১৮৮২-৮৩ ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অস্ট্রেলিয়া সফর

ক্রিকেট সফর

পূর্ব-নির্ধারিত সময়সূচী মোতাবেক ইভো ব্লাইয়ের নেতৃত্বাধীন ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল ১৮৮২-৮৩ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া ও সিলন গমন করে। ১৮৮২ সালে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দল ওভালে স্বাগতিক ইংরেজ দলকে পরাজিত করার প্রেক্ষিতে জনপ্রিয় আরআইপি বিজ্ঞপ্তিতে ঐ ছাইগুলো উদ্ধারে তদন্তকারীর ভূমিকায় দলনেতা ইভো ব্লাইকে দায়িত্ব দেয়া হয়।

বিশাল সম্মানের অ্যাশেজ প্রাপ্তির বিষয়ে ১৮৮৩ সাল থেকে সংবাদপত্রের প্রতিবেদনের একাংশ

প্রকৃতপক্ষে ঐ সফরে তিনটি টেস্ট খেলার আয়োজন করা হয় ও প্রথমটিতে পরাজিত হবার পর ইংল্যান্ড বাদ-বাকী দুইটিতে জয় পায়। তবে, প্রকৃত ঘটনাগুলো কখনো পূর্ণাঙ্গভাবে তুলে ধরা সম্ভব নয়। তৃতীয় টেস্টে জয়ের পর ইভো ব্লাইকে কোন একজন ‘ক্ষুদ্রাকৃতি ভস্মাধার’ বা ছাইদানি উপহার দেয়। ধারণা করা হয় যে, ঐ পাত্রটি বেইল পুড়িয়ে ছাঁইপূর্ণ করা হয়েছিল। তিনি ঐ পাত্রটি ইংল্যান্ডে নিয়ে যান। বর্তমানে লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডের যাদুঘরে সর্বাপেক্ষা দর্শনীয় সামগ্রী হিসেবে তা সংরক্ষিত আছে। ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া দল এরপর থেকেই ঐ পুরাকল্পীয় অ্যাশেজ লাভের জন্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হচ্ছে।

মূল সিরিজ শেষ হবার পর শেষ মুহুর্তে পারস্পরিক সম্মতিক্রমে সফরের চতুর্থ টেস্ট ‘বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে’ আয়োজন করা হয়েছিল। ঐ টেস্টে চারটি পৃথক উইকেট ব্যবহার করা হয়েছিল। প্রত্যেক ইনিংসে একটি করে ব্যবহৃত হয়।[১]

প্রস্তুতিমূলক খেলাসম্পাদনা

দুই/তিনদিনের খেলাসম্পাদনা

প্রথম-শ্রেণীর খেলাসম্পাদনা

টেস্ট খেলাসম্পাদনা

প্রথম টেস্টসম্পাদনা

৩০ ডিসেম্বর, ১৮৮২ - ২ জানুয়ারি, ১৮৮৩
স্কোরকার্ড
২৯১ (১৬৯ ওভার)
জিজে বোনর ৮৫
সিএফএইচ লেসলি ৩/৩১ (১১ ওভার)
১৭৭ (১০৭.২ ওভার)
ইএফএস টাইলকোট ৩৩
জিই পালমার ৭/৬৫ (৫২.২ ওভার)
৫৮/১ (৫৩.১ ওভার)
ডব্লিউএল মারডক ৩৩*
ডব্লিউ বার্নস ১/৬ (১৩ ওভার)
১৫৯ (এফ/ও) (৯৯.১ ওভার)
ইএফএস টাইলকোট ৩৮
জি গিফেন ৪/৩৮ (২০ ওভার)
অস্ট্রেলিয়া ৯ উইকেটে বিজয়ী
মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড, মেলবোর্ন
আম্পায়ার: ইএইচ এলিয়ট (অস্ট্রেলিয়া) ও জেএস সুইফট (অস্ট্রেলিয়া)

২য় টেস্টসম্পাদনা

১৯ - ২২ জানুয়ারি, ১৮৮৩
স্কোরকার্ড
২৯৪ (১৮৩.৩ ওভার)
ডব্লিউডব্লিউ রিড ৭৫
জিই পালমার ৫/১০৩ (৬৬.৩ ওভার)
১১৪ (৯৮.২ ওভার)
এইচএইচ ম্যাসি ৪৩
ডব্লিউ বেটস ৭/২৮ (২৬.২ ওভার)
১৫৩(এফ/ও) (৬৯ ওভার)
জিকে বোনর ৩৪
ডব্লিউ বেটস ৭/৭৪ (৩৩ ওভার)
ইংল্যান্ড ইনিংস ও ২৭ রানে বিজয়ী
মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড, মেলবোর্ন
আম্পায়ার: ইএইচ এলিয়ট (অস্ট্রেলিয়া) ও জেএস সুইফট (অস্ট্রেলিয়া)
  • ইংল্যান্ড টসে জয়লাভ করে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়।
  • ২১ জানুয়ারি বিশ্রামবার ছিল
  • এটিই প্রথম টেস্ট খেলা হিসেবে ইনিংস ব্যবধানে জয়ের ঘটনা ঘটে।
  • ডব্লিউ বেটস প্রথম ইংরেজ খেলোয়াড় হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে হ্যাট্রিক করেন। প্রথম ইনিংসে পিএস ম্যাকডোনেল, জি গিফেনজিজে বোনর তাঁর শিকারে পরিণত হয়েছিলেন। এছাড়াও, টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে খেলায় ৫০ রান ও ১০ উইকেট পান।

তৃতীয় টেস্টসম্পাদনা

২৬ - ৩০ জানুয়ারি, ১৮৮৩
স্কোরকার্ড
২৪৭ (১৪৩ ওভার)
ডব্লিউডব্লিউ রিড ৬৬
এফআর স্পফোর্থ ৪/৭৩ (৫১ ওভার)
২১৮ (১৭৯.১ ওভার)
এসি ব্যানারম্যান ৯৪
ডব্লিউ বেটস ৭/২৮ (২৬.২ ওভার)
১২৩ (৮০.১ ওভার)
সিটি স্টাড ২৫
এফআর স্পফোর্থ ৭/৪৪ (৪১.১ ওভার)
৮৩ (৬৯.২ ওভার)
জেএম ব্ল্যাকহাম ২৬
আরজি বার্লো ৭/৪০ (৩৪.২ ওভার)
ইংল্যান্ড ৬৯ রানে বিজয়ী
সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ড, সিডনি
আম্পায়ার: ইএইচ এলিয়ট (অস্ট্রেলিয়া) ও জেএস সুইফট (অস্ট্রেলিয়া)
  • ইংল্যান্ড টসে জয়লাভ করে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়।
  • ২৮ জানুয়ারি বিশ্রামবার ছিল।
  • এ খেলার মাধ্যমে অ্যাশেজ ভস্মের উৎপত্তি ঘটে; ইংল্যান্ড সিরিজ জয় করে। কয়েকজন অস্ট্রেলীয় ভদ্রমহিলা একটি বেইল পুড় ও ছাইগুলো একটি আধারে সংরক্ষণ করে। এটি অদ্যাবধি লর্ডসের মেমোরিয়াল গ্যালারিতে সংরক্ষিত আছে।

"অতিরিক্ত" টেস্টসম্পাদনা

১৭ - ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৮৮৩
স্কোরকার্ড
২৬৩ (১৫৫ ওভার)
এজি স্টিল ১৩৫
এইচএফ বয়েল ৩/৫২ (৪০ ওভার)
২৬২ (১৪৬ ওভার)
জিএফ বোনর ৮৭
এজি স্টিল ৩/৩৪ (১৮ ওভার)
১৯৭ (১২৬.৩ ওভার)
ডব্লিউ বেটস ৪৮*
টিপি হোরান ২/১৫ (৯ ওভার)
১৯৯/৬ (১৬৩.১ ওভার)
এসি ব্যানারম্যান ৬৩
এজি স্টিল ৩/৪৯ (৪৩ ওভার)
অস্ট্রেলিয়া ৪ উইকেটে বিজয়ী
সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ড, সিডনি
আম্পায়ার: ইএইচ এলিয়ট (অস্ট্রেলিয়া) ও জেএস সুইফট (অস্ট্রেলিয়া)
  • ইংল্যান্ড টসে জয়লাভ করে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়।
  • ১৮ ফেব্রুয়ারি বিশ্রামবার ছিল।

খেলোয়াড়সম্পাদনা

ইভো ব্লাইয়ের নেতৃত্বাধীন ইংল্যান্ড দলে অভিজ্ঞ উইকেট-রক্ষক হিসেবে এডওয়ার্ড টাইলকোটকে রাখা হয়। অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন - বিলি বেটস, ডিক বার্লো, অ্যালান স্টিল, চার্লস লেসলি, ওয়াল্টার রিড, চার্লস স্টাড, ফ্রেড মর্লে, বিলি বার্নস, জর্জ ভার্ননজর্জ স্টাড

বিলি মারডক অস্ট্রেলিয়া দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ও জ্যাক ব্ল্যাকহাম উইকেট-রক্ষক ছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার অন্যান্য খেলোয়াড়ের মধ্যে ছিলেন - বিলি মিডউইন্টার, অ্যালেক ব্যানারম্যান, জর্জ বোনর, টম হোরান, পার্সি ম্যাকডোনেল, জর্জ গিফেন, হ্যারি বয়েল, এডউইন ইভান্স, হিউ ম্যাসি, ইউজিন পালমার, টম গারেটফ্রেড স্পফোর্থ

সিলনসম্পাদনা

দীর্ঘ নৌ-ভ্রমণের এক পর্যায়ে কলম্বোয় দলটি যাত্রাবিরতি করে। অক্টোবর, ১৮৮২ সালে স্থানীয় দলগুলোর বিপক্ষে দুই খেলায় অংশ নেয়। এরফলে, সিলনে প্রথমবারের মতো কোন বিদেশী দল সিলন গমন করে। তবে সেগুলো প্রথম-শ্রেণীর খেলার মর্যাদাপ্রাপ্ত ছিল না।

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. "South Africa's Superman"ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 

অতিরিক্ত তথ্যসম্পাদনা

আরও পড়ুনসম্পাদনা

  • The Wisden Book of Test Cricket 1877–1978 by Bill Frindall
  • Chris Harte, A History of Australian Cricket, Andre Deutsch, 1993