কাহালু উপজেলা

বগুড়া জেলার একটি উপজেলা

কাহালু বাংলাদেশের বগুড়া জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা। কাহালু উপজেলা বাংলাদেশের একটি প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী ও ব্যবসায়িক জনপদ ।

কাহালু
উপজেলা
মানচিত্রে কাহালু উপজেলা
মানচিত্রে কাহালু উপজেলা
স্থানাঙ্ক: ২৪°৪৮′৪৩″ উত্তর ৮৯°১৫′৪৩″ পূর্ব / ২৪.৮১১৯৪° উত্তর ৮৯.২৬১৯৪° পূর্ব / 24.81194; 89.26194 উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
দেশবাংলাদেশ
বিভাগরাজশাহী বিভাগ
জেলাবগুড়া জেলা
আয়তন
 • মোট২৩৮.৭৯ বর্গকিমি (৯২.২০ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)
 • মোট২,১৯,০০০[১]
সাক্ষরতার হার
 • মোট৫৬.৫%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
পোস্ট কোড৫৮৭০ উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৫০ ১০ ৫৪
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

অবস্থান ও আয়তন সম্পাদনা

বগুড়া জেলা সদর হতে ১২ কি:মি পশ্চিমে এই উপজেলার অবস্থান। এ উপজেলার উত্তরে শিবগঞ্জ উপজেলাবগুড়া সদর উপজেলা, দক্ষিণে নন্দীগ্রাম উপজেলা, পূর্বে বগুড়া সদর উপজেলাশাজাহানপুর উপজেলা, পশ্চিমে দুপচাঁচিয়া উপজেলাআদমদীঘি উপজেলা (আংশিক)।

প্রশাসনিক এলাকা সম্পাদনা

কাহালু পৌরসভা কাহালুর একমাত্র পৌরসভা। এ উপজেলার ইউনিয়নের সংখ্যা ০৯টি। ইউনিয়নসমূহ হচ্ছেঃ

  1. নং বীরকেদার ইউনিয়ন পরিষদ
  2. নং কালাই ইউনিয়ন পরিষদ
  3. নং পাইকড় ইউনিয়ন পরিষদ
  4. নং নারহট্ট ইউনিয়ন পরিষদ
  5. নং কাহালু ইউনিয়ন পরিষদ
  6. নং মুরইল ইউনিয়ন পরিষদ
  7. নং দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদ
  8. নং জামগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ
  9. নং মালঞ্চা ইউনিয়ন পরিষদ

ইতিহাস সম্পাদনা

ইতিহাস থেকে জানা যায় তৎকালীন দরবেশ গাজী জিয়া উদ্দীন সাহেবের কনিষ্ঠ ভ্রাতা হযরত শাহ সুফী সৈয়দ কালু নামের এক দরবেশ এসে বর্তমান কাহালু থানার পার্শ্বে আস্তানা স্থাপন করেন। এখান থেকে তিনি ইসলাম ধর্ম প্রচার করতে থাকেন। কাহালু থানার অভ্যন্তরে এই দরবেশের মাজার রয়েছে যা কালু বাবার মাজার নামে পরিচিত। জনশ্রুতিতে থেকে জানা যায় এ সাধু পীরের নামানুসারে উপজেলার নামকরণ হয়েছে ‘‘কাহালু’’।[২] কাহালু ১৯২৮ সালে প্রশাসনিক থানা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে এবং ১৯৮৩ সালে উপজেলায় উন্নীত হয়।

জনসংখ্যার উপাত্ত সম্পাদনা

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী কাহালু উপজেলার মোট জনসংখ্যা ২,১৯,০০০জন (প্রায়) জন। যার ১,১০,০০০জন (প্রায়) জন পুরুষ ও ১,০৯,০০০জন (প্রায়) জন নারী। প্রতি কিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব ৯১৭জন। কাহালু উপজেলার মোট ভোটার সংখ্যা ১,৪৬,৭৮৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭১,৫০১ জন ও মহিলা ভোটার ৭৫,২৮৫ জন।[১]

শিক্ষা সম্পাদনা

শিক্ষার হার ৫৬.৫%; পুরুষ ৫৯%, মহিলা ৫২.৫%। সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ১১০ টি, উচ্চ বিদ্যালয় ২৬ টি, দাখিল মাদ্রাসা ১৯ টি, আলিম মাদ্রাসা ০৪ টি, ফাজিল মাদ্রাসা ০৫ টি, মহাবিদ্যালয় ০৫ টি। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কাহালু উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৭৩), নারহট্ট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৮)।

অর্থনীতি সম্পাদনা

এই উপজেলায় প্রচুর পরিমাণে ধান, গম, আলু, সরিষা ও অন্যান্য ফসল উৎপাদন হয়। উপজেলা সদর এলাকা সহ পুরো উপজেলার ছোট বড় পুকুর গুলোতে বাণিজ্যিক ভাবে মাছ চাষ করা হয়। এই উপজেলাতে কয়েকটি বড় বড় হাট ও বাজার আছে।বাজার গুলোতে ছোট বড় অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে। উপজেলার অনেক গ্রামে পারিবারিক ও বাণিজ্যিক ভাবে গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ, হাঁস মুরগী, কবুতর, নানা জাতের পাখি লালন পালন করা হয়। উপজেলার বেশির ভাগ মানুষ কৃষি কাজের সাথে জড়িত। এই উপজেলায় তৈরি হয় তালপাতার বিভিন্ন হাতপাখা, ঘোরানো পাখা ও পকেট পাখা।[৩]

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ সম্পাদনা

মুক্তিযুদ্ধের সময় এ উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় পাকবাহিনী ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায় ও ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। ১৯৭১ সালের অক্টোবরের শেষ দিকে এ উপজেলার কড়িবামুজা ও নশিরপাড়া এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর সম্মুখ লড়াই হয়। ১৩ ডিসেম্বর এ উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।[৪]

দর্শনীয় স্থান সম্পাদনা

চিত্রশালা সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে কাহালু"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ৯ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৪ 
  2. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "কাহালু উপজেলার পটভূমি"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১০ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৪ 
  3. তালপাতার পাখায় দুধে-ভাতে, প্রথম আলো, ৯ এপ্রিল ২০১৬
  4. "কাহালু উপজেলা - বাংলাপিডিয়া" 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা