ট্যানটালাম

(ট্যান্টালাম থেকে পুনর্নির্দেশিত)
৭৩ হ্যাফনিয়ামট্যানটালামটাংস্টেন
Nb

Ta

Db
সাধারণ বৈশিষ্ট্য
নাম, প্রতীক, পারমাণবিক সংখ্যা ট্যানটালাম, Ta, ৭৩
রাসায়নিক শ্রেণী অবস্থান্তর ধাতু
গ্রুপ, পর্যায়, ব্লক , , ডি
ভৌত রূপ ধূসর নীল
পারমাণবিক ভর ১৮০.৯৪৭৮৮(২) g/mol
ইলেক্ট্রন বিন্যাস [Xe] ৪এফ১৪ ৫ডি ৬এস
প্রতি শক্তিস্তরে ইলেকট্রন সংখ্যা ২, ৮, ১৮, ৩২, ১১, ২
ভৌত বৈশিষ্ট্য
দশা কঠিন
ঘনত্ব (সাধারণ তাপ ও চাপে) ১৬.৬৯ g/cm³
গলনাংকে তরল ঘনত্ব ১৫ গ্রাম/সেমি³
গলনাঙ্ক ৩২৯০ K
(৩০১৭ °C, ৫৪৬৩ °F)
স্ফুটনাঙ্ক ৫৭৩১ K
(৫৪৫৮ °C, ৯৮৫৬ °F)
গলনের লীন তাপ ৩৬.৫৭ kJ/mol
বাষ্পীভবনের লীন তাপ ৭৩২.৮ kJ/mol
তাপধারণ ক্ষমতা (২৫ °সে) ২৫.৩৬ জুল/(মোল·কে)
বাষ্প চাপ
P/প্যাসকেল ১০ ১০০ ১ কে ১০ কে ১০০ কে
T/কেলভিন তাপমাত্রায় ৩২৯৭ ৩৫৯৭ ৩৯৫৭ ৪৩৯৫ ৪৯৩৯ ৫৬৩৪
পারমাণবিক বৈশিষ্ট্য
কেলাসীয় গঠন ঘনক কেন্দ্রিক
জারণ অবস্থা 5
(হালকা আম্লিক অক্সাইড)
তড়িৎ ঋণাত্মকতা ১.৫ (পাউলিং স্কেল)
Ionization energies 1st: ৭৬১ kJ/mol
2nd: ১৫০০ kJ/mol
পারমাণবিক ব্যাসার্ধ ১৪৫ pm
Atomic radius (calc.) ২০০ pm
Covalent radius ১৩৮ pm
অন্যান্য বৈশিষ্ট্য
Magnetic ordering কোন তথ্য নেই
Electrical resistivity (20 °C) ১৩১ nΩ·m
তাপ পরিবাহিতা (300 K) ৫৭.৫ W/(m·K)
Thermal expansion (25 °C) ৬.৩ µm/(m·K)
Speed of sound (thin rod) (20 °C) ৩৪০০ m/s
ইয়ং এর গুণাঙ্ক ১৮৬ GPa
Shear modulus ৬৯ GPa
Bulk modulus ২০০ GPa
Poisson ratio ০.৩৪
Mohs hardness ৬.৫
Vickers hardness ৮৭৩ MPa
Brinell hardness ৮০০ MPa
সি এ এস নিবন্ধন সংখ্যা ৭৪৪০-২৫-৭
কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সমস্থানিক
প্রধান নিবন্ধ: tantalumের সমস্থানিক
iso NA half-life DM DE (MeV) DP
177Ta syn 56.56 h ε 1.166 177Hf
178Ta syn 2.36 h ε 1.910 178Hf
179Ta syn 1.82 a ε 0.110 179Hf
180Ta syn 8.125 h ε 0.854 180Hf
180Ta syn 8.125 h β- 0.708 180W
180mTa 0.012% >1.2×1015 y ε 0.929 180Hf
β- 0.783 180W
IT 0.075 180Ta
181Ta 99.988% Ta 108টি নিউট্রন নিয়ে স্থিত হয়
182Ta syn 114.43 d β- 1.814 182W
183Ta syn 5.1 d β- 1.070 183W
References

ট্যানটালাম হল একটি মৌলিক পদার্থ, এর প্রতীক Ta এবং পারমাণবিক সংখ্যা ৭৩। আগে এর নাম ছিল ট্যানটালিয়াম , গ্রীক পৌরাণিক কাহিনীর খলনায়ক ট্যানটালাসের নামে এখন এর নামকরণ করা হয়েছে।[১] ট্যানটালাম একটি বিরল, শক্ত, ধূসর নীল, চকচকে) অবস্থান্তর ধাতু, এটি ভীষণভাবে ক্ষয়-প্রতিরোধী। এটি উচ্চতাপ সহনশীল ধাতু দলের একটি অংশ, যেগুলি সঙ্কর ধাতু তৈরিতে ক্ষুদ্র উপাদান হিসাবে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। ট্যানটালাম রাসায়নিকভাবে নিষ্ক্রিয় হওয়ায়, পরীক্ষাগারে এটি একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় মূল্যবান পদার্থ এবং এটিকে প্লাটিনামের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ট্যানটালাম ক্যাপাসিটার হিসেবে এটি প্রধানত ব্যবহার হয় বৈদ্যুতিন সরঞ্জামগুলিতে, যার মধ্যে আছে মোবাইল ফোন, ডিভিডি প্লেয়ার, ভিডিও গেইম কনসোল এবং ব্যক্তিগত কম্পিউটার। রাসায়নিকভাবে অনুরূপ নাইওবিয়ামের সাথে, ট্যানটালামকে সর্বদা ট্যানটালাইট, কলম্বাইট এবং কোল্টান খনিজ গ্রুপে (পৃথক খনিজ প্রজাতি হিসাবে স্বীকৃত না হলেও কলম্বাইট এবং ট্যানটালাইটের মিশ্রণ) দেখা যায়।[২] ট্যানটালামকে একটি প্রয়োজনীয় অথচ দুর্লভ উপাদান হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

ইতিহাস সম্পাদনা

১৮০২ সালে ট্যানটালাম আবিষ্কার করেছিলেন সুইডেনের অ্যান্ডার্স একেবার্গ, সুইডেন এবং ফিনল্যান্ডের দুটি খনিজ নমুনায় তিনি এর সন্ধান পান।[৩][৪] এর এক বছর আগে, চার্লস হ্যাচেট কলম্বিয়াম (এখন নাইওবিয়াম) আবিষ্কার করেছিলেন,[৫] এবং ১৮০৯ সালে, ইংরেজ রসায়নবিদ উইলিয়াম হাইড ওল্লাস্টন, এর অক্সাইড কলাম্বাইট, যার ঘনত্ব ৫.৯১৮ গ্রাম/সেমি, তার সাথে তুলনা করেছিলেন ট্যানটালামের (ট্যানটালাইট) যার ঘনত্ব ৭.৯৩৫ গ্রাম/সেমি। তিনি উপসংহারে পৌঁছেছিলেন যে দুটি অক্সাইডের ঘনত্বের মাপে পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও তারা অভিন্ন এবং তিনি এই ট্যানটালাম নামটি রেখেছিলেন।[৬] ফ্রেডরিখ ভোলার এই ফলাফলগুলি নিশ্চিত করার পরে, মনে করা হয়েছিল কলম্বিয়াম এবং ট্যানটালাম একই মৌল। ১৮৪৫ সালে জার্মান রসায়নবিদ হেনরিচ রোজ এই সিদ্ধান্তটির বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন, তিনি বলেছিলেন যে ট্যানটালাইট নমুনায় দুটি অতিরিক্ত মৌল রয়েছে, এবং তিনি তাদের নাম ট্যানটালাসের সন্তানদের নামে রেখেছিলেন: নাইওবিয়াম (অশ্রুর দেবী নাইওব থেকে), এবং পেলোপিয়াম ( পেলপস থেকে)।[৭][৮] এই "পেলোপিয়াম" মৌলটি পরে ট্যানটালাম এবং নাইওবিয়ামের মিশ্রণ হিসাবে চিহ্নিত হয়েছিল, এবং দেখা গিয়েছিল যে, নাইওবিয়াম যে কলম্বিয়ামের সাথে সমান, তা ইতিমধ্যেই ১৮০১ সালে হ্যাচেট আবিষ্কার করেছিলেন।

১৮৬৪ সালে, খ্রিস্টান উইলহেলম ব্লমস্ট্র্যান্ড এবং হেনরি এটিনে সান্তে-ক্লেয়ার ডিভিল, পাশাপাশি লুই জে ট্রুস্ট, ট্যানটালাম এবং নাইওবিয়ামের মধ্যে পার্থক্যগুলি দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রদর্শন করেছিলেন।[৯] এদের মধ্যে লুই জে ট্রুস্ট ১৮৬৫ সালে, ঐ মৌলগুলির কয়েকটি যৌগের গবেষণামূলক সূত্র নির্ধারণ করেছিলেন।[৯][১০] এগুলির আরও নিশ্চিতকরণ এসেছিল সুইস রসায়নবিদ জিন চার্লস গ্যালিসার্ড ডি মেরিনাক এর কাছ থেকে,[১১] ১৮৬৬ সালে, তাঁরা প্রমাণ করেছিলেন যে কেবল দুটি উপাদান রয়েছে। এই আবিষ্কারগুলির পরেও, ১৮৭১ সাল অবধি, বিজ্ঞানীরা তথাকথিত ইলমেনিয়াম সম্পর্কে নিবন্ধ প্রকাশ করে গেছেন।[১২] ১৮৬৮ সালে ডি ​​মেরিনাক প্রথম ট্যান্টালামের ধাতব রূপের উৎপাদন করেছিলেন, তিনি ট্যানট্যালাম ক্লোরাইডকে হাইড্রোজেনের মধ্যে গরম করে বিজারণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সফল হয়েছিলেন।[১৩] প্রথমদিকে কেবল অপরিশুদ্ধ ট্যানটালাম উৎপাদন করা গিয়েছিল, এবং ১৯০৩ সালে প্রথম শার্লটেনবার্গের ওয়ার্নার ভন বোল্টন তুলনামূলকভাবে খাঁটি এই নমনীয় ধাতুটি উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। প্রথমদিকে আলোর বাল্বে ধাতব ট্যানটালাম দিয়ে তৈরি তার ফিলামেন্টের জন্য ব্যবহার করা হত, এরপর টাংস্টেন এর জায়গা নেয়।[১৪]

ট্যানটালাম নামটি পৌরাণিক ট্যানটালাসের নাম থেকে এসেছিল, যিনি ছিলেন গ্রিক পুরাণে নাইওবের জনক। এই গল্পে, মৃত্যুর পরে, দোষী সাব্যস্ত করে তাঁকে শাস্তি দেওয়া হয়েছিল হাঁটু পর্যন্ত গভীর জলে দাঁড়িয়ে থাকার। তাঁর মাথার উপরে ছিল নিখুঁত সুন্দর ফল। তিনি জল খেতে গেলে জলতল নিচে নেমে তাঁর ছোঁয়ার বাইরে চলে যেত এবং ফল খেতে গেলে শাখাসহ ফল ওপরে উঠে যেত। উভয় ঘটনাই তাঁকে বিশ্বাস জাগিয়ে প্রতারণা করেছিল। [১৫] অ্যান্ডার্স একবার্গ লিখেছিলেন "এই ধাতুটিকে আমি ট্যানটালাম বলি ... আংশিকভাবে তার অক্ষমতার ইঙ্গিতের জন্য।"[১৬]

 
ট্যানটালাম

কয়েক দশক ধরে, ট্যানটালামকে নাইওবিয়াম থেকে আলাদা করার জন্য বাণিজ্যিক প্রযুক্তির মধ্যে ছিল পটাশিয়াম অক্সিপেন্টাফ্লুওরোনিওবেট মনোহাইড্রেট থেকে পটাশিয়াম হেপটাফ্লুওরোটানটালেটের আংশিক কেলাসন। ১৮৬৬ সালে জিন চার্লস গ্যালিসার্ড ডি মেরিনাক এই পদ্ধতিটি আবিষ্কার করেছিলেন। এই পদ্ধতিটি ফ্লোরাইডযুক্ত ট্যানট্যালামের দ্রবণে দ্রাবক নিষ্কাশন দ্বারা স্থানচ্যুত করে করা হয়েছে।[১০]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Euripides, Orestes
  2. "Mindat.org - Mines, Minerals and More"www.mindat.org 
  3. Ekeberg, Anders (১৮০২)। "Of the Properties of the Earth Yttria, compared with those of Glucine; of Fossils, in which the first of these Earths in contained; and of the Discovery of a metallic Nature (Tantalium)"Journal of Natural Philosophy, Chemistry, and the Arts3: 251–255। 
  4. Ekeberg, Anders (১৮০২)। "Uplysning om Ytterjorden egenskaper, i synnerhet i aemforelse med Berylljorden:om de Fossilier, havari förstnemnde jord innehales, samt om en ny uptäckt kropp af metallik natur"Kungliga Svenska Vetenskapsakademiens Handlingar23: 68–83। 
  5. Griffith, William P.; Morris, Peter J. T. (২০০৩)। "Charles Hatchett FRS (1765–1847), Chemist and Discoverer of Niobium"। Notes and Records of the Royal Society of London57 (3): 299–316। জেস্টোর 3557720ডিওআই:10.1098/rsnr.2003.0216 
  6. Wollaston, William Hyde (১৮০৯)। "On the Identity of Columbium and Tantalum"। Philosophical Transactions of the Royal Society of London99: 246–252। জেস্টোর 107264ডিওআই:10.1098/rstl.1809.0017 
  7. Rose, Heinrich (১৮৪৪)। "Ueber die Zusammensetzung der Tantalite und ein im Tantalite von Baiern enthaltenes neues Metall"Annalen der Physik (German ভাষায়)। 139 (10): 317–341। ডিওআই:10.1002/andp.18441391006বিবকোড:1844AnP...139..317R 
  8. Rose, Heinrich (১৮৪৭)। "Ueber die Säure im Columbit von Nordamérika"Annalen der Physik (German ভাষায়)। 146 (4): 572–577। ডিওআই:10.1002/andp.18471460410বিবকোড:1847AnP...146..572R 
  9. Marignac, Blomstrand; H. Deville; L. Troost & R. Hermann (১৮৬৬)। "Tantalsäure, Niobsäure, (Ilmensäure) und Titansäure"। Fresenius' Journal of Analytical Chemistry5 (1): 384–389। ডিওআই:10.1007/BF01302537 
  10. Gupta, C. K.; Suri, A. K. (১৯৯৪)। Extractive Metallurgy of Niobium। CRC Press। আইএসবিএন 978-0-8493-6071-8 
  11. Marignac, M. C. (১৮৬৬)। "Recherches sur les combinaisons du niobium"Annales de Chimie et de Physique (French ভাষায়)। 4 (8): 7–75। 
  12. Hermann, R. (১৮৭১)। "Fortgesetzte Untersuchungen über die Verbindungen von Ilmenium und Niobium, sowie über die Zusammensetzung der Niobmineralien (Further research about the compounds of ilmenium and niobium, as well as the composition of niobium minerals)"Journal für Praktische Chemie (German ভাষায়)। 3 (1): 373–427। ডিওআই:10.1002/prac.18710030137 
  13. "Niobium"। Universidade de Coimbra। ২০০৭-১২-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৯-০৫ 
  14. Bowers, B. (২০০১)। "Scanning Our Past from London The Filament Lamp and New Materials"। Proceedings of the IEEE89 (3): 413। ডিওআই:10.1109/5.915382 
  15. Aycan, Sule (২০০৫)। "Chemistry Education and Mythology" (পিডিএফ)Journal of Social Sciences1 (4): 238–239। ডিওআই:10.3844/jssp.2005.238.239। ১৬ মার্চ ২০২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জানুয়ারি ২০২০ 
  16. Greenwood, N. N.; Earnshaw, A. (১৯৯৭)। Chemistry of the Elements (2nd সংস্করণ)। Butterworth-Heinemann। পৃষ্ঠা 1138। আইএসবিএন 0080379419 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

টেমপ্লেট:Tantalum compounds