মাতৃকা

হিন্দু শাক্তধর্মে মহাশক্তির কয়েকটি বিশেষরূপ

হিন্দু শাক্তধর্মে মহাশক্তির কয়েকটি বিশেষরূপকে একত্রে মাতৃকা (সংস্কৃত: मातृका, আইএএসটি: mātṝkā) নামে অভিহিত করা হয়।[] এঁদের মাতরঃ (সংস্কৃত: मातरः) বা মাতৃ (সংস্কৃত: मातृ) নামেও অভিহিত করার রীতি প্রচলিত রয়েছে। সংখ্যায় সাত হওয়ার দরুন এঁদের সপ্তমাতৃকা (সংস্কৃত: सप्तमातृका) নামেও অভিহিত করা হয়। এঁরা হলেন: ব্রহ্মাণী, বৈষ্ণবী, মাহেশ্বরী, ইন্দ্রাণী, গঙ্গা, লক্ষ্মী, স্বরসতী, কৌষিকী, গণেশজননী, স্বন্দদাত্রী, কৌমারী, বারাহী, চামুণ্ডা, কামেশ্বরী, ক্যাতায়ণী, শিবানী, চণ্ডী, মনসা, রাধা, ভুবনেশ্বরী, শূদ্রাণী, ক্ষত্রিয়া, বৈশ্যা, ছিন্নমস্তা, চন্দ্রঘণ্টা, শৈলকন্যা, মহাকালী, তারা, শাক্তা, দূর্গা, ঈশ্বরী, মাতঙ্গী, ভৌরবী, স্বরসতী, ভীষ্মা, কালরাত্রি, নৃসিংহী, হয়গ্ৰীবা, সীতা। তবে কোনো কোনো মতে, মাতৃকাগণ সংখ্যায় আট এবং তারা অষ্টমাতৃকা (সংস্কৃত: अष्टमातृका) নামে পরিচিত। মাতৃকাগণ দক্ষিণ ভারতে সপ্তমাতৃকার রূপে এবং নেপালে অষ্টমাতৃকার রূপে পূজিতা হয়ে থাকেন।[]

মাতৃকা
যুদ্ধ, সন্তান ও মোক্ষের দেবী[]
শিব (সর্ববামে) ও মাতৃকাগণ: (বাঁদিক থেকে) ব্রাহ্মণী, মাহেশ্বরী, কৌমারী, বৈষ্ণবী, বারাহী, ইন্দ্রাণী, চামুন্ডি, নরসিংহী
দেবনাগরীमातृका
তামিল লিপিசப்தகன்னியர்
অন্তর্ভুক্তিদেবী, মহাশক্তি

হিন্দুধর্মের শাক্তশাখা তান্ত্রিক ধর্মে মাতৃকাগণের গুরুত্ব সর্বোচ্চ।[] শাক্তধর্মে তারা "অসুরদের সঙ্গে যুদ্ধকালে মহাশক্তির সহকারিণী রূপে বর্ণিত হন।"।[] কোনো কোনো পণ্ডিত তাঁদের শৈব দেবী মনে করেন।[] যুদ্ধদেবতা স্কন্দের পূজার সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক বিদ্যমান।[]

প্রথম দিকের বর্ণনায় মাতৃকাদের অমঙ্গলকর ও বিপজ্জনক দেবী বলে উল্লেখ করা হয়। পরবর্তীকালের পুরাণগুলিতে তাঁদের রক্ষাকর্ত্রীর ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়। তবে এই সকল বর্ণনাতেও তাঁদের কয়েকজন অমঙ্গলকর এবং ভয়ানকই রয়ে যান।[] এইভাবে "তাঁরা প্রকৃতির সৃষ্টিকারিণী এবং ধ্বংসকারিণী উভয় রূপেরই প্রতীক হয়ে ওঠেন।"[]

খ্রিষ্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দীতে রচিত বৃহৎ-সংহিতায় বরাহমিহির লিখেছেন, “[বিভিন্ন পুরুষ] দেবতার নামানুসারে এবং তাঁদের গুণ অনুযায়ী মাতৃকাগণের সৃষ্টি।” [১০] তারা এই সকল পুরুষ দেবতার স্ত্রী অথবা শক্তি হিসেবে পরিচিত।[] মনে করা হয়, মাতৃকাগণ প্রকৃতপক্ষে সপ্তকন্যা নামক নক্ষত্রমণ্ডলীর সাতটি নক্ষত্রের মূর্তিরূপ। খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতাব্দী নাগাদ তারা ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন এবং নবম শতাব্দী থেকে বিভিন্ন দেবী মন্দিরের সাধারণ বৈশিষ্ট্যে পরিণত হন।[১১]

উৎস ও বিবর্তন

সম্পাদনা
 
অন্যতম মাতৃকা বারাহী

জগদীশ নারায়ণ তিওয়ারি ও দিলীপ চক্রবর্তীর মতে, সিন্ধুবৈদিক সভ্যতায় মাতৃকা পূজার অস্তিত্ব ছিল। এই তত্ত্বের প্রমাণ হিসেবে মুদ্রায় পাওয়া সাত দেবী বা নারী পুরোহিতের পাশাপাশি অবস্থানের চিত্র দেখানো হয়ে থাকে।[১২][১৩] ঋগ্বেদে সাত মাতৃকার একটি গোষ্ঠীকে সোম প্রস্তুতিকরণের নিয়ন্ত্রণকারিণী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে মাতৃকাগণের প্রথম সুস্পষ্ট উল্লেখ পাওয়া যায় খ্রিষ্টীয় প্রথম শতাব্দীতে রচিত মহাভারতে[১৪][১৫] ওয়াঙ্গু মনে করেন, সিন্ধু সভ্যতার সিলমোহরে খোদিত সপ্তমাতৃকার মূর্তিই মহাভারতে বর্ণিত মাতৃকাগণের মূল উৎস।[] মনে করা হয়, লোকেরা স্থানীয়ভাবে এই সকল দেবীদের পূজা করতেন। জিমার হেইনরিখের দি আর্ট অফ ইন্ডিয়ান এশিয়া গ্রন্থেও এই রকম স্থানীয়ভাবে পূজিত সাত দেবীর সাত মন্দিরের উল্লেখ রয়েছে। পঞ্চম শতাব্দীতে এই সকল দেবীদের তান্ত্রিক দেবীর রূপে মূলধারার হিন্দুধর্মের অঙ্গীভূত করা হয়।[১৬][১৭] ডেভিড কিনসলের মতে, মাতৃকারা অনার্য অথবা অব্রাহ্মণ্য স্থানীয় গ্রাম্যদেবী। পরবর্তীকালে তাদের মূলধারার হিন্দুধর্মের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। এই মতের সপক্ষে তিনি দুটি যুক্তি উত্থাপন করেছেন: প্রথমত, তারা কৃষ্ণবর্ণা, ম্লেচ্ছভাষিণী এবং প্রান্তদেশবাসিনী। দ্বিতীয়ত, অব্রাহ্মণ্য দেবতা স্কন্দ ও অব্রাহ্মণ্য চরিত্রবৈশিষ্ট্যযুক্ত বৈদিক দেবতা শিবের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক বিদ্যমান।.[১৮] সারা এল. শ্যাসটোক মনে করেন, মাতৃকার ধারণাটি যক্ষ ধারণার থেকে উদ্ভূত। কারণ স্কন্দ ও কুবেরের মূর্তি তাদের সঙ্গে অঙ্কিত হয় এবং উক্ত উভয় দেবতাই যক্ষ ধারণার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।[১৯]

সিন্ধু সভ্যতা তত্ত্বের বিরোধিতা করে এন. এন. ভট্টাচার্য লিখেছেন,

নারী নীতির ধর্ম ছিল দ্রাবিড় ধর্মের একটি প্রধান দিক, শক্তির ধারণা ছিল তাদের ধর্মের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। সপ্ত মাতৃকা, বা সপ্ত মাতার ধর্ম, যা শাক্তধর্ম ধর্ম, হতে পারে দ্রাবিড় জাতি অনুপ্রেরণা.[২০]

সপ্তমাতৃকা প্রথমদিকে স্কন্দ বা কুমারের সঙ্গে সম্পর্কিত থাকলেও পরে শৈবধর্মের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক স্থাপিত হয়।[]

কুষাণ যুগে (খ্রিষ্টীয় তৃতীয় শতাব্দীর শেষভাগ) মাতৃকাদের প্রথম প্রস্তরমূর্তি নির্মিত হয়। কুষাণ ভাস্কর্যগুলির উৎস ছিল বালগ্রহ (শিশুহত্যাকারী) ধারণাটি। বালগ্রহ গর্ভধারণ, শিশুর জন্ম, রোগবিসুখ ও রক্ষার ধারণার সঙ্গে যুক্ত ছিল। বালগ্রহ পূজায় মাতৃকাগণের সহিত স্কন্দের মূর্তি পূজিত হত। লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, শিশুদের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত এই দেবীরা হলেন বিপদের প্রতীক। তাই পূজার মাধ্যমে তাদের শান্ত রাখার চেষ্টা করা হত। কুষাণ মূর্তিতে মাতৃকাদের মাতৃরূপ পরিস্ফুট হলেও, নানা অস্ত্র ও প্রতীক সমাবেশের মাধ্যমে তাদের ধ্বংসাত্মক রূপটিও ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল। তাদের ভাস্কর্য এই সময়ে সমরূপীয় হলেও গুপ্তযুগে তাতে বিভিন্ন ধাঁচ ও জটিল মূর্তিতাত্ত্বিক প্রতীকবাদের সমাবেশ ঘটে।[২১]

গুপ্ত যুগে (খ্রিষ্টীয় তৃতীয় থেকে ষষ্ঠ শতাব্দী) মাতৃকাদের লৌকিক মূর্তি গ্রামে গ্রামে প্রাধান্য অর্জন করে।[২২] গুপ্ত শাসকেরা সৈনিকবেশী লৌকিক মাতৃকাদের গ্রহণ করেছিলেন। বিভিন্ন রাজকীয় স্মারকে সেনাবাহিনীর আনুগত্য ও কর্মনিষ্ঠা বৃদ্ধিকল্পে তারা মাতৃকামূর্তি খোদিত করতেন।[২৩] গুপ্ত সম্রাট স্কন্দগুপ্ত ও কুমারগুপ্ত (পঞ্চম শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধ) স্কন্দ বা কুমারকে[b] তাদের আদর্শ রূপে গ্রহণ করলে, স্কন্দের ধাত্রীমাতা মাতৃকাদের স্থানও উচ্চে স্থাপিত হয়। মাতৃকাগণ লৌকিক দেবী থেকে রাজদেবীতে উত্তীর্ণ হন।[২৪] চতুর্থ শতাব্দীতে অধুনা মধ্যপ্রদেশ অঞ্চলের পাহাড়িতে সপ্তমাতৃকার একটি প্রস্তরমন্দির নির্মিত হয়। এই মন্দিরটি এখনও বর্তমান রয়েছে।[২৫]

কর্ণাটকের পশ্চিম গঙ্গ রাজবংশীয় (৩৫০-১০০০ খ্রীষ্টাব্দ) রাজারা একাধিক হিন্দুমন্দির ও স্মৃতিসোধের সপ্তমাতৃকার মূর্তি[২৬] ও শাস্ত্রীয় বিবরণ খোদিত করেছিলেন।[২৭] গুর্জর প্রতিহার (খ্রিষ্টীয় অষ্টম-দশম শতাব্দী) ও চান্দেল্ল যুগের (খ্রিষ্টীয় অষ্টম-দ্বাদশ শতাব্দী) ভাস্কর্যেও মাতৃকাদের মূর্তি বিশেষভাবে লক্ষিত হয়।[২৮] চালুক্য রাজাগণ দাবি করতেন, মাতৃকাগণ ছিলেন তাদের আদি ধাত্রীমাতা। উল্লেখ্য, সেযুগে দক্ষিণ ভারতীয় রাজবংশগুলির সঙ্গে একটি করে উত্তর ভারতীয় রাজবংশের সম্পর্ক স্থাপন ছিল জনপ্রিয় রীতি।[২৯] চালুক্য যুগেও অন্যান্য দেবীমূর্তির সঙ্গে মাতৃকাগনের মূর্তিও খোদিত হতে থাকে। কদম্ব ও আদি চালুক্য রাজারা তাদের নথিপত্রের শুরুতে মাতৃকাগণকে শত্রুবিজয়ের শক্তিপ্রদায়িনীরূপে বন্দনা করতেন।[৩০][৩১]

অধিকাংশ প্রাসঙ্গিক গ্রন্থে তাদের সংখ্যাটি স্পষ্ট করা হয়নি। ধীরে ধীরে তাদের সংখ্যা ও নাম নির্ধারিত হতে থাকে এবং সাত জন দেবী মাতৃকার মর্যাদা লাভ করেন। তবে কোনো কোনো গ্রন্থে অষ্ট এমনকি ষোড়শ মাতৃকারও উল্লেখ রয়েছে।[৩২]

লরা ক্রিস্টিন চেম্বারলেন (বর্তমানে লরা কে. অ্যামাজন) লিখেছেন:

সিন্ধু উপত্যকায় আজ (সাত, আট, নয়) প্রাপ্ত মাতৃক সংখ্যার অসঙ্গতি সম্ভবত দেবীর স্থানীয়করণকে প্রতিফলিত করে। যদিও মাতৃকাদের বেশিরভাগই ভারতীয় উপমহাদেশের বাকি অংশে সাতটি দেবী হিসাবে গোষ্ঠীভুক্ত করা হয়েছে, তবে আটটি মূল নির্দেশের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য কখনও কখনও নেপালে একটি অষ্টম মাতৃকা যোগ করা হয়েছে। কাঠমান্ডু উপত্যকার একটি শহর ভক্তপুরে কেন্দ্রের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য সেটে একটি নবম মাতৃকা যোগ করা হয়েছে.[৩৩]

বর্ণনা

সম্পাদনা
 
যুদ্ধে আটটি মাতৃকা (উপরের সারি, বাম দিক থেকে) নরসিংহী, বৈষ্ণবী, কৌমারী, মহেশ্বরী, ব্রাহ্মণী। (নীচের সারি, বাম থেকে) বরাহী, ইন্দ্রাণী, চামুণ্ডা কালীকে নিয়ে তাদের সামনে, সকলেই অসুর রক্তবীজ-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও হত্যা করে। দেবী মাহাত্ম্য থেকে একটি ফলিও।

বিভিন্ন পুরাণ, আগমশাস্ত্রমহাভারতে মাতৃকাগণের মূর্তিতত্ত্ব বর্ণিত হয়েছে। পুরাণের মধ্যে বরাহ পুরাণ, অগ্নি পুরাণ,[৩৪] মৎস্য পুরাণ, বিষ্ণুধর্মোত্তর পুরাণমার্কণ্ডেয় পুরাণের অন্তর্গত দেবীমাহাত্ম্যম্ গ্রন্থে এবং আগমশাস্ত্রগুলির মধ্যে অংসুমাদভেদাগম, সুরভেদাগম, পূর্বকর্ণাগম, রূপমান্দনে মাতৃকাগণের বর্ণনা রয়েছে।

দেবীমাহাত্ম্যম্ গ্রন্থে বর্ণিত অষ্টমাতৃকাগণ হলেন:[৩৫]

ব্রাহ্মী (সংস্কৃত: ब्राह्मि) বা ব্রহ্মাণী (সংস্কৃত: ब्रह्माणी) হলেন সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার শক্তি। তিনি পীতবর্ণা ও চতুর্মুখ। তার হস্তসংখ্যা বর্ণনাভেদে চার অথবা ছয়। ব্রহ্মার মতোই তিনি অক্ষমালা-কমণ্ডলু, পদ্ম বা গ্রন্থ বা ঘণ্টাধারিণী এবং হংস বাহিনী। কোনো কোনো মূর্তিতে তিনি পদ্মাসনা ও তার ধ্বজায় হংসচিহ্ন অঙ্কিত। তিনি নানালঙ্কারভূষিতা ও করণ্ডমুকুটধারিণী।
বৈষ্ণবী (সংস্কৃত: वैष्णवी) পালনকারী দেবতা বিষ্ণুর শক্তি। তিনি গরুড়ের পৃষ্ঠে আসীনা এবং চর্তুভূজা বা ষড়ভূজা। তিনি শঙ্খ, চক্র, ধনুর্বাণ, খড়্গ বা বরা ভয় মুদ্রা ধারিণী। বিষ্ণুর মতো তিনিও সর্বাভরণভূষিতা ও কিরীটি মুকুটধারিণী।
মহেশ্বরী (সংস্কৃত: माहेश्वरी) দেবতা শিবের শক্তি, মহেশ্বর নামেও পরিচিত। মহেশ্বরী রুদ্রী, রুদ্রাণী, মহেশী এবং শিবানী নামেও পরিচিত যা শিবের নাম রুদ্র, রুদ্রজা, মহেষা এবং শিব থেকে উদ্ভূত। মহেশ্বরীকে নন্দীর (ষাঁড়) উপর উপবিষ্ট চিত্রিত করা হয়েছে এবং তার চার বা ছয়টি হাত রয়েছে। শ্বেতবর্ণ, ত্রিনেত্র (তিন চক্ষু) দেবী ত্রিশূল (ত্রিশূল), ডমরু (ঢোল), অক্ষমালা (পুঁতির মালা), পানপত্র (পানীয় পাত্র) বা কুঠার বা একটি হরিণ বা কপাল (মস্তক-বাটি) অথবা একটি সর্প এবং সর্প ব্রেসলেট, অর্ধচন্দ্র এবং জটা মুকুট (স্তূপযুক্ত, ম্যাটেড চুল দ্বারা গঠিত একটি হেডড্রেস) সজ্জিত।
ইন্দ্রাণী (সংস্কৃত: इन्द्राणी), আইন্দ্রী নামেও পরিচিত, (সংস্কৃত: ऐन्द्री), মহেন্দ্রী, বজরী, বজ্রপাতের দেবতা ইন্দ্রের শক্তি। একটি হাতির উপর উপবিষ্ট, ইন্দ্রাণী, কালো চামড়ার, দুই বা চার বা ছয়টি বাহু সহ চিত্রিত করা হয়েছে। তাকে চিত্রিত করা হয়েছে ইন্দ্রের মতো দুই বা তিন বা চারটি চোখ এবং তার শরীরে এক হাজার চোখ। তিনি বজ্র (বজ্র), অঙ্কুশা, ফাঁস এবং পদ্মের বৃন্তে সজ্জিত। বিভিন্ন অলঙ্কারে সজ্জিত, তিনি কিরীট মুকুট পরিধান করেন।
কৌমারী (সংস্কৃত: कौमारी), কুমারী, কার্তিকি, কার্তিকেয়ানী, অম্বিকা নামেও পরিচিত যুদ্ধের দেবতা কার্তিকেয়ের শক্তি। কৌমারী একটি ময়ূর চড়ে এবং তার চার বা বারোটি হাত রয়েছে। তার কাছে একটি বর্শা, কুড়াল, একটি শক্তি (শক্তি) বা ট্যাঙ্ক (রৌপ্য মুদ্রা) এবং ধনুক রয়েছে। কখনও কখনও তাকে কার্তিকেয়ের মতো ছয় মাথাওয়ালা চিত্রিত করা হয় এবং কিরিটা মুকুট নামে একটি নলাকার মুকুট পরে থাকে।
বারাহী (সংস্কৃত: वाराही) বা বৈরালি নামেও পরিচিত ভেরাই, দান্ডিনী, ধান্দাই দেবী হলেন বরাহর শক্তি, বিষ্ণুর তৃতীয় এবং শুয়োরের মাথাওয়ালা রূপ। তিনি একটি ডান্ডা (রড) বা লাঙ্গল, গড, একটি বজ্র বা একটি তলোয়ার এবং একটি পানপত্র ধারণ করেন এবং তিনি একটি মহিষে চড়েন। কখনও কখনও, তিনি একটি ঘণ্টা, চক্র, চামারা (একটি ইয়াকের লেজ) এবং একটি ধনুক বহন করেন। তিনি অন্যান্য অলঙ্কারগুলির সাথে করণ্ড মুকুট নামক একটি মুকুট পরেন।
চামুন্ডা (সংস্কৃত: चामुण्डा), চামুন্ডি এবং চার্চিকা নামেও পরিচিত, চণ্ডীর শক্তি, পার্বতীর একটি রূপ। তিনি প্রায় কালীর মতন এবং তার চেহারা ও অভ্যাস একই রকম। দেবী মাহাত্ম্যে কালীর সাথে সাদৃশ্য স্পষ্ট। কালো রঙের চামুন্ডাকে ছিন্ন মস্তকের মালা (মুণ্ডমালা) পরা এবং একটি ডমরু (ঢোল), ত্রিশূল (ত্রিশূল), তলোয়ার এবং পানাপাত্র (পানীয়-পাত্র) ধারণ করা এবং একটি করণ্ড মুকুট পরা হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। একটি শেয়ালে চড়ে, তাকে তিনটি চোখ, একটি ভয়ঙ্কর মুখ এবং একটি ডুবে যাওয়া পেট বলে বর্ণনা করা হয়েছে।
নরসিংহী (সংস্কৃত: नारसिंही) হল নরসিংহের ঐশ্বরিক শক্তি (বিষ্ণুর চতুর্থ এবং সিংহ-পুরুষ)। তাকে প্রত্যঙ্গিরা নামেও ডাকা হয়, নারী-সিংহ দেবী যিনি তার সিংহের মানি নাড়িয়ে নক্ষত্রকে বিশৃঙ্খলভাবে ফেলে দেন এবং একটি করণ্ড মুকুট পরেন। তাকে ডমরু (ড্রাম), ত্রিশূল (ত্রিশূল), তলোয়ার এবং পানপত্র (পান-পাত্র) ধারণ করা হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। সে সিংহের উপর চড়ে।
  1. Wangu p.99
  2. Kinsley .151
  3. van den Hoek in Nas, p.362
  4. Wangu p.41
  5. Bhattacharyya, N. N., History of the Sakta Religion, Munshiram Manoharlal Publishers Pvt. Ltd. (New Delhi, 1974, 2d ed. 1996), p. 126.
  6. Wangu p.75
  7. The Iconography and Ritual of Śiva at Elephanta By Charles Dillard Collins p.143
  8. Kinsley (1988) p.151
  9. Jain p.162
  10. Brhatsamhita, Ch.57, v.56. Panda, S.S. (২০০৪)। "Sakti Cult in Upper Mahanadi Valley" (পিডিএফ)Orissa Review। Government of Orissa। ২০০৯-০৩-০৪ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০১-০৮  অজানা প্যারামিটার |month= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  11. Wangu Glossary p.187
  12. Jagdish Narain Tiwari, "Studies in Goddess Cults in Northern India, with Reference to the First Seven Centuries AD" p.215-244; as referred in Kinsley p.151
  13. Dilip Chakravati in Archaeology and World Religion By Timothy Insoll, Published 2001, Routledge,আইএসবিএন ০-৪১৫-২২১৫৪-৪, pp.42-44
  14. Kinsley p.151
  15. Pal in Singh p.1836
  16. Zimmer Heinrich, 1960,2001 The Art Of Indian Asia, Its Mythology and Transformations.Motilal Banarsidas Publication. New Delhi (Page B4C,257,135)
  17. Harper in Harper and Brown, p.48
  18. Kinsley p.155
  19. Schastok pp.58-60
  20. Bhattacharyya, N. N., History of the Sakta Religion, Munshiram Manoharlal Publishers Pvt. Ltd. (New Delhi, 1974, 2d ed. 1996).
  21. Wangu pp.58-59
  22. Wangu p.67
  23. Wangu p. 68
  24. Wangu p.76
  25. Berkson p.212
  26. Kamath, Suryanath U. (২০০১) [1980]। A concise history of Karnataka : from pre-historic times to the present। Bangalore: Jupiter books। ওসিএলসি 7796041এলসিসিএন ৮০-৯ – 0।  p51
  27. Kamath (2001), p52
  28. Goswami, Meghali (২০০৫)। "Sapta Matrikas In Indian Art and their significance in Indian Sculpture and Ethos: A Critical Study" (PDF)Anistoriton Journal। Anistoriton। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০১-০৮  অজানা প্যারামিটার |month= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য); অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য) "Anistoriton is an electronic Journal of History, Archaeology and ArtHistory. It publishes scholarly papers since 1997 and it is freely available on the Internet. All papers and images since vol. 1 (1997) are available on line as well as on the free Anistorion CD-ROM edition."
  29. Dr. Suryanath U. Kamath (2001), A Concise History of Karnataka from pre-historic times to the present, Jupiter books, MCC (Reprinted 2002), p60
  30. Lorenzen, David in Harper and Brown, p.29
  31. Harper in Harper and Brown, p.121
  32. Kinsley p.156
  33. Cited in Laura Kristine Chamberlain. “Durga and the Dashain Harvest Festival: From the Indus to Kathmandu Valleys” in ReVision, Summer 2002, vol. 25, no. 1, p.26
  34. Agni Purana, Tr. by M.N. Dutta, Calcutta, 1903-04,Ch.50.18.22.
  35. See:
    • Kinsley p.156, IAST names and Descriptions as per Devi Mahatmya , verses 8.11-20
    • "Sapta Matrikas (12th C AD)"। Department of Archaeology and Museums, Government of Andhra Pradesh। ২০০৭-০৭-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০১-০৮ 
    • Other names from Devi Purana: Pal in Singh p.1844 and Descriptions: p.1846
    • Kalia, pp.106-109.

b. ^ Note that the Gupta rulers took the names of the deity Skanda as their own names
c. ^ This very ability is possessed by Raktabija of the Devi Mahatmya and Vamana Purana.

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা


বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা