তারেক রহমান
এই নিবন্ধে একাধিক সমস্যা রয়েছে। অনুগ্রহ করে নিবন্ধটির মান উন্নয়ন করুন অথবা আলাপ পাতায় বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করুন।
|
তারেক রহমান (জন্ম: ২০ নভেম্বর ১৯৬৭)[২] হচ্ছেন একজন বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন।[৩] তিনি সাধারণত তারেক জিয়া নামে পরিচিত; যার শেষাংশটি এসেছে তাঁর পিতা বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নাম থেকে।
তারেক রহমান | |
---|---|
জন্ম | [১] | ২০ নভেম্বর ১৯৬৭
জাতীয়তা | |
মাতৃশিক্ষায়তন | |
পেশা | রাজনীতি, ব্যবসা |
উপাধি | ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান |
রাজনৈতিক দল | বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল |
দাম্পত্য সঙ্গী | ডা. জোবাইদা রহমান |
সন্তান | জাইমা রহমান (কন্যা) |
পিতা-মাতা | জিয়াউর রহমান (পিতা) খালেদা জিয়া (মাতা) |
আত্মীয় | আরাফাত রহমান (ভাই) মাহবুব আলী খান (শ্বশুর) তৈয়বা মজুমদার (নানী) খুরশীদ জাহান হক (খালা) সাঈদ এস্কান্দার (মামা) সাইফুল ইসলাম ডিউক (মামাতো ভাই) শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন (খালাতো ভাই) |
ওয়েবসাইট | www |
প্রাথমিক জীবন
সম্পাদনাতারেক রহমানের জন্ম ১৯৬৭ সালের ২০ নভেম্বর। তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দম্পতির প্রথম সন্তান। তারেক শিক্ষা জীবনের শুরুতে বিএএফ শাহীন কলেজ ঢাকাতে পড়াশোনা শুরু করেন এরপর সেন্ট জোসেফ কলেজ এবং ঢাকা রেসিডেনসিয়াল কলেজে পড়াশোনা করেন। তিনি ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ হতে মাধ্যমিক ও আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ হতে উচ্চ মাধ্যমিক[৪] শেষ করে ১৯৮৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমে আইন বিভাগে ও পরে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে ভর্তি হন। পরবর্তীকালে তিনি বস্ত্রশিল্প ও নৌ-যোগাযোগ খাতে ব্যবসা শুরু করেন।[৫]
রাজনীতি
সম্পাদনাপিতা জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের বগুড়া কমিটির সদস্য হিসেবে যোগদান করে তারেক রহমানের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে সংগঠনে যোগ দেয়ার পূর্বেই তারেক রাজনীতিতে অত্যন্ত সক্রিয় ছিলেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তারেক তার মা খালেদা জিয়ার সহচর হিসেবে সারা দেশের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন। ২০০১ সালের নির্বাচনেও তারেক রহমান বেগম জিয়ার প্রচারণা কার্যক্রমের পাশাপাশি পৃথক পরিকল্পনায় দেশব্যাপী নির্বাচনী প্রচারণা চালান। মূলত ২০০১ সালের নির্বাচনী প্রচারণায় তার অংশগ্রহণের মাধ্যমে রাজনীতিতে তারেক রহমানের সক্রিয় আগমন ঘটে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
২০০২ সালের পর গণ-সংযোগ
সম্পাদনা২০০২ সালে তারেক রহমান দলের স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিএনপির একজন জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে দায়িত্মপ্রাপ্ত হন। দলের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে নিয়োগ লাভের পরপরই তারেক রহমান দেশব্যাপী দলের মাঠপর্যায়ের নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের সাথে ব্যাপক গণসংযোগ শুরু করেন।[৬] মূল সংগঠন সহ সহযোগী সংগঠন যেমন জাতীয়তাবাদী যুব দল, জাতীয়তাবাদী ছাত্র দল, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল ইত্যাদি আয়োজিত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে তারেক রহমান কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন ও মাঠপর্যায়ের নেতৃবৃন্দের বক্তব্য ও মতামত গ্রহণ করেন। মূলত এই জনসংযোগ কার্যক্রমের ফলে দলের নেতাকর্মীদের তরুণ অংশটির মাঝে তারেক রহমান শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধানমন্ত্রীর সন্তানের পরিচিত থেকে বেরিয়ে এসে দলের একজন দক্ষ সংগঠক ও সক্রিয় নেতা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।[৭]
অভিযোগ ও বিতর্ক
সম্পাদনারাজনৈতিক দলের উত্থাপিত অভিযোগ
সম্পাদনা২০০২ সালে ৩৫ বছর বয়সি তারেক রহমানকে দলের সর্বোচ্চ পর্যায়ের একজন নেতা হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার ফলে কোনো কোনো রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং সংসদের তৎকালীন বিরোধী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এই সিদ্ধান্তকে স্বজনপ্রীতি বলে চিহ্নিত করে এই সিদ্ধান্তের নিন্দা করেন।[৮] আওয়ামী লীগ বিভিন্ন সময় তারেকের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারসহ দূর্নীতির অভিযোগ আনে।[৯] বিশেষ করে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম জিয়া সহ তারেক রহমানের কার্যালয় ঢাকার বনানীস্থ হাওয়া ভবনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন অভিযোগ প্রচারিত হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অভিযোগ ছিল যে, তারেক রহমানের তত্ত্বাবধানে হাওয়া ভবন সরকারের অদৃশ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করছে এবং তার বিরুদ্ধে বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতিসহ আরো অনেক অভিযোগ আনা হয়।[১০][১১] তৎকালীন বিরোধীদল আওয়ামীলীগের সমাবেশে ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় তার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে উচ্চ আদালতে মামলা বিচারাধীন রয়েছে।[১২] এছাড়া তার বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগও রয়েছে এবং এই মামলায় এফবিআই এর কর্মকর্তা ডেবরা লাপ্রেভেটি বাংলাদেশে এসে সাক্ষ্য দেন।[১৩]
উইকিলিক্সের তথ্য
সম্পাদনা২০০৮ সালের ৩ নভেম্বর সাড়া জাগানো ওয়েবসাইট উইকিলিক্স বাংলাদেশে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের গোপন তারবার্তা ফাঁস করে। বার্তায় বলা হয় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস বিশ্বাস করে, “গুরুতর রাজনৈতিক দুর্নীতির জন্য দোষী, মার্কিন জাতীয় স্বার্থের উপর একটি বিরূপ প্রভাব ফেলছে।”[১৪][১৫]
দুর্নীতির অভিযোগ
সম্পাদনামানি লন্ডারিং
সম্পাদনামার্কিন ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-এফবিআই তারেক রহমান এবং তার ঘনিষ্ট বন্ধু ও ব্যবসায়িক সঙ্গী গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে ঘুষ ও মানি লন্ডারিং নিয়ে তদন্ত করে এবং এফবিআইয়ের সাবেক বিশেষ প্রতিনিধি বাংলাদেশের আদালতে এসে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রদান করে। [১৬] এফবিআইয়ের তদন্তে উঠে এসেছে যে, তারেক ও মামুন তাদের সিঙ্গাপুরের একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে নির্মান কনস্ট্রাকশন লিমিটেড এর পরিচালক এবং চীনের হারবিন ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সট্রাকশন এর এদেশীয় এজেন্ট খাদিজা ইসলামের কাছ থেকে সাড়ে ৭ লাখ মার্কিন ডলার ঘুষ নিয়েছিলেন।[১৭] হারবিন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির লোকাল এজেন্ট হিসেবে টঙ্গীতে ৮০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মানের কাজ পাওয়ার জন্য তারেক ও মামুনকে ওই টাকা দিয়েছিল ঘুষ হিসেবে। এফবিআইয়ের এজেন্ট ডেব্রা লাপ্রিভেট গ্রিফিথ এই বিষয়ে তারেক ও মামুনের দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত করেছিলেন। তিনি বাংলাদেশের আদালতের সামনে সাক্ষ্য দেন যে, ব্যবসায়ী খাদিজা ইসলাম সিঙ্গাপুরে মামুনের সিটি ব্যাংকে (তারেকের বন্ধু মামুনের সিঙ্গাপুরের সিটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নাম্বার: ১৫৮০৫২-০১৬-০০৮) ওই টাকা জমা দিয়েছিলেন।[১৬] ওই একই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে তারেক রহমানের নামে সাপ্লিমেন্টারি গোল্ড ভিসা কার্ড (যার নাম্বার: ৪৫৬৮-৮১৭০-১০০৬-৪১২২) ইস্যু করা হয়।[১৮] সিঙ্গাপুরের সিটি ব্যাংকের কাছ থেকে সাপ্লিমেন্টারি গোল্ড ভিসা কার্ড নিতে তারেক রহমান তার পাসপোর্টের একটি ফটোকপি জমা দিয়েছিলেন ( তারেক রহমানের পাসপোর্ট নাম্বার: Y ০০৮৫৪৮৩) যেখানে তার পিতার নামের জায়গাতে লেখা ছিল জিয়াউর রহমান এবং মাতার নাম ছিল বেগম খালেদা জিয়া। তারেক রহমান এই কার্ড বিভিন্ন দেশে যেমন; গ্রিস, জার্মানী, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রমোদ ভ্রমণের জন্য ব্যবহার করেছিল এমন তথ্যই উঠে এসেছে এফবিআইয়ের তদন্তে। [১৯]
২১ জুলাই ২০১৬ সালে বাংলাদেশের উচ্চ আদালত তারেক রহমানকে সাত বছরের জেল এবং ২০ কোটি টাকা জরিমানা করেছে মানি লন্ডারিং এর জন্য।[২০] রায়ের পর্যবেক্ষণে উচ্চ আদালত মন্তব্য করে,
"দুর্নীতি চর্চা ও রাজনৈতিক প্রভাব ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে মানি লন্ডারিংয়ের মতো আর্থিক অপরাধ করার সুযোগ করে দিচ্ছে। দেশের কল্যাণ ও উন্নয়নের জন্য রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় এই ধরনের অপরাধ বন্ধ করার এখন সময় এসেছে।"[২১][২০]
অবৈধ সম্পদ অর্জন
সম্পাদনাতারেক রহমান ও তার স্ত্রীর ঘোষিত আয়ের বাইরেও ৪ কোটি ৮০ লাখ টাকারও বেশি পরিমাণ অর্থের অবৈধ সম্পদ রয়েছে এমন অভিযোগে ২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তারেক, তার স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও জুবাইদা রহমানের মা সৈয়দা ইকবাল বানুর বিরুদ্ধে মামলাটি করেছিলো দুদক।[২২][২৩][২৪][২৫]
২০০৯ সালের ৩১ মার্চ তদন্ত কর্মকর্তা তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দায়ের করেন।[২৫] তবে পরে জুবাইদার মা সৈয়দা ইকবাল বানুর বিরুদ্ধে বিচার কার্যক্রম বাতিল করা হয়।[২৪] আদালত মামলার অভিযোগকারীসহ বাদীপক্ষের ৪২ জন সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করেন।[২২][২৩][২৫]
মামলায় তারেক রহমানের নয় বছর কারাদণ্ড এবং তিন কোটি টাকা জরিমানা এবং তার স্ত্রী জোবাইদা রহমানের তিন বছরের কারাদণ্ড ও ৩৫ লাখ টাকা জরিমানার রায় দিয়েছে ঢাকার একটি আদালত।[২২][২৪][২৬] একই সঙ্গে তারেকের প্রায় পৌনে তিন কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।[২৩][২৫]
তত্ত্বাবধায়ক সরকার কর্তৃক গ্রেপ্তার
সম্পাদনারাজনৈতিক দলগুলোর ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের কারণে দেশে বিশৃঙ্খল অবস্থা সৃষ্টি হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ১১ জানুয়ারি, ২০০৭ তারিখে নিয়মতান্ত্রিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে অপসারণ করে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হয় যার প্রধান ছিলেন ফখরুদ্দীন আহমদ এবং সেনাপ্রধান ছিলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল মঈন উদ্দিন আহমেদ। ১২ জানুয়ারি উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হওয়ার পর সরকারের পক্ষ থেকে দেশের শীর্ষ রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ মামলা দায়ের করা হয়।[২৭] ৭ মার্চ, ২০০৭ তারিখে একটি দুর্নীতি মামলার আসামি হিসেবে তারেক রহমানকে তার ঢাকা ক্যান্টনমেন্টস্থ মইনুল রোডের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে আরও ১৩টি দুর্নীতির মামলা দায়ের করা হয় ও তাকে বিচারের সম্মুখীন করা হয়।[২৮]
আটকাবস্থায় শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ
সম্পাদনাগ্রেপ্তারের কিছুদিন পর তারেককে আদালতে হাজির করা হলে তার শারীরিক অবস্থার অবনতির জন্য তার আইনজীবীরা আদালতে অভিযোগ করেন যে জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে তারেক রহমানের উপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। আদালতের নির্দেশে চিকিৎসকদের একটি দল পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আদালতকে জানায় যে তারেক রহমানের উপর শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ যুক্তিযুক্ত। এই পর্যায়ে আদালত রিমান্ডে নেয়ার আদেশ শিথিল করে তা কমিয়ে ১ দিন ধার্য করেন ও জিজ্ঞাসাবাদকারীদের সাবধানতা অবলম্বনের আদেশ দেন। এরপর তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের পরিবর্তে ঢাকার শাহবাগস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।[২৯] ২৫ আগস্ট, ২০০৭ তারিখে খবর ছড়িয়ে পড়ে যে তারেক রহমান তার হাসপাতাল কক্ষে পা পিছলে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন। এতে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ দেখা দেয়, বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।[৩০]
মুক্তিলাভ
সম্পাদনা২০০৮ এর আগস্টে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলাগুলো আদালতে গতি লাভ করে। প্রায় আঠারো মাস কারান্তরীণ থাকার পর ৩ সেপ্টেম্বর, ২০০৮ তারিখে সবগুলো মামলায় তারেক রহমানের জামিন লাভ করেন ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুক্তি লাভ করেন।[৩১]
চিকিৎসা ও বিদেশে অবস্থান
সম্পাদনা১১ সেপ্টেম্বর, ২০০৮ তারিখে বিশেষ কারাগার থেকে বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পাওয়ার পর তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পুত্র তারেক রহমানকে দেখতে যান। সেদিন রাতেই তারেক রহমান উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের উদ্দেশ্যে রওনা হন। বর্তমানে লন্ডনের সাউথ ওয়েলিংটন হসপিটাল ও লন্ডন হসপিটালে তার চিকিৎসা চলছে এবং চিকিৎসার সুবিধার্থে তিনি সেন্ট্রাল লন্ডনের এডমন্টনে সপরিবারে বসবাস করছেন।
তারেক বিদেশে অবস্থান করায় তার বিরুদ্ধে করা মামলাগুলো বর্তমানে অমীমাংসিত অবস্থায় রয়েছে। সিঙ্গাপুরে অর্থপাচার মামলায় দুর্নীতি দমন কমিশনের একজন কর্মকর্তার করা আবেদনের প্রেক্ষিতে, ২০১৩ সালের মে মাসে ঢাকার একটি আদালত তারেক রহমানকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতারের পরোয়ানা জারি করে। এর প্রতিবাদে বিএনপি দেশের বিভিন্ন এলাকায় হরতালসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে।[৩২][৩৩]
বিএনপির পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিল
সম্পাদনা৮ ডিসেম্বর, ২০০৯ তারিখে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিএনপির পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিলে তারেক রহমান সংগঠনের জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।[৩৪] উক্ত কাউন্সিলে তারেক রহমানের একটি ধারণকৃত বক্তব্য উপস্থিত জনসমাবেশের উদ্দেশ্যে প্রচার করা হয়। বক্তব্যটিতে তারেক রহমান জানুয়ারি ২০০৭-এ ক্ষমতায় আসা অগণতান্ত্রিক সরকারের হাতে তার অন্যায় গ্রেপ্তার ও বন্দি অবস্থায় নির্যাতনের বর্ণনা দেন। তিনি নিশ্চিত করেন যে আপাতদৃষ্টিতে মনে হওয়া বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থার আড়ালে তাকে নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। তারেক রহমান তার শারীরিক অবস্থার বর্ণনা দেন ও জানান তার চিকিৎসা সম্পন্ন হতে আরও সময় প্রয়োজন।[৩৫]
উক্ত কাউন্সিলে আরও বক্তব্য রেখেছেন ব্রিটিশ সংসদ সদস্য জর্জ গ্যালোওয়ে, আওয়ামী লীগের প্রচারমাধ্যম বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল প্রমুখ।[৩৬]
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "The Official Site of Tarique Rahman"। www.tariquerahman.net। ৩ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ নভেম্বর ২০১৩।
- ↑ "ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান"। bnpbd.org বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল। Archived from the original on ২০২৪-০৯-১৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-৩০।
- ↑ "বিএনপি নেতা তারেক রহমান 'জনগণের ভোটে জবাবদিহিমূলক সরকার' প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানালেন"। ভয়েস অফ আমেরিকা। ২১ আগস্ট ২০২৪। ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪।
- ↑ "Personal life"। Tarique Rahman। ২০১৬-০১-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১১-২৮।
- ↑ "লন্ডন থেকে সৌদি যাচ্ছেন তারেক রহমান"। দৈনিক ইত্তেফাক। ২০১৩-০৩-৩১। ২০১৬-০৩-১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ BNP grassroots level workers confce -Partymen urged to face conspirators ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৭ জুন ২০১১ তারিখে, প্রকাশিত হয়েছে ২৮শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৫।
- ↑ "Bangladesh holding 'sham' election: Exiled opposition leader Tarique Rahman"। আল জাজিরা (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৪-০১-০৪। ২০২৪-০৯-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-১৪।
- ↑ Tarique Rahman - flawed heir apparent? ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩ জানুয়ারি ২০০৯ তারিখে, বিবিসি নিউজ, প্রকাশিত হয়েছে ৮ই মার্চ, ২০০৭।
- ↑ "No criminalisation of politics if voted back to power Hasina tells rally"। archive.thedailystar.net (ইংরেজি ভাষায়)। ২৩ এপ্রিল ২০০৪।
- ↑ "Hawa Bhaban-Sudha Bhaban face-off"। ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)।
- ↑ "AL hems in Hawa Bhaban today"। archive.thedailystar.net (ইংরেজি ভাষায়)। ২১ এপ্রিল ২০০৪। ১ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪।
- ↑ ২১শে অগাস্ট মামলায় তারেক অভিযুক্ত ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৭ এপ্রিল ২০১২ তারিখে, বিবিসি বাংলা, প্রকাশিত হয়েছে ১৪ই মার্চ, ২০১২।
- ↑ তারেক মামলায় এফবিআইয়ের সাক্ষ্য ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৯ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে, বিবিসি বাংলা, প্রকাশিত হয়েছে ১৫ই নভেম্বর, ২০১১।
- ↑ "CRS: Bangladesh: Political Turmoil and Transition, May 30, 2008 - WikiLeaks"। wikileaks.org। ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ৩০, ২০১৩।
- ↑ Protecting Tarique Khaleda's biggest failure ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে, বিডিনিউজ২৪.কম, প্রকাশিত হয়েছে ৫ই সেপ্টেম্বর, ২০১১।
- ↑ ক খ "তারেকের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে গ্রেফতারি পরোয়ানা পাঠাবে দুদক"। যুগান্তর। Archived from the original on ২০২৩-০৭-২১। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-২১।
- ↑ "তারেক মামলায় এফবিআইয়ের সাক্ষ্য"। বিবিসি বাংলা। ২০১১-১১-১৫। ২০২৩-০৭-২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-২১।
- ↑ "খালেদা জিয়া, তারেক ও কোকোর দুর্নীতির তথ্য"। সমকাল। ২০২৩-০৭-২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-২১।
- ↑ "তারেক রহমান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি"। দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড। ২০২২-১১-০১। ২০২৩-০৭-২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-২১।
- ↑ ক খ প্রতিবেদক, নিজস্ব (২০১৬-০৭-২২)। "তারেকের সাত বছর জেল"। দৈনিক প্রথম আলো। ২০২৪-০৯-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-১৬।
- ↑ "তারেক রহমান"। প্রথম আলো। ২০২৪-০৯-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-২১।
- ↑ ক খ গ "দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় তারেক রহমান ও জুবাইদা রহমানের সাজা"। বিবিসি বাংলা। ২০২৩-০৮-০২। ২০২৪-০৯-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-১৬।
- ↑ ক খ গ প্রতিবেদক, নিজস্ব (২০২৩-০৮-০২)। "তারেকের ৯ বছর কারাদণ্ড, জুবাইদার ৩ বছর"। দৈনিক প্রথম আলো। ২০২৩-০৮-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-১৬।
- ↑ ক খ গ "তারেকের ৯ বছরের কারাদণ্ড, জোবায়দার ৩ বছর"। The Business Standard (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-০৮-০২। ২০২৩-০৮-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-১৬।
- ↑ ক খ গ ঘ ডেস্ক, ইত্তেফাক অনলাইন (২ আগস্ট ২০২৩)। "তারেক রহমানের ৯ বছরের কারাদণ্ড, জোবায়দার ৩"। The Daily Ittefaq। ৭ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ সেপ্টে ২০২৪।
- ↑ দিগন্ত, Daily Nayadiganta-নয়া। "তারেকের ৯ ও জুবাইদার ৩ বছরের কারাদণ্ড"। Daily Nayadiganta (নয়া দিগন্ত) : Most Popular Bangla Newspaper। ২০২৪-০৮-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-১৬।
- ↑ "E-Bangladesh"। ১৪ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ ডিসেম্বর ২০০৯।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৬ ডিসেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ ডিসেম্বর ২০০৯।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৮ মার্চ ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ ডিসেম্বর ২০০৯।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৯ জানুয়ারি ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ ডিসেম্বর ২০০৯।
- ↑ ""সংবাদমাধ্যমের লুকানোর প্রবণতা", ফরহাদ মযহার"। ৪ আগস্ট ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ ডিসেম্বর ২০০৯।
- ↑ তারেক রহমানের দেশে ফেরা কতটা কঠিন? ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৮ জুন ২০১৩ তারিখে, বিবিসি বাংলা নিউস, প্রকাশিত হয়েছে ২৭শে মে, ২০১৩।
- ↑ Bangladeshi court orders arrest of ex-PM’s fugitive son for graft, Gulfnews, প্রকাশিত হয়েছে ২৬শে মে, ২০১৩।
- ↑ Tarique made senior vice chair ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৪ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে, bdnews24.com, প্রকাশিত হয়েছে ৮ই ডিসেম্বর, ২০০৯।
- ↑ BNP council gets underway ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২ মার্চ ২০১৪ তারিখে, bdnews24.com, প্রকাশিত হয়েছে ৮ই ডিসেম্বর, ২০০৯।
- ↑ বিএনপি’র ৫ম সম্মেলন : জাতীয়তাবাদীদের মিলনমেলা, Focus Bangla ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০১১-০৭-১১ তারিখে
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনাউইকিমিডিয়া কমন্সে তারেক রহমান সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।
রাজনৈতিক দপ্তর | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা |
জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ২০০১-২০০৯ |
উত্তরসূরী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর |
পূর্বসূরী (পদের সৃষ্টি) |
জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ২০০৯ |
উত্তরসূরী পদে আসীন |