জয়দেব উনাদকট
জয়দেব দীপকভাই উনাদকট (গুজরাটি: જયદેવ ઉનાડકટ; জন্ম: ১৮ অক্টোবর, ১৯৯১) গুজরাতের পোরবন্দর এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক ভারতীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। ভারত ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ২০১০-এর সূচনাকাল থেকে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | জয়দেব দীপকভাই উনাদকট | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | পোরবন্দর, গুজরাত, ভারত | ১৮ অক্টোবর ১৯৯১|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | বামহাতি ফাস্ট | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | বোলার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
একমাত্র টেস্ট (ক্যাপ ২৬৭) | ১৬ ডিসেম্বর ২০১০ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ওডিআই অভিষেক (ক্যাপ ১৯৭) | ২৪ জুলাই ২০১৩ বনাম জিম্বাবুয়ে | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ ওডিআই | ২১ নভেম্বর ২০১৬ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ওডিআই শার্ট নং | ৭৭ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টি২০আই অভিষেক (ক্যাপ ৬৪) | ১৮ জুন ২০১৬ বনাম জিম্বাবুয়ে | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টি২০আই | ১৮ মার্চ ২০১৮ বনাম বাংলাদেশ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টি২০আই শার্ট নং | ৭৭ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০১০ - বর্তমান | সৌরাষ্ট্র | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০১০ - ২০১২ | কলকাতা নাইট রাইডার্স | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০১৩ | রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০১৪ - ২০১৫ | দিল্লি ডেয়ারডেভিলস (জার্সি নং ৭৭) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০১৬ | কলকাতা নাইট রাইডার্স (জার্সি নং ৭৭) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০১৭ | রাইজিং পুনে সুপারজায়ান্টস (জার্সি নং ৭৭) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০১৮ - বর্তমান | রাজস্থান রয়্যালস (জার্সি নং ৭৭) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
|
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে সৌরাষ্ট্র দলের প্রতিনিধিত্ব করছেন জয়দেব উনাদকট। দলে তিনি মূলতঃ বামহাতি ফাস্ট বোলার হিসেবে খেলছেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে পারদর্শী তিনি।
শৈশবকাল
সম্পাদনা১৮ অক্টোবর, ১৯৯১ তারিখে গুজরাতের পোরবন্দর এলাকায় জয়দেব উনাদকটের জন্ম। পোরবন্দরের সেন্ট মেরিজ স্কুলে অধ্যয়ন করেছেন তিনি। বামহাতি ফাস্ট বোলার জয়দেব উনাদকট ২০১০ সালে নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দলের নেতৃত্বে ছিলেন। পোরবন্দরের দিলীপ সিং ক্রিকেট স্কুলে তাকে প্রথম চিহ্নিত করা হয়। কোচ রাম ওদেদ্রা’র কাছে তার বোলিং ভঙ্গীমা বিস্ময়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায় ও তার সিম বোলিংয়ের মান সম্পর্কে অবগত হন।
ঐ বিশ্বকাপের পর কলকাতা নাইট রাইডার্সের পক্ষে আইপিএলে খেলার জন্যে চুক্তিবদ্ধ হন। সেখানে দলের বোলিং কোচ ওয়াসিম আকরামের কাছেও তার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা চিত্রিত হয়। জুন, ২০১০ সালে ইংল্যান্ড সফরে ভারতের এ দলের সদস্য হিসেবে মনোনীত হন। এ সফরেই তার প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে।
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট
সম্পাদনা২০১০ সাল থেকে জয়দেব উনাদকটের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রয়েছে। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে রাজস্থান রয়্যালস ও ঘরোয়া ক্রিকেটে সৌরাষ্ট্রের পক্ষে খেলছেন। ২০১০ সালের আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি।
ঘরোয়া ক্রিকেটে সৌরাষ্ট্রের পক্ষে খেলতে শুরু করেন তিনি। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগেও বেশ কয়েকটি দলের পক্ষে খেলেছেন। ২০১৪ সালে পিঠের আঘাতের কারণে বেশ ক্ষাণিকটা সময় মাঠের বাইরে অবস্থান করতে বাধ্য হন। ২০১৫-১৬ মৌসুমের রঞ্জী ট্রফিতে পুনরায় খেলতে নামেন। ৪০ উইকেট নিয়ে সৌরাষ্ট্রকে চূড়ান্ত খেলায় নিয়ে যান। এ পর্যায়ে চারবার পাঁচ-উইকেট লাভ করেছিলেন। সেমি-ফাইনালে আসামের বিপক্ষে ১১ উইকেট নেন।
২০১৩ সালে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের পক্ষে খেলার জন্যে মনোনীত হন। আইপিএলের নিলামে অন্যতম দামী ভারতীয় খেলোয়াড়ের মর্যাদা লাভ করেন। মে, ২০১৩ সালে টি২০ খেলোয়াড়ী জীবনে নিজস্ব সেরা বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন। দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের বিপক্ষে ৫/২৫ লাভ করেন তিনি। ঐ খেলায় তার দল চার রানে জয় পায় ও তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।
জুলাই, ২০১৮ সালে দিলীপ ট্রফিতে ইন্ডিয়া ব্লু দলের পক্ষে খেলার জন্যে মনোনীত হন। অক্টোবর, ২০১৮ সালে দেওধর ট্রফিতে ভারত বি দলের পক্ষে খেলার তাকে রাখা হয়।]
জানুয়ারি, ২০১৯ সালে সৌরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বোলার হিসেবে রঞ্জী ট্রফিতে ২০০ উইকেট লাভ করেন। আগস্ট, ২০১৯ সালের দিলীপ ট্রফিতে ইন্ডিয়া রেডের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। এরপর, ২০১৯-২০ মৌসুমের দেওধর ট্রফিতে ভারত এ দলের সদস্য হন। একই মৌসুমের রঞ্জী ট্রফিতে ১০ খেলায় ৬৭ উইকেট নিয়ে শীর্ষ উইকেট সংগ্রাহকে পরিণত হন।
ঘরোয়া ক্রিকেট
সম্পাদনা২০১৪ সালে আইপিএলের নিলামে দিল্লি দলের পক্ষে খেলার জন্যে মনোনীত হন। ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সালে কলকাতা নাইট রাইডার্স তাদের ইতিহাসের সর্বোচ্চ অঙ্ক প্রদান করে। ₹ ১৬০ লাখ (ইউএস$ ১,৯৫,৬০০) রূপীর বিনিময়ে জয়দেব উনাদকটকে তাদের দলে কিনে নেয়। ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সালে তিনি পুনরায় রাইজিং পুনে সুপারজায়ান্টসে চলে যান।
আইপিএলের দশম আসরে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের বিপক্ষে হ্যাট্রিক করেন। শেষ ওভারে উইকেট-মেইডেন লাভ করেছিলেন। জানুয়ারি, ২০১৮ সালে আবারও তিনি দলত্যাগ করেন। ২০১৮ সালের আইপিএলের নিলামে রাজস্থান রয়্যালসে খেলেন। ₹১১.৫ কোটি রূপীর বিনিময়ে এ নিলামে সর্বাধিক দামী ভারতীয় ক্রিকেটারে পরিণত হন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
সম্পাদনাসমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে একটিমাত্র টেস্ট ও সাতটিমাত্র একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণ করেছেন জয়দেব উনাদকট। ১৬ ডিসেম্বর, ২০১০ তারিখে সেঞ্চুরিয়নে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এটিই তার একমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল। এরপর, আর তাকে কোন টেস্টে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি। এছাড়াও, ২৪ জুলাই, ২০১৩ তারিখে হারারেতে স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে দলের বিপক্ষে একদিনের আন্তর্জাতিকে অভিষেক ঘটে তার। ২১ নভেম্বর, ২০১৩ তারিখে কোচিতে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিপক্ষে সর্বশেষ ওডিআইয়ে অংশ নেন।
২০১০ সালে ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের পক্ষে খেলেন। গ্রেস রোডে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর অভিষেক খেলায় ১৩ উইকেট পান। ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের পূর্বে শ্রীলঙ্কায় ভারত দলের অনুশীলনীতে বোলার হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন।
টেস্ট অভিষেক
সম্পাদনাডিসেম্বর, ২০১০ সালে সেঞ্চুরিয়নে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে তার অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। তিনি আঘাতপ্রাপ্ত জহির খানের পরিবর্তে খেলার জন্যে তাকে দলে নেয়া হয়। ঐ খেলায় তিনি কোন উইকেটের সন্ধান পাননি ও আর তাকে কোন টেস্টে খেলানো হয়নি। ২৬ ওভারে ১০১ রান খরচ করেও তিনি কোন উইকেটের সন্ধান পাননি। টেস্ট দল থেকে বাদ পড়েন ও ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশ নিতে থাকেন।
২০১২-১৩ মৌসুমে ভারতের এ দলের সদস্যরূপে নিউজিল্যান্ড সফরে উল্লেখযোগ্যভাবে নিজেকে মেলে ধরতে সমর্থ হন। লিস্ট এ ক্রিকেটে ১৫.৭৭ গড়ে নয় উইকেট পান। তন্মধ্যে, দুইবার চার-উইকেট করে পেয়েছিলেন। এরপর তিনি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের সাথে দলের সফলতম শিরোপা বিজয়ে জোড়ালো ভূমিকা রাখেন। দলের সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রহকারীদের তালিকায় যৌথভাবে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করেন। তার এ ধরনের ধারাবাহিক ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের দরুন জুলাই, ২০১৩ সালে জিম্বাবুয়ে সফরে ভারত দলের সদস্যরূপে মনোনীত হন। সেখানেই তার ওডিআইয়ে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। সামগ্রীকভাবে এটি তার জন্যে বেশ সফলতম সফরে পরিণত হয়। ২০১৩ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ-খেলার ওডিআই সিরিজে আট উইকেট পান। সেরা বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন ৪/৪১।
তবে, ঐ বছরের শেষদিকে নিজ দেশে অস্ট্রেলিয়া ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুইটি ওডিআইয়ে উইকেটবিহীন অবস্থায় মাঠ ত্যাগ করতে বাধ্য হন। ১৮ জুন, ২০১৬ তারিখে হারারে স্পোর্টস ক্লাবে স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিকে অভিষেক ঘটে তার।