কেয়ামত থেকে কেয়ামত

সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ১৯৯৩-এর চলচ্চিত্র

কেয়ামত থেকে কেয়ামত ১৯৯৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি বাংলাদেশী চলচ্চিত্র। ছবিটি পরিচালনা করেছেন সোহানুর রহমান সোহান। এটি ভারতীয় চলচ্চিত্র "কেয়ামত সে কেয়ামত তক" (১৯৮৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত)-এর পুনঃনির্মাণ। হিন্দি চলচ্চিত্রের কাহিনী লিখেছেন নাসির হোসেন খান, যার বাংলা চিত্রনাট্য লিখেছেন সোহানুর রহমান সোহান ও সংলাপ লিখেছেন আশীষ কুমার লোহ। চলচ্চিত্রটির প্রযোজক সুকুমার রঞ্জন ঘোষ এবং প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আনন্দমেলা সিনেমা লিমিটেড।[] এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন মৌসুমী, সালমান শাহ, রাজিব, আহমেদ শরীফ, আবুল হায়াত প্রমুখ। এটি মৌসুমীসালমান শাহ অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র। এই ছবিতে আরও অভিষেক হয় কণ্ঠশিল্পী আগুনের[]

কেয়ামত থেকে কেয়ামত
কেয়ামত থেকে কেয়ামত চলচ্চিত্রের ডিভিডি প্রচ্ছদ
পরিচালকসোহানুর রহমান সোহান
প্রযোজকসুকুমার রঞ্জন ঘোষ
রচয়িতাআশীষ কুমার লোহ (সংলাপ)
চিত্রনাট্যকারসোহানুর রহমান সোহান
কাহিনিকারনাসির হোসেন খান
শ্রেষ্ঠাংশেমৌসুমী
সালমান শাহ
রাজিব
আহমেদ শরীফ
আবুল হায়াত
খালেদা আক্তার কল্পনা
সুরকারআনন্দ চিত্রগুপ্ত
মিলিন্দ চিত্রগুপ্ত
আলম খান
চিত্রগ্রাহকজাহাঙ্গীর এন্ড জাহাঙ্গীর
সম্পাদকমুজিবুর রহমান দুলু
পরিবেশকআনন্দমেলা সিনেমা
মুক্তি২০ মার্চ ১৯৯৩
স্থিতিকাল১৬০ মিনিট
দেশবাংলাদেশ
ভাষাবাংলা

কাহিনী সংক্ষেপ

সম্পাদনা

মির্জা ও খান পরিবার একই গ্রামে দুটি প্রভাবশালী পরিবার। খান পরিবারের ছেলে খান বাহাদুর কবিরউদ্দিন মির্জা পরিবারের মেয়ে ডিম্পলের সাথে অবৈধ মেলামেশা থেকে ডিম্পল গর্ভবতী হয় পরে। জানাজানি হয়ে গেলে বড় মির্জা খান বাহাদুর রইসউদ্দিনের কাছে তাদের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যায়। কিন্তু কবিরউদ্দিন ভয়ে মিথ্যা বলে। বড় মির্জা ক্ষুদ্ধ হয় ফিরে আসে। কবিরউদ্দিন ডিম্পলকে অস্বীকার করেছে জানার পর ডিম্পল আত্মহত্যা করে। মির্জা মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ডিম্পলের মৃতদেহ নিয়ে খান বাড়িতে যায় এবং সে কবিরউদ্দিনকে খুন করে। সালাউদ্দিনের জেল হয়ে যায়। আর বড় মির্জা সবাইকে নিয়ে গ্রাম ছেড়ে চলে যায়। বিশ বছর পর সালাউদ্দিন জেল থেকে ছাড়া পেয়ে তার ছেলে রাজের কলেজে গিয়ে তাকে নিয়ে বাড়ি ফিরে। সালাউদ্দিন রাজকে গ্রামে একটি কাজের জন্য পাঠায়। সেখানে তার রেশমির সাথে দেখা হয়। পরে শহরে এসে তাদের আবার দেখা সাক্ষাৎ হতে থাকে এবং সেই থেকে প্রেম। তাদের প্রেমের বিষয় জানাজানি হয়ে গেলে রেশমির বাবা খান বাহাদুর নাজিমউদ্দিন ও রাজের বাবা মির্জা মোহাম্মদ সালাউদ্দিন তাদের সামর্থ্যের মধ্যে যা কিছু করতে পারে করবে বলে একে অপরকে শাসায়। কিন্তু রাজ রেশমি একে অপরকে খুব ভালোবাসে এবং তাদের সেই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য বিয়ের আসর থেকে রাজ রেশমিকে নিয়ে পালিয়ে যায়।

অভিনয়শিল্পী

সম্পাদনা

নির্মাণ নেপথ্য

সম্পাদনা

প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আনন্দ মেলা তিনটি হিন্দি ছবি 'সনম বেওয়াফা', 'দিল' ও 'কেয়ামত সে কেয়ামত তক' এর কপিরাইট নিয়ে সোহানুর রহমান সোহানের কাছে আসে এর যে কোন একটির বাংলা পুনঃনির্মাণ করার জন্য উপযুক্ত নায়ক-নায়িকা খুঁজে না পেয়ে সম্পূর্ণ নতুন মুখ দিয়ে ছবি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন। নায়িকা হিসেবে মৌসুমীকে নির্বাচিত করেন। নায়ক হিসেবে তৌকির আহমেদকে প্রস্তাব দিলে তিনি পুনঃনির্মাণ চলচ্চিত্র হওয়ার জন্য পরিচালকের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন।[] পরে মডেল-অভিনেতা আদিল হোসেন নোবেলকে প্রস্তাব দিলে তিনিও তা ফিরিয়ে দেন।[] তখন নায়ক আলমগীরের সাবেক স্ত্রী খোশনুর আলমগীর 'ইমন' নামে একটি ছেলের সন্ধান দেন। প্রথম দেখাতেই তাকে পছন্দ করে ফেলেন পরিচালক এবং 'সনম বেওয়াফা' ছবির জন্য প্রস্তাব দেন, কিন্তু যখন ইমন 'কেয়ামত সে কেয়ামত তক' ছবির কথা জানতে পারেন তখন তিনি উক্ত ছবিতে অভিনেয়র জন্য পীড়াপীড়ি করেন। তার কাছে কেয়ামত সে কেয়ামত তক ছবি এতই প্রিয় ছিলো যে তিনি মোট ২৬ বার ছবিটি দেখেছেন বলে পরিচালককে জানান। শেষ পর্যন্ত পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান তাকে নিয়ে কেয়ামত থেকে কেয়ামত চলচ্চিত্রটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন এবং ইমন নাম পরিবর্তন করে সালমান শাহ রাখা হয়।[]

সঙ্গীত

সম্পাদনা
কেয়ামত থেকে কেয়ামত
কর্তৃক অ্যালবাম
মুক্তির তারিখ১৯৯৩
স্থানঢাকা, বাংলাদেশ
স্টুডিওঅনুপম রেকর্ডিং স্টুডিও
ঘরানাচলচ্চিত্রের গান
দৈর্ঘ্য২০:৩৭
সঙ্গীত প্রকাশনীঅনুপম
প্রযোজকআলম খান
আলম খান কালক্রম
সত্য মিথ্যা
(১৯৯২)
কেয়ামত থেকে কেয়ামত
(১৯৯৩)
ত্যাগ
(১৯৯৩)

চলচ্চিত্রটির সঙ্গীত পরিচালনা করেন আনন্দ চিত্রগুপ্ত-মিলিন্দ চিত্রগুপ্ত ও আলম খান। গীতিকার ছিলেন মনিরুজ্জামান মনির। গানে কণ্ঠ দেন রুনা লায়লাখান আসিফ আগুন। গানের রেকর্ডিং হয় অনুপম রেকর্ডিং স্টুডিওতে।

গানের তালিকা

সম্পাদনা
নং.শিরোনামগীতিকারসুরকারকণ্ঠশিল্পীদৈর্ঘ্য
১."বাবা বলে ছেলে নাম করবে"মনিরুজ্জামান মনিরআনন্দ চিত্রগুপ্ত-মিলিন্দ চিত্রগুপ্ত ও আলম খানখান আসিফ আগুন৫:১০
২."চাঁদনী রাতে তুমি আছো পাশে"মনিরুজ্জামান মনিরআনন্দ চিত্রগুপ্ত-মিলিন্দ চিত্রগুপ্ত ও আলম খানরুনা লায়লা 
৩."এখন তো সময়"মনিরুজ্জামান মনিরআনন্দ চিত্রগুপ্ত-মিলিন্দ চিত্রগুপ্ত ও আলম খানরুনা লায়লা ও আগুন৪:৩৬
৪."ও আমার বন্ধু গো"মনিরুজ্জামান মনিরআনন্দ চিত্রগুপ্ত-মিলিন্দ চিত্রগুপ্ত ও আলম খানরুনা লায়লা ও আগুন৬:০৯

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "কেয়ামত থেকে কেয়ামত - বাংলা মুভি ডেটাবেজ"www.bmdb.com.bd। সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৫। 
  2. "কেয়ামত থেকে কেয়ামত ও তিন নক্ষত্রের সন্ধান"দৈনিক কালের কণ্ঠ। ঢাকা, বাংলাদেশ। ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১১ অক্টোবর ২০১৬ 
  3. "কেয়ামত থেকে কেয়ামত : তৌকীর অভিনয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন"দৈনিক কালের কণ্ঠ। ঢাকা, বাংলাদেশ। ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১১ অক্টোবর ২০১৬ 
  4. "কেয়ামত থেকে কেয়ামত ছবি না করার গল্প শোনাবেন নোবেল"দৈনিক যুগান্তর। ঢাকা, বাংলাদেশ। ১৪ জুন ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১১ অক্টোবর ২০১৬ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  5. "ইমন থেকে সালমান"দৈনিক কালের কণ্ঠ। ঢাকা, বাংলাদেশ। ১ সেপ্টেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১১ অক্টোবর ২০১৬ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা