রাইসুল ইসলাম আসাদ

বাংলাদেশি মুক্তিযোদ্ধা ও অভিনেতা

আসাদুজ্জামান মোহাম্মদ রাইসুল ইসলাম (যিনি রাইসুল ইসলাম আসাদ নামে পরিচিত, জন্ম ১৫ জুন, ১৯৫৩) একজন বাংলাদেশী অভিনেতা। তিনি বেতার, মঞ্চ, টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তিনি পদ্মা নদীর মাঝি (১৯৯৩), অন্য জীবন (১৯৯৫), দুখাই (১৯৯৭), ও লালসালু (২০০১) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য চারবার শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং ৪৫তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা লাভ করেন। ২০২১ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করে।

রাইসুল ইসলাম আসাদ
Raisul Islam Asad in 2016 (01).jpg
২০১৬ সালে আসাদ
জন্ম
আসাদুজ্জামান মোহাম্মদ রাইসুল ইসলাম

(1953-06-15) ১৫ জুন ১৯৫৩ (বয়স ৬৯)
বাংলাদেশ
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ
মাতৃশিক্ষায়তনঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাঅভিনেতা
কর্মজীবন১৯৭২–বর্তমান
পুরস্কারতালিকা দেখুন

ব্যক্তিগত জীবনসম্পাদনা

আসাদুজ্জামান মোহাম্মদ রাইসুল ইসলাম ১৯৫২ সালের ১৫ই জুন জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। পরবর্তীকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

অভিনয় জীবনসম্পাদনা

১৯৭২ সালে আসাদ প্রথম মঞ্চ নাটকে অভিনয় করেন, "আমি রাজা হব না" এবং "সর্পবিষয়ক" নামের দুইটি নাটকে। তার প্রথম চলচ্চিত্র ১৯৭৩ সালে মুক্তি পাওয়া আবার তোরা মানুষ হ[১]

 
২০১৩ সালে আসাদ

আসাদ নাটক পরিচালনাও করছেন। ২০১০ সালে তিনি ধারাবাহিক নাটক "আলো ছায়া" পরিচালনা করেন যার রচয়িতা ছিলেন আজাদ আবুল কালামতানভীর মোকাম্মেলের লালন (২০০৪) চলচ্চিত্রে তিনি লালন চরিত্রে এবং গৌতম ঘোষের মনের মানুষ (২০১০) চলচ্চিত্র লালনের গুরু সিরাজ সাঁই চরিত্রে অভিনয় করেছেন। মানিক বন্দ্যোপাধায়ের উপন্যাস অবলম্বনে গৌতম ঘোষের পদ্মা নদীর মাঝি (১৯৯৩) চলচ্চিত্রে তিনি কুবের চরিত্রে অভিনয় করেন।[২]

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণসম্পাদনা

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন আসাদ ঢাকায় গেরিলা যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি কিংবদন্তি খ্যাতিপ্রাপ্ত ক্র্যাক প্লাটুনের একজন সদস্য ছিলেন।[৩] যুদ্ধ প্রসঙ্গে তিনি বলেনঃ ‘না, আমার কখনও আক্ষেপ হয় না। এই যে আপনি এ আক্ষেপ করার ভাবনাটা একটি স্বাধীন দেশে বসে করতে পারছেন—এটাই তো অনেক বড় পাওয়া। সবার আগে আমরা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি। এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কি হতে পারে?’[৪]

চলচ্চিত্র তালিকাসম্পাদনা

টেলিভিশন নাটকসম্পাদনা

  • হৃদয়ের ছবি
  • ১৯৭১ (টেলিফিল্ম)
  • পৌষ ফাগুনের পালা[২]
  • চিঠি আসে না[৫]

পুরস্কার ও সম্মাননাসম্পাদনা

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসম্পাদনা

বছর বিভাগ চলচ্চিত্র ফলাফল
১৯৯৩ শ্রেষ্ঠ অভিনেতা পদ্মা নদীর মাঝি বিজয়ী
১৯৯৫ শ্রেষ্ঠ অভিনেতা অন্য জীবন বিজয়ী
১৯৯৭ শ্রেষ্ঠ অভিনেতা দুখাই বিজয়ী
২০০১ শ্রেষ্ঠ অভিনেতা লালসালু বিজয়ী
২০২২ আজীবন সম্মাননা বিজয়ী

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. "সময়ের তারকাঃ রাইসুল ইসলাম আসাদ"দৈনিক প্রথম আলো। ১৬ জানুয়ারি ২০১০। ২০১৩-১০-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১১ 
  2. "ক থো প ক থ নঃ দুটি ছবিতে কাজের অভিজ্ঞতা দুই রকম"দৈনিক প্রথমআলো। ২৫ জানুয়ারি ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১১ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. "ক্র্যাক প্লাটুন : হার না মানা বীরত্বগাথা, ভোরের কাগজ, ২ ডিসেম্বর ২০১৪"। ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জানুয়ারি ২০২১ 
  4. "আমার আমিতে রাইসুল ইসলাম আসাদ"দৈনিক আমার দেশ। ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১১। ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১১ 
  5. "মুক্তিযোদ্ধা আসাদ"দৈনিক সমকাল। ৭ জানুয়ারি ২০১০। ৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১১ 
  6. "13th Universal Sufi Fest held"দ্য ডেইলি অবজারভার (ইংরেজি ভাষায়)। ঢাকা। পৃষ্ঠা ১১। 
  7. "রাহে ভান্ডারের ১৩ তম মহাত্মা সম্মেলনে বক্তারা"। দৈনিক আজাদী। ২০১৭-০৫-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৩-২৭ 
  8. "সম্মাননা"দৈনিক প্রথম আলো। ২০১৭-০৫-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ মার্চ ২০১৬ 
  9. "লোকনাট্য উৎসব মঙ্গলবার শুরু"। রাইজিংবিডি.কম। 
  10. "'সেলিম আল দীন পদক' পাচ্ছেন রাইসুল ইসলাম আসাদ"। দৈনিক প্রথম আলো। 

বহিঃসংযোগসম্পাদনা