ভোলা দ্বীপ

দ্বীপ
(দক্ষিণ শাহবাজপুর থেকে পুনর্নির্দেশিত)

ভোলা দ্বীপ (দক্ষিণ শাহবাজপুর নামেও পরিচিত) হচ্ছে বাংলাদেশের বৃহত্তম দ্বীপ যার আয়তন ১২২১ বর্গ কিলোমিটার। এটা বরিশাল বিভাগের অন্তর্গত ভোলা জেলার বেশীরভাগ এলাকা জুড়ে অবস্থিত।[]

ভোলা
ভোলার একটি নদী ও প্লাবনভূমি
ভোলা বাংলাদেশ-এ অবস্থিত
ভোলা
ভোলা
ভোলা দ্বীপ (বাংলাদেশ)
ভূগোল
অবস্থানবঙ্গোপসাগর
স্থানাঙ্ক২২°৩০′ উত্তর ৯০°৪৫′ পূর্ব / ২২.৫০০° উত্তর ৯০.৭৫০° পূর্ব / 22.500; 90.750
আয়তন১,২২১ বর্গকিলোমিটার (৪৭১ বর্গমাইল)
দৈর্ঘ্য৯০ কিমি (৫৬ মাইল)
প্রস্থ২৫ কিমি (১৫.৫ মাইল)
সর্বোচ্চ উচ্চতা১.৮৩ মিটার (৬ ফুট)
সর্বোচ্চ বিন্দুনাম নেই
প্রশাসন
জনপরিসংখ্যান
বিশেষণভোলাইয়া
জনসংখ্যা১৮,০০,০০০ (২০২০) []
জনঘনত্ব১,১৬২.৩৯ /বর্গ কিমি (৩,০১০.৫৮ /বর্গ মাইল)

ভৌগোলিক অবস্থান

সম্পাদনা
 
জেমস রেনেলের ১৭৭৮ সালের মানচিত্রে দক্ষিণ শাহবাজপুর দ্বীপ যা বর্তমানে ভোলা দ্বীপ

ভোলা দ্বীপ মেঘনা নদীর মোহনায় অবস্থিত। ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে ভোলায় যেতে ফেরী এবং লঞ্চ পরিষেবা রয়েছে।[]

এই দ্বীপটি ১৩০ কিলোমিটার (৮১ মাইল) দীর্ঘ এবং এর জনসংখ্যা ১.৭ মিলিয়ন। ১৭৭৬ সালের মানচিত্র অনুযায়ী ভোলা দ্বীপকে ডিম্বাকৃতির দেখানো হলেও বর্তমানে মেঘনা নদীর ভাঙ্গনের ফলে এর আকৃতি আরো বিস্তৃত হয়েছে। এর সর্বোচ্চ উচ্চতা সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে মাত্র ৬ ফুট।[]

রন্ধনপ্রণালী

সম্পাদনা

ভোলা দ্বীপ মহিষের দইয়ের জন্য পরিচিত, যা বাংলাদেশে অনন্য। এর জন্য যে প্রক্রিয়াটি বহুদিন ধরে চলে আসছে, তা আজও অপরিবর্তনীয়। এই দই ঐতিহ্যবাহী মাটির পাত্রে তৈরি করা হয় এবং এই প্রক্রিয়ায় ১৮ ঘণ্টার মতো সময় লাগে। এই দ্বীপে এই খাদ্যটি জনপ্রিয় এবং বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান, যেমন- বিবাহ, উৎসব এবং অন্যান্য বিশেষ অনুষ্ঠানে পরিবেষণ করা হয়।[]

বিদ্যুৎ ব্যবস্থা

সম্পাদনা

১৯৯৪ সালে শাহবাজপুরে প্রাকৃতিক গ্যাস আবিষ্কার হওয়া সত্ত্বেও এই দ্বীপে বিদ্যুতের দীর্ঘস্থায়ী সমস্যায় ভুগছিল। এজন্য সরকার ২০১৫ সালের আগস্টে এখানে পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করে। রাষ্ট্রায়ত্ব পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ ভোলা দ্বীপ থেকে বোরহানউদ্দিন দ্বীপে হাই ভোল্টেজ ট্রান্সমিশন লাইন টেনে নিয়েছে।[]

মিডিয়া

সম্পাদনা

ভোলায় ১৪ কমিউনিটি রেডিও স্টেশন রয়েছে।[]

প্রাকৃতিক দুর্যোগ

সম্পাদনা

১৯৭০ সালে ভোলা ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়, যা ভোলা দ্বীপের দক্ষিণদিককে একেবারে ধ্বংস করে দেয় এবং ধানের জমির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে। ২০১৭ সালের ১৮মে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়গুলোর একটি তালিকা প্রকাশ করে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা। যেখানে দ্য গ্রেট ভোলা সাইক্লোন নামে পরিচিতি ভোলায় আঘাত হানা সাইক্লোনটিকেই সবচেয়ে শক্তিশালী সাইক্লোন হিসেবে চিহ্নিত করে সংস্থাটি।[]

১৯৯৫-এ, অর্ধ-দ্বিপটিই বন্যার কবলে পড়ে ডুবে যায়, যার কারণে ৫,০০,০০০ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে।[]

২০০৫-এ বন্যার কারণে পাঁচ লক্ষ লোকের ক্ষয়ক্ষতি হয়। একই মাসে এবং বছরে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বন্যায় মারাত্মক ভূমী ক্ষয়ের ফলে অনেক নদী প্লাবিত হয়ে যায়।[১০]

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Bangladesh population and housing census 2011 : zila report Bhola। Bangladesh. Parisaṃkhyāna Byuro,, Bangladesh. Parisaṃkhyāna Byuro. Statistics and Informatics Division.। [Dhaka]। আইএসবিএন 978-984-33-8653-3ওসিএলসি 978250366 
  2. মো. শাখাওয়াত হোসেন (২০১২)। "ভোলা জেলা"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  3. "About Bhola Island"Bhola's Children। ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০১৫ 
  4. Doyle, Alister। "Sonar to help slow Bangladesh erosion in Ganges delta"reuters.com। Reuters। ২ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মে ২০১৫ 
  5. Seraj, Shykh (১৯ মার্চ ২০১৫)। "Buffalo Curd: Heritage of Bhola"The Daily Star। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মে ২০১৫ 
  6. Khan, Sharier (৮ মার্চ ২০১৫)। "Big boost for Bhola"। The Daily Star। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মে ২০১৫ 
  7. Rahman, Jahangir। "Community radio as change agent"thefinancialexpress-db.com। The Financial Express। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মে ২০১৫ 
  8. "ভোলা ঘূর্ণিঝড়: ৫০ বছর আগের সাইক্লোন যেভাবে বদলে দিয়েছিল তৎকালীন পাকিস্তানের রাজনীতি"। বিবিসি বাংলা। ১২ নভেম্বর ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১ সেপ্টেম্বর ২০২২ 
  9. "In Flood-Prone Bangladesh, a Future That Floats", Emily Wax, Washington Post, September 27, 2007
  10. Catie Leary (১৬ অক্টোবর ২০০৯)। "7 places forever changed by eco-disasters: Bhola Island"Mother Nature Network। সংগ্রহের তারিখ ২ জুন ২০১৭