বঙ্গভঙ্গ (১৯৪৭)

১৯৪৭ সালে পূর্ববঙ্গ ও পশ্চিমবঙ্গ নামে বাংলার বিভাজন

১৯৪৭ সালে বঙ্গভঙ্গ ভারত বিভাজনের একটি অংশ হিসেবে ধর্মের উপর ভিত্তি করে ব্রিটিশ ভারতের অন্তর্ভুক্ত বঙ্গ প্রদেশ ভারত এবং পাকিস্তানের অংশ হিসেবে বিভক্ত হয়। প্রধানত হিন্দু অধ্যুষিত পশ্চিমবঙ্গ ভারত এবং মুসলিম অধ্যুষিত পূর্ববঙ্গ পাকিস্তানের সাথে যুক্ত হয়।

ভূচিত্রে পূর্ব এবং পশ্চিম বাংলার অবস্থান দেখানো হচ্ছে

১৯৪৭ সালের ২০ জুন, বঙ্গীয় আইন পরিষদের বঙ্গ প্রদেশের ভবিষ্যত নির্ধারণের জন্য মিলিত হয় যেখানে ভারত বা পাকিস্তানের মধ্যে সংযুক্ত বাংলা বা পূর্ব বাংলা এবং পশ্চিমবঙ্গে বিভক্ত যথাক্রমে বাঙালি মুসলমান এবং বাঙালি হিন্দুদের আবাসস্থল হিসাবে গঠনের প্রস্তাব হয়। প্রাথমিক যৌথ অধিবেশনে, পরিষদ ১২০-৯০ দ্বারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে যদি বঙ্গ পাকিস্তানের নতুন গণপরিষদে যোগ দেয় তবে এটি ঐক্যবদ্ধ বা অবিভক্ত থাকবে। পরে, পশ্চিমবঙ্গের আইনপ্রণেতাদের একটি পৃথক বৈঠকে ৫৮-২১ ভোটে সিদ্ধান্ত নেয় যে প্রদেশটি বিভক্ত করা উচিত এবং পশ্চিমবঙ্গকে ভারতের বিদ্যমান গণপরিষদে যোগদান করা উচিত। পূর্ব বাংলার আইনপ্রণেতাদের আরেকটি পৃথক সভায় ১০৬-৩৫ ভোটে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে প্রদেশটি বিভক্ত করা উচিত নয় এবং ১০৭-৩৪ সালের মধ্যে দেশভাগের ক্ষেত্রে পূর্ব বাংলা পাকিস্তানে যোগ দেবে।[১] ভারতীয় জনতা পার্টিপশ্চিমবঙ্গের রাজভবন এই ২০ জুন তারিখকে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিষ্ঠা দিবস অর্থাৎ "পশ্চিমবঙ্গ দিবস" হিসাবে পালন করে।[২][৩]

১৯৪৭ সালের ৬ জুলাই সিলেট গণভোটে আসাম থেকে সিলেটকে বিচ্ছিন্ন করে পূর্ব বাংলায় একীভূত করার সিদ্ধান্ত হয়।

৩ জুন পরিকল্পনা বা মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনা অনুসারে ১৯৪৭ সালের ১৪ এবং ১৫ অগাস্ট যথাক্রমে পাকিস্তান এবং ভারতের নিকট এই নতুন ভাবে বিভক্ত বাংলা প্রদেশের ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়। পরবর্তীকালে পূর্ব পাকিস্তান যা পাকিস্তানের প্রদেশ ছিল, তা ১৯৭১ সালে যুদ্ধের মধ্য দিয়ে একটি স্বাধীন এবং সার্বভৌম দেশ বাংলাদেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

পটভূমি সম্পাদনা

 
লর্ড লুই মাউন্টব্যাটেন জওহরলাল নেহেরু এবং মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর সাথে দেশভাগের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছেন
 
বিধানসভার প্রবেশপথ, কলকাতা, ২০১১।

১৯৪৭ সালের বাংলা বিভক্তির পূর্বে,১৯০৫ সালে প্রশাসনিক কার্যক্রমকে সহজতর করার লক্ষ্যে পূর্ব এবং পশ্চিম বাংলায় বিভক্ত করা হয় যা বঙ্গ ভঙ্গ হিসেবে পরিচিত।[৪] সে সময় পশ্চিমবাংলা ছিল হিন্দু অধ্যুসিত এবং মুসলিমরা সেখানে সংখ্যালঘু, অন্যদিকে পূর্ববাংলা ছিল মুসলিম অধ্যুসিত এবং হিন্দুরা ছিল সংখ্যালঘু। মুসলিম অধ্যুসিত পূর্ববাংলার মানুষ এই বঙ্গ ভঙ্গের প্রতি জোরালো সমর্থন জানিয়েছিল, কেননা তারা উপলব্ধি করেছিল যে এই বিভক্তির মাধ্যমে তারা তাদের নিজস্ব একটি প্রদেশ পেতে পারে। কিন্তু হিন্দুরা এই বিভক্তির বিপক্ষে শক্ত অবস্থান নেয়। এই বিতর্ক পরবর্তীকালে প্রতিবাদ এবং সন্ত্রাসের জন্ম দেয় এবং ১৯১১ সালে বঙ্গ ভঙ্গ রদের মাধ্যমে এর নিষ্পত্তি করা হয়।[৫]

১৯০৫ সালের বাংলা বিভক্তির সময়ে হিন্দু এবং মুসলিমদের মাঝে সৃষ্টি হওয়া এই মতানৈক্য পরবর্তীকালে আবারো বিতর্ক তৈরি করে যা আইন তৈরী, এমনকি ১৯৪৭ সালের বাংলা বিভক্তিতে প্রভাব রেখেছে এবং সেই সময়ে রাজনৈতিক দলগুলোর এজেন্ডা হিসেবে বারংবার সামনে এসেছে।

বিভক্তিকরণ সম্পাদনা

 
শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়

পরিকল্পনা অনুসারে, ১৯৪৭ সালের ২০ জুন বঙ্গীয় আইন পরিষদের সদস্যগণ বাংলা বিভক্তিকরণ প্রস্তাবের উপরে তিনটি আলাদা ভোট প্রদান করেন।

  • পরিষদের সকল সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত যৌথ অধিবেশনে, যৌথ অধিবেশন বিভক্তিকরণের পক্ষে ১২৬ ভোট এবং বিদ্যমান সংবিধান পরিষদের যোগ দেওয়ার পক্ষে ৯০ ভোট (অর্থাৎ, ভারত) প্রণীত হয়।
  • তারপর একটি পৃথক অধিবেশনে বাংলার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকায় সদস্যগণ, বাংলার বিভক্তি এবং সম্পূর্ণ একটি নতুন গণপরিষদ (অর্থাৎ, পাকিস্তান ) এ যোগদান করার সপক্ষে ভোট প্রদান করেন; যেখানে নতুন রাষ্ট্রে যোগদানের সপক্ষে ১০৬ এবং বিপক্ষে ৩৫ টি ভোট প্রণীত হয়।
  • একই পদ্ধতি বাংলার মুসলিম অধ্যুসিত নয়, এমন স্থানগুলোতেও অনুসরণ করা হয়েছিল। সেখানে ৫৮ ভোট বিভক্তিকরণের পক্ষে এবং ২১ ভোট বিপক্ষে প্রণীত হয়।

মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনা অনুযায়ী, যদি একটিও একক সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট বিভক্তিকরণের পক্ষে প্রণীত হয় তাহলে প্রদেশ বিভক্ত হবে । এই পরিকল্পনাকে তুলে ধরে, ২০ জুন পরিষদে ভোটাভুটির ফলফলের প্রেক্ষিতে পশ্চিম বাংলা প্রদেশ ভারত এবং পূর্ব বাংলা প্রদেশ পাকিস্তানের সাথে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।এছাড়াও, মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনা অনুসারে,৭ জুলাই অনুষ্ঠিত একটি গণভোটে, সিলেটের নির্বাচকমণ্ডলী পূর্ব বাংলা প্রদেশে যোগদানের সপক্ষে ভোট প্রদান করে।

পরবর্তীতে স্যার সিরিল র‍েডক্লিফ এর নেতৃত্বে সীমানা কমিশন দুই নব নির্মিত প্রদেশের মধ্যে আঞ্চলিক সীমানা নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং ভারতীয় স্বাধীনতা আইন, ১৯৪৭ অনুসারে ১৪ আগস্ট পাকিস্তান এবং ১৫ আগস্ট ভারতকে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়।

বিরোধিতা সম্পাদনা

বাংলায় কৃষক প্রজা পার্টির সৈয়দ হাবিব-উল-রহমান বলেছেন, ভারত বিভাজন 'অযৌক্তিক' এবং 'হাস্যকর'। বাংলা ও সামগ্রিকভাবে ভারত বিভাগের সমালোচনা করে সৈয়দ হাবিব-উল-রহমান বলেন, "হিন্দু ও মুসলমান উভয়ই একটি অভিন্ন মাতৃভূমিতে বাস করে, একটি অভিন্ন ভাষা ও সাহিত্যের শাখা ব্যবহার করে এবং একটি অভিন্ন ভূমিতে কয়েক শতাব্দী ধরে বসবাসের মাধ্যমে বিকশিত একটি সাধারণ হিন্দু ও মুসলিম সংস্কৃতির মহৎ ঐতিহ্য নিয়ে গর্বিত।"[৬]

বাংলা সমন্বিতকরণ পরিকল্পনা সম্পাদনা

 
বাংলার শেষ প্রধানমন্ত্রী এইচ এস সোহরাওয়ার্দী সমগ্র প্রদেশের জন্য একটি পৃথক স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের আহ্বান জানিয়েছিলেন
 
শরৎচন্দ্র বসু অবিভক্ত বাংলার সমর্থক ছিলেন

"দ্বিজাতি তত্ত্ব" এর উপর ভিত্তি করে ভারতের বিভক্তির পরে এটা স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, এখানে ধর্মীয় বিষয়টিকে মুখ্য বিবেচনা করা হয়েছে। তখন বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগ নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী একটি ভিত্তিগত পরিকল্পনা পেশ করেন যে, পূর্ব এবং পশ্চিম বাংলা ভারত কিংবা পাকিস্তানের অংশ হিসেবে না যুক্ত হয়ে বরং একটি স্বতন্ত্র রাজ্য হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে । সোহরাওয়ার্দী উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন যে, যদি বাংলা এভাবে বিভক্ত হয় তবে পূর্ব বাংলা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত[৭] হবে কেননা, সব কয়লা খনি কিংবা পাট কল পশ্চিম বাংলার অংশ হয়ে যাবে এবং সিংহভাগ হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ যারা কিনা শিল্পায়নের সাথে যুক্ত পশ্চিম বাংলায় অভিবাসন সম্পন্ন করবে।[৮]

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, 'কোলকাতা' যা ভারতের অন্যতম প্রধান শহর এবং শিল্প ও বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু তা পশ্চিম বাংলার অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। সোহরাওয়ার্দী ২৪ এপ্রিল, ১৯৪৭ সালে দিল্লির একটি সংবাদ সম্মেলনে তার প্রস্তাব তুলে ধরেন।[৯] তবে পরিকল্পনাটি সরাসরি সর্বভারতীয় মুসলিম লীগ (ব্রিটিশ শাসনাধীন সময়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দল ছিলো এবং দ্বিজাতিতত্বের আলোকে একটি পৃথক মুসলিম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করছিলো) বাতিল করে দেয়। প্রাথমিকভাবে, বাংলা প্রদেশের মুসলিমলীগ নেতারা দ্বিধা বিভক্ত ছিলেন। বর্ধমানের নেতা আবুল হাসিম সোহরাওয়ার্দীর প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছিলেন এবং[১০] অন্যদিকে, নুরুল আমিন এবং মোহাম্মদ আকরাম খান এর বিরোধিতা করেছেন।[১০][১১] কিন্তু মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ সোহরাওয়ার্দীর প্রস্তাবের বৈধতা বুঝতে পেরে পরিকল্পনাকে পরোক্ষ সমর্থন দিয়েছিলেন।[১২][১৩][১৪] মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ এর সমর্থন লাভের পর সোহরাওয়ার্দী তার পরিকল্পনার সপক্ষে সমর্থন জমায়েত শুরু করেন।

কংগ্রেসের পক্ষ থেকে গুটিকয়েক নেতাই এই পরিকল্পনার সাথে একমত ছিলেন। তাদের মাঝে ছিলেন বাংলা প্রদেশের প্রভাবশালী কংগ্রেস নেতা এবং নেতাজি সুভাস চন্দ্র বোসের বড় ভাই শরৎ চন্দ্র বোস এবং কিরণ সংকর রয়। তবে, জওহরলাল নেহেরু এবং ভাল্লাবভাই পাতিল সহ বেশিরভাগ বিপিসিসি নেতা এই পরিকল্পনা বাতিল করেন। এছাড়াও শ্যাম প্রসাদ মুখার্জীর নেতৃত্বাধীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল এর তীব্রভাবে বিরোধিতা করে।[১৫] তাদের মতামত ছিলো যে, এই পরিকল্পনা আসলে বিভক্তিকরনের বিপক্ষে সোহরাওয়ার্দীর দ্বারা একটি চাল মাত্র যাতে কলকাতা শহর সহ শিল্পোন্নত পশ্চিম অংশের উপর লীগ নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে। তারা আরও মতামত পোষণ করেছিলেন যে, যদিও পরিকল্পনায় একটি সার্বভৌম বাংলার কথা উল্লেখ করা আছে, এটা বাস্তবিক পক্ষে একটি ভার্চুয়াল পাকিস্তান ছাড়া কিছুই হবে না এবং হিন্দু সংখ্যালঘুদের চিরতরে মুসলিম সংখ্যাগুরুদের দয়ার উপর চলতে হবে।[১৬][১৫][১৭]

যদিও কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া প্রস্তাবটি আলোর মুখ দেখা সম্ভব ছিলো না, বোস এবং সোহরাওয়ার্দী প্রস্তাবিত রাষ্ট্রের রাজনৈতিক গঠনতন্ত্র নিয়ে একটি মতৈক্যে পৌঁছুতে তাদের আলাপ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। সোহরাওয়ার্দীর মত বোসও বিশ্বাস করতেন যে, বিভক্তিকরণের ফলে বাংলার অর্থনীতি মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং অর্ধেকের মত হিন্দু জনগোষ্ঠী অসহায় অবস্থায় পূর্ব পাকিস্তানে আটকা পরবে।[১৮] চুক্তিটি ২৪ মে,১৯৪৭ সালে প্রকাশিত হয়[১৯] চুক্তিটি আক্ষরিক অর্থে একটি রাজনৈতিক চুক্তি ছিলো এবং তৃণমূল পর্যায়ে বিশেষত হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মাঝে এর গ্রহণযোগ্যতা ছিল না।[২০] কেননা ছয় বছর ধরে মুসলিম লীগের দ্বিজাতি তত্বের ক্রমাগত প্রচার; সোহরাওয়ার্দী মন্ত্রণালয়ে হিন্দু ধর্মালম্বীদের প্রান্তিকীকরণ এবং ১৯৪৬ সালের দাঙ্গার ফলে মুসলিম লীগের প্রতি বাঙালি হিন্দুদের বিন্দুমাত্র বিশ্বাস তখন সামান্যই অবশিষ্ট ছিলো।[২১] এর মাঝেই নির্বাচকমণ্ডলীর প্রকৃতি প্রশ্নে (পৃথক বা যৌথ) বোস এবং সোহরাওয়ার্দীর মাঝে মতানৈক্য দেখা দেয় । সোহরাওয়ার্দী মুসলিম ও মুসলিম নন- তাদের জন্য পৃথক নির্বাচন বজায় রাখার উপর জোর দেন। কিন্তু বোস এর বিরোধিতা করেন। তিনি এই প্রস্তাব প্রত্যাহার করে নেন কেননা কংগ্রেস এর দিক থেকে এবং অন্য কোন উল্লেখযোগ্য সমর্থনের অভাব ছিল। ফলে অবিভক্ত বাংলার পরিকল্পনা বাতিল করা হয়।[২২] তারপরেও, এই পদক্ষেপকে বাংলার বিভক্তি এড়ানো এবং বাঙালি মুসলিম ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে একত্রে বসবাস করার ইচ্ছার শেষ চেষ্টা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

উদ্বাস্তু সম্পাদনা

১৯৪৬-১৯৫১ সম্পাদনা

বাঙালি হিন্দু-সংখ্যাগরিষ্ঠ পশ্চিমবঙ্গ এবং বাঙালি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ পূর্ব বাংলার মধ্যে বঙ্গভঙ্গের পরে, উভয় পক্ষ থেকে বাঙালি হিন্দু / বাঙালি মুসলিম শরণার্থীদের আগমন ঘটে। একটি অনুমান থেকে জানা যায় যে দেশভাগের আগে পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যা ছিল ২১.২ মিলিয়ন, যার মধ্যে মাত্র ৫.৩ মিলিয়ন বা প্রায় ২৫ শতাংশ মুসলিম সংখ্যালঘু ছিল, তাদের বেশিরভাগই বাঙালি মুসলমান ছিল, যেখানে পূর্ব বাংলায় ৩৯.১ মিলিয়ন লোক ছিল, যার মধ্যে ১১.৪ মিলিয়ন বা প্রায় ৩০ শতাংশ ছিল হিন্দু সংখ্যালঘু অর্থাৎ প্রধানত বাঙালি হিন্দু। প্রায় ২.১৬ মিলিয়ন বাঙালি হিন্দু পাকিস্তানের পূর্ব বাংলা ছেড়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ অঞ্চলে চলে গেছে, এবং পশ্চিমবঙ্গ ও পূর্ব বাংলাকে সমর্থনকারী জনতার কারণে সহিংসতা ও দাঙ্গার কারণে দেশভাগের পরপরই মাত্র চার লাখ বাঙালি মুসলমান ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে পাকিস্তানের পূর্ব বঙ্গ অঞ্চলে চলে গেছে।

পাঞ্জাবের বিপরীতে, যেখানে দেশভাগের সময় পাঞ্জাবি মুসলমান এবং পাঞ্জাবি শিখ / পাঞ্জাবি হিন্দুদের মধ্যে পূর্ণ জনসংখ্যা বিনিময় হয়েছিল, বাংলায় সম্পূর্ণ জনসংখ্যা বিনিময় ঘটেনি (কম সহিংসতার কারণে বাঙালি হিন্দু এবং বাঙালি মুসলমানদের মধ্যে তাদের জনসংখ্যা স্থানান্তর ধীর ছিল); সামগ্রিকভাবে এটি একতরফা ছিল অর্থাৎ বাঙালি হিন্দুরা পূর্ব বাংলা ছেড়ে চলে গিয়েছিল, কিন্তু বাঙালি মুসলমানরা পশ্চিমবঙ্গ ছাড়েনি।[২৩] দেশভাগের সময় হিন্দু মহাসভার নেতা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি জনসংখ্যার পূর্ণ বিনিময়ের দাবি করেছিলেন: অর্থাৎ, পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি মুসলিম জনসংখ্যার সাথে পূর্ব বাংলার বাঙালি হিন্দুদের বিনিময়, তবে তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকারের নেতাদের আগ্রহের অভাবে এটি ঘটেনি। বর্তমানে পূর্ব বাংলার মাত্র ৮ শতাংশ হিন্দু, যেখানে পশ্চিমবঙ্গ এখনও ২৭ শতাংশ মুসলমান, দেশভাগের সময় ২৫ শতাংশের তুলনায়,[২৪][২৫] পশ্চিমবঙ্গ এবং আসামের যথাক্রমে ২৫ শতাংশ এবং ১৫ শতাংশ মানুষ বাঙালি হিন্দু (পাকিস্তানের পূর্ব বাংলা, বর্তমানে বাংলাদেশ) শরণার্থী বা তাদের বংশধর, অন্যদিকে ভারতের পাঞ্জাবে ৩৫ শতাংশ পাঞ্জাবি শিখ / পাঞ্জাবি হিন্দু (পাঞ্জাব, পাকিস্তান) শরণার্থী বা তাদের বংশধর।

১৯৬০ সম্পাদনা

আনুমানিক ১০ লাখ হিন্দু শরণার্থী ১৯৬০ সালের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করে এবং প্রায় ৭ ০০,০০০ মুসলমান পূর্ব পাকিস্তানে চলে যায়। বাংলায় শরণার্থীদের আগমনের সাথে এই বিষয়টিও ছিল যে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাদের পুনর্বাসনের জন্য কম প্রস্তুত ছিল, যার ফলে লক্ষ লক্ষ লোকের জন্য বিশাল আবাসন এবং স্যানিটেশন সমস্যা দেখা দিয়েছিল, যাদের বেশিরভাগই পূর্ব বাংলায় বড় সম্পত্তির মালিক ছিল।[২৬]

১৯৬৪ সম্পাদনা

১৯৬৪ সালের পূর্ব পাকিস্তান দাঙ্গার সময় ভারতীয় কর্তৃপক্ষের মতে, পূর্ব পাকিস্তান থেকে ১৩৫,০০০ হিন্দু শরণার্থী পশ্চিমবঙ্গে আসে এবং মুসলমানরা পশ্চিমবঙ্গ থেকে পূর্ব পাকিস্তানে অভিবাসন শুরু করেছিল। পাকিস্তানের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এপ্রিলের প্রথম দিকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে ৮৩,০০০ মুসলিম শরণার্থী এসেছিল।[২৭]

১৯৭১ সম্পাদনা

১৯৭১ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আনুমানিক ৭২ লাখ ৩৫ হাজার ৯১৬ জন শরণার্থী বাংলাদেশ থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আসে। তাদের মধ্যে প্রায় ৯৫% বাঙালি হিন্দু ছিল এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে, বাঙালি হিন্দু শরণার্থীদের প্রায় ১,৫২১,৯১২ জন পশ্চিমবঙ্গে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ১৯৭১ সালের পর বাংলাদেশের হিন্দুরা মূলত পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া, উত্তর চব্বিশ পরগনা ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলায় বসতি স্থাপন করে।[২৮]

ফলাফল সম্পাদনা

চূড়ান্ত ভাগ:

  • পাকিস্তান: পূর্ব দিনাজপুর,রংপুর, রাজশাহী, বগুড়া, পাবনা, ময়মনসিংহ, সিলেট (বরাক উপত্যকা ছাড়া), পূর্ব নদীয়া, ঢাকা, যশোর, খুলনা, ফরিদপুর, বাকেরগঞ্জ, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম।
  • ভারত: কলকাতা, হাওড়া, হুগলী, বীরভূম, বাঁকুড়া, বর্ধমান, মেদিনীপুর, মালদা, মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম দিনাজপুর, পশ্চিম নদীয়া, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, বরাক উপত্যকা (অধুনা আসাম রাজ্যের অংশ)।

উদ্বাস্তু সংকট সম্পাদনা

বৃহৎ জনগোষ্ঠী বিভক্তির পর অবিলম্বে স্থানান্তরন শুরু করেন। কয়েক মিলিয়ন হিন্দু ধর্মাবলম্বী পূর্ব বাঙলা থেকে ভারতে অভিবাসন প্রক্রিয়া শুরু করে। তাদের মাঝে অধিকাংশই পশ্চিম বাংলায় স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করে। অল্প কিছু জনগোষ্ঠী আসাম, ত্রিপুরা এবং অন্যান্য প্রদেশে থাকতে শুরু করে। এই শরণার্থী সমস্যা সবেচেয়ে বেশি মারাত্মক আকার ধারণ করে পাঞ্জাবে, সেখানে বিভক্তিকরণের পূর্বেই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয়। এর ফলাফল স্বরূপ পূর্ব এবং পশ্চিম পাঞ্জাবে খুব দ্রুতই ১ বছরের মাঝে উভয় পক্ষের লোকজনই অভিবাসন প্রক্রিয়া শেষ করেন।কিন্তু বাংলার ক্ষেত্রে কোলকাতা এবং নোয়াখালীতে দাঙ্গা এবং সন্ত্রাস সীমাবদ্ধ ছিলো। ফলে অভিবাসন প্রক্রিয়া ছিলো ধীর গতির এবং বিভক্তির পরে তিন দশক ধরে এই প্রক্রিয়া চলমান।[২৯][৩০] যদিও দাঙ্গা কোলকাতা এবং নোয়াখালীতে সীমাবদ্ধ ছিলো তারপরেও পশ্চিম বাংলার মুসলিম ধর্মালম্বীরা এবং পূর্ব বাংলার হিন্দু ধর্মালম্বীরা অনিরাপদ বোধ করতে শুরু করেন এবং তাদেরকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল যে তারা অন্য দেশে একটি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের জন্য ছেড়ে যাবেন কিনা বা অন্যান্য সম্প্রদায়ের অধীনে থাকবেন কিনা।[৩১] পূর্ব বাংলার হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মাঝে যারা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী এবং অপেক্ষাকৃত উচু বর্নের তারাই প্রথমে পূর্ব বাঙলা ত্যাগ করে।যারা সরকারি চাকুরে ছিলেন, তাদেরকে কোথায় থাকবেন (পূর্ব বাংলা বা পশ্চিম বাংলা) সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ দেয়া হয়। শহুরে শিক্ষিত উচ্চ এবং মধ্যবিত্তরা, গ্রামের উচ্চবংশীয়রা, ব্যবসায়ী এবং শিল্পীরা বিভক্তির পরপরই ভারতের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। যাদের পশ্চিম বাংলায় আত্মীয় স্বজন অথবা অন্যান্য সূত্র ছিল তারা কম সময়ের মাঝেই এবং তুলনামূলক কম ভোগান্তিতে পশ্চিম বাংলায় স্থায়ী হতে পেরেছে। পশ্চিম বাংলার মুসলিমরাও একই পদ্ধতি অনুসরণ করেছিল।[৩১]

তবে পূর্ব বাংলার অর্থনৈতিকভাবে দূর্বল হিন্দু ধর্মাবম্বীরা যারা কিনা নিম্ন বর্ণ তথা ‘নমশূদ্র’ তাদের জন্য অভিবাসন মোটেও সুবিধাজনক ছিল না। তাদের আয়ের পথ ছিল মূলত কৃষিকাজ এবং অন্য কোন পেশার প্রতি দক্ষতাও ছিল না বিধায় তারা পূর্ব বাংলায় থেকে যায়। যাই হোক, বিভক্তির পরে পাকিস্তানের রাজনৈতিক আবহাওয়া খারাপ হতে থাকে এবং নতুন করে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস সৃষ্টি হতে থাকে। ১৯৫০ সালে নতুন করে বরিশালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা দেখা দেয় এবং পূর্ব পাকিস্তানের হিন্দুদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে যায়। পরিস্থিতি আরও খারাপ আকার ধারণ করে যখন যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল (যিনি একজন নম শূদ্র ছিলেন ও মুসলিম লীগ কে সমর্থন করেছিলেন) আইনমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং ভারতে চলে যান।[৩২] এর পরের দুই দশকে যখনই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা জমাট বেধেছে, পূর্ব বাংলার হিন্দুরা ততবারই ভারতে অভিবাসনের জন্য আগ্রহী হয়েছেন।

বাংলাদেশ সৃষ্টির সময়েও মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানি সেনারা হিন্দুদের উপর বিভিন্নভাবে নির্যাতন চালিয়েছে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] তবে, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর হিন্দুদের সাথে বৈষম্য কমাতে পদক্ষেপ গ্রহণ করে। তারপরেও মাঝে মাঝেই সাম্প্রদায়িক চেতনা সহিংসতাকে উস্কে দেয়, যেমন ভারতে বাবরী মসজিদের ঘটনায় বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর আঘাত হানা হয়েছিল। আবার ত্রিপুরা থেকে স্বল্প পর্যায়ে এবং আসাম থেকে বিভিন্ন সময় অসমীয়া জাতীয়তাবাদীদের "বঙাল খেদা" আন্দোলনের জের ধরে অনেক বাঙালি মুসলমান বাংলাদেশে চলে আসে।

পশ্চিম বঙ্গে মুসলমানেরাও ভারতের স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে একই রকম প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গেছেন। দিনের পর দিন তারা সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ভাবে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন। যেমন-পশ্চিমবঙ্গের শতকরা ২৫ জনের বেশি লোক মুসলমান হওয়া সত্ত্বেও সরকারি চাকরিতে তাদের অবদান মাত্র ২%।

পরিসংখ্যান সম্পাদনা

ভারতের  পরিসংখ্যান অনুসারে, ১৯৫১ সালে ২.৫৩৩ মিলিয়ন উদ্বাস্তু পূর্ব বাঙলা থেকে পশ্চিম বাংলায় চলে যায়। তাদের মাঝে ২.০৬১ মিলিয়ন পশ্চিম বাংলায় স্থায়ী হয়। অন্যান্যরা আসাম, ত্রিপুরা বা অন্যান্য প্রদেশে চলে যায়।[৩৩] ১৯৭৩ সালের মাঝে এই সংখ্যা ৬০ লক্ষের উপরে গিয়ে পৌঁছায়। নিচের সারণিতে বিভিন্ন সময়ের উদ্বাস্তুদের পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে।[৩৪][৩৫]

সাল কারণ সংখ্যা
(লক্ষ)
১৯৪৭ বাংলার বিভক্তি ৩.৪৪
১৯৪৮ হায়দ্রাবাদ অপারেশন (ভারত দ্বারা) ৭.৮৬
১৯৫০ বরিশাল দাঙ্গা ১৫.৭৫
১৯৫৬ পাকিস্তান ইসলামী রাষ্ট্র ঘোষণা ৩.২০
১৯৬৪ ১৯৬৪ সালের দাঙ্গা ৬.৯৩
১৯৭১ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ১৫

১৯৫১ সালে পাকিস্তান ৬৭১,০০০ উদ্বাস্তু গণনা করেছিল, যার মঝে বেশির ভাগই ছিল পশ্চিম বাঙলা থেকে আগত। অন্যান্যরা ছিল বিহার থেকে।[৩৬] ১৯৬১ সালের মাঝে এই সংখ্যা ৮৫০০০০ তে পৌঁছায় এবং ধারণা করা হয় যে, পরবর্তী দুই দশকে ১.৫ মিলিয়ন মুসলিম বিহার এবং পশ্চিম বাঙলা থেকে পূর্ব বাংলায় স্থায়ী হয়।[৩৭]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Mukherjee 1987, পৃ. 230।
  2. সংবাদদাতা, আনন্দবাজার অনলাইন। "সরকারি 'পশ্চিমবঙ্গ দিবস' পাবে বাংলা, একই দিনে জোড়া উৎসবের সুপারিশ, সিলমোহর দেবেন মমতা"www.anandabazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-২২ 
  3. "Bengal government picks Poila Baisakh as state day to counter BJP's June 20 commemoration"www.telegraphindia.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-২২ 
  4. "India's History : Modern India : The First Partition of Bengal : 1905"। ৬ আগস্ট ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জানুয়ারি ২০১৫ 
  5. Baxter 1997, পৃ. 39–40"নতুন প্রদেশে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল প্রায় তিন থেকে দুই... এই বিভাজনকে মুসলমানরা ব্যাপকভাবে স্বাগত জানায় এবং হিন্দুদের দ্বারা তীব্র নিন্দা করা হয়। ব্রিটিশ পণ্য বয়কট থেকে শুরু করে বিপ্লবী কর্মকাণ্ড পর্যন্ত বিভিন্ন রূপে হিন্দু বিরোধিতা প্রকাশ করা হয়েছিল। বিক্ষোভ শেষ পর্যন্ত ফল বয়ে আনে এবং ১৯১১ সালে দেশভাগ বাতিল করা হয়।
  6. Chandar, Y. Udaya (২০২০-০২-২৫)। The Strange Compatriots for Over a Thousand Years (ইংরেজি ভাষায়)। Notion Press। আইএসবিএন 978-1-64760-859-0 
  7. Tripathi 1998, পৃ. 87।
  8. Chakrabarty 2004, পৃ. 138।
  9. Chakrabarty 2004, পৃ. 132।
  10. Chakrabarty 2004, পৃ. 135।
  11. Jalal 1994, পৃ. 266: "The president of the Bengal League, Maulana Akram Khan, publicly rejected any notion of a Bengali nation in which Muslims and Hindus would share power.... The speaker of the Bengal assembly, Noorul Amin, was confident that he could become the chief minister of east Bengal and so wanted partition".
  12. Jalal 1994, পৃ. 265: "An undivided Bengal was vital for Jinnah's strategy.... Jinnah told Mountbatten..., 'What is the use of Bengal without Calcutta; they had better remain united and independent.'"
  13. Chakrabarty 2004, পৃ. 137।
  14. Bandopadhyay, পৃ. 266।
  15. Chakrabarty – The partition of Bengal and Assam, page 140-147
  16. Bandopadhyay – জিন্না/পাকিস্তান – নতুন ভাবনা, page – 266
  17. Tripathi – স্বাধীনতার মুখ, page – 86
  18. Chakrabarty – The partition of Bengal and Assam, page 142
  19. Chakrabarty – The partition of Bengal and Assam, page 141
  20. Chakrabarty – The partition of Bengal and Assam, page 149
  21. Tripathi – স্বাধীনতার মুখ, page – 86, 186
  22. Chakrabarty – The partition of Bengal and Assam, page 143
  23. "Nothing new in persecution of Hindus in Bangladesh: This time we are talking about it openly and firmly"Firstpost (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-১০-১৮। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৬-০৩ 
  24. Daniyal, Shoaib (২০১৯-১২-১১)। "The Nehru-Liaquat Pact failed refugees from Bangladesh – but so would the Citizenship Bill"Scroll.in (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৬-০৩ 
  25. Sengupta, Anwesha (২০২২-০২-১৪)। "Calcutta's Muslims after Partition"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৬-০৩ 
  26. "Voices of Partition: A Dhaka Hindu and a Kolkata Muslim recount what Independence meant to them"The Indian Express (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৭-০৮-১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৬-০৩ 
  27. "MOSLEM‐HINDU VIOLENCE FLARES AGAIN; Mass Killings and Large‐Scale Migrations Increase Tensions Between India and Pakistan"The New York Times (ইংরেজি ভাষায়)। ১৯৬৪-০৪-০৫। আইএসএসএন 0362-4331। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৬-০৩ 
  28. Daniyal, Shoaib (২০১৭-০৮-১০)। "Why Hindu immigrants from Bangladesh are a key component of the BJP's West Bengal expansion strategy"Scroll.in (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৬-০৩ 
  29. Chatterji 2007, পৃ. 111।
  30. "Source."। ৫ মার্চ ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ মার্চ ২০০৭ 
  31. Chatterji 2007
  32. Chakrabarty 2004, পৃ. 113।
  33. "Hill et al, page 13"। ১ সেপ্টেম্বর ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জানুয়ারি ২০১৫ 
  34. P. N. Luthra – Rehabilitation, page 18-19
  35. During Bangladesh liberation war 11 million people from both communities took shelter in India. After the war 1.5 million decided to stay. Source.
  36. Hill এবং অন্যান্য 2005, পৃ. 13।
  37. Chatterji 2007, পৃ. 166।

গ্রন্থসূত্র সম্পাদনা

উৎস সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা