আদমদীঘি উপজেলা

বগুড়া জেলার একটি উপজেলা

আদমদিঘী বাংলাদেশের বগুড়া জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা এবং বগুড়া জেলার পশ্চিমাংশে অবস্থিত। মাদুর শিল্পের জন্য এ উপজেলা প্রসিদ্ধ। এ উপজেলার নশরতপুর ইউনিয়নের শাঁওইল বাজার তাঁত শিল্পের জন্য বিখ্যাত।[১]

আদমদীঘি
উপজেলা
আদমদীঘি রাজশাহী বিভাগ-এ অবস্থিত
আদমদীঘি
আদমদীঘি
আদমদীঘি বাংলাদেশ-এ অবস্থিত
আদমদীঘি
আদমদীঘি
বাংলাদেশে আদমদীঘি উপজেলার অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৪°৪৯′ উত্তর ৮৯°০′ পূর্ব / ২৪.৮১৭° উত্তর ৮৯.০০০° পূর্ব / 24.817; 89.000 উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
দেশবাংলাদেশ
বিভাগরাজশাহী বিভাগ
জেলাবগুড়া জেলা
আয়তন
 • মোট১৬৮.৮৪ বর্গকিমি (৬৫.১৯ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)
 • মোট১,৮৭,০১২
 • জনঘনত্ব১,১০০/বর্গকিমি (২,৯০০/বর্গমাইল)
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৫০ ১০ ০৬
ওয়েবসাইটপ্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

অবস্থান ও আয়তনসম্পাদনা

বগুড়া সদর থেকে আদমদিঘী উপজেলা সদরের দূরত্ব প্রায় ৩৫ কিলোমিটার। এ উপজেলার উত্তরে জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলাদুপচাঁচিয়া উপজেলা, দক্ষিণে নওগাঁ জেলার রাণীনগর উপজেলা, পূর্বে কাহালু উপজেলানন্দীগ্রাম উপজেলা, পশ্চিমে নওগাঁ সদর উপজেলা

প্রশাসনিক এলাকাসম্পাদনা

আদমদীঘি উপজেলায় ১ টি পৌরসভা ও ৬ টি ইউনিয়ন আছে। একমাত্র পৌরসভাটি হচ্ছে সান্তাহার পৌরসভা। উপজেলার ইউনিয়নসমূহ হচ্ছে-

ইতিহাসসম্পাদনা

আদম-এর দিঘি হতে আদমদিঘী নামের সূচনা হয়েছে। আদমদিঘী থানার পাশে আদম বাবা নামে এক সূফী সাধকের মাজার আছে এবং সে মাজারের উত্তরপার্শ্বে আছে একটি বড় পুকুর, যাকে আদম বাবার দিঘি বলা হয়। কথিত আছে যে, নাটোরের রাণী ভবানী বাবা আদমের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এ পুকুরটি খনন করেন।

১৮২১ সালে আদমদীঘি থানা গঠিত হয়। উপজেলায় রূপান্তরিত হয় ১৯৮৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর।[৩]

জনসংখ্যার উপাত্তসম্পাদনা

 
আদমদীঘি উপজেলা পরিষদ অফিস

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী আদমদিঘী উপজেলার মোট জনসংখ্যা ১,৯৫,১৮৬ জন (প্রায়) জন;[৪] যার ৯৪,৯৯৭জন (প্রায়) জন পুরুষ ও ৯২,০১৫জন (প্রায়) জন নারী। প্রতি কিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব ১,১০৮ জন। আদমদিঘী উপজেলার মোট ভোটার সংখ্যা ১,৩১,৯১৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬৪,৬০৭ জন ও মহিলা ভোটার ৬৭,৩০৯ জন।[৫]

শিক্ষাসম্পাদনা

আদমদিঘী উপজেলার কিছু উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো হল-

  • নিম্ন মাধ্যমিক*

১.আদমদীঘি আইপিজে(পাইলট)উচ্চ বিদ্যালয় ২.নসরতপুর বহু মূখী উচ্চ বিদ্যালয় ৩.কুন্দগ্রাম দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ৪.কুন্দগ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ৫.কাঞ্চনপুর উচ্চ বিদ্যালয় ৬.সান্তাহার বিপি উচ্চ বিদ্যালয় ৭.ছতনী ঢেকড়া উচ্চ বিদ্যালয় ৮.বিহিগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় ৯.তিলছ শিব্বাটী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ১০.কড়ই দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয়

    • মাদ্রাসা সমূহ**

১.আদমদীঘি আদমিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসা]] ২.তিলচ ইসলামপুর সিদ্দিকীয়া দাখিল মাদ্রাসা ৩.ধনতলা দাখিল মাদ্রাসা। ৪.কড়ই আলিম মাদ্রাসা। ৬.চেচুয়া দাখিল মাদ্রাসা। ৭.ঝাখইড় দাখিল মাদ্রাসা। ৮.ধামরাই দাখিল মাদ্রাসা। ৯.বশিকোড়া দাখিল মাদ্রাসা।

  • সরকারি কলেজ*

১.সান্তাহার সরকারি কলেজ

  • বেসরকারি কলেজ*

১.নসরতপুর ডিগ্রী কলেজ ২.আদমদিঘী রহিমউদ্দীন ডিগ্রি কলেজ ৩.জালাল উদ্দিন আহমেদ ডিগ্রি কলেজ,চাপাঁপুর

অর্থনীতিসম্পাদনা

আদমদীঘির অর্থনীতির প্রধান বিষয় মৎস্য ব্যবসা। এখানে রেনু পোনা বিক্রয়ের জন্য নামকরা। এখানে সব মিলে ৭-৮ টি মৎস্য খামার আছে, যেখানে তাদের নিজস্ব পুকুর গুলো থেকে ডিম ওয়লা মাছ ধরে কৃত্রিম উপায়ে বিভিন্ন মাছের রেণু পোনা উৎপাদন করা হয়।

এখানকার প্রায় ৭৫% ভাগ মানুষ মাছের ব্যবসায়ের সাথে সংযুক্ত। বাকি ২৫% ভাগ মানুষ কৃষি কাজ, চাকরি, আর বিভিন্ন পেশায় জড়িত। অর্থনীতির দিক দিয়ে মুরইল ৮০% ভাগ মানুষ তাঁত শিল্পের উপরে নির্ভরশীল।

মৃৎশিল্পসম্পাদনা

আদমদীঘি থানাধীন তালশন পালপাড়া সহ কয়েকটি গ্রামে মৃৎশিল্প বা মাটির তৈরি বাসন পাতিল তৈরি করে দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি করা হয়।

দর্শনীয় স্থান ও বিনোদনসম্পাদনা

  • সান্তাহার সাইলো
  • বাবা আদমের মাজার ও আদমদিঘীর প্রখ্যাত দিঘী
  • শখের পল্লী
  • রক্তদহ বিল
  • রানী ভবানীর বাবার বাড়ি ছাতিয়ানগ্রাম
  • শান্তাহার আধুনিক স্টেডিয়াম[৬]

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্বসম্পাদনা

  • কছিম উদ্দীন আহমেদ (মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং ১৯৭০ এবং ১৯৭৩ এর নির্বাচিত জাতীয় পরিষদ এবং গণ পরিষদের সদস্য।
  • অধ্যাপক ড. মছির উদ্দিন, সরকারি আযিযুল হক কলেজ-এর অধ্যক্ষ এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড-এর চেয়ারম্যান ছিলেন।

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "আদমদীঘি ইতিহাস"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৪ 
  2. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "ইউনিয়নসমূহ"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৪ 
  3. "আদমদীঘি উপজেলা"banglapedia। ২৮ আগস্ট ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুলাই ২০২০ 
  4. "আদমশুমারী প্রতিবেদন-২০১১" (পিডিএফ)। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১৩ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ 
  5. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে আদমদীঘি"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২৯ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৪ 
  6. ইসলাম, রাহেনুর (২০২৩-০২-১৯)। "খেলা নয়, মাছ চাষ হয়"কালের কন্ঠ। ২০২৩-০২-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-২০ 

আরও দেখুনসম্পাদনা

বহিঃসংযোগসম্পাদনা