নোনা জলের কাব্য
নোনাজলের কাব্য (ইংরেজি: The Salt in our Waters) ২০২০ সালের ফ্রেঞ্চ-বাংলাদেশী বাংলা নাট্য চলচ্চিত্র।[১] ২০২১ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে এটি যৌথভাবে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পায়।[৫] এটি নিজ রচনায় রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিতের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য নির্মাণ।[৬] চলচ্চিত্রে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের জেলেদের দৈনন্দিন জীবন সংগ্রাম, প্রতিকূল আবহাওয়ায় টিকে থাকার লড়াই, জেলে সমাজের রীতি নীতি ও সাংস্কৃতিক প্রভাব চিত্রণ করা হয়েছে।[২][৭][৮] তিতাস জিয়া, তাসনুভা তামান্না, ফজলুর রহমান বাবু, শতাব্দী ওয়াদুদ, অশোক ব্যাপারি, আমিনুর রহমান মুকুল, রোজি সিদ্দিকী এবং দুলারি তাহিম চলচ্চিত্রের মূল ভূমিকায় অভিনয় করেছেন।
নোনাজলের কাব্য | |
---|---|
পরিচালক | রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত[১] |
প্রযোজক | |
রচয়িতা | রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত |
চিত্রনাট্যকার | রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত[২] |
শ্রেষ্ঠাংশে | |
সুরকার | শায়ান চৌধুরী অর্ণব |
চিত্রগ্রাহক | চানানুন চতরুংগ্রোজ[৩] |
সম্পাদক | |
প্রযোজনা কোম্পানি |
|
পরিবেশক | ফিল্ম রিপাবলিক (আন্তর্জাতিক) স্টার সিনেপ্লেক্স (বাংলাদেশ) |
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ১০৬ মিনিট |
দেশ | ফ্রান্স বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
নির্মাণব্যয় | প্রা. ৳ ১.২৫ কোটি (প্রাক-নির্মাণ) |
২০১৮ সালে বাংলাদেশ ও ফরাসি সরকারের প্রাথমিক অর্থায়নে এবং বাংলাদেশের মাই পিক্সেল স্টোরি, হাফ স্টপ ডাউন এবং ফ্রান্সের আরসাম ইন্টারন্যাশনালের ব্যানারে চলচ্চিত্রটির নির্মাণ শুরু হয়।[১] বাংলাদেশের পটুয়াখালীতে ম্যানগ্রোভ বনসমৃদ্ধ সমুদ্র তীরের গ্রামীণ পরিবেশে চানানুন চতরুংগ্রোজের ক্যামেরায় এটির অধিকাংশ চিত্রগ্রহণ করা হয়। ছায়াছবির চিত্রগ্রহণ পরবর্তী সম্পাদনার কাজ ফ্রান্সে করা হয়। চলচ্চিত্রটির সঙ্গীতায়োজন ও সঞ্চালন করেছেন শায়ান চৌধুরী অর্ণব।
নোনাজলের কাব্য বিশ্বব্যাপি প্রদর্শন ও বাণিজ্যিক মুক্তির জন্যটরিনো ফিল্ম ল্যাবের অনুদান পায়। ২০২০ সালের ১৩ অক্টোবর ব্রিটিশ ফিল্ম ইন্সটিটিউট আয়োজিত ৬৪তম লন্ডন চলচ্চিত্র উৎসবে চলচ্চিত্রটি প্রথম প্রদর্শিত হয়। পরবর্তীতে বুসান, সিঙ্গাপুর, কলকাতা, গোথেনবার্গ, সাও পাওলো, তুরিন, সিয়াটলসহ বেশকয়েকটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে এটির প্রদর্শনী চলে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এটির মূলবিষয় হওয়ায় ২০২১ সালের জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবির্তন সম্মেলনেও দেখানো হয়। বাণিজ্যিকভাবে এটি ২০২১ সালের ২৬ নভেম্বর বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহসমূহে মুক্তি পায়।
কাহিনি সংক্ষেপ
সম্পাদনানোনাজলের কাব্য ২০০৭ সালে ঘূর্ণিঝড় সিডরের পর একটি মূল ভূখণ্ড হতে বিচ্ছিন্ন প্রান্তিক জেলেপল্লীর জনগণের পরিবর্তিত পরিবেশে সংগ্রাম ও পাশাপাশি জেলেদের দৈনন্দিন জীবন ও সংস্কৃতিকে ধর্মাশ্রয়ী মানুষের সদা প্রভাবের পটভূমিতে বর্ণিত গল্প।[২] বাবার মৃত্যুর পর, নতুন কিছু ভাষ্কর্য তৈরীর জন্য রুদ্র (তিতাস জিয়া) ঢাকার কোলাহল ছেড়ে, বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ড থেকে একদিনের নৌকা ভ্রমণ দূরত্বে প্রত্যন্ত ম্যানগ্রোভ অঞ্চলের একটি গ্রামে আসেন। গ্রামের চেয়ারম্যান (ফজলুর রহমান বাবু) ও গ্রামবাসি তাকে স্বাদরে গ্রহণ করে। রূদ্র এই গ্রামে বাশারের(অশোক ব্যাপারি) বাড়ী ভাড়া করে থাকা শুরু করেন। রূদ্র'র আধুনিক ভাবনা আর বানানো প্রায় জীবন্ত ভাষ্কর্যগুলি গ্রামের তরুণদের আলোড়িত এবং বাশারের মেয়ে টুনি (তাসনুভা তামান্না)কে আকৃষ্ট করে। রুদ্র'র প্রতি টুনি'র ভালবাসাকে কেউ ভালভাবে গ্রহণ করে না, বরং ভ্রূকুঞ্চিত দৃষ্টিতে দেখে। জেলে প্রধান এই গ্রামের জনগণ প্রকৃতির প্রতি নির্ভরশীল, সাগরের উত্তাল আচরণে ভীত ও সদা শংকিত। তাদের প্রধান রোজগার আসে বর্ষা মৌসুমে ধরা ইলিশ বিক্রি করে। সে মৌসুমে জেলেদের জালে খুব বেশি মাছ ধরা দিলনা। জালে বেশি মাছ পাওয়ার জন্য বিশেষ নামাজ ও মিলাদের আয়োজন করা হয়। গ্রামের বয়োজৈষ্ঠরা মাছের আকালের কারণ হিসেবে রুদ্রের প্রতি দোষারোপ করেন। চেয়ারম্যান ও তার অনুগতরা গ্রামের সবাইকে রুদ্রের সাথে মিশতে মানা করে। রুদ্র প্রতিমূর্তি বানানোয় সাগর আরো উত্তাল হচ্ছে; সৃষ্টিকর্তা তাদের প্রতি সুনজর ফিরিয়ে নিয়েছেন। রুদ্র জেলেদের বোঝানোর চেষ্টা করে জলবায়ুগত পরিবর্তনের কারণে এমৌসুমে বেশি মাছ ধরা পরছে না। পরের মৌসুমে পর্যাপ্ত মাছ ধরা পরলে জেলেরা রুদ্রর প্রতি সহানুভূতি দেখায়। রুদ্র জেলেদের সাথে আবার মিশে যায়, তাদের মৎস্যশিকার দেখতে নৌকার করে সমুদ্রে যায়। কয়েকদিন বাদে দিগন্তের কাছে ঘূর্ণিঝড় দানা বাধে। বেতারে ৭ নম্বর বিপদসংকেতের সতর্কবার্তা আসে। চেয়ারম্যান দরিদ্র জেলেদের এই বিপদসংকুল সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়ার জন্য বলে। চেয়ারম্যানের দাদনে জর্জরিত জেলেদের ধর্মের দোহাই দিয়ে বলা হয়, তাদের পূর্ব-পুরুষরা বেতারবার্তা শুনতেন না, তবুই তারা মাছ ধরতেন। রুদ্র জেলেদের উত্তাল সমুদ্রের মাঝে মাছ ধরতে বাঁধা দেয়। নিজেদের জীবন বিপন্ন না করে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া। ঘূর্ণিঝড় থেকে বাঁচতে গ্রামের সবাই আশ্রয়কেন্দ্রে জড়ো হয়।
কুশীলব
সম্পাদনানোনাজলের কাব্য অর্ধ-শতাধিক অভিনয় শিল্পী ও কলাকুশলী'র সম্মিলিত নির্মাণ।[৯] চলচ্চিত্রে পেশাদার অভিনয়শিল্পী ছাড়াও চিত্রগ্রহণ করা স্থানসমূহের স্থানীয় অধিবাসীরা অংশগ্রহণ করেছিলেন।[১০]
- তিতাস জিয়া - রুদ্র
- তাসনুভা তামান্না - টুনি
- ফজলুর রহমান বাবু - স্থানীয় চেয়ারম্যান[১১]
- শতাব্দী ওয়াদুদ - তালাশ
- অশোক ব্যাপারি - বাশার
- দুলারি তাহিম - তসলিমা
- নাইমুর রহমান আপন -তাহের
- মাহমুদ আলম - জব্বার
- ইকবাল হোসেন - মালেক
- আমিনুর রহমান মুকুল[১২]
- রোজি সিদ্দিকী[৪]
- রেজাউল করিম[১৩]
- জাহিদুল ইসলাম[১৩]
প্রযোজনা
সম্পাদনাপ্রাক-নির্মাণ
সম্পাদনা২০০৭ সালে ঘূর্ণিঝড় সিডরের তিন চার মাস পর রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত কুয়াকাটা ভ্রমণে গিয়েছিলেন, এসময় প্রান্তিক জেলেপল্লীর জনজীবনে সিডরের প্রভাব প্রত্যক্ষ করেছিলেন।[২] ২০১২ সালে একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য উন্নয়নের জন্য 'স্পাইক লি রাইটিং গ্রান্ট' অর্জন করেন।[৪] ২০১৪ সালে তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সংক্রান্ত প্রান্তিক জনবসতি ও জনগোষ্টি নিয়ে চিত্রনাট্য লেখা শুরু করেন, রচনার সময় ২০১৫ সাল হতে জেলেপল্লীর জীবন পর্যবেক্ষণ শুরু করেন। আড়াই বছর সময় নিয়ে চিত্রনাট্য উন্নয়ন, গবেষণা ও স্থান নির্বাচন করা হয়।[২] চিত্রনাট্যের মানের ভিত্তিতে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে নোনাজলের কাব্য প্রযোজনার জন্য বাংলাদেশ সরকার হতে ৫০ লাখ টাকা[১৪] ও ফরাসি প্রযোজক ইলান জিরার্ডের মধ্যস্থতায়[১৫] ফরাসি সংস্কৃতি ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ‘দ্যু মন্ড গ্রান্ট’ হতে প্রায় ৭৫ লাখ টাকা অনুদান লাভ করে। পরবর্তীতে সহ-প্রযোজনা ও নির্মাণ সহযোগী হিসেবে বাংলাদেশের হাফ স্টপ ডাউন চলচ্চিত্রটির সাথে যুক্ত হয়।[১৬]
নির্মাণ
সম্পাদনানোনাজলের কাব্য'র দৃশ্যধারণের জন্য বাংলাদেশের বর্ষা ঋতু বেছে নেয়া হয়।[৪] ২০১৮ সালের ১৩ জুলাই হতে পটুয়াখালীর বঙ্গোপোসাগর তীরবর্তী ম্যানগ্রোভ বন সমৃদ্ধ রাঙ্গাবালী উপজেলার গঙ্গামতীর চর এলাকার প্রত্যন্ত গ্রামে চিত্রগ্রহণ শুরু হয়। ব্রুনো মেরসেরে'র শব্দগ্রহণ[১৭] ও চানানুন চতরুংগ্রোজের ক্যামেরায়[৩] ৩৬ দিন ব্যাপী দৃশ্যধারণ পটুয়াখালী সাগর তীরের কাছাকাছি গ্রামীণ পরিবেশে ছাড়াও চট্টগ্রামে[৬][১৮] নদীবন্দর ও উপকূলে আটকে পরা একটি জাহাজে করা হয়েছিল।[১৯] একইবছর ৩ সেপ্টেম্বর মুখ্য চিত্রগ্রহণ সম্পন্ন হয়।[৬][১৮] ক্রিস্টেন স্প্রাগ, লুইজা পারভ্যু ও শঙ্খজিৎ বিশ্বাস চলচ্চিত্রটির সম্পাদনায় জড়িত ছিলেন।[৩][৪] দেড় বছর সময় নিয়ে ফ্রান্সের দুইটি স্টুডিওতে চলচ্চিত্রটির চিত্রগ্রহণ পরবর্তী শব্দ ও রংবিন্যাস সম্পাদনার কাজ করা হয়।[২][৪] সম্পূর্ণ নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার পর চলচ্চিত্রটি বাংলাদেশে বাণিজ্যিক মুক্তি পাওয়ার আগেই দৃশ্যধারণ করা উপকূলীয় গ্রামের জেলেপাড়া বৈশ্বয়িক জলবায়ুর বিরূপ প্রতিক্রিয়া হিসেবে সাগরের জলসীমা দ্রুত বৃদ্ধি, নিয়মিত জোয়ারে সৃষ্ঠ জলোচ্ছাস, এবং ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে বিলীন হয়ে যায়।[৮]
সঙ্গীত
সম্পাদনানোনাজলের কাব্য | |||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|
কর্তৃক চলচ্চিত্র সঙ্গীত | |||||||
মুক্তির তারিখ | ২০২১ | ||||||
ঘরানা | চলচ্চিত্র সঙ্গীত | ||||||
দৈর্ঘ্য | ৮:৪৫ | ||||||
সঙ্গীত প্রকাশনী | জি-সিরিজ | ||||||
প্রযোজক | শায়ান চৌধুরী অর্ণব | ||||||
|
নোনাজলের কাব্য চলচ্চিত্রের আবহ সঙ্গীত ও গানে সুরারোপ, সঞ্চালন এবং পরিচালনা করেছেন শায়ান চৌধুরী অর্ণব।[৯] চলচ্চিত্রে দুটি গান ব্যবহার করা হয়েছে। গানগুলি জি-সিরিজের পরিবেশনায় চলচ্চিত্রটির প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির আগে ইউটিউবে মুক্ত করা হয়েছিল। জসীম উদ্দীন রচিত কি বলিবো সোনার চান রে... ভাটিয়ালি গানে কন্ঠ দেন ফজলুর রহমান বাবু। গানটি কি বলিব রে আর শিরোনামে ২০২১ সালের ১৩ নভেম্বর প্রকাশিত হয়। এটি মনপুরা'র পর অর্ণবের সাথে বাবু'র দ্বিতীয় সঙ্গীতকর্ম।[২০][২১] প্রচলিত লোকগান ভজো মন অর্ণবের নিজকন্ঠে ধারণকৃত ও ২০২১ সালের ২০ নভেম্বর উম্মুক্ত হয়।[২২]
সঙ্গীত তালিকা
সম্পাদনাসকল গানের সুরকার শায়ান চৌধুরী অর্ণব।
নোনাজলের কাব্য: চলচ্চিত্র সঙ্গীত | ||||
---|---|---|---|---|
নং. | শিরোনাম | গীতিকার | শিল্পী | দৈর্ঘ্য |
১. | "কী বলিবো রে আর" | জসীম উদ্দীন | ফজলুর রহমান বাবু | ০৪:০৬ |
২. | "ভজো মন" | প্রচলিত লোকগান | শায়ান চৌধুরী অর্ণব | ০৪:৩৯ |
মোট দৈর্ঘ্য: | ৮:৪৫ |
মুক্তি
সম্পাদনানোনাজলের কাব্য প্রেক্ষাগৃহে বাণিজ্যিক মুক্তির পূর্বে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়। বিশ্বব্যাপি প্রদর্শন ও বাণিজ্যিক মুক্তির জন্য ২০২০ সালের জুলাই মাসে চলচ্চিত্রটি টরিনো ফিল্ম ল্যাব অডিয়েন্স ডিজাইন ফান্ড হতে আরো ৪৫ হাজার ইউরো(৪৫ লাখ টাকা) অনুদান পায়।[২৩][২৪] লন্ডন ভিত্তিক ফিল্ম রিপাবলিক ও বাংলাদেশের স্টার সিনেপ্লেক্স চলচ্চিত্রটির আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় পরিবেশক স্বত্ব অধিকার করে।[১][২৫][১১]
প্রদর্শনী
সম্পাদনানোনাজলের কাব্য ২০২০ সালের ১৩ অক্টোবর ব্রিটিশ ফিল্ম ইন্সটিটিউট আয়োজিত ৬৪তম লন্ডন চলচ্চিত্র উৎসবের 'ফিচার ফিল্ম স্ট্র্যান্ডস' বিভাগে[১৫] প্রথম আনুষ্ঠানিক প্রদর্শনী হয়।[১৬][২৬] একই বছর ২৮ অক্টোবর, ২৫তম বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে একমাত্র বাংলাদেশি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র হিসেবে প্রদর্শিত হয়[১৭][৩] এবং ২৯ নভেম্বর, সিঙ্গাপুর আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের সাউথ এশিয়ান প্রিমিয়ার বিভাগে প্রদর্শিত হয়।[৬][২৭][২৮] ২০২১ সালে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়।[২৯] এপ্রিলে ৪৭তম সিয়াটল আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ‘নিউ ডিরেকটরস কম্পিটিশন’ বিভাগে অংশগ্রহণের মাধ্যমে উত্তর আমেরিকায় প্রথম প্রদর্শিত হয়।[৩০] এছাড়াও এটি গোথেনবার্গ, সাও পাওলো, তুরিনসহ বেশ কিছু আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়। চলচ্চিত্র উৎসবের বাইরে ছায়াছবিটি ২০২১ সালে গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ তারুণ্য সম্মেলন ও জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন উপলক্ষ্যে ২৯ অক্টোবর ও ৮ নভেম্বর গ্লাসগো সায়েন্স সেন্টারের আইম্যাক্স থিয়েটারে দেখানো হয়েছিল।[১১][৩১] ২২ নভেম্বর বাণিজ্যিক মুক্তির আগে ছায়াছবির চিত্রগ্রহণের মূলস্থান গঙ্গামতীর চর এবং কুয়াকাটার স্থানীয় মৎস্যশিকারি পেশাজীবীদের জন্য বিশেষ প্রদর্শনী হয়েছিল।[১৮] বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পরে ১-৫ ডিসেম্বর চলচ্চিত্রটি কানাডায় মোজাইক ইন্টারন্যাশনাল সাউথ এশিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভালে অংশ গ্রহণ করে।[৩২][৩৩]
বাণিজ্যিক মুক্তি
সম্পাদনানোনাজলের কাব্য ২০২১ সালের ২৬ নভেম্বর বাংলাদেশের ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, বগুড়া ও চট্টগ্রামের ১১টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়।[৩৪][৩৫]
অর্জন
সম্পাদনাসংগঠন | বছর | বিভাগ | প্রাপক | ফলাফল | তথ্যসূত্র |
---|---|---|---|---|---|
কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব | ২০২১ | এশীয় বাছাই 'নেটপ্যাক' শ্রেনীতে সেরা চলচ্চিত্র | রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত | বিজয়ী | [৩৬] |
মোজাইক ইন্টারন্যাশনাল সাউথ এশিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভাল | ২০২১ | শ্রেষ্ঠ পরিচালক | রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত | বিজয়ী | [৩২][৩৩] |
শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক | চানানুন চতরুংগ্রোজ | বিজয়ী | |||
আমার ভাষার চলচ্চিত্র (বঙ্গাব্দ) ১৪২৮ | ২০২২ | সেরা চলচ্চিত্রের জন্য 'হীরালাল সেন পদক' | রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত | বিজয়ী | [৩৭] |
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ রামচরন, নমন (২০২০-১০-৩০)। "U.K.'s Film Republic Boards London, Busan Title 'The Salt in Our Waters' (EXCLUSIVE)"। ভ্যারাইটি (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-১১-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২০।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ "'নোনা জলের কাব্য'কে ট্র্যাজেডি ফিল্ম বানাতে চাইনি"। বণিক বার্তা। ২০২০-০৯-১৯। ২০২০-১১-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২০।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "লন্ডনের চলচ্চিত্র উৎসবে 'নোনাজলের কাব্য'"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ২০২০-০৯-১৬। ২০২০-০৯-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২০।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ শারমিন, জিনাত (২০১৯-১০-১৭)। "সুমিতের চলচ্চিত্রকাব্য"। প্রথম আলো। ২০২১-১২-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২০।
- ↑ Dhakatimes24.com। "জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাচ্ছেন সিয়াম-বাঁধন-মীর সাব্বির"। Dhakatimes News। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-৩১।
- ↑ ক খ গ ঘ "সিঙ্গাপুর চলচ্চিত্র উৎসবে 'নোনাজলের কাব্য'"। বাংলা ট্রিবিউন। ২০২০-১১-০৫। ২০২১-১২-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২০।
- ↑ শারমিন, জিনাত (২০২০-০৯-১৭)। "বুসানে বাংলাদেশি নির্মাতাদের ডাক"। প্রথম আলো। ২০২০-০৯-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২০।
- ↑ ক খ "নোনা জলের কাব্য জেলেদের ছবি, জেলেরাই দেখলো সবার আগে"। দৈনিক যুগান্তর। ২০২১-১১-২৩। ২০২২-০১-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০২-০১।
- ↑ ক খ "চলচ্চিত্রের আবহ সংগীতে অর্ণব"। বাংলা ট্রিবিউন। ২০২০-০৯-০৯। ২০২১-১২-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২০।
- ↑ "সবার আগে জেলেরা দেখলো 'নোনাজলের কাব্য'"। চ্যানেল আই অনলাইন। ২০২১-১১-২৪। ২০২১-১১-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-২৬।
- ↑ ক খ গ "'নোনা জলের কাব্য' মুক্তি পাচ্ছে ২৬ নভেম্বর"। এনটিভি অনলাইন। ২০২১-১০-২৩। ২০২১-১১-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৪।
- ↑ "বিএফআই লন্ডন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে 'নোনা জলের কাব্য'"। দ্য ডেইলি স্টার। ২০২০-১০-০৮। ২০২০-১১-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২০।
- ↑ ক খ "জলের লড়াই, ডাঙার লড়াই"। প্রথম আলো। ২০২১-১১-২৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-৩০।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "৯ মাসের 'কাঁটা' কেন শেষ হলো না ৭ বছরেও, অনুদানের অন্য ছবির খবর"। দ্য ডেইলি স্টার। ২০২০-১০-২৬। ২০২০-১১-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২০।
- ↑ ক খ "আন্তর্জাতিক উৎসবে বাংলাদেশের 'নোনা জলের কাব্য'"। প্রথম আলো। ২০২০-০৯-০৯। ২০২০-১১-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২০।
- ↑ ক খ "লন্ডন চলচ্চিত্র উৎসবে 'নোনা জলের কাব্য'"। এনটিভি অনলাইন। ২০২০-০৯-১২। ২০২০-১১-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২০।
- ↑ ক খ "The Salt in Our Waters - Busan International Film Festival"। বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। ৩ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২০।
- ↑ ক খ গ "নোনাজলের কাব্য: জেলেরাই দেখলো সবার আগে"। বাংলা ট্রিবিউন। ২০২১-১১-২৩। ২০২১-১১-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-২৫।
- ↑ কবির, আহসান (২০২১-১১-২৯)। "নোনা জলের কাব্য: 'বিজ্ঞানমনষ্ক' গতিশীল এক চলচ্চিত্র"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ৩০ নভেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-৩০।
- ↑ "নিথুয়া পাথারে'র ১৩ বছর পর"। প্রথম আলো। ২০২১-১১-১৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-২২।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "কী বলিবোরে আর"। জি-সিরিজ। ২০২১-১১-১৩। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-২২ – ইউটিউব-এর মাধ্যমে।
- ↑ "ভজো মন"। জি-সিরিজ। ২০২১-১১-২০। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-২২ – ইউটিউব-এর মাধ্যমে।
- ↑ "The Salt in Our Waters"। টোরিনো ফিল্ম ল্যাব। ২০২১-০১-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২০।
- ↑ "'নোনাজলের কাব্য' ছড়িয়ে দিতে ৪৫ লাখ টাকা"। প্রথম আলো। ২০২০-০৭-১৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২০।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "'Nonajoler Kabbo' selected for Singapore International Film Festival"। ঢাকা ট্রিবিউন। ২০২০-১১-০৪। ২০২০-১১-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২০।
- ↑ "The Salt in our Waters (Nonajoler Kabbo)"। ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউট (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-১১-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২০।
- ↑ "The Salt in Our Waters"। সিঙ্গাপুর আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। ২০২০-১১-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২০।
- ↑ রামচরন, নমন (২০২০-১১-২৮)। "SGIFF: 'The Salt in Our Waters' Explores Man vs Nature in Bangladesh"। ভ্যারাইটি (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-১১-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-৩০।
- ↑ সাহা, অমর (২০২১-০১-০৩)। "কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশের 'নোনাজলের কাব্য'"। প্রথম আলো। ২০২১-০১-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০১-০৩।
- ↑ "সিয়াটল আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশের ছবি"। প্রথম আলো। ২০২১-০৪-০২। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-৩০।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "কপ-২৬ সম্মেলনে 'নোনা জলের কাব্য' প্রদর্শিত"। এনটিভি অনলাইন। ২০২১-১১-১১। ২০২১-১১-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-১৩।
- ↑ ক খ "কানাডায় নোনাজলের কাব্য ও রেহানা মরিয়ম নূর পুরস্কৃত"। দৈনিক ইনকিলাব। ২০২১-১২-১২। ২০২২-০১-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০১-১৪।
- ↑ ক খ "'নোনাজলের কাব্য' ও 'রেহানা মরিয়ম নূর' কানাডায় পুরস্কৃত"। কালের কণ্ঠ। ২০২১-১২-০৯। ২০২২-০১-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০১-১৪।
- ↑ "১১ সিনেমা হলে 'নোনা জলের কাব্য'"। এনটিভি অনলাইন। ২০২১-১১-২৬। ২০২১-১১-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-২৬।
- ↑ "একই দিনে হলিউডের দুটি ঢালিউডের এক ছবি"। বাংলা ট্রিবিউন। ২০২১-১১-২৬। ২০২১-১১-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-২৬।
- ↑ "Curtains down on 26th KIFF with awards"। দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-০১-১৬। ২০২১-০১-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০১-১৬।
- ↑ "হীরালাল সেন পদক পেল সুমিতের 'নোনা জলের কাব্য'"। চ্যানেল আই অনলাইন। ২০২২-০২-২৬। ২০২২-০২-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০২-২৭।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- দাপ্তরিক ওয়েবসাইট (ইংরেজি)
- বাংলা মুভি ডেটাবেজে নোনা জলের কাব্য
- রটেন টম্যাটোসে নোনা জলের কাব্য (ইংরেজি)
- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে নোনা জলের কাব্য (ইংরেজি)