মারলন স্যামুয়েলস

ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটার

মারলন নাথানিয়েল স্যামুয়েলস (ইংরেজি: Marlon Nathaniel Samuels; জন্ম: ৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮১) জ্যামাইকার কিংস্টনে জন্মগ্রহণকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রাক্তন ক্রিকেটার। প্রধানত তিনি ডানহাতি ব্যাটসম্যান এবং ইনিংসের মাঝামাঝি ব্যাটিং করতে নামেন মারলন স্যামুয়েলস

মারলন স্যামুয়েলস
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামমারলন নাথানিয়েল স্যামুয়েলস
জন্ম (1981-02-05) ৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৮১ (বয়স ৪৩)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি অফ ব্রেক
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার, অধিনায়ক
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২৩৭)
১৫ ডিসেম্বর ২০০০ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ টেস্ট২ জানুয়ারি ২০১৫ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১০৩)
৪ অক্টোবর ২০০০ বনাম শ্রীলঙ্কা
শেষ ওডিআই২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ বনাম জিম্বাবুয়ে
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৯৬/৯৭-২০০৭/০৮জামাইকা
২০১০/১১-২০১১/১২জ্যামাইকা
২০১১/১২-বর্তমানদূরন্ত রাজশাহী
২০১২-১৩পুনে ওয়ারিয়র্স ইন্ডিয়া
২০১২/১৩-১৩মেলবোর্ন রেনেগেডেস
২০১৩-বর্তমানঅ্যান্টিগুয়া হকসবিলস
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই টি২০আই এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৫৫ ১৭০ ৩৮ ১০৫
রানের সংখ্যা ৩,২৫১ ৪,৫৯৩ ৯৪১ ৬,৫৮৯
ব্যাটিং গড় ৩৫.৭২ ৩৪.০২ ২৯.৫২ ৩৯.২২
১০০/৫০ ৬/২১ ৮/২৫ ০/৮ ১৩/৩৭
সর্বোচ্চ রান ২৬০ ১৩৩* ৮৫* ২৬০
বল করেছে ৩,৫৫৭ ৪,৭৩৫ ৪৩৪ ৬,১৩৩
উইকেট ৩৬ ৮৪ ১৯ ৬৬
বোলিং গড় ৫৬.৪১ ৪৫.২৯ ২৯.৫২ ৫২.৯৫
ইনিংসে ৫ উইকেট -/-
ম্যাচে ১০ উইকেট - -/-
সেরা বোলিং ৪/১৩ ৩/২৫ ৩/২৩ ৫/৮৭
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ২৪/- ৪৪/– ৮/- ৬৪/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলের টেস্ট এবং একদিনের ক্রিকেটার রবার্ট স্যামুয়েলসের ছোট ভাই।[১]

খেলোয়াড়ী জীবন সম্পাদনা

২০০০ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্টে অভিষিক্ত হন স্যামুয়েলস। একই বছর নাইরোবিতে অনুষ্ঠিত আইসিসি নক-আউট ট্রফিতে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলায় অভিষেক ঘটান শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে খেলে।

তিনি তার অভিষেক টেস্ট সেঞ্চুরি করেন ২০০২/০৩ মৌসুমে কলকাতায় ভারতের বিরুদ্ধে। জাভাগাল শ্রীনাথ, অনিল কুম্বলে, হরভজন সিংয়ের ন্যায় বোলারদেরকে মোকাবেলা করে ১০৪ রানের ঐ ইনিংসের ফলে ৩য় টেস্টে দলটি ড্র করতে সক্ষমতা অর্জন করেছিল।

ক্রিকেট বিশ্বকাপ সম্পাদনা

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ড কর্তৃপক্ষ ১১ জানুয়ারি, ২০১৫ তারিখে ২০১৫ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের ১৫-সদস্যের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে। তিনিও দলের অন্যতম সদস্য মনোনীত হন।

২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ তারিখে ম্যানুকা ওভালে অনুষ্ঠিত গ্রুপ-পর্বের ৩য় খেলায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ক্রিস গেইলের গড়া অনেকগুলো রেকর্ডের স্বাক্ষী ছিলেন তিনি। উভয়ের অসামান্য ব্যাটিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৭৩ রানে বিজয়ী হয়। গেইলের সাথে ৩৭২ রানের জুটি গড়ে একদিনের আন্তর্জাতিকের ইতিহাসে যে-কোন উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়েন।[২] ১৯৯৯ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তেন্ডুলকরদ্রাবিড়ের গড়া ৩৩১ রানের রেকর্ড ভেঙ্গে ফেলে এ জুটি। এছাড়াও, লিস্ট-এ ক্রিকেটের যে-কোন জুটিতে এটি সর্বোচ্চ।[৩] খেলায় তিনি তার নিজস্ব সর্বোচ্চ অপরাজিত ১৩৩* রান সংগ্রহ করেন।

সাফল্যগাঁথা সম্পাদনা

২০১২ সালের আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতায় ৫৬ বলে ৭৮ রান করার মাধ্যমে অসামান্য ক্রীড়ানৈপুণ্য প্রদর্শন করে দলকে প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হতে সাহায্য করেন। তন্মধ্যে ছয়টি ছয় এবং তিনটি চারের মার ছিল।[৪] তার এই ক্রীড়ানৈপুণ্যের ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দল শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলকে ৩৬ রানের ব্যবধানে পরাভূত করে।[৫] ঐ খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচ পুরস্কারে ভূষিত হন।[৬]

অক্টোবর, ২০১২ সালে দ্বিতীয় বহিঃস্থ পেশাদারী ক্রিকেটার হিসেবে মেলবোর্ন রেনেগেডেস দলের পক্ষ হয়ে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত বিগ ব্যাশ টি২০ লীগে অংশগ্রহণ করেন।[৭]

২০১৩ সালের উইজডেন বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে তিনি ১৯৩৯ সালের বিজয়ী ডেনিস কম্পটনের নাতি ও ইংল্যান্ডের ক্রিকেটার নিক কম্পটন, অস্ট্রেলিয়ার হাশিম আমলা, জ্যাক ক্যালিস এবং ডেল স্টেইনের সাথে মনোনীত হন।[৮]

নিষিদ্ধতা সম্পাদনা

২১ জানুয়ারি, ২০০৭ সালে নাগপুরে অনুষ্ঠিত ভারত বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যেকার ১ম একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলায় ভারতীয় পুলিশ স্যামুয়েলসকে নিজ দলের তথ্য লেনদেনের কারণে জিজ্ঞাসাবাদ করে। দাবী করা হয় যে, এক জুয়ারীর সাথে তিনি টেলিফোনে কথাবার্তা বলেছিলেন যা গোপনে ধারণ করা হয়।[৯] এ সম্পর্কীয় তথ্যাদি পরবর্তীকালে পুলিশ প্রকাশ করে।[১০] মে মাসে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল এ বিষয়ে শুনানীর আয়োজন করে। ২৭ বছর বয়সী স্যামুয়েলসের বিরুদ্ধে অবৈধ অর্থগ্রহণ, সুবিধা গ্রহণ, অন্যান্য পুরস্কার গ্রহণের কথা অভিযোগ আকারে উত্থাপন করা হয় যা ক্রিকেটকে কলুষিত করেছে। এরফলে তাকে দুই বছরের জন্যে ক্রিকেট জীবন থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।[১১]

২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ সালে প্রশ্নবিদ্ধ বোলিংয়ের কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বোলিং ভঙ্গীমা পরিবর্তন না করা পর্যন্ত প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে বল করার অধিকার হারান।[১২]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Marlon Samuels profile espncricinfo.com Retrieved 30 March 2012
  2. "Highest partnership ever for Chris Gayle and Marlon Samuels"ESPNcricinfo। ESPN Sports Media। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 
  3. Jeswant, Bishen। "Highest WC score, fastest double-ton, record sixes"ESPNcricinfo। ESPN Sports Media। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 
  4. Samuels, Sammy give WI first world title since 1979. Cricinfo. 7 October 2012. Retrieved on 2012-10-07.
  5. West Indies' Marlon Samuels seals World Twenty20 win over Sri Lanka. The Guardian. 7 October 2012. Retrieved on 2012-10-07.
  6. "Samuels special the spur for epic West Indies win"। Wisden India। ৭ অক্টোবর ২০১২। [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  7. "Samuels joins Murali at Melbourne Renegades"। Wisden India। ২২ অক্টোবর ২০১২। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ নভেম্বর ২০১২ 
  8. ""Kallis, Amla, Steyn among Wisden's five Cricketers of the Year". Wisden India. 10 April 2013."। ১৬ এপ্রিল ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ এপ্রিল ২০১৩ 
  9. ICC team to go to Nagpur for Samuels probe Cricinfo retrieved 25 February 2008
  10. Samuels in conversation with Kochar Cricinfo retrieved 25 February 2008
  11. Samuels found guilty of violating ICC Code, ESPNcricinfo, ১৩ মে ২০০৮, সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৫-২৮ 
  12. Samuels issued with bowling ban BBC News retrieved 25 February 2008

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা