ফখরুদ্দীন আহমদ

বাংলাদেশী অর্থনীতিবিদ ও সাবেক প্রধান উপদেষ্টা

ফখরুদ্দীন আহমেদ (জন্ম: ১ মে ১৯৪০) হলেন একজন বাংলাদেশী অর্থনীতিবিদ, সাবেক সচিব এবং বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর[] অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির মাঝে ২০০৭ সালের ১২ জানুয়ারি তিনি বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে সংসদ নির্বাচনের আগ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।[]

ফখরুদ্দীন আহমেদ
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক প্রধান উপদেষ্টা (প্রধানমন্ত্রীর সমতুল্য)
কাজের মেয়াদ
১২ জানুয়ারি ২০০৭ – ৬ জানুয়ারি ২০০৯
রাষ্ট্রপতিইয়াজউদ্দিন আহমদ
পূর্বসূরীইয়াজউদ্দিন আহমদ
উত্তরসূরীশেখ হাসিনা
(প্রধানমন্ত্রী হিসাবে)
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম১ মে, ১৯৪০ (৮৪ বছর)
টংগিবাড়ী, মুন্সীগঞ্জ, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমানে বাংলাদেশ)
জাতীয়তাবাংলাদেশী

প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা

সম্পাদনা

ড. ফখরুদ্দীন আহমেদ ১৯৪০ সালের ১লা মে বাংলাদেশের মুন্সীগঞ্জ জেলার টংগিবাড়ী উপজেলার ধীপুর ইউনিয়নের রব নগরকান্দি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।[] তার পিতার নাম ড. মহিউদ্দিন আহমেদ।

ফখরুদ্দীন আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি বিষয়ে ১৯৬০ এবং ১৯৬১ সালে যথাক্রমে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর উভয়টিতেই প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মাসাচুয়েটসের উইলিয়ামস কলেজ থেকে উন্নয়ন অর্থনীতিতে মাস্টার্স এবং প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে ডক্টরেট সম্পন্ন করেন।[]

কর্মজীবন

সম্পাদনা

শিক্ষাজীবন সম্পন্নের পর তিনি কিছুকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। এরপর তিনি তৎকালীন পাকিস্তানের কর্মকমিশনে যোগ দেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর তিনি ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ কর্মকমিশনে চাকরি করেন। সে বছরই তিনি বিশ্বব্যাংকে যোগদান করেন এবং সময়ের ব্যাবধানে বিভিন্ন পদ পার করে ব্যাংকের উপরাষ্ট্রপতির পদে অধিষ্ঠিত হন। ২০০১ সালের ১৯শে নভেম্বর তিনি বিশ্বব্যাংকের তার পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (বাংলাদেশ ব্যাংক) গভর্নর হিসেবে যোগদান করেন। ৩০শে এপ্রিল ২০০৫ সালে গভর্নর হিসেবে তার মেয়াদ অতিক্রমের পর তিনি পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পি.কে.এস.এফ) কর্মরত ছিলেন।[]

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা

সম্পাদনা

রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বারা সৃষ্ট বিশৃঙ্খল অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৭ সালের ১২ই জানুয়ারি তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন।[] একই সাথে সেনা সমর্থিত একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হয় যার প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ফখরুদ্দীন আহমেদকে নিয়োগ করা হয়।[] ফখরুদ্দিন আহমেদ ক্ষমতা গ্রহণের মধ্য দিয়ে ইতঃপূর্বে রাষ্ট্রপতিকে প্রধান উপদেষ্টা করে গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলুপ্ত হয়। ফখরুদ্দিন আহমেদ দায়িত্ব গ্রহণের পর তৎকালীন জাতীয় জীবনে রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য বেশ প্রশংসিত হন। সে সময় বিশ্বের সর্বাধিক দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশে ফখরুদ্দীন আহমেদ দুর্নীতিবিরোধী নানান কার্যক্রম পরিচালনা করেন। সে সময় দেশের প্রায় ১৬০ জন রাজনীতিবিদ, সরকারি কর্মকর্তা, নিরাপত্তা কর্মকর্তার নামে অর্থ আত্মসাৎ, ও অন্যান্য দুর্নীতির অভিযোগ এনে মামলা করা হয়।[] এসময় দেশের ভূতপূর্ব দুই প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এবং শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০০৮ সালের ২৯শে ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং এতে আওয়ামী লীগ দুই তৃতীয়াংশ আসনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করলে ফখরুদ্দিন আহমেদ গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলুপ্ত হয়। এরপর থেকে ফখরুদ্দিন আহমেদ জনসম্মুখের আড়ালে রয়েছেন।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Bangladesh Bank"www.bb.org.bd। ২০২৩-০৯-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-০৭ 
  2. https://www.facebook.com/rtvonline। "আলোচিত ১/১১ আজ"RTV Online (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-০৭ 
  3. "ধীপুর ইউনিয়ন"বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ১ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০১৯ 
  4. "ITTEFAQ.COM"nation.ittefaq.com। ২০১২-০১-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-১৪ 
  5. "The Daily Star Web Edition Vol. 5 Num 933"archive.thedailystar.net। ২০১৬-০৩-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-১৪ 
  6. "১/১১: পর্দার আড়ালে কী ঘটেছিল?"বিবিসি বাংলা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-০৭ 
  7. "Bangladesh 'will lift emergency'" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০০৮-১২-১০। ২০২০-০৫-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-১৪ 
  8. ""Corruption has emerged as a great threat.""Time (ইংরেজি ভাষায়)। ২০০৭-০৩-২২। আইএসএসএন 0040-781X। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-১৪ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা