মাহফুজা খানম হচ্ছেন একজন বাংলাদেশী শিক্ষিকা, শিক্ষাবিদ, নারীনেত্রী, সমাজসেবী, মুক্তিযোদ্ধা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম এবং একমাত্র নারী ভিপি। তিনি শিক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ২০২১ সালে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদক পদক লাভ করেন।[১]

মাহফুজা খানম
Mahfuza Khanam Accepting Award 1967.jpg
মহিউদ্দিন আহমেদের কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করছেন খানম (ডানদিকে) (মে ১৯৬৭)
বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি
দায়িত্বাধীন
অধিকৃত কার্যালয়
২২ জানুয়ারি ২০১৮
পূর্বসূরীআমিরুল ইসলাম চৌধুরী
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম (1946-04-14) ১৪ এপ্রিল ১৯৪৬ (বয়স ৭৭)
কলকাতা, ভারত
জাতীয়তাবাংলাদেশী
পেশাশিক্ষকতা
পরিচিতির কারণশিক্ষিকা, শিক্ষাবিদ নারীনেত্রী, সমাজসেবী, মুক্তিযোদ্ধা, ডাকসুর একমাত্র নারী ভিপি
দাম্পত্য সঙ্গীশফিক আহমেদ
সন্তানপুত্র (০২)
মেয়ে (০৩)

প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষাসম্পাদনা

মাহফুজা খানম ১৯৪৬ সালের ১৪ এপ্রিল কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন।[২]

তিনি বাংলা বাজার গার্লস স্কুলে পড়েছেন। ১৯৬৬ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক লাভ করেন এবং ১৯৬৭ সালে একই বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। পরবর্তীতে ১৯৬৮ সালে লন্ডনের সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি পান। কিন্তু রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার কারণে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার তাঁকে পাসপোর্ট প্রদান করেনি।[২]

কর্মজীবনসম্পাদনা

তিনি শিক্ষকতাকেই পেশা হিসেবে বেছে নেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৬৬-৬৭ ডাকসু নির্বাচনে ভিপি হয়েছিলেন। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটরের সদস্য হিসেবে আছেন। ২০০৯ সালে তিনি বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি শিশুসংগঠন খেলাঘর আসরের চেয়ারপার্সন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।[৩] তিনি ঢাকার মানিকগঞ্জ সমিতি, পেশাজীবি নারী সমাজ এবং বিশ্ব শিক্ষক ফেডারেশনসহ বেশ কয়েকটি সংগঠনের সভাপতি।[৪] তিনি ইতিহাস একাডেমির নির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি। তিনি মনিকগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের ১৫তম অধ্যক্ষ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

সমাজসেবামূলক কাজসম্পাদনা

তিনি বিশেষ করে শিক্ষায় অবহেলিতদের পাশে আর্থিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন। বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্র। শিক্ষার আর্থিক তহবিলের জন্য বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ১৭টি শিক্ষা কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করেছেন। বর্তমানে জাতীয় শিশু কিশোর সংগঠন কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের চেয়ারপার্সন হিসেবে শিশুদের অধিকার আদায়ে কাজ করছেন।

পুরস্কারসম্পাদনা

মাহফুজা খানম ২০১২ সালে নারী শিক্ষা ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য "বেগম রোকেয়া পদক" লাভ করেন। তিনি ২০১৩ সালের ২৬ আগস্ট ‘অনন্যা শীর্ষ দশ ২০১৩’ পুরস্কার ও সম্মাননা পান। এছাড়াও বাংলাদেশের স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল আর টিভি থেকে "জয়া আলোকিত নারী-২০১৭" পুরস্কার লাভ করেন। ২০২১ সালে শিক্ষা বিভাগে তিনি একুশে পদক লাভ করেন।[১]

ব্যক্তিগত জীবনসম্পাদনা

তিনি ৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ সালে ব্যারিস্টার শফিক আহমেদকে বিয়ে করেন। তাদের ঘরে দুই পুত্র ও এক মেয়ে সন্তান জন্ম নেয়।

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. "কাজী রোজি, গোলাম মুরশিদ, আসাদসহ ২১ জন পাচ্ছেন একুশে পদক"বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০২-০৪ 
  2. "শিক্ষায় একুশে পদক পাচ্ছেন ডাকসুর সাবেক নারী ভিপি মাহফুজা খানম"বাংলাদেশ জার্নাল। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২১ 
  3. "শিশুদের অবস্থা এখনও নাজুক: মাহফুজা খানম"banglanews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২১ 
  4. প্রতিবেদক, নিজস্ব। "যোগ্যতার ভিত্তিতে মাহফুজা খানম নিয়োগ পেয়েছেন"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২১