ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড গমন করেন।
মাইনর কাউন্টিজে নরফোকের পক্ষে ১৬ বছর বয়সে প্রথম খেলেন। ১৯৩৭ সালে মিডলসেক্সের পক্ষে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেন। প্রথম মৌসুমেই দুই সহস্রাধিক রান তুলে তার প্রতিভার কথা জানান দেন। ১৯৩৮ সালে মে মাস শেষ হবার পূর্বেই ১,০০০ রান তুলেন। ঐ বছরই ৩৯ টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবনের প্রথম টেস্টে অংশ নেন।
১০ জুন, ১৯৩৮ তারিখে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তার টেস্ট অভিষেক ঘটে। কিন্তু তেমন সফলতা পাননি তিনি। ১৯৩৮-৩৯ মৌসুমের পূর্বে তেমন কিছু টেস্টে অর্জন করতে পারেননি। তবে, ডারবানে শেষবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অসীম সময়ের টেস্টে দূর্দান্ত ক্রীড়ানৈপুণ্য প্রদর্শন করেন। তার ২১৯ রানের কল্যাণে ইংল্যান্ড ৬৫৪/৫ তুলে। কিন্তু জাহাজে চড়ে দেশে ফেরার তাগাদায় সফরকারী দলকে টেস্ট ড্র রাখতে হয়।[১] অবশেষে টেস্ট খেলায় সফলতা লাভের পরও ১৯৩৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত সিরিজে তাকে দল থেকে বাইরে রাখা হয়েছিল।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ
সম্পাদনাযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়লে এডরিচ রয়্যাল এয়ার ফোর্সে যোগ দেন। এ সময় তিনি স্কোয়াড্রন লিডার পদে ছিলেন। আরএএফ বোম্বার কমান্ডের পাইলট হিসেবে অভিযান পরিচালনা করেন। ১২ আগস্ট, ১৯৪১ তারিখে দিবালোকে নিচের স্তরে বিপজ্জ্বনক অভিযানে অংশগ্রহণ করেন। ব্রিস্টল ব্লেনহেইমের বোমাগুলো কোলনের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোয় আঘাত হানে। এ প্রসঙ্গে ডেইলি টেলিগ্রাফ মন্তব্য করে যে, আরএএফ সর্বাপেক্ষা বিপজ্জ্বনক অভিযানে নামে। ৫৪টি ব্লেনহেইমকে প্রেরণ করা হলেও বারোটি ভূপাতিত হয়েছিল। যুদ্ধের এ পর্যায়ে তিনি ডিএফসি পদবীতে ভূষিত হন।[৪][৫][৬]
যুদ্ধ পরবর্তীকাল
সম্পাদনাদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলে ক্রিকেটের প্রচলন শুরু হয় ও তিনি দ্রুত ইংল্যান্ড দলের নিয়মিত সদস্যে পরিণত হন। ৩ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামতেন। কখনোবা বোলিং আক্রমণে নেতৃত্ব দিতেন। ১৯৪৬-৪৭ মৌসুমের অ্যাশেজ সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মনোরম সেঞ্চুরি করেন। ১৯৪৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে করেন দুইটি, ১৯৪৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আরও একটিসহ ১৯৪৯ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একট সেঞ্চুরি করেন। নিজের নিরাপত্তার কথা না ভেবে ফাস্ট বলগুলোকে হুক করতেন। ১৯৪৬-৪৭ মৌসুমে ও ১৯৪৮ সালে লিন্ডওয়াল ও মিলারের বাউন্সারগুলোকে অবলীলায় মোকাবেলা করেছেন।[৭]
যুদ্ধোত্তর বছরগুলোয় এডরিচের স্বর্ণযুগ ছিল। ১৯৪৭ সালে টম হেওয়ার্ডের রেকর্ড ভঙ্গ করেন। ঐ মৌসুমে তিনি ৩,৫৩৯ রান তুলেন। কেবলমাত্র ডেনিস কম্পটন তার চেয়ে বেশি ৩,৮১৬ রান পেয়েছেন। ইংরেজ ক্রিকেট মৌসুমে কম্পটন ও এডরিচই সর্বোচ্চ রান তুলতে পেরেছিলেন। রানের পাশাপাশি একই মৌসুমে তিনি ৬৭ উইকেট দখল করেন।
১৯৫৪-৫৫ মৌসুমের অ্যাশেজ সিরিজ পর্যন্ত এডরিচের খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। অ্যাডিলেডে ইংল্যান্ড সিরিজ অক্ষত রাখতে সমর্থ হলে, দল ৫৬ বোতল শ্যাম্পেন খরচ করে ও এডরিচের জীবনের মঙ্গল কামনায় গ্লেনেলগের পায়ার হোটেলের লাউঞ্জের মার্বেল পাথরে নির্মিত পিলারে আরোহণ করে ‘জিঞ্জার’ গান গায়।[৮] তবে, ১৯৫০ সালের পর থেকে দলে অনিয়মিত হয়ে পড়েন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিখ্যাত স্পিনারদ্বয় সনি রামাদিন ও আল্ফ ভ্যালেন্টাইনের বোলিংয়ের সমুচিত জবাব দিতে সক্ষম হন। ৩৯ টেস্টে অংশ নিয়ে ২,৪৪০ রান সংগ্রহ করেন। ডারবানে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ টেস্ট রান করেন অপরাজিত ২১৯*।
কাউন্টি ক্রিকেট
সম্পাদনা১৯৩৪ থেকে ১৯৫৮ সময়কালে ৫৭১টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেন তিনি। ৩৬,৯৮৫ রান তুলেন। তন্মধ্যে, ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ করেন অপরাজিত ২৬৭*। মোট রান সংগ্রহের ক্ষেত্রে সর্বকালের সেরাদের তালিকায় তার অবস্থান ২৯তম। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্বেই পেশাদারী খেলায় নাম লেখান। এরপর শৌখিন খেলোয়াড়ের দিকে ধাবিত হন। ১৯৫১ ও ১৯৫২ সালে কম্পটনের সাথে যৌথভাবে মিডলসেক্সের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ১৯৫৩ থেকে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত একাকী এ দায়িত্ব পালনে অগ্রসর হন।
মিডলসেক্স থেকে অবসর নেয়ার পর নরফোকে ফিরে যান ও ৫৬ বছর বয়স পর্যন্ত মাইনর কাউন্টি ক্রিকেটে অংশ নেন। এছাড়াও ১৯৭১ সালে কাউন্টি দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন।
সম্মাননা
সম্পাদনাএমসিসি কর্তৃপক্ষ তার ও ডেনিস কম্পটনের সম্মানার্থে লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডের নার্সারি প্রান্তের জোড়া স্ট্যান্ডের নামকরণ করে। ১৯৪০ সালে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটার মনোনীত হন।[৯]
ব্যক্তিগত জীবন
সম্পাদনাব্রায়ান এডরিচ, এরিক এডরিচ, জিওফ এডরিচ ভ্রাতৃত্রয়; কাকাতো ভাই জেএইচ এডরিচ এবং নিজ সন্তান জেডব্লিউ এডরিচ প্রত্যেকেই প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলায় দক্ষ ছিলেন। নরফোকের স্থানীয় খেলাগুলোয় প্রথম একাদশে একত্রে খেলতেন। এডরিচ নরউইচ সিটি ও টটেনহাম হটসপারের পক্ষে ১৯৩০-এর দশকে শোখিন ফুটবলার হিসেবে অংশগ্রহণ করতেন।[১]
ব্যক্তিগত জীবনে পাঁচবার বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হন। জেসপার ও জাস্টিন নামীয় দুই পুত্র ছিল। ২৪ এপ্রিল, ১৯৮৬ তারিখে বাকিংহামশায়ারের চেশামে ৭০ বছর বয়সে তার দেহাবসান ঘটে।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ Bateman, Colin (১৯৯৩)। If The Cap Fits। Tony Williams Publications। পৃষ্ঠা 58–59। আইএসবিএন 1-869833-21-X।
- ↑ ACS (১৯৮২)। A Guide to First-Class Cricket Matches Played in the British Isles। Nottingham: ACS।
- ↑ "Marylebone Cricket Club Players"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১৭।
- ↑ "Fields of glory." ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৬ এপ্রিল ২০১২ তারিখে The Observer, 6 November 2005.
- ↑ "Obituary of Wing Commander Tom Baker." Daily Telegraph, 10 April 2006.
- ↑ p365, David Frith, Pageant of Cricket, The Macmillan Company of Australia, 1987
- ↑ p20, Tyson
- ↑ p187-188, Frank Tyson, In the Eye of the Typhoon, the Parrs Wood Press, 2004
- ↑ Full List on Cricinfo, Retrieved 11 July, 2017.
আরও দেখুন
সম্পাদনা- জন এডরিচ
- টম হেওয়ার্ড
- লিন্ডসে টাকেট
- উইজডেন বর্ষসেরা ক্রিকেটার
- ইংরেজ ক্রিকেট ও ফুটবল খেলোয়াড়দের তালিকা
- ১৯৪৮ অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের ইংল্যান্ড সফরে ডন টলন
- টেস্ট ক্রিকেট অভিষেকে ৫ উইকেট লাভকারী নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটারদের তালিকা
- টেস্ট ক্রিকেট অভিষেকে ৫ উইকেট লাভকারী ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটারদের তালিকা
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে বিল এডরিচ (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে বিল এডরিচ (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)
ক্রীড়া অবস্থান | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী ওয়াল্টার রবিন্স |
মিডলসেক্স কাউন্টি ক্রিকেট অধিনায়ক ১৯৫১-১৯৫৭ (যৌথভাবে - ডেনিস কম্পটন ১৯৫১-৫২) |
উত্তরসূরী জন ওয়ার |