ভাসু বিহার বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন প্রত্ন নিদর্শন। স্থানীয়রা একে নরপতির ধাপ হিসেবেও অভিহিত করে। এই প্রত্নস্থলে খননের ফলে পরবর্তী গুপ্তযুগের দুটি আয়তক্ষেত্রাকার বৌদ্ধ বিহার এবং একটি প্রায় ক্রুশাকৃতি মন্দির আবিষ্কৃত হয়েছে।[১]

ভাসু বিহার
Vashu bihar1.jpg
নরপতির ধাপ (ভাসু বিহার)
অবস্থানশিবগঞ্জ, বগুড়া
স্থানাঙ্ক২৪°৫৮′৫৮″ উত্তর ৮৯°১৭′৫২″ পূর্ব / ২৪.৯৮২৮° উত্তর ৮৯.২৯৭৮° পূর্ব / 24.9828; 89.2978
নির্মিত৮ম শতক
স্থাপত্যশৈলীগুপ্ত, পাল
ধরনপ্রত্নতাত্ত্বিক
সূত্র নংBD-E-03-111
দেশবাংলাদেশ
ভাসু বিহার বাংলাদেশ-এ অবস্থিত
ভাসু বিহার
বাংলাদেশে ভাসু বিহারের অবস্থান
ভাসু বিহার, বগুড়া
ভাসু বিহারে বৌদ্ধ আশ্রম ভবনের ধ্বংসাবশেষ
আশ্রম ভবন
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সাইনবোর্ড
আকাশ থেকে ভাসু বিহার

অবস্থানসম্পাদনা

এটি বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায়, মহাস্থানগড় থেকে ৬ কিলোমিটার পশ্চিমে বিহার ইউনিয়নের বিহার নামক গ্রামে অবস্থিত।

ইতিহাসসম্পাদনা

ভাসুবিহার স্থানীয়ভাবে পরিচিত নরপতীর ধাপ নামে। এর অবস্থান শিবগঞ্জ উপজেলার বিহার হাটে। এখানে ১৯৭৩-৭৪ সালে প্রথমবারের মতো প্রত্নতাত্ত্বিক খনন শুরু হয় এবং তা পরবর্তী দুই মৌসুম অব্যাহত থাকে। ধারণা করা হয়, এটি একটি বৌদ্ধ সংঘারামের ধ্বংসাবশেষ। খননকার্যের ফলে সেখানে ব্রোঞ্জের বৌদ্ধমুর্তি, পোড়ামাটির ফলকসহ বিভিন্ন মূল্যবান প্রত্নতাত্ত্বিক বস্তু আবিষ্কৃত হয়েছে। চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাঙ ৬৩৮ খ্রিষ্টাব্দে এখানে এসেছিলেন। তার ভ্রমণবিবরণীতে তিনি এটাকে 'পো-শি-পো' বা বিশ্ববিহার নামে উল্লেখ করেছেন। খুব সম্ভবত এটি বৌদ্ধদের ধর্মীয় বিদ্যাপীঠ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ব্রিটিশ আমলে ভাসুবিহারকে স্থানীয় মানুষরা 'ভুশ্বুবিহার' নামে আখ্যায়িত করেছে। বর্তমানে ভাসুবিহার অন্যতম পর্যটন স্পট হিসাবে পরিচিত লাভ করেছে।

অবকাঠামোসম্পাদনা

খননের ফলে দুটি মধ্যম আকৃতির সংঘারাম এবং একটি মন্দিরের স্থাপত্তিক কাঠামো সহ প্রচুর প্রত্নবস্তু পাওয়া যায়। ছোট সংঘারামটির আয়তন উত্তর-দক্ষিণে ৪৯ মিটার এবং পূর্ব-পশ্চিমে ৪৬ মিটার। এর চার বাহুতে ভিক্ষুদের ২৬টি কক্ষ রয়েছে।[২] কক্ষগুলির সামনে চারদিকে ঘোরানো বারান্দা এবং পূর্ব বাহুর মাঝখানে প্রবেশ পথ আছে। বড় সংঘারামটি ছোটটির মতই দেখতে তবে এর আয়তন ও কক্ষ সংখ্যা বেশি। বড় আকারের একটি খোলা অংশকে ঘিরে এসব ছোট আকারের বৌদ্ধভিক্ষুদের আবাসকক্ষ। দেখে মনে হয় খোলা বড় অংশটি ছিল মিলনায়তন। যে মন্দিরের কাঠামো পাওয়া গেছে তার মাঝখানে বর্গাকার মণ্ডপ এবং চারপাশে ধাপে ধাপে উন্নিত প্রদক্ষিণ পথ আছে। এখানে প্রায় ৮০০ প্রত্নবস্তু পাওয়া গেছে। তার মধ্যে ছিল ক্ষুদ্রাকৃতির মূর্তি, পোড়ামাটির ফলক ও সিলমোহর, মূল্যবান পাথরের গুটিকা, অলংকৃত ইট ও ফলক, মাটির প্রদীপ, পাত্রের টুকরা সহ অসংখ্য প্রত্নবস্তু।

আরও দেখুনসম্পাদনা

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. ভাসু বিহার, শাহ সুফি মোস্তাফিজুর রহমান; বাংলাপিডিয়া, ফেব্রুয়ারি ২০০২ সংস্করণ; বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা থেকে প্রকাশিত।
  2. "Vashu Bihar, Shibgonj, Bogra"। Bangladesh Parjatan Team। ২০১৬-০৯-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৯-১০ 

বহিঃসংযোগসম্পাদনা