মুকুন্দরাম চক্রবর্তী
মুকুন্দরাম চক্রবর্তী (আনু. ১৫০০–১৫৫১ খ্রিষ্টাব্দ) একজন মধ্যযুগীয় বাঙালি কবি।
কবিঙ্করণ মুকুন্দরাম চক্রবর্তী | |
---|---|
জন্ম | আনু. ১৫৪০ খ্রিস্টাব্দ দামুন্যা, বর্ধমান (বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ, ভারত) |
মৃত্যু | আনু. ১৬০০ খ্রিস্টাব্দ |
পেশা | সভাকবি, গৃহ শিক্ষক |
ভাষা | মধ্যযুগীয় বাংলা |
সময়কাল | মধ্যযুগ |
ধরন | কাব্য |
বিষয় | মঙ্গলকাব্য (চণ্ডীমঙ্গল) |
সাহিত্য আন্দোলন | গৌড়ীয় বৈষ্ণববাদ |
উল্লেখযোগ্য রচনা | অভয়ামঙ্গল, অম্বিকামঙ্গল |
আত্মীয় | হৃদয় মিশ্র (পিতা) দৈবকী (মাতা) |
আনুমানিক ১৫৭৫ সালে বর্ধমান রাজের ডিহিদার মামুদ শরিফের অত্যাচারের কারণে মুকুন্দরাম তাঁর পৈতৃক নিবাস ত্যাগ করতে বাধ্য হন এবং ব্রাহ্মণ শাসক বীর বাঁকুড়া রায়ের আশ্রয় ও পৃষ্ঠপোষকতা পান, যিনি মেদিনীপুরের ব্রাহ্মণভূম এলাকায় শাসন করতেন এবং দেবী চণ্ডীর ভক্ত ছিলেন।[১] বাঁকুড়া রায় মুকুন্দরামকে তাঁর পুত্রের গৃহশিক্ষক নিযুক্ত করেন। পরবর্তীতে আড়রার জমিদার রঘুনাথ রায়ের সভাকবিরূপে চণ্ডীমঙ্গল কাব্য রচনা করেন, যার জন্য তিনি 'কবিকঙ্কণ' উপাধিতে ভূষিত হন।[২] কবিকঙ্কণ অর্থ যে কবি হাতে অথবা পায়ে ঘুঙুর পরে গান করতেন, অর্থাৎ মঙ্গলকাব্যের পেশাদার গায়ক।[৩]
তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত রচনা চণ্ডীমঙ্গল মধ্যযুগীয় বাংলার সামাজিক-রাজনৈতিক পটভূমির একটি ভাষ্য। সেখানে তিনি একজন দরিদ্র শিকারী কল্লাকেতু ও একজন ধনী বণিক ধনপতি এবং তাঁদের স্ত্রীদের কাহিনির আশ্রয়ে নিজের জীবনের ভ্রমণ ও কষ্টগুলোকে বর্ণনা করেছেন, যাঁদের উভয়েই বিপদে আটকা পড়ে এবং পরবর্তীকালে দেবী অভয়া বা চণ্ডী উদ্ধার তাঁদের উদ্ধার করেন, তাঁরা উভয়ই লোকদেবদেবী। চণ্ডীমঙ্গল মধ্যযুগীয় বাংলায় বিদ্যমান জটিল সামাজিক কাঠামোর একটি সমৃদ্ধ ও বিশদ বিবরণ প্রদান করে।[৪]
তিনি তার কাব্যে উপন্যাসের বীজ বপন করেছেন। আধুনিক যুগের সাহিত্য সমালোচকগণ[কে?] তার সম্পর্কে বলেছেন - ' মুকুন্দরাম চক্রবর্তী মধ্যযুগে জন্মগ্রহণ না করে আধুনিক যুগে জন্মগ্রহণ করলে কাব্য না লিখে উপন্যাস লিখতেন'। যদি এমন কোন গ্রন্থের নাম করতে হয় যাতে আধুনিক কালের, উপন্যাসের,রস কিছু পরিমাণে মেলে যেমন- নিপুণ পর্যবেক্ষণ, সহৃদয়তা, জীবনে আস্থা, ব্যাপক অভিজ্ঞতা সবই যথোচিত পরিমাণে বর্তমান।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ O’malley, L. S. S. (১৯৯৫)। Bengal District Gazetteers – Midnapore।
- ↑ সাহিত্যপাঠ। একাদশ-দ্বাদশ ও আলিম শ্রেণি। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, ঢাকা, বাংলাদেশ। ২০২২। পৃষ্ঠা ২২১।
- ↑ বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, প্রথম খন্ড, সুকুমার সেন, আনন্দ পাবলিশার্স।
- ↑ Chakrabarti, Kunal; Chakrabarti, Shubhra (২০১৩-০৮-২২)। Historical Dictionary of the Bengalis (ইংরেজি ভাষায়)। Scarecrow Press। পৃষ্ঠা 120–121। আইএসবিএন 978-0-8108-8024-5।