মার্কণ্ডেয় পুরাণ

অষ্টাদশ মহাপুরাণের অন্যতম প্রধান এবং হিন্দু ধর্মের পবিত্র গ্রন্থ।

মার্কণ্ডেয় পুরাণ (সংস্কৃত: मार्कण्डेय पुराण) হল সংস্কৃত ভাষায় রচিত একটি হিন্দু ধর্মগ্রন্থ। এটি আঠারোটি মহাপুরাণের অন্যতম। [১][২] দেবতা শিববিষ্ণুর মাহাত্ম্যসূচক দুটি কিংবদন্তির কেন্দ্রীয় চরিত্র ঋষি মার্কণ্ডেয়র নামে এই পুরাণটি নামাঙ্কিত।[৩] তবে মার্কণ্ডেয় পুরাণ সেই পুরাণগুলির অন্যতম যেগুলিতে কোনও নির্দিষ্ট দেবতার মাহাত্ম্যব্যঞ্জক সাম্প্রদায়িক ধারণার অবতারণা করা হয়নি।[২][৩] কোনও নির্দিষ্ট দেবতাকে কেন্দ্র করে পুরাণের অবতারণার ধারণাটি অন্যান্য পুরাণগুলিতে প্রায়শই দেখা যায় না।[৪][৫]

১১ শতকের প্রথম দিকে পাওয়া দেবী মাহাত্ম্যের (মার্কণ্ডেয় পুরাণের অংশ) প্রাচীনতম পাণ্ডুলিপি, ভুজিমল লিপিতে, বিহার বা নেপাল

মার্কণ্ডেয় পুরাণ সম্ভবত হিন্দু সাহিত্যের পৌরাণিক ধারার প্রাচীনতম গ্রন্থগুলির অন্যতম। লুডো রোচারের মতে, এই গ্রন্থখানি উক্ত ধারার সর্বাধিক কৌতুহলোদ্দীপক ও গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থগুলির অন্যতমও বটে।[২] এই পুরাণের সর্বাপেক্ষা পরিচিত অংশটি হল "চণ্ডী" বা "দেবীমাহাত্ম্যম্" অংশটি, যা পৃথক গ্রন্থাকারেও পঠিত হয়ে থাকে। চণ্ডীই প্রাচীনতম জ্ঞাত হিন্দুশাস্ত্র, যেখানে দেবীকে পরম সত্য ও মহাবিশ্বের স্রষ্টা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।[২][৩][৬] নারীত্বের প্রতি অসাধারণ শ্রদ্ধাসম্পন্ন এই গ্রন্থাংশটি হিন্দুধর্মের শক্তিপূজা-কেন্দ্রিক শাক্ত সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মগ্রন্থ।[৬][৭] উক্ত সম্প্রদায়ে এই গ্রন্থাংশ ভগবদ্গীতার সমতুল্য মর্যাদাসম্পন্ন।[৮]

মার্কণ্ডেয় পুরাণের প্রাপ্ত পুথিগুলি ১৩৭টি অধ্যায়ে বিভক্ত। এর মধ্যে ৮১শ থেকে ৯৩শ অধ্যায় পর্যন্ত অংশটি "চণ্ডী" নামে পরিচিত।[৯] প্রথাগত বিশ্বাস ও কয়েকটি মধ্যযুগীয় গ্রন্থের মতানুসারে মার্কণ্ডেয় পুরাণের মোট শ্লোকসংখ্যা ৯,০০০। কিন্তু প্রাপ্ত পুথিগুলিতে ৬,৯০০টি শ্লোকই পাওয়া যায়।[১০] গ্রন্থের বিষয়বস্তুর মধ্যে যথেষ্ট বৈচিত্র্য লক্ষিত হয়।[১][১১][১২] এর মধ্যে রয়েছে সামাজিক-সাংস্কৃতিক তথ্যাবলি, বৈদিক ধ্যানধারণার প্রতীকতত্ত্ব এবং অধিবিদ্যামূলক চিন্তাভাবনা[১৩]

রচনাকাল সম্পাদনা

 
রাজস্থানের যোধপুরবিকানেরের কাছে অবস্থিত ও খ্রিস্টীয় প্রথম সহস্রাব্দের গোড়ার দিকে নির্মিত দধিমতী মাতা মন্দিরে খ্রিস্টীয় সপ্তম শতাব্দীর প্রথম ভাগে উৎকীর্ণ একটি লিপিতে মার্কণ্ডেয় পুরাণের কিয়দংশ রক্ষিত হয়েছে।[১৪]

মার্কণ্ডেয় পুরাণ সম্ভবত হিন্দুধর্মের প্রাচীনতম পুরাণগ্রন্থগুলি অন্যতম।[২][১৫] এই পুরাণের রচনাশৈলী ও বিষয়বস্তু (বিশেষত প্রথম দিকের অধ্যায়গুলি) হিন্দু মহাকাব্য মহাভারতের পরিশিষ্টের আকারে রচিত। সেই কারণে গবেষকেরা এই গ্রন্থের প্রাচীনত্ব সম্পর্কে নিঃসন্দিহান হয়েছেন এবং এটিকে মহাভারতের ঠিক পরের রচনা হিসেবে অভিহিত করেছেন।[২]

ওয়েন্ডি ডনিগারের মতে, মার্কণ্ডেয় পুরাণের রচনাকাল আনুমানিক ২৫০ খ্রিস্টাব্দ হলেও চণ্ডী অংশটি আনুমানিক ৫৫০ খ্রিস্টাব্দের রচনা।[১৫] অন্যান্য গবেষকদের মতে, এই পুরাণের কিয়দংশ খ্রিস্টীয় তৃতীয় শতাব্দীর মধ্যেই রচিত হয়েছিল।[১৬] অপরপক্ষে নীলেশ্বরী দেসাই মনে করেন, মার্কণ্ডেয় পুরাণের প্রাপ্ত প্রাচীনতম পুথিটি সম্ভবত খ্রিস্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে লিখিত হয়।[১২]

এই পুরাণটির রচনাকাল নির্ধারণে বিশেষভাবে সাহায্য করে অভিলিখন-সংক্রান্ত প্রমাণগুলি।[২][১৭] উদাহরণস্বরূপ, ৬০৮ খ্রিস্টাব্দে উৎকীর্ণ দধিমতী মাতা অভিলিখনটিতে চণ্ডী গ্রন্থের দশম অধ্যায় (মার্কণ্ডেয় পুরাণের ৯১শ অধ্যায়) থেকে একটি উদ্ধৃতি পাওয়া যায়। এর থেকে অনুমিত হয় যে খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতকেই এই পুরাণের অস্তিত্ব ছিল।[২][১৭] নেপাল থেকে পুরাণটির ৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে লিখিত একটি পূর্ণাঙ্গ তালপাতার পুথি আবিষ্কৃত হয়েছে।[১৪] খ্রিস্টীয় অষ্টম শতাব্দীর গোড়ার দিকে ভবভূতি রচিত মালতীমাধব গ্রন্থে চণ্ডী গ্রন্থের উল্লেখ পাওয়া যায়। এর থেকে অনুমিত হয়, উক্ত সময়ের মধ্যেই গ্রন্থটি প্রতিষ্ঠালাভ করেছিল এবং প্রচারিতও হয়েছিল। অন্যান্য গবেষকদের মতে, এই গ্রন্থের রচনাকাল খ্রিস্টীয় চতুর্থ থেকে ষষ্ঠ শতাব্দীর মধ্যবর্তী কোনও এক সময়।[১৮] জন লকটেফেল্ডের মতে, চণ্ডীতে পরমসত্ত্বা হিসেবে দেবীর ধারণাটির পরিপূর্ণ রূপ দেখে অনুমিত হয় চণ্ডী গ্রন্থের রচনার আগে থেকে অথবা খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দীর আগেই প্রচলিত হয়।[১৮][৩]

অন্যান্য পুরাণগুলির মতো মার্কণ্ডেয় পুরাণের কালপঞ্জিও বেশ জটিল। ডিম্মিট ও এ. বি. ভ্যান বুটেনেনের মতে, প্রতিটি পুরাণই শৈলীগত দিক থেকে বিশ্বকোষতুল্য বলে কবে, কোথায়, কেন ও কে এইগুলি রচনা করে তা নিশ্চিত করা কঠিন:[১৯]

অধুনা লভ্য পুরাণগুলি স্তর অনুযায়ী বিন্যস্ত সাহিত্য। শিরোনাম-যুক্ত প্রত্যেকটি রচনা আনুক্রমিক ঐতিহাসিক যুগগুলিতে অসংখ্য সংযোজনের মাধ্যমে বর্ধিত উপাদান-সমৃদ্ধ। এই কারণে কোনও পুরাণেরই একটি নির্দিষ্ট রচনাকাল নেই। (...) এগুলি দেখে মনে হয় যেন এগুলি এক-একটি গ্রন্থাগার যেখানে গ্রন্থের নতুন নতুন খণ্ড ক্রমাগত যুক্ত হয়ে চলেছিল। তবে এই সংযোজন বইয়ের তাকের শেষ প্রান্তে করা হয়নি, করা হয়েছিল এলোমেলোভাবে।[২০]

— কর্নেলিয়া ডিমিট ও জে. এ. বি. ভ্যান বুইটেনেন, ক্ল্যাসিকাল হিন্দু মিথোলজি: আ রিডার ইন সংস্কৃত পুরাণস[১৯]

রচনাস্থল সম্পাদনা

চণ্ডী অংশটি সহ মার্কণ্ডেয় পুরাণের প্রাচীনতম পাঠটি সম্ভবত পশ্চিম ভারতে নর্মদা-তীরবর্তী কোনও অঞ্চলে রচিত হয়েছিল।[২১]

বিষয়বস্তু সম্পাদনা

 
মার্কণ্ডেয় পুরাণের চণ্ডী অংশের প্রাচীনতম প্রাপ্ত পুথি, তালপাতায় ভুজিমোল লিপিতে লিখিত, বিহার অথবা নেপাল, খ্রিস্টীয় একাদশ শতাব্দী।

মার্কণ্ডেয় পুরাণ ১৩৭টি অধ্যায়ে বিভক্ত। এর মধ্যে ৮১শ থেকে ৯৩শ অধ্যায় পর্যন্ত অংশটি চণ্ডী নামে পরিচিত।[৯] গ্রন্থের সূচনায় দেখা যায় মীমাংসা দর্শনের প্রবক্তা জৈমিনী মার্কণ্ডেয়কে মহাভারত-সংক্রান্ত কয়েকটি প্রশ্ন করছেন। মার্কণ্ডেয় সেই প্রশ্নগুলির উত্তর না দিয়ে[২২] বলেন যে তাঁকে কয়েকটি বৈদিক অনুষ্ঠান পালন করতে হবে এবং জৈমিনী যেন বিন্ধ্য পর্বতে বসবাসকারী চার জ্ঞানী পক্ষীকে তাঁর প্রশ্নের উত্তর জিজ্ঞাসা করেন।[২২] জৈমিনী বিন্ধ্য পর্বতে গমন করেন। এরপর পক্ষীদের উত্তর মার্কণ্ডেয় পুরাণের ৪র্থ থেকে ৪৫শ অধ্যায়ে বিধৃত হয়েছে।[২২][২৩] এই আলোচনার মধ্য দিয়ে পুরাণকথা-সহ নৈতিক উপদেশ, [৪] মহাভারত ও গৌতম ধর্মসূত্র ইত্যাদি গ্রন্থ থেকে গৃহীত কর্ম, সংসার, ধর্মশ্রদ্ধা ইত্যাদির তত্ত্ব বিবৃত হয়েছে।[২২]

৩৯শ থেকে ৪৩শ অধ্যায় পর্যন্ত যোগ দর্শন আলোচিত হয়েছে। মার্কণ্ডেয় পুরাণের মতে, পূর্বতন কর্মের বন্ধন থেকে মুক্তিলাভ করতে এবং আত্মজ্ঞান ও মোক্ষ লাভ করতে এই দর্শনই হল পথ।[২৪] রিগোপলোসের মতে, মার্কণ্ডেয় পুরাণে যোগ দর্শনের আলোচনা, দত্তাত্রেয়ের চিত্রণ ও তাঁর যোগশিক্ষা মূলগতভাবে জ্ঞানযোগের শিক্ষা এবং অদ্বৈতবাদী ধারায় জ্ঞানের উপর এই গুরুত্বারোপ সমগ্র গ্রন্থ জুড়ে দত্তাত্রেয়ের বৈশিষ্ট্য হিসেবে বর্ণিত হয়েছে।[২৫] এম. টি. সহস্রবুদ্ধের মতে, বিষ্ণুপুরাণ, বায়ুপুরাণ, নারদপুরাণকূর্মপুরাণের মতো মার্কণ্ডেয় পুরাণেরও সাধারণ ভিত্তিটি "অভ্রান্তভাবে অদ্বৈত", যা সম্ভবত আদি শংকরের পূর্ববর্তী সময়ের অদ্বৈতবাদকে প্রতিফলিত করে।[২৬]

পরবর্তী অধ্যায়গুলিতে চার পক্ষীর সহিত ঋষি মার্কণ্ডেয়র কথোপকথন বিবৃত হয়েছে। তবে ৪৫শ-৮০শ ও ৯৪শ-১৩৭শ অধ্যায়ে মার্কণ্ডেয়ই প্রধান বক্তা।[২২] গবেষকেরা মনে করেন, এই অংশটিই মার্কণ্ডেয় পুরাণের প্রাচীনতম অংশ বলে এখানে শৈলীগত এই পরিবর্তন ঘটেছে।[২৭] এই অংশে রয়েছে বংশলতিকা, মন্বন্তর, ভূগোল ও হিন্দু দেবতা সূর্যের মাহাত্ম্যসূচক কয়েকটি অধ্যায়।[২৭]

দেবীমাহাত্ম্যম্ সম্পাদনা

মার্কণ্ডেয় পুরাণের ৮১শ থেকে ৯৩শ অধ্যায়গুলি পৃথক গ্রন্থাকারে চণ্ডী বা দেবীমাহাত্ম্যম্ নামে পরিচিত। [৬] এটি শক্তি রূপে দুর্গা বা চণ্ডীর মাহাত্ম্যকীর্তনকারী প্রধান ভক্তিমূলক শাস্ত্রগ্রন্থ।[৮] এই গ্রন্থের অপর নাম চণ্ডীমাহাত্ম্য বা দুর্গাসপ্তশতী।[৮] ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গওডিশা এবং বাংলাদেশের হিন্দুসমাজে এই গ্রন্থটি বিশেষ জনপ্রিয়।[৪]

চণ্ডী গ্রন্থের সূত্রপাত ঘটেছে যুদ্ধে পরাজিত ও বনে নির্বাসিত রাজা সুরথের কিংবদন্তির মধ্যে দিয়ে। সেই বনে সমাধি নামে এক বৈশ্যও স্ত্রীপুত্র কর্তৃক সম্পত্তিচ্যূত হয়ে নির্বাসিত হয়েছিলেন।[৮] দু’জনের সাক্ষাৎ ঘটলে দু’জনেই আবিষ্কার করেন যে, যাঁরা তাঁদের বিতাড়িত করেছিল তাঁদেরই অমঙ্গল আশঙ্কায় তাঁদের মন উদ্বিগ্ন হচ্ছে।[৮] ঋষি মেধাকে (সুমেধা) এই দুশ্চিন্তার কারণ জিজ্ঞাসা করেন। ঋষি উত্তর দেন, এটিই মহামায়ার লীলা। ক্ষুধার্ত পক্ষী নিজে অভুক্ত থেকেও সংগৃহীত বীজ নিজ সন্তানের মুখে তুলে দেয়।[৮] ঋষি মেধা এই ঘটনাকে দেবীর মায়াশক্তি বা প্রকৃতি বলে উল্লেখ করে বলেন, সর্বত্রই দেবীর প্রকাশ এবং তিনিই জীবকে সংসারে আবদ্ধ করেন, আবার মুক্তিদানও করেন।[২৮] সুরথ ও সমাধি দেবীর বিষয়ে আরও জানতে চাইলে ঋষি মেধা মধুকৈটভ বধের উদ্দেশ্যে মহামায়া কর্তৃক বিষ্ণুর যোগনিদ্রাভঙ্গ এবং দেবী কর্তৃক মহিষাসুর ও শুম্ভ-নিশুম্ভ অসুরদ্বয় বধের আখ্যান বর্ণনা করেন। চণ্ডী গ্রন্থে ধর্মতাত্ত্বিক ও দার্শনিক ভিত্তিতে দেবীর বর্ণনা প্রদানের মাধ্যমে ঈশ্বরের মাতৃরূপের স্বরূপটি ব্যাখ্যাত হয়েছে।[২৮]

সামাজিক-সাংস্কৃতিক তথ্যাবলি সম্পাদনা

মার্কণ্ডেয় পুরাণ সমাজ, ধর্ম ও পুরাণকথা-সহ বিষয়বৈচিত্র্যে সুসমৃদ্ধ।[১২] এই পুরাণের অধ্যায়গুলি থেকে প্রাচীন ভারতের পরিবার, বিবাহ, সামাজিক জীবন, পোষাকপরিচ্ছদ, খাদ্যাভ্যাস, প্রথা, অনুষ্ঠানাদি, পরিমাপ প্রথা, সামাজিক রীতিনীতি, নারীর মর্যাদা, সৃষ্টিতত্ত্ব, পরলোকতত্ত্ব, ভূগোল, উদ্ভিদ ও প্রাণীজগৎ সম্পর্কে নানা তথ্য জানা যায়। পৌরাণিক কাহিনি ও ধর্মতত্ত্বের সঙ্গে সঙ্গে এই গ্রন্থটিকে প্রাচীন ভারতীয় সমাজ বিষয়েও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উৎস মনে করা হয়।[১১][১২][২৯]

প্রভাব সম্পাদনা

লুই ই. ফেনেক ও ডব্লিউ. এইচ. ম্যাকলিওডের মতে, শিখ দশম গ্রন্থের অন্তর্গত চণ্ডী চরিতর উক্তি বিলাস একটি অপ্রধান ধর্মগ্রন্থ এবং সেটির মূল উৎস মার্কণ্ডেয় পুরাণ।[৩০][৩১]

দেবীমাহাত্ম্যম্ অংশটি দুর্গাপূজা-সহ শাক্ত উৎসবে এবং বিভিন্ন দেবীমন্দিরে পঠিত হয়ে থাকে।[৩২][৩৩]

সংস্করণ সম্পাদনা

মার্কণ্ডেয় পুরাণের প্রথম তিনটি মুদ্রিত সংস্করণের মধ্যে বিশেষ পার্থক্য লক্ষিত হয়। কলকাতা থেকে প্রকাশিত সংস্করণটি ১৩৬শ অধ্যায়ে দমের উপাখ্যানটি অসমাপ্ত রেখেই আকস্মিকভাবে শেষ হয়েছে। বোম্বাইপুনা থেকে প্রকাশিত সংস্করণ দু’টিতে ১৩৭শ অধ্যায়ে দমের উপাখ্যানটি সম্পূর্ণ আকারে পাওয়া যায়।[৩৪]

মার্কণ্ডেয় পুরাণ একাধিকবার ইংরেজিতেও অনূদিত হয়েছে। এর মধ্যে সি. সি. মুখোপাধ্যায় (১৮৯৩) ও এফ. ই. পার্জিটার (১৯০৪) কৃত অনুবাদ দু’টি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।[৩৫] অবশ্য টমাস কোবার্নের মতে, পুরাণের অন্যান্য বিষয়ের পরিবর্তে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাস পুনর্নির্মাণের দিকেই পার্জিটার অধিকতর মনোনিবেশ করেছিলেন।[৩৬] তাই এই অনুবাদটির প্রকাশনার পরে পার্জিটারের অনুবাদ ও সিদ্ধান্ত দুইই ব্যাপকমাত্রা বিতর্ক সৃষ্টি করে।[৩৬]

গ্রেগরি বেইলি ১৯৯১ সালে প্রকাশিত টমাস কোবার্ন কৃত দেবীমাহাত্ম্যম্-এর অনুবাদটিকে উৎকৃষ্ট বলে মতপ্রকাশ করেছিলেন।[৩৭]

আরও দেখুন সম্পাদনা

পাদটীকা সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Dalal 2014, পৃ. 246।
  2. Rocher 1986, পৃ. 191-192।
  3. Lochtefeld 2002, পৃ. 426।
  4. Dutt 1896, পৃ. 4।
  5. Wilson 1864, পৃ. LVII।
  6. Thomas Coburn (2002), Devī-Māhātmya: The Crystallization of the Goddess Tradition, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১২০৮০৫৫৭৬, pages 1-23
  7. Brown, Cheever Mackenzie (১৯৯৮)। The Devi Gita: The Song of the Goddess: A Translation, Annotation, and Commentary। SUNY Press। পৃষ্ঠা 1–4। আইএসবিএন 978-0-7914-3939-5 
  8. Rocher 1986, পৃ. 193।
  9. Rocher 1986, পৃ. 191।
  10. Wilson 1864, পৃ. LIV।
  11. Rocher 1986, পৃ. 191-194।
  12. K P Gietz 1992, পৃ. 354 with note 1948।
  13. K P Gietz 1992, পৃ. 803 with note 4538।
  14. Rocher 1986, পৃ. 195।
  15. Collins 1988, পৃ. 36।
  16. K P Gietz 1992, পৃ. 798-799 with note 4507।
  17. Pandit Ram Karna Asopa (১৯১১)। "Dadhimati-Mata Inscription of Dhruhlana"। E. HultzschEpigraphia IndicaXI। Government of India। পৃষ্ঠা 302। 
  18. Rocher 1986, পৃ. 195-196।
  19. Dimmitt ও van Buitenen 2012, পৃ. 5।
  20. উদ্ধৃতি: As they exist today, the Puranas are a stratified literature. Each titled work consists of material that has grown by numerous accretions in successive historical eras. Thus no Purana has a single date of composition. (...) It is as if they were libraries to which new volumes have been continuously added, not necessarily at the end of the shelf, but randomly.
  21. Rocher 1986, পৃ. 196।
  22. Rocher 1986, পৃ. 192।
  23. Hazra, R.C. (1962, reprint 2003). The Puranas in S. Radhakrishnan (ed.) The Cultural Heritage of India, Vol.II, Kolkata:The Ramakrishna Mission Institute of Culture, আইএসবিএন ৮১-৮৫৮৪৩-০৩-১, pp. 255–256
  24. Dutt 1896, পৃ. 73-81।
  25. Rigopoulos 1998, পৃ. 37, 57।
  26. M. T. Sahasrabudhe (১৯৬৮)। A Survey of the Pre-Śaṅkara Advaita Vedānta। University of Poona Press। পৃষ্ঠা 113–114। 
  27. Rocher 1986, পৃ. 192-193।
  28. Rocher 1986, পৃ. 193-194।
  29. VR Varma (1978), Ethics and Sociology of Politics in some of the Puranas, The Indian Journal of Political Science, Vol. 39, No. 2, pages 270-298
  30. Louis E. Fenech; W. H. McLeod (২০১৪)। Historical Dictionary of Sikhism। Rowman & Littlefield Publishers। পৃষ্ঠা 79। আইএসবিএন 978-1-4422-3601-1 
  31. Robin Rinehart (২০১১)। Debating the Dasam Granth। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 27, 70। আইএসবিএন 978-0-19-984247-6 
  32. Dalal 2014, পৃ. 118।
  33. Gavin Flood (১৯৯৬)। An Introduction to Hinduism । Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 181আইএসবিএন 978-0-521-43878-0 
  34. Shastri, P. (1995). Introduction to the Puranas, New Delhi: Rashtriya Sanskrit Sansthan, pp.77–8
  35. Markandeya Purana F E Pargiter (1904), The Baptist Mission Press, Calcutta
  36. Thomas B. Coburn (১৯৮৮)। Devī-māhātmya: The Crystallization of the Goddess Tradition। Motilal Banarsidass। পৃষ্ঠা 22–23। আইএসবিএন 978-81-208-0557-6 
  37. Gregory Bailey 2003, পৃ. 146।

গ্রন্থপঞ্জি সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা