রস টেলর

নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটার

লুটেরু রস পৌতোয়া লোট টেলর (ইংরেজি: Luteru Ross Poutoa Lote Taylor; জন্ম: ৮ মার্চ, ১৯৮৪) ওয়েলিংটনের লোয়ার হাটে জন্মগ্রহণকারী নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটার। এছাড়াও তিনি নিউজিল্যান্ড জাতীয় ক্রিকেট দলে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।[১] সচরাচর তিনি রস টেলর নামেই বৈশ্বিকভাবে পরিচিত ব্যক্তিত্ব। যুবদের আন্তর্জাতিকে অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দলেও অধিনায়কত্ব করেছেন তিনি। বর্তমানে তিনি পুনে ওয়ারিয়র্স ইন্ডিয়া দলের পক্ষ হয়ে আইপিএলে খেলছেন।[২] এছাড়াও তিনি ২০১৩ সালের ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লীগে রিকি পন্টিংঅ্যাডাম গিলক্রিস্টের সাথে বিক্রিত খেলোয়াড়ের তালিকায় ছিলেন।[৩] ডিসেম্বর, ২০১৩ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ডুনেডিনে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম টেস্টে তিনি তার প্রথম ও নিউজিল্যান্ডের পক্ষে ১৭তম টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে ডাবল-সেঞ্চুরি হাঁকান।[৪]

রস টেলর
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামলুটেরু রস পৌতোয়া লোট টেলর
জন্ম (1984-03-08) ৮ মার্চ ১৯৮৪ (বয়স ৩৯)
লোয়ার হাট, ওয়েলিংটন, নিউজিল্যান্ড
ডাকনামরস্কো, পাল্লেকেলে প্লান্ডারার
উচ্চতা১.৮৩ মিটার (৬ ফুট ০ ইঞ্চি)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি ব্যাটসম্যান
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি অফ ব্রেক
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২৩৪)
৮ নভেম্বর ২০০৭ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ টেস্ট৯ জানুয়ারি ২০২২ বনাম বাংলাদেশ
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১৪৪)
২০০৬ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
শেষ ওডিআই৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ বনাম ভারত
ওডিআই শার্ট নং
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
২০০২-বর্তমানসেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্টস
২০০৮-২০১০আরসি ব্যাঙ্গালোর
২০০৯-২০১০ভিক্টোরিয়া
২০১০ডারহাম
২০১১রাজস্থান রয়্যালস
২০১২, ২০১৪দিল্লি ডেয়ারডেভিলস
২০১৩পুনে ওয়ারিয়র্স ইন্ডিয়া
২০১৬-১৭সাসেক্স (জার্সি নং club9 = নটিংহ্যামশায়ার year9 = ২০১৮)
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই টি২০আই এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ১১২ ২৩৬ ১০২ ১৯২
রানের সংখ্যা ৭,৬৮৩ ৮,৬০৭ ১,৯০৯ ১২,৩৬৯
ব্যাটিং গড় ৪৪.৬৬ ৪৭.৫৫ ২৬.১৫ ৪১.৭৮
১০০/৫০ ১৯/৩৫ ২১/৫১ ০/৭ ২৭/৬৫
সর্বোচ্চ রান ২৯০ ১৮১* ৬৩ ২৯০
বল করেছে ৯৯ ৪২ ৬৮৭
উইকেট
বোলিং গড় ১৬.০০ ৫৪.০০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ২/৪ ২/৪
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১৬৩/– ১৪২/– ৪৬/– ২৪৯/–
উৎস: ক্রিকইনফো, ৪ এপ্রিল ২০২২

খেলোয়াড়ী জীবন সম্পাদনা

১ মার্চ, ২০০৬ তারিখে নিউজিল্যান্ড দলের পক্ষ হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষিক্ত হন রস টেলর। একদিনের ঐ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রতিপক্ষীয় দল ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজমার্ফি সু’য়ার পর তিনি হলেন সামোয়া’র দ্বিতীয় পুরষ খেলোয়াড়, যিনি নিউজিল্যান্ড দলে খেলার সুযোগ পেয়েছেন।

৩ মার্চ, ২০১০ তারিখে টেলর প্রথমবারের মতো অধিনায়কত্ব করেন। ড্যানিয়েল ভেট্টোরি নাকে আঘাত পাওয়ায় খেলা শুরুর ত্রিশ মিনিট পূর্বে একদিনের আন্তর্জাতিকে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিনি এ সুযোগ পান। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭০ রান করেন ও দল দুই উইকেটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়। ঐ খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন। অর্জিত $NZ ৫০০ নিউজিল্যান্ডীয় ডলার মাস্টারটনের ল্যান্ডসডন ক্রিকেট ক্লাবে দান করে দেন তিনি।

বিধ্বংসী ও আগ্রাসীমূলক ব্যাটিংয়ের জন্য পরিচিত হয়ে আছেন। আইপিএলে অনেকগুলো খেলায় রাজস্থান রয়্যালসকে বিজয়ের মুখ দেখিয়েছেন। এছাড়াও উচ্চ স্ট্রাইক রেটধারী খেলোয়াড় তিনি। ২০০৯ সালে এয়ারটেল চ্যাম্পিয়ন্স লীগ টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতায় দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের বিপক্ষে জয়ের পর অধিনায়ক অনিল কুম্বলে তাকে স্পিনারদের মৃত্যুদূত নামে আখ্যায়িত করেন। খেলায় তিনি ৩৮ বলে ৬৫ রান করে ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন।[৫]

টেস্টে তার সর্বোচ্চ রান হচ্ছে অপরাজিত ১৫৪*, যা তিনি ওল্ড ট্রাফোর্ড ক্রিকেট গ্রাউন্ডে মে, ২০০৮ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে করেছেন।

ক্রিকেট বিশ্বকাপ সম্পাদনা

২০১৫ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের লক্ষ্যে ৮ জানুয়ারি, ২০১৫ তারিখে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট কর্তৃপক্ষ নিউজিল্যান্ড দলের ১৫-সদস্যের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে। এতে তিনিও দলের অন্যতম সদস্য মনোনীত হন। ১৩ মার্চ সেডন পার্কে অনুষ্ঠিত গ্রুপ পর্বের সর্বশেষ খেলায় বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলায় অংশ নিয়ে নিউজিল্যান্ডের ৪র্থ খেলোয়াড় হিসেবে তিনি একদিনের আন্তর্জাতিকে ৫,০০০ রানের মাইলফলকে পদার্পণ করেন।[৬]

২০১৫ বিশ্বকাপে টেলরের অর্জনসমূহ
রান প্রতিপক্ষ স্থান তারিখ ফলাফল
১৪   শ্রীলঙ্কা ক্রাইস্টচার্চ ১৪ ফেব্রুয়ারি জয়
  স্কটল্যান্ড ডুনেডিন ১৭ ফেব্রুয়ারি জয়
৫*   ইংল্যান্ড ওয়েলিংটন ২০ ফেব্রুয়ারি জয়
  অস্ট্রেলিয়া অকল্যান্ড ২৮ ফেব্রুয়ারি জয়
২৪*   আফগানিস্তান নেপিয়ার ৮ মার্চ জয়
৫৬   বাংলাদেশ হ্যামিল্টন ১৩ মার্চ জয়
৪২   ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওয়েলিংটন ২১ মার্চ জয়
৩০   দক্ষিণ আফ্রিকা অকল্যান্ড ২৪ মার্চ জয়

বিতর্ক সম্পাদনা

রস টেলরের অধিনায়কত্ব নিয়ে কোচ মাইক হেসন ভীষণ বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। তার মতে টেলরকে ব্রেন্ডন ম্যাককুলামের কাঁধে দলের দায়িত্ব দেয়া উচিত। জানা যায় যে, ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম হেসনের ঘনিষ্ঠতম বন্ধু।[৭] হেসনের সমালোচনা ও নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের সাথে টেলরের তিক্ততাপূর্ণ সম্পর্কের জন্য শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত ১ম টেস্টের চারদিন পূর্বে দলের অধিনায়কের দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেয়া হয়েছিল।[৮] কিন্তু দ্বিতীয় টেস্টে টেলরের ম্যান অব দ্য ম্যাচ প্রাপ্তির ফলে নিউজিল্যান্ড শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক বিজয় লাভ করে। এরপর টেলরকে অধিনায়কত্বের জন্য অনুরোধ জানানো হলেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন।[৯]

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

টেলর সামোয়া দ্বীপপুঞ্জের বংশোদ্ভূত ব্যক্তি। তার মা সামোয়ায় এবং বাবা নিউজিল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন। নিউজিল্যান্ড জাতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় ভিক্টোরিয়া জেন ব্রাউনকে ২৫ জুন, ২০১১ তারিখে বিয়ে করেন তিনি। ম্যাকেঞ্জি নামীয় এক কন্যা সন্তান রয়েছে তাদের। তার নিকটতম বন্ধু হিসেবে রয়েছেন নিউজিল্যান্ডার্স মার্টিন গাপটিল

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Duncan Johnstone (২০১২-১২-০৭)। "Black Caps | Ross Taylor sacked as Black Caps captain..."। Stuff.co.nz। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৪-২২ 
  2. http://www.firstpost.com/sports/ipl/delhi-daredevils-trade-ross-taylor-for-punes-ashish-nehra-623000.html
  3. "West Indies Cricket News: Ross Taylor signs for Caribbean Premier League"। ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৪-২২ 
  4. "Taylor double-century sets up New Zealand"। ESPNcricinfo। ৪ ডিসেম্বর ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ৪ ডিসেম্বর ২০১৩ 
  5. RCB vs. DD match scorecard. "RCB vs. DD CLT20 Scorecard" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১২ ডিসেম্বর ২০০৯ তারিখে, Retrieved on 1 December 2009.
  6. "Mahmudullah's twin tons, and Taylor's slow fifty"। ESPN Cricinfo। ১৩ মার্চ ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মার্চ ২০১৫ 
  7. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১২ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ মে ২০১৩ 
  8. Johnstone, Duncan (৭ ডিসেম্বর ২০১২)। "Ross Taylor gone as Blacks Caps captain"। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১৩ 
  9. http://tvnz.co.nz/cricket-news/axed-taylor-disgusted-timing-5272093

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা