শিবগঞ্জ উপজেলা, বগুড়া
শিবগঞ্জ উপজেলা বাংলাদেশের বগুড়া জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা। বাংলার প্রাচীন পুন্ড্র জনপদের রাজধানী পুন্ড্রনগর (বর্তমান নাম মহাস্থানগড়) এই উপজেলাতেই অবস্থিত।
শিবগঞ্জ | |
---|---|
উপজেলা | |
মানচিত্রে শিবগঞ্জ উপজেলা, বগুড়া | |
স্থানাঙ্ক: ২৫°১′১৫″ উত্তর ৮৯°১৯′৩″ পূর্ব / ২৫.০২০৮৩° উত্তর ৮৯.৩১৭৫০° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | রাজশাহী বিভাগ |
জেলা | বগুড়া জেলা |
আয়তন | |
• মোট | ৩১৫.৩৩ বর্গকিমি (১২১.৭৫ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ৪,২৭,৯১৩[১] |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৬৫% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৫৮১০ |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৫০ ১০ ৯৪ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
অবস্থান ও আয়তন
সম্পাদনাএটি বগুড়া শহর থেকে ১৯ কিঃমিঃ উত্তর পশ্চিম দিকে করতোয়া, নাগর ও গাংনাই নদীর তীরে অবস্থিত। এর মোট আয়তন প্রায় ৩১৫.৩৩ বর্গ কিলোমিটার। এ উপজেলার উত্তরে গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে বগুড়া সদর উপজেলা ও কাহালু উপজেলা ও দুপচাঁচিয়া উপজেলা, পূর্বে সোনাতলা উপজেলা ও গাবতলী উপজেলা, পশ্চিমে জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলা ও ক্ষেতলাল উপজেলা। স্থলভাগের দিক থেকে এটি বগুড়া জেলার সর্ববৃহৎ উপজেলা।
প্রশাসনিক এলাকা
সম্পাদনাশিবগঞ্জ উপজেলায় একটি থানা ও একটি পৌরসভাসহ (শিবগঞ্জ পৌরসভা) মোট ১২ টি ইউনিয়ন পরিষদ ও ৪৩৬ টি গ্রামের সমন্বয়ে গঠিত। ইউনিয়ন পরিষদগুলো হলঃ
ইতিহাস
সম্পাদনাপুর্বে শিবগঞ্জ উপজেলা ছিল হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা। সে সময় এ এলাকায় হিন্দুদের পুজাপার্বনের জন্য অসংখ্য শিবমন্দির ছিল। শিবমন্দিরকে কেন্দ্র করে বন্দর-গঞ্জ গড়ে উঠে। যার ফলশ্রূতিতে পরবর্তীতে এ উপজেলার নাম হয় শিবগঞ্জ। এ উপজেলা গঠিত হয় ১৯৮৩ সালের ২৪ মার্চ।
জনসংখ্যার উপাত্ত
সম্পাদনা২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী শিবগঞ্জ উপজেলার মোট জনসংখ্যা ৪,২৭,৯১৩ জন (প্রায়)। যার ২,০২,৩৮৬ জন (প্রায়) জন পুরুষ ও ২,২৫,৫২৭ জন (প্রায়) জন নারী। প্রতি কিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব ১,৮৪৮ জন। শিবগঞ্জ উপজেলার মোট ভোটার সংখ্যা ২,৪৫,৬৪৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১,১৭,৫৪০ জন ও মহিলা ভোটার ১,২৮,১০৪ জন।
শিক্ষা
সম্পাদনাশিক্ষার হার ৬৫% (পুরুষ ৬৮% মহিলা ৬২%)। এ উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ১৫৭ টি, উচ্চ বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৪৪ টি, আলিম, ফাজিল ও কামিল মাদ্রাসা আছে ২৭ টি এবং কলেজ আছে ১০ টি। সাদুরিয়া রাহমানিয়া আলিম মাদ্রাসা উপজেলার অন্যতম একটি পুরাতন মাদ্রাসা।
অর্থনীতি
সম্পাদনাশিবগঞ্জের অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর। এখানে প্রচুর ধান ও আলু চাষ হয়। অন্যান্য ফসলের মধ্য রয়েছে ভুট্টা, গম, কলা,পাট ইত্যাদিসহ নানান দেশী-বিদেশি শাক সবজি। এছাড়া এখানে প্রচুর মাছ চাষ হয়।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ
সম্পাদনা১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল পাকবাহিনী ময়দানহাটার এক পরিবারের ১৬ জন সদস্যকে হত্যা করে। এছাড়া পাঁচপীর সরলপুর গ্রামে পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সম্মুখ লড়াইয়ে একজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।[২]
দর্শনীয় স্থান
সম্পাদনা- মহাস্থানগড়, পুন্ড্রবর্ধন প্রাচীনতম নগরী[৩]
- সরকার মহল, দেউলি ইউনিয়ন
- প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর, মহাস্থান
- হযরত শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী (র:) এর মাজার শরীফ
- ভাসু বিহার
- বিহার ধাপ
- বিউটি ওয়াটার পার্ক
- শীলাদেবীর ঘাট
- গোবিন্দ ভিটা ও পরশুরামের প্রাসাদ
- জিয়ৎ কূপ ও মানকলির কুন্ড
- মসলা গবেষণা কেন্দ্র
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি
সম্পাদনা- প্রফুল্ল চাকী (১৮৮৮-১৯০৮), ব্রিটিশ বিরোধী আন্দলনের নেতা।
- এম. আর. আখতার মুকুল (১৯২৯-২০০৪), লেখক এবং সাংবাদিক।
- মোজাফফর হোসেন (১৯৪৩-২০১৮), প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য, প্রথম জাতীয় সংসদ সদস্য, তৃতীয় জাতীয় সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী।
- মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ, সভাপতি-নাগরিক ঐক্য ৷
- ডা রেজাউল আলম জুয়েল স্বনামধন্য চিকিৎসক ও রাজনীতিবিদ।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে শিবগঞ্জ"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২২ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ ডিসেম্বর ২০১৭।
- ↑ "শিবগঞ্জ উপজেলা (বগুড়া)"।
- ↑ বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "উপজেলার দর্শনীয় স্থান"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৪।