বর্ধমান জেলা
এই নিবন্ধটি উইকিপিডিয়ার জন্য মানসম্পন্ন অবস্থায় আনতে পরিচ্ছন্ন করা প্রয়োজন। মূল সমস্যা হল: বঙ্গানুবাদে বেশ কিছু ভুল আছে। এছাড়া জেলা ভাগ হওয়ায় বেশ কিছু তথ্য পশ্চিম বর্ধমান জেলা ও পূর্ব বর্ধমান জেলায় বণ্টন করা উচিত।। |
বর্ধমান জেলা ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত বর্ধমান বিভাগের অধুনালুপ্ত একটি জেলা। ২০১৭ খ্রিস্টাব্দের ৭ এপ্রিল এই জেলা বিভক্ত হয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলা ও পশ্চিম বর্ধমান জেলা গঠিত হয়।
বর্ধমান জেলা জেলা | |
---|---|
পশ্চিমবঙ্গের জেলা | |
![]() পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার অবস্থান | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | পশ্চিমবঙ্গ |
প্রশাসনিক বিভাগ | বর্ধমান |
সদরদপ্তর | [[বর্ধমান]] |
সরকার | |
• লোকসভা কেন্দ্র | ৫টি |
• বিধানসভা আসন | ২৫টি |
আয়তন | |
• মোট | ৭,০২৪ বর্গকিমি (২,৭১২ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ৭৭,২৩,৬৬৩ |
• জনঘনত্ব | ১,১০০/বর্গকিমি (২,৮০০/বর্গমাইল) |
• পৌর এলাকা | ৩৬.৯৪ % |
জনতাত্ত্বিক | |
• সাক্ষরতা | ৭৭.১৫ %[১] |
• লিঙ্গানুপাত | ৯২২ |
প্রধান মহাসড়ক | জাতীয় সড়ক ১৯, গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড, পানাগড়-মোরগ্রাম হাইওয়ে, জাতীয় সড়ক ৬০ |
গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত | ১৪৪২ মিমি |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
এটি ছিল মূলত কৃষিপ্রধান জেলা। একে পশ্চিমবঙ্গের শস্য ভান্ডার বলা হতো। জেলার বৃহত্তম শহর বর্ধমান। ধান এ জেলার প্রধান ফসল। এ ছাড়া পাট, পেঁয়াজ, আলু, আখ ইত্যাদি হয়। বর্ধমান জেলা আসানসোল কয়লাখনির জন্য প্রসিদ্ধ এবং দুর্গাপুরে আছে লৌহ-ইস্পাত কারখানা। জেলা সদর বর্ধমান থেকে অল্প দূরে কাঞ্চন নগর ছুরি, কাচির জন্য প্রসিদ্ধ। ধাত্রিগ্রাম তাঁতের কাপড়ের জন্য প্রসিদ্ধ।
ইতিহাস সম্পাদনা
বর্ধমানের ইতিহাস শুরু খ্রীষ্টপূর্ব ৫০০ সন তথা মেসোলিথিক বা প্রস্তর যুগের অন্তিম সময়। Burdwan নামটি সংস্কৃত বর্ধমান থেকে ইংরেজ কর্তৃক প্রদত্ত। মার্কন্ডেয় পুরাণে বর্ধমানের উল্লেখ আছে। গলসি থানা সংলগ্ন "মল্লসরুল" গ্রামে প্রাপ্ত ষষ্ঠ শতকের একটি তাম্রলিপিতে প্রথম নামটির উল্লেখ পাওয়া যায়। নামের মূল নিয়ে দুটি মত রয়েছে। প্রথম মতানুযায়ী, নামটি ২৪ তম জৈন তীর্থাঙ্কর বা বর্ধমানস্বামী'র নামানুসারে প্রণীত হয়েছে। জৈন কল্পসূত্রাণুসারে, মহাবীর কিছুসময় অস্তিকগ্রামে কাটিয়েছিলেন, যা পরে বর্ধমান নামে পরিচিত হয়।অন্যমতানুযায়ী, বর্ধমানা অর্থ সম্পন্ন কেন্দ্র। গাঙ্গেয় উপত্যকায় আর্য সভ্যতার বিকাশের সময়ে, উন্নতি এবং সম্পনতার প্রতীক হিসেবে স্থানটি পরিচিত ছিল। রাজস্ব আদায়ের সুবিধার জন্য মুঘল সম্রাট আকবর বাংলা সুবাকে উনিশটি সরকারে ভাগ করেন। আইন-ই-আকবরী অনুযায়ী বর্ধমান জেলার সঙ্গে সম্পর্কিত যে তিনটি সরকারের নাম পাওয়া যায় তার মধ্যে একটি শরিফাবাদ। শরিফ শব্দের অর্থ সম্ভ্রান্ত। সেই অর্থে এলাকাটি ছিল অপেক্ষাকৃত সম্ভ্রান্ত অঞ্চল। পরে বর্ধমানের নাম হয় শরিফাবাদ। সেই সময় বীরভূমের দক্ষিণাংশ, মুর্শিবাদ জেলার কান্দি আর বর্ধমান জেলার মধ্য অংশ জুড়ে এর সীমানা ছিল। রাজা তিলকচাঁদ ছিলেন বর্ধমানের প্রথম মহারাজধিরাজ। তাদের বংশের অন্যতম রাজারা হলেন প্রতাপচাঁদ ও মহতাবচাঁদ। ব্রিটিশ আমলে রানী বেনদেয়ী তার দেওয়ান বনবিহারীর পুত্র বিজনবিহারীকে দত্তক নিয়ে বিজয়চাঁদ নাম দিয়ে বর্ধমানের সিংহাসনে বসান।
জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি সম্পাদনা
- রাসবিহারী বসু, (১৮৮৬ – ১৯৪৫) ভারতে ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন বিপ্লবী নেতা। রাসবিহারী বসু ১৮৮৬ খ্রীষ্টাব্দের ২৫ শে মে জন্মগ্রহণ করেন৷ তিনি অধুনা পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলায় অবস্থিত তাঁর পৈতৃক গ্রাগম সুবলদহে জন্মগ্রহণ করেন।
- ভবদেব ভট্ট-১০ শতকের শেষে বা ১১ শতকের শুরুতে গুসকরার কাছে সিদ্ধল গ্রামে জন্ম (মতান্তরে মঙ্গলকোটের শীতল গ্রামে)।
- মুকুন্দরাম চক্রবর্তী ষোড়শ শতাব্দীর বাঙালি কবি।
- বৃন্দাবন দাস ঠাকুর- পদাবলী সাহিত্যের বিখ্যাত কবি। বর্ধমানের কাছে দেনুর গ্রামে ১৬ শতকের শুরুতে জন্ম।
- কাশীরাম দাস (সময়কাল আনুমানিক ষোড়শ-সপ্তদশ শতাব্দী) বাঙালি কবি। কাশীরাম দাস মহাভারত ।
- অকিঞ্চন (১৭৫০ – ১৮৩৬, প্রকৃত নাম রঘুনাথ রায়), শ্যামাসংগীত ও বৈষ্ণব পদকর্তা। জন্মস্থান চুপি।[২]
- হটু বিদ্যালঙ্কার (১৭৭৫ - ১৮৭৫), মহিলা পণ্ডিত, বৈয়াকরণিক ও চিকিৎসক।
- অক্ষয়কুমার দত্ত (১৮২০ – ১৮৮৬), ব্রাহ্ম ধর্মসংস্কারক, শিক্ষাবিদ ও গবেষক। কালনা মহাকুমার চুপি গ্রামে জন্ম।[৩]
- যাদবেন্দ্রনাথ পাঁজা, (১৮৮৫ - ১৯৬১) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব এবং আইন ব্যবসায়ী।
- কালিদাস রায় (জন্ম: ২২ জুন ১৮৮৯ – মৃত্যু: ২৫ অক্টোবর ১৯৭৫) ছিলেন রবীন্দ্রযুগের বিশিষ্ট রবীন্দ্রানুসারী কবি, প্রাবন্ধিক ও পাঠ্যপুস্তক রচয়িতা।
- কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯ – ১৯৭৬) বাঙালি কবি। আসানসোলের চুরুলিয়া গ্রামে কবির জন্ম। মৃত্যু বাংলাদেশের ঢাকায়।
- সুবোধ চৌধুরী (১৯১৪ - ২৬ আগস্ট, ১৯৭২) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিযুগের বিপ্লবী।
- অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় (১৯৩৩ – ১৯৮৩), নাট্য ও চলচ্চিত্র অভিনেতা। জন্মস্থান রেপো, আসানসোল।[৪]
- কমলাকান্ত ভট্টাচার্য (সাধক কমলাকান্ত), শাক্ত পদাবলী তথা শ্যামা সংগীতের অন্যতম প্রধান কবি।
- লালবিহারী দে, বাঙালি লেখক ও খ্রিস্টান পণ্ডিত।
- কুমুদরঞ্জন মল্লিক[৫]
- সুকুমার সেন (জন্ম ১৯০০ সালে - মৃত্যু ১৯৯২ সালে)।
- শৈলবালা ঘোষজায়া (১৮৯৪-১৯৭৪), ঔপন্যাসিক ও ছোটগল্পকার।
- বিনয় চৌধুরী, স্বাধীনতা সংগ্রামী ও বামপন্থি রাজনীতিবিদ
- রাসবিহারী ঘোষ (২৩ ডিসেম্বর ১৮৪৫ – ২৮ ফেব্রূয়ারি ১৯২১), ভারতীয় রাজনীতিবিদ, আইনজীবী, সমাজকর্মী এবং সমাজসেবী। জন্ম পূর্ব বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষ ব্লকের খণ্ডঘোষ গ্রামে। তোরকোনার মামার বাড়িতে জীবনের বেশীর ভাগ সময় বসবাস করেছেন।
- ভবানী বণিক, ১৮ শতকের কবিয়াল ও গায়ক
- ভোলানাথ রায় কাব্যশাস্ত্রী, যাত্রাপালাকার ও নাটকার
- সোমেশ্বরপ্রসাদ চৌধুরী, স্বাধীনতা সংগ্রামী ও সাহিত্যিক
- প্রীতি ভট্টাচার্য (২০১০ - বর্তমান)। সুপার স্টার সিঙ্গার ২০১৯ এর বিজয়ী।
- বটুকেশ্বর দত্ত (১৯১০- ১৯৬৫), বাঙালি ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবী এবং ভারতীয় মুক্তিযোদ্ধা।
- বিজয় কুমার ভট্টাচার্য (১৮৯৫-১৯৯৩)-গান্ধীবাদী স্বাধীনতা সংগ্রামী। তাকে ঢ়ারের গান্ধী বলা হয়।দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে তার অনন্য ভূমিকা অনস্বীকার্য। কলানব গ্রামের শিক্ষা নিকেতন প্রতিষ্ঠায় তার এবং সহধর্মিণী সাধনা গুহরায়ের ইতিহাস চিরকাল স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। জেলা বোর্ডের সভাপতি হন।বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ডি লিট উপাধিতে ভূষিত করেন।বিজয় কুমার ভট্টাচার্য খণ্ডঘোষ থানার ওঁয়াড়ি গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন।
- অমল দত্ত(৪ মে ১৯৩০-২০ জুলাই ২০১৬)- বিশ্ববিখ্যাত ফুটবল খেলোয়ার,কোচ,এবং ফুটবল ম্যানেজার। পিতৃ পুরুষদের কলকাতায় পশুপাখি ব্যবসা ছিল।সেই সূত্রে জোড়াসাঁকো তে বসবাস। পরে বাগুইহাটি বাকি জীবন অতিবাহিত করেন। তিনি ভারতের ফুটবলের অন্যতম পথ প্রদর্শক। তার লেখা বই গুলি সবই ফুটবল খেলা সংক্রান্ত। বিশ্ব বিখ্যাত এই ক্রিড়াবিদ খণ্ডঘোষ থানার ওঁয়াড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
- শৈলেন্দ্রনাথ ঘোষ /শৈলেন ঘোষ- শিশু সাহিত্যিক ও নাট্যকার শৈলেন ঘোষ খণ্ডঘোষ থানার ওঁয়াড়ি গ্রামে ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে ৮ ডিসেম্বর জন্মগ্রহন করেন। সাত বছর বয়সে বাবার সাথে কোলকাতায় চলে যান।প্রথমে বাগবাজার ও পরে হাওড়ার সালকিয়ায় তার জীবনের বেশীরভাগ সময় কাটে।তার লেখা বহু শিশুদের গ্রন্থ অবিসংবাদিত প্রশংসিত। তিনি সাহিত্যিক না হলে ফুটবল খেলোয়ার হতেন।তার প্রতিভা ভিন্নমুখী ছিল।তার আজীবন শিশুসাহিত্য সেবা তাকে মহত্ব দান করেছে।নেহরু ফেলোসিপ,সঙ্গীত একাডেমি পুটস্কার,মৌচাক পুরস্কার,বিদ্যাসাগর পুরস্কার এবং জাতীয় পুরস্কারে তিনি সন্মানিত হয়েছেন।তিনি অকৃতদার ছিলেন।২০১৬ খ্রিস্টাব্দে ১৪ আগস্ট পরোলোক গমন করেন।
- সুপ্রভা সরকার (২৫ সেপ্টেম্বর ১৯১৯- ২৩ সেপ্টেম্বর ১৯৮৯ - অবিস্মরণীয় নজরুল গীতিকার কলকাতার ভবানীপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার আদি বাড়ি বর্তমান বাংলাদেশের বরিশালে। ১৬ বছর বয়সে তিনি কাজী নজরুল ইসলামের সান্নিধ্য লাভ করে স্বয়ং কবির কাছে গান শিখেছিলেন। বহু চলচ্চিত্রে তার গান অমর হয়ে আছে। দেবকী বসু সহ একাধিক চিত্র পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছেন। মহালয়ার মহিষমর্দিনীতে তার কাজ বহু প্রশংসিত।
১৯৪১ সালে তিনি ওঁয়াড়ি গ্রামের আইনজীবী সুধীর চন্দ্র সরকারের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনি জীবনে নজরুল গীতি ছাড়া অন্য কোনো গান গাননি। তিনি নজরুল গীতির জগতে বড়দি নামে পরিচিত। বাংলা গানের জগতে মহীয়সী ওঁয়াড়ি গ্রামের গৃহবধূ সুপ্রভা সরকার বিশ্ববন্দিত নজরুল গীতিকার।
মহকুমা শহর সম্পাদনা
-
১০৮ শিবমন্দির
-
বর্দ্ধমান গির্জা
-
ভারতী ভবন
-
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক চত্বরের সিংহদ্বার, রাজবাটী
-
বার্নপুর বাংলো
-
বর্ধমান মেঘনাদ সাহা তারামণ্ডল
-
বিজয় তোরণ (কার্জন গেট)
-
বার্নপুর ইস্পাত কারখানা
তথ্যসূত্র সম্পাদনা
- ↑ "District-specific Literates and Literacy Rates, 2001"। Registrar General, India, Ministry of Home Affairs। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-১০।
- ↑ সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সম্পাদনা সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, ২০০২, পৃ. ১
- ↑ সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, পৃ. ১
- ↑ সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, পৃ. .৬
- ↑ "বর্ধমান জেলা প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব"। ১৭ মে ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ এপ্রিল ২০০৮।
বহিঃসংযোগ সম্পাদনা
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |