দশম গ্রন্থ (গুরুমুখী: ਦਸਮ ਗ੍ਰੰਥ) হলো বিভিন্ন কাব্য সংগ্রহ যা গুরু গোবিন্দ সিং কর্তৃক সংগৃহীত।[৩][৪][৫][৬] এই গ্রন্থটি আদি গ্রন্থ গুরু গ্রন্থ সাহিবের সমতুল্য মর্যাদা পেতো অষ্টাদশ ও উনবিংশ শতাব্দীতে এবং একই মঞ্চে পাশাপাশি রাখা হতো।[৭] ঔপনিবেশিক যুগে দশম গ্রন্থ তার অবস্থান হারায় যখন সংস্কারবাদী সিং সভা আন্দোলনের পণ্ডিতরা পুরাণের কাহিনী বা শ্রী চারিত্রোপাখ্যানের ('Tales of Deceit') বিশাল সংগ্রহকে প্রাসঙ্গিক করতে ব্যর্থ হন।[৮]

দশম গ্রন্থ
ਦਸਮ ਗ੍ਰੰਥ
১৯শ শতকের প্রথম দিকের একটি দশম গ্রন্থ পাণ্ডুলিপি (ব্রিটিশ লাইব্রেরি এমএস ওআর.৬২৯৮)
তথ্য
ধর্মশিখধর্ম
রচয়িতাগুরু গোবিন্দ সিং
ভাষাসান্ত ভাষা (সুনির্দিষ্টভাবে ব্রজ ভাষার প্রাকরূপ,[১] যা প্রভাবিত হয়েছে অবধি, পাঞ্জাবী, কাউরাভি, আরবি এবং ফার্সী ভাষার দ্বারা)[২]

পাঠ্যটির আদর্শ সংস্করণে ১,৪২৮ পৃষ্ঠায় ১৭,২৯৩টি শ্লোক সহ ১৮টি বিভাগ রয়েছে।[৫][৩] এগুলোর বেশিরভাগই ব্রজ ভাষায় (পুরাতন পশ্চিমী হিন্দি) স্তোত্র ও কবিতার আকারে সাজানো আছে,[৫] কিছু অংশ অবধি, পাঞ্জাবী, হিন্দি এবং ফার্সী ভাষায়[৩] আওরঙ্গজেবকে লেখা গুরু গোবিন্দ সিং-এর চিঠি - জাফরনামা এবং হিক্কাইতান - পার্সিয়ান বর্ণমালায় লেখা ব্যতীত স্ক্রিপ্টটি প্রায় পুরোটাই গুরুমুখী ভাষায় লেখা।[৩] দশম গ্রন্থে হিন্দু ধর্মগ্রন্থগুলো থেকে স্তোত্র রয়েছে,[৪] যাতে দেবী দুর্গা হিসাবে নারীর পুনরুত্থান বর্ণিত,[৯][৪] একটি আত্মজীবনী, মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবকে লেখা চিঠি, সেইসাথে যোদ্ধাদের শ্রদ্ধাপূর্ণ আলোচনা এবং ধর্মতত্ত্ব বিষয়ক বর্ণনা।[৫] সমসাময়িক যুগে নির্মলা শিখদের মধ্যে ধর্মগ্রন্থটি সম্পূর্ণরূপে পঠিত হয়।[৬][১০] এর কিছু অংশ জনপ্রিয় হিন্দু পুরাণ থেকে পুনরুদ্ধার করা হয়েছে, সাধারণ মানুষের সুবিধার জন্য, যাদের তখনকার হিন্দু গ্রন্থে প্রবেশাধিকার ছিল না।[৬] দশম গ্রন্থের রচনাগুলির মধ্যে রয়েছে জাপ সাহিব, তব-প্রসাদ সাভাইয়ি এবং কাবিয়ো বাচ বেন্টি চৌপাই যা নিতনেম বা প্রতিদিনের প্রার্থনার অংশ এবং খালসা শিখদের অমৃত সঞ্চার বা দীক্ষা অনুষ্ঠানের অংশ।[১১] ১৮শ শতকের মাঝামাঝি জাফরনামা এবং হিকায়াত একটি ভিন্ন শৈলী এবং বিন্যাসে এর সাথে যুক্ত হয়।[১০] অন্যান্য পাণ্ডুলিপিতে পাটনা বীর এবং মানি সিং ভালি বীর অন্তর্ভুক্ত বলে জানা যায় যেগুলি ১৮শ শতকের মাঝামাঝি থেকে শেষের দিকে উদ্ভূত হয়েছিল। এই পাণ্ডুলিপিগুলির মধ্যে এমন লেখা রয়েছে যা সমসাময়িক যুগে বেশিরভাগ শিখদের দ্বারা প্রশ্ন করা হয়, যেমন উগ্রাদন্তি এবং ভাগৌতি অস্তোতার[১০]

আরও দেখুন সম্পাদনা

টীকা সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Fenech, Louis E. (২০১৪)। Historical Dictionary of Sikhism. (3rd সংস্করণ)। Lanham: Rowman & Littlefield Publishers। পৃষ্ঠা 191। আইএসবিএন 9781442236011 
  2. Sukhbir Singh Kapoor; Mohinder Kaur Kapoor (২০০৯)। Dasam Granth: An Introductory Study। Hemkunt Press। পৃষ্ঠা 39। আইএসবিএন 9788170103257 
  3. Singha, H. S. (২০০০)। The Encyclopedia of Sikhism (over 1000 Entries)। Hemkunt Press। আইএসবিএন 978-81-7010-301-1 , pp. 53–54
  4. Dasam Granth, Encyclopædia Britannica
  5. Robin Rinehart (২০১৪)। Pashaura Singh and Louis E Fenech, সম্পাদক। The Oxford Handbook of Sikh Studies। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 136–138। আইএসবিএন 978-0-19-969930-8 
  6. McLeod, W. H. (১৯৯০)। Textual Sources for the Study of Sikhism। University of Chicago Press। আইএসবিএন 978-0-226-56085-4 , pages 2, 67
  7. Pashaura Singh, Sikh Formations, 2015 Vol. 11, Nos. 1–2, 108–132, http://dx.doi.org/10.1080/17448727.2015.1032149
  8. {{cite book |author1=Shackle, C. |editor=Mandair, A. |year=2005 |title=Teachings of the Sikh Gurus: Selections from the Sikh Scriptures (1st ed.) |publisher=Routledge |url=https://doi.org/10.4324/9781315014449
  9. Eleanor Nesbitt (২০১৬)। Sikhism: A Very Short Introduction। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 107–109। আইএসবিএন 978-0-19-106277-3 
  10. Louis E. Fenech; W. H. McLeod (২০১৪)। Historical Dictionary of Sikhism। Rowman & Littlefield Publishers। পৃষ্ঠা 92–94। আইএসবিএন 978-1-4422-3601-1 
  11. Knut A. Jacobsen; Kristina Myrvold (২০১২)। Sikhs Across Borders: Transnational Practices of European Sikhs। A&C Black। পৃষ্ঠা 233–234। আইএসবিএন 978-1-4411-1387-0 [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

দশম গ্রন্থের সাথে সম্পর্কিত সম্পাদনা